#নতুন_কন্ঠে_ভালোবাসুক,পর্ব ৮
#সমুদ্রিত_সুমি
ভাইয়ের বিয়েটা আল্লাহর রহমতে বেস ভালো ভাবেই সম্পূর্ণ হলো। আবির নিজ দায়িত্বে সব করলো। বাড়ির বড় ছেলে যেমন সব দায়িত্ব পালন করে ঠিক সেভাবেই সব পালন করলো। একদম নিখুঁত ভাবে। ওর এমন নিখুঁত দায়িত্ব দেখে শুধু আমি নই,সোনালি,রূপালীর শ্বশুর বাড়ি থেকে শুরু করে আমাদের আত্মীয় স্বজন এমন কি মোহনের শ্বশুর বাড়ির লোকেরাও মুগ্ধ। সবার মুখে একটাই কথা! আবির এই বাড়ির যে জামাই তা কেউ বুঝতেই পারবে না।সবাই একপ্রকার ওর সুনাম করতে করতে মুখের ফ্যানা তুলে ফেলেছে। মা তো সকল আত্মীয় স্বজনের কাছে বললো। জামাই না আমি একটা ছেলে পেয়েছি কপালগুনে। যে আমার মেয়ের মতোই খাঁটি হিরে। আর সেটা সবাই মেনেও নিলো। কারণ পরিস্থিতি তাঁদের মানতে বাঁধ্য করলো। আজকাল এমন জামাই কল্পনায় দেখেছে সবাই! আজ বাস্তবে দেখলো। বিয়ে সম্পূর্ণ হতেই বাড়ি ফাঁকা হতে শুরু করলো। এখন বাড়িতে আমরা আমরাই আছি। সন্ধ্যায় ওরা ঠিক করলো সবাই ঘুরতে যাবে। আমাকে ডাকতে এলে আমি না করে দেই। শরীর খারাপের বাহানা দিয়ে শুয়ে থাকি। ওরা যেতেই আবার উঠে বসি। তার কিছুক্ষণ পরই আবির ঘরে আসে। আমার মাথায় হাত দিয়ে বলে।
_ শুনলাম, তোমার শরীর খারাপ।
_ আরে না আমার কিছু হয়নি। ওদের সাথে যাবো না বলে মিথ্যা বললাম।
_ মিথ্যা বলার কি দরকার ছিলো,গেলে কি এমন মহা ভারত অশুদ্ধ হতো।
_ আপনি বুঝতে পারছেন না,ছোট ভাই,ভাইয়ের বউ। সাথে ছোট বোনদের স্বামী। ওদের সাথে ঘুরতে যাওয়াটা বেমানান। ওরা ঘুরবে,এ দোকানে ও দোকানে যাবে। খাবার খাবে! আমার মতো একজন বয়স্ক মানুষ ওদের সাথে গেলে ওরা মন থেকে আনন্দ করতে পারতো না। আর মানুষ কি বলবে।
_ মানুষ কি বলবে,এই ভেবে তুমি তেমার সকল ইচ্ছে মাটি দিতে পারো না মোনা। তুমি কেন বোঝো না! শরীরের বয়স হয়,মনের না। আর লোকে কি বললো! এই ভেবে আর কতদিন নিজেকে আড়াল করে রাখবে। মোনা তোমার কষ্টের সময় কিন্তু লোকেরা এসে তোমার কষ্ট কমায়নি! তাহলে তাঁদের কথা তুমি এতো প্রায়োরিটি কেন দেও।
_ আমরা ভাবি সমাজের কথা কানে না তুললেই জীবনে এগিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু এই কথাটার মাঝে একটু ভুল আছে! সমাজে থাকতে হলে,সমাজের কথা তো শুনতেই হবে। চাইলেই সব কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
_ আমি জানি না,তুমি কবে এই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। আমি দোয়া করি খুব দ্রুত তুমি সমাজের এই নিচু চিন্তাধারা থেকে নিজেকে বের করে আনতে পারবে।
কথাগুলো বলে মানুষটা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। মানুষটা রাগ করেছে তা ভালোই বুঝতে পারলাম। কিন্তু কি করতে পারি আমি। হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেলো। মানুষটা রাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো,না জানি কখন ফিরে। এরমাঝে সত্যিই আমার শরীর খারাপ করতে লাগলো। খুব মাথা যন্ত্রণা শুরু হলো। অনেক দিন পর মাইগ্রেনের ব্যথা দেখা দিলো। কথায় আছে এই ব্যথাট যাঁর থাকে তাঁর শত্রুর প্রয়োজন পরে না। মাথাটা চেপে ধরে বালিশে মাথা গুঁজলাম। আধা ঘণ্টা এপাশ ওপাশ করে নিজেকে কন্ট্রোল করা চেষ্টা করছি। পারলাম না,অবশেষে উঠে গিয়ে একটা ঔষধ খেলাম। ঔষধ খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই আমার ঘুম চলে এলো। আমি নিশ্চিন্তে ঘুমের দেশে পা বারালাম।
——————-
সময় মধ্যরাত,আমার মনে হলো কেউ আমাকে ফিসফিস করে ডাকছে। কিন্তু ঘুমের জন্য আমি সে আওয়াজ ভালো করে শুনতে পারছি না। কিছুটা আড়মোড়া ভেঙে আবারও ঘুমের জন্য প্রস্তুতি নিতেই কেউ ডেকে উঠলো। কোনমতে চোখের ঘুমটা ঠেলেঠুলে সরিয়ে সামনে থাকা মানুষটার দিকে তাকালাম। ঘরের ডিম লাইটের আলোয় মুখটা স্পষ্ট না। তবুও যতটা বোঝা গেল,মানুষটা আবির। আবিরকে দেখে নিজের গায়ের কাঁথাটা ভালো করে জড়িয়ে যেই আবার চোখ বুঁজতে যাবো,ওমনি হাল্কা চেচিয়ে উঠলো আবির।
_ হেই আমি তোমাকে ঘুম থেকে তোলার চেষ্টা করছি, আর তুমি আবার ঘুমাচ্ছো।
_ তো কি করবো।
_ উঠো
_ উঠবো মানে,কেন?
_ এক জায়গায় যাবো,ইমারজেন্সি।
ওর মুখে ইমারজেন্সি শুনে,দেয়াল ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকালাম। রাত পৌঁনে একটা বাজে। এতো রাতে কি এমন ইমারজেন্সি কাজ থাকতে পারে ভেবেই আমি লাফিয়ে উঠলাম। আমাকে লাফিয়ে উঠতে দেখে আবির একটু ভয় পেলো। বললো।
_ এতো ভয় পাওয়া কি আছে,স্বামীর সাথেই তো যাবে।
_ সেটা ঠিক আছে,কিন্তু কোথায়।
_ তুমি ব্যাংকে চাকরি না করে,কলেজের প্রফেসর হতে পারতে। ভেতরে শুধু জানার ইচ্ছে। এতো জেনে নিলে,বাকি সব কিভাবে হবে।
_ আগে বলুন কোথায় যাবো তারপর আমি উঠবো। এই শীতের রাতে আমি কোথাও যাবো না।
_ শীত কোথায় পেলে,মাত্র তো অক্টোবর চলছে,নভেম্বরে শীত পড়বে।
_ ভোরে কুয়াশা দেখা যায়,আপনি লক্ষ করেছেন।
_ না আমি লক্ষ করবো কেন,ভোরবেলা তো তুমিই একা ফজরের নামাজ পড়ো।
_ আমার সাথে ঠাট্টা করছেন।
_ কোন দুঃখে তোমার সাথে ঠাট্টা করতে যাবো। প্লিজ মুন চলো না।
_ ফিরবো কখন
_ আরে এখনোও তো যেতেই পারিনি,ফিরবো কখন কী করে বলবো?
_ না বললে যাবো না। দেখুন এতোরাতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে মানুষ কি বলবে।
_ মানুষ কি বলবে আমি জানি না,কিন্তু তুমি যদি এই মুহূর্তে আমার সাথে না যা-ও। আমি কালই বাড়িতে চলে যাবো।
_ রাগ করছেন কেন?
_ রাগ করাটা স্বাভাবিক মুন। তুমি আমার সাথে যাবে অথচ অচেনা মানুষের মতো একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছো।
_ আচ্ছা সরি। আমি বোরকা পড়ে নিচ্ছি।
_ আজ মুখ বাঁধতে হবে না,রাত তো লোক নেই রাস্তায়।
_ আচ্ছা।
তারপর আমি রেডি হয়ে একপ্রকার নিজেদের বাড়িতে চোরের মতো পা টিপে টিপে ঘর থেকে বের হলাম। ঘর থেকে বের হতেই বাহিরে বেরিয়ে আসতেই আবির আমার হাত দু’টো আঁকড়ে ধরলো। ওর হাত ধরতেই অনুভব করলাম,আমি ও ছাড়া পুরো রাস্তা ফাঁকা। রাস্তার হলদে বাতির আলোয় রাতের আকাশটা কেমন লাগছে যেন। কিছুটা পথ যেতেই হঠাৎ একটা বাইক চোখে পড়লো। বাইকের কাছে যেতেই আমাকে অবাক করে দিয়ে সেই বাইকে আবির বসে পড়লো। আমার দিকে হ্যালমেড এগিয়ে দিয়ে বললো। পড়ে নিতে। আমি খুব অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ও বললে।
_ আমার জীবনের অনেক বড় একটা ইচ্ছে রাতের শহরটা ঘুরে দেখার,প্রিয় মানুষটার সাথে। আজ মনে হলো সেই সময়টা এসে গেছে। উঠে পড়ো।
আমি অবান নয়নে তাকিয়ে থেকেই পিছনে বসলাম। আমার আগে পড়ে তেমন বাইকের পিছনে বসা হয়নি! তাই একটু অসুবিধা হলো। কিন্তু সেই অসুবিধা আমি না বললেও আবির বুঝে নিলো। আমার হাত দু’টো নিয়ে ওর কাঁধে রেখে বললো–
_ নিশ্চিন্তে এই কাঁধে মাথা রাখতে পারো। আগলে রাখার জন্য আমি আছি। তুমি শুধু ভরসা করো! আমি না-হয় সেই ভরসা রাখার দায়িত্ব নিলাম।
তারপর শা শা বেগে ছুটে গেলো বাইক। বাতাসের তীব্র ঝাপটা আমার মুখে ভারি লাগছে,আমি কখনো চোখ খুলছো,তো কখনো চোখ খিঁচে তাকিয়ে আছি। কিন্তু আমি অনুভব করলাম ভালোবাসা সুন্দর। কারনে অকারণে সুন্দর! যদি মানুষটা মনের মতো হয়। আমি নিজের অজান্তেই আবিরের পিঠে নিজের মাথা ঠেকিয়ে দিলাম। কেমন যেন আমার পরম শান্তি অনুভব হলো। আমার তখন এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো! এই মানুষটাকে ছাড়া আমি এক সেকেন্ডও চলতে পারবো না। রাত নয় শুধু ,দিনের শুরু থেকে শেষে তাঁকে চাই। এক কাপ চায়ের বিস্কুট হিসবেও তাঁকে চাই। যাকে আমি ইচ্ছে মতো চুবিয়ে আনন্দে মুখে পুড়তে পারবো। রাতের আঁধারে পথ চলতে তাঁর হাতটি চাই। ক্লান্ত মাখা মাথাটা তাঁর কাঁধে রাখতে চাই। খুু্ব কষ্টে তাঁর বুকে মাথা রেখে পরম শান্তিতে চোখ বুঁজে থাকতে চাই। বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটায় আমার তাঁকে চাই। তাঁর সমস্তটা জুড়েই আমি নামক তুমিটা থাকতে চাই।
আমার এই আকাশকুসুম ভাবনার শেষে বাইকটা থেমে গেলো। আমাকে নামতে বলে আবিরও বাইক থেকে নামলো। আমি নামতেই এবার খেয়াল করলাম! একটা অচেনা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের শহর থেকে হয়তো কিছুটা দূরে। ও আমার হাতটা ধরে সামনে এগিয়ে গেলো। একটা ছোট্ট ঝুপড়ির পাশে দাঁড়িয়ে কাউকে ডাকতে রইলো।
_ এই কি করছেন,এতো রাতে কাকে ডাকছেন,সবাই ঘুম। মানুষ পাগল বলে পিটাবে।
_ দেখো না।
আমাকে চুপ করতে বলে আবারও ডাক দিলো আবির। এবার ডাক পড়তেই কেউ ঝুপড়ির দরজা খুলে এগিয়ে এলো।
_ আপনি এসেছেন,আমি তো ভাবলাম আসবেন না। তাই ঝুপড়ি লাগিয়ে বসে ছিলাম। একটু চোখটা লেগে যেতেই আপনার ডাক শুনে বেরিয়ে এলাম।
_ কথা দিয়ে গেছি,না আসলে কি হয় বলেন।
_ এই যে কি আমাদের ভাবি।
_ হ্যা
_ আসসালামু আলাইকুম ভাবি,ভালো আছেন।
_ ওলাইকুমুস সালাম, জ্বি আলহামদুলিল্লাহ। আপনি ভালো আছেন।
_ আলহামদুলিল্লাহ। চলেন চলেন ভিতরে চলেন।
তারপর আমরা ভেতরে ঢুকতেই বুঝতে পারলাম,এটা একটা দোকান। আর সেটা ফুচকার দোকান। আমি অবাক হয়ে আবিরের দিকে তাকাতেই আবির চোখ মারলো। আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম ওর কান্ডে। তারপর ও ওই ভাইয়ার উদ্দেশ্যে বললো।
_ আবুল ভাই,আমাদের একটা প্যাকেটে সব কিছু দিয়ে দিন,আমরা আমাদের মতো করে বানিয়ে খাবো। তারপর আপনি শুয়ে পরুন,আপনার না কাল হসপিটালে যেতে হবে।
_ সমস্যা নাই ভাই হইয়া যাবে।
_ না ভাই আসলে আমরা একটু ওই নিরিবিলি প্রাকৃতিকের মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে চাই। তাই আপনাকে এই কথা বললাম।
_ ও আচ্ছা, তাহলে দিয়ে দিচ্ছি।
তারপর সব কিছু আবুল ভাই প্যাকেটে করে সাজিয়ে আবিরের হাতে তুলে দিলো। আবির পকেট থেকে কতগুলো টাকা বের করে আবুল ভাইয়ের হাতে দিলো। আবুল ভাই চোখভরা জল নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলো। আবিরের হাত দু’টো আঁকড়ে ধরে বললো।
_ আমি জীবনেও এই ঋণ শোধ করতে পারবো না ভাই।
_ ঋণ কেন বলছেন,আপনি আমার স্ত্রীর স্বপ্ন পূর্ণ করার জন্য আমাকে সাহায্য করেছেন। আর আমি আপনার স্ত্রীর অপারেশনের জন্য সাহায্য করলাম। তাহলে ঋণ কোথা থেকে এলো। আর ছেলে না মেয়ে হয়,জানবেন কিন্তু। সাথে মিষ্টিও চাই।
_ মিষ্টি তো খাওয়াবো,আল্লাহ যদি মুখ তুলে চায়। তবুও ভাই এতো টাকা ।
_ তবুও কিছু না,এখন শুয়ে পড়ুন সকালে হসপিটালে গিয়ে বাকি কাজ গুলো সেরে ফেলবেন।
তারপর আবির আমার হাত ধরে সামনে এগিয়ে গেলো। চারিদিকে চাঁদের আলোয় মাখামাখি। ঝিঁঝি পোকার ডাকে মুখরিত চারিপাশ। একটা ছোট্ট রাস্তা বেয়ে আমরা হেঁটে যাচ্ছি। কিছুটা পথ হাঁটতেই ছোট্ট একটা ব্রিজ দেখলাম। সেখানেই আমরা দাঁড়িয়ে পড়লাম। আবির একটা ফুচকায় আলু ডাল ভরে সেটা টক দিয়ে পরিপূর্ণ করে আমার মুখে পুরে দিচ্ছে। আবার নিজের মুখেও দিচ্ছে। চারিদিকে চাঁদের আলো,পছন্দের খাবারের সাথে ভালোবাসার মানুষের ছোঁয়া! সব মিলিয়ে আমার কেমন জানি অদ্ভুত অনুভব হতে রইলো। ফুচকা শেষ হতেই আবির যত্ন করে আমার মুখ মুছে দিলো। পিছন থেকে জড়িয়ে আমায় বললো।
_ পৃথিবীর বুকে আমার যত্ন করে রাখা যতো ভালোবাসা আছে,আমার তরফ থেকে আজ সব তোমার। আমার প্রতিটা শ্বাসপ্রশ্বাসে তুমি মিশে থাকবে। তোমাকে আমি নিজের সবটা উজাড় করে ভালোবাসতে চাই। দেবে কি সেই অনুমতি।
আমার খুশিতে চোখের পানি চলে এলো। এতটা ভালোবাসা মহান আল্লাহ আমার জন্য বরাদ্দ করে রেখেছেন আমি তা কল্পনাও করতে পারছি না। আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে হ্যা আমি অনুমতি দিলাম। কিন্তু কেন জানি বলতে পারলাম না। আমাকে চুপ থাকতে দেখে আবির আমার গালে টুপ করে একটা চুমু দিলো। আমি শিহরিত হলাম। হলাম পাগলও। হঠাৎ আমার কি হলো আমি জানি না। দুই হাত প্রসারিত করে আকাশ পানে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলাম।
_ পৃথিবী তুমি শুনতে পাচ্ছো,আমি তাঁকে ভালোবাসি। যেমন আকাশ মাটিকে ভালোবাসে,পাহাড় ঝর্ণাকে ভালোবাসে। কিন্তু তাঁদের ভালোবাসা অপূর্ণ, আমার ভালোবাসা পূর্ণ। ওহে পৃথিবী তুমি কি শুনতে পারছো আমি প্রেমে পড়েছি,এই পাগল স্বামীনামক মানুষটার প্রেমে পড়েছি। তুমি আমাদের জন্য দোয়া করো। বাকিটা পথ যেন আমাদের একসাথেই চলা হয়। মৃত্যু ছাড়া কেউ যেন আমাদের আলাদা করতে না পারে।
আর আমার এই পাগলামি দেখে আবিরও আমার সাথে পাগলামি শুরু করলো। পিছন থেকে জড়িয়ে সে-ও আমার মতো করে বলতে রইলো।
_ শোন পৃথিবী তুমি আজ লজ্জা পাবে,লজ্জা পেয়ে মুখ লুকাবে । চাঁদকেও বলো লজ্জা পেতে,আজ আমাদের প্রথম ভালোবাসা বিনিময় হবে। যাঁর সাক্ষী হবে তোমরা। কিন্তু আমার লজ্জাবতী যেন তোমাদের দেখে লজ্জা না পায় তাই তোমাদের চোখ বুজতে হবে।
কথাটা শেষ করেই আবির এক ঝটকায় ওর দিকে আমায় ফিরিয়ে নিলো। আমার নরম ঠোঁট খানায় ওর ওই সিগারেট পোড়া ঠোঁট দিয়ে আঁকড়ে ধরলো। চাঁদের কি হলো কি জানে,মেঘের আড়ালে সে হারিয়ে গেলো। আবির নিজের ভালোবাসা দিয়ে এই প্রথম আমাকে ভেতর বাহির ছুঁয়ে দিতে সক্ষম হলো। আমি ওর ওই পোড়া ঠোঁটের কোণায় কামড়ে দিলাম। কিন্তু ও আমায় ছাড়লো না,আরো একটু কাছে টেনে নিয়ে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো। আমি তখন অনুভব করলাম। ভালোবাসা আসুক,দেরিতে আসুক! কিন্তু এই জীবন অধ্যায়ে ভালোবাসা নামক অসুখ হাজারবার আসুক। যাকে আঁকড়ে ধরে বহুবছর নয় বহুযুগ পাড় করা যাবে।
চলবে,,,