পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ৪
আবির হাসান নিলয়
অনেক রাত অবধি ফোন টিপে
ঘুমানোর জন্য অলসতা করে
দেরিতে ঘুম থেকে উঠলাম।
হালকা শীতের দিন তাই রোধে তেমন
তেজ নেই।ঘুম থেকে উঠে মোবাইল
হাতে নিয়ে দেখলাম ১০টার কাছাকাছি।
হয়তো জান্নাত এতোক্ষণে এক্সাম
দিতে চলে গেছে।তবুও ঘুম থেকে
উঠে মোবাইল হাতে নিয়ে বসে রইলাম।
অনেক ক্ষুধা লাগছে।তবে নিচে যাওয়া
যাবে না।আম্মু এসে ডাকলেই যেতে
হবে।না হলে বাসায় আবার কি হৈচৈ
করবে কে জানে।প্রায় আধা ঘণ্টার
মতো বসে থাকার পর আম্মু ডাকতে
আসলো।
আম্মুঃনিচে আয়
আমিঃএতোক্ষণে?
আম্মুঃএকটু আগেই গেছে।১০:৩০
থেকে এক্সাম শুরু ওদের।
আমিঃওহ,আমার জন্য খাবার বেরে
দাও।ফ্রেস হয়েই খেতে বসবো।অনেক
ক্ষুধা লাগছে।
আম্মুঃঠিক আছে।
আর বসে না থেকে বিছানা গুছিয়ে
নিয়ে নিচে আসলাম।জান্নাতের
রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে ডাইনিং
টেবিলে বসে নাস্তা করে নিলাম।
ছোট মাঃছাদে ছিলি কেনো?
আমিঃতোমার মেয়ের জন্য
ছোট মাঃকেনো?
আমিঃবাসা থেকে চলে যেতে বলছে।
তাই ছাদে ছিলাম জেনো আমাকে
না দেখে।
ছোট মাঃএই কারণেই জান্নাতকে
বকা দিতে ইচ্ছা করে।
আম্মুঃহয়তো নিলয় কিছু বলছে
তাই এমন বলছে।আর জান্নাতকে
আমি চিনি।আলাদা করে কিছু
বলার দরকার নেই।
ছোট মাঃভাবি জান্নাত অনেক
খিটখিটে হয়ে গেছে।
আমিঃবাসা থেকে তারিয়ে দিলে
ঠিক হবে।
আম্মুঃতোকে তাড়াতে হবে।
আমিঃআমি এমনিতেই চলে যাবো এখন।
ছোট মাঃতুই জান্নাতের কথা শুনে
এখন চলে যাবি?
আমিঃনা ছোট মা,বাসায় কাজ আছে।
আম্মুঃতোর আব্বু আসবে বিকেলে।
দেখা করে যাবি।
আমিঃবাসায় গিয়েও দেখা করা যাবে।
আম্মুঃযেটা বললাম সেটাই।আর
এখন বাজারে যা।
আমিঃকেনো?
ছোট মাঃতোর চাচ্চু নাই।
আমিঃকি কি আনতে হবে
ছোট মাঃলিষ্ট নিয়ে যা,অনেক কিছু
আনতে হবে।
আমিঃআর টাকা?
আম্মুঃসেটাও দিচ্ছি
আমিঃহুম দাও,টাকা বাচলে আমার।
ছোট মাঃহুম।
আর কোনো কথা না বলে নাস্তা করে
কিছু সময় টিভি দেখার পাশাপাশি
বিশ্রাম করলাম।ঘণ্টা খানেক বসে
থাকার পর লিষ্ট নিয়ে বাজারে গেলাম।
লম্বা একটা লিষ্ট দিয়েছে,যেগুলো আমি
মাথায় করেও নিতে পাড়বো না।
বাধ্য হয়ে একটা ভ্যান নিলাম।
বাজার করতে করতে প্রায় ১ঃ১৫
বেজে গেলো।বাসার সামনে এসে
ভ্যানওয়ালা মামাকে বললাম;
আমিঃমামা বলেন কতো দিবো?
—দেন আপনেই হিসাব করে।
আমিঃআমি তো ভারা জানিনা।
—আপনের সাথে পরাই ৩০ মিনিট
ছিলাম আপনেই দেন।
আমিঃ২০০ দেয়?
—আর কিছু বাড়িয়ে দিয়েন।
আমিঃওকে মামা,এই নেন আপনি
৩০০ রাখেন তারপর আমাকে দেন।
—আমার কাছে টাকা নাই মামা।
আমিঃআমার কাছেও খুচরা নাই।
৫০০টাকার নোটই।আর না হলে
১৫০টাকা আছে।
—ওহ,ঠিক আছে,আপনে ১৫০টাকাই দেন।
আমিঃকি বলেন,আপনার তো ঠকা হবে।
—তবুও,এখন তো বাজারে গিয়ে চাল
ডাল কেনার জন্য টাকা লাগবে।
আমিঃমামা তুমি একটা সাহায্য করবে?
—হ্যা কন
আমি;আপনি একটা বস্তা নিয়ে
বাসায় চলেন আরেকটা আমি
নিয়ে যায়।
—ঠিক আছে চলেন।
দুজন মিলে বাসার মধ্যে বাজার
এনে রেখে ছোট মাকে বললাম
উনাকে কিছু খেতে দিতে।ফ্রিজ
থেকে কিছু ফল উনার সামনে
দিলো খাওয়ার জন্য।
—আপা এসবের দরকার নাই।
ছোট মাঃতবুও খেয়ে নেন ভাই।
আমিঃমামা তুমি সবটাই রাখো
—কিন্তু ভাড়া তো ৩০০।
আমিঃআমি তোমার সততা দেখে
তোমাকে উপহার দিলাম।বাড়ির
জন্য চাল ডাল কিনে নিয়ে যাবে কিন্তু।
—আইচ্ছা মামা।কখনো বাজারে
দেখা হলে আমার বাড়ি নিয়ে যামু।
আমিঃআচ্ছা মামা।।
আমি রুমে এসে গোসল করে
নিলাম।অনেক ক্লান্ত লাগছিলো
হালকা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে
গেলাম।বাইরে চিল্লাচিল্লি শুনে
ঘুম ভেঙে গেলো।জান্নাত ছোট
মাকে যেটা মাথায় আসছে সেটাই
বলে যাচ্ছে।মোবাইল হাতে নিয়ে
দেখলাম ২ঃ৩০ বাজে।হঠাৎ মনে
পড়লো আমি জান্নাতের রুমে
শুয়ে আছি।এটার জন্য হয়তো
আবার ছোট মাকে কথা শোনাচ্ছে।
চুপচাপ না থেকে উঠে বাইরে আসলাম।
আমিঃকি হয়েছে?
—……..(কেউ কিছু বললো না)
আমিঃএই তুই ছোট মার সাথে এমন
করছিস কেনো?
জান্নাতঃআমার মা আমি যেটা খুশি
সেটা বলবো আপনি কেনো আমাদের
মাঝে কথা বলবেন?আর আপনার
তো চলে যাওয়ার কথা ছিলো,পড়ে
আছেন কেনো এখনো?
আমিঃদেখ তুই ছোট তাই তোকে
কিছু বলছি না।তাই বলে লিমিট
ছাড়িয়ে কথা বলবি না।
জান্নাতঃআমার যেটা ইচ্ছা সেটা বলবো
আমিঃলাষ্ট বার সাবধান করছি তোকে,
না হলে কিন্তু…
জান্নাতঃকি করবি তুই?
এবার মেজাজ পুড়াই বিগড়ে গেলো।
রাগটা কন্ট্রোল করতে না পেড়ে ঠাস
করে একটা মেরে দিলাম।জান্নাত
হয়তো এমনটা আশা করেনি।আমি
নিজেও থাপ্পড় দিয়ে চুপ হয়ে গেলাম।
জান্নাতকে আজ অবধি কেউ মারার
সাহস পায়নি আর আমি আজ…..
জান্নাতের চোখে চল দেখে কিছু
বুঝতে পারছিলাম না।কিছু একটা
বলতে যাবো তখনি রুমের মধ্যে
চলে গেলো।
আম্মুঃতুই ওকে মারার সাহস পেলি কোথায়?
আমিঃআম্মু আমি কিছু বুঝতেই
পারিনি।হঠাৎ করেই এমন হয়ে গেছে।
আম্মুঃতুই যা আমার চোখের সামনে
থেকে।একদম বাসা ছেড়ে যাবি।
ছোট মাঃভাবি তুমি চুপ করো।নিলয়
বাবা তুই রুমে যা।
আমিঃছোট মা আমি সরি,আসলে….
ছোট মাঃআরে ব্যাপার না।আমি
পরে ওকে বুঝিয়ে বলবো।তুই
রুমে গিয়ে ঘুমা,হয়তো তোর
ঘুম হয়নি।
আমিঃও এমন কেনো করছিলো?
ছোট মাঃকাল ওর বার্থডে,কিন্তু
ও চাইছিলো এবার বাইরে কোথাও
বার্থডে পালন করতে।
আমিঃকিন্তু ওর তো এক্সাম চলছে।
ছোট মাঃআজকেই শেষ হয়েছে।
আমিঃওহহ
আম্মুঃকি ওহ,যা এখান থেকে।
আমিঃএই মহিলাটা অনেক কথা বলে।
আম্মুঃতোকে আমি?
কে শোনে কার কথা,দ্রুত জান্নাতের
পাশের রুমে চলে গেলাম।
*****বর্তমান*****
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিতে
পড়েছি খেয়ালই করিনি।পরেরদিন
ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে কাকার
সাথে বাইরে বের হলাম।যার সাথে
দেখা হচ্ছে তার সাথে কাকা অনেক
সুন্দর করে কথা বলছেন।সবাই
উনাকে অনেক বেশিই সম্মান করে।
প্রায় ১০ মিনিট হাটার পর একটা
দুচালা বাড়ির সামনে দাঁড়ালাম।
কাকা বাড়ির বাইরে থেকে কয়েকবার
ডাক দিতেই একটা কৈশোর ছেলে
বাইরে আসলো।
—চাচা ভিতরে আসো।
কাকাঃতোর আব্বা কোথায়?
—ঘুমাচ্ছে,রাতে গাড়ি চালাইছে তাই।
কাকাঃএকটু ডেকে দে।
—কে আসছে রে মানিক?(ভিতর থেকে)
—রফিক চাচা আসছে।
—ভাইকে ভিতরে আসতে বল
—চাচা চলো,আব্বাকে ডেকে দিচ্ছি।
ছেলেটার সাথে দুজন ভিতরে গেলাম।
একজন মহিলা এসে দুটো চেয়ার উঠানে
বসতে দিলো।
কাকাঃতোর পড়াশোনার কি খবর?
—আল্লাহর দোয়ায় ভালো চাচা।
কাকাঃমন দিয়ে পড়াশোনা করবি
—আচ্ছা।
—রফিক ভাই তুমি কি মনে করে?
কাকাঃতোর গাড়িতে যে একটা
মেয়েকে দিছিলাম জান্নাত।
—হো ভাই মনে আছে।
আমিঃকোথায় নেমেছিলো?
—রফিক ভাই যেখানে নামাই দিতে
বলছিলে আমি সেখানেই নামাই
দিছি।কিন্তু তারপরে কোন হানে
গেছে এইডা কইতে পারুম না।
আমিঃআপনার স্পষ্ট মনে আছে?
—মেয়েটা অন্য কারো আত্মীয় হলে
তেমন মনে রাখতাম না।কিন্তু সে
তো ভাইয়ের মেয়ের মতোই।আমি
স্পষ্ট কইতে পাড়ি মাইয়াটা ঐ
বাসস্টপেই নামছিলো।
কাকাঃঠিক আছে আমরা এখন আসি
—কি কও ভাই,আমার বাড়িতে
আসছো নুন পানি যা আছে একটু
খেয়ে যাও।
কাকাঃনারে,বাড়ি থেকে খেয়েই আসছি
—কিছু একটা মুখে দিয়ে যাও
কাকাঃএক গ্লাস শুধু পানি দে।
—————————————————————-
দুজন রাস্তার এক পাশ দিয়ে হাটছি।
মনের মধ্যে হাজারটা প্রশ্ন নাড়াচাড়া
করছে।যদি বাসায় রওনা দেয় তাহলে
বাসায় না গিয়ে আবার কোথায় যাবে।
কাকাঃমন খারাপ করিস না বাপ।
দেখবি একদিন ঠিকিই জান্নাত
ফিরে আসবে
আমিঃকিন্তু গেলো কোথায় সবাইকে রেখে..!
কাকাঃসেটা তো আমিও বুঝতে
পাড়ছি না।তাছাড়া ও এমন মেয়ে
না।কিন্তু হুট করে এভাবে হারিয়ে
যাওয়া কেমন একটা ঘোলাটে লাগছে।
আমিঃবুঝে উঠতে পারছি না কি করবো।
কাকাঃসব ঠিক হয়ে যাবে(কাদে হাত দিয়ে)
রাস্তায় টুকটাক কথা বলতে বলতে
বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে
রুমটাতে যেতেই দেখলাম একটা
মেয়ে আয়নার সামনে বসে চুল
আছড়াতে ব্যস্ত আছে।আমাকে
দেখে দাঁড়িয়ে গেলো।
—আপনি কে?
আমিঃআমি নিলয়
—কিন্তু আমার রুমে কেনো?
আমিঃথাকার জন্য এই রুমটা
আমাকে দিয়েছেন তাই।
—আপনি আসছেন কোথা থেকে?
আমিঃঢাকা থেকে।
—কেনো?
আমিঃএকটা কাজে।
—আমি ছিলাম না তাই হয়তো আব্বা
আপনাকে এই রুমে থাকতে দিয়েছিলো
কিন্তু এখন আমি আসছি তাই দয়া
করে অন্য রুমে শিফট হন।
আমিঃবলার জন্য ধন্যবাদ,তবে আমি
এখনি চলে যাবো।
—কেনো?
আমিঃযেটার জন্য আসছিলাম সেটাই
হারিয়ে গেছে,থেকে কি করবো?
—মানে?
আমিঃআপনি বুঝবেন না।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে রুম
থেকে হেলমেট নিয়ে বাইরে আসতেই
কাকা জিজ্ঞাস করলো;
কাকাঃকোথায় যাচ্ছো?
আমিঃজানিনা,তবে ওকে খুঁজতে।
কাকাঃঅনেক তো খুঁজলে,ও নিজে
ইচ্ছাতেই ফিরে আসবে।
আমিঃযদি না আসে?
কাকাঃআসতেই হবে।
—আব্বা উনি কে?
কাকাঃও হলো নিলয়,জান্নাতের
চাচাতো ভাই।আর নিলয় এটা হলো
রুহি আমার মেয়ে।
রুহিঃরুমে আমাদের পরিচয় হয়েছে।
তবে জানতাম না জান্নাতের কাজিন।
কাকাঃকয়েকদিন এখানে থেকে যাও।
আমিঃএখানে থেকে কি করবো কাকা..!
কাকাঃজান্নাত যেটা করতো সেটা।
মানুষকে সুখে দেখা,প্রকৃতি দেখা।
আমিঃকিন্তু কাকা….
কাকাঃতুমি তাহলে থাকছো
আমিঃঠিক আছে।
রবিউলঃভাইয়া তোমার বাইকের চাবিটা
দিবে প্লিজ?
আমিঃকেনো?
রবিউলঃএকটু ঘুরবো
আমিঃহুম(চাবি দিয়ে)
বাসার পেছনের বাগানটাতে বসে
আছি তখন রুহি আসলো।
রুহিঃহাই
আমিঃহাই
রুহিঃআপনি রবিউলকে চাবি
কেনো দিলেন?
আমিঃবাইক চালানোর অনেক
ইচ্ছা ওর।তাই দিলাম।
রুহিঃযদি এক্সিডেন্ট করে?
আমিঃআঘাত না পেয়ে কিছুই
শেখা যায় না।
রুহিঃসেই তো ৩০ মিনিট আগে
বের হয়েছে।কিন্তু এখনো আসার
কোনো নাম গন্ধ অবধি নেই।
আমিঃচলে আসবে হয়তো
রুহিঃকি করেন আপনি?
আমিঃস্টুডেন্ট,আপনি?
রুহিঃভার্সিটিতে পড়াশোনা করছি।
আমিঃবাংলা ডিপার্টমেন্টে।
রুহিঃকে বলছে আপনাকে?
আমিঃআপনার ভাই।
রুহিঃওহ
দুজন অনেকটা সময় নিয়ে কথা
বলছি তখন রবিউল আসলো।
রবিউলঃভাইয়া এই যে তোমার চাবি।
আমিঃশেষ?
রবিউলঃআবার অন্য একদিন। আর
আপু সরি সব কিছুর জন্য।
রুহিঃতুই যাবি?
রবিউলঃআমি জানি তুই আমাকে
মাফ করে দিছিস,শুধু তোর মুখ
থেকে শুনতে চাই আমি।
রুহিঃতুই যাবি আমার চোখের
সামনে থেকে?
রবিউলঃআগে বল মাফ করেছিস?
রুহিঃতুই থাক আমিই গেলাম।
রাগ করে রুহি বাগান থেকে চলে
গেলো।পিছু পিছু তার পাগল ছোট
ভাইটাও গেলো।হয়তো বোনটাকে
অনেক বেশি ভালোবাসে।কিন্তু
তার পাগলাটে স্বভাবের কারণে
রুহি ওকে ভুল বুঝে।এক চিলতে
হাসি দিয়ে বাগানটা পর্যবেক্ষণ
করতে লাগলাম।অনেক রকম
গাছগাছালি দিয়ে পরিপূর্ণ বাগানটাতে
বসলে নিমিষেই মন ভালো হয়ে
যাবে।হয়তো জান্নাত নিজেও
তার মন ভালো করার জন্য
মাঝেমধ্যে এখানে এসে ঘুরে যেতো।
অনেকটা সমনে একাকী থাকার
পর বাসার মধ্যে চলে আসলাম।
প্রায় সপ্তাহ খানেক ঐ বাসাটাতে
থাকার পর রাঙামাটি চলে আসলাম।
কেনো জানি এখানে আসতে অনেক
মন করছিলো।এখানেই তো পিচ্চিটাকে
সারপ্রাইজ দিয়েছিলাম।আমার
স্পষ্ট মনে আছে,এখানেই প্রথমবার
শুধুমাত্র ওকে নিয়ে ঘুরতে আসি।
আগে কখনো কোথাও নিয়ে যায়নি।
হোটেল সুফিয়াতে একটা রুম নিয়ে
সেখানে চলে গেলাম।আগেরবার
না চাইতেও কতো মজা করেছিলাম
এখানে,কিন্তু আজ মজা করার সেই
মেয়েটাই তো নেই।
*******অতিত********
রাতে ছোট মা জান্নাতকে রুমে
খাবার দিতে যেতেই চাচ্চু জিজ্ঞাস
করলো কি হয়েছে;
চাচ্চুঃজান্নাতকে কি বলছো আবার?
ছোট মাঃতেমন কিছু না।
চাচ্চুঃআমি জানতে চাইছি
ছোট মাঃএকটু বকা দিয়েছিলাম
চাচ্চুঃকেনো?
আমিঃচাচ্চু ছোট মা মিথ্যা বলছে।
চাচ্চুঃকি মিথ্যা?
আমিঃআমি রাগের মাথায় জান্নাতের
গায়ে হাত তুলেছিলাম।
আব্বুঃকেনো?
আমিঃরাগ হয়ে গেছিলো
আব্বুঃতোমার সামনে মেয়েকে
মারলো আর তুমি কিছু বললে না?
আম্মুঃওকে আমি….
ছোট মাঃভাই আপনিও ভাবির মতো
নিলয়কে আর কিছু বলেন না।এমনিতেই
ওর অনেক জেদ হয়েছে।
আব্বুঃতুমি চুপ করো।আর তুই
কাল সকাল হতেই বাসায় চলে যাবি।
আমিঃরাতেই চলে যাবো।টাকা দাও
চাচ্চুঃনিলয়,,কাল বাসায় একটা
অনুষ্ঠান আছে।আর তুই আজ এসব
কি বলছিস।ভাই যা হওয়ার হয়েছে
এসব নিয়ে আর কথা না বলাই বেটার।
আমিঃযদি না যায় তবুও আমার টাকা
লাগবে কিছু।জান্নাতের জন্য কিনতে হবে।
আম্মুঃতোর থেকে ও এমনিতেও কিছু
নিবে না।তাই না কেনাই বেটার।
আমিঃমাঝে মাঝে মনে হয় তুমি
আমাকে কোথাও কুড়িয়ে পেয়েছো।
আম্মুঃহ্যা কুড়িয়ে পেয়েছি।
আমিঃআব্বু তুমি টাকা দাও তো।
আব্বুঃহুম
আর কোনো কথা না বলে সবাই
সবার মতো রাতের খাবার খেয়ে
ঘুমিয়ে গেলো।কাল অনেক সকালে
উঠতে হবে।আর ভোর হতেই সবাই
চলে আসবে,মানে জান্নাতের নানু
বাড়ির সবাই আরকি।সবাই যখন
ঘুমিয়ে গেছে তখন চুপি চুপি
জান্নাতের রুমে গেলাম।পিচ্চিটার
একটা বদ অভ্যাস আছে সেটা
হলো ঘুমানোর সময় রুমের
দরজা খুলে রাখে।আর এটাকেই
হাতিয়ার বানিয়ে রুমে গেলাম।
রুমে গিয়ে দরজা নক করে
পিচ্চিটার কাছে গেলাম।আহ
কতো সুন্দর করে বোনটা ঘুমাচ্ছে।
কয়েকবার ডাক দিতে উঠে পড়লো।
জান্নাতঃকি হয়েছে,আর আপনি
আমার রুম কেনো আসছেন??
আমিঃরেডি হয়ে নে।
জান্নাতঃকেনো?
আমিঃপালাবো
জান্নাতঃআপনি যাবেন নাকি
চিৎকার দিয়ে সবার ঘুম ভেঙে দেবো।
আমিঃযেটা বললাম সেটা কর।যেকোনো
দুটা জিনিস নিতে পাড়বি কাল
রাত হতেই এখানে আবার আসতে হবে।
না হলে আব্বু আম্মু আমাকে মেরে
ফেলবে।
জান্নাতঃআমি যাবো না
আমিঃতুই যাবি না মানে তোর বাপ যাবে
ঘুমের জন্য একটা নেশাগ্রস্থ মেয়ের
মতো আচরণ করছে।তবুও টানতে
টানতে বাসার বাইরে নিয়ে আসলাম।
চলবে……….