দ্বিতীয়_জন পর্ব_৪

0
1245

দ্বিতীয়_জন
পর্ব_৪
#Meherika_Ayat_(আরাধ্যা)
চাবিটা দিতেই তালা খুলে গেল।
অনু মাত্র দরজা কড়া টা খুলেছে তখনি কলিং বেল বেজে উঠে।
অনু তাড়াতাড়ি করে তালা সহ চাবির বাক্সটাকে আলমারিতে রেখে আসে। অনু আর খেয়াল করেনি যে দরজায় তালা দেওয়া হলো না আর কড়া টাও খোলা।
তারপর নিচে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।
আদিত্য এসেছে, তুমি এখনও ঘুমাওনি?
অনুর উদ্দেশ্যে বলল আদি।
অনুঃ না আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
আদিত্যঃ আচ্ছা, নিশ্চয়ই খাওনি?
টেবিলে খাবার নাও। আমি আসছি।
.
অনু শুয়ে আছে খাটে। আদিত্য সোফায় বসে বসে কি যেন ভাবছে।
অনু এসে আদির কাঁধে মাথা রাখলো।
আদিত্যঃ তুমি ঠিক আছো?
অনুঃ কেন? আমাকে কোন দিক থেকে ঠিক লাগছে না বলুন? (মাথা উঠিয়ে)
আদিত্যঃ না,এমনি।
অনুঃ সারাদিন তো বাইরে থাকেন, এখন একটু পেয়েছি আপনাকে। তাও আপনার ভালো লাগছে না?
আদিত্যঃ না, তা বলছি না।
অনুঃ আচ্ছা আপনি এশার নামাজ পড়েছেন?
আদিত্যঃ না, আসোলে টাইম ই পাই না, আর খুব ক্লান্ত থাকি তো,
তাই কোনো নামাজই পড়া হয় না।
অনুঃ কিইইইইইইইইহহহহ?????
আপনি নামাজ পড়েন না? ছি ছি ছি,
অফিসের কাজ তো সারাদিন রাত করলেও ক্লান্ত হোন না, আর যেই আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁকে একটু ডাকার সময় নেই?
অথচ দিন রাত তাঁর দেওয়া নিয়ামত ভোগ করছেন, তাঁর শোকর করার সময় নেই?
আমরা আসোলে খুব স্বার্থপর। আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত ভোগ করি তাঁরই দুনিয়াতে থাকি, কিন্তু তাঁকেই ডাকার সময় পাই না। অন্যের কাজ করার সময় আমাদের কোনো ক্লান্তি লাগে না।
আদিত্য কিছুক্ষণ চুপ থাকলো আর মনে মনে ভাবলো, অনু তো ঠিকই বলেছে।
আচ্ছা কাল থেকে সব নামাজ পড়বো,
বলল আদি।
অনুঃ পিংকি প্রমিজ?
আদিত্যঃ সেটা আবার কি? আচ্ছা যাই হোক, একদম পাক্কা প্রমিজ।
অনু আদির গালে একটা উম্ময়াহ দিয়ে বলল,
এখন থেকে দেখবেন আপনার মন একদম ভালো থাকবে।
আদির কাছে অনু এই বাচ্চামি গুলো খুব ভালো লাগছে, সে অনু মুখের উপর পড়ে থাকা চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে দিল।
অনুঃ আচ্ছা চলেন, অনেক রাত হয়েছে
ঘুমবো।
অনু আদির বুকের উপর ঘুমিয়ে গেল।
.
খচখচ শব্দ শুনে অনুর ঘুম ভেঙে গেল।
অনু দেখলো আদির বুকের উপর সে ঘুমিয়ে আছে। সে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো রাত ২ টা বাজে…..
উনি তো এখানেই আছে, তাহলে স্টাডি রুম থেকে কিসের শব্দ আসছে? মনে মনে বলল, অনু।
শব্দটা যেন আরো বেড়ে যাচ্ছে। অনু উঠে স্টাডি রুম গিয়ে দেখলো, আদি ইজে চেয়ারে বসে বসে বই পড়ছে আর সিগারেট খাচ্ছে।
আদিঃ তুমি এখনও জেগে আছো অনু?
কিছু লাগবে?
অনুর ভয়ে গলাটা যেন শুকিয়ে গেছে,
আর এক মিনিটও দেরি না করে নিজের রুমে এসে শুয়ে পড়লো অনু।
উফফফ এতো রাতে কোথায় গেছিলে?
ঘুমিয়ে পড়। ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,
আদি।
অনু অনবরত ঘামছে, কি দেখেছেও?
আর কি ভাবেই বা সম্ভব এটা? নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলো অনু।
ভাবতে ভাবতে ফজরের আযান হয়ে গেছে।
সারারাত ঘুম হয়নি অনুর। সে উঠে ফজর নামাজ আদায় করে নিল।
সে ভাবছে, আদিকে তো কখনও সিগারেট খেতে দেখিনি। তাহলে কাল রাতে কেন?
অনু আদিকে জাগিয়ে দিল, আদি উঠে নামাজ পড়ে নিল।
.
আদি অফিসে চলে গেছে।
অনু রান্না ঘরে বসে বসে ভাবছে রাতের কথা গুলো।
অনুঃ আচ্ছা টুনি তোমাদের আগের বউমণি কিভাবে মারা গেছে?
পাখিঃ হেতেন নাকি দুই জন মানুষ দেখতো।
টুনিঃ পাখিইইই, চুফফ কইরবি?
না বউমণি আপনে পাখির কতায় কান দিয়েন না। আসোলে আগের বউমণির মাতাত কিয়ের রোগ ছিল, আবোল তাবোল কতা কইতো।
হেই রোগেই হেতেন মরি গেছিল।
অনু বেশ বুঝতে পেরেছে পাখিইই ঠিক বলেছে,
আর টুনি সব জানে। কিন্তু অনু কাছে লুকাচ্ছে ব্যাপার টা।
ওই রুমটা তেই আছে আমার সব প্রশ্নের উত্তর। মনে মনে বলল অনু।
অনুঃ আমি আসছি, তোমরা কাজ করো।
অনু যাওয়ার পর টুনি পাখিকে এক ধমক দিয়ে বলল, খালাম্মা খালু কি কই গেছে তোর মনে নাই?
পাখিঃ ভুল হই গেছে বুবু।
.
অনু ওই রুমের দিকে পা বাড়ালো।
দেখলো দরজাটা সামান্য খোলা কেউ যেন রুমটাতে ঢুকেছে।
সে রুমে ঢুকে লাইট অন করলো,
তারপর রুমের দরজা টা ভেতর থেকে লক করে দিল।
অনু যা দেখলো, ওর তো ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।
এতো আদি……….
চলবে…….
( আমার গল্পটা কার মনে কতো টা জায়গা করেছে তা দেখার পরই নেক্সট পর্ব দিব। আর কমেন্টে কেউ প্লিজ নেক্সট / নাইচ /এন /এফ / এসব লিখেলে পরের পর্ব দেওয়া হবে না।
গল্পের পরবর্তী পর্বে কি হবে কারো আইডিয়া থাকলে কমেন্টে বলবেন। আর যদি কেউ বলে এটা ওই লেখকের গল্প তাদের বলছি, প্লিজ আমার গল্প শেষ পর্যন্ত না পড়ে এসব বলবেন না। ভালো না লাগলে ইগনোর করুন। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here