দূরত্ব
Part :7
#writer:Maliha Islam Tafsi (jeba)
আচমকা রোহান বলে উঠল প্রীতি সরি,,,,ভাবি আমি আপনাকে কিছু দিতে চাই।
সবাই রোহান এর কথায় সবাই রোহান এর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।
কি হল সবাই এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন সবাই? আমি কি আমার ভাবি কে দেবর হিসেবে কিছু দিতে পারি না?
সবাই হেসে দিল আর রাহাত হেসে বলল তা তো দিতেই পারিস। আমরা সবাই দেখতে চাই তুই তোর ভাবির জন্য কি আনলি?
প্রীতি সেই কখন থেকে মাথা নিচু করে বসে আছে কারণ সে রোহান এর দিকে তাকালে যে নিজের চোখের পানি আটকে রাখতে পারবে না। খুব কষ্ট হচ্ছে তার রোহান কি বুঝে না?মনে মনে বলল প্রীতি।
রোহান দুইটা খুব সুন্দর বক্স বের করল। একটা বক্স খুলে একটা অনেক সুন্দর একটা গোল্ড এর আন্টি বের করল আর আরেকটা বক্স খুলে একটা গোল্ড এর পায়েল বের করল।
সবাই এগুলো দেখে তাকিয়ে রইল অবাক হয়ে । রাহাত প্রীতির কাঁধে হাত রেখে বলল দেখো তোমার দেবর কতো সুন্দর গিফট এনেছে ওর ভাবির জন্য ।
রাহাত এর কথায় প্রীতি রোহানের হাতের দিকে তাকিয়ে চমকে গেল আর মনে মনে ভাবতে লাগল এগুলো তো সেই,,,,,,
প্রীতি এই প্রীতি কি ভাবছো? (রাহাত এর মা)
-না কিছু না মা।
ভাইয়া এই নে বলে রোহান আন্টি আর পায়েল টা রাহাত এর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল প্রীতি কে এইগুলো পরিয়ে দিতে। রাহাত শুধু আন্টি টা নিল রোহান এর হাত থেকে আর প্রীতি কে আন্টি টা পরিয়ে দিল। সবাই খুশিতে করতালি দিল। মনে হচ্ছিল যেন রাহাত আর প্রীতির এনগেইজমেন্ট হচ্ছে ।
রোহান পায়েল টা ও রাহাত এর হাতে দিতে যাবে তখন রাহাত উঠে বলল পায়েল টা তুই পরিয়ে দে তোর ভাবি কে।
রাহাত এর কথায় খুব খুশি হলো রোহান আর প্রীতি এক পলক রোহান এর দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিল।
রোহান প্রীতি কে পায়েল পরিয়ে দিতে যাবে তখন দেখল প্রীতির পায়ে ব্যান্ডেজ করা । বা পায়ে পায়েল টা পরিয়ে দিল রোহান আর রোহান এর হাতের স্পর্শে বার বার কেঁপে উঠছিল প্রীতির ক্ষতবিক্ষত হৃদয় টা।
কেন রোহান এমন করলে?খুব কি ক্ষতি হতো আজকে আমি তোমার বউ হিসেবে এই বাড়িতে থাকলে? ( মনে মনে বলল প্রীতি)
প্রীতি আমি জানি তুমি হয়তো রাগে নিজেকে আঘাত করেছো। আগে তুমি একটু ব্যাথা পেলে আমার অনেক কষ্ট হতো আর এখন তোমাকেই আমি জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট টা দিচ্ছি । খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার আমি জানি তাই চোখ তুলে আমার দিকে তাকাতে পারছিলে না কিন্তু আমি সবকিছু ঠিক করে দিব সবকিছু ।(মনে মনে বলল রোহান )
.
.
.
.
.
রুমে এসে প্রীতি আন্টি আর পায়েল টা তে হাত বুলিয়ে দেখতে লাগল আর পুরোনো স্মৃতি গুলো মনে করে হাসতে লাগল,,,,,,,,,
”
”
”
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন প্রীতি। রোহান আধা ঘন্টা ধরে কল করেই যাচ্ছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই ওর। হঠাৎ ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখল রোহান ষাট টা কল দিয়েছে।
হায় আল্লাহ….এতো মরার ঘুম ঘুমায় আমি???রোহান আজকে মেরেই ফেলবে……(প্রীতি)
তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে বের হয়ে গেল প্রীতি খালি মুখে। অবশ্যইএইটা নাস্তার সময় না কারণ এখন দিনের বারো টা বাজে। একটা কালো লং জামার সাথে জিন্স পড়েছে প্রীতি আর একটা লাল ওড়না গলায় পেঁচিয়ে রেখেছে।
প্রীতি তাড়াতাড়ি করে গিয়ে পৌছালো শালবন বিহার।
প্রীতি কে দেখে রোহান মনে মনে বলতে লাগল,,ওফফফসসস,,,,কালো পরী টা চলে আসছে। এতক্ষণ অপেক্ষা করিয়েছে আমাকে আজকে একটা উচিত শিক্ষা দিব ওকে।
প্রীতি রোহান এর কাছে এসে বলতে লাগল’
-সরি সরি,,,,,তুমি তো জানোই আমি একটু ঘুমায় বেশি। আর এমন হবে না কালকে থেকে ভোর বেলা উঠে যাবো প্লিজ এবার এর মতো ক্ষমা করে দেও?
– কানে ধরো।(রাগি ভাব নিয়ে বলল রোহান )
-রোহান এইখানে অনেক মানুষ আছে(আমতা আমতা করে বলল প্রীতি)
-শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে।
-তাহলে অন্য শাস্তি দাও এইটা ছাড়া প্লিজ ।
-আমার কপালে গালে কিস করতে হবে।
-রো….হান,,,,,,,
-না হলে কানে ধরো।
– প্লিজ,,,
-নো এক্সকিউজ, ,,,
মানুষের কাছ থেকে একটু দূরে এসে একটা নিরব জায়গায় দাঁড়াল প্রীতি আর রোহান।
– নাও শুরু হয়ে যাও।
-কি?????
-কিস,,,, (প্রীতির কানের কাছে মুখ নিয়ে দুষ্ট হাসি দিয়ে বলল রোহান)
-কানে ধরি?
-চলো,,,,
-কোথায়?
-মানুষের ভিড়ে। কানে ধরতে হলে ঐখানেই ধরতে হবে।
-নাআআআ,,,,,,
-তাহলে কি?
-আচ্ছা দাঁড়াও ।
রোহান পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল আর প্রীতি রোহান এর গালে কিস করল।
-কপালে কে করবে?
-কিভাবে করবো? তুই যেই লম্বু আমি তোমার কপালে কিসকরবো কিভাবে?
রোহান প্রীতির দিকে ঝুকে দাঁড়াল আর প্রীতি খুব আলতো ভাবে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ এঁকে দিল রোহানের কপালে ।
রোহান মুচকি হেসে বলল- প্রতিদিন ঘুম থেকে লেইট ওঠলে এমন শাস্তি দিব ।
-সয়তান ছেলে ইচ্ছে করে এমন করেছো জানি তো। আমি আর লেইট ওঠব না।(কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলল প্রীতি)
-চোখ বন্ধ করো।
-কেন?
-করতে বলছি করো??
প্রীতি চোখ বন্ধকরে দাঁড়িয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর রোহান এর কথায় চোখ খুলে দেখল রোহান হাঁটু ঘেরে বসে আছে প্রীতির সামনে আন্টি আর পায়েল নিয়ে ।
– আই লাভ ইউ নুসাইফা আহমেদ প্রীতি।
-আই লাভ ইউ টু রোহান শেখ।
কথাটা বলে প্রীতি ও রোহানের মুখোমুখি বসে রোহান কে জরিয়ে ধরল।রোহান ও খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরল প্রীতি কে।
খুব ভালোবাসি তোমায় (রোহান)
আমিও (প্রীতি )
আচ্ছা আন্টি আর পায়েল টা পরিয়ে দেই (রোহান )
-না,,,,
-কেন তোমার পছন্দ হয় নি প্রীতি?
– অনেক অনেক অনেক পছন্দহয়েছে।
-তাহলে?
-রোহান আমি চাই এইগুলো আমাদের বিয়ের প্রথম রাতে তুমি আমাকে পরিয়ে দাও। তাই আমার এই জিনিস গুলো আমানত রইল তোমার কাছে বাসর রাতে আমাকে পরিয়ে দিও।
-ওকে,,,,জান । আমি খুব যত্ন করে রেখে দিবো এইগুলো ।
এতো সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি গুলো মনে করে অজান্তেই হাসতে লাগল প্রীতি। হঠাৎ কাঁধে কারো স্পর্শে হুঁশ ফিরল তার,,,,,,,,,
(বানান ভুলে একটু নিজেরা বুঝে পড়ে নিবেন প্লিজ)