পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৯

0
680

পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ১৯
আবির হাসান নিলয়

অফিসে বসে কাজ করছি তখন বাসা
থেকে আম্মু কল দিয়ে বলল;বাসায়
সমস্যা হয়েছে নীলকে সাথে নিয়ে
তাড়াতাড়ি বাসাত চলে আয়।
কেবিনে বসে না থেকে ভাইয়াকে
সাথে নিয়ে দ্রুত বাসায় চলে আসলাম।
তবে বাসায় এসে অনেক বেশিই অবাক
হলাম।ছোট মা,চাচ্চু এবং ছোট মার
বাবার বাড়ির লোকজন চুপচাপ মাথা
নিচু করে বসে আছে।তবে তাদের মাঝে
ছোট মা কান্না করছিলো।মুহূর্তের মধ্যে
জান্নাতের কথা মনে পড়লো।কিছু
করেনি তো…!দাঁড়িয়ে না থেকে আম্মুর
কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করলাম….
আমিঃআম্মু কি হয়েছে?
আম্মুঃ………
ভাইয়াঃআম্মু নিলয়কে না বললে
আমাকে বলো,কি হয়েছে?
আম্মুঃজান্নাতের ছোটবেলার কথা
তোর মনে আছে?
ভাইয়াঃহ্যা
আম্মুঃজান্নাত সব জেনে গেছে
ভাইয়াঃকিহহ,আর কিভাবে জানলো?
আম্মুঃকিচ্ছু জানি না আমি।
ভাইয়াঃচাচ্চু কিভাবে জানলো?
চাচ্চুঃআজ অনেক ভোর বেলা এসে
বার বার জিজ্ঞাস করছিলো।কিন্তু
আমরা কেউ কোনো কথা না বলাই
শেষে বললো টেস্ট করতে হবে।কিন্তু
আমরা না করতেই বাসা থেকে চলে
যায়।অনেকবার নাফিসা আটকাতে
চেয়েছিলো কিন্তু শোনেনি।
ভাইয়াঃকোথায় গেছে?
ছোট মাঃজানিনা,তোমরা আমার
মেয়েকে এনে দাও।তোমাদের কাছে
আমি আমার মেয়ে ভিক্ষা চাইছি
তোমরা প্লিজ আমার মেয়েকে আমার
কাছে এনে দাও(কান্না করে)
আমিঃকি জেনেছে?
ভাইয়াঃতোকে আমি পড়ে বলবো
আমিঃএখন বল
ভাইয়াঃবললাম তো পড়ে বলবো।এখন
জান্নাতের কাছে যেতে হবে।
আমিঃহয়েছে কি বলবি তো?কিসের টেস্ট?

কেউ কোনো কথা বললো না।ভাইয়া
পকেট থেকে ফোন বের করে জান্নাতকে
কল দিলো।
ভাইয়াঃকোথায় আছিস?
জান্নাতঃ…………..
ভাইয়াঃআরে না,আমি জানতে চাইছি
ঐ মহিলাটার কি খবর?
জান্নাতঃ…………….
ভাইয়াঃকবে অপারেশন?
জান্নাতঃ…….
আমিঃকই তুই?
জান্নাতঃকে আপনি?
আমিঃআমি কে মানে?তুই জানিস
না আমি কে?
জান্নাতঃচিনতে পেড়েছি।
আমিঃতুই বাসায় কি বলেছিস?
জান্নাতঃযেটা সত্যি শুধুমাত্র সেটা
জানতে চেয়েছি।
আমিঃসত্যিটা কি?
জান্নাতঃসেটা তো আপনারা ভালো জানেন।
আমিঃদেখ মেজাজ কিন্তু আমার
খারাপ করবি না।কই আছিস সেটা বল।
জান্নাতঃহাসপাতালে
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃকাজ আছে
আমিঃঠিকানা দে
জান্নাতঃআপনি প্লিজ আমার কাছে
আসবেন না।
আমিঃশুধু আমি না,আমার চৌদ্দ গুষ্টি
যাবে।তুই ঠিকানা দিবি কিনা বল?
জান্নাতঃদেবো না
আমিঃঠিক আছে তোকে কিভাবে খুঁজে
বের করতে হয় সেটা আমি দেখছি।তবে
তোর জন্য যতোটা তোর আব্বু আম্মু
কষ্ট পাচ্ছে এর চাইতেও তোকে বেশি
কষ্ট দেবো আমি।

জান্নাতের থেকে কোনো কথা না শুনেই
কল কেটে দিলাম।
ভাইয়াঃআমি জানি কোথায় আছে।
ছোট মাঃকোথায় আছে?
ভাইয়াঃছোট মা তুমি শান্ত হও,আমি
দেখছি কি করা যায়।
ছোট মাঃতোরা আমার মেয়েকে এনে
দে।তাহলেই আমি শান্ত হবো।
ভাইয়াঃআমরা দেখছি।নিলয় চল
আমিঃকোথায়?
ভাইয়াঃজান্নাতের কাছে
আমিঃআরে হয়েছে কি সেটা কি
কেউ আমাকে বলবে?
ভাইয়াঃসাথে চল বলছি।

দাঁড়িয়ে না থেকে দুভাই বাসার বাইরে
এসে গাড়িতে উঠলাম।অনেকটা সময়
ড্রাইভ করার পর জিজ্ঞাস করলাম…
আমিঃকি হয়েছে?
ভাইয়াঃতোর কি কিছুই মনে নেই?
আমিঃকি মনে থাকবে?
ভাইয়াঃএইযে জান্নাত সত্যিকার অর্থে
চাচ্চু, ছোট মায়ের সন্তান না।
আমিঃকিহ?(অবাক হলাম)
ভাইয়াঃহ্যা,তাদের নিজেদের কোনো
সন্তান নেই।আর হবেও না।
আমিঃতাহলে জান্নাত কে?
ভাইয়াঃওকে চাচ্চু পেয়েছিলো।তাদের
কোনো সন্তান হবে না জেনে সেই পিচ্চি
মেয়েকেই নিজেদের মেয়ের মতো করে
বড় করে তুলেছে।
আমিঃআমাকে একবার বলতে পারতি
ভাইয়াঃজেনে কি করতি?
আমিঃতুই জানিস জান্নাত আমাকে ভালোবাসে
ভাইয়াঃআর তুই?
আমিঃআমিও ওকে….
ভাইয়াঃকি?
আমি;আমি ওকে ভালোবাসতে যাবো কেনো?
ভাইয়াঃসেই জন্যই বলেনি।
আমিঃএখন কি?
ভাইয়াঃজান্নাতকে বাসায় আনতে হবে।
আমিঃমানলাম জান্নাত আমাদের কাজিন
না।কিন্তু ওকে এসব কে বললো?
ভাইয়াঃসেটাও ওর থেকেই জানতে হবে
আমিঃযদি না বলে?
ভাইয়াঃতুই এসব ওকে বলেছিলি?
আমিঃআমি জানতামও না
ভাইয়াঃতাহলে ঠিকি বলবে
আমিঃকেনো?
ভাইয়াঃএকমাত্র তোর দোষগুলোই
জান্নাত কাউকে বলেনা।

কথাটা শুনেই পুরোপুরিভাবে চুপ হয়ে
গেলাম।ভাইয়ার কথাতে এক চুলও
মিথ্যা নেই।যখন ওকে মারতাম,ধরে
নিয়ে ফেলে দিতাম আঘাত পেলেও
সবাইকে মিথ্যা বলতো।সব দোষ নিজের
উপর নিতো।রাঙামাটির ঘটনা তো
আপনারা সবাই জানেন।রাতে ওকে
আমি নিয়ে গেলেও দোষটা পিচ্চিটা
নিজের উপরেই নিয়েছিলো।যাত্রাপথে
ভাইয়ার সাথে আর কোনো কথা হয়নি।
ড্রাইভ করতে করতে একটা হাসপাতালে
নিয়ে আসলো।
ভাইয়াঃনাম এখানে।
আমিঃএখানে জান্নাত?
ভাইয়াঃহ্যা
আমিঃওহহ
ভাইয়ার সাথে গাড়ি থেকে নেমে ভাইয়ার
পিছু পিছু হাটতে লাগলাম।একটা
রুমের মধ্যে এসে ভাইয়া কাকে জেনো
খুঁজতে লাগলো।এদিন সেদিক দেখার
পর আমাকে নিয়ে একটা মহিলার কাছে
গেলো।ভাইয়াকে দেখে মহিলা বলল…..
—ধন্যবাদ বাবা আমার মেয়েকে আমার
কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
ভাইয়াঃএসব আপনি জান্নাতকে বলেছেন?
—হ্যা,আর নাম জান্নাত না।আমার মেয়ের
নাম নাদিয়া।
আমিঃএই মহিলা আবার কে?
ভাইয়াঃনেহার মা
—শুধু নেহার না,নাদিয়ার মাও আমি।
আমিঃএই বা*** নাদিয়া আবার কে?
ভাইয়াঃজান্নাতের নাম,হয়তো উনারা
ওর নাম নাদিয়া রেখেছিলো।
আমিঃএতোদিন পর মেয়েকে কেনো
দরকার পড়লো?অসুস্থ আছেন টাকা
লাগবে বলে তাই?
—তোমরা যেটা মনে করো তাই।
আমিঃমন চাইছে তোর গলা টিপে
তোকে মেরে ফেলি।আমার পরিবারকে
অশান্তিতে রেখে হাসা হচ্ছে?
ভাইয়াঃজান্নাত কোথায়?
—নাদিয়া আমার জন্য মেডিসিন আনতে গেছে।

মহিলাটার হাসি দেখে অনেক বিরক্তি
হচ্ছিলাম।সুখের পরিবারকে কষ্ট দিয়ে
হাসাহাসি করছে।যখন মেয়েকে ফেলে
রেখে গেছিলো তখন তাদের মেয়ের
কথা মনে পরেনি।আর এখন অসুখে
পরে মরতে চলেছে এখন আসছে
মেয়ের খোজ নিতে।পাশে থাকা একটা
লাঠি হাতে নিয়ে মহিলাটির দিকে
এগিয়ে যেতেই ঠাসস করে দুটো মারলো।
ঘুরে দেখলাম জান্নাত মেরেছে।
জান্নাতঃমা হয় আমার।
আমিঃআর বাসায় যে মহিলাটি তোর
জন্য পাগলের মতো কান্না করছে
সে কি হয় তোর?
জান্নাতঃকিছুই না।
আমিঃজান্নাত এই মহিলা তোকে শুধুমাত্র
ব্যবহার করছে।দেখবি সুস্থ হওয়ার পর
তোকে আবার ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে।
জান্নাতঃএসব জানতে চেয়েছি?
আমিঃএইসব মহিলারা শুধুমাত্র টাকার
জন্য এসব করে বেড়াই।বাসায় চল তোর
আম্মু আব্বু কান্না করছে।
জান্নাতঃউনারা আমার কেউ না।এই
মহিলাটিই আমার মা।আর একবারো
আমার মায়ের নামে কিছু বলবেন না।

আমাদের পাশ দিয়ে গিয়ে মহিলাটির
কাছে গিয়ে বসলো।বাইরে থেকে যে
নাস্তা এনেছে সেগুলো মহিলাটাকে
খাইয়ে দিতে লাগলো।
ভাইয়াঃজান্নাত বোন আমার প্লিজ
বাসায় চল।আমরা তো উনার আগে
থেকেই যত্ন নিচ্ছি।
জান্নাতঃপ্লিজ আমাদের বিরক্তি করবেন না।
এইবার মাথার রাগটা চরম হারে বেরে
গেলো।বাম হাত দিয়ে জান্নাতের গলা
চেপে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে ডান হাত
দিয়ে মুখ চেয়ে ধরে বললাম;
আমিঃখুব ভালো লাগছে তাই না।যখন
রাস্তায় পরে ছিলি তখন তোর এই মা
কোথায় ছিলো?যখন আস্তে আস্তে
বড় হচ্ছিলি তখন তোর মা কোথায়
ছিলো?যখন অসুখে পড়লে ছোট
মা তোর কাছে থেকে এক মুহূর্তের
জন্য ছেড়ে যেতো না তখন এই
মহিলা কোথায় ছিলো?কিন্তু যখন
বড় হয়েছিস,মেডিকেলে পড়াশোনা
করছিস আর এখন তোর কাছে আসছে।
আর তুই এই মহিলাটার কথা শুনছিস?

রাগের মাথায় দেয়ালের সাথে চেপে
ধরে কষে কয়েকটা থাপ্পড় দিতেই
ভাইয়া এসে আটকালো।কিন্তু রাগটা
সামান্যতম কমেনি। পুনরায় মারতে
যাবো তখনি হাসপাতালের গার্ড’স এসে
আমাকে ধরলো।জোর করে টানতে
টানতে নিয়ে যাবে তখন বললাম;
আমিঃতোকে অনেক কষ্ট পেতে হবে।
যার জন্য এসব করছিস সেই মহিলাটাই
তোর থেকে সব কেড়ে নিবে।
গার্ড’স আর কোনো কথা বলার সুযোগ না
দিয়ে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে এসে
অন্য একটা রুমের মধ্যে আটকিয়ে
দিলো।তখন জান্নাত না আসলে লাঠি
দিয়ে ঐ মহিলাটাকে এতোক্ষণে মেরেই
ফেলতাম।বদ্ধ একটা রুমের মধ্যে রাগটা
বেড়েই চলেছে।অনেকটা সময় রুমের
মধ্যে থাকার পর দরজা খুলে দেয়া
হলো।কয়েকটা পুলিশ এসেছে।বুঝতে
বাকি রইলো না কেনো আসছে।হাতে
হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়
ভাইয়া ইশারায় বলল;আমি আসছি।
পুলিশের গাড়িতে বসিয়ে দ্রুত থানায়
নিয়ে গেলো।থানায় নিয়ে আসার সাথে
সাথে ভাইয়া নিজেও থানায় আসলো।
ইন্সপেক্টরের সাথে কথা বলে আমার
কাছে আসলো।
ভাইয়াঃউকিল লাগবে কিংবা জান্নাত
যদি এসে বলে তাহলে ছেড়ে দিবে।
আমিঃউকিল ঠিক কর,জান্নাতকে
বলার কোনো দরকার নেই।
ভাইয়াঃতাহলে তোকে ছাড়াতে সেই
বিকেল হয়ে পড়বে।
আমিঃসমস্যা নেই,আমি এখানে থাকতে পাড়বো।
ভাইয়াঃআমি কোর্ট থেকে উকিলের
সাথে কথা বলে আসছি।
আমিঃহুম
ভাইয়া কথা বলে থানা থেকে চলে গেলো।

********জান্নাতের কথা*********
নিলয়কে গার্ড’স নিয়ে যাওয়ার পর চুপচাপ
মহিলাটার কাছে বসে নাস্তা খাইয়ে দিতে
লাগলো।
মহিলাঃমারে ছেলেটা ঠিকিই বলছিলো,
তোকে তাদের কাছে যাওয়া দরকার।
জান্নাতঃমা তুমি ওদের নিয়ে চিন্তা
করো না।ঐ বাসার সবাই আমাকে
অনেক বেশিই ভালোবাসে।উনাদের সব
বুঝিয়ে বললে মেনে যাবে।
মহিলাঃকিন্তু ছেলেটা যে তোর সাথে
এমনটা করলো সেটা মোটেও ঠিক
করেনি।
জান্নাতঃবাদ দাও।তুমি এগুলো খেয়ে
ঔষধটা খেয়ে নাও।
মহিলাঃহুম

দুজন পাশাপাশি বসে কথা বলছে
তার কিছু সময় পর একটা গার্ড এসে
বলল;নিলয়কে পুলিশের হাতে তুলে
দেয়া হয়েছে।জান্নাত তাদের কিছু না
বলে তার মাকে বলল;
জান্নাতঃমা তুমি থাকো আমি থানা
থেকে আসছি।
মহিলাঃকেনো মা?
জান্নাতঃওকে ছাড়াতে হবে।
মহিলাঃযে তোকে মারলো তাকেই?
জান্নাতঃঅনেক ভালোবাসি যে।
মহিলাঃসাবধানে যাস
জান্নাতঃহুম

হাসপাতালে না থেকে একটা রিক্সা
নিয়ে থানাতে গেলো।প্রথমে নিলয়কে
একবার দেখে ইন্সপেক্টরের কাছে গেলো।
জান্নাতঃস্যার,মি. নিলয়কে ছেড়ে দিন।
—কেনো?
জান্নাতঃকারণ সে আমার গায়েই হাত
তুলেছে।এখন আমিই তাকে ছেড়ে দিতে বলছি।
—হাসপাতালের মধ্যে মারধর,কে হয়?
জান্নাতঃহাসবেন্ড
—এমন মারধর বাসায় করতে বলবেন।
কনস্টেবল উনাকে ছেড়ে দিন।
—জ্বি স্যার।
জান্নাত উঠে কনস্টেবলের সাথে আসলো।

*******নিলয়ের কথা**********
জান্নাতকে দেখে মেজাজটা অনেক
বিঘরে গেলো।ইচ্ছা করছে এখনি
মারতে।আমার রাগি চেহারা দেখে
জান্নাত নিজে থেকেই আগে বলল;
জান্নাতঃদয়া করে এখানে অন্তত এমন
কিছু করবেন না জেনো পুনরায় জেলে
আটকাই। আমার সাথে বাইরে আসুন।
জান্নাত হাত ধরে আমাকে বাইরে নিয়ে
আসলো।থানা থেকে বের হতেই কষে
দুটো থাপ্পড় দিয়ে ভাইয়াকে কল দিলাম।
আমিঃথানায় আয়
ভাইয়াঃআধা ঘণ্টা অপেক্ষা কর আমি
উকিল নিয়ে আসছি।
আমিঃআমাকে ছেড়ে দিয়েছে
ভাইয়াঃঠিক আছে আসছি।
কল কেটে দিয়ে জান্নাতে বললাম।
আমিঃচুপচাপ আমার সাথে বাসায় যাবি।
না হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
জান্নাতঃবললাম তো যাবো না।আপনারা
সবাই আমাকে এতোদিন মিথ্যা বলছেন।
আপনাকে তো ভালোবাসতাম,আপনি
কি একটিবারের জন্য আমাকে বলতে
পাড়লেন না?
আমিঃআমি নিজেও এসব জানতাম না।
জান্নাতঃআমি এখন যেতে পাড়বো না।
আমিঃপ্লিজ এমনটা করিস না।বাসায়
ছোট মা অনেক কান্না করছে।
জান্নাতঃযাবো না

আমাকে রেখে হাটতে যাবে তখনি
হাত ধরে কাছে টেনে নিলাম।
আমিঃবললাম তো আমার সাথে যাবি।
জান্নাতঃদেখুন আমার মা অসুস্থ।
আমিঃজাহান্নামে যাক ঐ মহিলা।
জান্নাতঃআর একটিবার আমার মাকে
নিয়ে বাজে কথা বলবেন না।
আমিঃবলবো না,কিন্তু চল আমার সাথে।
জান্নাতঃযাবো না।হাত ছাড়ুন।
আমিঃউঁহু
দুজনের ঝগড়া কারার মাঝেই ভাইয়া
এসে হাজির হলো।
আমিঃগাড়িতে উঠ
জান্নাতঃযাবো না আমি
আমিঃতোর ঘাড় যাবে।

কোলে নিয়ে গাড়ির মধ্যে বসিয়ে দিয়ে
শক্ত করে চেপে ধরে রইলাম।আমাদের
গাড়িতে উঠতেই ভাইয়া গাড়ি চালাতে
শুরু করলো।
জান্নাতঃআপনি অনেক ভুল করছেন।
আমিঃজানি আমি
জান্নাতঃএখন আমার মায়ের কাছে
থাকা অনেক জরুরী।
আমিঃআগে তুই বাসায় গিয়ে সবার
থেকে ক্ষমা চাইবি।যদি তারা তোকে
আসতে দেয় তাহলে আসবি।
জান্নাতঃবা*** দিবে আমাকে।
আমিঃঠাসসস,মুখে কোনো বাজে
কথা না ওকে?
জান্নাতঃতোকে মারি আমি?
আমিঃহ্যা মারো..।(গাল এগিয়ে দিয়ে)
জান্নাতঃসর কাছে থেকে।
আমিঃতোকে ছাড়াছাড়ি নাই।(কাদে হাত দিয়ে)
জান্নাতঃশুয়োর
আমিঃছি:,কি বলে এসব।
জান্নাতঃরাগাবি না আমাকে।
আমিঃআচ্ছা আর কিছু বলবো না।
ভাইয়াঃএখন উনার কি অবস্থা?
জান্নাতঃভালো না।
ভাইয়াঃঅপারেশন কবে?
জান্নাতঃখুব তাড়াতাড়িই।
ভাইয়াঃটাকা কই পাবি?
জান্নাতঃ…….. (চুপ করে রইলো)
ভাইয়াঃকি হলো?
আমিঃআমরা কিন্তু ঐ মহিলার জন্য
তোকে একটা কানা কড়িও দেবো না।
জান্নাতঃতোর থেকে চেয়েছি আমি?
আমিঃচাইতে পাড়িস তাই আগে থেকে বললাম।
জান্নাতঃতোকে আমি….

হাত দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে লাগলো।
ব্যথা লাগছিলো তাই শক্ত করে জড়িয়ে
ধরে রাখলাম।
জান্নাতঃতুই আমাকে স্পর্শ করবি না।
আমিঃআমার ঠেকা পড়ছে তোকে ছোঁয়ার
মারছিলি আমাকে তাই ধরে রাখছি।
জান্নাতঃমারবো না ছার আমাকে
আমিঃশোন একটা কথা বলার ছিলো
জান্নাতঃকথা আমার তোদের বলা দরকার,
এতো বছর পর যখন আমি জানতে
পারলাম যারা আমাকে পালন করে
বড় করেছে তারা আমার আসল বাবা
মা না।ওদিকে আমার মা ক্যান্সারজনিত
রোগে জীবনের সাথে লড়াই করছে আর
তোরা আমাকে এভাবে তুলে নিয়ে যাচ্ছিস।
(কান্না করে)
আমিঃতুই বাসা থেকে আসার সময় যদি
সবাইকে ভালো করে বলে আসতি তাহলে
কোনো সমস্যা হতো না।
ভাইয়াঃতোরা দুজন চুপ করবি?
জান্নাতঃআমাকে প্লিজ আমার মায়ের
কাছে দিও আসো?
আমিঃআর একবার ঐ মহিলার কথা বললে
একদম গলা টিপে মেরে ফেলবো।
জান্নাতঃ…..?(কান্না করছে)
আমিঃচুপ(ধমক দিয়ে)

কিছু না বলে চুপ করে রইলো।মনমরা
হয়ে বসে থাকায় কাদে হাত দিয়ে শান্তনা
দিতে লাগলাম।যদিও আমার কথা শোনার
ওর কোনো ইচ্ছা নেই।তবে আমাকে এবং
আমার রাগটাকে অনেক বেশিই ভয় পায়।
জানিনা আমার মতো ছেলেকে এখনো
কিভাবে ভালোবাসে।বাসার কাছাকাছি
আসতেই জান্নাত চোখেরজল মুছে নিলো।

চলবে………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here