পিচ্চি চাচাতো বোন,পর্বঃ২

0
1230

পিচ্চি চাচাতো বোন,পর্বঃ২
আবির হাসান নিলয়

কলেজে আসতেই দেখতে পেলাম প্রিয়ার(ফ্রেন্ড)
সাথে তানিয়া এবং ওর কিছু ফ্রেন্ডস রেগে কথা
বলছে।দূর থেকে শোনা যাচ্ছে না কিন্তু ঠিকি
বোঝা যাচ্ছে।রাহুলরা কোথায়।আর প্রিয়া তো
সেরকম মেয়ে না যে ওদের সাথে ঝামেলা করতে
যাবে।দাঁড়িয়ে না থেকে প্রিয়ার কাছে গেলাম।
আমিঃপ্রিয়া কি হয়েছে?
প্রিয়া……..(চুপ করে আছে)
আমিঃকি হলো কথা বলছিস না কেনো?
প্রিয়াঃতানিয়া আর ওর ফ্রেন্ড আমাকে আজেবাজে
কথা শোনাচ্ছে(নিচু স্বরে)
আমিঃকি বলেছে তাই বল
প্রিয়াঃআমি নাকি তোদের সাথে নষ্টামি করে বেড়ায়
তোদের সাথে আমি ড্রিংক করি(কান্না করে)

এমন কথা শুনে মেজাজ একদম বিগড়ে গেলো।
আমিঃপ্রিয়া তুই ওকে এখন থাপ্পড় দে
তানিয়াঃহাহাহা, এই ফকিরনী আমাকে থাপ্পড় দিবে?
আমিঃহ্যা দিবে।প্রিয়া মার ওকে
প্রিয়াঃনিলয়,চল এখান থেকে।
আমিঃতোকে যেটা বললাম সেটা কর
প্রিয়াঃআমি পাড়বো না
আমিঃঠাসসস ঠাসসস(তানিয়াকে মারলাম)
তানিয়াঃকুত্তার বাচ্চা তুই আমাকে মারলি কেনো?
আমিঃঠাসসস।প্রথমে মারলাম প্রিয়াকে বাজে
কথা বলার জন্য আর এখন মারছি আমাকে
গালি দেয়ার জন্য।
তানিয়াঃতোর এতো বড় সাহস(আমাকে মারার
জন্য হাত তুলতেই ওর হাত ধরলাম)
আমিঃএতো রাগ ভালো না।যা ভাগ এখান থেকে
আমার কথায় আর কোনো প্রতিবাদ না করে
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে গেলো।

তানিয়াদের গ্রুপ চলে যাওয়ার পর দুজনে পাশা
পাশি বসলাম।
আমিঃতুই আজ একা কেনো?
প্রিয়াঃওদের কল দিয়েছিলাম কিন্তু ধরছে না।তাই
এখানে একা একা বসে ছিলাম।
আমিঃকিন্তু আজ তো ক্লাসের শেষ দিন
প্রিয়াঃসেটার জন্যই বার বার কল দিচ্ছিলাম
আমিঃঐতো এসে গেছে।কিরে আজ এতো
দেরি হলো কেনো?
জয়ঃঘুম থেকে উঠতে লেট হয়েগেছে
আমিঃচল ক্লাসে চল
সবাই মিলে ক্লাস করার পর যার যার বাসায় চলে
যেতে লাগলাম।

বাসায় এসে ফ্রেস হওয়ার পর হালকা কিছু খেয়ে
পড়তে বসলাম।পরশু থেকে এক্সাম এখন যদি না
পরি নিশ্চিত থার্ড হবো।আর হ্যা,ক্লাসে ফাস্ট
গার্ল হলো প্রিয়া, সেকেন্ড আমি আর থার্ড তানিয়া।
যদিও প্রতিবার আমার আর তানিয়া রেজাল্ট খুব
ক্লোজ আসে কিন্তু প্রিয়ার সাথে আমরা পাড়ি না।
প্রিয়ার পারিবারিক অবস্থা তেমন ভালো না তাই
কলেজের বেশিরভাগ মেয়ে ওর সাথে ভালো করে
কথা বলে না।যেটার প্রমাণ আজ পেলেন।
————————————
দেখতে দেখতে এক্সাম চলে আসলো।খুব ভালো
ভাবেই সব গুলো পরিক্ষা শেষ করলাম।এখন
আর কোনো চিন্তা নেই শুধু খাওয়া,ঘুম আর সবাই
মিলে ঘুরে বেরানো। ভাইয়ার সাথেও এই কয়েকদিন
কথা হয়নি।আপনারা ভাবছেন কেনো ভাইয়াকে
বাসা থেকে চলে যেতে হলো।সবই জানতে পারবেন
একটু ধৈর্য ধরুন।ইমো অন করে ভাইয়াকে কল
দিলাম।কয়েকবার কোনো রেসপন্স পেলাম না।
আবার দিতেই রিসিভ করলো।
আমিঃকেমন আছিস?
ভাইয়াঃভালো,তুই কেমন আছিস
আমিঃআছি ভালো।
ভাইয়াঃএক্সাম কেমন হলো তোর
আমিঃএইতো ভালো। ভাবি আর আভা কোথায়?
ভাইয়াঃআভা ঘুমিয়ে গেছে আর তোর ভাবি
বাথরুমে গেছে।আব্বু আম্মু কেমন আছে রে?
আমিঃযেমনটা রেখে গেছিস।তুই চলে যাওয়ার
পর থেকে আগের মতো ফ্রি ভাবে বেশি চলতে
পারিনা।প্রায় সব গুলো মেয়ে ফ্রেন্ডের সাথেই
কথা বলা বন্ধ হয়েছে শুধু মাত্র প্রিয়া ছাড়া।কিছু
দিন আগে বার্থডেতে গেছিলাম কিন্তু বাসায়
আসতেই আম্মুর বকা শুনতে হলো।
ভাইয়াঃতোর অনেক কষ্ট হচ্ছে তাই না?
আমিঃআগে হতো কিন্তু এখন আর হয়না।অভ্যাস
হয়ে গেছে বকা শুনে।
ভাইয়ার সাথে আরো কিছু সময় কথা বলে ছাদে
চলে এলাম।
——————————————
রাতে খাবার টেবিলে বসে ফোন টিপছিলাম এমন
সময় আম্মুর ঝাড়ি খেতে হলো।
আম্মুঃসব সময় ফোন দিয়ে কি করিস?
আমিঃতেমন কিছু না(ফোন রেখে দিলাম)
আম্মুঃকাল সকালে আমরা তোর চাচ্চুর বাসায়
যাচ্ছি সব কিছু গুছিয়ে রাখিস
আমিঃআমি দুএকদিন পর যায়?
আম্মুঃএতো কথা শুনতে চাইনি আমি(ধমক দিয়ে)
আব্বুঃআহ, তুমি সব সময় ওকে কথা শোনাও
কেনো।কি করেছে নিলয়
আমিঃআব্বু বলতে দাও আম্মুকে।
আম্মু যা ইচ্ছা সেটা বলতে লাগলো আমি সেদিকে
কান না দিয়ে খাবার খেয়ে রুমে চলে আসলাম।
কয়েকটা ড্রেস প্যাক করে ঘুমিয়ে গেলাম।

পরেরদিন……
নাস্তা করার পর রেডি হয়ে নিচে আসলাম।
আব্বুঃনিলয়,তোর রহিম চাচাকে ডেকে দেতো
আমিঃঠিক আছে।
বাইরে থেকে চাচাকে ডেকে আনলাম।
চাচাঃজ্বি স্যার বলেন
আব্বুঃআমি তোমাকে আগেও বলেছি এখনো
বলছি আমাকে স্যার আর আপনি করে বলবে না।
তুমি আমার থেকে বড় রহিম ভাই
চাচাঃকিন্তু সাহে…(থামিয়ে দিয়ে)
আব্বুঃআর কোনো কথা না।এই নাও বেতন
চাচাঃকিন্তু এখনো তো মাস হয়নি
আব্বুঃআমরা আজ ছোটোর বাসায় যাচ্ছি।আসতে
কিছুদিন লাগবে তাই তোমাকে দিয়ে গেলাম।
চাচাঃআচ্ছা।
———————————
শুধুমাত্র তিনজন রওনা দিলাম।খুব খারাপ লাগছে
যদি ভাইয়া জান্নাতের বিয়েতে থাকতো তাহলে
দুভাই মিলে অনেক আনন্দ করতাম।
আমিঃআব্বু জান্নাতের বিয়ে কার সাথে?
আব্বুঃতুই জেনে কি করবি?
আমিঃযতোই হোক ছোট বোন জানতেই পাড়ি
আব্বুঃনাম হ…..
আম্মুঃবিয়ের দিন জানতে পাড়বি
আমিঃওহ।ছেলের বাসা কি করে
আম্মুঃপড়াশোনা করে
আমিঃতাহলে ওকে খাওয়াবে কি?
আব্বুঃবাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান।আর ছেলের
বাবার বিজনেস আছে।
আমিঃবাসা কোথায়
আব্বুঃশহরেই
আমিঃওহ
কথা বলতে বলতে চাচ্চুর বাসায় চলে এলাম।
আমরা আসার সাথে সাথে ভিতর থেকে সবাই
দৌড়ে বাইরে আসলো।
চাচ্চুঃকেমন আছো ভাই
আব্বুঃএইতো ভালো।তোরা সবাই কেমন আছিস
চাচ্চুঃহ্যা ভালো।আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো?
আব্বুঃনা
চাচিঃভাইয়া ভাবি ভিতরে আসেন আগে
সবাই মিলে আব্বু আম্মুকে নিয়ে যেতে লাগলো।
থু,সালার একটা মানুষও নাই আমাকে ভিতরে
আসার জন্য।জীবনটাই বেদনা রে।একদম সবার
পিছু পিছু বাসার ভিতরে ঢুকলাম। সবাই মিলে
আব্বু আম্মুর সাথে টুকটাক কথা বলছে।বলাটাই
স্বাভাবিক এতো দিন পর দুভাই এক সাথে বসে
আছে কথা তো হবেই।উনাদের কিছু না বলে
উপরের রুমে চলে এলাম।আমার জন্য একটা
রুম ঠিক করা আছে যখনি চাচ্চুদের বাসায় আসি
ঠিক এই রুমটাতেই আমি থাকি।

রুমে ডুকেই অবাক হয়ে গেলাম।?
পুড়ো রুমটা সাজানো গোছানো। কিন্তু তা থেকেও
অবাক হলাম রুমের মধ্যে মেয়েদের ব্যবহারকৃত
জিনিষপত্র। বিছানার দিকে লক্ষ্য করতেই দেখলাম
পিচ্চিটা শুয়ে শুয়ে ফোনে কিছু একটা দেখছে।
আমিঃওই পিচ্চি তুই এই রুমে কেনো?
হঠাৎ করে কথা শুনে প্রথমে অনেকটা ভয় পেয়ে
যায়।কিন্তু একটু পরেই স্বাভাবিক হয়ে আমাকে
ছুঁয়ে নেয়।
আমিঃতুই আমাকে ছুঁয়ে নিলি কেনো?
জান্নাতঃভয় পেয়েছিলাম তাই।
আমিঃকিন্তু তুই এই রুমে কেনো?
জান্নাতঃআমার রুম আমি থাকবো না তো কে থাকবে
আমিঃতোর রুম মানে
জান্নাতঃগত ১বছর আপনি একবারের জন্যও
আসেননি তাই রুমটা আমি নিয়ে নিছি
আমিঃতোর সব কিছু নিয়ে রুম থেকে বের হো
জান্নাতঃবের হতে হবে কেনো?
আমিঃকারণ এই রুমে আমি থাকবো
জান্নাতঃতাহলে আমি..!
আমিঃঅন্য রুমে যা
জান্নাতঃঠিক আছে।কিন্তু এসব জিনিষ এখানেই
থাক আমার যেটার দরকার হবে সেটা নিয়ে যাবো
আমিঃওকে
জান্নাতঃআরেকটা কথা
আমিঃতোর সব কথা পরে শুনবো এখন তুই
যা।আমি ফ্রেস হবো
জান্নাতঃকিন্তু
আমিঃতুই যাবি না তাই তো?
জান্নাতঃযাচ্ছি যাচ্ছি
পিচ্চিটা চলে যাওয়ার পর ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে গেলাম
——————————————–
বিকেলবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলাম
জান্নাত রুমে বসে আছে।বসে আছে তো আছেই
একদম আমার দিকে তাকিয়ে।
আমিঃঐ পিচ্চি তুই এখানে কেনো?
জান্নাতঃআমাকে বার বার পিচ্চি বলেন কেনো?
আমিঃতো কি বলবো?
জান্নাতঃনাম নিয়ে বলবেন।আর তাছাড়া আমি
এবার এস এস সি এক্সাম দিছি
আমিঃআইছে বড় হতে। যা এখান থেকে
জান্নাতঃহুহ
জান্নাত চলে যাওয়ার পর ফ্রেস হয়ে ছাদে গেলাম।
চাচ্চুর বাসায় আসার পর থেকেই ঐ মেয়েটার
কথা মনে পড়ছে।নাম ঠিকানা কিছুই জানিনা।
ছাদে বসে বসে মেয়েটার ছবি দেখছি হঠাৎ
জান্নাত এলো।
আমিঃতুই এখানে?
জান্নাতঃএমনি
আমিঃতোর বিয়ে কার সাথে রে?
জান্নাতঃআপনার সাথে
আমিঃচল তাহলে এখনি বিয়ে করে ফেলি
জান্নাতঃমজা করছেন?
আমিঃতাছাড়া কি করবো?
জান্নাতঃএসব বাদ দেন।
আমিঃতুই একটা সাহায্য করতে পারবি?
জান্নাতঃকি বলেন
আমিঃআমার একটা মেয়েকে ভালো লেগেছে।
কিন্তু মেয়েটা কে, কি তার পরিচয় কিছু জানিনা।
এমনকি তাকে ভালো করে আমি দেখিও নাই

কথাগুলো শেষ করতেই জান্নাত কয়েক পা
পিছু হেটে গেলো।অনেকটা করুণভাবে তাকিয়ে
আছে।বুঝলাম না, কি এমন কথা বললাম যে
এভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে।
আমিঃকি হলো এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো
জান্নাতঃকিছুনা
আমিঃদাড়া তোকে আমি ঐ মেয়েটার ছবি দেখায়
ফোন থেকে ছবিটা বের করে জান্নাতকে দেখালাম।
আমিঃএই মেয়েটাই
জান্নাতঃএর তো চেহারায় দেখা যায় না
আমিঃসেটাই তো সমস্যা।
জান্নাতঃতাহলে খুঁজবো কি করে?
আমিঃতুই রিয়াকে চিনিস
জান্নাতঃকোন রিয়া
আমিঃপাশের গ্রামের।ওর বাবার রফিক
জান্নাতঃহুম চিনি।আমার বান্ধুবী একসাথেই
পড়াশোনা করি
আমিঃওর বার্থডেতে আমি এই মেয়েটাকে দেখছিলাম
জান্নাতঃএটা তাহলে মাওয়া হবে
আমিঃতুই জানলি কি করে
জান্নাতঃরিয়ার বার্থডের পিক আছে আমার কাছে
আর সেখানে শুধুমাত্র মাওয়ার চেহারা দেখা
যাচ্ছিলো না।
আমিঃতুই ওর বিয়েতে গিয়েছিলি?
জান্নাতঃযায়নি বাট সব জানি
আমিঃমাওয়া অনেক সুন্দর নাম।
জান্নাতঃহুম
আমিঃতোর ভাবি কি তোর ক্লাসমেট?
জান্নাতঃভাবি কে?
আমিঃতোর মাওয়া ভাবি
জান্নাতঃহুহ ভাবি(মজা নিয়ে)
আমিঃথাপ্পড় দিয়ে দাত ফেলে দিবো
জান্নাতঃআমি কি করলাম।আর শোনেন এখন
যদি আমাকে মারেন তাহলে আমি বলবো না
মাওয়া কোথায়
আমিঃকি বলিস বোন।আমি কি তোকে মারতে
পারি বল…?
জান্নাতঃআগে মনে হচ্ছে মারেন নাই
আমিঃতখন তো আমি……. (থেমে গেলাম)
জান্নাতঃথামলেন কেনো?
আমিঃবোনু চল
জান্নাতঃবোন কে?
আমিঃতুই
জান্নাতঃএকদম বোন বলবেন না
আমিঃকেনো তুই তো আমার আদরের ছোট বোন
জান্নাতঃআবার?
আমিঃআচ্ছা বলবো না।আর তোর বিয়ে কবে?
জান্নাতঃ৫দিন পর
আমিঃছেলেটা কেমন রে?
জান্নাতঃআপনার মতোই স্মার্ট
আমিঃএখন চল
জান্নাতঃকোথায়?
আমিঃনিচে যায়
জান্নাতঃআপনি যান আমি আসছি
আমিঃঠিক আছে।আমি গেলাম।

আর কোনো কথা না বলে নিচে চলে আসলাম।
সবাই নিচেই বসে আছেন, আমাকে দেখে চাচ্চু
ডেকে কাছে বসালো।
চাচ্চুঃকেমন লাগছে এখানে?
আমিঃকেমন লাগবে আবার?
চাচ্চুঃতুই খুশি তো?
আমিঃকিসের জন্য?
চাচ্চুঃবিয়ের ব্যাপারে
আমিঃঅবশ্যই খুশি
আব্বুঃএটা নিয়ে কথা না বললেই আমি খুশি হবো
চাচ্চুঃঠিক আছে ভাই।
ছোট মাঃসব কেনা কাটা করার জন্য কবে যাবে?
আম্মুঃপরশু গেলে কেমন হয়?
সবাই কথা বলছিলো তাদের মাঝে একটা পুতুলের
মতো বসে ছিলাম। একটা কথাও বলতে পারছি না।
তারপরেও মনে একটু সাহস জুগিয়ে বললাম….
আমিঃচাচ্চু আমার কয়েকটা ফ্রেন্ড ছিলো যদি
ওদের ইনভাইট করে এখানে আনতে পাড়তাম
তাহলে একটু ভালো হতো
আব্বুঃসেটার দরকার নেই
চাচ্চুঃভাই নিলয় যেহেতু বলছে তাহলে আসুক না।
তাছাড়া ও একা একা কিভাবে সময় কাটাবে
আব্বুঃসেটা নিয়ে কারো ভাবতে হবে না
ধুর,সালার জীবনটাই বেদনা।সব বুড়া-বুড়ির মাঝে
আমি একা কি করবো।চাচ্চু তুমি আমার কষ্টটা
বুঝলেও আমার হিটলার আব্বু আম্মু বুঝলো না।

সেখানে আর এক মুহূর্ত না থেকে ছাদে চলে
আসলাম।চাচ্চুর বাসায় আসলে বেশিরভাগ সময়
ছাদে থেকেই কাটিয়ে দেয়।ছাদের উপর থেকে
গ্রামের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট মনটাকে একদম
ভালো করে দেয়।কিন্তু ছাদে আসতেই পুড়া থ
হয়ে গেলাম।জান্নাত একা একাই নাচ করছে।
এখনো আমাকে দেখেনি।জানি মেয়েটার মাথার
তার কাটা,কিন্তু এখন মনে হচ্ছে একদম পাগল
হয়ে গেছে।ধমক দিয়ে জান্নাতকে বললাম..
আমিঃঐ তুই এভাবে নাচ করছিস কেনো?
আমার কথা শুনতেই জান্নাত থেমে গেলো।নাচ
করে ক্লান্ত হয়ে গেছে তাই জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস
নিচ্ছে।
আমিঃপাগল হয়ে গেছিস?
জান্নাতঃনা,পাগলি হয়ে গেছি
আমিঃএখন তুই নিচে যা
জান্নাতঃকেনো?
আমিঃমন মেজাজ ভালো নেই।
জান্নাতঃকেউ কিছু বলছে?
আমিঃহুম
জান্নাতঃশুধু নামটা বলেন তারপর আমি দেখাচ্ছি
আমিঃতোর এমন ডায়লগ শোনার টাইম নাই
জান্নাতঃসত্যি বলছি শুধু নাম বলেন
আমিঃতোর বড় আব্বু
জান্নাতঃবড় আব্বু মানে আপনার আব্বু?
আমিঃহুম
জান্নাতঃতাহলে আপনার কাছে ক্ষমা চাই।আমি
বড় আব্বুকে কিছু বলতে পারবো না
আমিঃখুব তো বলছিলি এখন কি হলো
জান্নাতঃআমি কি জানতাম বড় আব্বু
আমিঃহুম।তুই এখন যা
জান্নাতঃঠিক আছে
আর কোনো কথা না বলে জান্নাত চলে যেতে
লাগলো।

ভাইয়ার কথা মনে পড়ে গেলো।আপনারা ভাবছেন
আমার আম্মুই সব থেকে বদমেজাজি। কিন্তু না,
আম্মু একদম বদমেজাজি না।তিনি আমাকে
হারাতে চাই না।নিজের একটা সন্তান হারিয়েছে
তাই নতুন করে আর আমাকে হারাতে চাই না।এজন্য
সব সময় আমাকে শাসন করে।ভাইয়াকে বাসা
থেকে বের করে দিয়েছিলো আব্বু।আব্বুর কাছে
তার জেদ এবং রাগটাই বড় তিনি যেটা সিদ্ধান্ত
নিবেন সেটাই সবার মেনে নিতে হবে।কিন্তু তাই
বলে সব কথায় আব্বু রাগ করবে সেরকম না।
জানিনা ভাইয়াকে কখনো মেনে নিবে কিনা।
ফোনটা বের করে কল দিবো ভাবছি হঠাৎ কারো
কথায় পিছনে ঘুরলাম।
—কাকে কল দেয়া হচ্ছে?
আমিঃতুই এখনো যাসনি?
জান্নাতঃগেলে কি এখানে দাঁড়িয়ে থাকতাম
আমিঃতোকে আমি……
আর কিছু বলার আগেই জান্নাত দৌড়ে নিচে
নেমে গেলো।শুধুমাত্র ওর বাচ্চা বাচ্চা স্বভাবটাই
আমার কাছে ভালো লাগে না।ভাইয়াকে আর কল
দিলাম না।ছাদে আরো কিছু সময় থেকে নিচে
চলে আসলাম।সবার সাথে রাতের খাবার খেয়ে
ঘুমিয়ে গেলাম।

পরেরদিন,,,
বিকে হতেই জান্নাতের রুমে গেলাম।
আমিঃজান্নাত চল
জান্নাতঃকোথায় যাবো?
আমিঃমাওয়াকে খুঁজতে
জান্নাতঃআমি আপনাকে সাহায্য করবো কেনো?
আমিঃতুই আমার চাচ্চুর কিউট মেয়ে তাই
জান্নাতঃথাক পাম দেয়া লাগবে না
আমিঃচলনা প্লিজ
জান্নাতঃআপনি যান আমি আসছি
আমিঃআমি বাইরে অপেক্ষা করছি
জান্নাতঃওকে
বাইরে এসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। প্রায় ৩০
মিনিট হয়ে গেলো এখনো কুত্তীটার আসার নাম
গন্ধ নেই।আবার ভিতরে যাবো ঠিক এমন সময়
জান্নাত বাসা থেকে বের হয়ে আসলো।
আমিঃএতো সময় লাগে রেডি হতে?
জান্নাতঃহুহ।চলেন এখন
আমিঃহুম।গাড়িতে উঠ
জান্নাতঃগাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃরাস্তা ভালো না
আমিঃতাহলে যাবো কি করে?
জান্নাতঃহেটে হেটে
আমিঃঠিক আছে চল।

তারপর দুজন মিলে হাটতে লাগলাম।জান্নাত
একাই পাগলের মতো কথা বলে যাচ্ছে অনিচ্ছা
সত্বেও পেত্নীটার সাথে হ্যা না উত্তর দিতে হচ্ছে।
প্রায় ১৫মিনিট হাটার পর একটা মেয়ের সাথে
আমাদের দেখা হলো যদিও আমি তাকে চিনিনা।
কিন্তু জান্নাত ঠিকি চেনে।
—কিরে জান্নাত কোথায় যাস
জান্নাতঃএইতো সামনে
—উনি কে?
জান্নাতঃআমার বিএফ
ওর কথাশুনে মন চাইছে ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে
মরে যায়।নিজের রাগকে কন্ট্রোল করলাম।
জান্নাতঃদেখেন ও হচ্ছে তানহা,আর তানহা এটা
হচ্ছে আমার বিএফ নিলয়।
তানহার সাথে একটু কথা বলার পর ওর থেকে
বিদায় নিয়ে আবার হাটা ধরলাম।
আমিঃঐ পেত্নী আমি তোর বিএফ লাগি?
জান্নাতঃবিএফই তো
আমিঃদেখ আমাকে রাগাবি না
জান্নাতঃবিএফ এর মানে জানেন?
আমিঃতোকে শিখাতে হবে আমি জানিনা?
জান্নাতঃবিএফ মানে বেষ্ট ফ্রেন্ড।
আমিঃআমি তোর থেকে পাক্কা সাড়ে ৪বছর বড়
তোর সাথে আমার কিসের বেষ্ট ফ্রেন্ড রে
জান্নাতঃবেশি কথা বললে আমি কিন্তু যাবো না
আমিঃএই না না।আমি তো এমনি এমনি বলছিলাম
চল এখন।
জান্নাতঃহুম

আরো কিছু সময় হাটার পড় একটা বাসার সামনে
দুজনে আসলাম। মনের মধ্যে অজানা একটা
ভালোলাগা কাজ করতে লাগলো।এখন মাওয়াকে
দেখতে পাড়বো এটার থেকে আর কি বা ভালো
লাগবে।জান্নাত বাসার দরজাটায় কয়েকবার
টোকা দিতেই ভিতর থেকে দরজা খুলে দিলো।

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here