পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৫
আবির হাসান নিলয়
ডাক্তার এসে জান্নাতকে দেখে বলল;
মাসুমঃবেশ কয়েকদিন ধরে মানসিক চিন্তা
এবং ঠিকমতো না খাওয়ার জন্য এমন
হয়েছে।নিয়মিত খেতে বলুন।
আম্মুঃকোনো সমস্যা তো হয়নি?
মাসুমঃনা ম্যাডাম
আব্বুঃঔষধ লিখে দিবে না?
মাসুমঃস্যার এটা তো কোনো অসুখ না।যে
ঔষধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে।
আম্মুঃতাহলে কি করতে হবে?
মাসুমঃদিনে কম করে হলেও ২০-২৫ মিনিট
মেডিটেশন ব্যায়াম করতে বলুন।
আব্বুঃমেডিটেশন ব্যায়াম…!
ভাবিঃআব্বু আমি আপনাকে পরে
বুঝিয়ে বলবো এই ব্যায়াম কি।আর
কি করতে হবে ডাক্তার?
মাসুমঃনিয়মিত খাওয়া দাওয়া করতে বলুন
এবং সময় দিন জেনো একা একা না লাগে।
ভাইয়াঃঠিক আছে।
মাসুমঃআর এখন ঘুমাতে দিন।অনেক সময়
ঘুমের জন্যও এমন হয়।তাই এখন ডিস্টার্ব
না করে সবাই বাইরে গিয়ে কথা বলুন।
আর স্যার আমি যাচ্ছি।
আব্বুঃঠিক আছে,আর তোমার আব্বু
এখন কেমন আছে?
মাসুমঃআমি ডাক্তার হয়ে জয়েনিং করার
পরপরই আব্বু অবসর নিছেন।বয়সটাও
অনেক হয়েছে
আব্বুঃএকদিন আসতে বলো
মাসুমঃআচ্ছা আঙ্কেল,আর আজ আসি।
আব্বুঃনিলয় এগিয়ে দিয়ে আয়
আমিঃওকে
রুম থেকে বের হতেই মাসুম বলল;
মাসুমঃনিলয় মেয়েটা কে?
আমিঃকেনো?
মাসুমঃগলার এখান দিয়ে দেখলাম
মারের চিহ্ন।
আমিঃএতোদিন স্ত্রী ছিলো,কিন্তু
আজ ডিভোর্স দিয়ে দিছি।
মাসুমঃকেনো?
আমিঃভাই তোর এসব জেনে লাভ নাই।
মাসুমঃসেটা ঠিক পারিবারিক ব্যাপার।
তবে একটু সময় দিস।একাকী কি করে
বসবে বলা তো যায়না।
আমিঃভাই ও কি মরবে না?
মাসুমঃআজেবাজে কথা বলা বাদ দে।
না হলে এখনি আঙ্কেলকে সব বলে
দেবো।সময় থাকতে সবার মর্যাদা দে।
পরে আর সময় পাবি না।
আমিঃহুম।
মাসুমঃযা সবার সাথে ওকে সময় দে।
এখন আমি যাই।
আমিঃসাবধানে যাস ভাই।
মাসুমঃহুম
মাসুম ভাই চলে যাওয়ার পর রুমে
আসলাম।জান্নাতকে রেখে সবাই
নিচে চলে গেছে।দাঁড়িয়ে না থেকে
ফ্রেস হতে চলে গেলাম।অনেকটা
সময় নিয়ে ফ্রেস হলাম।কেমন একটা
অস্বস্তিকর লাগছে।ফ্রেস হয়ে রুম
এসে দেখলাম জান্নাত বসে আছে।
আমিঃএখন কেমন লাগছে?
জান্নাতঃভালো
আমিঃতোর সাথে কিছু কথা ছিলো
জান্নাতঃহ্যা বলো
আমিঃএখন না,ঘুমের সময় বলবো।
জান্নাতঃওহহ।
আমিঃহুম
জান্নাতঃএকটা কথা বলি?
আমিঃবল
জান্নাতঃআমি কি অনেক বড় অপরাধ
করেছিলাম?যার জন্য আমাকে এতোটা
শাস্তি পেতে হচ্ছে?
আমিঃতোর প্রতি এখন আমার….
ভাবিঃখেতে চল
আমিঃহ্যা আসছি
ভাবিঃজান্নাত চল আমার সাথে
ভাবি জান্নাতকে নিয়ে যাওয়ায়ার
পর আমিও আসলাম।জান্নাত
হালকা করে খেতে চাইলেও আম্মুর
বকা শুনে অনেকটাই খেলো।
*****ঘুমানোর সময়*******
জান্নাত রুমে এসে একটা বালিশ নিয়ে
সোফার উপর যেতেই বললাম;
আমিঃডাক্তার এসে ঘুমানোর জন্য
বলেছে।তোর তো আবার এমন
অবস্থাতে ঘুম হয় না।আমাকে দে
ওখানে আমি ঘুমাবো।
জান্নাতঃআমি ঘুমাতে পাড়বো
আমিঃদিতে বললাম না।
জান্নাতঃহুম
জান্নাতের থেকে বালিশটা নিয়ে
সোফার উপর বসলাম।
আমিঃতোর ফোনটা নিলাম
জান্নাতঃহ্যা।
কিছুটা সময় জান্নাতের ফোন দিয়ে
অনলাইনে গেলাম।অনেকটা দিন
অনলাইনে আসা হয়না।কিন্তু এসে
অনেক বেশি অবাক হলাম।রাফি
বিয়ের পিক আপলোড করছে।কিন্তু
সালা আমাদের একবারের জন্যও
বললো না ও বিয়ে করছে।ফোনটা
হাতে নিয়ে দ্রুত সালাকে কল দিলাম।
আমিঃসালা তুই বিয়ে করলি একটা
বারের জন্যও বললি না?
রাফিঃবাসা থেকে ঠিক করছিলো আর
হুট করেই এসব হয়েছে।
আমিঃকিন্তু তুই তো প্রিয়াকে ভালোবাসিস।
রাফিঃতুই আর জান্নাতও একে অপরকে
ভালোবাসতি।কিন্তু তোদের শেষ পরিণত
কি হলো “ডিভোর্স”।
আমিঃআমার আর তোদের বিষয় আলাদা
রাফিঃকোথায় আলাদা?
আমিঃআলাদা না?
রাফিঃনা,তুইও ভালোবেসেছিলি আমিও
ভালোবেসে ছিলাম।
আমিঃওকে,আর অভিনন্দন নতুন
জীবনের জন্য।
রাফিঃধন্যবাদ
আমিঃবাই
রাফিঃবাই
ফোনটা কেটে দিয়ে জান্নাতের দিকে
লক্ষ্য করলাম বেলকোনিতে দাঁড়িয়ে
বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃঘুমাবি না?
জান্নাতঃআপনি ঘুমান
আমিঃএদিকে আসবি একটু?
জান্নাতঃবলেন
আমিঃহয়তো আমাদের একসাথে
থাকা ভাগ্যে নেই।কিন্তু তুই চাইলে
তোর পাশে আমি সারাজীবন একটা
ভালো শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে থাকতে পাড়ি।
জান্নাতঃএটাই কি আমার শাস্তি?
আমিঃশাস্তি কেনো হবে?
জান্নাতঃতাহলে আপনি কেনো আমার
সাথে এমনটা করলেন?
আমিঃতোর প্রতি এখন আমার একটুও
ভালোবাসা নেই।
জান্নাতঃভালোবাসা কি?
আমিঃভালোবাসার আবার কি?এক
অমৃত,যাকে ছোঁয়া যায়না।
জান্নাতঃআর কিছুই কি না?
আমিঃগুড নাইট
জান্নাতঃশুনুন
আমিঃকি
জান্নাতঃডিভোর্স পেপার কোর্টে জমা
দেয়ার সময় আমাকে একবার কল দিয়েন।
আমিঃওকে
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ঘুমিয়ে
গেলাম।রাত অনেক হয়েছে,না হলে
পরে দেখা যাবে সকালে ঘুম থেকে
দেরি করে উঠতে হবে।
পরেরদিন,,,,,,,,,
নাস্তা করে রেডি হয়ে বাসা থেকে বের
হবো তখন জান্নাত পেছন থেকে ডাকলো।
জান্নাতঃএকটা কথা বলার ছিলো।
আমিঃহ্যা বল
জান্নাতঃলাস্ট রিকুয়েস্ট বলতেও পারেন।
কারণ এরপর থেকে তো আর কখনো
কোনো আবদার করতে পাড়বো না।
আমিঃবল কি আবদার।
জান্নাতঃএকবার জড়িয়ে ধরবেন?
আমিঃজান্নাত…
জান্নাতঃশেষ অনুরোধ,প্লিজ ?
কাছে টেনে শক্ত করে বাহুডোরে আঁকড়ে
নিলাম।কিন্তু পরক্ষণেই কেমন একটা
মায়া পড়তেই ছেড়ে দিলাম।চাইনা আর
কোনো নতুন মায়াতে জড়াতে।ছেড়ে দিয়ে
দাঁড়াতেই বলল;
জান্নাতঃধন্যবাদ
আমিঃহুম,আসছি এখন।
বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমেই কোর্টে
গেলাম।ডিভোর্স পেপার মাহমুদ সাহেবকে
জমা দিয়ে চলে আসলাম।ভাইয়া আজ
অফিসে আসেনি।আনমনে কাজ করছি
তখন মেসেজ আসলো;“জমা দিয়েছেন?”
মেসেজটা দেখে জান্নাতকে কল দিলাম।
আমিঃহ্যালো
জান্নাতঃজমা দিয়েছেন?
আমিঃহ্যা
জান্নাতঃওকে
আমিঃকিছু বলবি?
জান্নাতঃনা
আমিঃতাহলে বার বার কি শুনছিস?
জান্নাতঃরাখছি
আমিঃব…..
কিছু না বলে কল কেটে দিলো।আমিও
আর এসব না ভেবে কাজে মন দিলাম
ভাইয়া আসেনি তাই সামলাতে আমাকেই
হচ্ছে।আর নিলা জেনে গেছে আমি শুধু
একজন স্টাফ নয়।বরং এমডি স্যারের
ছোট ছেলে।এটা জানার পর থেকেই
আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলে না।
কেনো বলে না সেটা জানি না।সেই
যাই হোক,কাজ করছি তখন নিলা
আসলো।
নিলাঃস্যার আসবো?
আমিঃহ্যা আসো।আর স্যার করে
বলছো কেনো?
নিলাঃআপনি স্যার তাই।
আমিঃআমি তো তোমার সাথে
রিলশনে যাওয়ার জন্য ওসব
বলছিলাম।
নিলাঃবাট আমি মিথ্যা পছন্দ করি না
আমিঃএখন তো সত্যিটা জানো
নিলাঃবাট মিথ্যা তো বলছিলেন
আমিঃওকে,আমি সরি।এখন বলো
কিছু বলবে?
নিলাঃবড় স্যার আসেনি,কিন্তু এখানে
একটা সাইন লাগবে।
আমিঃকিসের প্রোজেক্ট?
নিলাঃকিছু সোয়েটার বিদেশে যাবে
সেটার জন্য বলা হয়েছিলো।
আমিঃসোয়েটার আবার কেনো?
নিলাঃসপ্তাহ খানেক আগে থেকে
স্যার এটা যোগ করেছেন।
আমিঃওহ,দাও
ফাইলটা নিয়ে দেখার পর সাইন করে
নিলার দিকে এগিয়ে দিলাম।
আমিঃবন্ধু হতে পাড়ি?
নিলাঃএকদম না,আপনি অনেক
বেশি মিথ্যা বলেন।
আমিঃইশশ,কষ্ট পেলাম।
নিলাঃআসছি
আমিঃশোনো তো
নিলাঃবলেন
আমিঃআজ কিন্তু অনেক কিউট লাগছে
নিলাঃপাম দিতে হবে না
আমিঃসত্যি বললাম,এখন যদি
তুমি পাম মনে করো।তাহলে আর কি…।
নিলাঃযাবো স্যার?
আমিঃযেতে না দিলে এখানেই থাকবে?
নিলাঃআপনি বস,আপনি যা বলবেন
সেটা তো আমাকে করতেই হবে।
আমিঃঠিক আছে,আপনার এখন
ইচ্ছা।হয় বসুন না হলে ডেস্কে যান।
নিলাঃবাই
কথা না বলে তাড়াতাড়ি করে কেবিন
থেকে বের হয়ে গেলো।এই মেয়ের
আবার কি হলো কে জানে।অফিস
শেষ করে বাসা আসবো তখন একটা
মেয়ে হুট করেই গাড়ির সামনে এসে
পড়লো।হুট করেই আসার জন্য ব্রেক
ঠিকমতো করতে না পারাই গাড়ির
সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলো।
মেজাজটা একদম খারাপ হয়ে
গেলো।আশেপাশে থাকা কিছু লোকজন
দৌড়ে এসে গাড়ির গ্লাস থাপড়ানো
শুরু করছে।ভিতরে না থেকে গাড়ির
বাইরে এসে বললাম;
আমিঃকি হয়েছে,এমন গ্লাস থাপড়ানোর
কি আছে এখানে?
—একে তো এক্সিডেন্ট করছেন এখন
আবার জোর গলাই কথা বলছেন?
আমিঃআমি ইচ্ছা করে করেছি?এখানে
যদি ক্যামেরা লাগানো থাকে তাহলে
সেগুলো দেখুন।আর উনাকে নিয়ে
আমি হাসপাতালে যাচ্ছি।
অনেকেই অনেক কথা বলছিলো
কিন্তু সেসব কান না দিয়ে মেয়েটাকে
গাড়িতে তুলে দ্রুত হাসপাতালের
দিকে নিয়ে গেলাম।বেহুঁশ হয়ে আছে,
লক্ষ্য করলাম অনেক জায়গা কেটে
গেছে।এসব নে ভেবে তাড়াতাড়ি
হাসপাতালে গিয়ে কোলে নিয়ে
ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেলাম।সেখানে
নিয়ে যেতেই নার্স একটা রুমে
নিয়ে গেলো।হয়তো হাসপাতালে
এডমিট করতে হবে।মেয়েটার প্রতি
অনেক বেশিই রাগ হচ্ছে।মরবি মর
আমার গাড়ির সামনে এসেই কেনো
তোর মরতে হবে।সালা মরলে না
জানি কোন মামলা খেতে হয়।
—স্যার আপনাকে একটু আসতে হবে
আমিঃহ্যা চলুন
উনার পিছু পিছু আসলাম।
—মেয়েটা আপনার কি হয়?
আমিঃকিছুই না
—তাহলে তো পুলিশ কেস করা লাগবে।
আমিঃভাই আর প্যাঁড়া দিয়েন না।
হুট করেই গাড়ির সামনে আসাই
ব্রেক করতে দেরি হয় তাই এমন
হয়েছে।কি করতে হবে আমাকে বলেন।
—ফরম পূরণ করতে হবে।
আমিঃনামটাই তো জানি না।
—যেকোনো নাম দিয়ে চালিয়ে নেন।
না হলে পরে সমস্যায় পড়তে পাড়েন।
আর কোনো আত্মীয়র পরিচয় দিয়েন।
আমিঃওকে
লোকটা চলে যাওয়ার সময় একটা
ফরম দিয়ে গেলো।নাম ঠিকানা
কিছুই জানা নেই।কোনো নাম না
পেয়ে প্রিয়ার নাম দিয়ে দিলাম
সাথে প্রিয়ার সব পরিচয়। ফরম
পূরণ করে জমা দিয়ে রুমের বাইরে
ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করলাম।
অনেকটা সময় বাইরে অপেক্ষা করার
পর ডাক্তার বাইরে আসলো।
আমিঃএখন কি অবস্থা?
—কে হয় উনি আপনার?
আমিঃফ্রেন্ড
—উনার ভাগ্য ভালো মাথাটা রাস্তায়
পড়েনি।পড়লে হয়তো অনেক আগেই
উপরে চলে যেতো।
আমিঃভাগ্য উনার না,ভাগ্য আমার ভালো।
দেখা করতে পাড়বো?
—এখনো জ্ঞান ফেরেনি। জ্ঞান ফিরলেই
আপনি দেখা করতে পারবেন।
আমিঃভিতরে যাওয়া যাবে?
—জ্বি
আমিঃধন্যবাদ
ডাক্তারের সাথে কথা বলা শেষ করে
রুমে চেয়ারটা টেনে বসলাম।দেখতে
অনেকটাই জান্নাতের মতো।তখন
খেয়াল করেনি তবে এখন দেখছি
পুড়াই জান্নাতের মতো।বয়স পিচ্চিটার
থেকে ২-১বছর কম বা বেশি হবে।
চেহারার গঠন একইরকম। ভালো
করে লক্ষ্য করে দেখলাম বাম হাতটা
অনেক কেটে গেছে।ডাক্তার অনেকটা
জায়গা মিলে ব্যান্ডেজ করেছে।কপাল
ভালো টপকে যায়নি,গেলে এতোক্ষণে
জেলে থাকতে হতো।এসব ভাবতে ভাবতে
কখন যে চোখটা লেগে এসেছে টেরই
পায়নি।কারো হালকা আওয়াজে
চোখ খুলে দেখলাম মেয়েটা ধীরেধীরে
আমাকে ডাকছে।
আমিঃকিছু বলবেন?
—……..(কিছু একটা বললো)
আমিঃকি বললেন?(এগিয়ে গিয়ে)
—আপনি কে?
আমিঃযার গাড়িতে মরতে চেয়েছিলেন
সেটাই আমি।
—সরি,আসলে আমার খেয়ালটা
অন্য কোথাও ছিলো।
আমিঃতাই বলে মরার জন্য কি
আমার গাড়িতেই আসতে হবে?
ডাক্তার বলছিলো আপনার মাথা
রাস্তায় পড়লে একদম উপরে চলে
যেতেন।তখন আমাকে জেলে যাওয়া
লাগতো।
আমিঃআমার ফাইল আর ফোন কোথায়?
আমিঃজানিনা,ওখানে থাকলে পাবলিক
আমাকে পিটাইতো।তাই দ্রুত চলে আসছি।
—আপনার ফোন দেন
আমিঃকেনো?
—বাসায় কল দিতে হবে
আমিঃএই অবস্থায় কথা না বলাই ভালো
—সমস্যা নেই দেন
পকেট থেকে ফোনটা বের করে দেখলাম
অনেকেই করেছে।কিন্তু সাইলেন্ট থাকায়
টের পায়নি।এসব আর না দেখে ফোনটা
তার কাছে দিলাম।ফোনটা হাতে নিয়ে
নাম্বার তুলে কল দিলো।তবে অবাক
করার বিষয় মেয়েটা যে এক্সিডেন্ট করছে
সেটার কিছুই বললো না।কথা বলা শেষ
করে ফোনটা নিতে বললো।
আমিঃএক্সিডেন্ট যে করছেন সেটার
কথা বললেন না কেনো?
—এই রাতের বেলা চিন্তা করবে তাই
আমিঃওহ
—আপনি চলে যান
আমিঃগেলেও ফিরে আসতে হবে।
—কেনো?
আমিঃএক্সিডেন্ট করছি যে তাই।
—সমস্যা নেই,চলে যান।
আমিঃএকটু পর যেতে হবে।
—কেনো?
আমিঃআপনাকে ডাক্তার দেখানো লাগবে
—ওহ
আমিঃহুম,আসছি।
কথা না বাড়িয়ে থ্রিয়েটার থেকে বের
ডাক্তারের কাছে গেলাম।উনাকে
জ্ঞান ফেরার কথা বলতেই আমার
সাথে থ্রিয়েটারে আসলো।
ডাক্তারঃএখন কেমন লাগছে?
—একটু বেটার
ডাক্তারঃএখানে কিছুদিন থাকতে
হবে।যদি বাসায় যেতে চান তাহলে
সেখানে একজন সেবা করার জন্য
লাগবে।বাকিটা আপনাদের ইচ্ছা।
আমিঃওকে
ডাক্তারঃউনাকে বিশ্রাম নিতে দেন।
এটুকু বলেই ডাক্তার চলে গেলো।
আমিঃকি করবেন এখন?
—এখানেই থাকতে হবে।
আমিঃবাসায় চিন্তা করবে না?
—বাসায় শুধুমাত্র মা ছাড়া আর
কেউ নেই।আর মাকে তো বললাম।
আমিঃসেটাও মিথ্যা
—কিছু মিথ্যা ভালোর জন্য বলতে হয়।
আমিঃসেটা জানি।
—নাম কি আপনার?
আমিঃনিলয়,আপনার?
—নেহা
আমিঃশুধুই নেহা?
নেহাঃনেহারিকা নিয়ন
আমিঃওহ
নেহাঃআপনি বাসায় চলে যান
আমিঃহুম,কাল আসবো।
নেহাঃযদি ইচ্ছা হয়
আমিঃকোনো সমস্যা হলে আমাকে
কল দিবেন।
(টেবিল থেকে একটা পেপার নিয়ে
নাম্বার লিখে দিলাম)
নেহাঃওকে
আমিঃরেস্ট নেন,আমি ভোর হতেই
দেখতে আসবো।
নেহাঃওকে
দাঁড়িয়ে না থেকে থ্রিয়েটার থেকে
বের হয়ে আম্মুর নাম্বারে কল
দিলাম।কারণ আম্মু অনেকবার
কল করেছিলেন।কয়েকবার রিং
হতেই রিসিভ করলো।
আম্মুঃকই তুই?
আমিঃহাসপাতালে
আম্মুঃকেনো?
আমিঃএকটা মেয়ে গাড়ির সাথে এক্সিডেন্ট
করেছিলো।তাকে এডমিট করে ছিলাম।
আম্মুঃওহ বাসায় আসবি কখন?
আমিঃএখন রওনা দেবো।
আম্মুঃসাবধানে আসিস।
আমিঃওকে
কল কেটে দিয়ে হাসপাতালের বাইরে
এসে গাড়ি করে বাসায় চলে আসলাম।
কাউকে দেখতে না পেয়ে সোজা রুমে
গেলাম।অনেক রাত হয়েছে তাই হয়তো
সবাই ঘুমিয়ে গেছে।কিন্তু রুমে এসে বেশ
অবাক হলাম।রুমে জান্নাত নেই।এই
মেয়ে আবার কোথায় গেলো..!ফ্রেস
হয়ে রুমে এসে পেলাম না।ডাইনিং
টেবিলে বসে হালকা ডিনার করে
আম্মু কাছে গেলাম।
আমিঃআম্মু আসবো?
আম্মুঃহ্যা আয়,কখন আসলি?
আমিঃএসে ডিনার করলাম।
আম্মুঃওহ,কে এক্সিডেন্ট হয়েছে?
আমিঃনেহা নামের একটা মেয়ে।হুট
করেই গাড়ির সামনে এসে পড়ে।
আব্বুঃএখন কি অবস্থা তার?
আমিঃএখন একটু ভালো
আম্মুঃমেয়েটার বাসায় কল দিয়ে
জানিয়ে দিছিস?
আমিঃহ্যা
আম্মুঃভালো করেছিস
আমিঃজান্নাত কোথায়,রুমে পেলাম না।
আম্মুঃজান্নাত নেই
আমিঃকেনো,কই গেছে?
আম্মুঃ…………
চলবে………..
(জানিনা দুটো নায়িকা গল্পে আনাতে কেমন হবে।তবে আমার কাছে যেটা ভালো মনে হলো সেটাই করলাম।আপনাদের গঠনমূলক কমেন্টের আশায় আছি)