প্রণয়_কোন্দল #মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম) পর্ব:০৩

0
1120

#প্রণয়_কোন্দল
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:০৩

‘তুমি সব জেনেও কিভাবে এমন একটা লোকের সঙ্গে আমার বিয়ে দিলে বাবা?’

শতাব্দীর বাবা শাওন হাসান মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। অতিথিদের খাওয়ানো হচ্ছে এই সুযোগে শতাব্দী তার বাবাকে নিয়ে বাগানের নিরব জায়গায় গেল অনেক প্রশ্ন মনে জমে আছে যার উওর দরকার। শাওন হাসানের নিস্তব্ধতা দেখে শতাব্দী চোখেমুখে কাঠিন্যতা এনে পুনরায় বলল,

– উওর দিচ্ছো না কেন বাবা?কেন এমনটা করলে? জেনে শুনে শত্রুর হাতে তুলে দিলে আমায়? আমার জানামতে তোমার সবচেয়ে অপছন্দের ছেলে ছিল উৎস তাহলে কেন?

শাওন হাসানের ভেতরে অপরাধ বোধ কাজ করছে নিচু গলায় বললেন,
– আমার কিছু করার ছিল না, বিয়ে যেই ছেলের সঙ্গে ঠিক হয়েছিল সে হচ্ছে উৎসের মামাতো ভাই ওরা আগে থেকেই বুদ্ধি করে এমন একটা কাজ করেছে বিয়ের কয়েক মিনিট আগে আমি সবটা জানতে পারি কিন্তু কিছুই করতে পারিনি তোর ভাইকে উৎসের লোকেরা আটকে রেখেছিল মাথায় বন্দুক ঠেকানো ছিল উৎস নিজে আমায় ভিডিও দেখিয়েছে এমনকি এই হুমকিও দিয়েছিল আমাদের পুরো পরিবারের ক্ষতি করে দিবে তাই বাধ্য হয়ে এই কাজটা করতে হয়েছে।

শতাব্দী হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মনের মধ্যে উৎসের উপর ঘৃণার পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। শাওন হাসান মেয়ের মাথায় হাত রেখে বললেন,

– তুই চিন্তা করিস না আমি জানি উৎস আর যাই করুক তোর কোনো ক্ষতি করবে না ক্ষতি করার হলে আগেই করতে পারতো এভাবে তোকে বিয়ে করতো না।

শতাব্দী মলিন হাসলো।উৎস শতাব্দীকে না পেয়ে আশেপাশে খুঁজতে লাগলো, শতাব্দীকে দেখতেই কাছে এসে বলল,

– কখন ধরে খুঁজছি তোমায় চলো আঙ্কেল আপনিও আসুন।

শাওন হাসান আগে আগে হাঁটতে লাগলেন। শতাব্দীর বিরক্ত লাগছে উৎসকে মনে মনে বলছে, ‘জঘন্য অপরাধ করে কি সুন্দর নিষ্পাপ ভদ্র একটা ছেলের মতো চলাফেরা করছে কত নাটকীয় একটা লোক।’

ভালো মতো বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল সবাই বিদায় নিয়েছে শতাব্দীও সবার সামনে হাসি খুশি থাকার নাটক করেছে এখন সে ক্লান্ত। ঘরে এসে পোশাক বদলেই বিছানার মাঝখানে শুয়ে আছে, শাওন হাসান মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু উৎস রাজি নয় এই মুহূর্তে কোনমতেই সে শতাব্দীকে হাতের বাইরে যেতে দিতে চায় না।

সব অতিথিদের বিদায় দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছে উৎস। শতাব্দীর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল কয়েক মিনিট পর পোশাক বদলে বেরিয়ে এলো। বিছানার একপাশে দাঁড়িয়ে কপাল ঘষতে ঘষতে বিছানার দিকে তাকালো উৎস, পুরো বিছানায় হাত-পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়ে আছে শতাব্দী। উৎস শান্ত গলায় বলল,

– উকিল সাহেবা।

– কি?

– এত বড় বিছানায় তিনজন অনায়াসে ঘুমাতে পারবে আর তুমি কিনা পুরো বিছানা জুরে শুয়ে আছো, সাইড হও আমি শুবো।

– সোফায় গিয়ে শুয়ে থাকেন আপনার সঙ্গে এক বিছানায় থাকা অসম্ভব।

– তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো আমি তোমার হাজব্যান্ড।

– আপনাকে হাজব্যান্ড হিসেবে মানি না ঠকিয়ে বিয়ে করেছেন আমায় তার উপর আপনি অপবিত্র এবং একজন ধর্ষক।

উৎস জোরে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে রাগ কন্ট্রোল করে বলল,
– ইদানিং অনেক বেশি কথা বলে ফেলছো উকিল সাহেবা মুখ কিভাবে বন্ধ করতে হয় তা আমার ভালো করেই জানা আছে।

শতাব্দী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
– কি আর করবেন আমাকেও নিশ্চই সেভাবেই মারবেন?

– তোমাকে মারবো কেন? তোমাকে মারলে আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আসবে কোত্থেকে!

শতাব্দী নিশ্চুপ তবে মনে মনে উৎসকে অসংখ্য গালিগালাজ করতে লাগলো। উৎস আর কথা না বাড়িয়ে সোফায় চলে গেল, উৎসের থেকে সোফা বেশ খাটো এই সোফায় উৎসের পুরো শরীর আটবে না। কিছুক্ষণ সোফার দিকে দুঃখ ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে তারপর ইজি চেয়ারে গিয়ে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো উৎস।
.
.
মাঝরাত শতাব্দী শ্বাস নিতে পারছে না দম বন্ধ হয়ে আসছে মনে হচ্ছে কেউ তার ঠোঁট চেপে ধরে আছে।হাত নাড়তে পারছে না পুরো ঘর অন্ধকার নিজের উপর একটা মানবের অস্তিত্ব বুঝতে পারছে। শতাব্দী চোখ জোড়া খুলে কয়েক সেকেন্ড চুপ করে রইলো মানবটা কে বুঝতে পেরেই নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো মুখ দিয়ে কথা বলতে পারছে না উম উম শব্দ হচ্ছে।

উৎস শতাব্দীকে ছেড়ে পাশে গাঁ এলিয়ে দিতেই শতাব্দী লাফিয়ে উঠে লাইট জ্বালিয়ে ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিয়ে দৌড়ে বাথরুমে চলে গেল কিছুক্ষণ মুখ ঘষে ঘষে ধুয়ে বাইরে এলো।উৎস লম্বা হয়ে শুয়ে পায়ের উপর পা তুলে এক পা নাড়াচ্ছে। শতাব্দী আলমারির পাশ থেকে বিছানা ঝাড়ু এনে বলল,

– আমাকে ছোঁয়ার সাহস হয় কিভাবে?

উৎস খাপছাড়া ভাবে উওর দিল,
– বউকে ছুঁতে সাহস লাগে নাকি?

শতাব্দীর মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না উৎসকে তার কাছে সবথেকে অসভ্য বেহায়া একটা ছেলে মনে হচ্ছে। শতাব্দী হাতের ঝাড়ু দিয়ে বারি দিতে লাগলো উৎসকে, আচমকা এহেম আক্রমণে ভরকে গেছে উৎস। শতাব্দীকে আটকাতে আটকাতে শরীরে ঝাড়ুর অনেকগুলো আঘাত লেগে গেছে।

শতাব্দীর হাত থেকে ঝাড়ু নিয়ে উৎস বলল,
– এই ছিল কপালে?এই দিন দেখার জন্য বেঁচে ছিলাম? শেষে কিনা বউয়ের হাতে ঝাড়ুর বারি খেতে হলো!

শতাব্দী রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল,
– চরিত্র যদি ভালো থাকতো শরীর যদি পবিত্র থাকতো তাহলে মনে হয় না আজ এই দিন আপনাকে দেখতে হতো।

– আবার শুরু করেছে আমার ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দেওয়া।

– আপনারটা আপনি নিজেই দিয়েছেন আমি শুধু মনে করিয়ে দিচ্ছি।

– এখন কি নিজের বউকে আদরও করতে পারবো না?

– আগে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুন তারপর দেখা যাবে।

– নিজেকে যদি নির্দোষ প্রমাণ করতে পারি তাহলে তুমি কখনও আমাকে ছেড়ে যাবে না তো? সারাজীবন আমার সঙ্গেই থাকবে কথা দাও।

শতাব্দী নিশ্চুপ হয়ে উৎসের চোখের দিকে তাকালো, উৎসের মনে কি চলছে কি চাইছে সে বোঝার চেষ্টা করলো কিন্তু বুঝতে ব্যর্থ হলো।উৎস উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শতাব্দীর উওরের আশায়। শতাব্দী খানিকটা সময় চুপ থেকে বলল,

– নিজেকে বাঁচানোর জন্য বিয়ে করেছেন আমায় তাহলে সারাজীবন থাকতে চান কেন আমার সঙ্গে?

– তোমাকে ছেড়ে দেওয়ার পর সেই তো আবার বিয়ে করতেই হবে একা তো থাকা সম্ভব নয় প্রত্যেক মানুষেরই একান্ত নিজের বলতে একজন সঙ্গীর দরকার হয় তাই এত ঝামেলা করার দরকার কি বিয়ে যখন হয়েই গেছে ছাড়াছাড়ির দরকার নেই একসঙ্গেই না হয় জীবন পার করবো।

শতাব্দী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
– ভালোবাসা না থাকলে সম্পর্ক কি কখনও এগোয়?

উৎস সরাসরি উওর দিল না মনে মনে বলল,’আমি তো সেই কবে থেকেই তোমাকে ভালোবাসি’ তারপর পূর্বের ন্যায় শুয়ে পড়লো।
_____________

বেলা দশটা বাজে ঘুম থেকে উঠলো শতাব্দী, ইচ্ছে করেই এমনটা করছে। টেবিলে গিয়ে নাস্তা করে সোফায় বসে আশেপাশে উঁকিঝুঁকি মারছে। ঘুম থেকে উঠে উৎসকে কোথাও দেখতে পায়নি, ড্রয়িং রুমে সোফার এক কোণে উৎসের ছোট বোন ঊষা বসে বসে মোবাইল টিপছে আর হাসছে। শতাব্দী মুখ বাঁকিয়ে বলল,

– এই ননদ তোমার গুন্ডা ভাই কোথায়?

ঊষা মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে শতাব্দীকে একবার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে নিলো তারপর আবার মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বলল,

– আমার ভাইয়াকে একদম গুন্ডা বলবে না।

– গুন্ডাকে গুন্ডা বলবো না তো কি বলবো?

– আমার ভাই গুন্ডা না।

– ওহ আচ্ছা, এই যে তোমার ভাই এত বড় একটা অপরাধ করলো তোমাদের কি খারাপ লাগছে না? একটুও তার প্রতি ঘৃণা হয় না? আমার জানা মতে রুহি তো তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল।

ঊষা শতাব্দীর দিকে এক অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে বসা থেকে উঠে চলে গেল। শতাব্দী তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
– বাড়ির লোকগুলো বেশ অদ্ভুত এভাবে আশকারা দিয়েই এত সুন্দর ছেলেটাকে নষ্ট বানিয়ে ফেলেছে।

মিসেস উপমা নিজের বেড রুমের সোফায় শরীর এলিয়ে দিয়ে বসে আছেন, এসি চলা স্বত্বেও পাশেই একটা কম বয়সী মেয়ে হাত পাখা দিয়ে মিসেস উপমাকে বাতাস করছে। শতাব্দী শ্বাশুড়ির পাশে বসে গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,

– শ্বাশুড়ি মুখে সাদা সাদা এগুলো কি মেখেছেন?

মিসেস উপমার দু’চোখের উপর দু’টো শসা দেওয়া এক চোখ থেকে একটা শসা উঠিয়ে চিকন স্বরে কোনমতে বললেন,
– ফেসপ্যাক।

– ওহ, বুড়ো বয়সে ভীমরতি (মিনমিনে গলায় বলল)

মিসেস উপমা জিজ্ঞেস করলেন,
– কি বললে?

– কিছু না।

মিসেস উপমা এবার পাশের মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
– শেফালী বউমাকেও ফেসপ্যাক লাগিয়ে দে তো।

শতাব্দী থামিয়ে দিয়ে বলল,
– আমি লাগাবো না।

– আরে লাগাও তোমার মুখের ব্রাইটনেস বাড়বে।

– না শ্বাশুড়ি আমার ব্রাইটনেসের দরকার নেই।

মিসেস উপমা আর কিছু বললেন না শেফালী আগের মতই বাতাস করে যাচ্ছে। শতাব্দী হালকা কেশে বলল,
– শেফালী তুমি এখন যাও।

– ম্যাডামরে বাতাস দিচ্ছি দেখতাছেন না? বাতাস না দিলে ম্যাডামের ফেইচপাক নষ্ট হয়ে যাবে।

– ওইটা ফেসপ্যাক হবে।

– একি হইলো।

মিসেস উপমা বললেন,
– শেফালী তুই এখন যা শুকিয়ে গেলে তোকে ডাকবো।

– আচ্ছা ম্যাডাম।

শেফালী চলে গেল। শতাব্দী হাত পাখা দিয়ে মিসেস উপমাকে বাতাস করতে করতে বলল,
– শ্বাশুড়ি একটা প্রশ্ন ছিল?

– কি?

– সঠিক উওর দিবেন কিন্তু, এই বাড়িতে আপনাকেই আমার একমাত্র ভালো মানুষ মনে হয়েছে।

মিসেস উপমা খুশিতে গদগদ হয়ে চোখ থেকে শসা সরিয়ে বললেন,
– সত্যি বউমা?

– হুম শ্বাশুড়ি একশো পার্সেন্ট সত্যি।

– তোমার শ্বশুর এতদিন সংসার করেও বুঝতে পারলো না।

শতাব্দী এবার গম্ভীর মুখে আসল কথাটা বলল,
– আপনার ছেলে উৎস একটা মেয়েকে খু’ন করেছে এমনকি হাতেনাতে ধরাও পরেছে তারপরেও আপনারা কিভাবে ওকে সমর্থন করছেন? আপনার স্বামী তো টাকা দিয়ে কেস ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল কিন্তু না পেরে জামিনে ছেলেকে ছাড়িয়ে এনেছে।

মিসেস উপমার মুখে যেন কালো মেঘ এসে জমাট বেঁধেছে। শতাব্দী আবারো বলল,
– আপনি কিভাবে সবকিছু মেনে নিচ্ছেন? যতই আপনি মা হোন না কেন আপনার ছেলের জন্য আরেক মায়ের বুক খালি হয়েছে একটা মেয়েকে উৎস নির্মমভাবে হ’ত্যা করেছে।

– রুহিকে উৎস মারেনি আমার ছেলে এমন জঘন্য একটা কাজ করতে পারে না, উৎস রুহিকে নিজের বোনের চোখে দেখতো, উৎসের কাছে ঊষা যা রুহিও তা উৎস ওদের দু’জনকে একসঙ্গে কলেজে দিয়ে আসতো, আর রুহি সেও তো উৎস ভাইয়া উৎস ভাইয়া বলতে পাগল ছিল।

– মি.উৎসকে পুলিশ হাতেনাতে ধরেছিল রুহির লা’শের কাছ থেকে।

– চোখের দেখা সবসময় ঠিক হয় না, উৎস এমন কাজ করেনি।

– আচ্ছা মানলাম মি.উৎস কিছু করেনি তাহলে রুহির লা’শের পাশে উনি কি করছিল? উনার হাতে রক্ত কেন ছিল? সব রিপোর্ট দেখেও তো এটাই প্রমাণ হচ্ছে সব দোষ মি.উৎসের।

– এত কিছু জানি না তবে আমি আমার ছেলেকে বিশ্বাস করি তাই ওকে কোনো প্রশ্নও করিনি।

সবকিছু ঘোলাটে লাগছে শতাব্দীর কাছে হিসাব যেন কিছুতেই মিলছে না। শতাব্দী প্রশ্ন করল,
– তাহলে ওই প্রমাণ ওই সাক্ষী? হিসেব মিলছে না।

– তুমিও তো একজন উকিল বউমা শুনেছি এখন পর্যন্ত কোনো মামলায় হারনি তাহলে তুমি উৎসের হয়ে মামলাটা কেন লড়ছো না? তুমিও কি ওকে অবিশ্বাস করো? তোমরা তো দু’জন দু’জনকে ভালোবাসো তাহলে কেন এতো অবিশ্বাস?

– কে বলেছে আমরা দু’জন দু’জনকে ভালোবাসি?

– উৎস বলেছে, এই ঘটনার জন্য নাকি তোমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে তাই বাধ্য হয়ে তোমাকে ওভাবে বিয়ে করেছে আর তুমিও বাড়িতে এসেই সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছ।

শতাব্দী মনে মনে বলল,’ওহ এই ব্যাপার এই জন্যই শ্বাশুড়ি এখনও ভালো ব্যবহার করছে।’

শতাব্দী মিসেস উপমার দিকে তাকিয়ে শুকনো হেসে বলল,
– আপনার প্যাক শুকিয়ে গেছে আমি শেফালীকে ডেকে দিচ্ছি।

বলেই শতাব্দী চলে গেল।
_______________

অনেক চেষ্টা করেও সারাদিন একবারের জন্যও বাড়ির বাইরে বের হতে পারেনি শতাব্দী। উৎস বাড়ির বাইরে কয়েকজন গার্ড রেখে গেছে শতাব্দী যেন বাড়ি থেকে বের হতে না পারে তার জন্য। কারো সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছে না শতাব্দীর ফোনটাও উৎসের কাছে।

সন্ধ্যার পরে উৎস বাড়িতে ফিরেছে পরনের শার্ট ঘামে ভেজা। ঘরে ঢুকেই গোসল করার জন্য বাথরুমে চলে গেল। শতাব্দী ঘরে এসে বাথরুম থেকে পানির আওয়াজ শুনতে পেয়ে বুঝতে পারলো উৎস গোসল করছে। শতাব্দীর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি ঘুরছে, দ্রুত গিয়ে সার্ভেন্টদের কাছ থেকে এক বালতি সাবান পানি আর একটা হারপিকের বোতল নিয়ে আসলো।

শতাব্দী বাথরুমের সামনে অল্প সাবান পানি ঢেলে দিয়ে তার উপর বোতলের সব হারপিক ফেলে দিয়েছে তার ঠিক একটু সামনে পানি ভর্তি বালতি রেখে দিয়েছে। আগেই সার্ভেন্টকে কফি দিয়ে যেতে বলেছিল, কফির মগ নিয়ে বিছানার মাঝখানে আরামে বসে মুচকি হেসে শতাব্দী বলল,

– এবার হবে এন্টারটেইনমেন্ট।

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here