#পিচ্চি_বউ
#part_1
#Writer_Kabbo_Ahammad
~এই তুই আমাকে বিয়ে করেছিস কেন? আর আজ আমাদের বাসর রাত তবুও একটা পাপ্পি ও দেস না।
মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে রেখেছিস! কোথায় ভেবেছিলাম, বর এই করবে সেই করবে। শাকচুন্নি বান্ধবীদের কথার সাথে কোন মিল দেখতে পাচ্ছি না।
এদিকে হঠাৎ আমি বাসর রাতে নতুন বউয়ের মুখে তুই নামক ডাকটা শুনে ক্ষানিকটা অবাক হলাম।
—কি হলো কিছু বলছিস না কেন? বিয়ে কেন করেছিস, কিছু করবি না। না করলে ফলকাটা ছুরি গলায় চালিয়ে দিবো। এই এই তুই ভয় পাছসিস কেন? ছুরি তো চালাবো আমার গলায়, আর ফাঁসি হবে তোর।
স্যরি তুই করে বলে ফেললাম।
আচ্ছা বাদ দেন ঐসব। তাকান আমার দিকে, আমার বুকের ঠিক বাম পাশটায় একটা তিল আছে। বুকের বাম পাশে তিল থাকলে নাকী বর অনেক রোমান্টিক হয়…?(মেয়েটা)
পিচ্চি বউয়ের মুখে এসব কথা শুনে আমি বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে লাগলাম।
–মানে? কী বলছেন এইসব। এইসব কি বলতে হয়? চুপ-চাপ ঘুমান নইলে নিচে শুতে হবে। বয়স ১৫ হবে কিনা সন্দেহ আছে কথা বলে কী একেকটা।(আমি)
—হায় আল্লাহ! কি বলেন আপনি না আমার স্বামী? ভাবী বলেছে, স্বামীর কাছে সব বলতে হয়। আচ্ছা আরো কোথায় কি আছে বলবো কী? জানেন আমার না নাভীর কাছে…….! (মেয়েটা)
আল্লাহ, আমাকে বাঁচাও মেয়েটা তো দেখছি আমায় পাগল বানিয়ে ছাড়বে।
–এই পিচ্চি চুপ করবে তুমি? (আমি)
—শুনেছি বাসর ঘরে নাকি এই হয় সেই হয় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে। আপনি তো দেখছি কিছুই করছেন না? একটা কিস তো করতে পারে। ছাই রোমান্টিক আপনি। আচ্ছা জড়িয়ে নিতে তো পারেন । তা না করে মাঝখানে কুলবালিশ দিয়ে রাখছেন। (মেয়েটা)
–কার কাছে শুনেছো?
—কেন ভাবীর কাছে।
–আর কী শুনেছো?
—ভাবী বলেছে স্বামী যেমন, যেমন করতে বলে তেমনি করতে।
–ওহ! আচ্ছা, খুব ভালো তোমার ভাবীটা। এখন তুমি ঘুমিয়ে যাও। তোমার ভাবী বলেছে না স্বামী যা বলেছে তাই করতে। সো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাও।
—তা হলে ঘুমাবো? বাসর রাতে নাকী ঘুমাই না। তুমি কি আমাকে ড্রপ দিচ্ছো? আচ্ছা কুলবালিশটা সরাও মাঝখানে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান করে রাখছে।
–এই পিচ্চি চুপ করবে! আমার জীবনটা নরক বানাতে এসেছে! ঘুমাও বলছি।
—অ্যা অ্যা বাসর রাতে কত কি করে শুনেছি স্বামী স্ত্রী আর আমাকে ঘুমাতে বলছো। আচ্ছা একটা আইডিয়া শুনবেন আপনি?
–আবার আইডিয়া, আচ্ছা বল কী বলবে।
—বাসর রাতে কী,কী করে আপনি বলেন আমি সব করবো। আইডিয়া টা চমৎকার না।
–এই কতবার বলবো আমি তোকে স্ত্রী হিসেবে মানিনা। তার পরও এতো প্যাঁচ প্যাঁচ করস কেনো?
—আপনি না মানলে কী হবে আমি আপনাকে মনে প্রাণে স্বামী হিসেবে মানি। বাঙালি মেয়েদের এক বারই বিয়ে হয়। যখনি আল্লাহ তায়ালার কালাম পড়ে তিনবার কবুল বলেছি তখন থেকে আপনাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেছি। শুধু ইহকালে নয় পরকালেও আপনাকে স্বামী হিসেবে আল্লাহর কাছে চাইবো! (মেয়েটা)
–আচ্ছা এখন তুমি ঘুমাবে নাকি নিচে নামিয়ে দিবো যওোসব। জীবনটাই শেষ করে দিয়েছে। বিয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিলো আমার। ছিলো বাসর রাত নিয়ে কত পরিকল্পনা কিন্তু কপালে যে বাচ্চা মেয়েটাকে বিয়ে করতে হবে তা কখনো জানতাম না!
—আচ্ছা একটা পাপ্পি দেই আপনাকে!
এই বলে মেয়েটি আমার মুখের কাছে মুখ নিয়ে ঠোঁঠের সাথে ঠোঁঠ মিলিয়ে দিলো। আর সাথে সাথেই আমার চোখজোড়া বন্ধ হয়ে গেল! পিচ্চির নাকের গরম শ্বাস জানান দিচ্ছে পিচ্চিটা কতটা কাছে চলে এসেছে আমার।
তখন আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে “ঠাস” – “ঠাস” করে চড় বসিয়ে দিলাম!
–এই মেয়ে বাসর রাতের সখ জাগছে! নাকে টিপ দিলে দুধ বের হয়ে আসবে! আর সে কীনা বাসর রাত নিয়ে লাফা-লাফি যত্তোসব। হিটলার টা আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট করে দিবে কখনো ভাবিনি।(আমি)
—আপনি ভুল বলছেন নাকে চাপ দিলে দুধ বের হয়না নাকি টিপ দিলে থাক বলবো পঁচা বের হয়। দুধ তো বের হয়!!!
–আল্লাহ কই রাখছো আমায়। এই ডেবিল মেয়ে চুপ করবি। পিচ্চি হয়ে এতো কথা বলতে হয় না!
—সত্যি বললে, ডেবিল হয়ে যায়। আর আমি পিচ্চি না আমার বয়স ১৪ বছর ৩ মাস ১৭ দিন!
(নাক টানতে টানতে বললো মেয়েটা)
তারপর আমি মনে মনে ভাবছি মেয়েটাকে মারা ঠিক হয়নি? কিন্তু কি করবো! পিচ্চি মেয়েটার জন্য হিটলারটা আমার ভবিষ্যত’টাই নষ্ট করে দিলো।
—আচ্ছা আপনি ঘুমান। আর হাতে ব্যথা পেরেছেন কী? (মেয়েটা)
কথাটা শুনে নিজের অজান্তেই খারাপ লাগলো! পিচ্চিটার দিকে তাকাতেই, মনে হচ্ছে একটা পূর্ণিমার চাঁদ। এতো সুন্দর কোন মেয়ে হতে পারে। মুখ দিয়ে রংধনুর আভা বের হচ্ছে। একি পিচ্চিটার ঠোঁঠ কেঁটে রক্ত বের হচ্ছে! থাপ্পরটা জুরেই লাগছে।
–আচ্ছা তোমার নাম কী?
—আমাকে বিয়ে করার সময় নাম শুনেন নি? (মেয়েটা)
–তোমাকে বিয়ে করার কোন ইচ্ছাই ছিলোনা আমার “হিটলার ‘টার জন্য বিয়ে করেছি। এখন নাম কী বলবে? (আমি)
—এখন বলে লাভ নেই! বিয়ে করে ফেলেছেন। শুনেন আমার নাম কারিমা জাহান মিরা.!
–আচ্ছা মিরা সরি, তোমার লাগিনি তো? এই যে নাও টিস্যু দিয়ে রক্তটা মুছে নাও! (আমি)
—আপনি, না বলেছেন আপনি আমাকে স্ত্রী হিসেবে মানেন না! না মানলে আমার জন্য কষ্ট পেতেন না?
–ওই চুপ করবি! তোকে স্ত্রী হিসেবে কোন দিন মানিনা আর মানবোও না। কাউকে টিস্যু দেওয়া মানে তাকে বউ হিসেবে মেনে নেওয়া না!
এই বলে বালিশটা নিয়ে চলে গেলাম সুফাতে আর একটু থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো।
—কই যাচ্ছেন আপনি?
–জাহান্নামে যাচ্ছি, চুপ-চাপ এখানে শুয়ে থাকবি। নইলে তোকে ফ্লরে শুয়ে থাকতে দিবো।
—আচ্ছা ঠিক আছে ( করুণসুরে বললো)
তারপর বাতিটা অফ করে শুয়ে শুয়ে ভাবছি, হিটলার আমার জীবনটাকে এভাবে নষ্ট করে দিবে।
তোবা শুনলে বাসায় এসে আমাকে খুন করবে নইলে সে নিজে গাড়ির নিচে পড়ে মরবে। বার বার তোবার কথা মনে পড়ছে। দুজন-দুজনকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখেছি। আর মাঝখানে হিটলারটা পিচ্চি মেয়েটাকে বিয়ে করিয়ে দিলো।
–ওহ আচ্ছা আপনাদের তো পরিচয়টাই দেওয়া হয়নি। আমি কাব্য আহম্মেদ অনার্স কমপ্লিট করে বাবার মানে হিটলারের হোটেল এ খাচ্ছি! হঠাৎ রুমের বাতি কে যেনো জ্বালিয়ে দিলো।
–এই পিচ্চি কি কর? (আমি)
—কেন দেখতে পাচ্ছেন না আপনি?(মিরা)
–আরে আরে কাপড় কেনো খুলছো?
—আমি কাপড় পড়ে ঘুমাতে পারিনা! (করুণ সুরে বললো)
–যওোসব এই কাপড় পড়ো? আর যদি কাপড় খুলতে দেখচ্ছি কি যে করবো।
—অ্যা অ্যা আপনি না বললেন ঘুমাতে। এতো ভারী কাপড় পড়ে কেউ ঘুমায়?
–কেউ যদিও বা নাহ্ ঘোমাই তুই ঘুমাবি। ঘুমা বলছি।
—বাবা” আপনার স্বামী আমাকে কাপড় খুলতে দেয়না!
কথাটা বলতেই মুখটা চেপে ধরলাম।
–এই তোমার কি হয়েছে এইসব কি বাবাকে বলতে হয়?
—তো কি করবো কাপড় পড়ে ঘুমাতে পারিনা। তাই বাবাকে ডাক দিচ্ছি। বাবা বলেছে যদি কোন সমস্যা হয় বাবাকে বলতে।
–আচ্ছা তাহলে কাপড় খুলেই ঘুমাও। (দাঁতে দাঁত চেপ)
কথাটা বলতে দেরি হয়েছে। মেয়েটা কাপড় খুলতে দেরি হচ্ছেনা! বুঝিয়ে সুজিয়ে, কোনরকম কাপড় টা গায়ে রাখতে বলে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকাল বেলা, নুসরাত দরজা ধাক্কাচ্ছে আর ভাবী ভাবী করছে। নুসরাতের ডাকে ঘুম ভাঙ্গতেই চেয়ে দেখি সকাল হয়ে গেছে। তাই তাড়াহুড়া করে বালিশটা নিয়ে বিছানায় রাখতেই দেখি মিরার কাপড় নিচে পড়ে আছে! আল্লাহ এ কেমন বউ কপালে জুটালে, শাড়ী পড়ে ঘুমাতে পারেনা।
–এই উঠো (অন্য দিকে তাকিয়ে)
—ওহ! কি হয়েছে মা..?
–ওই আমি তোর মা!
এই বলে জোরে ধাক্কা দিতেই মিরার ঘুম ভেঙ্গে যায়!
—কি হয়েছে?(মিরা)
–কাপড় পড়ে নাও! এখন আবার বলোনা আমি কাপড় পড়তে পারিনা।
—অ্যা অ্যা আমি সত্যিই কাপড় পড়তে পারিনা! আপনি পড়িয়ে দেন।
–আমি পড়াতে পারিনা। বড় বড় কথা বলতে তো পারো আমি ছোট না। কাপড় টাই পড়তে পারো না। আর হ্যাঁ কাপড় পড়াতে পারলেও আমি তোমাকে কাপড় পড়িয়ে দিবোনা। নিজে পড়ে নাও।
—বাবা, ও বাবা আপনার ছেলে আমাকে শাড়ী পড়িয়ে দেয়না।
.
.
চলবে…………………♥