পরিণতি,পর্বঃ ১

0
3838

পরিণতি,পর্বঃ ১
লেখাঃ কামরুল ইসলাম ইথান

বাসর রাতেই বুঝতে পারলাম বউ ভার্জিন না। পারিবারিক ভাবেই বিয়ে করেছি অথচ ভাবতেই পারছিনা নববধূ কুমারী না। অনেক চিন্তায় পরে গেলাম তবে কি আমার আগে অন্য কেউ এসেছিল তার জীবনে? না, এটা কি করে হয়।

গতকাল, বর সেঁজে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। বউ দেখতে অনেক সুন্দর, চেহারাই একটা মায়াবী ভাব আছে। রাত ১২ টায় আমাকে বাসর ঘরে ঢুকতে দেওয়া হলো। অনেক আশা, ভালোবাসা নিয়ে নববধূর কাছে এগিয়ে গেলাম। নববধূর লম্বা গুমটা তুলে পলকবিহীন তাকিয়ে বললাম,

– আচ্ছা তোমার নাম কি?
নববধূ আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলে,
– আমার নামও জানেন না?
– না, এখন বলো।
– আমার নাম প্রাচী!
– প্রাচী খুব সুন্দর নাম, আসলে হঠাৎ করেই আমাদের বিয়ে হয়ে গেল তাই আর নাম জানা হলো না। এখন এই সব বাদ দিয়ে চলো একটু…
– এভাবে বলতে নেই, আমার লজ্জা করে।

আমাদের নতুন জীবনের প্রথম রাত কাটলো ভালোই। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, প্রাচী একপাশে শুয়ে আছে। বিছানায় কুমারীত্বের কোনো লক্ষণের দাগ নেই, মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরলো। তাহলে কি প্রাচী কুমারী না! বিছানা ভালো করে দেখেও ভার্জিনের কোন চিহ্ন বিন্দু পেলামনা।

ফ্রেশ হয়ে এসে টেবিলে বসে ভাবছি গত রাতের কথা গুলো। একটু পরই প্রাচী ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আসলো নাস্তা করতে। পরিবার বলতে মা, ছোট বোন, আমি আর নতুন এলো প্রাচী। সবাই একসাথে বসে নাস্তা করছি তখন প্রাচী হাত বাড়িয়ে আমাকে নাস্তা দিতে চাইলো আমি মাথা নেড়ে বুঝালাম নাস্তা করার কোন ইচ্ছা নাই।

মা কারন জানতে চাইলো, আমি কিছুই বললাম না। আমি ভাবছি, এটা কি করে হয় প্রাচী ভার্জিন না। নাস্তা না করেই টেবিল থেকে উঠে রুমে চলে আসলাম। প্রাচী ও আসলো রুমে, আমি চুপ করে ভাবছি প্রাচীকে জিগ্যেস করে দেখবো নাকি।

– তুমি কি কিছু নিয়ে চিন্তিত?
প্রাচীর কন্ঠ শুনে ওর চোখে তাকালাম আর বললাম,
– না, কেনো?
-না মানে, নাস্তা করলে না আবার মুখেও চিন্তার ছাপ।
– এমনিই।

বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম, হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম পার্কে। পার্কের এক পাশে বসে ভেবেই চলছি প্রাচীর কুমারীত্ব কে নষ্ট করলো। প্রাচীকে নিয়ে চিন্তায় মগ্ন তখনই পিছনে শুনতে পেলাম পুরাতন প্রেমিকার আওয়াজ। পিছনে তাকিয়ে দেখি সে আমার দিকেই আসছে।

– ইথান, কেমন আছো?
রাইসার কথা শুনে মুচকি হেঁসে বললাম,
– ভালো, তুমি?
– আমিও ভালোই! এতদিন পর দেখা আর তুমি কি কোনোকিছু নিয়ে চিন্তিত!
– তেমন কিছুনা, তা এতদিন পর কোথায় থেকে?
– বেড়াতে আসছি আর তুমি চিন্তিত কি নিয়ে?
– আচ্ছা, ভালোই।
– বলো কি নিয়ে চিন্তায় আছো? আমার কথা ভেবে নাকি? আমার কিছু করার ছিলো না, বাবা জোর করে বিয়ে দিয়ে দিছে।
– আচ্ছা যা হওয়ার হয়ে গেছে। একটা কথা বলবা?
– বলো?
– মেয়ে ভার্জিন কিনা কিভাবে বুঝবো?
– শারীরিক সম্পর্ক করলে রক্ত বের হয় এতেই বুঝা যায় সে ভার্জিন কিনা। এটা ছাড়া আর কোন উপায় আমার জানা নাই।

আমি আর কিছু না বলেই উঠে চলে আসলাম। বাড়ি এসে প্রাচীকে কোথাও পেলামনা, সে নাকি তার কোন বান্ধবির সাথে দেখা করতে গেছে। এতেই আমার একটু সন্দেহ হলো, আজ প্রাচী আসলে জানতে চাইবো সে কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক করছে কিনা।

প্রাচী বাসায় ফিরে এলে, তাকে কিছু জিগ্যেস করতে সাহস হয়নি। কি ভাবেই বা প্রশ্ন করবো, তুমি ভার্জিন কিনা? এতে হয়তো সে কষ্ট পাবে যে আমি থাকে বিশ্বাস করছি না বা তার চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করছি। প্রাচী বাসায় ফিরেই আমাকে প্রশ্ন করলো,

– কোথায় গিয়ে ছিলে?
প্রাচীর এমন প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে গেলাম আর নিচু কন্ঠে বললাম,
– কোথাও না বন্ধুদের কাছে।
– বন্ধুদের কাছে, তাহলে পার্কের মেয়েটা কে ছিল?
– ওই আমার বন্ধু।

প্রাচী আমার উত্তর শুনে আর কিছু বলে নি। দেখতে দেখতে সারাদিন কেটে গেলো, রাতে আবার প্রাচীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে নিশ্চিত হলাম প্রাচী ভার্জিন না। পরেরদিন থেকেই প্রাচীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলাম।

চাওয়া, না চাওয়া মিলেই আমার আর প্রাচীর জীবন চলছে। আমি প্রাচীর কাছে তার কুমারীত্ব নিয়ে কোনো কিছু জানতে চায় না কারণ মা আমাকে বিয়ে করিয়েছে প্রাচীকে অনেক পছন্দ করে। আমি চাইনা মার সাথে আমার মনোমালিন্য হোক।

বিয়ের ১০-১২ দিন পরই একদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি সবাই যেনো কেমন খুশী খুশী। রুমে যেতেই প্রাচী হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি অনেকাংশ অবাক হলাম প্রাচীর জড়িয়ে ধরা দেখে। প্রাচী জড়িয়ে ধরে বলে,

– আমাদের নতুন অতিথি আসতে চলেছে।
– মানে!
– তুমি বাবা হবা আর আমি মা।

কথাটা শুনেই একটা বড় ধাক্কা খেলাম। একটা মেয়ে বিয়ের ১০-১২ দিন পরেই কি ভাবে গর্ভবতী হয়! প্রাচী অন্য কারো সন্তান নিয়ে আসেনি তো…

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here