নুজাইরাহ,৫ম_পর্ব

0
903

#নুজাইরাহ,৫ম_পর্ব
#written_by_Liza

এসব ছেড়ে দাও।ভাগ্যিস আমি আজ এসেছি। তা না হলে আমার মেয়েটাকে আমি হারাতাম”

মেহেরীমা অপমান করে বুড়ো টাকে বিদায় করে দেয়, নুজাইরাহ মার খাওয়ার ভয়ে মেহেরীমার পেছনে লুকিয়ে আছে।

নুজাইরাহ’র হাত টেনে ছাড়িয়ে নেয় দিলজাহান বেগম। নুজাইরাহকে টানতে টানতে রান্নাঘরে নিয়ে যায়, মেহেরীমা ছাড়াতে গিয়েও পারছেনা মায়ের সাথে আটিয়ে আসতে।

নুজাইরাহকে ধাক্কা দিয়ে রান্নাঘরের মেঝেতে ফেলে দেয় দিলজাহান বেগম। রান্নাঘরের উনুন থেকে জ্বলন্ত লাকড়ি এনে নুজাইরাহ’র পায়ে যেই না দিতে যাবে অমনি মেহেরীমার ছোট বোন মাহিরা দিলজাহানকে ধাক্কা দিয়ে নুজাইরাহকে রান্না ঘর থেকে নিয়ে আসে। সামনের রুমে বসে আছে মেহেরীমা একমাত্র ভাই মিরাজ। সবেমাত্র এসেছে কাজ সেরে।

দিলজাহান বেগম নুজাইরাহকে আঘাত করতে না পেরে সামনের রুমে জ্বলন্ত লাকড়ি নিয়ে আসে, মিরাজকে দেখে দিলজাহান বেগম তথমত খেয়ে যায়। নুজাইরাহ’র চোখে পানি দেখে মিরাজ জিজ্ঞেস করে

“কাঁদছিস কেন? কে বকেছে তোকে?”

নুজাইরাহ চুপটি করে আছে। মাহিরা বলে উঠে মিরাজের কথার প্রতুত্তরে
“সাধে কেউ কাঁদে? তোর মা তোর সামনে মুখোশ পড়ে চলে,তাই তুই কিছু বুঝতে পারিস না। আজ একটা অনাথ মেয়ে এতটা বছর যাবত নির্যাতিত হচ্ছে তোর আশেপাশে অথচ তুই আমি কিছুই করতে পারছিনা।”

মিরাজ তার মেঝো বোন মাহিরার কথার মানে খুঁজতে ব্যস্ত। দিলজাহান বেগম মাহিরাকে রান্নাঘরে কাজের বাহানা দিয়ে ডাকলে,মাহিরা বলে উঠে “খবরদার মা কোনো চালাকি করবেনা। সেই ছোট অবলা মেয়ে পাও নি আমায় বুঝেছো? কি পেয়েছো তুমি? যা ইচ্ছে করে যাবে আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখবো?”

মিরাজ দিলজাহান বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে “কি হয়েছে মা।মেঝো আপু ক্ষেপেছে কেন? তুমি কি করেছো?”

দিলজাহান বেগম তোতলাতে তোতলাতে বলে “ও কিছু না। তোর মেঝো আপুর মাথায় ব্যামো আছে আবোল তাবোল বকছে”

মাহিরা কারো কথার ধার না ধরে নুজাইরাহ’র হাত দেখাতে লাগলো মিরাজকে আর বলতে লাগলো “দেখ তোর মা ওর কি হাল করেছে। তোর মায়ের একমাত্র শত্রু নুরা(নুজাইরাহ) কারণ আপুর সতীনের মেয়ে। আপুর সমস্যা হচ্ছে না যেখানে সেখানে তোর মায়ের বিরাট সমস্যা। মনে হচ্ছে তোর মায়ের সংসার।আপু তো শুধু পুতুল মাত্র”

মিরাজ নুজাইরাহ’র হাত ধরে উল্টে পাল্টে দেখে ভ্রু কুঁচকে দিলজাহান বেগমের দিকে তাকায় আর বলে “মা তুমি এসব? তুমি নুজাইরাহকে এভাবে মারতে পারলে?”

দিলজাহান বেগম মিরাজের কথার উওর না দিয়ে শাড়ির আঁচল মুখে দিয়ে কান্না করতে শুরু করলো আর বলতে লাগলো “কি হলো আমার। সোনার বাড়ি সোনার সংসার শেষ হয়ে গেলো রে। ছেলেরে আমার বশ করে ফেললো রে। ওগো তুমি আমারে নিয়ে যাইতা তোমার সাথে”

মিরাজ মায়ের কান্না সহ্য করতে পারে না জেনেই দিলজাহান বেগম এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। মাহিরা দিলজাহান বেগমের কান্ড বুঝতে পেরে বলে “আমি ছাড়ার পাত্রী নই মা। তুমি পার পেয়ে যাবে ভাবলে ভুল করছো।”

মাহিরা নুজাইরাহকে পুরোনো ক্ষত স্থানে ওষুধ লাগিয়ে দেয়, মেহেরীমা আজ প্রতিবাদ করলো না,মেহেরীমা জানে প্রতিবাদে কিছুই হবে না যা করার কৌশলে করতে হবে।

দিলজাহান বেগম তড়িঘড়ি পাত্র খুঁজতে লাগলো মাহিরার জন্য। মাহিরা বুঝে গিয়েছে তার মেয়ের কাজে সে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে বলেই বিয়ের দেওয়ার তোড়জোড় এত।

এভাবে দিন পার হতে লাগলো,জুরাইনাহ নুজাইরাহকে দেখতে পারে না। নুজাইরাহ নতুন পরিপাটি কাঁপড় পরলে জুরাইনাহ ঐ কাপঁড়টি ছিড়ে দিতো৷

নুজাইরাহ চুল আঁচড়ে পরিপাটি হলে, বাবাকে মিথ্যা বলে মার খাওয়াতো। মেহেরীমা ও নুজাইরাহ চুপচাপ সকল অত্যাচার সহ্য করে নেয়।

ভোর সকালে মেহেরীমার কাছে ফোন আসে,তার বড় ননাস নেই আর দুনিয়াতে। মেহেরীমা পাগল পাগল প্রায়। এ ঘর থেকে ও ঘরে কাঁদছে। সবাই বাড়িতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। নাফিজ আলম ও মেঝো বোন তৈরি, সাথে জুরাইনাহ তৈরি হয়ে আছে।।
মেহেরীমা যেতে চাইলে মেহেরীমাকে নাফিজ আলম বলে “তোমার গ্রামের বাড়িতে যাওয়া লাগবে না।আমি গিয়ে দাফন করে আসবো।সেখানে গিয়ে ভীড় জমিয়ে লাভ নেই।তুমি আমার মাকে দেখো। মা যেনো কিছু জানতে না পারে তাহলে ভেঙ্গে পরবে”

নাফিজের কথায় চোখ মুছে মেহেরীমা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, এ যেনো অন্য নাফিজ। মেহেরীমা ঢক গিলে বলে “আমি যেতে না পারি নুজাইরাহকে নিয়ে যাও। শেষবারের মতো বড় আপাকে দেখে আসুক”

চুপ করো। ওর নোংরা মুখ দেখিয়ে আমার বোনের খাটিয়া ভার কর‍তে চাই না (নাফিজ)

নুজাইরাহ কথাটা শুনে রান্নাঘরে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। জুরাইনাহ, নুজাইরাহকে দেখে বলে “কাঁদার কি আছে? মানুষ কি মরবে না? জম বেঁধে আসছে নাকি?”

নুজাইরাহ আর দেরী করলো না সাথে সাথে উঠে জুরাইনাহ’র গালে চড় লাগিয়ে দিলো।জুরাইনাহ বাবা বলে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে। মেহেরীমা দৌড়ে এসে জুরাইনাহকে তোলে মাটি থেকে।জুরাইনাহ ভয়ে মেহেরীমার পেছনে লুকোয়।
নুজাইরাহ রক্তিম চোখে ক্ষোভে বলে উঠে
“কি পেয়েছিস তোরা? তোদের পোষা কুকুর, যে যা ইচ্ছা করবি আমি শুনবো? ভুলে যাস না আমি এ বাড়ির বড় মেয়ে। তুই আমার ছোট বোন ভুলে যাবো। যা এখান থেকে”

নুজাইরাহ’র এই প্রথম রাগ দেখে জুরাইনাহ ভয়ে চুপসে যায়,নুজাইরাহ’র এই আচরণে মেহেরীমা বুঝতে পারে নুজাইরাহ অধিক কষ্টে এমন হয়ে গেছে। মেহেরীমা মনে মনে বলে “ঠিকই তো সহ্যের বাধ ভেঙ্গে গেলে একটা বোবা প্রানীও আওয়াজ করে উঠে ব্যাথায়”

মেহেরীমা জুরাইনাহকে বলে “মা আমি কিছু করিনি”

জুরাইনাহকে থামিয়ে দিয়ে মেহেরীমা বলে “আশা করি আর বড়দের সাথে লাগতে আসবি না। ভালো হয়ে যা”

জুরাইনাহ রাগে ক্ষোভে বাবার সাথে বড় ফুফুর লাশ দেখতে চলে গেলো। মেহেরীমা নুজাইরাহ’র মাথায় হাত রেখে বলে “এই আওয়াজ টা আরো আগে তুললে রে মা তোর আর আমার জীবনটা এত দুর্দশায় পরিনত হতো না।যাক গে এখন থেকে নিজের সম্মান নিজে আদায় করবি। সবসময় তো আর পাশে আমি থাকবো না। আমি আজ আছি কাল না ও থাকতে পারি।সবাইকে চলে যেতে হবে রে মা। কার কখন যাওয়ার ঘন্টা বাজবে কেউ নিশ্চিত বলতে পারে না।”

নুজাইরাহ মেহেরীমাকে জড়িয়ে ধরে চুপটি করে বসে আছে।
একটু পর পর নুজাইরাহ’র দাদি বলে উঠে “নুরা আমার ফড়ানডা কেমন যানি করে,আমার কিতা অয়ছে নুরা। আমার রুহুডা কান্দে খুব।আমার বড় ফুড়ি ভালা আছে নি? ফোন দেস না একটু কথা কইতাম (নুরা আমার মন কেমন যেনো করে,আমার কি হয়ছে নুরা।আমার রুহ কাঁদে।আমার বড় মেয়ে ভালো আছে নাকি?ফোন দে না একটু কথা বলি)”

নুজাইরাহ দাদির এই অবস্তা দেখে মুখ লুকিয়ে কাঁদে।তার দাদির এই প্রশ্নের কোনো উওর নুজাইরাহ’র কাছে নেয়।

মাস খানেক পর মাহিরার বিয়ে হয়ে যায়, মাহিরা অনেক সুখে আছে। নাফিজ আলমকে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়ে দিলজাহান বেগম নুজাইরাকে নিয়ে যেতে বলেছে।নুজাইরাহ ইচ্ছাকৃত পড়াশোনার নাম দিয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। কারণ নুজাইরাহ জানে প্রতিবার তো মা নুজাইরাহ’র সাথে যেতে পারবেনা। মাহিরা খালামনি ছিলো আগে তাই তার ভরসায় থাকতে যেতো নানুর বাড়িতে। এখন মাহিরা খালামনি নেয়,কেউ নুজাইরাহকে বাঁচাতে আসবে না নুজাইরাহ জানে।তাই ইচ্ছে করে নুজাইরাহ পড়োশোনার বাহানা দিয়ে নানুর বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

নুজাইরাহ’র দাদির অবস্তা দিনের পর দিন অবনতি ঘটছে। নুজাইরাহ’র দাদি মেহেরীমাকে ডেকে বলে সন্ধ্যা বেলায়

“মা গো, আমি মনে অয় বেশিদিন বাঁচতাম না, আমার নাতিনডারে নিজের ফুড়ির মতো রাইখো। ভালা পোলা দেইখা একটা বিয়া দিও। মা নায় দুনিয়ায় আমার নাতিনডা এতিম। আমি যাইলে গা সবাই নাতিনডারে ছিড়া খাইবো। তুমি একটু দেইখো গো মা।(মা গো।আমি মনে হয় বেশিদিন বাঁচবো না,আমার নাতনিকে নিজের মেয়ের মতো রেখো।ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিও।মা নেয় দুনিয়াই আমার নাতনি এতিম।আমি চলে গেলে নাতিনকে সবাই ছিড়ে খাবে।তুমি একটু দেখিও মা)”

মেহেরীমা শাশুড়ীর হাত ধরে কাঁদছে। নিস্তব্ধ বাড়ি, আশেপাশে আগরবাতির ঘ্রাণ ভেসে আসছে। মেহেরীমার বুক মুঁচড়ে উঠছে বারবার। এই বুঝি সব শেষ হয়ে গেলো৷

মেহেরীমা তার শাশুড়ী জীবিত থাকা অবস্তা নুজাইরাহকে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দেওয়ার জন্য তড়িঘড়িতে লেগে পরে। নুজাইরাহ মেহেরীমাকে বলছে “মা আমি আরো পড়তে চাই।বিয়ে করতে চাইনা”

পড়তে পারবি এমন ছেলের কাছেই দেবো,তোর দাদি শেষ ইচ্ছা আমি অপূর্ণ রাখতে পারবো না মা। তোকে ছোট থেকে অনেক কষ্টে মানুষ করেছে সে। এইটুকু তার প্রাপ্য।আমি মা হয়ে আমার দায়িত্ব পালন করছি। তোর কোনো পছন্দ থাকলে বল আমি কথা বলি৷ (মেহেরীমা)

না আমার এসব পছন্দ নেই (নুজাইরাহ)

নুজাইরাহ এইচ এস সি দিবে সামনে৷ অনেক বড় হয়েছে আগের মতো নেই নুজাইরাহ।সুন্দরী লম্বা বেশ শালীন। দিলজাহান বেগমের বয়স যত বাড়ছে অভ্যাস তত খারাপ হচ্ছে।

দিলজাহান বেগম এখন ছেলের বউয়ের সাথে একই কাজ করে, ঘরে অশান্তি। শান্তি নেই। মিরাজ ফোন করে মেহেরীমাকে দিলজাহানের ব্যাপারে বিচার দেয়।
দিলজাহান বেগম বুড়ো বয়সে আলাদা রেঁধে খায়। ছেলের বউয়ের হাতে খাওয়ার সৌভাগ্য জোটে নি।
মেহেরীমাকে দিলজাহান বেগম ছেলের বউয়ের নামে কিছু বোঝাতে গেলেই মেহেরীমা বলে উঠে “পাপ বাপকেও ছাড়ে না মা। কিছু করার নেই ভুগতে হবে”

নুজাইরাহকে এখন দিলজাহান বেগম কিছু করতে পারে না। উল্টো নুজাইরাহ কড়া কথা শুনিয়ে দিলজাহান বেগমকে চুপ করিয়ে দেয়, নুজাইরাহ’র সাথে সামিল হয় মিরাজের স্ত্রী। নুজাইরাহ’র একমাত্র মামি। যদি ও সৎ মামার বঊ। কিন্তু কখনোই নুজাইরাহ’র তা মনে হয় নি। আপন খালা বোন ঝি বলে লোকে তাদের। দিলজাহান বেগম নুজাইরাহ’র সাথে আটিয়ে আসতে পারে না আগের মতো।

বছর পার হতে থাকে…
সুখের সংসার মেহেরীমার।মেহেরীমার সামনের চুল পাকা ধরেছে একটু একটু, নুজাইরাহ’র দাদি শয্যাশায়ী, কথা বলতে পারে না। বিছানায় সবকিছু করে।
নুজাইরাহ চাকরি পেয়েছে ব্যাংকের,নুজাইরাহ’র জন্য বিয়ের সম্মন্ধ আসতে লাগলো ভালো ভালো। নুজাইরাহ প্রথম স্যালারি দিয়ে তার মায়ের জন্য গলার হার বানিয়ে দেয় সোনার। তার শয্যাশায়ী দাদির জন্য একটা সাদা পাতলা মখমলের শাড়ি কিনে আনে।দিলজাহানের জন্য ও একই শাড়ি নিয়ে আসে নুজাইরাহ।

জীবনের প্রথম পাওয়া মেয়ের হাতে। মেহেরীমা কাঁদছে খুশিতে আর ফোন করে সবাইকে বলছে “জানিস আমার বড় মেয়ে আমাকে সোনার হার দিয়েছে। আমার সন্তান, যাকে গর্ভে ধরিনি কিন্তু বুকে রেখে মানুষ করেছি। তোরা বলেছিস না? এই মেয়ে আমায় লাথি মেরে ফেলে দিবে।দেখ আমার মেয়ে আজ কোথায়”

এদিকে জুরাইনাহ’র পড়াশোনা দিনের পর দিন অবনতি ঘটছে,কারণ জুরাইনাহ স্মাগলার একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে বেশ অনেক মাস। সবাই না জানলেও দিলজাহান বেগম সব জানতো। তিনি জুরাইনাহকে সাহায্য করতো দেখা করতে। নুজাইরাহকে সেই নেতার নাতিই বলেছে
“দেখো নুরা।আমাদের ছোট ভাই হয় ঠিক,কিন্তু সে একজন স্মাগলার। তার সাথে তোমার ছোট বোন প্রেম করছে। সাবধান করিও। পরে যেনো কাঁদতে না হয়”

নুজাইরাহ কেউকে কিছু না বলে জুরাইনাহ রুমে গিয়ে জুরাইনাহকে গালে ঠাস ঠাস দুই চড় বসিয়ে দেয়, সকলের সামনে জুরাইনাহ’র হাত ধরে এনে বলে “মান সম্মান সব ডুবিয়েছিস, রাস্তায় বখাটে ছেলের সাথে প্রেম?তোর প্রেম আমি ছোটাচ্ছি দাড়া”

নাফিজ আলম পত্রিকা পড়া থেকে মাথা উঠিয়ে নুজাইরাহ”র এমন কান্ডে তাকিয়ে আছে। নুজাইরাহ’র মেঝো ফুফু ভাইয়ের চোখে ভালো সাজার জন্য দৌড়ে এসে বলে নুজাইরাহকে “আরে আরে এভাবে মারতাছোস ক্যান। ছুডু মাইয়া ভুল করছে। ছাইড়া দে (আরে আরে এভাবে মারতেছিস কেন?ছোট মেয়ে ভুল করেছে,ছেড়ে দে)”

অমনি মেহেরীমা এসে বলে “খবরদার আপা ওদের মাঝখানে নাক গলাবেন তো! এই যে দৃশ্যটাকে আপনি এখন সাপোর্ট করছেন। ঐ দৃশ্য ৭/৮বছর আগেও ঘটে ছিলো।তখন কেউ আসে নি নুজাইরাহকে বাঁচাতে। আপনার এই নাটক বন্ধ করুন। ওর বোন ও শিক্ষা করবে।কেউ বাম হাত দিতে আসবেন না।”

নাফিজ আলম কথা না বাড়িয়ে লজ্জায় নিজের রুমে চলে যায়। ভীষণ লজ্জা হচ্ছে নিজের জন্য। সে কম অত্যাচার করে নি নুজাইরাহ”র উপর। নুজাইরাহ তার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও সে জুরাইনাহকেই ভালোবেসেছে সকল আদর দিয়েছে। লজ্জিত মুখে নাফিজ আলম বিছানায় বসে আছে।

জুরাইনাহ কাঁদছে বাবা বাবা করে,কিন্তু নাফিজ আলম বাঁচাতে আসে নি। নুজাইরাহ’র মেঝো ফুফু রাগে ফুসতে ফুসতে চলে যায়।
জুরাইনাহকে মেহেরীমা বলে “তোর আপার পা ধরে মাফ চা। জীবনে যা যা করেছিলি সব কিছুর জন্য। সময় থাকতে ভালো হয়ে যা। দেখলি তো খারাপ কাজে কেউ পাশে থাকে না স্বয়ং তোর বাবা আজ তোর পাশে নেই।পেরেছে নুরাকে বকতে? পারবে না কারণ তোর বাবাই আসল নস্টের মূল। তোর বাবার জন্য তুই নস্ট হলি। যদি এখনো তোর স্মাগলারের সাথে প্রেম করার স্বাদ জাগে তবে ভুলে যাবি আমি তোর মা। আমি শুধু নুজাইরাহ’র মা।”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here