পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ২২

0
1958

পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ২২
আবির হাসান নিলয়

জান্নাতঃঐ কুত্তা উঠ ঘুম থেকে।
আমিঃঘুমের মধ্যে ডিস্টার্ব করিস না।
জান্নাতঃউঠবি তুই?(লাথি মেরে)
আমিঃকি হয়েছে?
জান্নাতঃতোরে যে কইলাম হাসপাতালে
মায়ের কাছে থাকতে। কিন্তু তুই এখানে
কি করছিস?
আমিঃদেখতেই তো পাড়ছিস ঘুমাচ্ছি।
জান্নাতঃশুয়োর,রাগাবি না আমাকে।
আমিঃআর একবার শুয়োর বললে
তোর খবর আছে।
জান্নাতঃকি করবি তুই?
আমিঃভালোবাসবো ডার্লিং
জান্নাতঃকুত্তা,তুই আমার কথার
উত্তর দে আগে।
আমিঃকি বল?
জান্নাতঃতুই বাসায় কেনো?
আমিঃআন্টি বলল,বাসায় চলে যেতে।
তাই লাঞ্চ করিয়ে বাসায় আসছি।
জান্নাতঃআন্টি মানে?
আমিঃমানে তোর মা আরকি।
জান্নাতঃকিছু বলিসনি তো?
আমিঃনারে,আর তোর মা অনেক
বেশিই ভালো।দেখবি খুব তাড়াতাড়ি
সুস্থ হয়ে উঠবেন।
জান্নাতঃকি হয়েছে বলতো?
আমিঃকি হবে?
জান্নাতঃতুই মাকে আন্টি বলছিস
আবার উনার জন্য সুস্থতা কামনা
করছি,কাহিনী কি?
আমিঃকারণ তিনি তোর মা(কোলে বসিয়ে)
জান্নাতঃমা কিছু বলেছে?
আমিঃহ্যা,তোদের পরিবার এবং তোর
বাবার কথা বলছিলো।
জান্নাতঃআমাকে কেনো বলেনা?
আমিঃতুমি পিচ্চি তাই(কাদে হাত রেখে)
জান্নাতঃহু,আইছে বড় মানুষ।
আমিঃকিউটি(দুজনের নাক ঘষা দিয়ে)
জান্নাতঃআমার সাথে এমন না করে
যাকে বিয়ে করবি তার সাথে কর।
আমিঃতুমিই তো বউ সোনা।
জান্নাতঃহো বউ থাকলে এতোদিন
অনেক কিছু হতো।
আমিঃকি হতো শুনি?
জান্নাতঃবাচ্চা হতো,আমি মা হতাম
আর তুই বাবা হতিস।কিন্তু সেসব আর
কখনো সম্ভব হবে না।
আমিঃকেনো হবে না?
জান্নাতঃকারণ কুত্তা তুই আমাকে ডিভোর্স
দিছিস মনে নাই?
আমিঃওলে আমার বউরে,পিচ্চিটা
তো দেখি রাগও করতে পাড়ে।
জান্নাতঃবউ বলবি না,আমরা এখন
শুধুমাত্র কাজিন ছাড়া কিছু না।
আমিঃচুপ,এখন ফ্রেস হয়ে আয়।
বাসায় এসেই আমার পেছনে লেগেছে।
জান্নাতঃতোর পেছনে কি এমন আছে
যার জন্য তোর পেছনে পড়তে হবে?
আমিঃমজা লস?
জান্নাতঃউহু ডিয়ার ভাইয়া(নাক টেনে)
আমিঃথু,বরকে কেউ ভাই বলে?
জান্নাতঃআমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে ভাইয়া?
আমিঃআর একবার ভাইয়া বললে
কানের নিচে বাজাবো।
জান্নাতঃছুয়েই দেখ,তারপর দেখাবো।
আমিঃআমার কোলেই তো বসে আছো।
জান্নাতঃফট

ধাক্কা মেরে আমাকে বিছানার উপর
ফেলে দিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলো।
বসে না থেকে জান্নাতের রুমে গিয়ে
ওর ফোনটা নিয়ে টুকটাক ঘাটাঘাটি
করতে করতেই জান্নাত রুমে আসলো।
জান্নাতঃআয় লাঞ্চ করবো।
আমিঃতুই কর,আমি আসার পথে
বাইরে থেকে খেয়ে আসছি।
জান্নাতঃওকে

কথা না বাড়িয়ে রুমের বাইরে চলে
গেলো।জান্নাতের রুমে অর্ধ শুয়া
অবস্থায় ফোন টিপতে লাগলাম।
হঠাৎ একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে
জান্নাতের ফোনে কল আসলো।
—হ্যালো,আপু..?
আমিঃআপু কে?
—আপনি কে?
আমিঃযাকে কল করছেন তার হাসবেন্ড।
—ও নিলয় ভাইয়া?
আমিঃআপনি কে বোইন?
নেহাঃআমি নেহা
আমিঃও সেকেন্ড বউ
নেহাঃমানে?
আমিঃবউয়ের বোন তো শালি হয়।আর
শালিকে তো মজা করে বউ বলাই যায়।
নেহাঃফাজলামো বাদে দেন।
আমিঃকেনো গো?

কিছু একটা বলতে যাবে তখনি জান্নাত
ছোঁ মেরে আমার থেকে ফোনটা নিয়ে
আমার দিকে তাকিয়ে বলল;
জান্নাতঃশুয়োর প্রেম করবি তোর ফোন
দিয়ে কর,আমার ফোনে কি?
আমিঃপ্রেমিকা না বা**,দ্বিতীয় বউ।
জান্নাতঃদেখাচ্ছি আমি,এই মেয়ে
তুমি কি দুনিয়ায় অন্য কোনো ছেলে
পেলে না?একটা ছ্যাঁচড়া ছেলের প্রেমে
পড়তে গেলে কেনো?
—………….
জান্নাতঃওহ বোন তুই,হ্যা বল।
—…………..
জান্নাতঃতোর জব করতে হবে না।
আমি ভাইয়াকে বলে দেবো।
আমিঃফোনটা লাউডস্পিকার দাও
জান্নাতঃহু
নেহাঃকিন্তু মায়ের অপারেশনের জন্য টাকা?
আমিঃতোমার বোনকে আমার সাথে
সারাজীবন থাকতে হবে তাহলে দেবো।
জান্নাতঃচুপ করবি তুই?
নেহাঃনিলয় ভাইয়া কি বলে?
জান্নাতঃও কিছু না,নিলয়ের সাথে
আমার কথা হয়েছে।অপারেশনের
সময় টাকার ব্যবস্থা করবে।
নেহাঃকোনো ডিমান্ড ছাড়াই?
জান্নাতঃজানিনা,মায়ের সাথে আজ
দেখা করার পর থেকেই কেমন জানি
হয়ে গেছে।
আমিঃশ্বাশুরি মা বলে কথা।
জান্নাতঃবাদর চুপ,আর বোন তুই কোনো
টেনশন করিস না
নেহাঃএখন কোথায় আছো আপু?
জান্নাতঃএকটা বাসায় উঠছি।
নেহাঃওহ
জান্নাতঃতুই মায়ের কাছে থাক,সন্ধ্যার
সময় তোকে বাসায় নিয়ে আসবো।
নেহাঃআচ্ছা,রাখছি এখন
আমিঃবাই শালি
নেহাঃবাই দুলাভ…..

নেহা কিছু একটা বলতে যাবে তার
আগেই কল কেটে দিয়ে চুল ধরে
টান দিয়ে বসালো।
আমিঃব্যথা লাগে না মনে হয়?
জান্নাতঃতুই উল্টাপাল্টা কথা কেনো বলিস?
আমিঃযেটা সত্যি সেটাই তো বললাম।
জান্নাতঃসত্যি ওটা না,সত্যি হলো আমাদের
মাঝে ডিভোর্স হয়ে গেছে।
আমিঃকিন্তু ভালো তো বাসিস।
জান্নাতঃএকটু না
আমিঃতাহলে আমার কথা কেনো শুনিস?
জান্নাতঃকারণ তুই মায়ের চিকিৎসা করার
জন্য টাকা এনে দিবি।
আমিঃতোর কি মনে হয়?তোর জন্য আমি
তোর মায়ের চিকিৎসা করাবো?
জান্নাতঃতাছাড়া কি?
আমিঃএকটা সময় ছিলো,শুধুমাত্র তোর
জন্য উনার চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু এখন নিজের জন্য উনাকে সুস্থ
করে তুলবো।কারণ তুই এমনিতেও
আমার ছিলি,আছিস আর থাকবি।
জান্নাতঃছিলাম,বাট এখন নাই।
আমিঃতাহলে ছেরে যাচ্ছিস না কেন?
জান্নাতঃতুই তো লেগে আছিস?
আমিঃকারণ তুমি যে আমার একমাত্র
কিউট বউ(হাত টেনে বুকের উপর ফেললাম)
জান্নাতঃছাড় কুত্তা(উঠে গেলো)
আমিঃমাফ করলাম যা।

কিছু না বলে কিছু সময় চুপচাপ
বসে রইলো।আমিও ফোনটা নিয়ে
টিপছি তখন আবার বলল;
জান্নাতঃবাজার করতে হবে।
আমিঃকিসের?
জান্নাতঃখাওয়ার জন্য কিছু তো
রান্না করতে হবে।
আমিঃওকে করে নিয়ে আয়
জান্নাতঃতুই যাবি আমার সাথে।
আমিঃতুই রাস্তা চিনিস না?
জান্নাতঃতাতে কি,তুই যাবি মানে যাবি।
আমিঃএমন করে শুধুমাত্র বউয়েরাই
স্বামীদের উপর অধিকার খাটাই প্রিয়
জান্নাতঃএরকম শুধু ভাইবোন করে।
আমিঃযা মিথ্যুক
জান্নাতঃচল যেতে হবে।
আমিঃটান দে
জান্নাতঃহু

জান্নাত হাত ধরে টান দেয়ার আগেই
পিচ্চিটাকে টান মেরে বিছানার উপর
ফেলে দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখলাম।
আমিঃদিন দিন এতো খিটখিটে হয়ে
যাচ্ছিস কেনো শুনি?
জান্নাতঃজানিনা
আমিঃতোকে এমনটা একদম মানায়
না।তুই আগের মতো হয়ে যা।
জান্নাতঃতুই তো বললি,তুই এখনকার
আমাকে তোর ভালো লাগে।
আমিঃসেটা তো বাহ্যিক কিন্তু তো মজা
করা,ভুল করা,রাগারাগি করা অনেক
ভালো লাগতো।কিন্তু এখন তুই অনেক
বেশিই জেদ করিস যেগুলো আমার
ভালো লাগে না।
জান্নাতঃনা লাগলে নাই।এখন চল।
আমিঃএকটা ভালোবাসার পরশ দে।
জান্নাতঃভাগ
আমিঃভাগ অংক তো পাড়ি আমি।
জান্নাতঃকুত্তা এটা অংক না,তোকে
সরতে বলছি আমি।
আমিঃসরবো না,ভালোবাসি তো।
জান্নাতঃআমি বাসি না।
আমিঃআমাকে ছুঁয়ে বল।
জান্নাতঃতুই বাজারে যাবি কিনা বল?
আমিঃমনে রাখিস,দিলি না।
জান্নাতঃআচ্ছা।

জান্নাতকে ধরে না রেখে ছেড়ে দিয়ে
ওর সাথে আমি নিজেও উঠলাম।
দুজন বাসা থেকে বের হয়ে হেটেই
বাজারে গেলাম।বাজার থেকে কিছু
কাঁচামাল কিনে নিলাম।বাজার করে
বাসায় আসবো তখন বাড়িওয়ালার
আন্টির সাথে দেখা।সালাম দেয়ার
পর আমাদের জিজ্ঞাস করলো…
আন্টিঃকোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?
আমিঃসমস্যা বাসাতে নাই,সমস্যাটা
করছে আমার পি….(মুখ ধরলো)
জান্নাতঃনা আন্টি,কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
আন্টিঃবাবা কিছু বলতে চাইলো
জান্নাতঃওর মাথায় একটু সমস্যা
আছে।মাঝেমধ্যে উল্টাপাল্টা কথা বলে।
আন্টিঃওহহ
জান্নাতঃআচ্ছা আন্টি আসি।
আন্টিঃএক সময় বাসায় এসো।
জান্নাতঃআসবো

হাত ধরে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে
আসলো।রাগ দেখিয়ে বাজারের ব্যাগগুলো
হাত থেকে নিয়ে মারার জন্য হাত
তুললেও পরে আবার নামিয়ে নিলো।
জান্নাতঃছ্যা,তোর সাথে এখানে থাকায়
আমার জন্য ঠিক হচ্ছে না।
আমিঃএখানে কি আমি আসতে চাইছিলাম?
জান্নাতঃআমি শখ করে আনছি?
আমিঃআমার জায়গাতে তুই অন্য
কাউকে ডেকে নে।
জান্নাতঃহ্যা,নেহা আসবে।দুইবোন
থাকবো এখানে।
আমিঃমাসে মাসে বাসা ভাড়া দিতে
পারবোনা আমি বলে দিলাম।
জান্নাতঃকেনো দিবি না?
আমিঃকেনো দেবো?
জান্নাতঃকারণ তুই আমার হাস….
আমিঃথেমে গেলি কেনো?
জান্নাতঃমুখ ফসকে বের হয়ে গেছে।
আমিঃআমি এখান থেকে কোথাও যাবো না।
জান্নাতঃতাহলে চুপচাপ থাকবি
আমিঃকেনো থাকবো?(কাছে টেনে এনে)
জান্নাতঃআমার এই মিথ্যা বর বউয়ের
অভিনয় করতে ভালো লাগছে না।
আমিঃতুই চাইলে আবার আমাদের
বিয়ে হবে(সামনে থেকে চুল সরিয়ে দিয়ে)
জান্নাতঃএতো কেয়ার করার দরকার
নেই।যখন কাছে ছিলাম তখন তো মার,
অবহেলা ছাড়া কিছুই পেতাম না।
আমিঃওসব আমি ভুলে গেছি তুইও
ভুলে যা।
জান্নাতঃডিভোর্স তো ভুলতে পাড়বো না।
আমিঃভালোবাসিস আমাকে?
জান্নাতঃনা
আমিঃকিন্তু আমি বাসি।
জান্নাতঃতুই ভালোবাসবি মিমি আপুকে,
তোর অফিসের স্টাফ নিলাকে।আবার
এদিকে তুই আমার ছোট বোনের সাথেও
চিট করতে চাইছিলি।
আমিঃজীবনে একজনকে তো দরকার।
জান্নাতঃতো তাদেরকেই বিয়ে কর।
আমিঃসে একজনকে তো পেয়েছি।
জান্নাতঃলাগবে না।
আমিঃজানিস ভালোবাসা কি?
জান্নাতঃভালোবাসা বলতে কিছুই নেই
সবটাই মহো।
আমিঃপাগলিটা অনেক রাগ করছে
নাকি?(গাল টেনে দিয়ে)
জান্নাতঃবলছি না আমাকে ছুঁইবি না।
আমিঃতো কাকে স্পর্শ করবো?(কাদে হাত রেখে)
জান্নাতঃযাদের বিয়ে করবি তাদের।
আমিঃআমার বিয়ে তো হয়ে গেছে।
জান্নাতঃভালো
আমিঃআমার একটা পাপ্পি লাগবে।
জান্নাতঃপারবো না
আমিঃদিবি না??
জান্নাতঃনা
আমিঃআমার মরে যাওয়াই ভালো,তুই
আজ ঘুমানোর পর সত্যি সত্যি কিছু
একটা করে নেবো।
জান্নাতঃমরার সময় কোনো কিছু লিখে
মরিস।আমার কাদে জেনো না আসে।
আমিঃঠিক আছে,আলবিদা।

জান্নাতকে রেখে রুমে চলে আসতে
যাবো তখনি পেছন থেকে হাত ধরে
টান মেরে কাছে নিয়ে গেলো।কিছু
বুঝে উঠার আগেই দুজনের ঠোঁট
জোরা এক করে নিলো।আহহ জান্নাতকে
রাগানোর জন্য আরেকটা টপিক
পেয়ে গেলাম।অনেকটা সময় থাকার
পর জান্নাত ধাক্কা দিয়ে দূরে ঠেলে
দিলো।ছেড়ে দিতেই থু থু ফেলে বললাম;
আমিঃছি:,একটা পরপুরুষকে একা
পেয়ে এমনটা করতে পাড়লি? সত্যি
বলতে তোর আসলে ক্যারে…..
জান্নাতঃঠাসসস

আর কিছু বলার আগেই সজোরে
থাপ্পড় মারলো।অনেক বেশিই জোরে
মারার কারণে কয়েক পা পেছনেও
চলে আসছি বটে।জান্নাতের দিকে
তাকিয়ে দেখলাম চোখে জল টলমল
করছে।যখন তখন বৃষ্টি গড়িয়ে পড়বে।
কিছু একটা বলতে যাবো তখনি অনুভব
করলাম ঠোঁট দিয়ে কিছু একটা গড়িয়ে
পড়ছে।হাত দিয়ে স্পর্শ করতেই দেখলাম
রক্ত বের হচ্ছে।
জান্নাতঃতোকে ভালোবাসি বলেই তোর
সব ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার
চেষ্টা করি।আর আজ সেই তুই
কিনা আমার ক্যারেক্টার নিয়ে কথা
বলছিস?আমি এমনটা কখনোই
এক্সপেক্ট করিনি নিলয়…

চোখ থেকে দুফোটা জল গড়িয়ে
পড়তেই দ্রুত রুমে চলে গেলো।
আমাকে কিছু একটা বলার সুযোগটাও
দিলো না।পিছু পিছু ডাকতে লাগলাম
কিন্তু না শুনে রুমে গিয়ে ভিতর
থেকে লক দিয়ে দিলো।একরাশ
ডিপ্রেশন নিয়ে রুমে চলে আসলাম।
মেয়েটা হঠাৎ করেই এমন রেগে
যাবে কখনো ভাবতেও পারিনি।
আজ বুঝতে পাড়ছি মেয়েদের আর
যাই বলি না কেনো কখনো তাদের
ক্যারেক্টার নিয়ে বাজে কথা বলা
যাবে না।বললে নিশ্চয় এমন করে
পুনরায় কষে একটা খেতে হবে।
এসব ভাবতে ভাবতে চোখটা লেগে
গেছে তখন অনুভব করলাম কেউ
একজন ঠোঁটে স্যাবলন দিয়ে পরিষ্কার
করছে।চোখটা খুলে দেখলাম জান্নাত।
চোখে জল থাকার পরেও মেয়েটা
আমার সেবা করে যাচ্ছে,যে আমি
কিনা কিছুক্ষণ আগেই তার সম্মান
নিয়ে কথা শুনিয়েছি।
আমিঃসরি
জান্নাতঃনিলয় তোকে আমি ভালোবাসি,
কিন্তু তাই বলে তুই তো আমাকে এসব
বলতে পাড়িস না।তুই এমন কাউকে
দেখাতে পাড়বি যার সাথে আমি কোনো
ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আছি?
আমিঃসরি বললাম তো
জান্নাতঃআমি হাসপাতালে যাচ্ছি
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃনেহাকে আনতে হবে,এখানে
ছাড়া অন্য কোথায় থাকবে…!
আমিঃআসবো কি?
জান্নাতঃইচ্ছা,জোর করবো না।
আমিঃঠিক আছে আমি ফ্রেস হয়ে
বের হচ্ছি তুইও রেডি হো।
জান্নাতঃহুম

ঠোঁটে মেডিসিন লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
শুয়ে না থেকে ড্রেস পড়ে নিলাম।বাইরে
এসে দেখলাম জান্নাত অপেক্ষা করছে।
আমি আসতেই একসাথে বাসার বাইরে
এসে বাসা লক করে হাসপাতালে রওনা
দিলাম।এতো টাইমে দুজনের কোনো
কথা হয়নি।আমি ইচ্ছা করেই বলিনি,
মেয়েটার মুড ঠিক নেই।যখন ঠিক হবে
তখন কথা বলে নিবো।এখন চুপচাপ
থাকায় ভালো। হাসপাতালে এসে প্রথমেই
আন্টির কাছে চলে গেলাম।দেখলাম
নেহা পাশে বসে আছে।আমাদের দেখে
নেহা দাঁড়িয়ে গেলো,তখন আন্টি বলল;
আন্টিঃমা তোরা এখন কেনো?
জান্নাতঃসারাদিন দেখতে আসতে পারিনি
তাই আসলাম এখন।
আন্টিঃজামাই বাবা আমার সব যত্ন নিছে তো।
জান্নাতঃমা,ও তোমার মেয়ের জামাই না।
ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে জান্নাতকে দেখলাম
কিন্তু এতে ওর কোনো আক্ষেপ নেই।
নেহাঃকিন্তু আপু স্যার বললো তো….
আমিঃনেহা চুপ থাকো।
জান্নাতঃকি বলেছে?
নেহাঃবলল,তোমাদের মাঝে সব ঠিক
ঠাক হয়ে গেছে।
জান্নাতঃকিচ্ছু হয়নি।
আন্টিঃমারে পারিবারিক সমস্যা একটু
আকটু হবেই।তাই বলে….
জান্নাতঃতাই বলে ডিভোর্স কেউ দেয় না।
আমিঃআন্টি প্লিজ চুপ করেন।
আন্টিঃহুম,কিন্তু বাবা তোমার ঠোঁটে
কি হয়েছে?
আমিঃএকটু লেগেছে,সমস্যা নেই।
জান্নাতঃমা নেহাকে সাথে নিয়ে যাচ্ছি।
আন্টিঃকোথায়?
জান্নাতঃদুজন একটা বাসায় উঠছি সেখানে।
আন্টিঃআচ্ছা,কিন্তু আমারো যে এই বেডে
শুয়ে থাকতে আর ভালো লাগে না।
জান্নাতঃঅপারেশন পর ছাড়া হবে না।
আচ্ছা মা এখন আসি তাহলে?
আন্টিঃহ্যা সাবধানে যাস
জান্নাতঃনেহা চল
আন্টিঃনিলয় বাবা তুমি একটু দাড়াও।

আমাদের দিকে একটু রাগি চেহারা নিয়ে
দেখার পর নেহাকে সাথে নিয়ে চলে গেলো।
দুজন চলে যাওয়ার পর বলল;
আন্টিঃতোমাদের মাঝে কি সত্যি ডিভোর্স হয়েছে?
আমিঃনা,শুধুমাত্র ভুল বোঝাবুঝি।
আন্টিঃবলছো না কেনো?
আমিঃসময় হলে বলবো আন্টি।কিন্তু
আপনি ওকে বলবেন না প্রমিজ করেন।
আন্টিঃআমি বললেও বিশ্বাস করবে না।
আমিঃহুম
আন্টিঃআমার মেয়েটাকে বেশি কষ্ট দিও
না বাবা।হয়তো ওর কাছে সব আছে কিন্তু
তোমাকে অনেক বেশিই ভালোবাসে।
আমিঃআমি জানি আন্টি।
আন্টিঃআচ্ছা এখন যাও না হলে পরে
তোমার উপর রাগারাগি করবে।
আমিঃওকে,মেডিসিন খেয়ে নিবেন।

কথা না বাড়িয়ে বাইরে চলে আসলাম।
জান্নাত নেহা আগে থেকেই গাড়িতে
ছিলো।তবে অবাক হলাম যখন জান্নাত
ড্রাইভিং করতে বসছে।কিছু না বলে
তার পাশে বসলাম।আমাকে কিছু না
বলে ড্রাইভ করে বাসায় চলে আসলো।
নেহাকে সাথে নিয়ে পাশের রুমে গেলো
আর আমি ওমনি সোফার উপর বসলাম।

চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here