দ্বিতীয়_জন পর্ব ২

0
1225

দ্বিতীয়_জন পর্ব ২
#Meherika_ayat (আরাধ্যা)

অনু দরজা খুলে দেখলো আদিত্য এসেছে।
আদিত্যঃ আরে তুমি ঘুমাও নি?
অনুঃ না।
আদিত্যঃ খেয়েছো?
অনুঃ না।
আদিত্যঃ আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,
তুমি টুনিকে বলো টেবিলে খাবার দিতে।
অনুঃ ওরা তো সবাই ঘুমিয়ে গেছে, আমি খাবার নিচ্ছি। ওদের জাগানোর দরকার পড়বে না।
সারাদিন পরিশ্রম করেছে। একটু ঘুমাক।
আদিত্য নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল।
.
আদি ও অনু খাওয়া শেষ করে রুমে আসলো।
আদি অনুর দিকে তাকিয়ে আছে,
অনু মাথা আঁচড়াচ্ছে। ওর চুল গুলো একেবারে হাঁটু পর্যন্ত এসে পড়েছে।
গায়ের রঙ ফর্সা, ঠোঁট গুলো হালকা গোলাপি,
ঠোঁটের উপর একটা তিল আছে।
কালো একটা শাড়ি পরেছে অনু,
সব মিলে খুব মায়াবী লাগছে অনুকে।
আদিঃ খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।
অনু লজ্জায় লাল হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।
.
অনু এসে শুয়ে পড়লো। আদিত্য লেপটপে কাজ করছে। কিছুক্ষণ পর আদিত্য শুয়ে পড়লো।
অনু হঠাৎ একটা শব্দ শুনতে পেল।
অনু ভাবলো, হয়তো আদিত্য হবে। অনু ঘুমিয়ে গেল, কিছুক্ষণ পর আবার একই শব্দ শুনতে পায় অনু।
চোখ মেলে অনু দেখলো আদি ঘুমিয়ে আছে। তাহলে বারান্দা থেকে কিসের শব্দ আসছে? ভাবছে অনু।
উঠে গিয়ে দেখবো একবার? না না হয়তো বাতাসে প্রবলতায় চেয়ার নড়ে উঠেছে।
এখানে দেখার কি আছে? মনে মনে বলল অনু।
অনেকক্ষণ ধরে শব্দ হলো। অনু বাতাস মনে করে ঘুমিয়ে গেল।
.
সকালে উঠে অনু দেখলো, আদিত্য পাশে নেই।
সে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো।
অনুঃ পাখিইইই!
পাখিঃ জ্বী, বউমণি।
অনুঃ তোমাদের ভাইয়া কোথায়?
পাখিঃ ভাইজান তো সকালেই অফিসে চলে গেছে।
অনুঃ নাস্তা করে গেছে?
পাখিঃ জ্বী বউমণি।
অনুঃ আমাকে জাগাও নি কেন তোমরা?
বেলা ১১ টা বেজে গেছে।
পাখিঃ ভাইজান আমাগোরে কই গেছে আপনারে জাগাইতে না, আর কইছে আপনি উঠলে আপনার যা লাগে করে দিতাম।
অনুঃ আচ্ছা।
.
অনু নাস্তা করে নিল।
অনু খুবই ধার্মিক একটা মেয়ে। সব সময় নামাজ কালাম পড়ে আর পর্দাশীল সে।
এই জন্যই আদির বাবা অনুকে ছেলের বউ করে আনলেন।
অনু বসে বসে মাওলানা তারেক জামিল সাহেবের মহিলাদের বয়ান বই টা পড়লো।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সে দেখে দুপুর ১ টা বেজে গেছে।
অনু ওজু করে নামাজ আদায় করে নিল।
.
টুনি অনুর রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,
বউমণি আইতাম ? অনু উদ্দেশ্যে বলল টুনি,
অনু সালাম ফিরিয়ে বলল,
আসো।
টুনিঃ বউমণি,
ভাইজান কইছে আজকে ওনার অফিসে কিসের জরুরি কাম আছে আইতে আইতে রাইত হইবো,
আমাগোরে কইছে আপনি যাতে অপেক্ষা না করেন ভাইজানের জন্য। খাই লই ঘুমাইতে কই গেছে।
অনুঃ আচ্ছা। তুমি খাবার নাও আমি আসছি।
তোমরা খেয়েছো?
টুনিঃ না।
অনুঃ তোমাদের জন্য ও খাবার নাও এক সাথে খেয়ে নিও।
টুনিঃ আইচ্ছা।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে অনু কতোক্ষণ হাটা হাটি করলো।
তারপর টুনিকে ডাকে বলল,
অনুঃ টুনি, এই বাড়ি টা আমার দেখা হয়নি ভালো করে। চল আমি পুরো বাড়ি টা ভালো করে একবার দেখি।
কথা শুনেই টুনির মুখে হাঁসি যেন কোথায় উড়ে গেল।
টুনিঃ বউমণি, আইজকা না। আরেক দিন দেইখেন।
অনুঃ কেন? আজকে দেখলে কি সমস্যা?
কি হয়েছে? তুমি এভাবে ভয় পাচ্ছ কেন?
টুনিঃ কই না।
অনুঃ তাহলে চল।
টুনি অনুকে পুরো বাড়ি ঘুরে দেখাতে থাকলো।
অনু ও বেশ ভালো লাগছে, অনু দেখলো বাসার সামনে বড় বাগান, বাগানে সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ আছে। সাথে একটা বড় শিমুল গাছ।
অনু আগে বাগান টা খেয়ালই করেনি। আর করবেই বা কি করে এই বাড়িতে তো মাত্র দু বারই এসেছিল।
অনুঃ বাগান টা তো বেশ সুন্দর। দাঁড়াও আমি একটা ফুল নিয়ে আসি।
টুনিঃ না বউমণি এমন ভুল করো না কখনও।
(চেঁচিয়ে)
অনুঃ কেন? কি হয়েছে?
টুনিঃ আসোলে, ভাইজান ফুল গাছ গুলো খুব শখ কইরা গাছ গুলা লাগাইছে , কেউ ওনার গাছ থেকে ফুল ছিঁড়লে ওনার খুব রাগ হয়।
অনুঃ ওহহহ, আচ্ছা তাই বলো। আমি তো ভেবেছি কি না কি।
অনেক্ষণ ঘুরাঘুরির পর ওরা বাসায় ঢুকলো।
অনু নিজের রুম থেকে বেরিয়ে হাটতে হাটতে
দেখলো আদিত্যর রুমের পর ওর বাবা মার রুম
তারপর আনহার এরপর আরো একটা রুম আছে। রুমটার সামনে গিয়ে অনু দেখলো ওতে তালা দেওয়া।
অনু টুনিকে ডাকে বলল,
রুমটা কার এটাতে তালা লাগানো কেন টুনি?
টুনির ভয়ে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে,
কিছুক্ষণ চুপ থেকে টুনি বলল,
চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here