পদ্মাবতী,পর্ব-২
নাহার
নিলা বাবার ছবিটা রেখে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পরলো। রাস্তার পাশের লেমপোস্টের আলোয় ঘরটা আবছা আলোকিত হয়ে উঠেছে। ঘুম আজ ধরা দিচ্ছে না চোখে। বারবার সেই পাঁচ ছয় বছর আগের বা তার চেয়ে পুরানো স্মৃতি ভেসে উঠছে। পদ্মকে প্রথম যখন কোলে নিয়েছিলো সেই স্মৃতিরা বারবার এসে হানা দিচ্ছে মস্তিষ্কে।
সেদিন ছিলো শুক্রবার। আরবি রযব মাস ছিলো। খুব ভালো একটা মাসে এবং একটা দিনে পৃথীবিতে এসেছিলো পদ্ম। ফুটফুটে একটা বাচ্চাকে একজন নার্স তাওয়ালে পেঁচিয়ে এনে নিলার কোলে দিয়েছিলো। নিলা বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়েই বললো “আমার পদ্ম”। পদ্মের বাবা হেসে বললেন, “ঠিকাছে আজ থেকে ও আমাদের পদ্ম হয়েই থাকবে।” নিলার মা পদ্মকে দুই চোখে সহ্য করতে পারতেন না। তিনি এই বাচ্চাটাকে নষ্ট করতে চেয়েছিলেন অনেক ভাবে। কিন্তু পারেননি। পদ্মকে নিলাই রাখতো সবসময়। শুধু খাওয়ানোর সময় হলে মায়ের কাছে নিয়ে যেতো। এভাবে চারমাস যাওয়ার পর একদিন নিলার মাকে আর বাসায় খুজে পাওয়া যায়নি। সকাল সকাল পদ্মের কান্নায় নিলা মায়ের ঘরে গিয়ে দেখলো তার বাবা মেঝেতে উবু হয়ে পরে আছে। আলমারি খোলা। স্বর্ণ, টাকা যা ছিলো সব নিয়ে পদ্মের মা চলে গেছেন। নিলা পদ্মকে খাটে শুইয়ে দিয়ে বাবাকে সোজা করে শুইয়ে দিয়ে মুখে পানির ছিটা দিতেই জেগে উঠেন। নিলাকে ধরেই সেদিন খুব কাঁদেন পদ্মের বাবা। এরপর দুইজনে মিলেই পদ্মকে রেখেছে। বছর এক যেতেই তাদের এই সুখ দুখের সংসারে এসে যোগ হয়েছে নিলার ফুপি মনিরা। তাদের চার বাবা, মেয়ে, ফুফির সংসার ভালোই চলছিলো। পদ্মের যখন পনেরো বছর বয়স তখনই বাবা একটা এক্সিডেন্ট করেন। সামান্য পায়ের গোড়ালিতে ব্যাথা পেয়েছিলো। সেই ব্যাথাই নিয়ে গেলো কবরে।
এরপর পরেরদিন গুলো খুব নির্মম কেটেছে। নিলার ছোট চাচা এবং বড় জেঠু দুইজনেই তাদের দেখাশোনা করেন। মাসে মাসে টাকা, বাজার ইত্যাদি দিয়ে যান। নিলা দু একটা টিউশন করে আরো বাড়তি কিছু টাকা সংসারে দেয়। ছোট বোনটাকে কখনো কোনোকিছুর কমতিতে রাখতে চায় না।
পদ্মের যখন দুই বছর বয়স তখন নিলাকে মা বলেই ডাকতো। পরে আস্তে আস্তে যখন আরো বড় হলো তখন আপু বলে ডাকা শিখালো নিলা। ছোটবেলায় পদ্ম নিলা ছাড়া কিছুই বুঝতো না। সারাদিন আপু আপু বলে পেছনে পরে থাকতো। কত রাত ভয়ে নিলাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছে। নিলা খাইয়ে না দিলে খেতো না। পড়তে বসলে নিলার কোলে বসে পড়তো। খেলাধুলাও ছিলো নিলার সাথে। বাইরের কেউ যেনো পদ্মকে খারাপ কথা না বলে, বা তোর মা নেই এসব যেনো না শুনতে হয় তাই পদ্মের সাথে নিলাই পুতুল খেলতো। ছোট ছোট মাটির হাড়ি পাতিল এনে দিয়েছিলো নিলা। সেসব দিয়েই পদ্মের সাথে খেলতো। মনিরা ফুপিও একটা প্রাইমারি স্কুলের টিচার। মাঝে মাঝে মনিরাও তাদের সাথে যোগ দিতো। নিলা কলেজ থেকেই পর্দা শুরু করেছে। তাদের বাবা নেই। মাথার উপরের ছাদটা নেই। অনেক কটু কথা থেকে বাঁচতেই পর্দায় নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে নিলা। ছোট বোনকে আরবি পড়িয়েছে। একসাথে নিয়ে নামাজ পড়েছে।
হঠাৎ করেই পদ্ম এমন পালটে গেছে। ক্লাশ এইটে উঠে কিছু বান্ধুবিদের সাথে মিশে একদম একরোখা, জেদি হয়ে গেছে। কথা বললে শুনতো না। তখন থেকেই নিলার মুখের উপরে কথা বলতে শুরু করে। কোনো কাজ করতে বললে পারবো না বলে উঠে চলে যেতো। কয়েকদিন পর পর আমার এটা লাগবে ওটা লাগবে বলে বলে নিলার সাথে চিৎকার চেচামেচি করতো। কলেজে উঠার পর থেকেই পদ্ম একদম পালটে গেছে। ছেলেদের সাথে উঠা বসা। ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি। নিলার হাজার বারণ এখন আর কানে নেয় না। নিজেকে অনেক বড় মনে করে।
কিশোরী বয়সের মেয়েদের এই সময় কারো কথা মাথায় নিতে চায়না। নিজে যেটা বুঝে সেটাকেই ঠিক মনে করে। ভুল মানুষের ফাদে পা দিয়ে জীবনে অনেক বড় আছাড় খেয়ে বসে থাকে। কেউ উপদেশ দিলে তাকে উলটো কথা শুনিয়ে দেয়। আর এইদিকটাই তাদের পতন নিয়ে আসে। এরপর ডিপ্রেশন, একাকীত্ব, কোনো কিছু ভালো না লাগা ইত্যাদি শুরু হয়। কেউ কেউ তো আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়।
——————————
আজ পদ্ম বাসায় ফিরেই ব্যাগটা ছুড়ে মারে বিছানায়। সৌরভের সাথে তার ঝগড়া হয়েছে। ইদানীং সৌরভ রুমডেটের জন্য বেশি উঠে পরে লেগেছে। পদ্ম বারবার বলছে রুমডেট সে করবে না। তাই আজ তুমুল ঝগড়া করে বাড়ি ফিরেছে।
ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে বাসায় ফিরলো নিলা। বাজার করেছে অনেক আজ। কাল মাহিবরা আসবে। ফুপির সাথে কথা বলে গেছে মাহিবের আম্মা। বড় জেঠু এবং ছোট চাচুও আসবে। তাদের জন্য তো ভালো আয়োজনের দরকার তাই আজকেই ভালো করে বাজার করে এনেছে। রান্নাঘরে বাজারের ব্যাগ রেখে নিজের রুমে যাওয়ার সময় একবার পদ্মের রুমে উঁকি দিলো। পদ্মকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললো নিলা। এতোটা অধঃপতন হয়েছে পদ্মের ভাবতেই কান্না আসে নিলার। পদ্ম নিজের রুমেই স্মোকিং করছে। নিলা নিজের রুমে এসে বোরকা খুলে নিলো। দুপুরের রান্না শেষ করতে হবে তার। রান্নাঘরে এসে আগামীকালের সবকিছু ফ্রিজে রেখে আজকের জন্য রান্নায় লেগে গেলো। রান্না শেষ করে আবার পদ্মের রুমে উঁকি দিলো। পদ্ম এখন ঘুমিয়ে আছে। কাপড়ের ঠিক নেই। অথচ শরীয়তে আছে মহিলারা ঘুমানোর সময় যেনো সতর ঢেকে ঘুমায়।
গোসল করে নামাজ পড়ে নিলো। ভাত বেড়ে পদ্মকে ডেকে দিলো। পদ্মও গোসল করে ড্রয়িং রুমে এসে ধপ করে বসে পরলো। নিলা ভাতের প্লেট নিয়ে পদ্মের সামনে এসে বসে খাইয়ে দিতে শুরু করে। আস্তে করে বললো,
— “আজ তোকে এমন দেখাচ্ছে কেনো? আর এতো তাড়াতাড়ি ফিরে এলি যে?”
— “কিছু না এমনিই। তোমার কি খবর সেটা বলো। মাহিব ভাইয়ারা তো কাল আসবে।”
— “হুম। একই ঘরে থাকি অথচ আমার খবর তোকে বলে দিতে হয়।”
নিলা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। পদ্মের কোনো হেলদোল নেই। নিলা বললো,
— “জানিস তামাক পাতায় ছাগলও মুখ দেয় না। অথচ মানুষ সেটা বাথরুমে বসে চুরি করে খায়।”
পদ্ম নড়েচড়ে বসলো। মনে মনে ভাবছে, “আমি যে স্মোকিং করি সেটা কি আপু জেনে গেলো? কিন্তু কিভাবে?”
— “আমরা কাউকে গালি দেয়ার সময় কিন্তু ছাগলের বাচ্চা বলেও গালি দেই মাঝে মাঝে। অথচ সে ছাগল হয়েও তামাক পাতায় মুখ দেয় না। আর আমরা সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত।”
নিলা স্মিত হাসলো। আবার বললো,
— “রূপবতী নারী হলো বহু মূল্যবান সম্পদ। অথচ নারীরা তাদের রুপ পর পুরুষের সামনে প্রদর্শন করে বেড়ায়।”
— “এসব আমাকে বলছো কেনো?”
— “শুন। কেনো বলছি বুঝবি। বাজারে বিক্রি করা খোলা পাউরুটি দেখেছিস? রিকশাওয়ালা হতে শুরু করে বড় বড় ব্যবসায়ী সবাই দেখে। সবাই একবার করে উলটে পালটে দেখে যায়। কেউ চেপে দেখে, ঘেটে দেখে, গন্ধ শুকে দেখে। যার ভালোলাগে সে নিয়ে যায়। যার ভালো লাগে না সে উলটে পালটে দেখে রেখে চলে যায়। যে নেয়ার সেও দেখে, যে নিবে না সেও দেখে।”
— “আল্লাহ নারীকে রুপ দিয়েছে দেখানোর জন্য। সে ঢেকে রাখবে কেনো?
— ” যদি প্রদর্শনের জন্য দেয়া হতো তাহলে মুক্তা ঝিনুকের শক্ত খোলসের ভেতরে থাকতো না। দামী স্বর্ণের অলংকার লুকিয়ে রাখা হতো না। এভাবেই খোলা মেলা ফেলে রাখা হতো। নারীর রুপ শুধু তার স্বামীর জন্য।”
— “স্বামীর দাসত্ব করার ইচ্ছে আমার নেই।”
— “তোরা আধুনিক মর্ডান যুগের মেয়েরা স্বামীর সামনে নিজের রুপ প্রদর্শনকে দাসত্ব ভাবিস। স্বামীর সেবাকে দাসত্ব মনে করিস। অথচ অনেক লোকের ভিড়ে কাজ করা মেয়ে কর্মচারী সেজেগুজে সবার জন্য কফি সার্ভ করাকে স্বাধীনতা মনে করে। আসল দাসত্বতো সেটা। প্লেনে এতো এতো পুরুষ যাত্রীদের স্বাগত জানাতে মেয়েরা সেজেগুজে দাঁড়িয়ে থাকে। সেটাকে স্বাধীনতা মনে করিস। হাস্যকর।”
পদ্ম কিছু বলতে যাবে তার আগেই মনিরা ফুফি আসলেন বাসায়। নিলা ফুপিকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়।
— “আসসালামু আলাইকুম ফুপি।”
— “ওয়ালাইকুম সালাম। নিলা মা এক গ্লাস পানি দে তো। খেয়েছিস? শুন একটু পর মাহিবের বড় বোন আসবে। তোর বিয়ের কাপড় দিতে। কিছু নাস্তা পানি রেডি করে রাখ।”
নিলা ফুপিকে পানি দিয়ে বললো,
— “ঠিকাছে ফুপি। নাস্তা বানানোই আছে। এখন শুধু সেটা ফ্রিজ থেকে বের করে গরম করে নিবো। তুমি যাও ফ্রেস হয়ে আসো।”
মনিরা নিজের ঘরে চলে গেলেন। নিলা রান্নাঘরে যাওয়ার আগে পদ্ম বললো,
— “আচ্ছা ফুপি তো সব সময় আমাদের বাসায় থাকে। তাহলে দেখলেই সালাম দেয়ার কি দরকার?”
নিলা হাসলো। পদ্মের গালে হাত রেখে বললো,
— “কথার শুরুতে সালাম দেয়া সুন্নাহ। আর তাছাড়া একে অপরকে সালাম দিলে হিংসা বিদ্বেষ দূর হয় অহংকার থেকে বেঁচে যায়। সালাম দিলে শান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহ আদম (আঃ) সৃষ্টির পর তাঁকে দিয়ে ফেরেস্তাদের সালাম দেয়ালেন যাতে হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার দূর হয়ে যায়।”
নিলা রান্নাঘরে এসে হাত ধুয়ে নিলো। ফ্রিজ থেকে নাস্তা বের করে নিলো। কড়াই চুলায় বসিয়ে তাতে তেল ঢেলে দিলো। একে একে নাস্তা গুলো ভাজতে শুরু করে। পদ্ম নিলার অপর পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
— “তুমি এতো ছোটখাটো করে বিয়ে করবে? আর আমাদের থেকে মাহিব ভাইয়ারা কি নিবে?”
— “কিছু না। আর ছোটখাটো করে করছি কারণ বিয়েতে যত কম খচর হবে তত বরকত বেশি হবে। মেয়ের বাড়ি থেকে কিছু নেয়া সেটা তো ইসলামে নেই। বরং ছেলে পক্ষ ওমালিমা করবে।”
— “ওউ। মাহিব ভাইয়া এসব মানবে?”
নিলা হেসে বললো,
— “মাহিব এসব মানছে বলেই তো তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি। দাড়ি রাখতে শুরু করেছে মাহিব। ভালোই লাগছে ব্যাপারটা আমার।”
— “এমন খেতকে আমি জীবনেও বিয়ে করতাম না। তুমি কি দেখে বিয়ে করতে রাজি হয়েছো?”
— “আমি তার মাঝে যা দেখেছি সেটা যদি তুই দেখতি তাহলে তো কথাই ছিলো না। ডেসিং ছেলে দিয়ে কি করবো? যদি সে বিয়ের পর পরকিয়া করে তাতে তো অর্ধেক গুনাহ আমার কাধে আসবে। তাই আমার অমন ছেলের দরকার নেই। যে ছেলে নবীর সুন্নাহ মেনে চলে সে খেত হলেও আমার আপত্তি নেই।”
.
বিকেলের দিকে মাহিবের বড় বোন, চাচি এলো। নিলা খয়েরী রঙের জামদানী শাড়ি পরেছে। পদ্ম নিলাকে দেখেই বললো,
— “ওয়াও আপু। তোমাকে পুরাই অপ্সরী লাগছে।”
— “ওয়াও নয়। বল মাশাল্লাহ।”
মাহিবের বোনরা নিলার সাথে হেসে হেসে কথা বললো। দুষ্টামি করে নাস্তা খেয়ে কাপড় দিয়ে চলে গেলো। সন্ধ্যায় মাহিব এলো বাসায়। তার হাতে অনেক বাজার সাজার। নিলা দেখেই বললো,
— “ইয়া আল্লাহ। এসব কে আনতে বলেছে আপনাকে? আমি দুপুরেই বাজার করে এনেছি।”
— “তো কি হয়েছে? সরো তো। এগুলো রেখে আসি।”
সব রেখে মাহিব সোফায় বসলো। নিলা মাহিবকেও নাস্তা দিলো। বিকেলের শাড়িটা এখনো খোলা হয়নি। মাহিব মনিরার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে চলে যায়। দরজার সামনে এসে জুতা পরতে দাঁড়ায়। নিলা দরজা বাঁধতে আসলে মাহিব বললো,
— “আমার না মাথা ঘুরছে।”
নিলা আতকে উঠে বললো,
— “এমা কেনো? কি হয়েছে আপনার? অসুস্থ আপনি?”
— “এমন অপ্সরী চোখের সামনে থাকলে মাথা তো ঘুরবেই। যাও যাও ভেতরে যাও। আমি চাইনা আমার অপ্সরীকে অন্য কেউ দেখুক।”
নিলা ভীষণ লজ্জা পেলো। মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো। মাহিব বুকের বা পাশে হাত রেখে বললো,
— “হাসিটা এখানে লেগেছে।”
রুমে এসে নিলা শাড়ি খুলে থ্রীপিস পরে নেয়। এশার নামাজ পড়ে পদ্মের রুমে এসে দেখলো পদ্ম শুয়ে আছে। পদ্মের পাশে বসে বললো,
— “কিরে পড়ালেখা না করে বসে আছিস কেনো?”
— “আমার পড়ালেখা নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। প্লিজ এখন যাও। আমি একটু একা থাকতে চাই।”
পদ্মের এনেহ ব্যবহারে নিলা ভীষণ কষ্ট পেলো। চুপচাপ উঠে এলো নিজের রুমে। পদ্মের ব্যবহার কেনো যে এমন হয়ে গেলো নিলা বুঝতেই পারে না। খুব টেনশন হয় পদ্মকে নিয়ে। তার উপর আবার স্মোকিং করছে। না জানি আর কি কি করছে এই মেয়ে। টেনশনে নিলার মাথাটা ঘুরে উঠলো। তাড়াতাড়ি করে বসে পরে খাটে। দুইজনের জীবনে সামনে কি আছে কিছুই বুঝতে পারছে না নিলা।
চলবে,,,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।)