পরী পর্বঃ৬ষ্ঠ

0
587

পরী পর্বঃ৬ষ্ঠ
লেখাঃনীলাদ্রিকা নীলা

.
– অরি মন্ডল। আপনি তো সায়েম আহমেদ।
মেয়েটির কন্ঠস্বর খুবই মিষ্টি। সায়েম অবাক হয়ে বললো, আপনি আমায় কিভাবে চেনেন!
মেয়েটি হেসে হেসে বলছে,ওইতো অফিসে আপনার চেম্বারে আপনাকে দেখেছি। কিন্তু কথা বলার সুযোগ হয় নি। আপনি যা রেগে ছিলেন। আমি আপনাদের অফিসের নতুন কগিল।
সায়েম এবার ভ্রু টা উপরে তুলে ব্যঙ্গাত্মক ভঙিতে বললো, ও.. আপনিই সেই।
– জি। আপনি চেনেন?
– চিনি মানে শুনেছি আরকি।
মেয়েটি সায়েমের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো, কি শুনেছেন?
সায়েম এবার মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে পকেটে রাখা সান গ্লাসটা চোখে দিতে দিতে বললো, ওইতো কাজে ফাকি দেওয়া কিছু লোকেরা আপনার রুপের প্রশংসা করছিলো আরকি।
অরি ড্যাবড্যাবিয়ে সায়েমের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠল, তারা কি ভূল কিছু বলেছে?
– দেখুন মিস অরি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আপনার সাথে এসব আলাপ করার সময় আমার নেই।
অরি সাথে সাথে উত্তর দেয়, রাস্তায় যখন দাঁড়াবেন না তখন আমরা অন্য কোথাও বসে আলাপ করি?
– সরি। আমাকে মিটিংয়ে ডেকেছে। ওখানে যেতে হবে।
-ও হ্যাঁ। আমারও তো যেতে হবে। আমি তো ওখানেই যাচ্ছিলাম।
-তাহলে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন। যান।
-আসলে অটোতে করে যাওয়ার সময় অটোটা খারাপ হয়ে যায়। আর অটোওয়ালা আমাকে এখানেই নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। আপনিই বলুন এই মাঝ রাস্তায় আমি কোন গাড়ি আর অটো পাবো? সেই তখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি। একটাও পেলাম না। ভাগ্যিস আপনি এই পথ দিয়েই যাচ্ছিলেন।
সায়েম এবার ওর দিকে তাকিয়ে সাথে সাথে উত্তর দেয়,মানে?
– মানে হলো আপনিই এখন আমাকে নিয়ে যাবেন। আমরা একই অফিসে কাজ করি আর রাস্তায় বিপদে পরেছি দেখে যদি এইটুকুও হেল্প না করেন!
সায়েম এবার বিরক্তির ভঙিতে বললো, ঠিকাছে। উঠে বসুন।
.
কিছুদূর যাওয়ার পর সায়েমের ফোনের রিংটন বাজতে থাকে। সায়েম ফোনটা বের করে দেখলো প্রত্যাশা কল করছে। এই অবস্থায় কিভাবে ফোন রিসিভ করা যায়। বাইকের পিছনের সিটে আবার একজন বসেও রয়েছে। এখন মেইন শহরের রোড চলে এসেছে। এখানে আশপাশ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। বাইক নিয়ে কোনো অঘটন ঘটলে দোষটা তো তারই হবে। সায়েম ফোনটা আবার পকেটে রেখে দিল।
সামনে বিশাল জ্যামে গাড়ি গুলো আটকে রয়েছে। সম্ভবত ট্রেন আসবে তার জন্য। সায়েম বাইক নিয়ে ওখানে ব্রেক কষতেই অরি সায়েমের গায়ের ওপর এসে হেলে পরলো। সাথে সাথে অরি বলে উঠল, সরি! সরি! আসলে বাইকে আমার এমনিতেই ভয় করে। আমি কি আপনাকে একটু ধরে বসতে পারি? না মানে যদি পরে টরে যাই।
সায়েম মুখটা খুবই বিরক্তির ভঙি করে বললো, হুম।
জ্যাম এখনো ছাড়ে নি। সায়েম বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অরি সায়েমের কাধের ওপর এক হাত রেখে ধরে রয়েছে। তার একটু দূরেই অফিসের ম্যানেজার রোহান সাহেব বাইক নিয়ে এসে দাঁড়াল। তার সাথে নিলয় চৌধুরীও রয়েছে। মুহুর্তেই সায়েমের সাথে অরিকে দেখে তাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। রোহান সাহেব বলে উঠলেন, বেটা কতবড় চালবাজ দেখেছেন!
নিলয় চৌধুরী তার চোখের চশমাটা খুলে বললো, ওটা আমাদের অফিসের নতুন কলিগটা না?
– হ্যাঁ সেটাই তো দেখছি। অফিসে সে আমাদের বললো চরিত্র ঠিক করতে। আমরা নাকি কাজ ফেলে মাইয়্যাগো দেখি। আর উনার চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র।
– তখন তো আমি এই কলিগকে দেখার কথা বলাতেই এমনভাবে পার্ট নিলো যেন পৃথিবীর কোনো মেয়ের দিকে সে তাকায় না। আর এখন ওই কলিগকেই নিজের বাইকের পিছনে তুলে নিয়ে যাচ্ছে!
– আরে আমি জানতাম এমন সুন্দরী মেয়েকে দেখলে যে কোনো পুরুষেরই মাথা খারাপ হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের সামনে ওভাবে ভালো সেজে পার্ট নিলো কেন! বেটার আজ হচ্ছে!
– কি করবেন?
– প্রত্যাশা ভাবির সাথে আপনি ফেবুতে এড আছেন না? আজ ভাবির কাছে বেটাকে ধরিয়ে দেব। বেটার পার্ট নেওয়া বার করছি।
-ও ইয়েস! ভালো বলেছেন। অফিসে ভালো সেজে পার্ট নেয় আর বাহিরে এসে ঠিকই ওই সুন্দরী কলিগের সাথে লুতুপুতু পাতিয়েছে৷ ভেবেছে আমরা দেখবো না।
.
নিলয় চৌধুরী ফোনটা বের করে বাইকে বসা সায়েম আর অরির একটা ছবি তুললো। আরও কয়েকটা ছবি তোলার চেষ্টা করতেই জ্যামটা ছেড়ে যায় আর সায়েম বাইক স্টার্ট দিয়ে দেয়। নিলয় চৌধুরী সাথে সাথে বলে উঠল, এই যা চলে গেল! ভালো ভাবে তো তুলতেই পারলাম না।
– যা হয়েছে ওতেই চলবে। বেটা বড় ধরনের চালবাজ। বাড়িতে বউ রেখে বাহিরে মেয়ে নিয়ে ঘুরছে। ভেবেছে বউ কিছু জানতে পারবে না৷
.
সায়েম ফোন রিসিভ না করায় প্রত্যাশা শুয়ে শুয়ে ফেসবুকে ঢুকে নিউজ ফিডের পোস্ট গুলো পড়ছিল। তখনই নিলয় চৌধুরীর মেসেজ আসে।
– হাই ভাবি। কেমন আছেন?
মেসেজটা দেখে প্রত্যাশা রিপ্লাই দেয়, জি ভালো আছি। আজকাল আপনাদের অফিসে খুব কাজ তাইনা?
– কই কাজ।
– না মানে উনাকে তো অফিস টাইমে ফ্রি পাওয়াই যায় না।
– হাহাহা ভাবি। উনাকে তো একটু আগেই বাইকে একটি মেয়ের সাথে দেখলাম।
– কিহ!
– হ্যাঁ ভাবি। এই দেখুন ছবি।
নিলয় চৌধুরী তখনকার তোলা ছবিটা প্রত্যাশাকে সিন্ড করলো। ছবিটা দেখে প্রত্যাশার মেজাজ গরম হয়ে যায়।
– এটা কোথায় পেলেন আপনি?
– ভাবি আমি নিজে তুলেছি। কেন আপনাকে এসব বলে না?
– ঠিকাছে ভাইয়া আমি আপনার সাথে পরে কথা বলবো। বাই।
.
রোহান সাহেব আর নিলয় চৌধুরী হাসতে হাসতে ফেটে পরছে। রোহান বললো, আজ বউয়ের সামনে বেটার মুখোশ খুলে যাবে৷ আমাদের বলে কিনা অফিসে এসে মাইয়্যাগো দেখি! আর নিজে তলে তলে বাহিরে এসে ঠিকই মেয়ে নিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে৷ শুধু আমরা তাকালেই দুষ!
.
প্রত্যাশা সায়েমের ফোনে কল করছে আর সায়েম বার বার ফোন কেটে দিচ্ছে। এবার প্রত্যাশা মেসেজ করলো, কোথায় তুমি?
কিছুক্ষণ পর রিপ্লাই আসে, আমি মিটিং শেষ করে ফোন দিচ্ছি৷
– না আমি এক্ষুনি কথা বলবো।
প্রত্যাশা আবারো কল করেই যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে গিয়ে সায়েম এবার মিটিংয়ে থাকা অন্য সবার উদ্দেশ্য বলে ফেললো, সরি জাস্ট ওয়ান মিনিট, বাড়ি থেকে আমার একটা জরুরি কল আসছে।
সায়েম ফোনটা নিয়ে ওখান থেকে একটু সরে এসে কলটা রিসিভ করলো। রিসিভ করার সাথেই প্রত্যাশা চিল্লিয়ে বলতে থাকে, কোথায় তুমি!
– আমি মিটিংয়ে।
– কিসের মিটিং তোমার! তুমি কি করো তা আমি জানবো না ভেবেছো?
– আহা আমি মিটিংয়ে। তোমায় আমি পরে কল করছি।
– তোমার কিসের কি তা আমি জেনে গেছি!
– উফ! তোমার সাথে আমি পরে কথা বলছি। এখন রাখি। বাই।
– তুমি ওই…..
সায়েম কল কেটে দিয়েছে। প্রত্যাশার কথা শেষ না হতেই। রাগে প্রত্যাশা ফোনটা বিছানার ওপর ছুড়ে মারলো।
.
মিটিং শেষে লাঞ্চ টাইম চলছে। গোল টেবিলে যে যার জায়গা মতো এসে বসছে । অত্যাধুনিক সব খাবার। পরিবেশনের আগেই সায়েম এই ফাকে ওয়াশরুমের এদিকে এসে প্রত্যাশাকে কল করলো। সায়েমের কল আসছে দেখে বিছানার ওপর থেকে ফোনটা নিয়ে প্রত্যাশা রিসিভ করলো, সরি জান। মিটিং চলছিল। তুমি দুপুরে খেয়ে নাও।
– কেন তোমার ওই মেয়ে বুঝি তোমাকে এখন টাইম দিচ্ছে না? তাই আমাকে কল করেছো।
– কি বলছো এসব। কিসের মেয়ে!
– বাহ! যার সাথে এতোক্ষন বাইকে ঘুরলে!
-ওয়েট ওয়েট! তোমাকে বাইকের ব্যপারে এসব কে বললো।
– আমি সব জানি! আসলে তুমি একটা..
– ছিহ! এসব কি বলো। নিজের হাজবেন্ডকে এসব বলতে লজ্জা করছে না তোমার!
– তুমি করতে পারলে আমি বলতে পারবো না কেন!
– দেখো তুমি কিন্তু শুধু শুধু ঝগড়া করছো।
– ও আমি এখন ঝগড়া করছি তাই না? তুই তো আসলে একটা…
.
রাগে সায়েম এবার কলটা কেটে দিয়ে ভিতরে চলে এলো। ভিতরে আসতেই দেখতে পেল সবাই যে যার জায়গামতো বসে পরেছে। নিলয় চৌধুরী সায়েমকে ডাকছেন।
– এদিকে আসুন।
নিলয়ের পাশে রোহান সাহেব বসে রয়েছেন। গোল টেবিলের চারটি চেয়ার। এক পাশে নিলয় আর রোহান বসে আছেন। তার বিপরীত পাশে দুটি চেয়ার ফাঁকা। সায়েমকে ওখানেই বসতে বলা হলো। বাকি সব টেবিল বুক। তাই সায়েম ওখানেই বসে পড়লো। সায়েমের মন মেজাজ ভালো নেই। কেমন বিরক্ত হয়ে চেয়ারটায় বসে রেয়েছে। তখনই পাশের খালি চেয়ারটাতে অরি এসে বসলো। মিটিংয়ের সব লোকের নজর এখন অরির দিকে। এতোক্ষন তো মনে হয় অরির দিকে তাকিয়ে কেউ কেউ তো অরির সৌন্দর্য গিলছিলো। নিলয় রোহানের কানে কানে বললো, ইস! কি ফিগার,আর চোখটা দেখেছেন? চোখ তো নয় যেন আগুনের গোলা। যেদিকে তাকাচ্ছে মনে হচ্ছে সেইদিকেই চাক্কু মারছে। বুকের ধরফরানি বেড়ে যায় বুঝলেন এমন বেশি সুন্দরী মাইয়্যা দেখলে!
.
খাবার দেয়া হয়েছে। নিলয় চৌধুরী তার ফোনের ক্যামেরার সেলফি মুড বের করে বলে উঠল, সবাই এইদিকে একটু তাকান!
ক্যামেরায় চারজনের ছবি উঠবে। কিন্তু সায়েম মুখটা বিরক্তির ভঙি করে রয়েছে। অরি তার পাশে এসে বসেছে। তারপর আবার ওর জন্যই প্রত্যাশার সাথে ঝগড়া হলো। একদমই সহ্য হচ্ছে না ওকে৷ এই মুহুর্তে এই চেয়ার ছেড়ে উঠে অন্য চেয়ারেও বসা যাচ্ছে না। সবাই এদিকে তাকিয়ে রয়েছে।
.
নিলয় চৌধুরী বললো, মিস্টার সায়েম আপনি হাসছেন না কেন? ছবি উঠাচ্ছি তো৷
সবাই এদিকে তাকিয়ে রয়েছে। নিলয়ের সেলফি ওঠানো দেখছে৷ আর সবার এদিকে তাকানোর মূল কারণ হলো অরি। তাই বাধ্য হয়েই সায়েমকে এই চেয়ারেই বসতে হচ্ছে। আর এখন এখান থেকে উঠে যাওয়া একটা অভদ্রতার আচরণ হয়ে যাবে। বাধ্য হয়েই সায়েম একটু জোর করে হেসে ক্যামেরার দিকে তাকালো। ছবি তোলা হলো। নিলয় চৌধুরী সেই ছবি দিয়ে তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছে। সাথে সায়েম আর রোহানকেও ট্যাগ করে দিয়েছে।
.
রাগ কমানোর জন্য প্রত্যাশা ফেসবুকেই সময় কাটাচ্ছিলো। তখনই হঠাৎ করে নিলয় চৌধুরীর ছবি ওয়ালা সেই পোস্ট তার চোখে পরে। ছবিতে সায়েমের পাশে অরিকে দেখে মাথায় আগুন ধরে গেল প্রত্যাশার। দেখলো সায়েম মুচকি হাসছে আর তার পাশের মেয়েটি দাঁত বের করে হাসছে। আর ওদের সামনে নিলয়ের সাথে রোহান সাহেব তার দুই হাতের আঙুলে ভি চিহ্ন দেখিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। পোস্টে ছবির উপরে নিলয় চৌধুরী লিখেছেন, পরীর মতো দেখতে এক সুইট কলিগের সাথে আজকের লাঞ্চ। ফিলিং এক্সসাইটেড।
.
এটা দেখে প্রত্যাশার মাথায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। রাগে ফোনটা ফ্লোরের ওপর ছুড়ে মেরে দিলো। আর সাথে সাথে সেটা টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
– আমার কল কেটে দিয়ে ওই বেহায়া মেয়েটার সাথে বসে আছে? আর আমায় বলে কিনা তুমি খেয়ে নিও! তুই আজ বাসায় আয়। তোকে আজ আমি চিবিয়ে খাব!
.
অরি খাবারের বাটি নেবার ছলে বার বার সায়েমের হাত ছুঁয়ে দিচ্ছে। খুব অসস্তি হচ্ছে সায়েমের। এত লোকের সামনে ওকে কিছু বলতেও পারছে না। কেউ না থাকলে এতক্ষণে ঠাস করে দুচারটে ওর গালে বসিয়ে দিত। হঠাৎ করে অরি সায়েমের উরুতে তার বাম হাত রাখলো। আর চেয়ার নিয়ে সরে এসে সায়েমের গায়ের সাথে গা লাগালো। সায়েম আর সহ্য করতে না পেরে উঠে চলে গেল। নিলয় আর রোহান এসব দেখে একে অপরের দিকে তাকিয়ে এতোক্ষন মুখ চাওয়াচাওয়ি করছিলো। রোহান বললো, সায়েম সাহেব তো চলে গেলেন। আমরা তো আছি। আমাদের বুঝি চোখে পরে না?
এই কথা বলার সাথে সাথে অরি রাগ চোখে রোহানের দিকে তাকায়। আর রোহান সাথে সাথে চেয়ার থেকে পরে গিয়ে অচেতন হয়ে গেল। কয়েকজন তাকে ধরে গাড়িতে উঠিয়ে হসপিটালের দিকে নিয়ে যায়৷
.
প্রত্যাশার ফোন বন্ধ পেয়ে সায়েমের মেজাজ আরও বিগড়ে গেল। মাথার ভিতর কেমন যেন যন্ত্রনা হচ্ছে। ওই অরির ব্যাপারটা ভেবে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। মেয়েটার এতো সাহস কি করে হয় তার গায়ে হাত দেওয়ার। অফিসে ফিরে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে বসলো। হঠাৎ রুমটা কেমন যেন গরম হতে থাকে। এসি চলছে তারপরও ঘেমে যাচ্ছে সায়েম। সামনে তাকিয়ে দেখলো মিস অরি দাঁড়িয়ে আছেন।
-আপনি? কারো চেম্বারে ঢোকার আগে যে পারমিশান নিতে হয় সেটা জানেন না আপনি?
– আপনার কাছে আসতে আবার আমার পারমিশান?
– ওয়াট? ওয়াট ডো উ ছে?
.
সায়েমের চেচামেচিতে অফিসের বাকি লোকজনেরা চলে এলো। তাদের মধ্যে একজন বলে উঠল,নতুন কলিগের সাথে এভাবে খারাপ ব্যবহার করছেন কেন?
সায়েমের ব্যবহারে অরি রেগে রুম থেকে বের হয়ে যায়। বাকিও যে যার কাজে চলে গেল। সায়েম তার রাগকে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। চেম্বারের ভিতর থাকা জিনিসপত্র ভাঙচুর করতে শুরু করলো সায়েম।
.
সন্ধ্যার দিকে বাইক নিয়ে বের হতেই দেখলো বাইকটা খারাপ হয়ে গেছে। রাগে ওটাকেও একটা লাথি মেরে ফেলে দিয়ে এলো। তারপর অটোতে করে আসার পর জঙ্গলের দিকে আসতেই অটো থেকে নেমে হাটা শুরু করলো। বড্ড কান্ত লাগছে। অফিসেও ঝামেলা হলো আর বাড়িতেও প্রত্যাশা রেগে রয়েছে। মাথাটা বিগড়ে গেছে পুরোই। এখন যে কেন এভাবে হাটছে তাও জানে না। মদ খেতে পারলে হয়তো সব উল্টেপাল্টে যেত। সামনে এগোতেই দেখতে পেল জঙ্গলের ধারে কত গুলো জুয়ারু মদ খেয়ে মাতাল হয়ে জুয়া খেলছে। চারিদিকে নিরবতা। কোনো মানুষজন নেই। শুধু ঝি ঝি পোকা আর পেঁচার ডাকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
.
চলছে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here