ধর্ষনের দাগ?,দ্বিতীয়_পর্ব?

0
3563

ধর্ষনের দাগ?,দ্বিতীয়_পর্ব?
লেখক_নিহান হোসেন নীল?

আনহার আর নিহানের দাম্পত্য জীবন অনেক ভালোই যাচ্ছে। একজন আরেকজনকে পেয়ে অনেক সুখী। নিহান আর আনহা একে-অপরকে বড্ড বেশি ভালোবাসে।

নিহানঃ তানহা??

আনহাঃ হুম.. বলো??

নিহানঃ অফিসের কাজে আমাকে আমেরিকা যেতে হবে।

নিহানের কথা শুনে আনহার মন খারাপ হয়ে গেলো। আনহা মন খারাপ করেই.. নিহানকে বলল,,,

আনহাঃ এখন নাহ গিয়ে.. কিছুদিন পরে গেলে হয় নাহ??

নিহানঃ এই প্রজেক্টটা আমার ড্রীম প্রজেক্ট। আর আমি অনেকদিনই ধরেই এই প্রজেক্টটার অপেহ্মায় ছিলাম।

আনহাঃ ওহহ। তোহ কয়দিনের জন্য যাবা??

নিহানঃ দেড়-দুই মাসের জন্য!!

আনহাঃ এতদিনের জন্য??

নিহানঃ হুম.. বাবু!! প্লিজ বাবু.. তুমি এইভাবে মন খারাপ করো নাহ!! দুইমাসসের ভিতরেই আমি প্রজেক্ট্টার কাজ করে শেষ চলে আসবো।

আনহাঃ সত্যি তোহ??

নিহানঃ তিন সত্যি।

পরেরদিন নিহান আমেরিকায় চলে যাবে.. তাই আনহা নিহানের সব কাপড়-চোপড় প্যাক করে দিলো। আর নিহান যে কয়দিন আমেরিকায় থাকবে.. আনহা ততদিন বাবার বাসায় থাকবে। তাই আনহা নিজের কিছু কাপড়ও প্যাক করে নিলো।

আনহা প্যাক করা শেষ করে.. ফ্রেস হয়ে নিচে চলে গেলো রাতের খাবার খেতে। আনহা টেবিলে সবকিছু সাজিয়ে.. তারপরে নিহানকে ডাক দিলো। নিহান আর আনহা একসাথে রাতের খাবার খেয়ে.. ঘরে এসে শুয়ে পড়ল।

আনহা নিহানকে একদম আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে যে নিহানকে ছেড়ে দিলেই.. দূরে কোথাও হারিয়ে যাবে। আনহা নিহানের বুক থেকে মাথাটা বের করে অনেকটা করুন স্বরে নিহানকে বলল,,,

আনহাঃ নিহান.. তোমাকে আমার সবটা দিয়ে ভালবাসবো.. নিজে কষ্ট থাকবো তারপরে তোমাকে কষ্ট দিবো নাহ.. প্লিজ আমাকে একা রেখে এতো দূরে চলে যেও নাহ!! বিশ্বাস করো.. আমি তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকতে পারবো নাহ। আর তোমাকে ছাড়া প্রত্যেকটা দিনই আমার অনেক কষ্টময় যাবে। নিহান.. তোমাকে যে আমি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।

আনহা কান্না করতে করতে কথাগুলি নিহানকে বলল। নিহান আনহার কথা শুনে.. আনহাকে আর একটু শক্ত করে বাহুতে চেপে ধরে বলল,,,,

নিহানঃ আনহা.. তুমি তোহ জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি?? আমি এই প্রজেক্টটার পিছনে অনেক সময় নষ্ট করেছি। আর আমার লাইফের ড্রীম প্রজেক্ট এইটা!! প্লিজ.. তুমি আমাকে এইভাবে বললে.. আমি আর আমেরিকায় যেতে পারবো নাহ!! আমি প্রজেক্টটার কাজ যত তারাতাড়ি সম্ভব শেষ করে.. আবার তোমার কাছে চলে আসবো। আর একটা কথা.. আমিও তোমাকে বড্ড ভালোবাসি!! আর আমি তোমার থেকে হাজার মাইল দূরে গেলেও.. তোমাকে ঠিক এতটাই ভালোবাসবো.. মনে রেখো!!

আনহাঃ তোমাকে একটা কথা বলি!!

নিহানঃ একটা কেনো?? তোমার যতখুশি কথা বলো!! আজকে আমি তোমার সব কথা শুনবো।

আনহাঃ সব শুনতে হবে নাহ!! আপাতত একটা শুনলেই হবে।

নিহানঃ বলো.. কি কথা!!

আনহাঃ তুমি যতদিন আমেরিকায় থাকবে.. আমি ততদিন বাবার বাসায় থাকতে চাই??

নিহানঃ আচ্ছা.. বাবু!! এখন ঘুমাও। কালকে আবার সকাল সকাল উঠতে হবে।

আনহাঃ আচ্ছা।

বলেই আনহা নিহানের বুকে মাথা রেখে শুয়ে রইল। আর নিহানও পরম যত্নে বুকের সাথে তার ভালোবাসার মানুষকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।

পরেরদিন সকালবেলা…

সকালবেলা কারো ঠোঁটের স্পর্শে পেয়ে আনহার ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো । আনহা চোখ দুটো খুলে দেখে নিহান একদম ওর মুখের সামনে মুখ এনে.. ওর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নিহানের গরম নিশ্বাস আনহার মুখের উপরে পড়ছে। নিহানকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আনহা লজ্জা পেয়ে নিহানের গলা জড়িয়ে ধরল।

নিহানঃ কয়টা বাজে জানো??

আনহাঃ উহুম.. আর আমি তোহ মাত্রই ঘুম থেকে উঠলাম!! তাহলে আমি জানবো কি করে??

নিহানঃ আমাকে সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হতে হবে.. কারণ আমার ফ্লাইট ১০টাই। আর এখন ৭টাহ বাজে। আবার তোমাকে ওই বাসায় নামিয়ে দিয়ে.. তারপরে আমাকে এয়ারপোর্ট যেতে হবে। তোমার তোহ আবার সাঁজতেই লাগবে ১ ঘন্টা। আমি সেই কোন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে.. দেখো রেডি হয়ে গেছি।

আনহাঃ হুহ.. আমি তোহ তারাতাড়িই ঘুমাতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি তোহ রাতে কত গল্প করলা??

নিহান আনহার কথা শুনে আনহাকে নিজের আর একটু কাছে টেনে.. আনহার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,,,

নিহানঃ মিথ্যাবাদী.. কালকে তোহ আমি তোমাকে কিছু করি নাই.. আর কই বেশি রাত পর্যন্ত গল্প করছি?? তুমি যে একটা অলস.. এই কথা বলো!! শুধু শুধু আমাকে দোষ নাহ দিয়ে।

আনহাঃ বাবু.. আমি আর একটু ঘুমাই। আজকে নাহ আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে। আর একটু লেইট করে গেলে কি হবে?? তোমার ফ্লাইট ১০টাই.. এখনো অনেক দেরী আছে!!

নিহানঃ হুহ.. এয়ারপোর্টে ৯ টার ভিতরে থাকতে হবে!! আর তুমি এখন তারাতাড়ি উঠবা নাকি বলো??

আনহাঃ নাহ.. আমি উঠবো নাহ!!

নিহান আর কিছু নাহ বলে উঠে বসে আনহাকে টেনে উঠানোর চেষ্টা করল কিন্তু আনহা নাহ উঠে.. নিহানের হাত টান মেরে আবার নিহানকে শুয়েই দিলো। নিহান শুয়ে পড়ার সাথে সাথেই আনহা নিহানের উপরে উঠে.. নিহানের গলা চেপে ধরে বলল,,,

আনহাঃ এই কুত্তা.. তুই আমাকে সকাল সকাল এইভাবে জ্বালাছিস কেনো?? আজকেই তোহ আমাকে ছেড়ে চলে যাবি?? তখন তোর এইসব কথা মনে পড়ে বড্ড কষ্ট হবে রে!! তোর এইসব অত্যাচার আর জ্বালানিগুলা বড্ড মিস করবো রে!!

নিহানঃ আহহহহহ.. আমার গলা ছাড়ো!!

আনহাঃ হুহ.. ছাড়বো নাহ!! আজকে তোকে মেরেই ফেলবো। নাহ.. নাহ.. তুই মরলে আমিও তোহ মরে যাবো। কারণ তোরে অনেক ভালোবাসিরে পাগল।

আনহা কথাটা বলেই নিহানের গলাটা ছেড়ে দিয়ে অনেক শক্ত করে নিহানকে জড়িয়ে ধরল। নিহানকে ছেড়ে দিয়ে যখন আনহা একটু মাথাটা তুলে নিহানের দিকে তাকালো.. তখন নিহানের চোখ আটকে গেলো আনহার কাঁপা কাঁপা ঠোঁট দুটোর উপরে। আনহার ঠোঁট অতিরিক্ত লাল হওয়াই.. এমনি ওর ঠোঁট দুটির প্রতি দূর্বল নিহান। নিহান আনহার ঠোঁট দেখে নিজের কনট্রোল হারিয়ে ফেলল। নিহানের নিজের অজান্তে হাত দুটো আনহার চুলের পিছনে চলে গেলো। তারপরে আনহার মাথাটা ধরে ওর ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিলো। নিহান আনহাকে কিস করছে.. এমন সময় কে জেনো দরজায় ধাক্কা দিলো। নিহান আনহাকে ছেড়ে দিয়ে,,,

নিহানঃ কে??

— ছোট সাহেব আমি শফীক.. কর্তা খাবার টেবিলে বসে আছে। আপনাদের তারাতাড়ি রেডি হইয়া নিচে আইতে কইছে।

নিহানঃ তুমি যাও.. আমরা আসছি। আনহা এখন তারাতাড়ি ফ্রেস হও। দেখছো দাদু শফীক ভাইকে পাঠিয়েছে আমাদের ডাকতে।

নুহাঃ হুম। কিন্তু তোমার আমাকে কোলে করে নিয়ে ওয়াসরুমে দিয়ে আসতে হবে.. নাহলে আমি বিছানা থেকে উঠবো নাহ।

নিহান চুপচাপ এক মিনিট ভেবে বলল,,

নিহানঃ ঠিক আছে। এইদিকে আসো।

আনহা নিহানের পাশে আসতেই.. নিহান আনহাকে কোলে তুলে নিলো। আর আনহা অনেক রোমান্টিক ভাবে নিহানের গলা জড়িয়ে ধরে আছে। নিহান আনহাকে ওয়াসরুমে নামিয়ে দিয়ে নিচে খাবারের টেবিলে চলে আসল।

একটু পরে আনহাও রেডি হয়ে খাবারের টেবিলে চলে আসল। তারপরে সবাই একসাথে বসে ব্রেকফাস্ট করল। ব্রেকফাস্ট শেষ করে.. দাদুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিহান আর আনহা দুজনেই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ল। এয়ারপোর্টে আসার পথে.. আনহাকে ওর বাবার বাসায় নামিয়ে দিয়ে গেলো। আনহা গাড়ীতে থেকে নামার আগেই নিহানকে জড়িয়ে ধরে.. ওর বুকে কান্না করে দিলো।

নিহানঃ এই পাগলী.. তুমি কান্না করছো কেনো??

আনহাঃ তোমাকে ছাড়া আমার এই দু’মাস থাকতে খুব কষ্ট হবে।

নিহানঃ জানি তোহ!! কিন্তু এটা তোহ আমাদের ভালোর জন্যই করতে যাচ্ছি।

কথাটা বলেই নিহান আনহাকে কাছে টেনে নিয়ে.. ওর ঠোঁটে ভালোবাসার পরশ একে দিলো।

আনহাঃ হুমম.. আর সব কাজ কিন্তু সাবধানে করবা!!

নিহানঃ আচ্ছা.. আর তুমিও সাবধানে থেকো। আচ্ছা.. আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে।

আনহাঃ হুম.. যাও।

কথাটা বলেই নিহানকে বিদায় জানিয়েই আনহা গাড়ী থেকে বের হয়ে গেলো। আর নিহানও সোঁজা চলে গেলো।

২মাস পরে….

এই দু’মাসে আনহার সাথে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। কিন্তু সে নিহানকে এইসব কিছুই বলে নি!! কারণ সে নিহানকে কখনোই এইসব বলতে পারবে নাহ!!

আমেরিকায় নিহান সব কাজ ঠিকঠাক ভাবে শেষ করে.. আবার দেশে ফিরার জন্য উদ্দেশ্য রওনা দিলো। এতদিন পর আনহাকে আবার নিজের কাছে পাবে.. এই কথা ভেবেই নিহানের অনেক ভালো লাগছে।

পরেরদিন নিহান বাংলাদেশে এসে পৌছায়। নিহানের দাদু নিহানকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে আসলে.. নিহান তাকে বাসায় চলে যেতে বলে। তারপরে নিহান গাড়ী নিয়ে সোঁজা শশুড় বাড়ির উদ্দেশ্য চলে যায়। আনহাদের বাসায় পৌছে দরজায় নক করার পরেই আনহা এসে দরজা খুলে। নিহান আনহাকে দেখতে পেয়েই জড়িয়ে ধরল। আশেপাশে যে আরও লোকজন আছে.. সেইদিকে নিহানের খেয়ালই ছিলো নাহ!! নিহানের আশেপাশের কথা মনে পড়তেই.. আনহাকে ছেড়ে দিলো। আনহা নিহানের কাছ থেকে ছাড়া পেয়েই লজ্জায় দৌড়ে রুমে চলে আসলো। নিহান সাবার সাথে কিছুহ্মন কথা বলে.. ফ্রেস হওয়ার কথা বলে.. আনহার রুমে চলে গেলো। নিহান আনহার রুমে গিয়ে দেখে আনহা খাটের এক কোনায় চুপ করে বসে আছে।

নিহান আনহার কাছেই গিয়ে.. আনহাকে জড়িয়ে ধরে.. একবারে নিজের কাছে টেনে এনে একের পর এক চুমু দিতে থাকে। নিহান আনহাকে আদর করছে.. এমন সময় হঠাৎ আনহার হাতের দিকে চোখ যেতেই.. নিহান থমকে গেলো।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here