ধর্ষনের দাগ?,তৃতীয়_পর্ব?
লেখক_নিহান হোসেন নীল?
এমন সময় হঠাৎ আনহার ডান হাতের দিকে চোখ যেতেই.. নিহান থমকে গেলো। নিহান দেখতে পেলো আনহার ডান হাতে ব্লেডে দিয়ে কাটা কয়েকটি দাগ। নিহান আনহার হাত দেখে মনের ভিতরে কেমন জানি খচখচানি শুরু হয়ে গেলো। নিহান এক দৃষ্টিতে আনহার হাতের দিকে তাকিয়ে আছি। আচমকা আনহা নিহানের দিকে তাকিয়েই.. সাথে সাথে আড়াল করে নিলো নিজের হাত। এবার নিহান চোখ তুলে আনহার মুখের দিকে তাকালো.. নিহান আনহার দিকে তাকিয়ে দেখে.. আনহার মুখের মধ্যে কেমন জানি মলিন একটা ভাব ফুটিয়ে.. অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে।
নিহানঃ আনহা.. তোমার হাত ব্লেড দিয়ে এইভাবে কাটলো কেমন করে??
আনহাঃ তোমাকে কেনো বলতে যাবো?? এই দুই’মাস তোহ ঠিক মত খবরও নেও নাই!!
নিহানঃ আমি জিজ্ঞেস করছি.. হাত কি করে কাটলো??
আনহাঃ তোমার উপরে রাগ করে কাটছি।
নিহানঃ আমার উপরে রাগ করে??
আনহাঃ হুম।
নিহানঃ আমার উপরে এতো রাগ হওয়ার কারণ কি শুনি??
আনহাঃ তুমি প্রথম কয়েকদিন কাজের জন্য.. আমার ঠিক মত খবরই নেও নাই!! আর তখন আমার অনেক রাগ হয়ছিলো।
নিহানঃ এইজন্য এইভাবে হাত কাটবা??
আনহাঃ বাদ দেও নাহ.. এই কথা??
নিহানঃ ওকে বাদ দিলাম।
নিহান আনহার মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারছে.. আনহা যে মিথ্যা কথা বলছে। নিহান মনে মনে ভাবছে,,,
নিহানঃ আনহার আমার উপরে রাগ করে এইভাবে হাত কাটলো?? কই আমি তোহ সবসময়ই আনহার খোঁজ-খবর নিতাম। নাহ.. আমার মনে হচ্ছে এইখানে অন্য কোনো রহস্য আছে। যেভাবেই হোক.. আনহার মুখ থেকে আমাকে এই রহস্য বের করতেই হবে।
তারপরে নিহান এই বিষয়টা মনে মনে রেখেই.. আনহাকে আদর করতে থাকে।
পরেরদিন আনহাকে সাথে নিয়ে নিহান বাসায় এসে পড়ে। বাসায় আসার পর থেকেই আনহা কেমন জানি পাল্টে গেছে৷ আর আগের মত নিহানের সাথে দুষ্টামি করে নাহ.. একদম মনমরা হয়েই থাকে সবসময়।
একদিন আনহা রান্না ঘরে রান্না করছিলো। এমন সময় নিহান এসে.. আনহাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে.. কানে হালকা করে কামড় দেয়।
আনহাঃ এইসব কি করছো??
নিহানঃ দেখছো নাহ আমার বউকে আদর করছি।
কথাটা বলেই নিহান আনহাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে.. ওর গলাই চুমু দিতে থাকে।
আনহাঃ উফফ.. এখন আমি রান্না করছি তোহ??
নিহানঃ রান্না পরেও করা যাবে।
আনহাঃ পড়ে করবো কেনো??
নিহানঃ এখন তোমাকে আদর করবো তাই।
আনহাঃ আমার হাতে এইটা কি দেখছো??
নিহানঃ হুহ.. দেখছি তোহ!!
আনহাঃ এটা দিয়ে কি করে??
নিহানঃ কোনো কিছু রান্না করলে.. এইটা দিয়ে নাড়াচাড়া করে।
আনহাঃ এইটা যদি এখন গরম করে.. তোমার শরীর লাগিয়ে দেই.. তাহলে কেমন হবে??
নিহানঃ ডাকাতনিইইই!!
আনহাঃ হুম.. এখন লক্ষি ছেলের মত রুমে গিয়ে শুয়ে থাকো। আর আমি রান্না করে আসছি.. পরে তোমাকে ইচ্ছে মত আদর করবো।
কথাটা বলে আনহা পিছনে দিকে ঘুরে.. নিহানের ঠোঁটে একটা চুমু দিলো।
নিহানঃ বাবু.. তুমি রান্না করো!! আর আমি পিছন থেকে তোমাকে জড়িয়ে ধরে রাখি।
আনহাঃ আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখতে হবে কেনো?? আমি কি বাচ্ছা!!
নিহানঃ হুম.. তুমি বাচ্ছা!!
আনহাঃ আচ্ছা.. ধরে রাখো। কিন্তু কোনো দুষ্টুমি করবে নাহ.. বলে দিলাম!!
নিহানঃ আচ্ছা।
আনহার রান্না প্রায় শেষের দিকে যখন.. তখন আনহা নিহানকে বলল,,,
আনহাঃ বাবু.. যাও তুমি গোসল করে আসো!! আমি রান্না শেষ করে.. তারপর গোসল করবো।
নিহানঃ আমি আর তুমি একসাথে গোসল করবো আজকে!!
আনহাঃ নাহ.. আমার ভালো লাগছে নাহ।
নিহানঃ বাবু.. তুমি এমন চেঞ্জ হয়ছো কেনো?? আগে তোহ তুমি এমন ছিলা নাহ?? আর তুমিই তোহ আমাকে একসাথে গোসল করার অভ্যাস করিয়েছো!!
আনহাঃ বাবু.. আজকে আমার ভালো লাগছে নাহ!! কালকে দুজনে একসাথে গোসল করবো.. ওকে??
নিহান আনহার কথা শুনে কিছু নাহ বলে.. মন খারাপ করে ওয়াশরুমের দিকে চলে যায়। নিহান গোসল করছে আর ভাবছে,,,
নিহানঃ দু’মাস আগে তোহ আনহা এমন ছিলো নাহ?? হঠাৎ কি এমন হলো যে.. আনহা এমন চেঞ্জ হয়ে গেলো?? আর আনহা নিজের হাতই বা কাটলো কেনো?? আর আগে যখন আনহা রান্না করতে যেতো.. তখন যদি আমি ওর সাথে নাহ যেতাম.. তাহলে তোহ আনহা রান্না ঘরেই যেতো নাহ!! আর এখন সেই আনহাই আমার কাছে আসে নাহ!! যেভাবেই হোক.. আনহার কি হয়ছে.. আমাকে জানতেই হবে।
নিহান গোসল শেষে বের হচ্ছে.. এমন সময় আনহা ওয়াসরুমের দিকে যাচ্ছে। আনহা নিহানকে দেখে জড়িয়ে ধরে.. নিহানের ঠোঁটে চুমু দিলো।
আনহাঃ বাবু.. চলো!!
নিহানঃ কোথায়??
আনহাঃ আমরা একসাথে গোসল করবো।
নিহানঃ আমি তোহ গোসল করে এসে পড়ছি।
আনহাঃ তোহ কি হয়ছে?? আমার সাথে আবার গোসল করবা।
নিহানঃ কিন্তু…
আনহাঃ হুহ.. করতে হবে নাহ.. আমার সাথে গোসল!!
কথাটা বলেই আনহা ওয়াসরুমের দিকে চলে যাচ্ছিলো.. তখনই নিহান পিছন থেকে হাত টান মেরে.. আনহাকে একদম নিজের কাছে এনে,,,
নিহানঃ কোথায় যাচ্ছো??
আনহাঃ তুমি কি আন্ধ নাকি?? দেখতে পাচ্ছো নাহ কোথায় যাচ্ছি??
নিহানঃ হেঁটে যেতে হবে নাহ তোমার।
আনহাঃ তাহলে কি উড়ে উড়ে যাবো??
নিহানঃ নাহ.. আমি তোমাকে কোলে করে নিয়ে যাবো।
বলেই নিহান আনহাকে কোলে উঠিয়ে নিলো। আনহাও নিহানকে জড়িয়ে ধরে.. হাত দিয়ে মাথা টা নিচে নামিয়ে নিহানের মুখে চুমু দিতে থাকে। আনহার একইরকম স্পর্শে.. নিহান তোহ প্রায় দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে।
নিহান আনহাকে ওয়াশরুমে নামিয়ে দিয়ে.. জড়িয়ে ধরে আদর করতে থাকে। আনহাও নিহানের আদরের সাথে তাল মিলিয়ে আদর করে যাচ্ছে। এভাবে তারা গোসল শেষ করে টাওয়েল জড়িয়ে বের হয়।
আনহা আয়নার সামনে বসে সাঁজছে আর গুন গুন করে গান গাচ্ছে। নিহান হঠাৎ কোথা থেকে জানি এসে.. আনহাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কানের গোড়ায় হালকা করে কামড় দিলো৷
আনহাঃ ওই ছাড়ো!! সবসময় কিন্তু এইসব ভালো লাগে নাহ??
নিহানঃ আমি কি সবসময়ই এইসব করি??
আনহাঃ হুম.. তুমি সারাক্ষণই তোহ এইসব করো!! তারপরেও তোহ তোমার শখ মিটে নাহ!!
নিহানঃ তুমি আমার লাইফে এমনই একজন যাকে আমি সারাদিন আদর করলেও.. আমার শখ মিটবে নাহ!!
আনহাঃ সাহেব.. হয়ছে তোহ!! এতো রোমান্টিক হলে তোহ সমস্যা।
নিহানঃ কি সমস্যা??
আনহাঃ এখন নাহ.. রাতে বলবো!!
কথাটা বলেই আনহা মুচকি হাসি দিয়ে উঠে চলে যাচ্ছিলো.. তখন নিহান আবার পিছন থেকে বলল,,,
নিহানঃ কোথায় যাচ্ছো??
আনহাঃ বাবু.. অনেক খুঁদা লাগছে। তাই খাবার রেডি করতে যাচ্ছি!! তুমিও তারাতারি চলে আসো।
নিহানঃ তুমি যাও.. আমি আসছি!!
আনহা খাবার টেবিলে গিয়ে.. খাবার সাঁজালো। এর মধ্যেই নিহান চলে আসে। নিহান বসার সাথে সাথেই আনহা একটা প্লেটে খাবার নিয়ে.. মেখে নিহানের দিকে হাত বাড়িয়ে দেই। নিহানও আনন্দে খেয়ে নিচ্ছে। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে.. দুজনে রুমে এসে.. শুয়ে গল্প করতে থাকে।
গল্প করার মাঝেই নিহান আনহাকে জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে.. ঠোঁটে হালকা করে স্পর্শ করে। আনহাও নিহানকে কাছে টেনে নেয়। আর দুজন পারি দেই ভালোবাসার সাগরে। আনহা নিহানকে আদর করতে করতে ঘুম পারিয়ে দেয়। নিহানও তার ভালোবাসার মানুষকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।
এইদিকে আনহা নিজের ভূলের জন্য তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আনহা মনে মনে ভাবতে থাকে,,,
আনহাঃ নিহান.. তুমি আমাকে যখন বাবার বাসায় রেখে.. আমেরিকা চলে যাও.. এরপরে থেকে আমার সাথে অনেক খারাপ কিছু হয়ে গেছে। যাহ আমি তোমাকে বলতেও পারছি নাহ। আল্লাহ’ আমি আর এভাবে থাকতে পারছি নাহ। যাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি.. আজ তাকেই আমি ঠকাচ্ছি।
এইসব কথা ভেবেই আনহা অস্ফুট শব্দ করে কান্না করে দেয়। আনহার কান্নার শব্দ পেয়ে.. নিহান চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে আনহার চোখে পানি।
চলবে,,,,,,,