#পুনর্জন্ম?
#পর্ব_০৪
#আফিয়া_আফরিন
সকাল থেকে তাওহীদ রাজীবকে ফোন করছে। রাজিব ফোন তুলছে না দেখে অতিমাত্রায় মেজাজটা গরম হয়ে আসছে তার। আজকেই জোয়ারদারের ফোন নাম্বার দেওয়ার কথা ছিল, অথচ ছেলের কোন পাত্তাই পাওয়া যাচ্ছে না।
তাওহীদ নিচে নেমে দাঁড়িয়েছে। আশপাশ থেকে কেমন যেন কুকুরের হাকডাক পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ির সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে, বাজারের দিকে পা বাড়ালো।
ক্লাবে তার বন্ধুরা অর্থাৎ মোহন, আহান ও আলিফ এর সাথে দেখা করলো। সবাই রাজীব কেই খুঁজছিলো
সকাল সকাল সেই প্রথম ক্লাবে এসে হাজির হয়। কিন্তু আজকে তার কোন খবরই নাই। গতকাল রাতের পর থেকে কারো সাথেই দেখা হয় নাই।
রাজিবের বাড়ি গিয়েও খোঁজ করা হলো। ওর ভাবি জানালো, ‘গতকাল রাতে রাজিব বাড়ি ফেরে নাই।’
এবার তাওহীদের মেজাজ আরো গরম হলো। রাজিবের কাছে ৫০ হাজার টাকা ছিল, সে কি তবে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গায়েব হয়ে গেল?
কিন্তু তাওহীদের ধারণাটা ভুল প্রমাণিত হলো তখন, যখন তারা রাজিবের লা’শটা দেখতে পেলো। চেহারা দেখে ঠাওর করা যাচ্ছে না এটা রাজিব, কিন্তু মানুষ স্পষ্ট বুঝতে পারছে যে এটাই রাজিব। কিন্তু ওর এই অবস্থা করলো কে? বিশেষ করে মুখের অবস্থা খুব খারাপ। জায়গায় জায়গায় আঁ’চ’রে’র দাগ। বোঝাই যাচ্ছে এটা কুকুরের কাজ।
লোকজন জড়ো হলো। পুলিশ এলো। তদন্ত শুরু হলো। রাজীবের এমন নিশংস মৃত্যুতে অবাক হল সবাই, তার চেয়ে বেশি ভয় পেলো। সবার একই কথা, এইরকম নিষ্ঠুরের মতো খু’ন করল কে যে ওর চেহারার দিকে তাকানোই যাচ্ছে না।
মৃন্ময়ী ও এলো। তাকে দেখে মনে হয়েছে সে খুব খুশি। শিশিরের কাছে গিয়ে বললো, ‘দেখেছো, এটাই একটা ধ’র্ষ’কে’র প্রাপ্য শাস্তি।’
কিন্তু শিশিরকে চিন্তিত দেখালো। তার ধারণা, এটা হয়তো অনুপমের কাজ। অবশ্য ধারণা বললে ভুল হবে, সে আশি শতাংশ সিওর। ময়ূরীর মৃত্যুর পর থেকে অনুপম এক ধরনের বিষণ্ণতার মধ্যে আছে।
কেমন জানি সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে।
কিন্তু শিশির এসব কথা মৃন্ময়ী কে বলল না। একটু এগিয়ে গিয়ে বলল, ‘বাড়ি ফিরে যাও তবে এখন।’
‘কেন ফিরে যাব কেন? আমি লা’শ দেখবো না?’
শিশির কিঞ্চিত বিরক্তি প্রকাশ করে বলল, ‘লা’শ দেখা এমন কোন পুন্যের কাজ নয়। এত ভিড়ের মধ্যে তোমার থাকা লাগবে না। চলো বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি।’
শিশির মৃন্ময়ীর হাত ধরে ভিড় থেকে বের হলো। পথের মধ্যে যেতে যেতে মৃন্ময়ী মুখ গোমরা করে বলল, ‘তুমি আমায় একটুও ভালোবাসো না। ভালবাসলে তো এমন করতে পারে?’
‘ভালোবাসি না তাই না? ঠিক আছে। তুমি যা বলবে, তাই সই।’
মৃন্ময়ী মুখ ভেংচিয়ে অন্য দিকে তাকালো। তার মধ্যকার ছেলেমানুষি ভাবনা আজও বিদ্যমান। কি আজব, বয়স বাড়ছে নাকি কমছে!
শিশির বলল, ‘আজকে অনুপম ভাইকে দেখছো?’
‘না। সকাল থেকে আমার সাথে দেখা হয়নি।’
দুজনের কথা বলতে বলতে হাঁটছিলো। পথিমধ্যে যেতে যেতে অনেকের থেকেই অনেক কথা শুনছে। রাজিবের মৃ’ত্যু’র খবর পুরো গ্রাম ছড়িয়ে পড়েছে। আশেপাশে মানুষজন নানান গুজব তুলছে। বেশিরভাগ মানুষের ধারণা, ময়ূরীর আত্মা নাকি এই অবস্থা করেছে।
.
.
.
এত ভিড়ভাট্টা সামলে তাওহীদ মোহনকে এক সাইডে নিয়ে এলো।
সেই দিনের বেনামী চিঠিটা মোহনের হাতে দিয়ে বললো, ‘এই দেখ এই চিঠিটা।’
মোহন চিঠিটা পড়ে খানিকক্ষণ উল্টে পাল্টে দেখে বলল, ‘কে দিয়েছে এইটা?’
‘আমি জানিনা।’
‘তোকে এমনি এমনি গাধা বলি তাওহীদ? তুই চিঠিটা আগে কেন দেখাস নি? তুই বুঝতে পারতেছিস এটা কার কাজ?’
‘কার কাজ?’
‘অনুপমের। তুই যদি চিঠিটা আমায় আগে দেখাতিস, তাহলে আজ রাজীবের এই অবস্থা হতোই না।’
‘তুই সিউর এটা অনুপম?’
‘একটু মাথা খাটালে তুই নিজেও শিওর হতে পারবি। মনে নাই ময়ূরী মারা যাওয়ার দিন অনুপম কি বলেছিল। চিঠির লেখার সাথে একবার কথাগুলো মিলায়ে দেখ।’
‘এখন তাহলে কি করবি?’
‘তুই তোর বাপকে গিয়ে বল। সাথে চেয়ারম্যান কেও বলবি।’
.
.
.
ময়ূরী আর শিশির ব্রীজ পার হতেই পুলিশকে আসতে দেখল। পুলিশের সাথে চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যানের ছেলে অয়ন এবং আরও বেশ কয়েকজন।
মৃন্ময়ী ওদেরকে দেখামাত্র বলল,
‘দলবেঁধে ওরা এখানে কি করতে আসছে?’
‘জানিনা। চলো তো গিয়ে দেখি।’
চেয়ারম্যান সাহেব আগে থেকেই ওদেরকে চিনতো। পুলিশ সহ সবাই অনুপমের খোঁজ করছিলো। তাওহীদ এর থেকে জানতে পেরেছে, এসব নাকি অনুপমেরই কাজ। গ্রামের কয়েকজন সাক্ষী ও দিয়েছে।
পুলিশের একজন অফিসার শিশিরকে জিজ্ঞেস করলো, ‘অনুপম কোথায় বলতে পারো? দেখেছো কোথাও ওকে?’
শিশির যেই ভয়টা পাচ্ছিল সেটাই হলো। সন্দেহের প্রথম তালিকায় ই অনুপমের নাম। আর থাকবেই তো।
চেয়ারম্যান সাহেব বললেন, ‘খু’নে’র খবর রটানোর পর থেকে নাকি ওকে কেউ কোথাও দেখে নাই।’
মৃন্ময়ী বেশ অবাক হলো। খু’ন’টা কি তবে অনুপম ভাই করেছে। কিন্তু সে তো এরকম করার মানুষ না।
শিশির বলল, ‘আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে মনে হয়। অনুপম ভাই আর যাই করুক, কখনো মানুষ খু’ন করবে না। ব্যাপারটা একটু খতিয়ে দেখেন অফিসার।’
চেয়ারম্যানের ছেলে অয়ন বলল,
‘এখানে খতিয়ে দেখার কি আছে? মনে নাই অনুপম সবার সামনে তাওহিদদেরকে হুমকি দিয়েছিল। ওদেরকে একদিন রাস্তায় ফেলে মারবে। দেখো তাই তো হলো। সবার কাছে তো জলের মতো স্পষ্ট, এটা অনুপম ই করেছে।’
‘এসব কথা তো সে সেদিন রাগের মাথায় বলেছে।’
পুলিশ অফিসার তাদেরকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আমরা তো অবশ্যই বিষয়টা খতিয়ে দেখবো। এই জন্যই অনুপমকে দরকার। দেখো তার যদি কোন খোঁজ খবর পাও, তাহলে আমাদেরকে জানিও।’
শিশিরের আর কিছু বলার রইলো না। চেয়ারম্যান সাহেব আর পুলিশ পাস কাটিয়ে চলে গেলেন।
মৃন্ময়ী শিশিরের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুমিও কি বিশ্বাস করো এটা অনুপম ভাইয়ের কাজ?’
‘আমারও প্রথম থেকে তাই মনে হচ্ছে। তবে আমি বুঝতে পারছি না। অনুপম ভাইকে মনে হয় অহেতুক সন্দেহ করা হচ্ছে।’
‘হ্যাঁ অবশ্যই। অনুপম ভাই যত যাই করুক না কেন, এসব কখনোই করবে না। রাগের মাথায় মানুষ খু’ন করার মত ছেলে সে না। যা করার ঠান্ডা মাথায় ই করবে।’
‘কিন্তু সে পালিয়ে আছে কেন?’
‘চলো তো আমরা একবার খুঁজে দেখি।’
‘গ্রামের সব মানুষজন মিলেই তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। তুমি আর আমি মিলে খুঁজে পাব?’
‘আমার মনে হয় আমি জানি সে কোথায় আছে। ময়ূরী অনুপম ভাইয়ের সাথে দেখা করতে প্রায় একটা জায়গায় যেত, আমি ১০০% নিশ্চিত, অনুপম ভাই সেখানেই আছে।’
‘কোন জায়গায়?’
‘গ্রামের একদম শেষের প্রান্তে।’
.
.
.
জোয়ারদারের সুদের অনেক বড় কারবার। সুদের এই কারবার ছাড়াও, তার আরেকটা ব্যবসা আছে। সেটা হলো গ্রামের বিভিন্ন জিনিসপত্র কম দামে কিনে, সেগুলো চড়া দামে শহরে বিক্রি করা।
তার এই কাজে সাহায্য করে তাওহীদের মত কিছু মানুষ।
গতকাল রাতে তার কাছেই এসেছিল রাজিব। রাত হয়ে গেছে বলে টাকাটা নিয়ে যায়নি জোয়ারদার সাহেবের কাছ থেকে। রাস্তার মধ্যে যদি ডাকাত ধরে।
তাই এখান কার পাহারাদার মায়মুর কে বলেছিল, ‘তোমার কাছে আজকে টাকাটা রাখো। কাল সকালে আমি না হয় তাওহীদ কেউ এসে নিয়ে যাবো।’
সকাল সকাল রাজীবের মৃ’ত্যুর খবরের জোয়ারদার খুশি হলেন বটে। তার ধারণা, জমা রাখা টাকাটা হয়তো আর ফেরত দিতে হবে না।
তিনি মায়মুর কে ডেকে পাঠালেন। মায়মুর আসতে বললেন, ‘গতকালকের জমা রাখা টাকাটার ব্যাপারে কি কোন কথা উঠেছে?’
‘কোন কথা সম্ভবত এখনো ওঠে নাই সাহেব। উঠলে তো আমরা জানতে পারতাম।’
‘উঠবে বলে মনে হয় না। এটা তো কেউ জানে না। রাজিবের টাকাটা নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ও যে টাকাটা আমাদের কাছে রেখে গেছে, এই খবর সম্ভবত কারো কাছেই নেই।’
‘হ্যাঁ। কিন্তু তাওহিদ বা অন্য কাউকে ফোন করে তো জানিও দিতে পারে।’
‘হ্যাঁ পারে। তবে তাওহিদের যা স্বভাব, তোমার কি মনে হয় জানলে ও ওখানে পড়ে থাকতে এতক্ষণ! ঠিকই চলে আসতো টাকার লোভে লোভে। তবুও এখন চুপচাপ থাকো। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা হবে। তোমার আগ বাড়িয়ে কিছু বলার দরকার নাই কাউকে।’
‘আচ্ছা সাহেব।’
.
.
.
শিশির আর মৃন্ময়ী হাঁটতে হাঁটতে গ্রামের শেষ মাথায় চলে এসেছে। এখানে দু আড়াই কিলোমিটার ঘন জঙ্গল। তারপর আবার অন্য গ্রামের শুরু।
শিশির বলল, ‘তারপর? কোথায় যাব এখন?’
‘জঙ্গলের মধ্যে।’
মৃন্ময়ীর ধারণা ভুল ছিল না। অনুপম এখানেই আছে। জঙ্গলের পাশ দিয়েই খুব চিকন একটা নদী বয়ে গেছে। সে নদীর পাড়ে বসে বসে ঢিল ছুঁড়ছিলো। খসখসে শুকনো পাতার আওয়াজের পিছন ফিরতেই দেখতে পেল মৃন্ময়ী আর শিশিরকে।
ওদের দেখা মাত্রই অবাক হয়ে বলল, ‘কি ব্যাপার হঠাৎ তোমরা এখানে?’
শিশির এগিয়ে এসে বলল, ‘তোমার খোঁজেই এখানে আসা। কি করছো তুমি এখানে?’
‘আমার খোঁজে আসা মানে? হঠাৎ আমার খোঁজ করতে হবে কি জন্য?’
‘গ্রামে পুলিশ তোমাকে খুঁজছে।’
অনুপম আরো এক ধাপ অবাক হয়ে বলল, ‘আমাকে পুলিশ খুঁজছে? কিন্তু কি জন্য?’
‘তুমি জানো না। এখনো খবর শোনো নাই?’
‘কি খবর?’
‘রাজিব খুন হয়েছে। ময়ূরী যেখানে গলায় দড়ি দিয়েছিল, সেখানেই রাজীবের লা’শ পাওয়া গেছে।’
অনুপম একরাশ বিস্ময় নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। সে তো ভোর থেকে এখানে এসে বসেছিল। এইসবের কিছুই জানেনা। কোন খবরই পায় নাই।
অনুপম কিছু বলতে যাবে তার আগেই শিশির বললো, ‘এই জন্য সকাল থেকে পুলিশ তোমাকে খুঁজছে। সবার ধারণা খু’ন টা তুমি করেছো।’
‘আমি?’ অনুপম আশ্চর্য হয়ে বললো।
‘লোকে তো তাই বলছে।’
‘চলো তো গিয়ে দেখি।’
মৃন্ময়ী বাধা দিয়ে বলল, ‘না অনুপম ভাই। যাওয়ার কোন দরকার নাই। তুমি যে কিছু করো নাই, এটা তুমি প্রমাণ করতে পারবে না। তার মধ্যে তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ ভাবছে তুমিই খুন করেছো। তার মধ্যে ময়ূরী মারা যাওয়ার দিন তুমি তাওহীদদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়েছিলে।’
‘সবই মনে আছে। আমি ভুলি নাই কিছু। তবুও যাব চলো। যা হয় হোক।’
‘পুলিশ যদি তোমায় এরেস্ট করে?’
‘করলে করবে। কয়েকদিন জেলে থাকা আমার জন্য ভালো। না হয় সত্যি সত্যি মাথা গরম করে তাওহীদ কে খু’ন করেই ফেলবো।’
এ কথা বলে অনুপম গ্রামের দিকে ছুটলো। পিছু পিছু মৃন্ময়ী আর শিশির ও।
বিনীতার কাছে খবরটা পৌঁছেছে কিছুক্ষণ মাত্র। মানুষের মুখে মুখে শুনেছেন তিনি। নিশ্চিত হওয়ার জন্য দেরি না করে এই দিকেই পা বাড়ালেন। মৃন্ময়ী বেরিয়েছে তাকে বলে যায়নি। তিনি মৃন্ময়ীকেও আশেপাশে খুঁজছেন।
জমিদার বাড়ির কাছে আসতেই, মৃন্ময়ী শিশির অনুপম সবাইকেই দেখতে পেলেন। মৃন্ময়ীকে এক সাইডে সরিয়ে নিয়ে এসে বললেন, ‘কোথাও গেলে বলে যেতে পারিস না মুখপু’ড়ী? সারাদিন শুধু টইটই করে ঘোরা?’
‘মা দেখো অনুপম ভাইকে পুলিশে ধরে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।’
বিনীতা একপ্রকার অবাক হয়ে সামনের দিকে তাকালেন। পুলিশের সাথে আজহার তালুকদারের বেশ ভালোই একটা গ্যা’ঞ্জা’ম লেগেছে।
তিনি কিছুতেই নিজের ছেলেকে কোন প্রমাণ ছাড়া ধরে নিয়ে যেতে দিবেন না। বারবার বলছেন, ‘প্রমাণ চাই আমার! প্রমাণ দিতে পারলে আমি নিজে গিয়ে আমার ছেলেকে আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে আসবো।’
কিন্তু কোন প্রমাণ তো পাওয়া যাচ্ছে না। এসআই বললেন, ‘গ্রামের মানুষজন তো বলছে। বুঝতে পারছেন না আপনি? আগে আপনার ছেলেকে থানায় নিয়ে যাই। এখনই তো তাকে হাজতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রমাণ পেলে তারপর।’
আজহার তালুকদার আর কিছু বলতে গেলে অনুপম নিজেই বাবাকে বাধা দেয়। আর পুলিশকে বলে, সামনে আগাতে।
পুলিশ অনুপমকে এরেস্ট করলো। তালুকদার বাধা দিয়েও কোন কুল কিনারা করতে পারলেন না।
.
.
.
সেই রাতে আবার আড্ডা বসলো তাওহীদদের। সবাই রাজিবের খুনের বিষয়টা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছিল এবং সেই রাতের আ’ত্মা টার কথা বলছিলো।
মোহন বললো, ‘রাজিবের খুনের ব্যাপারে তো আমি ১০০% নিশ্চিত ওইটা অনুপম ই করছে। আর সেদিনের আ’ত্মা টার ব্যাপারেও আমি শিওর যে ওইটা, মৃন্ময়ীর কাজ।’
‘সেটা তো আমিও বুঝতে পারছি। দুই বোনের চেহারা এক দেখে, আমাদের ভয় দেখানোটা খুব সহজেই করতে পারছে।’ তাওহীদ বললো।
‘আচ্ছা শোন এখনই ওকে কিছু বলার দরকার নাই। ও বলেছিল, ও আবার ফিরবে। তারমানে ও আবার আমাদেরকে ভয় দেখাতে আসবে। তখনই হাতেনাতে প্রমাণসহ ধরবো ওকে।’
‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
গল্পগুজব শেষ করে যে যার বাড়ির দিকে পা বাড়ালো।
মোহন একটা নির্জন রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছে। সে স্বভাবত একটু বে’প’রো’য়া আর উ’গ্র ধরনের। রাস্তার আশেপাশে পড়ে থাকা শুকনো লতাপাতা পা দিয়ে মাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
আশপাশ থেকে কুকুরের, পেচার ডাক ভেসে আসছে। প্রতিদিনই তো এরকম শব্দ হয়, কিন্তু আজকের টা একটু অন্যরকম। সবকিছু মনের ভুল ভেবে সামনে আগাতে লাগলো মোহন। কিন্তু হঠাৎ করেই মনে হল কে যেন তার পিছু নিয়েছে।
সন্দেহের আভাস নিয়ে পিছনে তাকালো। নাহ, কেউ তো নেই। সামনে তাকাতেই একটা ছায়া মানব তার নজরে পড়লো।
.
.
.
.
চলবে…….
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]