#পিচ্চি_বউ,part_4
#Writer_Kabbo_Ahammad
-: সাথীকে, এসব বলে ফোন রাখতেই পিছনে তাকিয়ে দেখি মিরা সিলিং ফ্যানের সাথে, ঝুলছে এমন একটি উড়না গলায় পড়ছে। এটা দেখার সাথে সাথেই বুকের ভিতর কেমন জানি একটা চিনচিনে ব্যাথা করতে লাগলো।
আমি দৌড়ে গেয়ে মিরাকে একটা থাপ্পর দিয়ে দিলাম!
–মিরা কি করছো এসব?
—দেখছেন না কি করছি?
আমি ছোট বলে, এতিম বলে কারো ভালোবাসা পাবো না! বিয়ের পর সকল নারীই তাঁর স্বামীর অধিকার চায়। আর আপনি বিয়ের পর অধিকার তো দূরের কথা। একটি রাত আপনার বুকে ঘুমাতে পর্যন্ত দেননি।
কতটা স্বপ্ন দেখেছিলাম তোমায় নিয়ে। কিন্তু তুমি আমায় রেখে অন্য মেয়ের সাথে অবৈদ সম্পর্ক করতে চাচ্ছো! (মিরা কাঁদতে কাঁদতে বললো কথাগুলো)
–প্লিজ মিরা বুঝায় চেষ্টা করো, এখন এসব বলার সময় নয়। চলো দেরী হয়ে যাচ্ছে, গাড়ি মিস করবো আবার।
তারপর মিরা আর কিছু বললো না!
এদিকে মিরার এসব কান্ড-কারখানা সব সাথীকে বললাম! সাথী বললো। “কোন চিন্তা না করতে। অবশ্য আমাদের সাথে একই গাড়িতে সাথীও গেলো কক্সবাজার। কক্সবাজার আসার পর।
রাতের বেলা রুমে শুয়ে আছি তখন হঠাৎ সাথীর ফোন, ফোন ধরতেই সাথী বললো পাশের রুমে এসো।
এদিকে আমি পাশের রুমে যেতেই সাথী সেভেন-আপের সাথে কি যেন মিশিয়ে দিয়ে খেতে বললো। আমি কিছু মনে না করেই খেলাম! আর এগুলো খাওয়ার সাথে সাথেই আমার কেমন যেন একটা নেশা নেশা লাগছে। আমার সাথীকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করছে। তখন আমি নিজের অজান্তেই সাথীকে জড়িয়ে ধরে ফেললাম! সাথীও রেসপন্স করলো। আমি আস্তে আস্তে সাথীর লিপের সাথে আমাল লিপ জোড়া মিলানোর আগেই সাথীর ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বাজতে লাগলো! ফোনটা ধরেই সাথী উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো। এদিকে কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে এসে বললো “বাবু আমি অসুস্থ, কাল যা মন চাই তাই করো। এই বলে সাথী আমাকে আমাদের রুমে দিয়ে গেলো। আর মিরাকে বললো সে আমাদের কলেজ ফ্রেন্ড।
(অবশ্য মিরা এর আগে কখনো সাথীকে দেখেনি)
এদিকে আমি রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। এখনো আমার শরীর আর চোখ দিয়ে উওাপ বের হচ্ছে আমার নেশা এখনো লেগে আছে। মিরা আজ খুব সুন্দর করে সেজেছে। চেহারায় হাল্কা মেকআপ, ঠোঁটে লাল লিপ্সটিপ, পরনে একটা কালো শাড়ী।
মনে মনে ভাবলাম সকল কবি-সাহিত্যিকদের গল্পের নায়িকারা সুন্দরী হয়। আর তারা সব-সময় লাল নাহলে নীল শাড়ি পরিহিত থাকে। যা দেখে নায়ক প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু সাহিত্যিক গণ কি কখনো দেখেছেন একজন সুন্দরী রমনী কালো শাড়ী পড়লে তাকে কি রকম দেখায়। আজ কি অপরুপটাই লাগছে মিরাকে। চোখে কাজল দেওয়াতে আরো মায়াবি লাগছে। তারপর মিরা এসে খাটে বসতেই আমি মিরাকে একটা হ্যচকা টান দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলাম। এ ঘটনায় আকস্মিক ব্যবহারে মিরা কিছুটা বিব্রত হলো। তারপর বললো।
—আপনাকে একটা কথা বলবো? (মিরা)
–হুম বলো কি বলবে? (আমি)
—আপনার কাছে একটা জিনিস চাইবো। দিবেন তো আমাকে?
–আচ্ছা বলো দেওয়ার মতো হলে দিবো? টাকা লাগবে কি?
—নাহ্ আমার টাকা চাইনা, আমার তো তোমাকে চাই।
–কি বললে?
—নাহ্ কিছু না! শুনো তুমি কি আমাকে একটা কিউট মেয়ের মা বানাবে? যার নাম হবে তোমার পছন্দের নামানুসানে রাইসা। (লজ্জাভরা মুখে কথাটা বলে মাথা নিচু করে ফেললো মিরা)
–ইশশ! বাবুর মা হবার কথা বলে কিরকম লজ্জা পেয়েছে!
—হুম লজ্জা পাবোই তো।
তারপর আমি মিরার কানের কাছে মুখটা নিয়ে বললাম।
–তাহলে কাছে আসো তোমাকে রাইসার মা বানাচ্ছি।
(দুষ্টমির ছলে কথাটা বললাম!)
মিরা তখন ছোট বাচ্চার মতো আমার বুকে মুখ লুকালো। আমি মিরার কপালে আলতো একটা চুমু দিয়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। পিচ্চিটা তাঁর ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁটের সাথে মিলিয়ে দিলো। এরপর স্বামী-স্ত্রী নারী-পুরুষের সবচেয়ে ঘণিষ্ট কিছু মুর্হুর্ত পার করলাম। তারপর মিরাকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মিরার কাপড় চোপড়ের কিছু ঠিক নেই। আমার শরীলের বিভিন্ন জায়গায় লিপিস্টিকের দাগ। পিচ্চিটা এখনো আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।
তখন আমার রাতের কথা মনে হতেই লাফ দিয়ে উঠলাম। একি করলাম আমি, আমি তো মিরাকে ডির্ভোস দিবো। তবে কেনইবা তাঁর সতিত্ব হরণ করলাম। মাথা কাজ করছে না আমার! মিরাকে আজ খুশি খুশি লাগছে। বিয়ের পর কখনই এতটা খুশি দেখিনি ওকে।
আমি সকাল সকাল ফোন দিয়ে সাথীকে সবকিছু বললাম। সাথী আমার কথা শুনে তেলে বেগুনে ফুলে-ওঠলো। সাথীকে বললাম।
–সবকিছু তোমার জন্যই হয়েছে তুমি যদি গতরাতে সে মেডিসিন না খাওয়াতে তা হলে এমনটি হতো না!(আমি)
—আচ্ছা বাদ দাও, কোন চিন্তা করো না। কাল তোমাকে একটা পিল দিব সেটা খাইয়ে দিয়ো তাহলে আর কোন চিন্তা করতে হবে না। (সাথী)
সাথীর কথা শুনে আমি বেশ অবাক হলাম। কিন্তু আমি সাথীকে ভালোবাসি। কথাও দিয়েছি সাথীকেই বিয়ে করবো। তাই আর কোন কিছু চিন্তা না করে রাজি হয়ে গেলাম।
পরের দিন রাতে একটা পিল নিয়ে মিরাকে বললাম।
–মিরা এটা খেয়ে নাওতো পিলটা। (আমি)
—কিসের পিল এটা? আমি তো সুস্থ আপনি কিসের পিল খেতে বলছেন আমাকে? (মিরা)
–মিরা তোমাকে মিথ্যা বলে লাভ নেই আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। গতকাল রাতে তোমার সাথে যা যা হয়েছে তা নিছক একটি দুর্ঘটনা মাএ।
হ্যাঁ আমি জানি গতকাল তুমি যা হারিয়েছো তা পৃথিবীর বিনিময়েও ফিরিয়ে দিতে পারবো না।
আমি ডির্ভোস পেপার রেডি করে রেখেছি, তাই আমি চাইনা আমার সন্তান তুমি গর্ভে ধারণ করো। চিন্তা করো না, ডির্ভোস এর সাথে তোমাকে কাবিনের বিশ লাখ টাকার একটা চেক দিয়ে দিচ্ছি সময় করে ব্যাংক থেকে তুলে নিবে। (আমি)
আমার কথাটা শুনার সাথে সাথেই মিরা আমার দু’পা জাপটে ধরে বলতে লাগলো।
—প্লিজ আপনি আ………
আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলবেন না। আপনার মন চায় আপনি আরো একটা বিয়ে করেন। আমি কখনো কোনদিন আপনার কাছে স্বামীর অধিকার চাইবো না। আর আপনার বাড়িতে তো দুইটা কাজের মেয়ে রাখছেন। আমাকে নিয়ে না হয় তিনটা হবে, প্লিজ আমার সন্তানকে নষ্ট করে দিতে বলবেন না প্লিজ। আমি সারাজীবন আপনাদের বাসায় কাজের মেয়ে হয়ে থাকবো। কোন পারিশ্রমিক দিতে হবে না আমাকে!
শুধু আমাকে ডির্ভোস দিয়েন না। আমার সন্তানটা যেন বলতে পারে আপনি তাঁর বাবা। আমি চাইনা আমার মতো আমার অনাগত সন্তানটা পিতৃহীন পরিচয়ে বড় হয়। প্লিজ একটা এতিম কে এভাবে ফিরিয়ে দিবেন না, আপনার পায়ের নিচে একটু জায়গা দেন। নইতো গলাটিপে মেরে ফেলেন। (মিরা)
–এই মিরা কি করছো, পা ছাড়ো।
দুঃখীত মিরা আমি পারবো না, আমার জীবনে সাথী ছাড়া আর কেউ নেই। এখন পিলটা খেয়ে নিবে। আর যদি না খাও তাহলে মনে করবো তুমি আমার বুকে পা রেখে তুমি গর্ভধারণ করবে। এখন তোমার ইচ্ছা।(আমি)
—প্লিজ এমন কসম দিয়ো না, আমার কাছে যে তোমার স্থান সবার উপরে। পারবো না আমি তোমার বুকে পা রেখে এ সন্তানকে নিজের মাঝে বড় করতে।
–ক্ষমা করে দিয়ো মিরা এ ছাড়া আমার কোন উপায় ছিলো না। এই নাও পিল আর এই নাও পানি খেয়ে নিয়ো।
—আচ্ছা দাও,
এই বলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলটা হাতে নিয়ে নিলো মিরা। চোখ থেকে টপ-টপ করে পানি পড়তেছে। করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিখে। মনে মনে ভাবছে হয়তো আমি বলবো। “পিল খেতে হবে না মিরা”
কিন্তু না আমি কোন কথা বললাম না। মিরা আমার দিকে তাকিয়ে থেকে, বিষ যেমন করে মানুষ মুখে নেয় তেমনি করে মুখে নিয়ে নিলো। গ্ল্যাস থেকে একটু পানিও মুখে দিলো। নিজের অজান্তেই মনে হচ্ছে খুব বড় কোন পাপ করে ফেললাম আমি।
এদিকে বাবা ফোন করলো যে বাবা অসুস্থ। তাই বাড়ি ফিরে যেতে হবে। মনে মনে স্থির করে নিলাম বাড়িতে ফিরেই ডির্ভোস পেপারের জন্য আবেদন করবো।
তারপর মিরাকে নিয়ে বাসায় ফিরলাম। এদিকে সাথী বললো, যে মিরাকে আমাদের দুজনের মাঝ থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরিয়ে ফেলবে।
আমি অনেক বুঝানোর পরেও সাথী বললো।
—সেদিন কক্সবাজারে মেয়েটা যা বলেছে সব শুনেছি আমি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, মেয়েটাকে তোমার বাবা অনেক স্নেহ করে। আমি তোমাদের বাড়ি রহিমের কাছে খবর পেয়েছি যে তোমার বাবা নাকি তোমার সম্পত্তি মিরার নামে লিখে দিবে! তাই আমাদের ভবিষতের জন্য মিরাকে আমাদের পথ থেকে সরিয়ে দিবে। আমি তোমাকে না বলেই প্রফেশনাল কিলার এর সাথে কন্টাক্ট করেছি।
–নাহ্ সাথী এ হতে পারে না, আমাদের ভালোবাসার জন্য একটা নিষ্পাপ জীবনকে হত্যা করবো।
.
.
চলবে…………………♥