দুষ্টু বউয়ের ডেভিল বর,part:10,11

0
1381

দুষ্টু বউয়ের ডেভিল বর,part:10,11
writer:Nurzahan akter allo
part:10
❤❤
সাদনান মাটিতে বসে পড়ছে,নিজের রাগ কনট্রোল করতে না পেরে।সাদনান গাড়ির ভেতর থেকে পানির বোতল বের করে, হাতে পানি ঢেলে চোখে মুখে পানির ছিটা দিল।তারপর দুইহাত দিয়ে মাথার চুলগুলো টেনে ধরে, আকাশের দিকে তাকাই আর চোখ বন্ধ করে থাকে।সাদনান চোখ বন্ধ করতেই ওর চোখের সামনে নুরের মায়াবি মুখটা ভেসে ওঠে,সাথে সাথে চোখ খুলে সাদনান দৌড়ে গাড়িতে গিয়ে বসে গাড়ি স্টাট দেয়।সাদনান মনে মনে নিজেকে অনেক অনুতপ্ত কারন আজ নুরকে মেরেছে,নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছে, এজন্যই মনে মনে,,,,,,

সাদনানঃআমি সরি দুষ্টু রানী, আই রিয়েলি সরি,,। আর তোমাকে কষ্ট দিবো না,সব মেনে নিবো তবে তোমাকে আমি এটা বুঝতে দিবো না যে আমি তোমার প্রতি খুব দূবল।আমি আমার জন্য তোমার মনে ভালবাসা সৃষ্টি করাবো ডিয়ার,একটা সময় এমন হবে তুমি আমাকে ছাড়া কিছু বুঝবে না,আর সেইদিনটা খুব তারাতারি আসবে।

সাদনান নুরের বাসায় পৌঁছে দেখে সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে বাট নুর নেই এখানে।নুরের একটা কাজিন সাদনান কে নুরের রুমটা দেখিয়ে দিল,সাদনান রুমে ঢুকে অবাক হয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছে,মনে হচ্ছে ভুল করে কোন বাচ্চার রুমে ঢুকে পড়ছে,পুরো বিছানায় বিভিন্ন ঢেডি দিযে সাজানো দেওয়ালে বিভিন্ন কাটুনের ছবি।সাদনান ঘুরে ঘুরে নুরের রুমটা দেখে মনে মনে হাসলে আর এমন একটা ভাব করে থাকলো যেন খুব রেগে আছে।সাদনান গিয়ে বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে,অনলাইনে ঢুকে ফেসবুকিং করছিলো।

আর নুর ওয়াশরুমে ঢুকে সাওয়ার নিয়ে,সাদনানের গুষ্ঠী উদ্ধার করে কেবল বের হচ্ছে ওয়াশরুম থেকে।
একটা কালো থ্রী কোয়াটার আর সবুজ লেডিস গেন্জী পড়ে,ওয়াশরুমের ডোর খোলার শব্দে সাদনান মাথা উচু করে নুর কে দেখে,চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে,এমন একটা ভাব করলো যেন কিছু হয় নি,সাদনান অনলাইন থেকে বের হয়ে ওর ফোনের ক্যামেরা অন করে দেখছে নুর কি করছে?আর নুর সাদনানকে একবার দেখে রাগী চোখে তাকিয়ে চুল থেকে টাওয়াল খুজে চুল মোছা শুরু করলো,কয়েকবার চেষ্টা করলো বাট ভাল করে না মুছে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে,
টাওয়ালটা বিছানায় ছুড়ে মারলো,আর টাওয়ালটা গিয়ে সাদনানের মুখে গিয়ে পড়লো।সাদনান টাওয়াল থেকে আসা মাতাল করা সুভাস পাচ্ছে,একটু প্রান ভরে সুভাস টা নিয়ে এমন একটা ভান করলো,যেন,,,

সাদনানঃনুরররর!!!!!!!!! এটা কি করলে?ফাজিল মেয়ে তোমার সাহস তো কম না, আমার মুখে টাওয়াল ছুড়ে মারো।তারাতারি এটা সরাও ইমিডিয়েট।
(সাদনান টাওয়াল টা না সরিয়ে,মানে টাওয়াল টা মুখের উপর রেখেই কথা গুলো বলছে)

নুরঃজ জ জি (বাপি তুমি এ কোন উগান্ডার গলায় আমাকে ঝুলালে বাপি,সারাদিন শুধু বকতে থাকে??)

সাদনানের মুখের উপর থেকে টাওয়াল সরিয়ে নুর চলে আসতে গেলে, সাদনান ওকে আবার বসিয়ে দেয়। নুর বসে পড়ে আর সাদনান দাড়িয়ে নুরের হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে নুরের চুল মুছে দিতে শুরু করে।আর নুর মুখ বাকিয়ে বিরবির করে বলতে থাকে,

নুরঃকখনো মারবে, কখনো বকছে,আবার কখনো ভালবাসা দেখাবে,ঢং দেখে বাঁচি না।যওসব হাগল পাগলে এসে আমার কপালেই জুটে(বিরবির করে)

সাদনানঃআমি কখন কি করবো,?তোমাকে বলে করতে আমি বাধ্য না,আর সাদনান কারো কথা শুনে চলে না।আশা করি আজকের মারের কথা ভুলে যাও নি,,,

সাদনান এটা বলে লাগেজ থেকে জামা কাপড় আর নুরের টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে,দুম করে দরজা আটকে দিল,নুর চমকে উঠে এভাবে দরজার লাগানোর কারনে,,।

নুরঃএর জন্য সবাই বলে লেবু বেশি চিপতে হয় না,আর বেশি চিপলে তিতা হয়ে যাই।ইসস আগেই এই ডেভিল ভাল রুপে ছিল আর আমি ভুল করে ইচ্ছে মত চটকিয়েছি এত তিতা হয়ে গেছে এজন্য। আর তিতা হয়ে এই ডেবিল রুপ ধারন করেছে,,??।আমার ভাল থাকার দিন শেষ, তবে আপনাকে আমিও ছেড়ে দিবো না ডেভিল বর???

সাদনান ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা আটকে সাওয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে আছে,নুরকে এই ড্রেসে খুব কিউট দেখাচ্ছে,সবুজ কালার টা ফর্সা শরীরে দারুন মানিয়েছে।সাদনান তখন নুরের বেশ কয়েকটা পিক তুলে নিয়েছে, আর সব থেকে দারুন হয়েছে সাদনানের দিকে রাগী চোখে তাকানোটা,আর তখন সাদনান পিক টা তুলে নেই।সাদনান সাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে, টাওয়ালটা বেলকুনিতে নেড়ে দিয়ে আসে, সাথে ওর ভেজা ড্রেস গুলোও,বেলকুনি থেকে আসতেই নুর দৌড়ে এসে বলে,,

নুরঃবাপি আপনাকে খেতে ডাকছে তারাতারি খেতে আসুন,
(এইকথা বলে হরলিস চেটে চেটে খেতে খেতে চলে গেল,)

সাদনানঃএবাবে কেউ কাউকে খেতে ডাকে,না কিছু মনে করা যাবে না সাদনান, তোর বউটা যে এলিয়েন তুই বার বার ভুলে যাস কেন?আর এলিয়েনরা সব পারে,,, (নিজেই নিজের পিঠ চামড়ে)

সাদনান রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িংরুমে সামনে যেতেই নুরের বাবার সাথে দেখা হয়ে গেলো।নুরের বাবা সাদনানকে খাবার টেবিলে নিয়ে গিয়ে বসলো,কিছু কিছু মেহমানরা থেকে গেছে এজন্য বাড়িটা হইচই হচ্ছে, সাদনান গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসলো,কোথায় থেকে নুর দৌড়ে এসে সাদনানের পাশের চেয়ারে বসে পড়লো।তারপর পাশে তাকিয়ে সাদনানকে দেখে ভয়ে ভয়ে আবার উঠে ওর এক ছেলে কাজিনের পাশে বসলো,আর সাদনান এটাতে রেগে গিয়ে একবার নুরের দিকে তাকিয়ে,,,

সাদনানঃনুর তুমি এখানে বসো প্লিজ কারন আমাকে তুলে খাওয়ানো দায়িত্ব তো তোমার তাই না,?

(মুখে হাসি নিয়ে দাঁতের সাথে দাঁত চেপে কথাটা বললো)

নুরঃ?? সমস্যা নেই,আমি এখানেই বসে থাকি,খাবার বেড়ে দেওয়ার জন্য রাজু আংকেল (কাজের লোক)তো আছেই???

নুরের বাপিঃনুর তাড়াতাড়ি এখানে এসে বসবে,এত কথা বলছো কেন তুমি?সাদনান বাবা যখন বলছে তখন তাই হবে,,তারাতারি এখানে এসে বসো,,,

নুরঃহুম আচ্ছা বাপি(মন খারাপ করে)??

সাদনানঃরুমে চলো আজ তোমার হচ্ছে, আমাকে ইগনোর করা।?
(মাথা নিচু করে নুরের কানের কাছে ফিসফিস করে)

সবাই খেয়ে যে যার রুমে চলে গেল,নুর ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকলো।সাদনান চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল,নুর পা টিপে টিপে আবার রুম থেকে বের হবে এমন সময় সাদনান নুরকে ডেকে উঠলো,,,
সাদনানঃনুর এদিকে এসো,,,!!!

নুরঃ?? হুম বলেন[সাদনানের সামনে এসে]

সাদনানঃআরো কাছে এসো,আর এখানে বসো,,

নুরঃহুম বলুন[দুম করে বিছানায় বসে]

সাদনানঃআমার মাথা ব্যাথা করছে,আমার মাথা টিপে দাও। এখুনি দিবা মানে এখুনি দিবা কোন অযুহাত শুনতে রাজি না।
নুরঃআমার খুব ঘুম পাচ্ছে খুব,
,,,ঘুমাবেন
,,,,,,,,,,,ঘুমায়
,,,,,,,,,,,,,,,,,,ঢেলে দেয়??

সাদনানঃমার খাবেন,মার দিবো,,,বেশি করে দেয়???

নুরঃলাগবে না থাক??

সাদনান এসে নুরের কোলে মাথা দিল,আর নুর বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসে সাদনানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, আর সাদনান চোখ বন্ধ করে সেটা উপভোগ করছে,কিছুসময় পর নুর সাদনানের চোখে সামনে হাত ঘুরিয়ে দেখলো সাদনান ঘুমিয়ে গেছে কি না?সাদনান তখনো ঘুমায় নি,ঘুমের ভান করে উপুর হয়ে শুয়ে নুরের কোমর জড়িয়ে ধরে আছে,,,????
আর নুর নড়াচড়া বন্ধ করে হা করে তাকিয়ে থাকে,সাদনান ঘুমিয়ে গেছে ভেবে নুর সাদনানের চুল, দাড়ি নিয়ে আকিবুকি করতে থাকে,,।আর মুছকি মুছকি হাসতে থাকে।

নুরঃএই যে সাদনান সাহেব আপনাকে আমি নিজ ইচ্ছেই বিয়ে করছি,বাট আপনি ভাবেন আপনি আমাকে ভালবেসে,বুদিধ খাটিয়ে পেয়েছেন।আসলে কোথাও একটু ভুল আছে আপনার????।আপনাকে ইচ্ছে মত জালাবো ভেবে,আপনাকে আমি বিয়ে করছি কারন আপনাকে আমার প্রথম লেকের পাড়ে দেখেই ভালো লেগেছিলো, আর এটাও জানি আপনি আমাকে ফলো করতেন,,আপনাকেও অনেক আগে থেকেই চিনি সাদনান সাহেব☺☺।আপনার এই হেয়ার স্টাইল আর খোচা খোচা দাড়িতে যে আপনাকে কতটা চামিং প্রিন্স দেখায় আপনিও হয়তো নিজেও জানেন না,,,।তবে আপনাকে আমি এত সহজে ধরা দিবো না ডেভিল বর,,,??।
আপনার পছন্দের গল্প পড়তে ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প পেইজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।।

সাদনানঃচোখ বন্ধ করেই সব শুনলোম,আমি তো আবাক হওয়ার চূড়ান্ত পযায়ে,আমি দুষ্টু রাণী আমার উপরেই গেম খেলছে তাহলে,,ওকে এবার তুমিও দেখতে থাকো দুষ্টু রানী,,

চলবে?

দুষ্টু বউয়ের ডেভিল বর
writer:Nurzahan akter allo
paer:11
❤❤
নুর সাদনানের চুলগুলো ইচ্ছে মত আকিবুকি করছে,আর মুছকি মুছকি হাসছে,সাদনান ইচ্ছে করে নুরকে আরে জড়িয়ে ধরে,নুরে পেটের মুখ গুজে দেয়,আর সাদনানের প্রতিটা নিঃশ্বাস নুরের শরীরে এক অনুভূতি সৃষ্টি করছে,নুর সাদনানের মুখ সরাতে চাইলো বাট পারলো না।নুর সাদনানের দিক তাকিয়ে,,

নুরঃডেবিল বর আমিই সেই মেয়েটি যে আপনার বাসায় প্রতিদিন চিঠি পাঠাতো,আর আপনি রেগে সেগুলো ফেলে দিতেন।আমি সেই যে আপনার পছন্দের ওয়াচ, আপনার চোখের অগোচরে নিয়ে কেটে পড়েছিলাম।আপনাকে প্রথম দেখিলাম লেকের পাড়ে গিটার হাতে গান গাইতে,আপনার অনেক বন্ধুরা সাথে ছিল,বাট আমার চোখ আপনার দিকে আটকে ছিল।আপনার সামনে আমি ইচ্ছে করে ধরা দেইনি তখন,আর আপনার সাথে এতদিন লুকোচুরি খেলছিলাম, আপনার মন আমি কেড়ে নিবোই, তার কারন প্রতিটা ছেলে দুষ্টু মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয় বেশি,খুব তারাতারি দুষ্টু মেয়েরা ছেলেদের মন কাড়তে পারে,,
(লেখিকা ভদ্র মেয়ে,লেখিকা বাদে সবাই দুষ্টু)
ডেবিল বর আমি গান শুনে আপনার মেয়ে পড়েছি,আপনার বলা সেই গান আজও আমার কানে ভাসে,আপনার সেই গানটা, আপনার গানের সেই ভিডিওটি দেখে আমার ঘুম আসে,,,☺☺
(বাকিটা আপনাদের জন্য রহস্য রাখলাম)

নুর একদিন বিকালে লেকের পাশে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়ে, গিটারের টোনে একপাশে তাকিয়ে দেখে, একটা ছেলেটা গিটার হাতে বসে গান ধরেছে আর বাকিরা তাকে ঘিরে বসে আছে,নুরে সাদনানকে ওখানে দেখে,আসতে গেলে সাদনান তখনই গিটারের সুর তুলে আর গান ধরে,,

ও রঙ্গবতী রে রঙ্গবতী
অরে রঙ্গবতী রঙ্গবতী কনকলতা
হসি পদে কোহন কথা।।
হায় গো লাজে লাজে, লাজে লাজে
হে লাজে লাজে, লাজে লাজে
লাজে লাজে নাই জাইছে মাথা মোর..
নাই করো, নাই করো অথা।।

ও রঙ্গবতী রে রঙ্গবতী
ও রঙ্গবতী রে রঙ্গবতী
রঙ্গবতী রঙ্গবতী রঙ্গিলা অন্তরে
হাবুডুবু তোমারি কথায়।।

হায় গো লাজে লাজে, লাজে লাজে
হায় গো লাজে লাজে, লাজে লাজে..
হায় লাজে লাজে, মরে রই রসিক নাগর
মোর নাই কোনো নাই কোনো ব্যথা।।
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here