পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৩
আবির হাসান নিলয়
বেলকোনিতে কেউ একজন দাঁড়িয়ে
আছে।নীল শাড়ি পড়ে চুলগুলো ছেড়ে
দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃকে?
কথাটা বলার পাশাপাশি কাদ থেকে
ব্যাগ টেবিলে রেখে তাকাতেই দেখলাম
জান্নাত দাঁড়িয়ে আছে।আগের থেকে
অনেকটা শুকিয়ে গেছে।সেদিকে আর
না দেখে ফ্রেস হতে চলে গেলাম।অনেকটা
সময় নিয়ে ফ্রেস হলাম।এখানে আবার
কেনো আসছে কে জানে।বাইরে এসে
দেখলাম সোফার উপর বসে আছে।
আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে গিয়ে কাছে আসলো।
জান্নাতঃকেমন আছো?
আমিঃজেনে কি করবি?
জান্নাতঃজানার অধিকারটা আছে।
আমিঃএকদম নেই
জান্নাতঃনিলয় আমি সরি?
আমিঃদেখ তোর এই ন্যাকা কান্না অন্তত
আমাকে দেখাবি না।
জান্নাতঃভালোবাসি তোমাকে
আমিঃআমি বাসি না।কিছুদিনের মধ্যে
অন্য কাউকে বিয়ে করবো।
জান্নাতঃআমাকে হত্যা করার পরেই
সেটা করতে পাড়বে।
আমিঃমরতে চাইলে করে যা।
জান্নাতঃতুইও তো ভালোবাসিস আমাকে
আমিঃদূরে যা আমার থেকে
জান্নাতঃযাবো না(হাত ধরে)
আমিঃভালোই ভালো বলছি হাত ছাড়
জান্নাতঃভালোবাসার মানুষের হাত
ছাড়তে নেই কখনো।
আমিঃঠাসস,এখন মুখে অনেক কথা
ফুটেছে তাই না।যখন আঘাত করে
চলে গেছিলি তখন ভালোবাসা কোথায়
ছিলো?আবেগময় কথা আমাকে বলবি না।
জান্নাতঃসেসবের জন্য সরি বলেছি।আর
তুই নিজেও তো স্বার্থের জন্য বিয়ে করছিলি।
আমিঃস্বার্থের জন্য বিয়ে করেছিলাম তোকে?
জান্নাতঃহ্যা করেছিলি
আমিঃরুম থেকে বের হো(ধাক্কা দিয়ে)
জান্নাতঃএটা আমারো রুম
আমিঃতোর বাপ রেজিস্টার করা রুম
তাই এটা তোরও তাই না।
জান্নাতঃহ্যা আমার শ্বশুর আব্বার
আমিঃতোকে আমি
ঘাড় ধরে রুমের বাইরে ধাক্কা দিয়ে বের
করে বললাম;
আমিঃচলে যা এখান থেকে না হলে
অনেক বেশিই কষ্ট পাবি।
এটুকু বলেই ভিতর থেকে রুমটা বন্ধ
করে দিয়ে ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে
লাগলাম।কিন্তু ঘুমটাও কেনো জানি
হারামি হয়ে গেছে।কিছুতেই ঘুম আসছে
না।শুয়ে না থেকে উঠে বেলকোনিতে
গিয়ে বসলাম।কিছু সময় চোখ বন্ধ
করতে থাকতেই মনে পড়লো জান্নাতের
কথা।আজ স্বার্থ,সেদিন আমার লাভ..!
কিসব আজেবাজে কথা বলছে।ওকে
যদি আমার স্বার্থের জন্যই ভালোবাসতাম
তাহলে বিয়ের পরেই অন্য কাউকে
এতোদিন বিয়ে করে নিয়ে সংসার করতাম।
সন্ধ্যা হতেই উঠে এসে রুমে আসলাম।
কেমন একটা বিরক্তি লাগছে,মনে হচ্ছে
সব কিছু ছেড়ে ছুরে অন্য কোথাও হারিয়ে
যায়। যেখানে থাকবে না বিরক্তিকর কিছু,
থাকবে না কারো মিথ্যা ভালোবাসা।
একাকী রুমের মধ্যে হাটাহাটি করছি
তখন বাইরে থেকে আম্মু ডাকলো।
আম্মুঃনিলয় বাইরে আয়
আমিঃকেনো?
আম্মুঃতোর আব্বু ডাকছে
আমিঃভালো লাগছে না
আম্মুঃশুনে আয় কি বলে
আমিঃআসছি।
আম্মু চলে যাওয়ার অনেকটা সময়
পর নিচে গেলাম।সবাই আগে থেকেই
বসে ছিলো হয়তো আমার জন্যই এতোটা
সময় অপেক্ষা করে আছে।সোফার
একপাশে বসে বললাম;
আমিঃকিছু বলবে?
আব্বুঃএতো দেরি হলো যে?
আমিঃএমনি
আব্বুঃজান্নাত আজ থেকে এখানে থাকবে
আমিঃকেনো?
আব্বুঃকারণ ও তোর স্ত্রী।
আমিঃওর যেখানে খুশি সেখানে থাক
বাট ও আমার স্ত্রী নয়।
আব্বুঃযেটাই বলিস না কেনো,জান্নাত
তোর স্ত্রী আর তোর সাথেই থাকবে।
আমিঃযদি আমিই না থাকি তাহলে
ও কার স্ত্রী হয়ে এই বাসায় থাকবে।
ভাইয়াঃএবার অনেক বাড়াবাড়ি করছিস।
আমিঃনাহ,তোরা করছিস আমার সাথে।
আম্মুঃদেখ বাবা জান্নাত ছোট ছিলো
ভুল করেছিলো।কিন্তু সেটার জন্য তুই
তো ওর সাথেও খারাপ করছিস।তাই
বাবা ওকে এবারের মতো ক্ষমা করে দে।
আমিঃপ্লিজ আম্মু আমার কাছে এই
ক্ষমা নিয়ে এসো না।ওর প্রাপ্য এটাই।
জান্নাতঃকোনটা প্রাপ্য আমার হ্যা?
তোকে ভুল বোঝা যদি আমার দোষ
হয় তাহলে তুইও দোষী।যখন আমাকে
পিচ্চি পিচ্চি বলে তাড়িয়ে দিতিস তখন
তো ভালোবাসার কোনো মানে ছিলো
না।সবটা সময় তোর পিছু পিছু ছিলাম।
যেখানে কেউ আমাকে আজ অবধি
মারেনি সেখানে তুই আমাকে……
এটুকু বলেই দম ফেললো।খানিকটা
সময় চুপ থাকার পর আবার বলল;
জান্নাতঃযখন সেই পিচ্চিটা তোর
জন্য সব কিছু করতো কিন্তু তখন
তোর ভালোবাসা কই ছিলো?তখন
তো তুই নিজেও অনেক ভুল করতি
কই আমি তো সেটা ধরে রাখিনি।
কখনো তো বলিনি তুই আমার সাথে
অনেক খারাপ করছিস।কারণ আমি
তোকে ভালোবাসতাম আর এখনো
ততোটুকুই ভালোবাসি।তোর যেটা
খুশি সেটা কর আমার সাথে কিন্তু
শুধুমাত্র তোর সাথে আমাকে থাকতে
দে।তোকে ছাড়া আমি বাচতে পারবোনা।
আর কোনো কথা না বলে মাথা নিচু
করে চোখের জল ফেলতে লাগলো।
মেয়েরা আর যাই পারুক না পারুক
কান্না করে চোখেরজল ফেলতে ঠিকি
পাড়ে। কিছু না বলে উপরে আসতে
যাবো তখন ভাইয়া বলল;
ভাইয়াঃতোকে যেতে বলছি?
আমিঃথেকে কি করবো?
ভাইয়াঃআজ থেকে তোরা দুজন
এক সাথে থাকবি।আর এটাই
আমাদের সবার সিদ্ধান্ত।
আমিঃযদি তোর সাথে এটা হ…….
আর কোনো কথা বলার আগেই
পকেটে থাকা ফোনটা বেজে উঠলো।
বের করে দেখলাম মিমি কল দিছে।
আমিঃহ্যা মিমি বলো
মিমিঃকাল দেখা করতে পাড়বে?
আমিঃহ্যা,কোথায় দেখা করবো?
মিমিঃসকালে এসে…..
আর কিছু শোনার আগেই ভাবি
এসে ফোনটা কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে
ছুরে মারলো।মেজাজটা একদম
খারাপ হয়ে গেলো।
আমিঃআমার ফোন ভাঙলে কেনো?
ভাবিঃতুই মিমি বা অন্য কোনো মেয়ের
সাথে ফোন আলাপ কিংবা কথা বলতে
পাড়বি না।শেষ বারের মতো সাবধান করছি।
আমিঃতাই বলে তোমার ফোন ভাঙতে হবে?
আম্মুঃহ্যা হবে,ছোট্ট একটা মেয়ে ভুল
করেছে আর তুই সেটা নিয়েই পড়ে আছিস।
আমিঃযখন সেই ছোট মেয়েটা ভুল করেছিলো
তখন তুমিও এমনটাই করেছিলে।
আম্মুঃতখন আমার মাথা ঠিক ছিলো না
আমিঃআর আমার মাথা এখনো ঠিক নেই।
ভাইয়াঃজান্নাত তুই রুমে যা
কোনো কথা না বলে চুপচাপ রুমে
যাবে তখন ভাইয়া আবার বলল;
ভাইয়াঃনিলয়ের রুমে যা
আমিঃআমার রুমে কেনো?
ভাইয়াঃকারণ এখন থেকে তোরা
একসাথে থাকবি।
মেজাজটা দিন দিন একদম খারাপ
করে দিচ্ছে।কিছু না বলে সেখানে
থেকে চলে এসে একদম ছাদে আসলাম।
দিন দিন এব কিছু কেমন হয়ে যাচ্ছে।
সবাই কি আদৌ আমার থেকে কিছু
লুকাচ্ছে?জান্নাত নিজেও বার বার
বলে আমি ওকে স্বার্থের জন্য বিয়ে
করেছিলাম।দোলনায় বসে কতোটা
সময় ছিলাম মনে নেই।
ছাদ থেকে নেমে রুমে আসলাম।
জান্নাত আগে থেকেই রুমে ছিলো।
আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল;
জান্নাতঃসবাই ডিনার করেছে।তোমাকে
তখন ডাকলেও কোনো রেসপন্স দাও
নাই তাই তোমাকে রেখেই সবাই করেছে।
আমিঃতো?
জান্নাতঃপ্লেটে খাবার এনেছি,খেয়ে নাও
আমিঃদেখ তুই চলে যা এখান থেকে।
তোকে আমি বিন্দুমাত্র আর ভালোবাসি না।
জান্নাতঃমিথ্যার আড়ালে যে ভালোবাসা
বেচে আছে সেটার জন্য অপেক্ষা করছি।
আমিঃআমাকে তোর মিথ্যুক মনে হয়?
(বাম হাত দিয়ে গলা ধরে)
জান্নাতঃনা,কিন্তু এটা মিথ্যা
আমিঃবিরক্তি করিস না,ঘুমাবো।
জান্নাতঃখাবার খেয়ে নাও
আমিঃতোরটা তুই খা
কিছু না বলে বিছানা ঠিক করে
ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।অনেকটা
সময় পর লক্ষ্য করলাম জান্নাত
আমার পাশেই ঘুমানোর চেষ্টা করছে।
আমিঃঅন্য কোথাও ঘুমা,না হলে
লাথি মেরে বিছানা থেকে ফেলে দেবো।
জান্নাতঃফ্লোরে আমার ঘুম হয়না
আমিঃঅন্য রুমে যা
জান্নাতঃভাইয়া তো তখন বললো
আমিঃরুম আমার নাকি তোর ভাইয়ার
জান্নাতঃআর কতোবার ক্ষমা চাইতে হবে?
(উঠে এসে হাত ধরলো)
আমিঃবার বার স্পর্শ করতে বলে কে?
তোর জন্য আমার আজ ফোন চলে
গেছে।সর এখান থেকে(ধাক্কা দিয়ে)
জান্নাতঃতুই অনেক খারাপ করছিস
আমিঃজানি আমি,আর তুই এটা বল।
কোন স্বার্থের জন্য আমি তোকে
বিয়ে করেছিলাম?
জান্নাতঃ…….(চুপ করে আছ)
আমিঃকি হলো বল
জান্নাতঃবলতে পাড়বো না আমি।
আমিঃকেনো,খুব তো বলিস আমি
তোকে স্বার্থের জন্য বিয়ে করেছিলাম।
তো আমার কি লাভ হয়েছে বিয়ে করে?
জান্নাতঃফ্লোরে ঘুমাচ্ছি আমি
আমিঃযেতে বলছি তোক?(হাত ধরে)
জান্নাতঃএসব নিয়ে আমি কথা
বলতে একদম চাই না।
আমিঃতুই এখন বলবি
জান্নাতঃনিলয় হাত ছাড়ো ব্যথা লাগছে
আমিঃঅনেক বেশি ব্যথা দরকার
জান্নাতঃছাড়ো প্লিজ(কাঁদোকাঁদো হয়ে)
আমিঃখুব তো বলিস স্বার্থ,তাহলে
এখন কেনো বলছিস না?
জান্নাতঃইচ্ছা নেই
অন্য হাত দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বিছানা
থেকে একটা বালিশ এবং চাদর নিয়ে
ফ্লোরে ঘুমানোর চেষ্টা করলো।ইচ্ছা
করছে বালিশ চেপে মেরে ফেলি।
এপাশ ওপাশ দেখতেই চোখে পড়লো
জান্নাতের ফোন।ফোনটা হাতে নিয়ে
ভিতরে ঢুকতে যাবো তখন দেখলাম
ফোনে প্যাটার্ন দেয়া।মেজাজটা আরো
বেশি খারাপ হয়ে গেলো।একবার
ঢিল মেরে ভাঙার জন্য ইচ্ছা করলেও
পরে রেখে দিলাম।চোখ বন্ধ করে
ঘুমানোর জন্য চেষ্টা করলাম।
********জান্নাতের কথা*******
বিছানা থেকে একটা বালিশ আর
চাদর নিয়ে ফ্লোরেই ঘুমানোর জন্য
কোনোরকম বিছানা পারলো।অনেক
কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কিছুই করার নেই।
সব কিছু তো সহ্য করতেই হবে।
জানিনা নিলয় কবে তার কাছে টানবে
হয়তো কখনো আমাকে তার কাছে
ফিরে নাও নিতে পাড়ে।চোখেরজল
কেমন জানি বাধ মানে না।না চাইতেও
চোখ দিয়ে জল পড়ে। অনেকটা
সময় নিজের মনের সাথে কথা বলে
উঠে বসলো।ছোট বেলা থেকে
অনেকবার ফ্লোরে ঘুমাতে চেষ্টা করেছে
কিন্তু কখনো ঘুমাতে পারেনি।একদিন
যদিও ঘুমাইছিলো কিন্তু পরেরদিন
ঠাণ্ডা লেগে যায়।কিছু সময় নিলয়ের
দিকে তাকিয়ে থেকে বেলকোনিতে
চলে গেলো।উদ্দেশ্য রাতটা কোনো
ভাবে পাড় করতে হবে।
কিন্তু একা একা রাত পাড় করা কোনো
ভাবেই সম্ভব না।বেলকোনিতেই অনেকটা
সময় থাকার পর রুমে এসে সোফার
উপর ঘুমানোর চেষ্টা করলো।কিছুটা
সময় ঘুমানোর পরেই আবার ঘুম
ভেঙে যাচ্ছে।তবুও কোনোভাবে
ঘুমানোর বার বার চেষ্টা করছে।
পরেরদিন,,,,,,,,,
ঘুম থেকে উঠে লক্ষ্য করলাম জান্নাত
সোফার উপর মাথা নিচু করে বসে
আছে।হয়তো কিছু ভাবছে।সেদিকে
না দেখে বাথরুমে চলে গেলাম।চেঞ্জ
হবো তখন বেশ অবাক হলাম।যাওয়ার
সময় দেখে গেলাম সোফার উপর বসে
আছে, আর এখন দেখছি বিছানার
উপর শুয়ে আছে।কাহিনী কেমন
একটা লাগলেও এসব না ভেবে চেঞ্জ
হয়ে নিচে চলে আসলাম।ডাইনিং
টেবিলে বসতেই আব্বু বললো;
আব্বুঃজান্নাত কোথায়?
আমিঃঘুমাচ্ছে
আব্বুঃডাকলি না?
আমিঃনা
আম্মুঃডাকলেও পারতিস
আমিঃতোমাদের এতো দরকার হয়
তোমরা নিজেরাই ডেকে দাও।
ভাবিঃআম্মা আমি যাচ্ছি
আম্মুঃহ্যা যা
কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো।রাতে
খাওয়া হয়নি তাই অনেক ক্ষুধা পেয়েছে
সবাই জান্নাতের জন্য অপেক্ষা করলেও
টেবিল থেকে খাবার বেরে নিয়ে আমি
নিজে নিজেই খাচ্ছি।কিছুক্ষণ পর
ভাবি একা একাই ফিরে আসলো।
ভাইয়াঃকি বললো?
ভাবিঃঘুমাচ্ছে
আম্মুঃডাকলি না?
ভাবিঃবললো ভালো লাগছে না,আর
মাথা নাকি ব্যথা করছে।বললাম কিছু
খেয়ে মেডিসিন খেয়ে নে।বলে,পড়ে
খেয়ে নিবে।তাই আর কিছু বলিনি।
ভাইয়াঃএকটু পর তুমি কিংবা আম্মু
যেকোনো একজন গিয়ে ডেকে খাইয়ে
দিয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিবে।
তাদের কথা মাঝে কিছুই বললাম
না।চুপচাপ শুনে যাচ্ছিলাম। খাওয়া
শেষ করে রুমে এসে রেডি হওয়ার
পাশাপাশি বললাম;
আমিঃএতো ঢং না করলেও চলে।
কথা বলে অনেকটা সময় চুপ
থেকেও কোনো উত্তর পেলাম না।
কাছে গিয়ে দেখলাম গভীর ঘুমে
ব্যস্ত আছে।জোরে ধাক্কা দেয়ার
পাশাপাশি একটু জোরে বললাম;
আমিঃডাকছি কানে যায় না?
ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে বসলো।
হাত দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে
আমার দিকে মায়া ভরা চাহনিতে
কিছু সময় তাকিয়ে রইলো।আচমকা
ঘুমের মাঝে এমনটা আশা করেনি
হয়তো।কপালে ভাজ থাকা সত্ত্বেও বলল;
জান্নাতঃকিছু বলছো?
আমিঃভাবি ডেকে গেলো যাসনি কেনো?
জান্নাতঃএমনি ভালো লাগছে না
আমিঃসবার কাছে আমাকে খারাপ
করার জন্য নাটক হচ্ছে তাই না।
জান্নাতঃতুমি সবটা সময় আমাকে
ভুল বুঝো(কাঁদোকাঁদো স্বরে)
আমিঃআমার সাথে নাটক করবি না।
চুপচাপ নাস্তা করে নে,নাহলে সবাই
ভাববে আমি তোকে নাস্তা করতে দেয়নি।
জান্নাতঃভাবিকে বলছি,ভালো লাগছে
না।পরে খেয়ে নেবো,রাতে ঘুম হয়নি
তাই দয়া করে একটু ঘুমাতে দেন।
কিছু না বলে রেডি হয়ে রুম থেকে
বের হবো তখন খেয়াল করলাম
আবার ঘুমিয়ে গেছে।দাঁড়িয়ে না
থেকে বাসা থেকে বের হয়ে বাইক
নিয়ে অফিসে চলে এলাম।অন্যান্য
স্টাফরা আসলেও ভাইয়া এখনো
আসেনি।হয়তো আমার নামে সবাইকে
কথা শোনাচ্ছে।অফিসের এদিক
ওদিক ঘুরাফেরা করছি তখন নিলার
কথা মনে হতেই ওর কাছে গেলাম।
আমিঃকি খবর?
নিলাঃকথাই তো বলো না এখন
আমিঃকাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি যে
নিলাঃআমিও তো কাজ করি,তবুও
তো খোজ নেয়।
আমিঃঅনেক প্যাড়া গো
নিলাঃওহ
আমিঃকফি?
নিলাঃএখন?
আমিঃহ্যা,কোনো সমস্যা?
নিলাঃনা
আমিঃতাহলে চলো।
নিলাকে সাথে নিয়ে দুজন পাশাপাশি
বসে কফি শেষ করে যে যার মতো
নিজেদের ডেস্কে চলে গেলাম।অনেকটা
সময় হয়ে গেছে।হঠাৎ ভাইয়া এসে
বললো;
ভাইয়াঃগত কাল যে তোর কাছে
কিছু পেপার দিলাম সেগুলো কই?
ডেস্কে খেয়াল করে দেখলাম ব্যাগ
আনা হয়নি।
ভাইয়াঃপেপার গুলো দে,ক্লাইন্ড
খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে।
আমিঃআনা হয়নি
ভাইয়াঃমানে?
আমিঃবাসায় ঐসব প্যাড়ার জন্য
খেয়াল নেই আনার কথা।
ভাইয়াঃমাথায় কি থাকে,কিছু সময়
পর ক্লাইন্ড চলে আসবে আমার ভাই।
আমিঃআমি নিয়ে আসছি
ভাইয়াঃসাবধানে যাবি,আমি উনাদের
কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলবো।
আমিঃওকে
ভাইয়াঃআস্তে চালাস বাইক
কোনো উত্তর না দিয়ে দ্রুত অফিস
থেকে বের হয়ে বাইক নিয়ে বাসার
দিকে রওনা দিলাম।
সবাই নিচে বসে থাকায় জিজ্ঞাস
করলো,কি হয়েছে?
কাউকে কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা
রুমে চমে আসলাম।টেবিল থেকে
ব্যাগটা হাত নিয়ে পেপারগুলো
দেখছি তখনি জান্নাত বলল;
জান্নাতঃকি হয়েছে?
কিছু না বলে সব গুলো পেপার
দেখতেই ব্যস্ত রইলাম।
জান্নাতঃকিছু বললে না যে?
আমিঃচোখ নাই কি করছি?
জান্নাতঃহঠাৎ করে বাসায় চলে
আসলে তাই বললাম।
আমিঃভুলে রেখে গেছিলাম তাই
নিতে আসছি।ভাগ এখান থেকে।
জান্নাতঃওহহহ
কোনো কথা না বলে ব্যাগটা নিয়ে
দ্রুত অফিসের দিকে রওনা দিলাম।
চলবে…………