পুনর্জন্ম? #সূচনা_পর্ব

0
886

#পুনর্জন্ম?
#সূচনা_পর্ব
#আফিয়া_আফরিন

ময়ূরী একটা বেতের টুল পেতে উঠোনে বাঁশের ছাউনির নিচে বসে আছে। ঝড়ো হাওয়ায় বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টির দাপটে এক হাত দূরের জিনিসও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। ময়ূরীর গায়ের ছিটা ছিটা পানি আসছে। ময়ূরী উঠে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়ালো। বৃষ্টির পানিতে অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভিজলো, একটুখানি আশায়। এই আশায় যে, বৃষ্টির পানির মাধ্যমে তার গায়ের ধ’র্ষি’তা তকমাটা হয়তোবা মুছে যাবে। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব?
তার কি মরে যাওয়া উচিত এখন? মরার আগে কি একটা বারের জন্য অনুপমের দেখা মিলবে না? ময়ূরী উঠোন ছেড়ে ফাঁকা রাস্তায় নামলো। উদ্দেশ্যহীন হাঁটতে লাগলো। শাড়ির আঁচল ছুঁটে গিয়ে মাটির সাথে গড়াগড়ি করছে।

হাঁটতে হাঁটতে সে জমিদার বাড়ির পেছনদিকে চলে এসেছে। এই সেই জায়গা, যেখানে তাকে তাওহিদ আর তার বন্ধুরা মিলে ধ’র্ষ’ণ করেছে, হ্যাঁ গণধ’র্ষ’ণ! এই ঘটনার দুটো দিন পেরিয়ে গেছে।

ময়ূরীর আরো আগেই মরার কথা ছিলো। কিন্তু বাকি ছিল যে কিছু কাজ। মা-বাবা আর ছোট বোনটাকে যে কিছু জানানোর ছিল। না হলে কি আর মা-বাবাকে কটু কথা শোনানোর জন্য সে বেঁচে থাকে!

বৃষ্টি এখনো কমে নাই। বৃষ্টির কারণেই বোধহয় আজ মানুষজন রাস্তাঘাটে তেমন নেই। আর এই দিকটা প্রায় সময় ফাঁকাই থাকে। সামনেই বিশাল বাড়ি, জমিদার বাড়ি। তারা নামেই জমিদার, আগের মত জমিদারি সত্তাটা এখন আর নেই। তবুও গ্রামের মানুষের উপর ডা’ন্ডা ঘুরায় জমিদারের ছোট ছেলে তাওহীদ। ভেতর থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ আসছে।

ময়ূরী নিজের গা থেকে এক টানে শাড়িটা খুলে ফেললো। একদিক বেড়ে ফেলল হেলে যাওয়া গাছের সাথে। তারপর, মাঝখানে শক্ত করে গিট দিয়ে, ঝুলে পড়লো।
ভাবলো না নিজের মান-সম্মানের কথা। আর মান সম্মানের কথা কি বা ভাববে? মান-সম্মানের কি আর অবশিষ্ট আছে?

প্রাণ যায় যায় এমন অবস্থায় শুধু মাত্র মুখ দিয়ে মিন মিন স্বরে উচ্চারণ করলো, ‘ আল্লাহ, তুমি ওই দুটো মানুষকে মিলিয়ে দিও।’
.
.
.
মৃন্ময়ী ঘর থেকে বেরোলো। বৃষ্টির কারণে আলসেমি ঝেঁকে ধরেছে। ঘুম ধরছে বারবার।
মা রান্নাঘরে রান্না করছে, ইলিশ মাছ রান্না করছে নাকি? খুব সুন্দর ঘ্রাণ বেরিয়েছে। মৃন্ময় ঘ্রাণে ঘ্রাণে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালো।

ওর মা বিনীতাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘রান্না করছো মা?’

‘চোখের মাথা খাইছোস? দেখিস ই তো রান্না করি।’

‘ইলিশ মাছ রান্না করো।’

‘হু। তোর বাপ বাজার থেকে আওনের সময় নদীতে ইলিশ মাছ পাইছিলো। সেইটাই কলা পাতায় ভাব দিলাম। ময়ূরীর পছন্দ।’

‘ও আচ্ছা। ময়ূরী কই দেখলাম না তো?’

‘দেখ গিয়া উঠানে আছে। একটু আগেই তো দেখলাম।’

‘আচ্ছা।’

মৃন্ময়ী উঠোনে পুকুর পাড়ে খুঁজলো ময়ূরীকে। কিন্তু সন্তান পেলো না। পুকুর ঘাটের পেছনদিকেই অনুপম কে দেখতে পেলো। মৃন্ময়ী চিৎকার করে ডাক দিলো, ‘অনুপম ভাই!’

অনুপম ঘুরে তাকালো।
বৃষ্টি এখন কমে গেছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মাটি একেবারে পি’ছ’ল হয়ে গেছে। তার মধ্যে জায়গায় জায়গায় শ্যা’ও’লা বিছানো। এরিমধ্যে দিয়েই মৃন্ময়ী দৌড়ে গেল অনুপমের কাছে।

হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, ‘কি খবর অনুপম ভাই?

‘এইতো ভালোই আছি। তোমার কি খবর?’

‘আমিও ভাল আছি। আমাদের বাসার সামনের রাস্তা পার হচ্ছো, আসলে না যে? ময়ূরীর সাথে দেখা করবে না?’

অনুপম মৃদু হেসে বলল, ‘তোমার আপু তো ওই ঘটনার পর আমার সাথে কথাই বলেনা। সে তো আর চিনেই না আমারে। দেখলেও চোখ ফিরিয়ে নেয়।’

‘কি আর করবা? তার কষ্ট কি কম? গ্রামের মানুষজন কি কম কথা শুনাইছে? তুমি তো ময়ূরীরে ভালোবাসো, তুমি ভালোমতো বুঝালেই হলো।’

‘বোঝানোর সুযোগটা দিচ্ছে কই ও? কাছে গেলেই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিচ্ছে।’

‘আচ্ছা এখন বাসায় আসেন। ময়ূরীর সাথে কথা বলে তারপর যাবেন। কথা বলার ব্যাবস্থা আমি করে দিচ্ছি।’

অনুপম আর না করলো না। মৃন্ময়ীর সাথে চলে এলো।
কিন্তু, ময়ূরী কই? ময়ূরী কে আশেপাশে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। মৃন্ময়ী অনুপম কে বসতে বলে, ভিতরে চলে গেলো। বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মৃন্ময়ী একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে অনুপমের সামনে রেখে বললো, ‘ময়ূরী রে কেমন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। কই যে গেলো?’

অনুপম আশেপাশে তাকিয়ে বললো, ‘কোথায় আর যাবে? দেখো, আশেপাশে।’

‘এরপর থেকে তো ময়ূরী ঘর থেকে বের হয় না। আমার চিন্তা হচ্ছে ভাইয়া। যাবা একটু আমার সাথে, খুঁজে দেখতাম।’

‘হ্যাঁ চলো।’

অনুপম উঠে দাঁড়ালো। মৃন্ময়ী উঠোন থেকে চিৎকার করে বিনীতাকে ঠেকে বললো, ‘মা, ময়ূরী রে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। আমি একটু বাইরে গেলাম। দেখি ওরে পাই কি না।’

বিনীতা বাইরে এসে শাড়ীর আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বললেন, ‘চল, আমিও যাই। এই ঝাপা বৃষ্টির মধ্যে মাইয়াডা গেলো কম্নে?’
.
.
.
অনুপম আর ময়ূরীর সম্পর্ক কয়েক বছর এর। তাদের সম্পর্ক টা বিয়ে অবদি গড়িয়ে গেছে।

সেইদিন অনুপম আর ময়ূরীর বিয়ে ছিলো। বাড়িঘর ছিলো উৎসবে মুখরিত। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান টা ও অসম্ভব রকমের ধুমধাম করে করা হয়েছে। ময়ূরীর বিয়ের অনুষ্ঠানে গ্রামবাসী সকলে আমন্ত্রিত ছিলো।
ময়ূরী ছিলো বেশ শান্ত-শিষ্ট, পরোপকারী স্বভাবের। সবাই তাকে খুব পছন্দ করতো, ভালোবাসতো‌। কথায় কথায় ওর প্রশংসা করতো।
এই কারণে তার বিয়েতেও মানুষ জনের উপস্থিতি ছিলো দেখার মতো।
তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না, আবার খারাপ ও ছিলো না। ময়ূরীর বাবা আজিজ সাধ্যোর মধ্যে যতোটুকু পেরেছে, করেছে। বরং চো, সাধ্যর উপরে গিয়েই করেছে।

সেই ময়ূরীকেই পছন্দ করতো তাওহীদ, জমিদারের ছোটো ছেলে। অনুপমের সাথে বিয়ের কথা শুনে পায়ের র’ক্ত যেনো মাথায় চড়লো। অনুপমের সাথে আগে থেকেই রেষা’রেষি ছিলো তার। তাই সেই প্র’তি’শো’ধ নিতেই মিথ্যা বলে, ময়ূরী কে নিয়ে আসা হলো জমিদার বাড়ির পেছনের জীর্ণ কুটিরে।
এতো গগনবিধারী চিৎকার ও সেদিন পৌঁছে নি কারো কানে।

এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলো। বাতাসের আগে রটিয়ে গেলো যে, তালুকদার বাড়ির হবু বউ ধ’র্ষ’ণ হয়েছে। সাথে সাথে বিয়ে টা ভেঙে গেলো। অনুপম সহস্রাধিক মা-বাবা কেউ বুঝিয়েছে।

তাদের একটাই উত্তর ছিলো, ‘এমন মেয়ে কে ঘরের বউ করবো না বাপু। নিজের চরিত্রে কালি লাগাইছে, দেখ বিয়ের পর তোর আমাদের সাথেও তাই করবে। মে মেয়ে নিজের সতীত্ব নিজে রক্ষা করতে পারে না, সে কি করে কারো বউ হওয়ার যোগ্যতা রাখে?’

অনুপম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, সবার বিপক্ষে গিয়েই সে ময়ূরী কে বিয়ে করবে। এতো দিনের কল্পিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে।
কিন্তু ময়ূরী রাজি হলো না। সে অনুপম কে পরিষ্কার ভাবে বলে দিলো, ‘তোমার আর আমার সম্পর্ক এখানেই শেষ। আর কোনদিন আমার সামনে আসবে না।’

কষ্ট পেয়েছিল অনুপম। কিন্তু ময়ূরীর মনের অবস্থা খারাপ থাকায় কিছু বলে নাই।

এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা হলো অনেক। কিন্তু জমিদার সাহেব নিজের ক্ষমতার বলে ছেলের দোষ ধা’মা’চা’পা দিলেন। যে মানুষ এতদিন যাবৎ ময়ূরীর প্রশংসা করছিলো, তারাও ছি ছি করতে লাগলো।
চেয়ারম্যান সাহেব ছিল না গ্রামে থাকলে নিশ্চয়ই কোন ব্যবস্থা করতো।
.
.
ময়ূরীকে খুঁজতে খুঁজতে অনেক দূর পর্যন্ত চলে এলো। তারা এইবার চিন্তা করছে। বৃষ্টি আবারও শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কোথায় গেলো মেয়েটা? আশেপাশে বাসায় খোঁজখবর নিলো, কিন্তু ময়ূরীকে কেউ দেখে নাই বা কারো সাথে কথা হয় নাই।

বেলা গড়িয়ে বিকেল হলো। ময়ূরীর কোন খোঁজ পাওয়া গেল না। অনুপম গ্রামের শেষ মাথা পর্যন্ত গেলো। কিন্তু জমিদার বাড়ির দিকে যাওয়ার কোন প্রয়োজনই কেউ মনে করলো না।

বিনীতা চিন্তায় চিন্তায় এবার কাঁদতে বসলেন। মৃন্ময়ী মাকে বাড়িতে রেখে আবার বাহিরে বের হলো। বের হতেই শিশিরের সাথে দেখা।

শিশিরকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলতেই, শিশির বললো, ‘আচ্ছা চলো আমরা একবার খুঁজে দেখি।’

‘খুঁজলামই তো।’

‘জমিদার বাড়ির ঐদিকে দেখছো?’

‘তোমার কি মনে হয় এত কিছুর পরও ময়ূরী ওখানে যাবে?’

‘আগেই ভেবে নিচ্ছো কিভাবে? চলো তো আগে। সে নিজের ইচ্ছায় না যাক, জোর করে নিয়ে যাওয়ার লোকের অভাব আছে।’

মৃন্ময়ী অবাক হয়ে বললো, ‘আবারো।’

‘চলো।’

দুজনেই এদিকে আসছে। পথে অনুপম ও এলো।
শিশিরের ধারনা বিফলে যায় নাই।হ্যাঁ, এখানেই পাওয়া গেলো ময়ূরীকে। ঝুলন্ত অবস্থায়।
বোনের লা’শ দেখামাত্রই মৃন্ময়ী হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। বাকরুদ্ধ হলো অনুপম।
সে ভালোবাসে ময়ূরীকে। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবাসে। এতকিছুর পরও ভালবাসে। আর ময়ূরী কি না এইভাবে বেইমানি করলো? বিশ্বাসঘাতকতা করলো? পুরো দুনিয়া অন্ধকার দেখলো অনুপম।

চেতনা ফিরে পেল মানুষের শোরগোলে। ইতিমধ্যে খবর সবার কানে পৌঁছে গেছে। জল্পনা কল্পনা করার মানুষের তো অভাব নাই। সবাই এসে হাজির। ময়ূরীর মা ও খবর পেয়ে চলে এসেছে। অনুপম এক জায়গায় নির্বাক হয়ে বসে আছে। যা ঘটেছে তা সে বিশ্বাস করতে পারছে না। শিশির এবং আরো কয়েকজন মিলে লাশটাকে নামিয়ে শাড়ির গিট খুলে শাড়িটা আবৃত করে দিলো ময়ূরীর দেহের উপর।

জমিদার সাহেব এলেন, ছেলে বউরা এলো।
তন্ময় জিজ্ঞেস করলো, ‘কখন হলো এসব? কখন কার ঘটনা?’

তন্ময়ের এই প্রশ্নের উত্তর দিলো বিনীতা। বললো, ‘এত বিস্তারিত জাইনা কি করবা তোমরা? ঠা’ডা পরুক তোমাদের উপর। আমার মাইয়াডারে শেষ কইরা দিছে।’

জমিদার এগিয়ে এসে বললেন, ‘বাজে কথা বলা বন্ধ করো। তোমার মেয়ের চরিত্র খারাপ ছিলো, তাই সে উচিত শাস্তি পাইছে। এই মেয়ের গ্রামে থাকা পাপ। চেয়ারম্যান সাহেব আগামীকাল আসলেই আমি নিজেই একটা সভা ডাকতাম। হয় তোমাদের এক ঘর করে দিতাম, নয়তো গ্রাম থেকে বের করে দিতাম। যাক গে, সেসব করা হয় লাগে নাই ভালো হইছে। আপদ নিজে থেকেই বিদায় হয়েছে। ভালো হয়েছে।’

জমিদারের কথায় প্রত্যুত্তর করলো না কেউ। ময়ূরীর লা’শটাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হলো। অনুপম ওখানেই বেশ কিছুক্ষণ বসে রইলো। রাগে দুঃখে সারা শরীর জলে যাচ্ছে।
বারবার ময়ূরীর প্রতিচ্ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠছে। ইচ্ছে করছে তাওহিদকে এক কো’পে শেষ করতে।

ময়ূরীর বাবা আজিজ এখনো দোকান থেকে ফেরে নাই। ময়ূরীর মৃত্যুর খবরটা বোধ হয় এখনো তার কানে পৌঁছায়নি।
মৃন্ময়ী মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে, একটা মাত্র বোন তার। মাত্র কয়েক মিনিটের বড়। ছোটবেলা থেকে একসাথে, একই কাপড়ে, একই প্রতিচ্ছবিতে বড় হওয়া দুই বোন। কিভাবে সামলাবে সে এই এত বড় শোক।

মৃন্ময়ী উঠলো। বাবাকে ডাকতে যাবে। মৃন্ময়ীকে একা ছাড়লো না শিশির। সে নিজেও চললো এবং অনুপম কেও জোর করে নিয়ে গেলো।
বাড়ি থেকে খানিকটা পথ যেতেই দেখতে পেলো তাওহিদ কে। সে এইদিকেই হেঁটে আসছিলো। রাগে আক্রোশে দৌড়ে গিয়ে ওর শার্টের কলার চেপে ধরলো অনুপম।

মৃন্ময়ী আর শিশিরও ছুটে গেল পিছু পিছু। তাওহিদ অনুপমের হাতটা এক ঝটকায় নামিয়ে বললো, ‘তোর সাহস হয় কি করে, আমার শার্টের কলার চেপে ধরার? আমার গায়ে হাত দিয়েছিস তুই? দেখ তোর কি অবস্থা হয়?’

কথাটা বোধগম্য হলো না অনুপমের। হাত উঁচিয়ে এসে এলোপাথারে কি’ল ঘু’সি মারতে লাগলো। তাওহীদ ও ছেড়ে দিল না। সেও পাল্টা আঘাত করতে লাগলো। তাওহীদের সব সময় সঙ্গী, বাকি চার বন্ধু অনেক থামাতে চেষ্টা করলো। কিন্তু দুজনের কেউ থামলো না।
শিশির একপ্রকার জোর জবরদস্তি করে অনুপম কে সরিয়ে নিয়ে এলো। কিন্তু র’ক্ত গরম এখন। সে আবার ছুটে গেলো।

মৃন্ময়ী অনুপমকে থামিয়ে বললো, ‘ছাড়ো অনুপম ভাই। ওকে মারলে কি ময়ূরী কে ফিরে পাওয়া যাবে? ওর মতো জা’নো’য়া’র’কে মেরে তোমার হাত নষ্ট করোনা।’
সরে এলো অনুপম এবং সরে গেল তাওহিদ।

ততক্ষণে ওখানেও ছোটখাটো একটা জংলা বেঁধে গেছে। জমিদার সাহেবের একান্ত খাস লোক তাওহীদকে উদ্দেশ্য করে বললো, ‘চলো বাজান। ওর ব্যবস্থা পরে করতেছি।’

অনুপম গর্জে উঠে বললো, ‘ভাল থাক তাওহীদ। আজ তোকে মেরে ফেললাম না এটা তোর সাত পুরুষের ভাগ্য। তবে একেবারে ছেড়ে দেবো না। কথা দিচ্ছি, তোকে আমি রাস্তায় ফেলে মারবো। কুকুরে ছিড়ে খাবে তোকে। তোর জন্য আমি আমার ময়ূরীকে হারিয়েছি, শেষ করে ফেলবো তোকে। ছু’রি বসাবো তোর গলায়। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাক, সুস্থ থাক। আল্লাহর কাছে এটাই কামনা করি।’
.
.
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here