পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১২

0
845

পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১২
আবির হাসান নিলয়

বাসায় পৌঁছাতেই লক্ষ্য করলাম জান্নাত
চলে আসছে।আসবেই না কেনো নিজের
বার্থডে বলে কথা।সবাই নিচে টুকটাক
কথা বলছে তখন রুমে চলে গেলাম।ভালো
লাগছে না তাদের এমন মিথ্যে ভালোবাসা।
আব্বু আম্মুও কি ভুলে গেছে এই বাসাতে
আমার সাথে কি হয়েছিলো।এসব ভাবতে
ভাবতেই সন্ধ্যা হয়ে গেলো।ফোনটা হাতে
নিয়ে বসে আছি তখন আম্মু আসলো।
আম্মুঃসবাই নিচে আছে,তুই এখানে কি করিস?
আমিঃদেখতেই তো পারছো
আম্মুঃনিচে আয়
আমিঃআমাকে এখানে কেনো এনেছো?
আম্মুঃমানে?
আমিঃআমাকে এখানে কেনো এনেছো,
আদৌ কি আমি তোমাদের সন্তান নাকি
কোথাও থেকে কুড়িয়ে লালনপালন
করছো?আমার তো মনে হয় আমাকে
শুধুমাত্র নিজেদের কাছে রেখে বড় করছো।
সত্যিকার পক্ষে আমি তোমাদের সন্তান না।
আম্মুঃবেশি হয়ে যাচ্ছে নিলয়
আমিঃবেশি আমি না তোমরা করছো।সবটা
সময় তোমরা আমাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছো।
আমার থেকে জান্নাত তোমাদের সবার
কাছে ফেভারিট।
আম্মুঃতোর ছোট বেলার কথা মনে আছে,
যখন জান্নাত অনেক ছোট ছিলো।
আমিঃহ্যা
আম্মুঃকি করতো ছোট বেলায়?
আমিঃলালা ফেলতো আমি কোলে নিলে
আম্মুঃতার আগের কথা মনে আছে?
আমিঃআম্মু আমি তখন ছোট ছিলাম
ওসব মনে রেখে আমি কি করবো?
আম্মুঃআরেকটা প্রশ্ন,জান্নাত যখন
৩মাসের বাচ্চা তখন তোর কিছু
মনে আছে?
আমিঃতোমার এইসব আজাইরা কথা
বাদ দিবা নাকি তাই বলো।
আম্মুঃসবাই নিচে আছে,তুইও আয়।
আমিঃতুমি যাও

আম্মু আর কিছু না বলেই চলে গেলো।
দিন দিন আমাকে বেধে ফেলছে,মনে
হচ্ছে আমার সব কিছুই আছে কিন্তু
সেগুলো দিয়ে নিজেকে চালাতে পারছি না।
আর জান্নাতই বা কে আমার বা আমার
পরিবারে,যার জন্য সবাই আমাকে
এতোটা অবহেলা করছে।আজ ওর
বার্থডে আর আজকেই বলতে হবে।
বসে না থেকে উঠে নিচে আসলাম।
আমাদের বাসা এবং জান্নাতের মামা
বাসা থেকে শুধুমাত্র কয়েকজন এসেছে।
আমাকে নিচে আসতে দেখেই সবাই
চুপ হয়ে গেলো।বুঝতে পাড়লাম
আমাকে নিয়েই কথা হচ্ছিলো।
কিছু না বলে এক পাশে দাঁড়ালাম।
এরপর কেক কাটার জন্য জান্নাতকে
বলতেই দেরি না করে কেক কাটলো।
সবাইকে একে একে খাওয়ানোর পর
এক টুকরো কেক নিয়ে আমার দিকে
এগিয়ে আসলো।
জান্নাতঃনিন
আমিঃআমাকে তোর কি মনে হয়?তোর
কেনা গোলাম?যখন যেটা বলবি সেটাই
আমাকে করতে হবে?আর তোর এই
কেক তুই নিজেই খা।

জান্নাতের থেকে কেক টুকু নিয়ে মুখে
লাগিয়ে দিলাম।
আব্বুঃএসব কি হচ্ছে নিলয়?
আমিঃএখনো কিছু হয়নি।তোমরা
এমন একটা মেয়েকে ভালোবাসো যে
কিনা বাসর রাতে নিজের হাসবেন্ড রেখে
চলে যায়।
ভাইয়াঃজান্নাত তখন ছোট ছিলো
আমিঃআজ সকালেও তো বললি অন্য
কারোর থেকে জান্নাতের বুদ্ধি অনেক
বেশি।তাহলে এখানে ছোট আসছে কেনো?
জান্নাতঃআমি সরি
আমিঃহাহাহা,তোর সরি দিয়ে আমি কি
করবো শুনি?
জান্নাতঃদেখুন আমি তখন একটা মিথ্যা
মহের মধ্যে ডুবে গেছিলাম।
আমিঃঠাসসসস,একটাও মিথ্যা বলবি
না।আমি খুব ভালো করেই জানি তুই
আমাকে না অন্য কাউকে ভালোবাসতি।
তুই শুধুমাত্র আমাকে ব্যবহার করছিস
জেনো তুই বিয়ের রাতে পালিয়ে গেলে
সবাই ভাববে আমি তোর সাথে খারাপ
কিছু করেছি।
আব্বুঃতুই এই মুহূর্তে আমার চোখের
সামনে থেকে যা।
আমিঃযাওয়া তো ওর দরকার।

এটুকু বলেই ছাদে চলে গেলাম।জানিনা
কি হয়েছে আমার,আর কি থেকে কি
বলেছি সেটাও মাথায় আসছে না।হয়তো
অনেকদিনের জমে থাকা কথাগুলোই
নাড়া দিচ্ছে বলার জন্য।

*****জান্নাতের কথা*****
(আম্মু মানে ছোট মা এবং আব্বু
মানে চাচ্চু।এক কথায় জান্নাতের
সব কথাগুলো)
নিলয় উপরে চলে যেতেই জান্নাত
ফ্লোরেই বসে পড়লো। চোখ দিয়ে
অনবরত জল পড়তেই আছে।অনেক
করে কান্না করতে ইচ্ছা করছে কিন্তু
একটা বাধা যার জন্য কিছুতেই পাড়ছে না।
আম্মু এসে বাহুডোরে জড়িয়ে নিয়ে
আমাকে দাড় করালো।
আম্মুঃউঠ মা
জান্নাতঃআম্মু বিশ্বাস করো আমি
ওর সাথে খারাপ করতে চায়নি।ওর
সাথে আমি খারাপ কিভাবে করবো
ওকে যে আমি অনেক বেশিই ভালোবাসি।
তখন আমি মিথ্যা মহে ছিলাম।একটা
মিথ্যাকেই সত্যি মনে করে চলে গেছিলাম।
বড় মাঃকি হয়েছিলো বল?
ভাইয়াঃবিয়ের ক…….
জান্নাতঃভাইয়া তুমি এসব বলবে না।
ভাইয়াঃকিন্তু জান্নাত এসব সবার জানা
দরকার। নিলয় যা করছে মোটেও ঠিক না।
জান্নাতঃনিলয় তো এখনো কিছুই করছে
না।অন্য কেউ হলে অনেক বেশিই খারাপ
আচরণ করতো।
আম্মুঃমা তুই আমাকে বল
জান্নাতঃএসব কাউকে বলতে পাড়বো না।
বড় মাঃযেটা হয়েছিলো সেটা অন্তত
নিলয়কে বল।
জান্নাতঃওর তো দোষ নেই বড় মা।
ভাইয়াঃআমি উপরে যাচ্ছি
জান্নাতঃতুমি থাকো,আমি যাচ্ছি।

কথা না বাড়িয়ে উপরে আসতে লাগলাম।
******নিলয়ের কথা******
অনেকটা সময় আনমনে বসে আছি।
ছাদের সব গুলো বাল্ব দেয়ার জন্য
পুরোটা ছাদ আলোতে ভরে আছে।হঠাৎ
লক্ষ্য করলাম জান্নাত ছাদে আসলো।
কোনো কথা না বলে হাটু গেড়ে সামনে
বসলো।
জান্নাতঃজানেন মেয়েদের কাছে সব
থেকে কষ্টের কি?যখন তার স্বামী অন্য
কোনো মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়াই।
আমি ভুল করেছি,সেটার জন্য আপনি
যা বলবেন আমি সেটাই মাথা পেতে
নেবো।তবুও আমাকে একটিবারের
জন্য আমাকে ক্ষমা করেন।
আমিঃবিশ্বাস কাচের মতো।

শুধু এটুকু বলেই উঠে চলে আসতে
যাবো তখন পেছন থেকে শক্ত করে
জড়িয়ে ধরলো।অনেক বেশিই বিরক্তি
লাগছে এমন ব্যবহারে।
আমিঃজান্নাত ছাড় আমাকে।
জান্নাতঃআগে আপনি আমার সব
কথা শুনুন তারপর ছাড়বো।
আমিঃএবার কিন্তু অনেক রাগ হচ্ছে
জান্নাতঃপ্লিজ কথাগুলো শোনেন,
আমি আপনার পায়ে ধরি প্লিজ
একটা বার শুনুন।

ঝাড়ি মেরে জান্নাতকে ছাড়িয়ে নিয়ে
কষে দুটো থাপ্পড় মাড়লাম।
আমিঃকি শুনবো তোর কথা?তুই
মিথ্যা মহে ছিলি,যদি তুই মিথ্যা মহেই
থাকতি তাহলে তখন কেনো আমাকে
বলিস নাই?
জান্নাতঃভয় কাজ করতো।
আমিঃতুই এমন একটা মেয়ে যার জন্য
আমার পরিবার পর্যন্ত আমাকে মানে
না।টাকার প্রয়োজন হলে তোর থেকে
নিতে হবে কেনো?আমি তো উনাদের
ছেলে তাই না।কিন্তু না,টাকার প্রয়োজন
হলে অফিসের ম্যানেজারের থেকে
নিতে হবে আমাকে।
জান্নাতঃসব কিছুর জন্য সরি আমি
আমিঃবাট তোকে আমি ক্ষমা করিনি।
তুই শুধু আমারই না বরং তুই কোনো
ছেলেরই যোগ্য না।তোর কোনো যোগ্যতা
নেই কারো স্ত্রী হওয়ার।
জান্নাতঃহ্যা আপনি ঠিক বলছেন।আমার
কোনো যোগ্যতা নেই,কিন্তু আপনি একবারো
বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন তখন আপনি
সত্যিকার অর্থে আমাকে ভালোবেসে ছিলেন?
বলতে পারবেন আপনি হ্যাপী থাকার জন্য
আমাকে বিয়ে করে ছিলেন?
আমিঃআজেবাজে কথা বলার টাইম
আমার নেই।
জান্নাতঃআপনার আজ সব বলতে হবে।
আমিঃএকটাও কথা বললে একদম
মেরে ফেলবো।
(গলা টিপে ধরতেই কয়েকবার কাশি
দিলো,বুঝতে পারলাম দম বন্ধ হয়ে
যাচ্ছে।তাই ছেড়ে দিলাম।)
গলায় হাত দিয়ে কয়েকবার জোরে
জোরে কাশি দিলো।
আমিঃকখনো সামনে আসবি না আমার
জান্নাতঃচলে যাচ্ছেন কেনো,একদম
মেরে ফেলুন।তাহলে নিলা বা মিমির
সাথে বিয়ে করতে পাড়বেন।
আমিঃতোকে তো এমনিতেও ডিভোর্স
দিয়ে দেবো।শুধুমাত্র সময়ের ব্যবধান।
জান্নাতঃযদি আমাকে……
আমিঃআর একটা কথা বলবি তো
এখনি ছাদ থেকে ফেলে দেবো।
জান্নাতঃফেলে দিয়ে মেরে ফেল তবুও
আমার কথা তোকে শুনতে হবে।
আমিঃকি শুনবি,আমি তোকে ভালোবেসে
বিয়ে করেছিলাম কিনা?হ্যা তোকে
ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলাম।
জান্নাতঃমিথ্যা,তুই আমাকে না বরং নিজের
জন্য তুই আমাকে বিয়ে করেছিলি।

জান্নাতের এমন কথা শুনে কিছু সময়ের
জন্য চোখ বন্ধ করে রইলাম।
জান্নাতঃকি হলো কথা বলছিস না কেনো?
কিছু না বলে চলে আসতে যাবো তখন
আবার দৌড়ে এসে হাত চেপে ধরলো।
হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে রুমে
চলে গেলাম।মেজাজটা খারাপ করে
দিচ্ছে।কি বা*** একটা কথা পেয়েছে
ভালোবেসে বিয়ে করেছি কিনা।যদি
নাই ভালোবাসতাম তাহলে তুই চলে
যাওয়ার পর পাগলের মতো খুঁজে
বেড়াতাম না।যদি নাই ভালোবাসতাম
তাহলে তোর চলে যাওয়ার কারণ
খোঁজার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতাম না।
আর তুই আজ বলছিস তোকে
ভালোবেসে বিয়ে করছিলাম কিনা।
কিছুই ভালো লাগছে না,রুমের
লাইট বন্ধ করে দিয়ে ঘুমানোর
চেষ্টা করলাম।

*******জান্নাতের কথা********
ছাদ থেকে নিলয়কে চলে যাওয়া দেখে
দৌড়ে হাত ধরলাম।যদি আমার কথাটা
শোনে তাহলে ওকে সব খুলে বলতে
পাড়বো। কিন্তু সেটা আর হলো না।হাত
ধরতেই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।ছাদের
এক কোনে পড়ে থাকা ইটের সাথে হাত
লেগে অনেকটাই কেটে গেলো।ইচ্ছা
করছে ছাদ থেকে লাফ নিয়ে নিজের
জীবনটাকেই শেষ করে দিতে।কিন্তু
আত্মহত্যা মহাপাপ,সেটা ভেবেই
নিজেকে গুটিয়ে নিলো।জান্নাতের
চোখ দিয়ে অঝোর দাড়ায় জল
গড়িয়ে পড়ছে।যাকে সবচেয়ে বেশি
ভালোবেসেছে সেই মানুষটাই দূরে
ঠেলে দিচ্ছে।আর দিবেই বা না কেনো
ওর সাথে যে অনেক বড় অন্যায় করা
হয়েছে।ওড়না দিয়ে অনেকটা সময়
হাত চেপে ধরে বসে থাকলেও কিছু
সময় পর নিজেকে শক্ত করে উঠে
নিচে আসলো।আমাকে নিচে আসতে
দেখেই আম্মু দৌড়ে এসে আমাকে
ধরলো।আমাকে কিছু বলার সুযোগ
না দিয়েই কান্না করে দিলো।
আম্মুঃকি করে হলো এটা?
জান্নাতঃঅন্ধকারে পড়ে গেছিলাম
আব্বুঃকিন্তু ছাদের তো সব লাইট
জ্বালানো। কিভাবে পড়লি?
জান্নাতঃআম্মু এসব বাদ দাও
ভাইয়াঃবাসায় পরিষ্কার করার জন্য
কিছু আছে নাকি হাসপাতালে নিয়ে যাবে?
জান্নাতঃসেটার দরকার নেই,আমি
নিজেই পরিষ্কার করে নেবো।
আম্মুঃআমার সাথে চল
জান্নাতঃআম্মু আমি পাড়বো
আম্মুঃতুই চলতো আমার সাথে

জান্নাতকে জোড় করে নিয়ে রুমে
আসলো।কষ্ট হচ্ছে কিন্তু মুখ খুলে
বলার সাহস নেই,কারণ সেই ছোট
জান্নাত যে আর নেই।এখন অনেক
বড় হয়ে গেছে।স্বামীর ভালোবাসা
পাওয়ার জন্য অনেক সময় তার
থেকে কষ্টও পেতে হয়।এসব ভাবতে
যখন জান্নাত ব্যস্ত তখন তার হাতটা
টান করে পরিষ্কার করে দিচ্ছে।
আম্মুঃনিলয় তোর এই হাল করছে
তাই না?
জান্নাতঃনা আম্মু
আম্মুঃআমার মাথায় হাত রেখে বল
জান্নাতঃআম্মু প্লিজ বাদ দাও এসব
আম্মুঃকেনো করছিস এমন,ও তোকে
কখনো মেনে নিবে না।
জান্নাতঃহয়তো কোনো একদিন মেনে
নিবে আর আমি সেই আশাতেই আছি।
আম্মুঃদেখ মা,নিলয় যেটা করছে সেটা
মোটেও ভুল করছে না।ওর জায়গা অন্য
কেউ হলেও এটাই করতো।কিন্তু তোর
সাথে কি হয়েছিলো যার জন্য তুই ওকে
রেখেই চলে গেছিলি।অন্য কাউকে না
বললি আমাকে অন্তত বল।
জান্নাতঃআমাকে বিশ্বাস করো?
আম্মুঃতোকে না করলে কাকে করবো?
জান্নাতঃতাহলে প্লিজ এসব জানতে চেও
না।যখন সময় হবে তখন সব বলবো।
আম্মুঃআমি চাই,তোর আর নিলয়ের
ডিভোর্স হয়ে যাক।ও তোকে টর্চার
করবে অনেক।
জান্নাতঃএটা ভুলেও মুখে আনবে না।
জানোনা স্বামীর পায়ের তলে স্ত্রীর
আসল সুখ।নিলয়ের যেটা খুশি সেটা
করুক আমি ওর সাথেই থাকতে চাই।
আম্মুঃকিন্তু….
জান্নাতঃকোনো কিন্তু না আম্মু,আমি
এখন এই জব ছেড়ে নিলয়ের বাসায়
বউ হয়ে যেতে চাই।
আম্মুঃনিলয় তোকে মানবে না
জান্নাতঃআমি মানিয়ে নেবো।এখন
তুমি যাও আমাকে একটু বিশ্রাম
করতে দাও।অনেক ক্লান্ত লাগছে।
আম্মুঃকিছু প্রয়োজন হলে ডাকবি
জান্নাতঃহুম

আম্মু কপালে চুমু দিয়ে চলে যাওয়ার
পর রুম আটকিয়ে দিয়ে কান্নায় ভেসে
পড়লো। কান্না করলে নিজেকে নাকি
হালকা লাগে কিন্তু জান্নাত কান্না করেই
চলেছে কিন্তু সামান্যতম হালকা লাগছে
না।নিজেকে অনেক বড় দোষী মনে
হচ্ছে।কেনো যে একটা এসএমএস-কে
সত্যি মনে করে নিলয়কে ছেড়ে এতো
দূরে চলে গেছিলো।সবাই পাশে থাকলেও
নিজেকে অনেক বড় একা লাগছে।
কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে
গেছে মনেই করতে পাড়বে না।

**********নিলয়ের কথা*********
রাতে ভাবি খাওয়ার জন্য ডেকে গেলো।
শুয়ে না থেকে উঠে নিচে আসলাম।
জান্নাত এবং ছোট মাকে দেখতে পাচ্ছিলাম
না।সবাই খাবার সামনে নিয়ে বসে আছে
হয়তো তাদের জন্যই অপেক্ষা করছে।
কিছু সময় পর ছোট মা আসতেই
চাচ্চু জিজ্ঞাস করলো;
চাচ্চুঃজান্নাত কই?
ছোট মাঃঘুমিয়ে গেছে তাই আর ডাকলাম
না।যখন উঠবে তখন খাইয়ে দেবো।
চাচ্চুঃওহ
আম্মুঃতবুও একবার ডাকা দরকার ছিলো
চাচ্চুঃপরে উঠলে নাফিসা খাইয়ে দিবে
সমস্যা নেই ভাবি।সবাই খাওয়া শুরু করো।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে সবাই খেতে
শুরু করলো।সবার মতো আস্তে আস্তে
না খেয়ে দ্রুত খেয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে
গেলাম।

পরেরদিন,,,,,,,,
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে বাইরে এসে
আম্মু আবুকে বললাম বাসায় যাওয়ার
জন্য।কিন্তু চাচ্চু এসে বলল;
চাচ্চুঃনাস্তা করে যাও
আমি কিছু বলার আগেই আব্বু আম্মু
চাচ্চুর কথায় রাজি হয়ে গেলো।সোফার
উপর বসে ফোন টিপছি তখন লক্ষ্য
করলাম জান্নাতের হাতে ব্যান্ডেজ করা।
রাতে আবার হাত কাটছিলো নাকি।
ভাবির থেকে আভাকে কোলে নিয়ে
অনেকটা আস্তে করে বললাম;
আমিঃওর হাতে কি হয়েছে?
ভাবিঃকাল রাতে ছাদ থেকে এমন
হাত কাটা অবস্থাতে নিচে আসছে।
কিভাবে হয়েছে বলে নাই।(রেগে)
আমিঃওহ

বুঝতে পাড়লাম আমার হয়তো ধাক্কাটার
জন্য এমন হয়েছে।এমনিতে সব
সময় ঠিকঠাক কিন্তু মাথায় রাগ
উঠে গেলে কি থেকে কি করে বসি
নিজেরই হুশ থাকে না।জান্নাতের দিকে
ভালো করে লক্ষ্য করতেই খুঁজে পেলাম
তার ঠোঁট কেটে গেছে।এসব দেখতে
অনেক বেশিই খারাপ লাগছিলো কিন্তু
এগুলোর সবটাই ওর প্রাপ্য।নাস্তা করে
সবাই মিলে চলে আসলাম।
এরই মাঝে সপ্তাহ খানেক চলে গেলো।
জান্নাত এখনো তাদের বাসায় আছে।
এদিকে নিয়মিত অফিসে যাওয়া এবং
মিমি,নিলার সাথে সম্পর্কটা দিন দিন
ভালোর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলাম।

অফিস শেষ করে বাসায় এসে রুমে
আসতে লক্ষ্য করলাম বেলকোনিতে
কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে।নীল
শাড়ি পড়ে চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে বাইরের
দিকে তাকিয়ে আছে।

চলবে……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here