দৃষ্টির অগোচরে পর্বঃ২+৩
লেখকঃরনি হাসান
____________________
নিলয় তার মার কাছ থেকে কথাটি শুনে দুরুত্বই রুমে দিকে যায়। দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করতেই লক্ষ্য করলো আদিবা আয়নার সামনে দাড়িয়ে উদাসীন হয়ে চুল ঠিক করছে, নিলয় বুঝতে পারলো কোনো একটা বিষয়ে আদিবার মন খারাপ ” কিন্তু মন খারাপের কোনো কারনেই সে বুঝতে পারছে না। আনমনে এসব ভেবে। নিলয়ের মাথায় হঠাৎ দুষ্টমির উদয় হলো সে কোনো প্রকার শব্দ না করেই আদিবাকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো-
আমার জানটার কি আজ মন খারাপ । অফিসেও আমাকে না খাইয়ে রেখেছে, আর এখানেও দেখছি উদাসীন হয়ে চুল ঠিক করছে ” হঠাৎ আমার বউটার কি হলো হুম_?
নিলয়ের দুষ্টমাখা কথায় আদিবার রাগে পুরো শরীর রি রি করছে। মন চাচ্ছে অনেক কিছুই বলতে। কিন্তু কোনো একটা বাধায় সে বলতে পারছে না। নিশ্চুপ হয়ে চুলই ঠিক করছে-
নিলয় আদিবার নিশ্চুপ থাকা দেখে আচ করতে পারে, যে সত্যিই তার মন খারাপ । যাই হক আদিবার মন ভালো করতে হবে।এসব ভেবে আদিবাকে তার দিকে ঘুরিয়ে নেই। হঠাৎ আদিবার চোখ লাল বর্ন হয়েছে দেখে নিলয় আঁতকে উঠে বলে
–” আদিবা তোমার চোখ লাল বর্ন হয়েছে কেনো। নিশ্চয় মার কোনো বকা খেয়ে কান্না করছো তাই না-
নিলয় এসব বলছে আর অইদিকে আদিবা রাগে ফুলছে। নিলয়ের এমন ভালো আচরণ তা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। আদিবার নিশ্চুপ থাকা দেখে নিলয় পরম ভালোবাসায় আদিবাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলে
–” কিছুতো একটা বলো”
আদিবার এবার নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেই। এবং রাগান্বিত সুরেই বলে ‘
–” খবরদার ভুলেই ও ওই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে স্পর্শ করবা না –
নিলয় কথাটি শুনার জন্য মোটে ও তখন প্রস্তুত ছিলো না। বিয়ের এক বছর প্রায় বেশি হয়ে গেলো। কখনো আদিবার কাছ থেকে এমন বিহেব দেখেনি। আজ তা দেখে কিছুটা থতমত খেয়ে বোকার মতো বলে উঠলো
–” নোংরা হাত কই পাইলা। ধুলাবালির তো আর হাতে লেগে নেই যে তোমার গায়ে লেগে যাবে (হাসার চেষ্টা করে)
–” আপনার মনে যে ধুলাবালি লেগে আছে তার কথা আমি বলছি (তীক্ষ্ণ চোখে)
আদিবার রাগান্বিত চেহারা দেখে বুঝতে পারলো ” এসময় তর্কবিতর্ক করলে ঝগড়া বিবাদ হয়ে যেতে পারে। তার থেকে কেটে পড়াই ভালো হবে। আনমনে ভেবে নিলয় নিজেকে সংযত রেখে বলে উঠলো
আমি বুঝতে পারছি, কোনো এক ব্যাপারে তোমার মন খারাপ এরজন্য আমার সঙ্গে রাগ দেখাচ্ছো। আমিও এতবোকা না যে এই মুহূর্তে আমার বউটার সঙ্গে তর্কবিতর্ক করবো। যাই হক এখন তুমি আমার জন্য খাবার রেডি করো। আমি বরং ফ্রেশ হয়ে আসছি- (এই বলে নিলয় ওয়াশরুমে চলে গেলো)
এইদিকে আদিবা নিলয়ের আচরণে অনেকটাই অবাক। একটা মানুষ এত নিখুতভাবে অভিনয় তার স্ত্রী সঙ্গে কীভাবে করতে পারে। বাহিরে ভালো রুপ। আর ভিতরে ভিতরে পুরোই শয়তানের হাড্ডি। এমন মানুষের সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকা বড্ড কঠিন। আনমনে ভেবে যাচ্ছে আদিবা-
নিলয় ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আদিবা বিছানায় ভাবান্ত অবস্থা বসে আছে। তবে আজ যে আচরণ আদিবা করছে তা আগে কখনো করেনি। নিলয় এবার কিছুটা রিয়াক্ট করে বলে উঠলো
–” আদিবা কি হয়েছে তোমার এমন ভাবান্তর অবস্থায় বসে আছো যে
–” মন চাচ্ছে তাই বসে আছি (রেগে)
আদিবার রাগ হবার পিছনে বিশেষ কোনো কারণই পেলো না। অফিসে যাওয়া সময় তো আদিবা ভালোই ছিলো কিন্তু এখন কি এমন হলো যে আমার সঙ্গে কথায় বলতে চাচ্ছে না উল্টো রাগ দেখাচ্ছে, আনমনে কিছুটা ভেবে নিলয় আদিবার সামনে গিয়ে বলে
–” আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। হঠাৎ করেই তুমি এমন বিহেব পালটে ফেলার কারণ কি বলো তো_?
নিলয়ের প্রশ্নতে আদিবা আর চুপ করে থাকতে পারলো না। অনেকটা রাগ ঘৃণায় বলে উঠলো
আজ আমার ভাবতেই গা গুলিয়ে যাচ্ছে।যে আমার স্বামী পরনারীর স্পর্শ কাতর। যে কিংনা অফিসের মধ্যে পরনারীর নেশায় মেতে থাকে ছি-
আদিবার এমন ধারা কথা শুনে নিলয়ের দুনিয়ায় ধারী যেন নিমিষেই উলোটপালোট হয়ে গেলো। আদিবাকে ছাড়া অন্য কাউকে কল্পনা ও করতে পারি না। আর পরনারীর সংস্পর্শে যাবো তো দুরের বিষয়। হইত আদিবাকে কেউ ভুল ভাল বুঝিয়েছে এরজন্য এসব বলছে আনমনে নিলয় এসব ভেবে বলে উঠলো
–” আর যাই বলো না কেন। আমার চরিত্র নিয়ে আর একটা ও বাজে কথা, আমি সহ্য করবো না। সুতরাং যার কাছ থেকে এসব শুনে আসছো তার নামটা শুধু বলো (রেগে)
–” সত্য কথা বলছি তো এর জন্য গায়ে কাটার মতো বিনছে তাই না-
–” আপতত এই টপিকটা বাদ দাও প্লিজ। আমার এসব কথা বলতে একদম ভালো লাগছে না।
–” নিজেকে এত সাধু ভেবে না ‘ অফিস গিয়ে তুমি কি করো তা খুব ভালোই জানি, আর প্রমাণ ও আজ পেয়েছি’
–” কি প্রমাণ পেয়েছো বলো (প্রচন্ড রেগে)
–” সে কথা আমার মুখে আনতে বাধছে” বলতে পারবো না
–” দেখো আদিবা ” মেজাজটা কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তোমাকে কে কি ভুল ভাল বুঝিয়েছে সেটাই তুমি আমার উপর ঝাড়ছ। তাছাড়া আমার চরিত্র সম্পর্কে তুমি ভালোই জানো সুতরাং অহেতুক কথা বাড়িয়ে ও না প্লিজ (দাতে দাত চেপে)
–” চরিত্রহীন একটা (আস্তে করে বলতেই নিলয়ের শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলে
–” অই কি বললা আমি চরিত্রহীন (চোখ রাঙিয়ে)
–” হ্যা হ্যা তুমি একটা চরিত্রহীন (চিৎকার মেরে)
আদিবার মুখে নিলয় চরিত্রহীন শুনে ঠাসস করে সজোরে একটা থাপ্পড়, আদিবার গালে মেরে দিয়ে বলে ”
–” আর একবার আমাকে চরিত্রহীন বললে অই গালেও এমন থাপ্পড়ই পড়বে ”
নিলয় এইবলে রুম ত্যাগ করলো। আর আদিবা ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো। নিলয় যে আদিবাকে থাপ্পড় মারবে তা কখনো আশা করেনি। যেটুকু ভালোবাসা ছিলো তা এবার নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। বুক ফেটে কান্না আসছে আদিবার। তার ভালোবাসার মানুষটিও যে এমন মিস বিহেব করতে পারে তা সত্যিই জানা ছিলো না –
উপরদিকে নিলয়ের ছাদের কিনায় দাঁড়িয়ে থেকে ভাবছে ” আদিবা আমাকে চরিত্রহীন ডাকছে কেন। কোনো মেয়ের সংস্পর্শে আমি কখনো যায়নি। তাহলে আদিবা কি দেখে এমন বিহেব করছে ” কিছুতেই তো বুঝতে পারছি না। নাকি অফিস কক্ষে আমাকে অই অবস্থায় দেখে চরিত্রহীন বলছে_?
এটাই হবে হইত, সেদিন আদিবার অই খাবার নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। হইত আমাকে অই অবস্থায় দেখে ভুল বুঝেছে ” কিছু সময় নিজের চোখের দেখাও ভুল হয়ে থাকে। আর সে ভুলই আদিবা করেছে। কিন্তু তাকে প্রমান দিবো কীভাবে যে আমি নির্দোষ
নিলয় আনমনে এসব ভেবে ছাদ থেকে নেমে রুমে চলে গেলো। দরজায় এসে লক্ষ্য করলো আদিবা কান্না করছে। এদেখে নিলয়ের ও খারাপ লাগা কাজ করছে। এই প্রথম আদিবার গায়ে সে তুলেছে। অনুশোচনায় আদিবার পাশে গিয়ে বসে বলে উঠলো-
–” সরি আদিবা
–” নিশ্চুপ (হয়ে কান্না করেই যাচ্ছে সে)
–” সরি বললাম তো। এবার কান্নাটা বন্ধ করো (আদিবার চোখের জল মুছে দিয়ে বলতেই আদিবা হাত ঝটকানি মেরে বলে
এই খবরদার তোর এই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে কখনো স্পর্শ করবি না —
আদিবার মুখ থেকে তুই শব্দটি শুনে নিলয় রীতিমতো অবাক হয়ে চোখ গুলো বড় বড় করে বলে উঠলো_?
!
!
#দৃষ্টির অগোচরে
#লেখকঃরনি হাসান
#পর্বঃ৩
______________
– অনুশোচনায় আদিবার পাশে গিয়ে বসে বলে উঠলো-
–” সরি আদিবা-
–” নিশ্চুপ (হয়ে কান্না করেই যাচ্ছে সে)
–” সরি বললাম তো। এবার কান্নাটা বন্ধ করো (আদিবার চোখের জল মুছে দিয়ে বলতেই আদিবা হাত ঝটকানি মেরে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে
–” এই খবরদার তোর এই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে কখনো স্পর্শ করবি না —
আদিবার মুখ থেকে তুই শব্দটি শুনে নিলয় রীতিমতো অবাক হয়ে চোখ গুলো বড় বড় করে বলে উঠলো_
–” তুমি আমাকে তুই তুংকারি করছো (অবাক চোখে)
–” হ্যা বেশ করেছি প্রয়োজনে আরও বলবো (রেগে)
আদিবার এমন বিহেব দেখে নিলয় ” নিশ্চুপ হয়ে যায়। বুঝতে পারলো এখন ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে এ অবস্থায় যতই তর্কবিতর্ক করবো ততই ঝামেলা সৃষ্টি হবে। তার থেকে সত্যটা আমাকে আগে বের করতে হবে যে অগোচরে আমাদের সম্পর্কে টা কে ভাংতে চাচ্ছে__?। নিলয় এসব ভেবে না খেয়ে আদিবার পাশে কম্বল মুড়িয়ে চোখ বুঝে ফেললো ” আদিবার মুখে তুই শব্দটা শুনে অনেকটাই মন খারাপ হই নিলয়ের”
এইদিকে আদিবা মনোস্থির করলো এই চরিত্রহীন স্বামীর সংসারে থাকবো না। চোখের আড়ালে পরনারীর সঙ্গে মিলামিশা করবে তা স্ত্রী হয়ে মুখ বুঝে সহ্য করার পাত্রী আদিবা নই। প্রয়োজনে চরিত্রহীন স্বামীর সংসার ত্যাগ করবো। তবুও কোনো চরিত্রহীন বদ লোকের সঙ্গে একই ছাদের নিচে থাকবো না। আদিবা আনমনে এসব ভেবে ঘুমিয়ে পড়লো।
রাতে কোনো রকম তারা মান অভিমানে ঘুমিয়ে রাত পাড়ি দিলো । কিন্তু রাতে নিলয় না খেয়ে ঘুমানোর জন্য সকালেই তার ঘুম ভেঙে গেলো এবং নিজেকে ক্ষুধার্ত অনুভব করলো-
চোখ মিলে পাশে তাকেই লক্ষ্য করলো আদিবা বিভোর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। আর রাতের থাপ্পড়টাও ফর্সা গালে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। খুব খারাপ লাগা ও কাজ করছে নিলয়ের মাঝে। অনুশোচনায় আদিবাকে জড়িয়ে ধরে কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেই। নিলয়ের জড়িয়ে ধরাতে আদিবা ঘুমের ঘোরেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ” কিছুক্ষন পর আদিবার ঘুম ভেঙে যায় এবং লক্ষ্য করে
নিলয়ের বুকের মাঝে জড়সড় হয়ে সে ঘুমিয়ে আছে। এদেখে দুরুত্বই আদিবা ওখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে চায়। কিন্তু নিলয়” আদিবাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে
–” কি হলো কোথায় যাচ্ছো_?
–” যেদিকে খুশি সেদিকেই যাবো তার কৈফিয়ত আপনারকে কেন দিবো। ছেড়ে দিন আমায় (নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে)
–” বাহ ভালোই সম্মান দিচ্ছো আমাকে, রাতে তুই করে বললা এখন আবার আপনি করে বলছো (হেসে)
নিলয়ের হাসি দেখে আদিবার রাগ তীব্র গতিতে বেড়ে গেলো। রাগান্বিত সুরেই বলে উঠলো
–” ফালতু কথা বাদ দিয়ে আমাকে ছেড়ে দিন। নইলে কিন্তু হাতে কামুড় দিবো
–” হ্যা দাও দেখি (দুষ্টমির হাসি হেসে)
নিলয় ফাজলামো করে বলতেই আদিবা সত্যিই সত্যিই হাতে কামুড় মেরে দিলো। কিন্তু নিলয়ের তাতে বিন্দুমাত্র ও রিয়াক্ট করলো না। উল্টো মুখে মিষ্টি হাসি এনে বলে
–” কি এবার রাগ কমেছে নাকি আরেকটা কামুড় দিতে ইচ্ছা করছে হুম
–” নিশ্চুপ
–” আদিবা আমি সত্যিই কোনো পরনারীর সংস্পর্শে যায়নি। আমি তো তোমাকেই ভালোবাসি। অন্য নারীর সংস্পর্শে যাওয়াই কোনো প্রশ্নই আসে না- বিশ্বাস করো (সিরিয়াসলি হয়ে)
–” নিশ্চুপ
–” বাবার এত বিলাসবহুল তা থাকার সত্ত্বেও কখনো বাজে পথে পা বাড়াইনি। স্টুডেন্ট লাইফে অনেক মেয়ের কাছ থেকেই প্রোপজাল পেয়েছি। কিন্তু তাদের কে কখনো গার্লফ্রেন্ড বানাইনি। ভেবেছি বিয়ে তো একজনকেই করবো মাঝখানে এত গার্লফ্রেন্ড বানিয়ে অনুভূতি বিতরণ করার কি দরকার। বিয়ে করে নই তার সঙ্গেই অনুভূতি সেয়ার করবো। এইভেবেই নিজেকে শুদ্ধ রেখেছি। কখনো বিশুদ্ধতায় পা রাখিনি। আর
রাতে যখন আমাকে চরিত্রহীন বললা তখন সত্যিই অনেক রাগ উঠেছিলো। রাগের ঘোরের তোমাকে থাপ্পড়টা মেরেছি। এরজন্য সত্যি আমি অনুতপ্ত। প্লিজ আর যাই করো না কেন আমাকে ভুল বুঝো না।
আদিবা নিলয়ের কথা শুনে বলে উঠলো
–” আমার চোখের দেখা কি তাহলে ভুল ছিলো_?
–” হ্যা ভুলই ছিলো। আমাদের চোখের দেখাও মাঝেমধ্যে ভুল হয়ে থাকে। সে ভুলটাই তোমার হয়েছে
–” সত্যকে এভাবে ধামাচাপা দিবেন না প্লিজ। আপনি অবৈধ সম্পর্ক করেছেন তা নিজ মুখে স্বীকার করুন।আর আমাকে কেউ আপনার বিষয়ে কানপড়া দেইনি যে তাদের কথা বিশ্বাস করবো। আমি নিজ চোখেই আপনার কৃতকর্ম দেখেছি। তাহলে নিজের চোখকে অবিশ্বাস করবো কীভাবে_?
আদিবার এমন ধারা কথা শুনে নিলয় চুপ হয়ে গেলো। কেন না এই মুহূর্তে তার কথা বলতে গেলে প্রমানের দরকার। আর মুহূর্তে নিলয় নিজেকে নির্দোষ হিসাবে উপস্থাপনা করবে তো দুরের বিষয়। অফিসে নিলয়কে কোন মেয়ে এমন জঘন্য কান্ড করেছে তা ও নিজেই জানা না। সবদিক থেকে ব্যাপারটা কঠিন হয়ে আসলো –
এইদিকে আদিবা নিলয়ের নিশ্চুপ থাকা দেখে সন্দেহের গতি প্রবল গতিতে বাড়তে লাগলো। সকালে দুইজনে ওই মন খারাপ নিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লো। নিলয় না খেয়েই অফিসে চলে গেলো। অফিসে এসেই ও কোনো কিছুতে সুস্তি পাচ্ছে না। বার বার মেয়েটির কথায় ভাবছে
এত বড় একটা গেম আমার সঙ্গে কে খেলতে পারে। আনমনে ভাবতেই সিসিটিভির ফুটেজ রেকর্ড এর কথা নিলয়ের মনে পড়ে গেলো। দুরুত্বই কম্পিউটার সামনে বসে পড়ে নিলয় –
কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটি করার কোনো তথ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে।কম্পিউটার ওখান থেকে উঠে আসতে যাবে। এরমধ্যে হঠাৎ গোপন সিসিটিভি ফুটেজ এর কথা মনে পড়ে গেলো। সাধারণত সবার দৃষ্টির অগোচরেই ক্যামেরা টা লাগানো হয়েছে। নিলয় আগ্রহ নিয়ে কম্পিউটারে চেক করতে লাগলো। অনেক চেষ্টা করার পর নিলয় ভিডিও ফুটেজ পেয়ে গেলো। নিয়ে ভিডিও ফুটেজটা ওপেন করতেই আঁতকে উঠে বলে
নুসরাত আমার ভালো বন্ধু হয়ে ও এমন নোংরা জঘন্য কাজটি কীভাবে করতে পারে ও তো আমার ভালো বন্ধুই ছিলো কিন্তু এসব করে তার কি লাভ। এ সবকিছু আমাকে জানতে হবে__?
তারপর সিসিটিভির ফুটেজ রেকর্ড ফোনে নিয়ে তড়িঘড়ি করে নুসরাতের বাসায় চলে যায়। দরজায় কয়েকবার কলিং বেল বাজানোর পর নুসরাত দরজা খুলে বলে উঠে
–” কে__?
নিলয়কে দেখার মাত্রই ” নুসরাত কিছুটা কাপা গলায় বলে
–” নিলয় তুই হঠাৎ আমাদের বাসায় কি মনে করে ভিতরে আই (কাপা কাপা গলায়)
নিলয় রাগান্বিত অবস্থায় বাসার ভিতরে গিয়ে বলে উঠলো
–” আমার সঙ্গে এই নোংরা গেমটা কেন খেললি নুসরাত (প্রচন্ড রেগে দাতে দাত চেপে)
নিলয়ের রাগান্বিত চেহারা দেখে নুসরাত তুতলিয়ে বলে
–” তু..ই কোন গে… মের কথা বলছি.স (ভয়ে থরথর করে কেপে)
নুসরাতের কথা শেষ হওয়ার মাত্রই নিলয় ঠাসস করে থাপ্পড় মেরে ভিডিও ফুটেজ টা দেখিয়ে বলে
এই জঘন্য কাজটা তুই কেনো করেছিস বল_? (রেগে)
নুসরাতকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখার পর নিরুপায় হয়ে সব সত্য কথা এক নাগাড়ে বলতে লাগলো।
!
!
(চলবে)