নিস্তব্ধ বিচরণ,পর্ব -২৬/ শেষপর্ব
তানজিলা
বুকের একপাশে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। ব্রাউন কালার হুডি পড়া লোকটা রেহানের ঢলে পড়া দেহের দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মুহুর্তেই বাইক নিয়ে ইনায়ার দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল। যদিও সেদিকে ইনায়া আর সময় নষ্ট না করে রেহানের দিকে ছুটে ওর রক্ত মাখা স্থানে হাত দিয়ে চেপে ধরলো। ইনায়ার হাতের ওপর নিজের হাত রেখে চেপে ধরলো রেহান। একমুহূর্তের জন্য নিভু নিভু চোখে চোখ রেখে প্রচন্ড ভয় চেপে ধরলো ইনায়ার মনে। খুব কাছের কাউকে হারানোর ভয়। রেহানের চোখে অসহ্য যন্ত্রণার ছাপ ফুটে উঠেছে। ইনায়া কোনমতে নিজেকে সামলে আশেপাশে চোখ বুলালো। দুজন নার্স রেহানকে দেখতেই তাদের একজন ছুটে এদিকে এলো। আর একজন হাসপাতালের ভেতরে ছুটে গেল।
শব্দ শুনেই ইয়াসমিন গাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো। ইনায়া আর একজন নার্সকে রেহানের রক্তাক্ত শরীরের পাশে দেখে কিছু সময়ের জন্য যেন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো ও। এক পা ও সামনে এগুচ্ছে না। এতো রাতে মানুষের আনাগোনাও তেমন নেই। তবে ভর্তি রোগী ও রোগিদের পরিবারের সদস্যের অনেকে শব্দ শুনে ধীরে ধীরে ভীর জমাচ্ছে এদিকে।
অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সময়ও রেহানের বুকের ওপর থেকে ইনায়ার হাত সরেনি। একটু পর পর পিট পিট করে তাকাচ্ছে রেহান। একবার ইনায়ার দিকে আরেকবার ইয়াসমিনের দিকে। এই অবস্থায়ও ইয়াসমিনকে চোখের ইশারায় আস্বস্ত করার চেষ্টা করছে রেহান। আর তা দেখে ফুপিয়ে উঠলো ইয়াসমিন। শক্ত করে রেহানের হাত ধরার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। অপারেশন থিয়েটারের কাছে আসতেই ইয়াসমিনকে দূরে সরিয়ে দেয়া হলো। ইনায়ার হাত রেহানের বুকের ওপর থেকে সরাতে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে। তার সবচেয়ে বড় কারণ রেহান নিজেই। শেষবারের মতো ইনায়ার হাত জোর দিয়ে আঁকড়ে ধরে কাতর দৃষ্টিতে ইনায়ার চোখে তাকায় ও। এমন ভাবে হাত ধরে আছে যেন এরপর হয়তো আর এই হাত ধরা হবে না। জানে না এই যন্ত্রণার কী নাম। মৃত্যু যন্ত্রণা নাকি অন্যকিছু!
__________________________________
হাসপাতালের করিডোরে থাকতেই বাইরে গুলির আওয়াজ কানে আসে রিয়াদের। অশ্রুশিক্ত চোখে ফোনে ক্রমাগত একটা নাম্বার ডায়াল করছে রিয়াদ। কিন্তু কোন রেসপন্স নেই। হঠাৎ করেই পাশের কেউ কোন ছেলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা বলতেই ঠাস করে রিয়াদের হাত থেকে ফোন পড়ে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। কম্পিত হাতে ওখানেই ধপ করে বসে পড়ে রিয়াদ। কিছু সময়ের জন্য মনে হলো মাথাটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। কয়েকবার মাথা দুইপাশে নাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালো ও। দৌড়ে গেল অপারেশন থিয়েটারের কাছে।
ইনায়াকে অক্ষত অবস্থায় আর ইয়াসমিনের কান্না দেখে রিয়াদের বুঝতে কোন সমস্যা হলো না যে কী হয়েছে! কারও জন্য কুয়া খুঁড়তে গিয়ে আজ নিজের ছেলেকেই সেই কুয়ায় পড়তে হলো!
-“এ আমি কী করলাম! আমিতো..!
আর বলতে পারলো না রিয়াদ। ইয়াসমিন হুট করে রিয়াদের কলার চেপে ধরলো। যেই ইয়াসমিন আজ পর্যন্ত উঁচু গলায় রিয়াদের সাথে কথা বলেনি সে আজ রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে!
-“আমার আগেই বুঝে নেয়া উচিত ছিলো। তোমার অন্যায় সহ্য করতে করতে হাঁপিয়ে গেলেও কোন প্রতিবাদ করিনি। আজ আর ছাড়বোনা। আমার ছেলেকেও মারতে চাও তুমি! এতোদিন তোমার মুখে শুনেছি ইনায়া পাগল। তবে সত্য কী জানো, ইনায়া না তুমি হচ্ছো আসল পাগল!
ইয়াসমিনের চিৎকার শুনেও রিয়াদের মুখে কোন কথা নেই। এতক্ষণ পর্যন্ত দাম্ভিকতার নেশায় অন্ধ হয়ে গেলেও এখন যেন কোন জোর নেই। ইনায়াকে মারতে লোক ভাড়া করেছিলো ও। অনুশোচনাবোধ করতেও যেন জড়তা লেপ্টে গেছে হৃদয়ে।
_____________________________________
সকালের দিকে জেরিনের দাফনের কাজ শেষ হয়। পুরোটা সময় রিয়াদ ছিলো নিস্তব্ধ। পরিবার হারানোর যন্ত্রণা আজ বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে ও। হাতে হ্যান্ডকাফ লাগতেও নিঃশব্দে পুলিশের গাড়িতে গিয়ে উঠে বসলো। রেহানের সাথে দেখা করার কোন সুযোগ হয়নি ওর। জানে না ভবিষ্যতে কখনো হবেও কি-না!
রেহানকে চড় মারায় আনিসার সাথে তুমুল ঝগড়া হয় জেরিনের। একপর্যায়ে রাগের মাথায় আনিসাকে ধাক্কা দিয়ে বসে জেরিন। টেবিলের কোণে বেশ জোরে মাথায় আঘাত পেয়ে কিছু সময়ের মধ্যে মৃত্যু ঘটে আনিসার। বিষয়টা এতদূর গড়িয়ে যাবে কল্পনাও করেনি জেরিন। সবকিছুই দেখে ফেলে ইনায়ার বাবা হাবিব। কিন্তু রিয়াদের হুমকিতে মুখ বন্ধ রেখেছিলো হাবিব। আর সেটা আংশিক দেখে ইয়াসমিনও মনে পুষছিলো রেহানের প্রতি অনেক বড়ো ভুল ধারণা। ইনায়ার ক্ষতি করার হুমকি দিতেই রিয়াদের কথা অনুযায়ী সাদাফের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয় হাবিব। রেহানের সাথে সাদাফের চলাফেরা সবসময়ই অপছন্দ ছিল রিয়াদের। ও চেয়েছিলো এক ঢিলে দুই পাখি মারতে!
এ নিয়ে মনে বিন্দুমাত্র শান্তি পায়নি হাবিব নিজেও। একদিকে মেয়ের জন্য চিন্তা অপরদিকে নিজের দেয়া ভুল সাক্ষ্য। ভিতরে ভিতরে জ্বলে মরছিলো ও। সাদাফও জেল পালানোর পর হাবিবকে পাগলের মতো খুঁজছিলো। আনিসা খাতুনের ছেলে স্নিগ্ধর সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছিলো একবার কিন্তু পারেনি।সাদাফ শেষপর্যন্ত হাবিবকে না পেয়ে ইনায়াকে কিডন্যাপ করে বসে। এবার সব ভয় ছেড়ে ইমার্জেন্সি হিসেবে নিজের সাক্ষ্য রেকর্ড করে রাখে হাবিব। যেখানে জেরিন আর রিয়াদের ব্যাপারটা থাকে। যদি ওর কিছু হয়ে যায় সেই সময়ের জন্য। পেনড্রাইভ টা এক কাছের বন্ধুর কাছে রেখে যায় ও।
রিয়াদ কোন রিস্ক নিতে চায়নি। তাই সেদিনই হাবিবকে খুন করিয়ে তা এক্সিডেন্ট হিসেবে চালিয়ে দেয়। আর পরবর্তীতে সাদাফকে। কিন্তু ইনায়ার ক্ষেত্রে ফেঁসে গেল রিয়াদ। পেনড্রাইভ সহ যেসব গুন্ডা ভাড়া করেছিলো তাদের জবানবন্দিতে আজ ধরা পড়লো ও!
স্নিগ্ধর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তামিম। ধোঁকা হয়েছে ওর সাথে। পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে তামিমকে প্রমান মিটানোর দায়ে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেই সাথে ডমেস্টিক ভায়োলেন্স কেসেও বাজে ভাবে ফেঁসে গেছে ও। পিঠ পিছে ছুড়ি মেরেছে জান্নাত! সামনে পেলে হয়তো এক্ষুনি খুন করতো ওকে!
তামিমের বিধ্বস্ত অবস্থাকে উপেক্ষা করে বেশ ফ্রেস মুডে চায়ের দোকানে এগিয়ে গেলো ও। নিহালকে আজ আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না। ওসি, না ভুল হয়ে গেলো! এক্স ওসির ব্যাপারটায় ব্যাস্ত হয়তো! বরাবরের মতো হাসিমুখে চায়ে চুমুক দিয়ে যাচ্ছে স্নিগ্ধ। বুঝতে পারছে বুকের একপাশটা যেন ঝলসে যাচ্ছে। না, গরম চায়ের জন্য না। মমতার পরশ হারানোর যন্ত্রণায়!
_____________________________________
একে একে কেটে গেল চার মাস। গুলিটা রেহানের হার্ট থেকে কিছুটা দূরে লেগেছিল। হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জের পর একটু একটু করে নিজেকে সামলে নিচ্ছে রেহান। ব্যাবসার হাল এবার ও নিজেই ধরছে। এতোদিন জান্নাতই বাড়ির সবার খেয়াল রেখেছে। হয়তো অন্য সময় হলে জান্নাতকে ভিষণ বকতো ইয়াসমিন। মরে গেলেও স্বামীর ঘর ছাড়া যাবে না এই বলে দূরে ঠেলতো ওকে। কিন্তু আগের ইয়াসমিন যে এখন নেই। আবারও ঐ ভয়ংকর জীবনে ফিরে যেতে কখনোই বলবে না নিজের মেয়েকে!
এই চার মাসে ইনায়ার সাথে তেমন কথা বলেনি রেহান প্রয়োজন ছাড়া। তবে ইনায়া যে ধীরে ধীরে রেহানের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে সেটা ও খুব ভালো করেই বুঝতে পারে। যতদিন হাসপাতালে ছিল ওর সাথেই একপাশে গুটিশুটি মেরে ছিলো ইনায়া। খুব কমই চোখের আড়ালে গিয়েছিলো। ইনায়ার চোখে লুকিয়ে থাকা দূর্বলতার কম ফায়দা নেয়নি রেহান। তবে সম্পর্কটা এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
মেঘের আড়ালে সূর্য লুকিয়ে আছে। শীতকালের বৃষ্টি সচরাচর চোখে পড়ে না! ঝুমঝুম শব্দে মুখরিত পরিবেশ।
শীতল আঁখিজোড়ায় লেপ্টে আছে বিষন্নতার আবেশ। কত না বলা কথা জমে আছে তাতে। এমন দিনে ইনায়াকে আটকানো দায়। সে বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছে সেই বৃষ্টি কণা। রেহান নির্বিকার ভঙ্গিতে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানবীকে দেখছে। পরে কি যেন মনে করে রেহান নিজেও হাত বাড়িয়ে দিল। ইনায়ার হাতের সাথে ওর হাত প্রায় ছুঁই ছুঁই। ইনায়া খানিকটা চমকে উঠলেও পিছনে ফিরে তাকালো না।
-“ছাঁদে যাবে?”
রেহান প্রশ্নটা করেই সরে এলো। ইনায়া একবার রেহানের দিকে তাকালো শুধু। কিছু বললো না। ইনায়ার নিরবতায় মৃদু হেসে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ও। ইনায়া প্রায় এক মিনিটের মতো কিছু একটা চিন্তা করে আবারও বৃষ্টিতে মনোনিবেশ করলো।
কিছুক্ষণ পর নিচে রেহানের গাড়ি যেতে দেখলো ও। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে এখনও। কেন যেন বারবার মনটা ছাঁদে চলে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত মনের কাছে পরাজিত হয়ে ছাঁদে পা বাড়ালো ইনায়া। রুম থেকে কিছুটা সামনে যেতেই আরেকটা ছোট্ট সিড়ি চোখে পড়ে যা ছাদের দিকে যায়।
ছাদটা আকারে বেশ বড়। আজ অনেকদিন পর হৃদয়ে শান্তি অনুভব করছে ও। ইয়াসমিন, নাজনীন এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়র বাড়ি গেছে। এখানে শুধু জান্নাত আর মারিয়া আছে। জান্নাত জেগে থাকলে ওকে টেনে নিয়ে আসতো ইনায়া। কিন্তু এই মুহুর্তে মা মেয়ে দু’জনই ঘুম। আর মারিয়া তো সুযোগও পেলেই ইনায়ার মাথা খারাপ করে ফেলে। আনমনে হেসে উঠলো ইনায়া। মারিয়াকে দেখলেও ওর আরিফার কথা মনে পড়ে। দু’জন একই মানের দুষ্ট! ভেজা পায়ে পুরো ছাঁদ জুড়ে বিচরণ করছে ইনায়া। আশেপাশের কোন খেয়াল নেই ওর। বৃষ্টি কণার শীতল স্পর্শে হারিয়ে গেছে ও। ঠোঁটের কোণে স্মিত হাসি। হঠাৎ কিছু একটা পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনতেই বিদ্যুৎ গতিতে দরজার দিকে তাকালো ইনায়া।
ইনায়ার তীক্ষ্ণ চাহনিতে রেহান নিজেও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। সাথে হৃদয়ে জাগ্রত হলো ঘোর বিরক্তি। ওকে দেখলেই চাহনির উজ্জ্বলতা কমে যেতে হবে। মুগ্ধ চোখে নিজেই বউকেও দেখতে পারবে না না-কি!
ইনায়া এখনও সেই তীক্ষ্ণ নজরে রেহানের গতিবিধি লক্ষ্য করছে। এমুহূর্তে ইনায়াকে কোন বাঘিনীর থেকে কম মনে হচ্ছে না। যেন সুযোগ খুঁজছে কখন সুবিধামতো হামলে পড়বে! মস্তিষ্কে এমন অদ্ভুত কথা হানা দিতেই মুখে মলিন হাসির রেশ ফুটে উঠলো। বাঘিনী হয়তো জানেই না তার আঁখি জোড়ায় কতবার ঘায়েল হয়েছে ও।
-“আর কত মারবে আমাকে!”
অদ্ভুত নেশায় ছেয়ে থাকা চোখে আর চোখ রাখতে পারলো না ইনায়া। কপালে লেপ্টে থাকা চুলগুলো আলতো ছুঁয়ে সরিয়ে হুট করে সেখানে চুমু খেয়ে বসলো রেহান। হৃদপিন্ডের গতি যেন মুহূর্তেই দ্বিগুণ হয়ে গেল। থমকে গেছে ইনায়ার চোখ। একহাতে কপালের চুমু খাওয়া স্থানে হাত রেখে চোখগুলো রসগোল্লার মতো বড় বড় করে রেহানের দিকে তাকালো ইনায়া। রেহান বাঁকা হেসে যেতে গেলেই ওর হাত কেউ আঁকড়ে ধরতেই চমকে উঠলো ও। ইনায়া আবারও সেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুড়ে মারলো রেহানের দিকে। আচমকাই নিজের গালে নরম ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করলো রেহান। লজ্জায় লাল হয়ে থাকা মেয়েটা তার সামনে থেকে দৌড়ে যেতে নিলেই এক হাতে ইনায়াকে আঁটকে অপর হাত নিজেই গালে রেখে তীক্ষ্ণ নজরে ইনায়ার দিকে তাকালো রেহান। ইনায়ার বৃষ্টি বিলাশী মনে হানা দিচ্ছে অসংখ্য অনুভূতি। শীতল চাহনিতে তাকায় ও। যেন চোখের ভাষায় মনে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রেমের জানান দিচ্ছে। এক টানে ইনায়াকে নিজের সাথে মিশিয়ে ফেললো রেহান। কানের দিকে ঠোঁট এগিয়ে নিয়ে বললো।
-“আমি যখন ছাদে আসতে চাইলাম আসলে না কেন? আমাকে রেখে এখন একা একা টইটই করে বেড়াচ্ছো! এই মেয়ে, তোমার সাহস তো কম না!”
মেকি রাগের দৃষ্টিতে তাকালো রেহান। ঘন ঘন চোখের পলক ফেলছে ইনায়া। হঠাৎ করেই ইনায়ার চোখে অশ্রুসিক্ত চোখ দেখে ওর কোমড় থেকে হাত সরিয়ে নেয় রেহান। প্রথম যখন ইনায়াকে ওর ছোঁয়ায় ভয় পেতে দেখেছিল সেদিনও হৃদয়ে এতটা ধাক্কা লাগেনি যতটা আজ লাগছে। রেহান মুখটা শক্ত করে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ওকে হুট করে জরিয়ে ধরলো ইনায়া। রেহানের বুকে মিশে ওর চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া অশ্রুকণা। যেন তা জানান দিচ্ছে রেহানের প্রতি তার অগাধ ভরসার!
রেহান কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালেও পরে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয় ইনায়াকে। কিছু না বলা কথা নাহয় না বলাই থাক! ইনায়ার কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো রেহান। অনুভূতির জাগরণ প্রকাশ পাচ্ছে সেই ছোঁয়ায়। অব্যাক্ত অনুভূতির অত্যাচারে জর্জরিত মন হয়ে উঠলো প্রাণবন্ত। ইনায়াকে মন ভরে দেখছে রেহান।
সেই বৃষ্টিভেজা অশান্ত আঁখি জোড়ায় মুগ্ধ নজরে দেখছে ও! হৃদয় জুড়ে যার নিস্তব্ধ বিচরণ!
সমাপ্ত….