#নসীব
#পার্ট_৭
#আরবি_আরভী
-আজকেই লাস্ট আর কোনোদিন যদি দেখেছি অন্য ছেলের হাত ধরেছ তাহলে হাতগুলো কেটে ফেলব বুঝেছ,,,,,নিপা এক কাপ ব্লেক কফি,,,,
আমি কফি হাতে উনার রুমে ডুকে দেখি রুমটা একদম বস্তি হয়ে আছে।। আলমারির সব কাপড় বিছানায় মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।। আর মহাশয় আয়নার দিকে তাকিয়ে একটার পর একটা শার্ট চেইঞ্জ করে নিজেকে পার্ফেক্ট করতে ব্যাস্ত ।। আমি বিরক্তিকর লুক নিয়ে কফিটা টেবিলে রাখতেই উনি আমাকে দেখে আঁতকে উঠে জলদি করে হাতে থাকা শার্টটা দিয়ে নিজের খালি শরীরটা কভের করার চেষ্টা করছেন আর রেগে আমাকে বলছেন,,,
-কারো রুমে প্রবেশ করার আগে যে নক করতে হয় জানো না,, বাবা সব শিক্ষা দিয়েছে শুধু এটা বলতে কি ভুলে গেছেন ,,,
-রুমের কি হাল করেছেন আপনি,, (চারদিকে তাকিয়ে)
-সন্ধ্যায় তরীর সাথে মিট করব কিন্তু নিজেকে রেডি করতে পারছি না,,
-তাই বলে রুমটাকে বস্তি করে দিবেন,,,
-তাতে তোমার কি আমার রুম আমি যা ইচ্ছে তাই করব,, bytheway হুট করে একটা হ্যান্ডসাম ছেলের রুমে আসতে তোমার লজ্জা করল না,,,,
-লজ্জা??? কিসের লজ্জা জান?? আপনার আর আমার মাঝে এই লজ্জা শব্দটা একদম বেমানান তাই না বলুন ,, (উনার কাছে গিয়ে আলতো করে উনার কপালে স্পর্শ করে)
-শেটআপ এন্ড গেট আউট,,(রেগে)
উনার হাতে একটা নীল পাঞ্জাবি ধরিয়ে,,
-দয়া করে আর রুমটা এলোমেলো না করে এটা ট্রায় করুন ঠিক আছে,,,রুম গোছাতে কষ্ট হয়,,
গভীর রাতে সবকাজ শেষ করে ঘুমুতে যাব তখনই আবির এসে আমার পথ আটকিয়ে বলে,,,
-কফি খাব,,
-এত রাতে ,,
-তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো আমি বারান্দায় আছি,,,
কি আর করার বনিকের আদেশ।। খুব বিরক্ত লাগছিল।।যদি পারতাম লোকটাকে গুলি করে মারতাম।।
যাইহোক মন মরা হয়ে মগটা উনার হাতে ধরিয়ে চলেই আসছিল হঠাৎ পেছন থেকে উনি বলে উঠলেন,,,
-থ্যাংকস
-লাগবে না,,, এটা আমার কাজ স্যার,,
-কফির জন্য না,,
-তাহলে,,
-তরী পাঞ্জাবি খুব পছন্দ করে আর নীল নাকি ওর ফেবারিট কালার,,,
২দিন পর আবিরে বোন সাফাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসে।। লোকমুখে শুনেছি ছেলের পরিবার নাকি অনেক বড়লোক।। তাছাড়াও দেশে -বিদেশে ছেলের বিজনেস আছে।। একদম আবিরদের সমতুল্য।। খালামনি তো বলেই ফেললেন উনার আদরের সাফার জন্য এমনই ছেলের তালাশে ছিলেন এতদিন ।। শুভক্ষনে আবির বাড়ি নেই বলে খালামনি খুব রাগারাগিও করছেন।।
যা শুনেছি তার থেকে বেশি দেখছি।।ছেলের পরিবার খুবই ভদ্র।।ড্রইংরুমে সবাই আলাপ করছেন।। সাফাকেও খুব সুন্দর দেখাছে।।১০০% ছেলে পক্ষের পছন্দ হবে ।। কিন্তু কিছুতেই পাত্রকে দেখতে পারছি না।। কথার ফাকে খালামনি ইশারায় আরও নাস্তা দিতে বললে নিপা নাস্তা নিয়ে রুমে উকি দিয়ে আবার ফিরে আসে।।
-কি হলো তুমি ফিরে এলে কেন,,তাড়াতাড়ি যাও খালামনি রাগ করবে কিন্তু,,
-আমার হাত পা কাঁপছে,, আমি পারবো না আপনি নিয়ে যান,,,
-কেন কি হয়েছে,,
-ঐ দিনের ছেলেটা,,উনিই হয়তো পাত্র,,।। আল্লাহ না জেনে উনাকে কত বকাঝকা করেছি,, বড় ম্যাম সাহেব এবার আমার চাকরিটা নট করেই ছাড়বেন,, (কান্না করতে করতে)
-কোন ছেলে,, আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না
-কি যেন নাম হ্যা মনে পড়েছে নীলয়,,,ম্যাডাম আমাকে বাচান,,এবার আমি শেষ,, (কেদে)
-আচ্ছা আচ্ছা আমি নিয়ে যাচ্ছি আমাকে দাও,,
সুন্দর করে গোমটা দিয়ে ড্রইং রুমে যেতেই একজন ভদ্র মহিলা আমাকে দেখে হেসে বলতে লাগলেন,,,
-ঐতো নীলা মা এসেছে,, আহ এগুলোর কি দরকার ছিল,, তুমি নীলয়ের পাশে গিয়ে বসো মা,,,
পরিবেশটা স্তব্ধ হয়ে গেছে।। যদিও আমাকে দেখে নীলয় মুচকি হেসেছে কিন্তু তাদের আচরণে আমার মতো খালামনিসহ সবাই ভেবাচেকা খেয়ে আছে।। আমি ভদ্র মহিলার কথা রাখতে যেইনা উনার পাশে বসেছি অম্নি উনি উঠিয়ে নীলয়ের কাছে ধপাস করে বসিয়ে আবার শুরু করলেন,,,
-বাহ দুজনকে কি সুন্দর মানিয়েছে,,আপনার মেয়ে সত্যি অনেক লক্ষী।। যত দ্রুত সম্ভব আমি দুজনের বিয়ে দিয়ে দিতে চাই,,
বিয়ের কথা শুনে আমি দাড়িয়ে গেলাম।। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো।। সাথে সাথে খালামনি ভীষণ রেখে নাক মুখ লাল করে বলছেন,,,
-আপনারা মাথা ঠিক আছে তো কি বলছেন এসব,,,এই কলঙ্কিনী দূর হও এখান থেকে বারন করেছিলাম না আমাদের পারিবারিক বিষয়ে নাক গলাতে ,,(আমাকে উদ্দেশ্য করে)
ভদ্র মহিলা আমার দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকলে আমি বলতে থাকি,,,
-আপনার ভুল হচ্ছে আন্টি আমি এই বাড়ির চাকর,, আপনি যাকে ভাবছেন আমি সে নই,,,
কথাটা বলে চলে যাচ্ছি হঠাৎ নীলয় আমার হাত দুটো ধরে হাটু গেড়ে বসে বলতে থাকেন,,,
-Will you mary me,,,,তোমার অতীত বর্তমান আমি কিছুই জানতে চাই না,, আমি শুধু তোমার ভবিষ্যত হতে চাই,,
চলবে