নীরবতা পর্ব_৩৬
#নাইমা_জাহান_রিতু
রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া.. হালকা ঠান্ডাভাব পড়তে শুরু করেছে। চারিপাশ থেকে সূর্যের তাপ গায়ে এসে লাগাতে শরীরে ম্যাজমেজে ভাব চলে আসছে। বাস থেকে নেমে হাই উঠিয়ে মুবিন হাটতে শুরু করলো গ্রামের চিরপরিচিত চেনা পথ ধরে। অনার মৃত্যুর তিনমাস পেরিয়ে গেছে। এর মাঝে গ্রামে একবারও পা দেয়নি সে। দিতে ইচ্ছে হয়নি। মন টানেনি নি। কিছু পথ হেটে একটি ভ্যান দেখতে পেয়ে তার কাছে এগিয়ে এল মুবিন। গম্ভীরমুখে বললো,
-“হাজীবাড়ি যাবে?”
-“জ্বি ভাই যাবো। আপনি কেমন আছেন? মেলাদিন পর দেখলাম আপনারে।”
-“ভালো।”
ভ্যানে উঠে বসতেই পুরো মাথা ঝিমঝিম করে উঠলো মুবিনের। বেশ ক’মাস হলো সারারাতে একদন্ডের জন্যও দ’চোখের পাতা এক করতে পারেনা সে। একফোঁটা ঘুমও ভর করতে পারেনা তার এই ছোট্ট দু’চোখের পাতায়। বিপরীতে সেখানে এসে ভর করে নিজের প্রতি একরাশ হতাশা, প্রিয়জনকে হারানোর দুঃখ-কষ্ট।
-“ভাই দুইডা মিনিট বসেন। আমি এক প্যাকেট বিড়ি নিয়া আসি।”
-“যাও।”
ভ্যানওয়ালা দৌড়ে গলির ভেতর ঢুকে যেতেই চোখজোড়া বুজে সজোরে একটি নিঃশ্বাস ফেললো মুবিন। বাড়িতে আজও আসতো না সে। তবে বাবামায়ের কান্নাকাটির সাথে পেরে না উঠে আসতে একরকম বাধ্য হলো। কেনো যে তারা আবেগকে উপেক্ষা করতে পারেনা! নিয়ন্ত্রণ জিনিসটি সে পারলে তারা কেনো পারেনা? সে কি কোনো মানুষ নয়? কোনো যন্ত্র? তার মাঝে কি কোনো অনুভূতি নেই? কোনো বোধ শক্তি নেই? সবই আছে। তারপরও সে যেখানে নিজের আবেগকে বশিভূত করে নীরবতা পালন করে রয়েছে সেখানে তারা কেনো পারেনা?
-“আরে মুবিন না?”
পুরুষালী মোটা কন্ঠ কানে আসতেই ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকালো মুবিন। প্রায় সাথেসাথেই বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো তার। কিছু শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে সবুজের পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছে চৈতালি।
-“কেমন আছো?”
চৈতালির দিক থেকে নজর সরিয়ে সবুজের দিকে তাকিয়ে বিব্রত ভঙ্গিতে হাসলো মুবিন। বললো,
-“ভালো.. আপনি ভালো?”
-“আলহামদুলিল্লাহ। তা বাড়ি যাচ্ছো?”
-“জ্বি..”
-“অনেকদিন পর এলে! বড় ভাই হিসেবে একটা কথা বলি কেমন? অনার মৃত্যুর পর তোমার বাবামা অনেক মিইয়ে পড়েছে। ছেলে হিসেবে তোমাদের উচিৎ তাদের পাশে থেকে তাদের সাপোর্ট দেয়া। তাদের বোঝা, তাদেরকে সময় দেয়া। কষ্ট দিও না তাদের। এমন একদিন আসবে যখন তোমার হাতে অফুরন্ত সময় থাকবে কিন্তু তোমার বাবামা থাকবেন না।”
সবুজের কথার পিঠে কোনো জবাব দিল না মুবিন। ইতস্ততবিক্ষিপ্ত চোখে আশেপাশে তাকাতেই ওপাশ থেকে আবারও সবুজ বললো,
-“অনেক জটিল কথা বলে ফেললাম কী?”
-“না ঠিকাছে।”
-“বাড়ি এসো একদিন। এখন তো চৈতালিকেও বাড়িতে উঠিয়ে নিয়েছি। গিয়ে না হয় বোনের বান্ধবীর সংসার দেখে এসো।”
কলিজায় মোচড় দিয়ে উঠলো মুবিনের। কোনোমতে ক্ষীণ স্বরে সে বললো,
-“জ্বি.. যাবো।”
হাসলো সবুজ। পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি বের করতে করতে চৈতালির উদ্দেশ্যে বললো,
-“তুমি এখানে দাঁড়াও। আমি বাইকটা এদিকে নিয়ে আসছি।”
দ্রুত পায়ে সবুজ রাস্তা পেড়োতেই মুবিনের অস্থির চোখের দিকে তাকালো চৈতালি। ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে বললো,
-“কেমন আছো?”
-“ভালো। তুমি?”
-“আমিও ভালো। দেখছো না হাতে কত শপিং ব্যাগ? পুরোটা ভর্তি আমার বায়না।”
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুবিন বললো,
-“বলেছিলাম না সব ঠিক হয়ে যাবে একদিন?”
-“হ্যাঁ.. তবে জানো তোমাকে নিয়ে একটা আফসোস এখনো আছে আমার?”
-“আফসোস?”
-“হ্যাঁ, আফসোস। শুনবে?”
-“বলো..”
-“তুমি কেনো আমার জীবনে এসেছিলে? কেনো আমাকে স্পর্শ করেছিলে? নয়তো আমার জীবনের প্রথম পুরুষ আমার জীবনের প্রথম স্পর্শ সবটা আমার স্বামীই থাকতো। আফসোস হয়.. প্রচুর আফসোস হয়।”
-“শুনে খুশি হলাম। ভালো থেকো তোমরা।”
কথার গতিপথ না বাড়িয়ে ভ্যান ছেড়ে নেমে ব্যাগ হাতে উঠিয়ে মুবিন হাটতে শুরু করলো রাস্তা ধরে। জটিল পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে চৈতালি। তবুও তার প্রতিটি কঠিন কথায় কেমন যেনো হাহাকার ছিল। তাকে না পাবার বেদনা ছিল। চোখে ছিল কষ্ট। যে কষ্ট সে দিয়েছিল তাকে অনার মৃত্যুর পর। অনার হত্যাকারীর বিচারকার্য চলছে। একসময় হয়তো রায় তাদের পক্ষেও আসবে। তবে চৈতালিকে নিয়ে বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তাকে, তা নিয়ে মাঝেমাঝেই অনুতাপ হয় তার। অস্থির লাগে। খুব ইচ্ছে হয় সকল বাধানিষেধ ভুলে চৈতালিকে নিজের করে নিতে। তার কাছে মাফ চাইতে। তবে বিবেকের কাছে পেরে উঠেনা। যা যেভাবে চলছে চলুক না! যেখানে ভালোবেসে চৈতালির উপর বিশ্বাস টুকুই রাখতে পারেনি সে, সেখানে আর যাইহোক একদমই যোগ্যই নয় সে চৈতালির। বুকচিরে গভীর এক দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এল মুবিনের। হাটার বেগ খানিকটা কমিয়ে সে খানিকটা দূরের কবরস্থানের দিকে। যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছে অনা। তার সেই ছোট্ট বোন। বাড়ি ফিরে যার সঙ্গে খুঁনসুটিতে না জড়ালে চলতোই না তার…
কড়াইয়ে তেল ঢেলে পেঁয়াজ মরিচ তাতে ছেড়ে দিল উল্লাসী। চুলোর আঁচ কমিয়ে মুন্নি সরকারের দিকে তাকিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে বললো,
-“ঘুম বেড়ে গেছে নাকি উনার আমাকেই ভালোলাগছে না বুঝি না!”
-“কাররে?”
-“আরে উনার..”
কপাল কুঁচকে মুন্নি সরকার বললো,
-“মেসবাহর?”
-“হু..”
-“কেনো? কিছু হয়েছে? খুলে বল তো?”
-“তোমাকে বুঝিয়ে বলতে পারছি না ভাবি। তবে উনার কথাবার্তা কমে গেছে। মনখুলে কিছু বলেনা। হাসি ঠাট্টা তো ভুলেই গেছে।”
-“আর রাতে? ওটা হয় ঠিকমতো?”
-“আমি নিজে থেকে গেলে হয়। মাঝেমধ্যে তো সুহাকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। সেদিন একটিবার ডাকেওনা। যেনো উনার নিজের কোনো চাওয়া নেই। জানো? কত খারাপ লাগে আমার?”
চিন্তিত মুখে উল্লাসীর কথা শুনলো মুন্নি সরকার। অনার মৃত্যুর পর তার সঙ্গে উল্লাসীর সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে। স্বাভাবিক বলতে এতটাই স্বাভাবিক যে সে নিজে তুই এবং উল্লাসী তুমিতে নেমে এসেছে। তাদের মাঝে বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে। কেনো যেনো মেয়েটিকে প্রচুর ভালোলাগে তার। তার সঙ্গে সময় কাটাতে, সংসারের সুখ দুঃখের গল্প শোনাতে ভালোলাগে।
-“আসলে তুই ছোটো। তবে এতটাও ছোট নস যে ওর পরিস্থিতি বুঝতে পারবি না। আবার মেসবাহরও এত উদাস হওয়া ঠিক না। বোনের মৃত্যুর শোক নিয়ে আর কদিন এভাবে চলবে? জন্ম মৃত্যু তো জীবনেরই অংশ।”
-“তুমি কী বলতে চাইছো এর মাঝেও আমার বয়সের দোষ? এমনিতেই উনি সারাদিন বলে তুমি ছোট.. বুঝবে না। আবার আজ তুমিও বলছো!”
-“ইশ! চুপ কর তো। এত ন্যাকা কান্না পাস কই? শোন, মেসবাহকে শোক কাটিয়ে উঠতে তোকে সাহায্য করতে হবে। একজন স্ত্রী হিসেবে তোর উচিৎ ওকে স্বাভাবিক করা।”
মাছের গামলা এগিয়ে এনে তাতে হাত দিল উল্লাসী। একে একে কড়াই ভর্তি পেঁয়াজ মরিচের মাঝে মাছের পিচ ছেড়ে দিতে দিতে বললো,
-“কিভাবে?”
-“মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়ে।”
-“সেটা কী? আর কিভাবে…”
কথা শেষ করার আগেই পুরো শরীর গুলিয়ে উঠলো উল্লাসীর। মুখ ভর্তি বমি নিয়ে এক দৌড়ে বেসিনের দিকে ছুটলো সে। আজকাল মাছ মাংসের গন্ধ একদম সে সহ্য করতে পারছেনা। মাছের গন্ধ নাকে আসলেই প্রায় সময়ই গা গুলিয়ে উঠছে।
একটু সুস্থ বোধ করতেই চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে লম্বা একটি নিঃশ্বাস ফেললো উল্লাসী। মুন্নি সরকারের সহায়তায় ডাইনিংয়ে বসে দূর্বল গলায় বললো,
-“চুলোটা বন্ধ করে দিয়ে এসো।”
-“করেছি। তুই বয়। পানি দিচ্ছি।”
-“না। কিছুই দিও না। পেটের ভেতর কেমন যেন লাগছে। যেন কিছু ঘাটছে!”
-“ঘাটছে বলতে?”
-“জানি না। কিছুদিন হলোই এমন হচ্ছে। মাছ মাংসের গন্ধ সহ্য করতে পারছি না। উনাকে বললাম সেদিন। উনি বললো হয়তো গ্যাস হয়েছে। মেডিসিন নিতে। এই লোকটাকে আমার কিছুদিন হলো মেরে ফেলতে মন চায়। লোভ দেখিয়ে এখন নিজেই দূরে দূরে থাকে। বদমাশের উপর কোনো সুন্দর গালি আছে? থাকলে সেটাই উনি।”
কপাল কুঁচকে কিছু একটা ভাবলো মুন্নি সরকার। চোখে মুখে একরাশ শঙ্কা ফুটিয়ে বললো,
-“তোর লাস্ট কবে পিরিয়ড হয়েছিল রে?”
-“জানি না। এখন মনে করতেও ইচ্ছে করছে না।”
-“এক্সাক্ট ডেট বলতে হবে না। কমাস আগে হয়েছিল এটা বল।”
একদন্ড ভেবে উল্লাসী বললো,
-“এবাড়িতে আসার পর।”
-“চারমাস আগে?”
-“হ্যাঁ.. কেনো?”
উল্লাসীর প্রশ্নের জবাব দিল না মুন্নি সরকার। উল্লাসী না হয় অবুঝ। এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই তার। কিন্তু মেসবাহ? সে এতটা অসচেতন কিভাবে হলো? এতমাস হলো মেয়েটির মাসিক হচ্ছে না অথচ সে একবার খোঁজ নিয়েও দেখেনি? অবশ্য অনার মৃত্যুর পর মেসবাহ যেভাবে ভেঙে পড়েছে তাতে এর দোষ তার উপর পুরোপুরি চাপানোও যায়না। তবে সে তো একজন ডাক্তার। তাছাড়া একজন সচেতন মানুষ হিসেবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক মেয়েকে কীভাবে গর্ভবতী করলো সে? নাকি সবটাই অনাকাঙ্ক্ষিত? উদ্বিগ্ন বোধ করলো মুন্নি সরকার। উল্লাসীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে এসে মেসবাহর নাম্বারে ডায়াল করলো। কয়েকবার রিং বাজার পর অপর পাশ থেকে মেসবাহ কল রিসিভ করতেই সে অস্থিরতা নিয়ে বললো,
-“হ্যালো মেসবাহ.. তুমি কখন বাসায় আসবে?”
-“ফিরতে রাত হবে।”
-“আজ একটু তাড়াতাড়ি ফিরলে হয় না?”
-“কেনো বলুন তো?”
-“দরকার আছে। আচ্ছা শুনো, আসার সময় প্রেগন্যান্সি স্টিক নিয়ে এসো।”
-“কী নিয়ে আসবো?”
-“প্রেগন্যান্সি স্টিক.. প্রেগন্যান্সি স্টিক।”
অবাক হলো মেসবাহ। প্রেগন্যান্সি স্টিক দিয়ে কী করবেন উনি? উনি কি কনসিভ করেছেন? তবে উনি যদি কনসিভ করেও থাকে তাহলে তাকে কেনো প্রেগন্যান্সি স্টিক আনতে বলবেন? লজ্জাজনক কথাবার্তা না?
-“শুনতে পাচ্ছো?”
মুন্নি সরকারের আওয়াজে চোখমুখ কুঁচকে ফেললো মেসবাহ। বিব্রত গলায় বললো,
-“জ্বি পাচ্ছি।”
-“মনে করে এনো তাহলে।”
-“ঠিকাছে।”
-“রাখছি তাহলে।”
-“অবশ্যই।”
কল কেটে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো মেসবাহ। এই মহিলা কি দিনেদিনে পাগল হচ্ছেন? তাকে কোন দুঃখে এসব আনতে বলছেন উনি? নাকি মেসবাহ ডাক্তার বলে মুন্নি সরকার ভেবেছে এসব প্রেগন্যান্সি স্টিক ফ্রিতেই হাসপাতাল থেকে ম্যানেজ করতে পারবে সে? নিজের মনে চলা যুক্তিহীন প্রশ্নের জন্য নিজেকেই পাগল মনে হলো মেসবাহর। প্রেগন্যান্সি স্টিকের দাম কি খুব বেশি নাকি উনারাই গরীব? যাচ্ছেতাই এসব কী ভাবছে সে!
হাজার ভেবেও মাথায় কিছু আসেনি মেসবাহর। ল্যাবএইড থেকে বেরিয়ে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও দূরের এক ডিসপেনসারি থেকে একটি প্রেগন্যান্সি স্টিক কিনে রওনা হয়েছে বাসার উদ্দেশ্যে। তবে চিন্তিত বোধ করছে সে। মুন্নি সরকারকে গিয়ে এটি সে কীভাবে দেবে? নিজে দিতে যাওয়া কেমন হয়ে যায় না? উল্লাসীর কাছে দিয়ে পাঠালে কেমন হয়? না.. থাক। কোনো দরকার নেই। কাজের চেয়ে প্রশ্ন করবে বেশি সে। এটি কী, কী হয় এটি দিয়ে এমন নানান প্রশ্ন করে একদম বিরক্ত করে ফেলবে। আজকাল তার বকবকানির পরিমাণ প্রচুর বেড়েছে। সাথে বেড়েছে তার প্রতি চাওয়া-পাওয়া। রিকশার ভাড়া মিটিয়ে বাসার দিকে পা বাড়ালো মেসবাহ। হাসান সরকার যদি বাসায় থাকেন? তাহলে এটি কি বলে দেবে সে? তাছাড়া উনিই বা কী ভাববেন? নাকি উনারও সবটাই জানা? জানা থাকলে উনি নিজে না এনে তাকে দিয়ে আনাচ্ছে কেনো? উদ্বেগপূর্ণ চোখেমুখে কলিংবেলে চাপ দিতেই ভেতর থেকে দরজা খুলে দিল মুন্নি সরকার। গম্ভীর গলায় বললো,
-“তুমি? আমি আরও ভাবছি তোমার ভাই। আজ ও শুধু বাড়ি আসুক। বারবার বলেছি শীতলের জন্য মেয়ে দেখতে যাবো। জলদি এসো জলদি এসো অথচ ওই হাঁদারামের খবরই নেই!”
-“অহ.. হাসান ভাই নেই?”
-“না। কিছু বলবে?”
-“হ্যাঁ। মানে এই তো। নিন।”
-“কী এটা?”
-“ইয়ে মানে আপনি যে আনতে বললেন! প্রেগন্যান্সি স্টিক।”
-“তো এটা আমায় কেনো দিচ্ছো?”
আমতাআমতা করে মেসবাহ জবাব দিল,
-“তাহলে কাকে দিব? আপনি কনসিভ.. না মানে আচ্ছা যাকে দেবার আপনিই দেবেন। ধরুন।”
-“আরে ব্যাটা! নিয়ে যাও তো সাথে। এমনিতেই তোমার ভাই আমাকে ঘোরালো! আসুক আজ!”
-“আমি নিয়ে যাবো?”
-“হ্যাঁ.. টেস্ট করে কী খবর আসে জানিয়ো।”
বিস্ময় নিয়ে মেসবাহ আবারও বললো,
-“টেস্ট?”
-“তো কী প্রেগন্যান্সি স্টিক পুঁজো দেবার জন্য এনেছো? মেয়েটা ছোট। একটু দেখে শুনে চলবে না! ওই দেখো আবার ফোন বাজে। যাও তুমি পরে কথা বলবো!”
মুন্নি সরকার ফ্ল্যাটের সদর দরজা লাগিয়ে দিতেই স্তব্ধ হয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো মেসবাহ। কোনোভাবে উল্লাসীর কথা বলছেন কী মুন্নি ভাবি? তাছাড়া আর কারই বা বলবে! সে তো আর কোনো মেয়ে নয়! আর না সে কনসিভ করতে পারবে! কিন্তু উল্লাসী কিভাবে!
(চলবে)