#দ্যা_লিফট
#পর্ব_১২,১৩
#Writer_Shanta_islam
পর্ব_১২
সাদের মুখে পানির ছিটে ফোটা দিতেই সাদ আচমকা উঠে চারোদিকে চোখ বুলাতে থাকে। তুমি ঠিকাছো সাদ?
অভির প্রশ্নে সাদ একটু কেপে উঠে। ইশার দিকে চোখ যেতেই দু কি তিন সেকেন্ড অবাক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সাদের বুলি ফোটে-অভি ভাই জানেন একটু আগে কি হয়েছে? ইশা ওই মন্সটারটাকে এমন ভাবে মেরেছে ওর দুই টুকরো হয়ে গেছে। আপু শুধু হাওয়ায় হাত রেখে হাতটাকে নাড়াতেই মন্সটারটা দূর থেকে ছটফট করতে শুরু করে। তারপর আপু এভাবে ওভাবে কীভাবে যে মেরেছে অভি ভাই। ইটস জেস্ট ওসাম। ইশা আপুর কাছে এমন সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার থাকলে আমার কাছেও নিশ্চয়ই আছে। সাদ হাত উঠিয়ে স্পাইডার ম্যানের মতো আঙ্গুল করে কিছু একটা করার চেস্টা করছে। কিন্তু কিছু হচ্ছে না।
-সাদ থামো,
-এক মিনিট অভি ভাই একটু অপেক্ষা করেন আমার হাত থেকে এখনি পাওয়ার বের হবে। আমার বোনের মধ্যে পাওয়ার থাকলে আমার মধ্যেও পাওয়ার লুকানো আছে। আমি ছোট তো তাই বের হতে দেরি হচ্ছে। সাদ আবার হাত উচু করে দু হাত এদিক ওদিক করছে কিন্তু কিছু হচ্ছে না। ব্যাপার কি এতো দেরি হচ্ছে কেনো?
-সাদ আমার কথা শুনো,
-আরে দারান অভি ভাই, এখনি শক্তিটা বের হবে মনে হচ্ছে। ইস আগে কেনো যে জানলাম না। নির্ঘাত আমার বাবারো এই শক্তি ছিলো নাহলে ইশাপু পেলো কীভাবে। বাবা তো ছুপা রোস্তম নিকলা। ওহ সিট হয়তো আমাদের চৌদ্দগুষ্টির এ শক্তি ছিলো। তাই আমাদের পুরো ফ্যামিলির আছে।
-সাদ এই শক্তি ইশা তোমার পরিবার থেকে পায়নি।
-কি বলেন ভাই?পরিবার থেকে পায়নি? তাহলে কীভাবে পেলো? এই ইশাপু কীভাবে পেলি রে। স্পাইডার ম্যানের মতো তোকেও কোনো মাকড়সা টাকড়সা কেটেছে নাকি?
-কেচো কেটেছিলো,আরো শুনবি?
-এভাবে রেগে বলছিস কেনো,হিংসা করিস না,তোর মতো একটু পাওয়ার পেলে এমন কি হবে? এই সিরিয়াসলি তোকে কোনো কেচো কেটেছিলো?
অভি এবার না হেসে পারছে না। ইশার ব্যাপারে আমার মন্তব্যটা ভুল হলেও ওর পরিবারের ব্যাপারে সেটা একশতে একশ মিলে গেছে। হাফ নয় ফুল পাগলের ফ্যামিলি।
-সাদ তুমি যেমনটা ভাবছো তেমন কিছুই না। ইশার এসব শুরু হয়েছে সেই লিফট থেকে। এমন সময় ডেবিড রুমে প্রবেশ করে বললো রিমাসটার লাশ সরিয়ে দিয়েছি। এখন আর কেও খুজে পাবে না।
-ধন্যবাদ ডেবিড,জেনিকেও কল করেছি ও যেকোনো সময় এখানে চলে আসবে।
-এসব করে কি হবে মি.অভি?
ইশার প্রশ্নে অভি একটু হকচকিয়ে গেলো। মেয়েটা কি বলতে চাইছে? ইশা কি বলছো? এসব করে কি হবে মানে? আমরা সবাই মিলে এই পরিস্থিতি থেকে তোমাকে বের করার চেষ্টা করবো।
ইশা চোখ বন্ধ করে দু-ফোটা অশ্রু ফেলে।
-যা হচ্ছে এসব আটকানোর ক্ষমতা কারো নেই, না আপনার না ডেবিডের না আমার।
-ইশা সব ঠিক হয়ে যাবে। বিশ্বাস রাখো আমার উপর। আমি সব ঠিক করে দিব।
-লাভ নেই মি.অভি যুদ্ধ শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই।
ইশা আর অভির কথার মাঝে ওয়াইট রিমাস ডেবিড বিনতি কন্ঠে বললো- কিন্তু মিস ইশা আপনিই যে আমাদের শেষ ভরসা।।
অভি ইশা আর ডেবিডের কথার কোনো আগা গোড়া খুজে পেলো না।
-এক মিনিট এখানে কীসের কথা হচ্ছে? ইশা তুমি কি বলতে চাইছো?
-সরি অভি আপনাকে আগেই জানানো উচিৎ ছিলো ওয়াইট রিমাস আর ব্লেক রিমাসদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হতে চলেছে। মিস ইশাই এখন আমাদের শেষ ভরসা।
-ডেবিড ওরা আপনাদের বিরুদ্ধে আর্মি তৈরি করছে। তারা আপনাদের থেকে সংখ্যায় অনেক বেশি। তার থেকে বড় কথা আপনাদের মধ্যেই বিশ্বাস ঘাতক লুকিয়ে আছে।
-কি বলছেন মিস ইশা?
অভি ইশার সামনে দাড়িয়ে গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করে-এসব তুমি জানলে কীভাবে?
-আমি জানি না, জানি না এসব কীভাবে বলছি বা করছি। কিন্তু ভিতর থেকে আভাস পাচ্ছি,ভয়ংকর কিছু হতে চলেছে।
-মিস ইশা কিছু জানে না, স্টনের পাওয়ার দ্বারা উনি রিমাস ওয়ার্ল্ডের সব কিছু আগে থেকে ফিল করতে পারবে কারণ উনি এখন রিওয়ার্ল্ডের নতুন কুইন।
-মানে? আমার বোন কুইন? কীভাবে? ও মাই গড!
-রিওয়ার্ল্ডের কিং বা কুইনি শুধু পারে রিওয়ার্ল্ডের প্রবেশ দাড়ের সমতা রক্ষা করতে।
ইশা স্তব্ধ হয়ে বসে পড়ে অভির পাশে সাদ দাঁড়িয়ে অবাক চাহুনিতে একবার ইশার দিকে তাকায় আরেকবার ওয়াইট রিমাস ডেবিডের দিকে তাকায়।
সাদ বিচলিত কন্ঠে বলে উঠে- আচ্ছা ডেবিড পাওয়ার কী ট্রান্সফার করা যায়। ধরেন ইশা আপুর কাছ থেকে আমার কাছে চলে আসলো।
ডেবিড মুচকি হেসে বললো- না,স্টনের পাওয়ারের উপর কারো মর্জি চলে না। স্টন নিজ ইচ্ছায় শক্তি বহনকারীকে বাছাই করে। স্টনের পাওয়ার স্বইচ্ছায় মিস ইশার মধ্যে ডুকেছে। এরপর কি হবে বা কি হতে পারে সবকিছু মিস ইশা বলতে পারবে। কিন্তু উনি এখনো জানে না উনার কাছে কী শক্তি আছে। আর কীভাবে তা ব্যবহার করতে হবে।
এমন সময় ইশাদের বাসার বেল বেজে উঠে।
-এই যা বাবা মা চলে এলো নাকি? এখন কী করবো অভি ভাই? বাবা মা এসব জানতে পারলে সবার আগে আমাকে জুতো পেটা করবে৷ ইশাপু যতই দোষ করুক না কেনো ওর নাম পড়বে না। অভি কিছু বলতে নিলে অভির ফোন বেজে ওঠে। ফোনটা ধরতেই স্ক্রিনে জেনির নাম্বার দেখতে পায়।
-হয়তো জেনি এসেছে। এক মিনিট আমি দেখছি।
অভি রুম থেকে বের হয়ে যায়। ইশা বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
-মি. ডেবিড আপনি কি দয়া করে বলতে পারেন আমি এসব থেকে বের হবো কীভাবে?
-মিস ইশা আপনি আমাকে মি.অভির মতো তুমি করে সম্বোধন করলে খুশি হব। আপনি এখন আমাদের রাজ্যের কুইন। ব্লাক স্টনের শক্তি বহনকারী প্রতিটা ব্যক্তিই আমাদের কাছে সম্মানীয়। আর এসব থেকে কীভাবে বের হবেন এই কথা আমি নিজেও জানি না।
– এক্সকিউজ মি,এখানে কীসের কথা হচ্ছে। ইশা পিছু তাকিয়ে দেখে জেনি আর অভি দুজন এক সাথে রুমে প্রবেশ করছে। ইশাকে দেখা মাত্রই জেনির পা থেমে যায়।
-অভি তুমি আমাকে এখানে ডেকেছো কেনো? ওয়াট ননসেন্স! জেনি রুম থেকে বের হতে নিলে অভি পিছন থেকে জেনির হাত ধরে ফেলে।
-প্লিজ জেনি এখানে তোমার প্রয়োজন,
-কিন্তু অভি এই মেয়ে একটা মিথ্যাবাদী তুমিই বলেছিলে। জেনির কথাগুলো ইশার বুকে আঘাত হানে। কি এমন করেছে সে যে জেনি তার উপর এতো রেগে আছে।
-জেনি আগে সব কিছু স্থির হয়ে শুনে নেও। ডেবিড তুমি প্রথম থেকে সবাইকে সব কিছু খুলে বলো। ডেবিড দেরি না করে ব্লাক স্টনের কাহিনি প্রথম থেকে শুধু করে লিফটে ঘটে যাওয়া সবগুলো ঘটনা খুলে বলে। জেনি ডেবিডের কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। শেষ মেষ এই মেয়ে ব্লাক স্টনের শক্তির ওনার। সাদ অভি আর জেনির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সাদকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে জেনি সাদকে প্রশ্ন করে- তুমি এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? জেনির প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে সাদ হা করে তাকিয়ে আছে।
-সাদ তুমি ঠিক আছো? অভির কথায় সাদ রিয়েক্ট করে। -ওয়াও অভি ভাই। ওয়াও, লাইক সিরিয়াসলি? আপনিও মন্সটারদের সাথে লড়াই করেছিলেন?ওয়াও। হ্যাক্সিসল দিয়ে মন্সটারের গায়ে আগুন লাগানোর ব্যাপারটা জোস ছিলো আর জেনি আপু নিজের হাত কেটে রক্তের গন্ধে রিমাসকে আপনার দিকে আকৃষ্ট করার আইডিয়াটাও জেস্ট ওসাম। জেনি আপু আর অভি ভাই আপনারা তো ছুপা রুস্তম বের হলেন। পুরো ফেন হয়ে গেলাম আপনাদের। ইস সিনগুলো ইমাজিন করলেই গায়ে কাটা দিয়ে ওঠে। আর এদিকে আমার বোন কিছু হলেই পদ্মা মেঘনা যমুনা ভাসিয়ে দেয়। উনাদের থেকে কিছু শিখ ইশাপু। ইশা কিছু বললো না, সাদের মতো ইশাও অনেকটা অবাক হয়েছে জেনি আর অভি এর আগেও রিমাসদের সাথে লড়াই করেছে এটা অবাক হওয়ার মতোই।
-তাহলে অভি এখন এই লড়াই আমরা কীভাবে থামাবো। একবার ব্লেক রিমাসরা যুদ্ধে জয়ী হলে ওরা পৃথিবীতেও হামলা করবে। যেভাবেই হোক আমাদের এসব থামাতে হবে। কিন্তু কীভাবে?
-ওরা নিজেদের আর্মি প্রস্তুত করছে, আমাদেরও নিজেদের টিম বানাতে হবে।
-কিন্তু অভি ইশা তুমি আমি আর ডেবিড এই চারজন মিলে এতো বড় আর্মির সাথে লড়াই করবো কীভাবে?
-চারজন নয় ছয়জন,ইশার কথাশুনে সবার দৃষ্টি ওর দিকে একত্রিত হয়। এতোক্ষণ ইশা চুপ করে ছিলো। আচমকা ইশার কথাশুনে সবাই একসাথে ইশার দিকে তাকায়।
-কিন্তু ইশা এখানে আমরা চারজন। ছয়জন হই কীভাবে? অভি জেনিকে ইশারা দিয়ে চুপ করতে বলে। অভি কিছু একটা বুঝতে পেরেছে। এতোক্ষণ সবাই কথা বলছিলো কিন্তু ইশা চুপচাপ এক কোনায় দাড়িয়ে কিছু একটা ভাবছিলো। মেয়েটার মাথায় কী চলছে?
-ইশা তোমার মাথায় কী চলছে? আমাদের একটু খুলে বলো।
-সাদও আমাদের সাথে যাবে। ইশার কথায় জেনি বিপত্তি করে বললো- কি বলছো ইশা সাদ অনেক ছোট। রিমাসরা খুব ডেঞ্জারাস,ও আমাদের সাথে রিওয়ার্ল্ডে গেলে ওর ক্ষতি হতে পারে।
-আমার সাথে কে যাবে,কেনো যাবে সেটা নিয়ে আমি কোনো কইফত দিতে চাই না। প্লিজ জেনি আমাকে এই বিষয়ে আর কোনো প্রশ্ন করবেন না৷ ইশার কথায় সাদ খুশি হলেও জেনি ততোটা খুশি হয়নি। জেনি আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
জেনি আর ইশাকে এখন সাপ আর নেকরের মতো লাগছে, মনে হচ্ছে জন্ম জন্মের শত্রু। দুজনকে এভাবে তর্কে জড়াতে দেখে ডেবিড অভির কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বললো- দুই বিরধী নেত্রীর তর্ক বিতর্কের মধ্যে কীভাবে টিম বানাবেন মি.অভি?
-তুমি এটা ভাবছো ডেবিড,আর আমার ভাবনাটা অন্য কিছু নিয়ে।
-কী নিয়ে ভাবছেন,জানতে পারি কী?
-সাদের পরে সেই ষষ্ঠ ব্যক্তিটা কে?
চলবে,,,
#দ্যা_লিফট
#পর্ব_১৩
#Writer_Shanta_islam
-জেনি এভাবে ওখান থেকে চলে এলে কেনো?
-তো কি করবো? তুমি দেখতে পারছো না ইশা এসব কি বলছে। সাদ খুব ছোট, ও ওই ভয়ংকর প্রানীগুলোর সাথে কীভাবে লড়াই করবে তুমিই বলো?
-কেনো জানি মনে হলো ইশা কিছু একটা ভেবে সাদকে নিতে চাইছে তাই তখন কিছু বলিনি। কিন্তু সাদ আসলেই খুব ছোট আমি এই বিষয়ে ইশার সাথে কথা বলবো তুমি চিন্তা করো না।
-শুধু সাদ নয় ইশাও যতেষ্ট ছোট, বয়সে এবং বুদ্ধিতে। এখন আমার ভয় হচ্ছে যেই মেয়ে নিজেকেই ডিফেন্স করতে পারে না সে মেয়ে রিওয়ার্ল্ডকে কীভাবে বাচাবে। তার থেকে বড় কথা স্টনের পাওয়ার প্রোপারলি ইউস করতে না পারলে তখন কী হবে? উফ স্টন কেনো যে এই মেয়েকে বাছাই করলো বুঝতে পারছি না।
-ইশাকে সেল্ফ ডিফেন্স শিখানোর দায়িত্ব তোমার?
-ওয়াট? তুমি কী বলতে চাইছো? আমি ইশাকে লড়াই করতে শিখাবো? আর ইউ ম্যাড অভি?
-ইশার নিজেকে রক্ষা করতে শুধু স্টনের পাওয়ার যতেষ্ট নয় তাই ওকে লড়াই শিখতে হবে।
-কখনোই না,যে মেয়ের বোধে এতোটুকু ডুকছে না কোনটা সঠিক কোনটা ভুল তাকে আমি কী শিখাবো।
-ইশা আমার আর তোমার মতো টুসি আর রবিনকে হারানোর ভয় ফিল করেনি,তাই ও সাদকে নিয়ে যেতে চাইছে। আমার আর তোমার মধ্যে যেই এক্সপেরিয়েন্স আছে ইশার মধ্যে সেটা নেই। এখন তোমাকে আমাদের টিমে প্রয়োজন,আমি একা এই যুদ্ধ থামাতে পারবো না। প্লিজ জেনি না করো না। জেনি অভির কথা ফিরাতে পারলো না। অভি ইশার বাবা মাকে ওদের মামা বাড়ি আটকে রাখার জন্য পরামর্শ দিলো,ব্লেক রিমাসরা ইশার উপর যখন এটার্ক করেছে তাহলে ওর পরিবারের উপর এটার্ক করবে না এটার কোনো গ্যারান্টি নেই। সাদ ওর বাবা মাকে আটকানোর ব্যবস্থা করে নেয়। ডেবিডকে রিওয়ার্ল্ডে পাঠানো হয়েছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওয়াইট রিমাসদেরও একটা আর্মি বানাতে হবে। এই দু-দিনে জেনি আর ইশার মধ্যে মোটামুটি একটা ভাব জমেছে। প্রথম প্রথম তর্ক বিতর্কে জড়ালেও এখন অনেকটা সমঝোতায় আনা গেছে দুই নেত্রীকে। সব কিছু অভির প্ল্যান অনুযায়ী চললেও কেনো জানি ইশার জন্য ভয় কাজ করছে, মেয়েটা পারবে তো।
জেনি একটা বোতল উচুতে রেখে ইশাকে সেটায় টার্গেট করে কিক মারতে বললো। ইশা অনেকটা কাছাকাছি পা উচু করেও বোতল পর্যন্ত পৌছাতে পারলো না। একটুর জন্য কিকটা মিস হয়ে গেলো।
-ওহ সিট,
-ইটস ওকে,আবার মারো। ইশা আবারো বোতলে কিক করলো৷ কিন্তু বোতল ভাঙলো না।
-এভাবে নয় ইশা, এখন আমি যেই টেকনিকটা দেখিয়ে দিচ্ছি তুমি সেভাবে ফলো করার চেষ্টা করো। দেখো ডান পা টা পিছনে রেখে একটু জুকিয়ে বাম পায়ে পুরো শক্তি দিয়ে লাফ মারার মতো ডান পাটা উচুতে ছুড়ে মারবে। জেনি এক কিকে উচুতে রাখা বোতলটা ভেঙে ফেললো।
-ওয়াও,আপনাকে দেখলে কেও বলবে না যে আপনি একজন সাইনটিস্ট।
ইশার কথায় জেনি একটু মুচকি হেসে বললো- আমেরিকার গুপ্ত সাইনটিস্ট হতে গেলে সবকিছুই শিখতে হয়। একের মধ্যে দশ যাকে বলে।
-আপনি আবার আমেরিকায় ফিরে যাননি কেনো? ওখানে তো আপনার সবকিছু।
ইশার কথাশুনে জেনি অচেতন কন্ঠে বললো-আগের থেকে অনেকটা ভালো করেছো। এখন রেস্ট নেও পরে আবার প্রেক্টিস শুরু করবো।
-আপনি আমার কথা ঘুরানোর চেষ্টা করছেন। ওয়েট আমি আপনাকে বলি আপনি শুধু মি.অভির জন্য এখানে পরে আছেন তাই না?
-তো তুমি আমার মাইন্ড রিড করা শুরু করেছো দেখছি।
-হ্যা হালকা পাতলা বলতে পারেন। আপনি মি.অভিকে খুব ভালোবাসেন তাই না?
-প্লিজ ইশা এই টপিকে কথা না বললেই ভালো হয়।
-হ্যাঁ এভাবেই এড়িয়ে চলুন,কিন্তু কতোদিন এভাবে এড়িয়ে চলবেন? একদিন না একদিন তো উনাকে বলতেই হবে যে আপনি উনাকে কতোটা ভালোবাসেন।
জেনি মাথা নিচু করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো-
আমার কিছু করার নেই,অনেকবার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। ওই গাধাটাও কেমন বলো তো, ও কি বুঝে না? আচ্ছা ইশা তুমি কী ওর মাইন্ড রিড করে আমাকে একটু বলতে পারবে ওর ভিতরে কি চলছে?
-আপনার কি মনে হয় আমি চেষ্টা করিনি। অনেক বার চেষ্টা করেছি কিন্তু সবার মাইন্ড রিড করতে পারলেও মি.অভির মাইন্ড রিড করতে পারিনি। কেনো পারিনি সেটা বলতে পারছি না কিন্তু উনি যে নেহাৎ একজন ভালো মানুষ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
-এখানে কী আমাকে নিয়ে কথা হচ্ছে? জেনি ইশাকে সেল্ফ ডিফেন্স করা শিখাচ্ছিলো আর অভির ব্যাপারে কথা বলছিলো এমন সময় অভির আগমন ঘটে।
-আপনি এখানে কেনো? জানেন না পারমিশন ছাড়া মেয়েদের রুমে ডুকতে নেই!
-বাহ এখন আমি ভিলেন হয়ে গেলাম, বায় দ্যা ওয়ে এটা আমার বাসা আর আমার বাসায় আমি ডুকতে পারবো না এটা আবার কেমন কথা?
-ওহ তাহলে এখন নিজের বাসা বলে অধিকার ফলাচ্ছেন?
-আরে থামো থামো কি শুরু করলে তোমরা। হয়েছে ইশা এখন আর প্রেক্টিস করতে হবে না। ঘন্টা খানিক পর আবার শুরু করবো।
-না জেনি আপু যতক্ষন পর্যন্ত এই বোতলটা ভাঙতে না পারছি ততক্ষন পর্যন্ত থামবো না। আপনি বরং একটু রেস্ট নিন।
-জেনি আমার জন্য একটা ব্লেক কফি!
-ওকে এখনি আনছি,অপেক্ষা করো। কথাটা বলে জেনি রুম থেকে বের হয়ে গেলো। রুমটা ছিলো অভির এখানে অভি জিম করতো। বক্সিংয়ের জন্যও কিছু জিনিসপত্র রাখা আছে। অভি বক্সিং গ্লাভস পড়ে বক্সিং প্যাকের মধ্যে ঘুসি মারতে লাগলো।
– আপনি এতো অলস কেনো? নিজের কফি নিজে বানিয়ে খেতে পারেন না।
-না পারি না! তোমার যদি মায়া লাগে তাহলে মাঝে মাঝে আমাকে বানিয়ে দিতে পারো। আমি মাইন্ড করবো না।
কী বিছু একটা মানুষ। এমন সব কথা বলে উত্তর না দিয়ে পারা যায় না।
-সরি আপনার জিএফের মতো আমার এতো মায়া নেই। তাই বানিয়ে দিতে পারবো না।
ইশার কথা শুনে অভি পাঞ্চ করা বন্ধ করে দেয়।
-ওয়েট তুমি কী বললে? আমার জিএফ? কি বলতে চাইছো?
-হ্যা আপনার জিএফ,এখানে আপনি ছাড়া আর কেও নেই।
-দেখো ইশা এর আগেও অনেকবার বলেছি জেনি আমার জিএফ নয়।
-ওহ তাই নাকি? তাহলে জেনি আপু আপনার কি হয়?
-ও আমার ফ্রেন্ড হয়। শুধু ফ্রেন্ড ওকে!
-সেটা আপনি ভাবেন উনি না। আমি উনার মাইন্ড পরেছি।
-বাহ তুমি দেখি জৌতিশ হয়ে যাচ্ছো। এতোই যখন জৌতিশী করছো তাহলে আমার মাইন্ডে কি চলছে বলো দেখি।
ইশা এবার নিচু গলায় মুখটা ঘুরিয়ে বললো- সেটাই তো পারছি না। এতোবার চেষ্টা করছি কিছুতেই পড়তে পারছি না। ইশাকে এভাবে মুখ ফুলাতে দেখে অভি হেসে দিলো।
-আজব তো হাসছেন কেনো?
-আচ্ছা হাসবো না। আপনি যদি ভুলে না যান তাহলে মনে করিয়ে দেই স্টনের পাওয়ার আমিও ব্যবহার করেছিলাম।
-ওহ হ্যাঁ সরি,ভুলেই গেছি আপনি স্টনের দ্বিতীয় ধারক। তাই আপনার উপর আমার কোনো শক্তিই কাজ করবে না। এর জন্যেই মাইন্ড রিড করতে পারছিলাম না।
-তুমি এতো কিছু জানলে কীভাবে?
-ব্লাক স্টনের বইটা পড়া শুরু করেছি। ১১২ পেজ পর্যন্ত পড়েছি।
-ওহ আচ্ছা
-আপনি বই পুরোটা শেষ করেছেন তাই না?
-হ্যা করেছি। আচ্ছা ইশা তোমার এমন কেনো মনে হয় জেনি আমার গার্লফ্রেন্ড।
– মনে হয় না আমি একশ শতাংশ সিওর।
-তুমি একটু বেশি বুঝো তাই এসব আবল তাবল বলছো।
-আমি ঠিকি বলছি।
-দেখো এখন আমার ঝগড়া করার মুড নেই।
-ওহ আচ্ছা তাই নাকি? তাহলে এখানে এসেছেন কেনো?
-সাদের ব্যাপারে তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
– বুঝতে পারছি আপনি কি বলতে চাইছেন!
-সাদ অনেক ছোট, ওকে রিওয়ার্ল্ডে নিয়ে গেলে ওর জীবনের রিস্ক আছে।
-হুম জানি,ওটা আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। সাদ ছোট হলেও যতেষ্ট স্মার্ট। ও ঠিকি সামলে নিবে।
-ইশা তুমি বুঝতে পারছো না।
-আমি বুঝেছি ঠিকি কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না।
ইশার এমন কেয়ারলেস কথাবার্তা শুনে অভি কিছুটা রেগে যায়।
-ছোট ভাই বোনকে হারানোর কষ্টটা বুঝতে পারছো না। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছো।
-মি.অভি আপনি যদি সাদকে টুসির সাথে কম্পেয়ার করেন তাহলে আমি বলবো সাদ আর টুসি দুজনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আমি কি করছি সেটা আমি ভালো করে জানি।
-ইশা এমন কিছু করো না যেটার কারণে পরবর্তীতে পচতাতে হয়।
– আপনি টুসির মৃত্যুর পিছনে এখনো নিজেকে দায়ী মনে করেন তাই এসব বলছেন। নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুন মি.অভি। বাস্তবতায় ফিরে আসুন। টুসি আপনার কারনে নয় নিয়তির কারনে মারা গেছে। এটা আপনাকে মেনে নিতে হবে। ইশার কথাগুলো পুরোনো সৃতিতে আঘাত হানছে। অভি দরজায় সজোরে বারি মেরে রুম থেকে বের হয়ে যায়। ইশা বুঝতে পারে বিতর্কে জড়াতে যেয়ে সে এমন কিছু বলে ফেলেছে যার কারনে অভি কষ্ট পেয়েছে।
-ইস কি করলাম। উফ ইশা উফ কি করেছিস তুই? মাথায় একটুও বুদ্ধি নেই,কি থেকে কি করে ফেললি? এখন কী করবো? কীভাবে মি.অভির রাগ ভাঙাবো?
চলবে,,,