পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৮

0
670

পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৮
আবির হাসান নিলয়

নেহাঃস্যার ভিতরে আসবো?

কাজ করছি তখন আবার এই মেয়েটা
বাইরে থেকে নক করলো।
নেহাঃএইযে স্যার শুনছেন?
আমিঃকি হয়েছে?
নেহাঃবাহির থেকেই বলবো?
আমিঃভিতরে আসো।
নেহাঃছবিটা বাইরে পরে ছিলো।এখানে
আপনি আছেন তাই দেখাতে আসলাম।
(আমার আর জান্নাতের ছবি)
আমিঃএসব তোমাকে কে টানতে বলছে?
নেহাঃস্যার মেয়েটা কে?
আমিঃজেনে কোনো লাভ নেই।
নেহাঃবলেন না,মেয়েটা তো অনেক
কিউট।গার্লফ্রেন্ড নাকি আপনার?
আমিঃএটা জান্নাত।
নেহাঃআপনাকে অনেক ভালোবাসতো?
আমিঃতুমি এইসব কথা বাদ দিয়ে যাবে?
নেহাঃসব সময় চলে যেতে বলেন কেনো?
আমিঃকারণ এটা কাজের জায়গা,কাজ
ছাড়া আলাদাভাবে ঢং করার কিছু নেই।
নেহাঃএই জন্যই জান্নাত মেয়েটা ছেড়ে
চলে গেছে।
আমিঃআর কিছু?
নেহাঃকাল একটা মিটিং আছে,বাহির
থেকে ক্লাইন্ট আসবে।
আমিঃকোন প্রোজেক্ট?
নেহাঃড্রেসের ঐটা।
আমিঃকনফার্ম করো।
নেহাঃওকে,স্যার আজ বিকেলে
আপনি ফ্রি আছেন?
আমিঃকেনো?
নেহাঃআপনার সাথে ঘুরতে যেতে চাইলাম।
আমিঃকাজ আছে আমার
নেহাঃস্যার চলেন না।
আমিঃবললাম তো
নেহাঃআজ আমার বার্থডে(মিথ্যা)
আমিঃসন্ধ্যায় বের হবো।
নেহাঃকিন্তু..ওকে আমি রাজি
আমিঃওকে।

আর কথা না বলে বাইরে চলে গেলো।
মেয়েটা অনেক বেশিই আবদার করে।
অনেকটা জান্নাতের মতো,তবে জান্নাত
না।জান্নাত তো এক মায়াবিনী।সত্যি
বলতে জান্নাতের ধারের কাছেও এই
মেয়ে টিকতে পাড়বে না।সুশীলভাবে
কথা বলা,ভালোবাসার মানুষটা কেমন
আছে তারপর তাকে জিজ্ঞাস করা
তার সাথে ঘুরতে যেতে পারবে কিনা।
মাঝেমধ্যে অনেক বেশিই আফসোস
হয়।আমি কি জান্নাতের সাথে আদৌ
কাজটা ঠিক করেছি..?হয়তো না,কিন্তু
আমার কাছে যেটা ভালো মনে হয়েছিলো
সেটাই করেছি।ছবিটা হাতে নিয়ে দেখতেই
মুচকি একটা হাসি দিলাম।পিচ্চিটা কতোই
না আগে হাসিখুশি থাকতো।কিন্তু সেই
পিচ্চিটা এখন আর পিচ্চি নেই।অনেক
বড় হয়ে গেছে।মেডিকেলে পড়াশোনা
করছে।নিজের জীবন গড়ার জন্য দিন
রাত প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে।সেখানে আমার
মতো নিলয় ওর জীবনে কি করবে।তবে
অনেক ভালোই লাগে,পিচ্চিটার সাথে
খারাপ করার পর বুঝতে পাড়ছে নিজেকে
আরো অনেক বড় হতে হবে।যখন
কাউকে বিয়ে করবে তখন কাজের
মেয়ের মতো থাকতে হবে না। নিজের
টাকা দিয়ে নিজের হাতখরচের সাথে
নিজের ফ্যামিলিকে হেল্প করতে পারবে।

জানিনা কতোটা সময় নিয়ে এসব
ভাবছিলাম।ভাইয়ার ডাকে বাস্তবে
ফিরলাম।
আমিঃকিছু বললি?
ভাইয়াঃকি ভাবছিলি?
আমিঃতেমন কিছু না।
ভাইয়াঃলাঞ্চ করবি না?
আমিঃহ্যা করবো
ভাইয়াঃআয়
আমিঃহুম(হাটতে লাগলাম)
ভাইয়াঃদেখছি নতুন মেয়েটার সাথে
ভালোই কথাবার্তা বলছিস।তুইও তাকে
পছন্দ করিস নাকি?
আমিঃআমিও মানে?
ভাইয়াঃমেয়েটা কাকে জেনো বলছিলো
সে তোকে পছন্দ করে।
আমিঃআমার মনে এখনো ওসব তার
জন্য হয়ে ওঠেনি।
ভাইয়াঃএমনিতে কিন্তু ভালোই আছে।
অনেকটাই জান্নাতের মতো।
আমিঃহুম,কিন্তু জান্নাত না।জান্নাত তো
একটা অপ্সরী,ওর কথাগুলো শুনতে
অনেক বেশিই ভালো লাগতো।
ভাইয়াঃথেমে থেমে কথা বলতো।
আমিঃহুম
ভাইয়াঃমিস করিস?
আমিঃওর পাগলামোকে।
ভাইয়াঃনেহা মেয়েটার সাথে কথা বল।
আমিঃআমি ঠিকঠাকভাবে চিনিই না।
ভাইয়াঃএকে অপরকে জানতে হলে
সময় দে।আগামী মাসে ওকে নিয়ে মরক্কো
থেকে ঘুরে আয়।কাজটাও হবে তোদের
ঘুরাও হবে।
আমিঃমরক্কো কেনো?
ভাইয়াঃবিজনেসের জন্য কেউ একজন
যেতে হবে।কিন্তু আমার সমস্যা হলো,
আগামী মাসেই তানিয়ার বিয়ে।একমাত্র
শালির বিয়েতে যদি না যাই কেমন হয়..!
আমিঃসেটা তো আছেই।বাট আমি একাই
যেতে পাড়বো।পিএ লাগবে না।
ভাইয়াঃনারে,শুধু পিএ কেনো?অফিসের
আরো কিছু স্টাফ লাগবে।যারা তোর সাথে
মিটিং এ উপস্থিত থাকবে।
আমিঃওসব তাহলে পরে ভাবতে হবে।
ভাইয়াঃহুম,এখন খাওয়া শুরু কর।
দুজন পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া করে
যে যার মতো কেবিনে চলে গেলাম।

*****সন্ধ্যায়*****
বাসা থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিলাম।
রাতের আকাশটা দেখতে অনেক ভালো
লাগবে।তাই গাড়ি বা বাইক কিছুই নিলাম
না।নেহার জন্য বার্থডে গিফট নিয়ে
হোস্টেলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু
তার আসার কোনো নাম গন্ধ নেই।
নেহার জায়গা জান্নাত হলে আসার
দু-মিনিট পরেই নিচে চলে আসতো।
পিচ্চিটা আবদার করলেও কাউকে
অপেক্ষা করাতে পছন্দ করে না।আর
সেখানে যদি আমি হয় আর তো কোনো
কথায় নেই।

********নেহার কথা*********
নিলয়কে নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে
ভাইয়াকে কল দিলো।
নেহাঃহ্যালো স্যার।
ভাইয়াঃএখন কল দেয়ার কি আছে?
নেহাঃস্যার নিলয় স্যার আমার হোস্টেলের
নিচে দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু আমার মায়ের
শরিরটা খারাপ।আজকেই দেখা করতে
যেতে চাইছিলাম কিন্তু নিলয় স্যার বলল
আজ সন্ধ্যায় বের হবে।
ভাইয়া;আমাকে কি করতে হবে তাই বলো।
নেহাঃআমার মাকে কোনো মেডিকেলে
এডমিট করেন প্লিজ।
ভাইয়াঃআজকেই করতে হবে?
নেহাঃকালকের মধ্যে করেন।
ভাইয়াঃবাসা কোথায় তোমার?
নেহাঃকালীগঞ্জে
ভাইয়াঃওখানকার কোনো মেডিকেলে
রাখলে সমস্যা হবে?
নেহাঃস্যার আমি চাই আমার মা চিকিৎসা
পাক।সেটা যেখানেই হোক সমস্যা নেই।
ভাইয়াঃঠিক আছে আমি একজনের
সাথে কথা বলে জানাচ্ছি।
নেহঃঠিক আছে স্যার।
কল কেটে দিয়ে ভাইয়ার কল আসার
জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।

********ভাইয়ার কথা*******
নেহার সাথে কথা বলা শেষ করে জান্নাতকে
কল করলো।
জান্নাতঃহ্যালো ভাইয়া
ভাইয়াঃকি খবর?
জান্নাতঃএইতো,তোমার?
ভাইয়াঃচলছে।তোর পড়াশোনার কি খবর?
জান্নাতঃহ্যা ভালোই
ভাইয়াঃকখনো হাসতাপালে যাস?
জান্নাতঃমানে?
ভাইয়াঃহাসপাতালে আসা যাওয়া হয়?
জান্নাতঃভাইয়া তোমার কি হয়েছে
বলতো?আমি মেডিকেল স্টুডেন্ট,না
চাইলেও আমাকে যেতেই হবে।তবে
এখনো খুব একটা পরিচিত হয়নি
কারো সাথে।
ভাইয়াঃওখানে একটা রোগীকে এডমিট
করতে পাড়বি কাল?
জান্নাতঃতুমি কাল আসো আমি রুহি
আপুকে বলে রাখবো।
ভাইয়াঃরুহি কে?
জান্নাতঃনার্স
ভাইয়াঃঠিক আছে,কাল আমি এসে
তোর সাথে কথা বলবো।
জান্নাতঃহুম,বাসার সবাই কেমন আছে?
ভাইয়াঃআছে ভালোই।
জান্নাতঃওহহ
ভাইয়াঃনিলয়ও ভালো আছে।
জান্নাতঃআমি ওর কথা জিজ্ঞাস করিনিন
ভাইয়াঃমন থেকেই করতে চাসনি?
জান্নাতঃবাদ দাও না ভাইয়া,কাল
তুমি আসো।তখন কথা হবে।
ভাইয়াঃহ্যা রাখছি রে।
জান্নাতঃআল্লাহ হাফেজ
ভাইয়াঃআল্লাহ হাফেজ।

জান্নাতের সাথে ভাইয়া কথা বলে
আবার নেহাকে কল দিলো।
নেহাঃহ্যা স্যার বলুন।
ভাইয়াঃকাল ওখানে যেতে হবে।
নেহাঃজ্বি স্যার,আমি ভোর হতেই
অফিসে আসবো।
ভাইয়াঃঠিক আছে
দুজন কথা বলা শেষ করে নেহা রেডি
হতে লাগলো।নিলয় অনেকটা সময়
নিয়ে অপেক্ষা করে আছে।

*********নিলয়ের কথা********
অপেক্ষা করতে করতে একদম বিরক্তি
হয়ে যাচ্ছি।কেনো যে এই মেয়ের জন্য
আসলাম। কেউ একজন ঠিকিই বলছিলো,
মেয়েরা ৫ মিনিট-৫মিনিট করতে করতে
ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারে।আরো কিছু
সময় অপেক্ষা করার পর দেখা মিললো।
মডার্ন ড্রেস,শার্টের সাথে ম্যাচিং করে
প্যান্ট পড়েছে।কাছে এসে বলল;
নেহাঃরিক্সা থামাও নাই?
আমিঃতোমার অপেক্ষা করতে করতে
যে রিক্সা আনেছিলাম সেটাও ছেরে দিছি।
নেহাঃএখন কি করবো তাহলে?
আমিঃহেটে চলো
নেহাঃকোলে নাও
আমিঃআপনি থেকে তুমিতে?
নেহাঃএটা তোমার অফিস না,যে
আপনি করে বলবো।
আমিঃসেটা ঠিক
নেহাঃচলে কোনো খোলা আকাশের
নিচে গিয়ে বসি।
আমিঃওকে চলো।

অনেকটা সময় হাটার পর একটা
কাচা রাস্তায় আসলাম।আশেপাশে
কোনো বাড়িঘর নেই।চাঁদের আলোতে
অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।
নেহাঃচাঁদটা অনেক সুন্দর তাই না..!
আমিঃহুম,তোমাকেও লাগছে।
নেহাঃআমি জানি আমি সুন্দরি ?
আমিঃহ্যাপী বার্থডে
নেহাঃথ্যাংক’স,আমাকে কোনো গিফট
করবে না?
আমিঃগিফট তো করতে হবে
নেহাঃকিন্তু আজ নেবো না।আগামীকাল
তোমার থেকে নেবো।
আমিঃকেনো আজ কি সমস্যা?
নেহাঃকারণ আজ আমার বার্থডে না।
আমিঃমানে?
নেহাঃআমি তোমাকে সাথে আনার জন্য
মিথ্যা বলেছিলাম।বার্থডে আমার কাল।
আমিঃমিথ্যা বলার কি ছিলো?
নেহাঃপ্রথমে ঘুরতে যাওয়ার কথা
তোমাকে বলেছিলাম কিন্তু তুমি তখন
কি বলেছিলে?
আমিঃমনে আছে।
নেহাঃচলো হাটি।
আমিঃহুম

দুজন পাশাপাশি হাটাহাটি করে রাতে
রেস্টুরেন্ট থেকে ডিনার করে হোস্টেল
অবধি পৌঁছে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

পরেরদিন,,,,,,,,
*******নেহা এবং ভাইয়ের কথা******
ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠেই নেহা রেডি
হয়ে অফিসের সামনে এসে দাঁড়ালো।
অনেকটা সময় অপেক্ষা করার পর
ভাইয়া আসতেই দুজন মিলে কালীগঞ্জের
উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
নেহাঃস্যার একটা কথা জানার ছিলো
ভাইয়াঃহ্যা বলো
নেহাঃজান্নাতের বার্থডেতে নিলয় কি
গিফট করতো।আর তার রিয়েকশন
কেমন ছিলো জানেন?
ভাইয়াঃজানতে পারবে
নেহাঃকিভাবে?
ভাইয়াঃকারণ আমরা ওখানেই যাচ্ছি
নেহাঃজান্নাত কি করে?
ভাইয়াঃমেডিকেল স্টুডেন্ট
নেহাঃওহ

দুজন কথা বলতে বলতে কালিগঞ্জে
নেহাদের ছোট বাড়িতে এসে নেহার
মাকে নিয়ে জান্নাতের দেয়া মেডিকেলে
নেহার মাকে নিয়ে আসলো।উনাকে
এডমিট করে কেবিনের বাইরে এসে
জান্নাতকে কল করলো।
ভাইয়াঃকোথায় আছিস?
জান্নাতঃএইতো ভাইয়া হাসপাতালেই
যাচ্ছি এখন।
ভাইয়াঃআয়,আমরা এখানেই আছি।
জান্নাতঃমিনিট ৫ লাগবে।
ভাইয়াঃওকে।

কল কেটে দিয়ে হাসপাতালের বাইরে
জান্নাতের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।
কিছু সময় পর জান্নাত তাদের দিকে
আসতেই ভাইয়া এবং নেহা দাঁড়িয়ে গেলো।
জান্নাতঃভাইয়া উনি কে?
ভাইয়াঃনেহা,নিলয়ের পিএ।
জান্নাতঃহাই নেহা
নেহাঃহাই ম্যাম।
জান্নাতঃআমাকে ম্যাম বলার দরকার
নেই।নাম ধরে ডাকলেই হবে।
নেহাঃওকে
জান্নাতঃআর কাকে এনেছো?
ভাইয়াঃনেহার মাকে।ক্যান্সার রোগী।
জান্নাতঃভাইয়া সব সময় তো তার
পাশে থাকতে পাড়বো না।তবে মাঝে
মাঝে এসে খোজ নেয়ার পাশাপাশি
দেখে যেতে পাড়বো।
নেহাঃএটুকু করলেই চলবে।
জান্নাতঃঠিক আছে,রুম নাম্বার আর
বেড নাম্বার কতো?
ভাইয়াঃ৯৭ নাম্বার রুম ১৩ নাম্বার কেবিন।
জান্নাতঃঠিক আছে।
নেহাঃআপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
জান্নাতঃহ্যা বলো
নেহাঃনিলয় আপনার বার্থডেতে কি
গিফট করতো?
জান্নাতঃসেসব জেনে তুমি কি করবে?
ভাইয়াঃঅনেক লম্বা কাহিনী রে বোন।
চল বসে কথা বলি।
জান্নাতঃঠিক আছে।

তিনজন লোকালয় থেকে একটু দূরে
এসে একটা বেঞ্চের উপর বসলো।
ভাইয়া জান্নাতকে সব খুলে বলল,
এযাবৎ নেহার সাথে যেসব কথা হয়েছে।
জান্নাতঃভাইয়া এটা ঠিক হচ্ছে না।
নিলয় আমাকে ভালোবাসে না তাতে
কি।কিন্তু তোমরা ওর সাথে এমনটা
কেনো করতে হবে?
নেহাঃআপনি উনার সাপোর্ট নিচ্ছেন,
উনি আপনাকে ডিভোর্স দিয়েছে।না
জানি কতো কষ্ট দিয়েছে আপনাকে।
জান্নাতঃআমার দোষ ছিলো তাই দিছে।
কিন্তু তাই বলে তো আমি ওর সাথে
খারাপ করতে পাড়ি না।
নেহাঃআপনি সত্যি অনেক ভালো
মনের মানুষ।এখন আপনি বলুন
আপনার বার্থডেতে আপনাকে কি
গিফট করতো?
জান্নাতঃঅনেক আগে করতো,তবে
আমার জীবনে সব থেকে বড় পাওয়া
নিলয় আমাকে একটা ব্রেসলেট দিয়েছিলো।
সেটাও যখন আমি মাত্র জেএসসি
এক্সাম দিয়েছি তখন।আর সেটাই
আমার জীবনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গিফট।
নেহাঃআর প্রথম?
জান্নাতঃনিলয়কে বিয়ে করা।
নেহাঃসামান্য ব্রেসলেট পেয়েই এতো খুশি?
জান্নাতঃতোমার কাছে যেটা সামান্য
আমার কাছে সেটা অনেক বড় পাওয়া।
নেহাঃওকে।

নেহা আরো অনেক কিছু যেগুলো
নিলয়ের সাথে জান্নাতের সব থেকে
সুন্দর মুহূর্ত ছিলো সেগুলো জেনে
জান্নাতকে তার মাকে দেখিয়ে দিয়ে
তিনজন মিলে সকালের নাস্তা করে
জান্নাতকে বিদায় দিয়ে ভাইয়া আর
নেহা চলে আসলো।তাদের আসতে
আসতে দুপুর হয়ে গেছে।নেহা আজ
অফিসে না গিয়ে হোস্টেলে চলে গেলো।

*********নিলয়ের কথা***********
বাসায় ভাইয়াকে না পেয়ে ভাবলাম
হয়তো অফিসে চলে গেছে তাই কারো
থেকে কিছু শুনলাম না।নাস্তা করে
অফিসে চলে আসলাম।অফিসে কাজ
করছি কিন্তু এখন অবধি নেহা একবারো
কেবিনে আসেনি।সেদিকে আর না ভেবে
কাজ করতে লাগলাম।দুপুর গড়িয়ে
যেতেই নেহা কল দিয়ে বলল আজ
অফিসে আসবে না সাথে এটাও বলল
অফিস শেষ করে পুরাণ ব্রিজের দক্ষিণে
আমাকে যেতে হবে।কিছু না বলে কল
কেটে দিয়ে আবার কাজ করতে লাগলাম।
কিছু সময় পর ফোনে আবার মেসেজ
আসলো;“অপেক্ষা করবো তোমার জন্য”।
মেসেজটা সিন করে রাখলাম।

অফিস টাইম শেষ করে নেহার দেয়া
ঠিকানায় গেলাম।মেয়েটা আবদারি
হলেও এমনিতে ভালো।অনেকটা
সময় ড্রাইভ করে আসলাম।
আমিঃহ্যাপী বার্থডে
নেহাঃথ্যাংক ইউ,আর আমার উপহার?
আমিঃএইযে(একটা ব্রেসলেট দিয়ে)
নেহাঃএটা আবার কি?
আমিঃব্রেসলেট
নেহাঃএটা কোনো গিফট?
আমিঃতো?
নেহাঃআমি ভেবেছিলাম কোনো বড়
কিছু দিবে।কিন্তু তুমি…
আমিঃদেখো…
নেহাঃতুমি মুডটাই নষ্ট করে দিলে।হোস্টেলে
চলে গেলাম আমি।আর এটা তোমার
কাছেই রেখে দাও।

আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই
চলে গেলো।চলে যাওয়ার পর গাড়িতে
বসতেই মনে হলো জান্নাতের কথা।
সামান্য এই ব্রেসলেট পেয়েই মেয়েটা
কতো খুশি হয়েছিলো।আর এখন সেই
ব্রেসলেট অন্য একটা মেয়েকে দিতেই
না নিয়ে উল্টো অপমান করলো।বসে
না থেকে জান্নাতের নাম্বারে কল দিলাম
কিন্তু ধরলো না।এভাবে আরো কয়েক
বার কল দিলাম কিন্তু একবারও ধরলো
না।হয়তো আমার উপর রেগে আছে।
থাকাটাই তো সাজে।সেখানে আর না
থেকে ড্রাইভিং করে বাসায় চলে আসলাম।
মাসখানেক এভাবেই চলে গেলো।

চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here