পদ্মাবতী,পর্ব-৭শেষ

0
4343

পদ্মাবতী,পর্ব-৭শেষ
নাহার

ওয়ালিমা অনুষ্ঠান শেষ হতেই পদ্মকে নিলা, মনিরা মিলে বিদায় জানালো। পদ্ম নিলাকে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না। অবশেষে কোনোমতে শান্ত করলো পদ্মকে। নিলা গাড়িতে উঠতেই পদ্ম আবার ডুকরে কেঁদে উঠে। পদ্মের শ্বাশুড়ি জড়িয়ে ধরে পদ্মকে। সান্তনা দিয়ে বললেন,,,
— “কাঁদিস না। সামিরকে আমি বলে দিবো তোকে যাতে কাল ওই বাসায় নিয়ে যায়।”

পদ্ম কিছুটা শান্ত হলো কথাটা শুনে। অনুষ্ঠান শেষ হতে একটা বেজে গেছে। পদ্ম রুমে এলো। সামিরও এলো। পদ্মের দিকে তাকিয়ে আবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাতের ঘড়ি খুললো। পদ্মকে বললো,,,
— “তুমি এই ভারি কাপড় পালটে নাও।”

পদ্ম মাথা নাড়ালো। সামির টাউজার এবং টিশার্ট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। পদ্ম আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সব জুয়েলারি খুলে ফেললো। ব্যাগ থেকে একটা মিষ্টি কালারের থ্রিপিস বের করলো। সামির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রুম থেকেই বের হয়ে চলে গেলো। পদ্ম এখন কিছুটা স্বস্তি পেলো। ওয়াশরুম থেকে একেবারে শাওয়ার নিয়েই বেরিয়ে এলো পদ্ম। লম্বা ভেজা চুলগুলো পিঠে ছড়িয়ে থাকায় পিঠ ভিজে গেছে। পদ্ম ব্যাগ থেকে জলদি জলদি হাত চালিয়ে ওড়না খুজচ্ছে। কিন্তু খুজেই পাচ্ছে না। আরেকটু খুজতেই পেয়ে গেলো। ওড়নাটা হাতে নিতেই পিছন থেকে ভরাট কণ্ঠে কেউ বললো,,,

— “আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য এভাবে বসে আছো?”

পদ্ম কেঁপে উঠলো। ওড়না নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। সামিরের দিকে তাকাতেই ওড়নাটা হাত থেকে পরে যায়। পদ্ম কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। এদিক সেদিক তাকিয়ে আবার সামিরের দিকে তাকালো। সামিরের দুষ্টুমি হাসিতে পদ্মের অস্বস্তি সাথে লজ্জাও লাগছে। সামির হেটে একেবারে পদ্মের সামনে দাঁড়িয়ে ভ্রু নাঁচিয়ে বললো,,,
— “কি হলো বলো।”

— “আ….অ…মি…ম..মা….।”

— “আমি অ আ ক খ সব পারি। ওসব আমাকে শিখাবে হবে না।”

পদ্ম লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো। আমতাআমতা করে বললো,,,
— “আ…আস..আসলে অ..আ..আপ..আপনি ত..তো ব..বা..বাহিরে ছিলেন।”

— “ইয়া আল্লাহ! তুমি তোতলাও। আগেতো জানতাম না। আম্মাকে বলতে হবে। বলবো, তুমি আমাকে কি মেয়ে বিয়ে করালে মেয়েতো তোতলায়। হায় আমার নসিব..।”

সামির ভ্রু কুচকে তাকালো। পদ্ম সামিরের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিলো। সামনে ছোট ছোট চুলগুলো বেয়ে গড়িয়ে পরা পানিতে পদ্মের বুকের কাছের অনেকটাই ভিজে গেছে। সামির আরেকটু এগোতেই পদ্ম পিছিয়ে গেলো। পিছিয়ে গিয়ে দেয়ালের সাথে পিঠে ঠেকে গেলো। সামির এক নিঃশ্বাস ব্যবধানে পদ্মের সামনে দাঁড়ালো। সামির পদ্মের কোমড়ে হাত রাখতেই পদ্ম কেঁপে উঠলো। যেটা সামির বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো। পদ্ম মাথা আরো নিচু করে নিয়েছে। এক আঙুল দিয়ে পদ্মের থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করলো সামির। পদ্ম চোখ বন্ধ করে রেখেছে। সামিরের নিঃশ্বাস পদ্মের চোখে মুখে পরতেই পদ্ম বারবার কেঁপে উঠছে। সামির বললো,,,
— “এভাবে কাঁপছো কেনো?”

— “জ..জানি না।”

— “আমি জানি।”

পদ্ম চোখ মেলে সামিরের দিকে তাকালো। শ্যামবর্ণের গালে খোচাখোচা দাঁড়িতে অসম্ভব মানিয়েছে। ডান চোখের পাশে একটা তিলে আরো ফুটিয়ে তুলেছে শ্যামবর্ণের মুখশ্রী। পদ্ম কয়েকবার চোখ পিটপিট করে তাকালো সামিরের দিকে। তারপর কয়েকটা শুকনো ঢোক গিললো। সামিরের চাহনিতে স্পষ্ট দুষ্টুমি দেখা যাচ্ছে।

— “হালাল মানুষের স্পর্শে অন্যরকম একটা ভালোলাগা থাকে। অন্যরকম একটা সুখ। অন্যরকম একটা অনুভূতি। যার কারণে তুমি বারবার কেঁপে উঠছো। আমার অবস্থা কিরকম জানো?”

পদ্ম প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকালো সামিরের দিকে। সামির পদ্মের ডান হাত টেনে বুকের বা পাশে রেখে বললো,,,
— “দেখো আমার হার্টবিট কতটা ফাস্ট চলছে। এর আগে কখনো এমন হয়নি। কিন্তু আজ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। মাথাটাও ঘুরছে।”

পদ্ম অনুভব করলো সত্যিই খুব বেশি ফাস্ট বিট করছে সামিরের হার্ট। লজ্জায় মুখটা নামিয়ে নিলো। সামিরের শেষ কথায় পদ্ম বললো,,
— “আপনার কি খুব বেশিই খারাপ লাগছে?”

— “হ্যাঁ।”

— “ছ..ছাড়ুন আমাকে। খাটে বসুন। যদি পরে যান।”

— “পরে যাবো কেনো?”

— “আপনি না বললেন মাথা ঘুরছে।”

— “হুম ঘুরছে তো। এভাবে ভিজা চুলে পিঠে অর্ধেক ভিজিয়ে সামনের দিকে ভিজিয়ে আমার সামনে দাঁড়ালে আমি ঠিক কিভাবে থাকি বলো। তোমার রুপেই কুপোকাত হয়ে এখন আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। এখন তুমিই আমাকে সুস্থ করবে। আমি আর কিচ্ছু জানি না।”

পদ্ম লজ্জায় এতটুকুন হয়ে গেলো। দুধে আলতা ফর্সা গালে গোলাপি আভা দেখা দিলো। সামিরকে একটু ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে গিয়েও পারলো না। সামির একটুও নরলো না। ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো পদ্মের কোমড় জঁড়িয়ে ধরে। পদ্মের সামনে চুল কানের পাশে গুজে দিয়ে সামির বললো,,,
— “হবে কি আমার পদ্মাবতী? শুধুই আমার পদ্মাবতী। আর কারো না।”

পদ্ম সামিরের চোখের দিকে তাকালো। এই চাহনিতে পদ্ম ঘায়েল হয়ে গেলো। সামিরকে জড়িয়ে ধরে অস্পষ্ট সূরে বললো,,
— “হুম হবো। দুনিয়াতেও এবং জান্নাতেও।”

— “আমার ওষুধ।”

পদ্ম মুচকি হেসে সামিরের বুকে আলতো চাপড় দিলো। সামির ঝট করেই কোলে তুলে চোখ মারলো। পদ্ম লজ্জায় লাল হয়ে গেলো একদম।

——————————
— “হবে কি আমার পদ্মাবতী? শুধুই আমার পদ্মাবতী। আর কারো না।”

কথাটা এখনো কানে বাজে পদ্মের। আকাশের দিকে তাকিয়ে পদ্ম বললো,,,
— “আবার দেখা হবে আমাদের। জান্নাতে আমরা একসাথে থাকবো। আপনার পদ্মাবতী হয়ে।”

পেছন থেকে তিন বছরের মেয়েটা এসে জড়িয়ে ধরলো পদ্মকে। পদ্ম চোখের পানি মুছে পেছন ফিরতেই মেয়েটা একটা মনভুলানো হাসি দিলো। আধো আধো বুলিতে ডাকলো,,,
— “মাম্মাম….তোলে নাও।”

পদ্ম হেসে দিলো। মেয়েকে কোলে নিয়ে কপালে চুমু দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,,
— “আপু কোথায় তোমার?”

— “আপু তো দাদিল কাতে মাম্মাম। আমাতে এতানে আরেততা উম্মা দাও।”

ঠোঁট দেখিয়ে বললো মেয়েটা। পদ্ম হেসে দিলো। চুমু দিলো মেয়ের ঠোঁটে। পদ্মের বড় মেয়ের নাম রেখেছে সামিয়া এবং ছোট্টার নাম সুমাইয়া। আদর করে সুমা ডাকে। সুমা খুশিতে হাত তালি দিয়ে বললো,,,
— “ইয়ে মাম্মাম আমাতে উম্মা দিচে।”

পদ্ম সুমাকে কোলে নিয়ে শ্বাশুড়ির রুমে এলো। সামিয়ার বয়স চার বছর। সামিয়াকে তার বাবার গল্প শুনাচ্ছে তার দাদি। পদ্ম সেদিকে তাকিয়ে একটা মলিন হাসি দিলো। সুমাকে দাদির কাছে রেখে টেবিলে সব কিছু গুছিয়ে রাখলো। শাশুড়িকে সহ মেয়েকে নিয়ে খেয়ে নিলো পদ্ম। শাশুড়িকে ঘুম পাড়িয়ে দুইমেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো। ঘুম পাড়িয়ে আবারো এসে জানালার কাছে দাঁড়ালো পদ্ম। আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,,
— “আপনাকে ছাড়া সত্যিই আমি অসহায়। হিমশিম খাচ্ছি দুই মেয়েকে সামলাতে।”

নিলার একটা কথা মনে পরলো পদ্মের, “একদিন ঠিক চলে যাবো সেদিন আর কেউ তোকে জ্বালাবে না। কথায় কথায় কৈফিয়ত চাইবে না। সেদিন নিজের মতো করে চলতে পারবি।” ডুকরে কেঁদে দেয় পদ্ম। মনে মনে বললো,, “আপু আজ এমন অসময়ে তোকে খুব দরকার ছিলো আমার। খুব।”

সামিরের সাথে পদ্মের আট বছরের সংসার ছিলো। কখনোই মনমালিন্য হয়নি। হঠাৎই একদিন সামিরের চাচাতো ভাই এলো বাসায়। পদ্ম রুম থেকেই বের হয়নি। তারপরেও কিভাবে যেনো পদ্মকে দেখে ফেলে৷ পদ্মকে একরাতের জন্য পাওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছিলো। কোনোভাবেই সফল হয়নি শুধুমাত্র সামিরের জন্য। তাই ওই বদ লোক সৌরভের সাথে হাত মিলিয়ে নেয়।

পদ্ম যেদিন জানতে পারলো সে মা হবে। সেদিন খুশিতে শ্বাশুড়িকে নিয়ে নিলার কাছে চলে গেলো। সামিরকে ফোন করে বললো তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে খুশির খবর আছে। সামিরও তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পরে অফিস থেকে। দুপুরের দিকেই বেল বাজে। দরজা খুললো নিলা। সৌরভ এসেই নিলার সাথে অসভ্যতা শুরু করে। সামিরের চাচাতো ভাইও ছিলো। পদ্মকে খুজতে থাকে। সেদিনের মতো কিছুই করতে পারেনি তারা। এলাকাবাসির কাছে মার খায়। পদ্মের জেঠা, চাচা মিলে জেলে পাঠায় দুইজনকে। কিন্তু সেদিন আর সামির ঘরে ফিরেনি। ফিরেছে লাশ হয়ে। পথেই সৌরভদের লেলিয়ে দেয়া গুন্ডা বাহিনির হাতে খুন হয় সামির। সেদিন ঘর থেকে শুধু সামিরের লাশ যায়নি। সাথে নিলা এবং মাহিবের লাশও বের হয়েছে। সৌরভ এবং সামিরের চাচাতো ভাই যখন পদ্মকে খুজতে শুরু করে নিলা এবং মাহিব বাধা দেয়। হাতাহাতি পর্যায় থেকে একেবারে খুন করে বসে মাহিব এবং নিলাকে। শুধু পদ্মই বেঁচে গেছিলো কোনো একভাবে।

সামির জানতেও পারেনি সে যে বাবা হতে চলেছিলো। দুই কন্যার পিতা হয়েছিলো। সব হারিয়ে একেবারে মুমূর্ষু অবস্থা হয়ে গেছিলো পদ্মের। বারবার শুধু সামিরকে দেখতে চাইতো। সেই পদ্ম এখনো বেঁচে আছে। শুধুমাত্র দুই মেয়ে এবং মায়ের মতো শ্বাশুড়ির জন্য। মনিরা ফুপি তার মাস কয়েক পরেই ইন্তেকাল করেন। এতোকিছু আর সহ্য করতে না পেরে পদ্মের শাশুড়িই পদ্ম আর দুই নাতনিকে নিয়ে সামিরের পৈত্রিক ভিটায় চলে আসেন। এখানে সামিরের চাচা,চাচি আত্মীয় স্বজন সবাই আছে। পদ্ম একটা ছোটখাটো চাকরি করে গার্লস স্কুলে। পদ্ম স্কুলে গেলে শাশুড়িই দেখাশোনা করে দুই নাতনিকে। কোনো ধরনের ঝামেলা হলেই সামিরের চাচা, চাচি, জেঠা সবাই মিলে সমাধান করে দেন। সবাই খুব ভালো এবং আন্তরিক। শুধু সামিরের ওই বদ চাচাতো ভাইটাই ছিলো বদ। তার বাবা মাও কত আন্তরিক।

কতবার পাড়া প্রতিবেশী পদ্মের বিয়ের জন্য পাত্র নিয়ে এসেছিলো। পদ্ম তার শাশুড়িকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বললো,,,
— “মা আমাকে আপনার থেকে আলাদা করবেন না। আমাকে আমার স্বামীর শেষ চিহ্ন থেকে দূরে সরিয়ে দিবেন না। আমি আপনার ছেলের জায়গা অন্য কাউকে দিতে পারবো না মা। কখনোই পারবো না। আপনার জায়গায় আমি অন্য কাউকে মা বলে ডাকতে পারবো না।”

— “কিন্তু তোর বয়সটাও যে অনেক কম। কেন তুই তোর জিবনটা এভাবে কাটাবি বল।”

— “আমি এভাবেই সুখে আছি। ভালো আছি।”

কথাটা বলেই কাঁদতে কাঁদতে শ্বাশুড়ির পা জড়িয়ে ধরে বললো,,
— “প্লিজ মা আমাকে আপনার কাছে থাকতে দিন। আমাকে আমার স্বামীর চিহ্ন থেকে আলাদা করবেন না। আমি… আমি ভিক্ষা চাইছি আপনার কাছে।”

তারপর আর কিছু বলতে পারলো না পদ্মের শ্বাশুড়ি। পদ্মকে জড়িয়ে ধরে তিনিও কেঁদে দেন। এরপর থেকে কোনো প্রস্তাব এলেই পদ্মের শ্বাশুড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন। সামিরের চাচা চাচিরা পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছেন পদ্মকে নিয়ে কোনো প্রস্তাব এলে। এরপর থেকে আর কেউ সাহস করে প্রস্তাব নিয়ে আসে না। বাড়ির ভিতরেই ঢুকতে পারেনা। সবাই পদ্মকে মেয়ের মতোই আদর করেন। পদ্ম কোনো পুরুষের সামনেই আসে না। সবসময় পর্দার আড়ালে থাকে। সামির যে বলেছিলো তাকে, “তোমার রুপ শুধু আমার জন্য। আর কেউ যাতে না দেখে।” সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত কোনো পর পুরুষের সামনেই আসেনি পদ্ম।

পদ্ম আকাশের দিকে তাকিয়েই নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছিলো।

— “এরপর যদি কাঁদতে দেখি তাহলে একটা গভীর ডোজ দিবো।”

সামিরের কথাটা মনে পড়তেই পদ্ম আনমনে হেসে দেয়। সামিরের দুষ্টু মিষ্টি খুনশুটি গুলো মনে করে পদ্ম আনমনেই হাসে প্রতিদিন রাতে। জানালার পাশ থেকে সরে ওযু করে এসে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। প্রতিদিন মোনাজাতে একটা কথাই বলে, “আমরা দুইজন যাতে একসাথে জান্নাতে থাকতে পারি আল্লাহ। আমি যেনো জান্নাতেও তার পদ্মাবতী হয়ে থাকতে পারি।”

ফজরের নামাজ পড়ে পদ্ম বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। এই বারান্দায়ও হাজার স্মৃতি আছে সামিরের সাথে। এই উঠানে, এই ঘরটায় প্রথম যখন বেড়াতে আসে কতশত দুষ্টুমি, খুনশুটি, ভালোবাসায় রাঙানো ছিলো সেসব দিন। এসব ভেবে পদ্ম একটা মুচকি হাসি দেয়। পুরো গ্রামই তাদের ভালোবাসার সাক্ষী আছে। এই গ্রামের আকাশ, বাতাস, পাখি, তরুলতা, গাছপালা, মেঠোপথ সব জায়গায় পদ্ম সামিরের স্মৃতি খুজে পায়। তাইতো এখানে এসেই রয়ে গেছে।

হাজারো স্মৃতি কখনো জর্জরিত করে দেয় পদ্মের হৃদয়টা। আবার কিছু স্মৃতি পদ্মের মলিন মুখে হাসি ফুটায়। সকালের হিম বাতাস মুখে লাগতেই চোখ বন্ধ করে নেয় পদ্ম। বুকের ভেতর ধুকপুক ধুকপুক শুরু হয়। পদ্ম ডান হাত রাখে বুকের বা পাশে৷ মনে পরে যায় প্রথম রাতের কথা। যেদিন পদ্ম সামিরের বুকের বা পাশে হাত রেখে সামিরের হার্টবিট অনুভব করেছিলো। প্রথমবার কোনো পুরুষের হার্টবিট অনুভব করেছিলো পদ্ম। অনুভব করেছিলো একটা গভীর অনুভূতি। যে অনুভূতি ছিলো হালাল। পদ্ম চোখ বন্ধ করতেই সামিরের দুষ্টু হাসি মাখা মুখশ্রী দেখতে পায়৷ অনুভব করে প্রথম দিনে কপালে সামিরের আলতো ঠোঁটের দেয়া এক উষ্ণ পরশে পদ্মের ঘুম উড়ে যাওয়ার স্মৃতিটা।

পদ্ম চোখ বন্ধ করেই বিড়বিড় করে বলে,,,
“ভালোবাসি প্রিয় তোমায়। ভালোবাসি। তোমার পদ্মাবতী খুব ভালোবাসে তোমায়।”

— সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here