নসীব #পার্ট_৯

0
520

#নসীব
#পার্ট_৯
#আরবি_আরভী

তরীকে দেখার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।। খালামনি রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।। উনার সোনার ডিম দেয়া রাজহাঁস এক্ষুনি হাত ছাড়া হয়ে যাবে এটা কি মেনে নেয়া যায়।।

আবির দৌড়ে তরীর কাছে গিয়ে বলতে থাকেন,,

-তুমি যা ভাবছ তা না,, ট্রাস্টমি আম্মু রাগ করবে বলে এমনটা করেছি,, আমরা একসাথে ছিলাম কিন্তু নীলা বিছানায় আর আমি সোফায়,,,

তরী আবিরকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ,,
-আই ট্রাস্ট ইউ আবির,,আমি জানি তুমি আমাকে কখনো ধোঁকা দিবে না,,,
-হুমম

আমি কিচেনে গিয়ে কাজ করতে থাকলে নিপা এসে মুচকি হেসে আমাকে আলতো ধাক্কা দিলে আমি বিরক্তির ভাব নিয়ে বলে উঠি,,

-প্লিজ তুমি শুরু কর না,, সত্যি বলছি আবির যেটা বলেছেন সেটাই ঘটেছে আমি বিছানায় আর আবির সোফায়,,,
-আহ্ তাহলে লজ্জা পাচ্ছেন কেন,,
-নাতো,, আমি কেন লজ্জা পাবো,,
-মেনে নিলাম প্রেগন্যান্সির কথাটা তো স্যারকে বলেছেন নাকি,
-বলার আর কি বাকি আছে,,,
-আপনি অপারেশন করেননি এটাই বলবেন,,,
-না,,
-উউফফ কেন বলছেন না আপনি,,,
-এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না নিপা,, আর প্লিজ তুমিও কাউকে কিছু বলতে যেও না,,
-ঠিক আছে কিন্তু,,,থাক আমি আর কিছু বলব না ,, (মন মরা হয়ে)

নিপা তার ফোনটা হাতে নিয়ে মেজাজ খারাপ করে বলতে থাকে,,,

-ধ্যাৎ আজকেও দিবে না,,

আমি সবজি কাটতে কাটতে বললাম,,
-কি দিবে না
-গল্প,,,,,(একটু রেগে)
-কিসের গল্প,,কার গল্প
-আর বলবেন না আরবি আরভী আপুর লেখা নসীব গল্পটা আমি নিয়মিত পড়ি কিন্তু লেখিকা কিছুদিন ধরে গল্পটা আর দিচ্ছেন না,,,
-তা উনি দিচ্ছেন না কেন,,,
-গল্পটা একটু পপুলার হয়েছে তো তাই লেখিকা দেমাগী হয়ে গেছেন,,(বিরক্তকর লুক নিয়ে)
-দেখ নিপা,, তুমি যেমনটি বললে গল্পটা একটু পপুলার,, হতে পারে অনেক অসাধু কপিবাজরা গল্পটা নিজেদের নামে পোস্ট করছে বলে লেখিকা তাতে বিরক্ত বা তার পারিবারিক সমস্যার কারণেও গল্প দিতে দেরী হচ্ছে তাই না,,
-হুমম ঠিক বলেছেন ম্যাডাম,, হতে পারে,,।।

তারমধ্যেই খালামনির ডাক,,
-নিপা আমার ঔষধ কোথায়,,

নিপা আমার সাথে আমতা আমতা করতে করতে,,
-ইশশ রে কালকে আমার ছোট ভাই খেলার ছলে ম্যাম সাহেবের রুমে গিয়ে তার সবগুলো পিল খুলে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে,,, ভেবেছিলাম কেউ দেখার আগেই কিনে আনবো কিন্তু ভুলে গিয়েছি,,,,,এখন কি হবে(কাদো কাদো কন্ঠে)
-আল্লাহ,,, তুমি এটা কি করলা নিপা,,

খালামনি রেগে কিচেনে এসে,,

-কি রে কথা কানে যায় না?
– খালামনি আপনার ঔষধ তো শেষ,,
-কি এত তাড়াতাড়ি,,
-কি বলছেন সেই কবে এনেছিলাম,,,, যাক কোনো ব্যাপার না আমি এক্ষুনি এনে দিচ্ছি,,
-ঠিক আছে জলদি যাও,,,,
-আমি এই যাব আর এই আসব আপনি কোনো টেনশন করবেন না,,

এদিকটা নিপার হাতে দিয়ে আমি তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পরলাম।। কিছু দূর যেতেই একটা প্রাইভেট কার আমার পিছু নেয়।।আমি যেদিকে যাচ্ছি গাড়িটাও সেদিকে আসছে।। কালো গ্লাসের ভেতরে কাউকে অনুমান করতে পারছি না।। হঠাৎ গাড়িটা থামিয়ে নীলয় বেরিয়ে এসে বলতে শুরু করেন,,

-নীলা কথা শোন,,,
-প্লিজ আর আমাকে ফলো করবেন না,,, চলে যান এখান থেকে
-দাঁড়াও প্লিজ তোমাকে আমার সাথে একটু যেতে হবে,,
-কোথায় যাবো আপনার সাথে ,,
-নীলা আমার জুলিয়েট সরি দাদীমা ICU তে ভর্তি,,সে তোমাকে একবার দেখতে চেয়েছেন,,প্লিজ না কর না,
-আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে আমি পারবো না,,, আপনাকে অনুরোধ করছি প্লিজ চলে যান,,

নীলয় আমার হাতটা ধরে খুব রিকুয়েস্ট করে বলছেন কিন্তু আমি যাবো না বলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছি।। হাতাহাতির একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পরলে নীলয় আমাকে কোলে করে গাড়িতে উঠিয়ে ডক্টরের কাছে নিয়ে আসেন,,,,

ডাক্তার সাহেব নীলয়কে কেভিনে নিয়ে বলতে থাকেন,,,

-পেশেন্ট কে হয় আপনার ,
-আমার স্ত্রী,,,,, এনিথিং সিরিয়াস ডক্টর??
-ডোন্ট ওয়ারি মি.নীলয় মা আর বেবী দুজনেই,,
-বেবী???,,,(অবাক হয়ে)
-মি.নীলয় আপনার স্ত্রী ৪মাসের প্রেগন্যান্ট আপনি কি তা জানেন না,,
-ও হ্যা ডক্টর বলুন,,,(আতংকিত হয়ে)
-হুম যা বলছিলাম মা আর বেবী দুজনেই সুস্থ কিন্তু উইক,, কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি সময়মত খাইয়ে দিবেন
-হুম,,

আমি বেড থেকে উঠে চলেই যাচ্ছিলাম।। সামনে নীলয়কে দেখে থেমে যাই।। উনি চিন্তিত চেহারা আমাকে বলে উঠেন,,

-ঠিক আছ?
-হুম,
-আচ্ছা চল তোমাকে মেডিসিন কিনে দিয়ে বাড়ি দিয়ে আসি,,

নীলয় আমার জন্য অনেক করলেন।। এতক্ষণ তাকে ইগ্নোর করছিলাম বলে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।। উনার দাদীমা জাস্ট আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছেন কিন্তু আমি মুখের উপর না করে দিলাম।।

-আপনার দাদীমার হসপিটালটি এখান থেকে কতদূর??

নীলয় হাটা থামিয়ে পেছনে মোড়ে,,
-এইতো ১ঘন্টার রাস্তা,,কেন
-দাদীমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে,
-তোমার শরীর,,,
-আমি একদম ঠিক আছি আপনি আমাকে নিয়ে চলুন,,
-ওকে,,

গাড়িতে বসে আছি।।নীলয় গম্ভীর হয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছেন।। কেন জানি না মনে হচ্ছে উনার কিছু একটা হয়েছে।। আমার দিকে একবারও তাকাচ্ছেন না।।

হসপিটালে এসে আমি স্তব্ধ।। নীলয়ের গোটা পরিবার এখানে।। খুব অস্বস্তি লাগছিল।। নীলয়ের আম্মু আমাকে দেখে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে আছেন।।

নীলয় শক্ত করে আমার হাতটা ধরে,,

-জুলিয়েট নীলাকে দেখতে চেয়েছিল তাই ও এসেছে,,,

চলবে,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here