পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৬

0
655

পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৬
আবির হাসান নিলয়

আম্মুঃচলে গেছে আমাদের ছেড়ে।
আমিঃচলে গেছে মানে?কোথায়
চলে গেছে?
আম্মুঃনিজের বাসায়।
আমিঃতোমরা আটকাও নাই?
ভাইয়াঃআটকিয়ে কি করবো?এই
বাসা কি ওর যে ওকে আটকাবো।
আম্মুঃপরে আমি ওকে বুঝিয়ে আনবো।
ভাইয়াঃআসবে না আর।
আম্মুঃকেনো আসবে না,জান্নাত এই
বাসার বউ।
ভাইয়াঃছিলো বাট এখন নেই।
আম্মুঃনেই মানে?
ভাইয়াঃবল এখন
আমিঃআম্মু আমাদের মাঝে ডিভোর্স হয়েছে।
আব্বুঃকিহ?
আমিঃহ্যা আব্বু,অনেক ভাবার পর দেখলাম
জান্নাতের সাথে আমার থাকা সম্ভব না।
ওকে দেখলেই আমার ওর খারাপ দিকটাই
মনে পড়ে।
আম্মুঃতুই মেয়েটার সাথে ঠিক করিস নাই।
আমিঃকিন্তু আম্মু আমি স….
আব্বুঃএখন তোরা যা।আমাকে একটু
বিশ্রাম নিতে দে।
আমিঃআব্বু আমি সরি,কিন্তু আমি
চিন্তাভাবনা করেই করেছি।
আব্বুঃঠিক আছে এখন যা।
আমিঃহুম

রুম থেকে বের হয়ে আসতেই ভাইয়া
ভাবি দাড় করালো।
ভাইয়াঃতুই যেটা করেছিলি ওর
সাথে সেটার কি হবে?
আমিঃআমি শুধুমাত্র মজা করেছিলাম।
ভাইয়াঃকিন্তু ও তো সিরিয়াসলি নিছিলো।
আমিঃসেটা তো আমার থেকে একবার
হলেও জিজ্ঞাস করতে পারতো।
ভাইয়াঃএই মেয়েটার সাথেই কেনো
সব সময় খারাপ হয়….!
কথাটি বলেই যাওয়ার পথে হাত দিয়ে
চোখের জলটা মুছে ফেলা লক্ষ্য করলাম।
আমিঃভাইয়া কিসের খারাপ বললি?
ভাইয়াঃঅনেক রাত হয়েছে ঘুমা।
আমিঃকিন্তু….
ভাইয়াঃজানার কোনো দরকার নেই।

আমাকে কোনো কথা বলতে না দিয়েই
ভাবিকে নিয়ে রুমে চলে গেলো।হঠাৎ
এই কথাটা শুনে কেমন একটা খটকা
লাগলো।তবে কিছুই করার নেই।কিছু
জিজ্ঞাস করলেও কোনো জবাব দিবে
না।দাঁড়িয়ে না থেকে রুমে এসে ঘুমানোর
চেষ্টা করলাম।

পরেরদিন,,,,,,,
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করলাম।
রেডি হয়ে অফিসে যাবো তখন ভাইয়া
দাঁড়িয়ে বলল;
ভাইয়াঃআজ আমার সাথে যাবি।
আমিঃআমার একটু কাজ আছে
ভাইয়াঃকিসের কাজ?
আমিঃহাসপাতালে যেতে হবে,একটা
এক্সিডেন্ট করছিলাম।
ভাইয়াঃওহহ
আমিঃহুম
ভাইয়াঃতারাতারি অফিসে আসবি
তোর সাথে কথা আছে।
আমিঃঠিক আছে।

কথা না বাড়িয়ে বাসা থেকে বের
হলাম।আজকে আর গাড়ি না নিয়ে
বাইক নিয়ে বের হলাম।হাসপাতালে
যাওয়ার আগে বাইরে থেকে কিছু
খাবার কিনে নিয়ে গেলাম।হাসপাতালে
এসে প্রথমেই থিয়েটারে গেলাম।
শুয়ে থেকে কিছু একটা ভাবছে।
আমাকে দেখে উঠে বসলো।
আমিঃকেমন লাগছে এখন?
নেহাঃব্যথা আছে,তবে আগের থেকে
অনেকটাই কম।
আমিঃএগুলো খেয়ে নেন।
নেহাঃহাসপাতাল থেকেই দিয়েছিলো।
সেগুলো খেয়ে মেডিসিন খেয়েছি।
আমিঃওহহ,তা আপনার বাসা কোথায়?
নেহাঃগ্রামে
আমিঃগ্রাম থেকে এখানে কেনো?
নেহাঃজবের খোঁজে।
আমিঃজব লাগবে কেনো?
নেহাঃমা ক্যান্সার রোগী,বাবা নেই।
অনেক আগেই ছেড়ে চলে গেছে।
আমিঃছেরে গেছে মানে?
নেহাঃঅন্য একটা মহিলার সাথে
চলে গেছে আমাদের রেখে।
আমিঃওহহ
নেহাঃহুম
আমিঃবাসায় শুধু আপনার মা?
নেহাঃহ্যা,তবে খুব তাড়াতাড়ি একদম
ফাকা হয়ে যাবে।
আমিঃকেনো?
নেহাঃবললাম না ক্যান্সার রোগী। চিকিৎসা
না করলে বাঁচবে কিভাবে?
আমিঃআপনি সুস্থ হোন তারপর
আপনার কোনো ব্যবস্থা করবো।
নেহাঃআপনি আর কি করবেন।
আমিঃঅনেক কিছুই করতে পাড়ি।
আচ্ছা এখন আপনি বিশ্রাম করুণ।
কোনো দরকার হলে ফোন দিবেন।
নেহাঃঠিক আছে,বাট হাসপাতাল
থেকে রিলিজ করবে কবে?
আমিঃএখান থেকে যাবেন কোথায়?
তাই এখানেই কিছুদিন থাকুন তারপর
না হয় একটা ব্যবস্থা করবো।
নেহাঃওহ
আমিঃআসছি,বাই।

বিদায় দিয়ে অফিসে চলে আসলাম।
কেবিনে বসে হাতের কাজ করছি
তখন পিয়ন(রহিম চাচা)আসলো।
চাচাঃতোমাকে ডাকছেন।
আমিঃকে?
চাচাঃনীল বাবা
আমিঃঠিক আছে,আপনি যান আমি
কাজটা শেষ করে আসছি।
চাচাঃআচ্ছা

রহিম চাচা চলে যাওয়ার পর কাজটা
শেষ করে ভাইয়ার কেবিনে আসলাম।
আমিঃকিছু বলবি?
ভাইয়াঃশেষবারের মতো একবার দেখ।
আমিঃকি দেখবো?
ভাইয়াঃজান্নাতের ব্যাপারটা।
আমিঃভাইয়া এসব বাদ দে।আমি তো
চিন্তাভাবনা করেই করেছি।
ভাইয়াঃদেখ এখানে জান্নাতের দোষ
আছে।তোর নিজেরও আছে কিন্তু
তবুও জান্নাত তোর কাছে স্বীকার
করেছে সে দোষ করেছে।
আমিঃএসব আর বলে কি হবে?
ভাইয়াঃতবুও ভেবে দেখিস
আমিঃহুম
ভাইয়াঃআর যাকে এক্সিডেন্ট করছিলি
তার কি অবস্থা?
আমিঃও ভালো কথা মনে করে দিলি।
এখন আগের থেকে মোটামুটি সুস্থ।তার
একটা কাজ লাগবে।আমি চাইছি এখানে
কোথাও লাগিয়ে দেয়।
ভাইয়াঃস্টাফদের তো বুক হয়ে আছে।
নতুন প্রোজেক্ট হাত না দেয়া অবধি
কাউকে নেয়া যাবে না।যদি খুব দরকার
হয় তোর পিএ হিসাবে রাখ।
আমিঃআমার পিএ দিয়ে কি করবো।
ভাইয়াঃতাছাড়া তো জায়গা ফাকা নেই।
আমিঃঠিক আছে কিছুদিন পিএ থাক
তারপর জায়গা দেখে লাগিয়ে দেবো।
ভাইয়াঃআমার সাথে কথা বলতে বলিস
আমিঃঠিক আছে
ভাইয়াঃনাম কি?
আমিঃনেহা
ভাইয়াঃনেহা…!মেয়ে?
আমিঃহুম
ভাইয়াঃঠিক আছে জয়েনিং করার আগের
দিন জেনো আমার সাথে দেখা করে।
আমিঃওকে,এখন উঠি কাজের অনেক
চাপ পড়েছে।
ভাইয়াঃহ্যা

ভাইয়া কেবিন থেকে বের হয়ে কেবিনে
আসলাম।কাজ করতে হচ্ছে অনেক।
শুধুমাত্র কাজের চাপের জন্য আমি
সাধারণ স্টাফদের মতো কাজ করতে
চেয়েছিলাম।কিন্তু সবার প্যাঁড়া নিতে
নিতে ভাইয়ার সাথে অফিস সামলাতে
হচ্ছে।কাজগুলো কমপ্লিট করে বসে
আছি।অনেক আগেই অন্যান্য স্টাফরা
চলে গেছে।তবে অনেক বেশিই ক্লান্ত
হওয়ার জন্য বসে আছি তখন নিলা
নক করলো।
নিলাঃস্যার আসবো?
আমিঃহ্যা আসো,বাসায় যাওনি?
নিলাঃবের হয়ে রিক্সার জন্য অপেক্ষা
করছিলাম।কিন্তু একটা কারণে ফিরে
আসলাম।
আমিঃকোনো সমস্যা হয়েছে?
নিলাঃআমার ২টা দিন ছুটি লাগতো
আমিঃভাইয়ার সাথে কথা বলো।
নিলাঃস্যারের কাছে গেছিলাম কিন্তু
তিনি আপনার কথা বললো।নতুন
প্রোজেক্টটা আপনার আন্ডারে হচ্ছে
তাই স্যার বললো আপনার থেকে নিতে।
আমিঃকোথাও যাচ্ছো নাকি?
নিলাঃগ্রামের বাসায় যাবো
আমিঃওহহ,ঠিক আছে।আর আমি
যদি তোমাকে আমার পিএ বানাই..!
নিলাঃস্যার এটা করবেন না।আমি
যেভাবে করছি সেইভাবেই থাকি।
আমিঃতোমার ইচ্ছা
নিলাঃস্যার তাহলে দিলেন?
আমিঃঠিক আছে তবে দুদিন
নিলাঃধন্যবাদ,আর বাসায় যাবেন না?
আমিঃহ্যা,তবে একটু দেরি হবে।
নিলাঃকেনো?
আমিঃক্লান্ত লাগছে।
নিলাঃঠিক আছে স্যার আসছি।
আমিঃহুম

নিলা চলে যাওয়ার পর আরো কিছু
সময় বসে থাকতে থাকতে ফোনে
কল আসলো।
—আমি নেহা বলছি
আমিঃহ্যা বলুন
নেহাঃআমাকে রিলিজ করার ব্যবস্থা করেন।
আমিঃকেনো?
নেহাঃদম বন্ধ হয়ে আসছে।
আমিঃরিলিজ হয়ে যাবেন কই?
নেহাঃজব খুঁজতে বের হবো।
আমিঃআমার পিএ হবেন?
নেহাঃআপনার পিএ হতে যাবো কেনো?
আমিঃকারণ আমি অফিসের বস।
নেহাঃসত্যি আমাকে জব দিবেন?
আমিঃমিথ্যা বলতে যাবো কেনো?
নেহাঃকবে থেকে জয়েন করবো?
আমিঃআগে সুস্থ হন তারপর।
নেহাঃআরে আমি সুস্থ,আমার অনেক
টাকা লাগবে।
আমিঃকাল আপনাকে রিলিজ করে
আমার ভাইয়ারা সাথে কথা বলাবো।
তারপরের দিন জয়েন করবেন।
নেহাঃথ্যাংক ইউ
আমিঃইউ ওয়েলকাম
নেহাঃআজ কি আসবেন?
আমিঃআজ শরিরটা ভালো নেই
নেহাঃকি হয়েছে?
আমিঃসারাদিন অনেক ধকল গেছে।
এখনো অফিসেই বসে আছি।
নেহাঃওহ
আমিঃকোনো সমস্যা হয়েছে?
নেহাঃএকটা লোক এসে অনেক কিছু
জিজ্ঞাস করছিলো।
আমিঃকি বলে?
নেহাঃএইযে আমি কে,কিভাবে এক্সিডেন্ট
করেছি,আপনি দেখতে আসেন বলে
আপনার কথা জানতে চাই।
আমিঃআপনি কি বললেন?
নেহাঃআমি তো আপনার সম্পর্কে
কিছুই জানি না।তাই কিছু বলিনি।
আমিঃআবার যদি এসে জিজ্ঞাস করে
তাহলে শুধুমাত্র AH Group of Company
এর এমডি স্যারের ছেলে বলবেন।
নেহাঃআপনি AH কোম্পানির বস?
আমিঃহ্যা,কেনো?
নেহাঃজব খুঁজতে ওখানেও গেছিলাম।
কিন্তু স্টাফ নাকি প্রয়োজন নেই।তাই
আমাকে ঢুকতেই দেয়নি বুড়া ব্যাটা।
আমিঃদারোয়ান ছিলো?
নেহাঃনা
আমিঃতাহলে হয়তো রহিম চাচা
নেহাঃতিনি কে?
আমিঃপিয়ন অফিসের।অনেক আগে
থেকে অফিসে আছেন।
নেহাঃআমি আপনার পিএ হয়ে ঢুকলে
উনার খবর আছে।
আমিঃকোন চ্যানেলের?
নেহাঃমজা নিচ্ছেন?
আমিঃতো?
নেহাঃনেন নেন,একটা অসহায় মেয়ে
পেয়ে মজাই তো নিবেন।
আমিঃআপনি অসহায় অথবা ভালো
ফ্যামিলি থেকে আসুন সেটা ব্যাপার না।
আপনি কেমন সেটাই সবাই দেখবে।
নেহাঃআপনার বাসায় কে কে আছে?
আমিঃসবাই আছে
নেহাঃঅনেক বড় পরিবার।আমাদের
মতো পুড়া কপাল একদম নয়।আর
কারো জেনো এমন না হয়।
আমিঃকেমন?
নেহাঃপরে কোনো একদিন বলবো।
আমিঃসেটা তো আপনার ইচ্ছা।
নেহাঃআমাকে আপনি করে কেনো
বলছেন?
আমিঃতো কি বলবো?
নেহাঃতুমি করে বলেন,প্রথমত আমি
আপনার ছোট হবো তার উপর পরশু
থেকে আপনি আমার বস হবেন।
আমিঃআগে জয়েন করেন তারপর।
নেহাঃঠিক আছে।

অনেকটা সময় দুজন চুপচাপ রইলাম।
হয়তো নীরবতা পালন করছিলাম।কিন্তু
নেহা নিজেই নীরবতা ভঙ্গ করে বলল;
নেহাঃআচ্ছা এখন তাহলে রাখি
আমিঃঠিক আছে
নেহাঃবাই
আমিঃবাই

কল কেটে দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে
ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে আসলাম।অফিসের
বাইরে এসে বাইক নিয়ে সোজা বাসায়
চলে আসলাম।বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে
শরিরটা এলিয়ে দিয়ে টেলিভিশন অন
করে গান শুনতে লাগলাম।হঠাৎ রুমে
আভা আসলো।
আমিঃকি ব্যাপার বুড়ি এখানে?
(কোলে তুলে নিলাম)
আভাঃএদোপট কি চাচ্চু?
আমিঃএটা আবার কি?
আভাঃমাম্মাম পাপা বলছিলেন।
আমিঃএদোপট?
আভাঃহ্যা
আমিঃএটা তো কোনো ল্যাংগুয়েজ না মা।
আভাঃওহ(মাথা চুলকিয়ে)
আমিঃকি করছিলে এখন?
আভাঃছোট মাম্মামের সাথে কথা।
আমিঃছোট মাম্মাম কল করেছিলেন?
আভাঃদাদুই করেছিলেন
আমিঃকি বলল ছোট মাম্মাম?
আভাঃকথা
আমিঃআমার নামে কিছু বলেনি?
আভাঃমনে নেই,আচ্ছা চাচ্চু ছোট
মাম্মাম কখন আসবেন?
আমিঃআর আসবে না মা।
আভাঃকেনো কেনো?
আমিঃসে অনেক কথা।
আভাঃতাহলে চলো আমরা যাই
আমিঃকোথায় যাবে?
আভাঃছোট মাম্মামকে আনতে।
আমিঃআসবে না আর।
আভাঃকেনো চাচ্চু?
আমিঃতুমি বড় হলে বুঝবে।
আভাঃএখন তো বড়ই
আমিঃআরো বড় হতে হবে
আভাঃওকে,এন্ড লাভ ইউ।
আমিঃলাভ ইউ টু
আভাঃএখন বাই চাচ্চু উম্মাহ

আভাকে কোল থেকে নামিয়ে দিতেই
বাইরে চলে গেলো।জান্নাতের সাথে
আভার অনেক ভালোই বন্ধুত্ব ছিলো
তাই হয়তো একজন আরেকজনের
খোজ নেয়ার জন্য আসছে।অনেকবার
জান্নাতের প্রতি রাগ হতো,কি একটা
মেয়ে এসে আভার সাথে ভালো সম্পর্কে
আছে।আভা ভাবির সাথে যতোটা সময়
কাটাই ঠিক ততোটাই জান্নাতের সাথে
কাটাতো।অনেক ভালোবাসতো আভাকে।
কিন্তু এখন চাইলেও আভা সেই ভালোবাসা
ফিরে পাবে না।আরো কিছু সময় ওমন
করেই শুয়ে শুয়ে গান শুনলাম।সন্ধ্যার
সময় টেলিভিশন বন্ধ করে ছাদে গেলাম।
চাঁদটার লজ্জা ভেঙে গেছে,হয়তো
তার জন্যই এতো সুন্দর আলো
দিচ্ছে।অনেকটা সময় ছাদে থেকে
চাঁদ দেখে নিচে এসে ডিনার করে
ঘুমিয়ে গেলাম।

পরেরদিন,,,,,,,,,
সকালের নাস্তা করে রেডি হয়ে হাসপাতালে
গেলাম।তবে আজ প্রথমে থিয়েটারে না
গিয়ে কাউন্টারে গিয়ে বিল দিয়ে বললাম;
আমিঃ১০৩ নাম্বার রুমের রোগীকে বার
বার কে ডিস্টার্ব করছিলো?
—সরি স্যার,কি বললেন?
আমিঃ১০৩নাম্বার রুমের রোগীকে
—স্যার উনাকে ডিস্টার্ব করলে উনি
নিজেই তো নার্সদের বলতো।
আমিঃঠিক আছে।

কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসলাম।
আমিঃকেমন আছেন?
নেহাঃআসছেন তাহলে
আমিঃআসতে হলো,হাটতে পারবেন?
নেহাঃহ্যা
আমিঃউঠুন (ধরে তুললাম)
নেহাঃকোথায় যাবো এখন?
আমিঃএখন অফিসে,তারপর আপনি
আপনার বাসায় চলে যাবেন।
নেহাঃবাসা থেকে প্রতিদিন এখানে
এসে ডিউটি করা অসম্ভব।
আমিঃওহহ,ঠিক আছে আগে আপনি
অফিসে চলেন।
নেহাঃওকে

অনেকটা আস্তে আস্তে হাসপাতাল
থেকে বের হলাম।গাড়িতে বসিয়ে
দিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলাম।
নেহাঃআপনার ভাইয়া ম্যারিড?
আমিঃএকটা মেয়েও আছে।
নেহাঃআর আপনি?
আমিঃডিভোর্স হয়ে গেছে।
নেহাঃমজা করেন?
আমিঃআপনার সাথে মজা নিয়ে
আমার কোনো লাভ আছে?
নেহাঃআপনি সত্যি বিবাহিত?
আমিঃছিলাম এখন ডিভোর্স।
নেহাঃওহহ,আপনার উনি এখন
তাহলে কি করে?
আমিঃমা,বাবা একমাত্র সন্তান।তাই
তাদের কাছেই আছে।
নেহাঃমায়ের থেকে শুনেছিলাম আমরা
দুইবোন।কিন্তু ঐ জানোয়ার নেশাখোর
বাপ আমার বড় বোনটাকে কোথাও
ফেলে আসে।যদিও তখন আমি জন্ম
নেয়নি।কিন্তু মা বলে আমাকে।
আমিঃএমন লোকের সাথে বিয়ে হয়েছিলো?
নেহাঃপারিবারিক ভাবে হয়।কিন্তু তখন
তো জানতো না লোকটা এতো খারাপ।
আমিঃওহহ
নেহাঃআপনার ফ্যামিলি অনেক হ্যাপী তাইনা..?
আমিঃসেটা তো আছেই ত…..
কে জানি কল করেছে।
নেহাঃকথা বলেন

ফোনটা বের করে দেখলাম জান্নাতের
নাম্বার।হঠাৎ আবার আমাকে কল
দেয়ার কি আছে…!রিসিভ করতেই
ওপাশ থেকে বলল;
জান্নাতঃআসসালামু আলাইকুম
আমিঃকিছু বলবি?(সালামের উত্তর দিয়ে)
জান্নাতঃদোয়া করবেন
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃমেডিলেকে ভর্তি হবো।
আমিঃতুই মেডিকেলে কিভাবে ভর্তি হবি?
জান্নাতঃযখন তোকে মেরে ইস্তানবুলে চলে
যায় তখন ছোট মামার বাসা থেকে পড়াশোনা
করছিলাম।লেভেল ১১ শেষ হতেই ওখানকার
একটা টিচার মেডিকেলে চান্স নেয়ার জন্য বলে।
আমিঃহুম তো হলি না কেনো?
জান্নাতঃতোর কাছে চলে আসছিলাম।সে
যাই হোক এখন চান্স নেবো।
আমিঃতুই তো Biology তে ফেল করছিলি।
জান্নাতঃও হ্যালো,Biology তে আমার
সর্বোচ্চ মার্ক।
আমিঃতুই আমাকে তুই তুকারি করে বলছিস কেন?
জান্নাতঃকারণ এখন আমাদের মাঝে কিছু নেই।
তুই তোর মতো আর আমি আমার মতো।
এখন শুধুমাত্র তুই আমার কাজিন।তোকে
বলতে চাইছিলাম না কিন্তু আব্বু আম্মুর
কথা শুনে কানে একদম পোকা বের হয়ে
গেছে তাই কল করলাম।
আমিঃশালি
জান্নাতঃশুয়োরছানা
আমিঃরাখ তুই,না হলে বাসায় গিয়ে তোকে
মেরে আসবো।
জান্নাতঃভাগ

আর কোনো কথা না বলে কল কেটে
দিলো।ভালো লাগলো এমন কথা শুনে।
আমার সাথে না থেকেও হ্যাপী আছে
এটাই অনেক।ফোনটা রেখে আবার
ড্রাইভ করে অফিসে চলে আসলাম।
নেহাকে সাথে নিয়ে প্রথমে ভাইয়ার
কেবিনে দিয়ে বাইরে চলে আসলাম।

চলবে………………
(অনেকে বলছেন নেহাকে দরকার নেই।
কিন্তু নেহাকে এখন বেশি দরকার।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here