প্রতিশোধের_আত্মা
প্রথম_পর্ব_০১,০২
১
“প্লিজ আমার এমন সর্বনাশ করবেন না প্লিজ”
কে শুনে কার কথা, রিয়াজকে ৮ জন মেয়ে বাথরুমে আটকে রেখে জামাকাপড় খুলছে।সহজ সরল একটি ছেলে, যে কোনোদিন কোনো মেয়ে কেনো,কোনো বাচ্চা মেয়ের সাথেও কথা বলতে ভয় করতো। আজ ১ মাস হয়েছে সে কলেজে ভর্তি হয়েছে।মাত্র ইন্টার ফাস্ট ইয়ারের ছাত্র।বয়স একটু হয়েছে, তবে ফেল হতে হতে অবশেষে কলেজের মুখ দেখতে পেয়েছে। কাওকে তেমন চেনেনা জানেনা।জানবেই বা কি করে, মাথা তুলেই কলেজে আসেনি কখনো।
অনার্স এর ৮ টা মেয়ে প্রতিদিন তাকে ‘এই যে মিস্টার সেক্সি বয় ‘ বলে বিরক্ত করতো। রিয়াজ এদের কথা শুনে যেমন ভয় পেতো,ঠিক তেমন ভাবেই এড়িয়ে যেতো। তবে আজ আর রক্ষা হলোনা। এক মাস পর মেয়েগুলো তাকে ছেড়ে কথা বলেনি।হুম একটা কথা ঠিক।রিয়াজ দেখতে স্মার্ট ছিলো, চোখ ২ টি নীল রঙের, ফর্সা চেহারা,সাদা সিদে হলেও হেয়ার কাটিং ছিলো চোখজুড়ালো।যে কেও ওর চুল দেখলে ফিদা হতে বাধ্য।চুলের এক পাশ মেশিন দিয়ে কেটে ফেলে,অন্যপাশ প্রায় ৯-১০” এর মতো লম্বা,তারউপর আবার চুলেও কালার ছিলো।মোট কথা সব দিকে ফিট থাকলে,মেয়েদের থেকে এড়িয়ে চলা ওর একটা অভ্যাস ছিলো। কিন্তু এই অভ্যাসটাই আজ তাকে এখানে নিয়ে আসবে কে জানতো।
রিয়াজ কলেজের বাথরুমে এসে মুখে পানি দিতে যাবে,কিন্তু এর আগেই ওদের মধ্যে একটি মেয়ে, নাম প্রিয়া।এসে বলল)
— ছেলেদের বাথরুমে এখন কাজ চলছে,তুমি মেয়েদের বাথরুমে যাও।
— দেখুন পথ ছাড়ুন। আমি এখানেই যাবো, আর ওটা আপনাদের মেয়েদের বাথরুম,সেখানে আমি কেনো যাবো।
— কারণ ছেলেদের বাথরুম আজ মেয়েরা পরিষ্কার করতেছে,তবুও যদি তুমি যেতে চাও তবে যাও।আমি বাধা দিচ্ছিনা।
( রিয়াজ এবার একটা ঢোক খেলো।এবার যদি রিয়াজকে ৫ কোটি টাকা দিয়েও কেও বলে বাথরুমে যাবার জন্য,তবে তা অসম্ভব,রিয়াজকে আর বাথরুমে পাঠানো যাবেনা।উপায় না পেয়ে রিয়াজ বলল)
— আচ্ছা একটু উপকার করুন প্লিজ।
— জ্বী বলো?
— আপনি দরজায় একটু দাড়াবেন প্লিজ? আমি মেয়েদের বাথরুমে গিয়ে একটু ইয়েও করে আসবো।আপনি যদি একটু পাহারা দিতেন,তবে খুব উপকার হতো।
— ঠিক আছে, তুমি যাও সেক্সি বয়, আমি এদিকে সামলাচ্ছি।
( রিয়াজের এমন ভাবে ইয়ে পেয়েছে যে, মেয়েদের ওয়াশরুমে অবশেষে প্রবেশ করতেই হলো। এদিকে প্রিয়া বাকি ৭ জনকে ইশারায় ডাক দিলো। ওরা হচ্ছে, রিয়া,মায়া, জান্নাত, সুমাইয়া, তানিয়া, সামিয়া, পিংকি আর এদিকে তো প্রিয়া আছেই।
প্রিয়ার ইশারায় সবাই উপস্থিত হতেই প্রিয়া সবার উদ্দেশ্যে বললো)
— তোরা বাথরুমে গিয়ে লুকিয়ে পড়,আমি আসছি।
— ঠিক আছে, তাড়াতাড়ি।
( ওরা ৭ জন বাথরুমে প্রবেশ করতেই প্রিয়া সেই কলেজের ক্লিনার( যে কলেজ পরিস্কার করে) তাকে ডেকে বলল)
— এই ওয়াশরুমের বাহিরে তালা মেরে দাও।আমি যখন তোমাকে ফোন দিবো,তখন এসে তালা খুলবা।এর আগে কেও যদি ওয়াশরুমে আসে,তবে বলে দিও অনার্স এর লিডার প্রিয়া মেডাম , ওয়াশরুমে তালা মেরে চাবি নিয়ে গেছে। ৩ ঘন্টা পর তালা খোলা হবে।
— ঠিক আছে মেডাম,মুই হেইডাই করবানি,কিন্তু মেডাম,আমারে এইডা কন আপনে এতক্ষন এহানে কি করবেন
— যা বলেছি সেটাই করো।এতো প্রশ্ন করো কোন সাহসে তুমি হা..?
ধমক শুনে ক্লিনার সানজিদা বেগম থমকে যায়। প্রিয়াকে এবং তার পুরো গ্যাংটাকে কলেজের সব মেয়েরাই ভয় পায়। হোস্টেলের সব মেয়ে প্রিয়ার গ্রুপকে ভয় পায়।তাই কেও তার বিরুদ্ধে প্রিন্সিপ্যাল এর কাছে কমপ্লেইন্ট ও করেনা ভয়ে।কারণ এর শাস্তি কঠিন ভয়াবহ হতে পারে।
এদিকে প্রিয়ার কথামতো সানজিদা বেগম ওয়াশরুমে তালা মেরে দেয়।প্রিয়াও বাথরুমে প্রবেশ করে ফেলেছে তালা মারার আগে। এখন এই দরজা তখনি খুলবে,যখন প্রিয়ার ফোন থেকে ক্লিনারের ফোনে ফোন যাবে।
রিয়াজ প্রশ্রাব শেষ করে যেই পিছু ঘুরেছে।এমন সময় মায়া একটা সিলভারের ঝাড়ুর আগা দিয়ে,সজোরে আঘাত করে রিয়াজের মাথায়। সাথে সাথে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে রিয়াজ। মায়া আবার সবার থেকে শক্তিশালী ছিলো।ওর আঘাতে রিয়াজ শুধু অজ্ঞ্যান হয়নি,মাথা ফেটে রক্তও বের হচ্ছিলো।
রিয়াজ সেখানেই পড়ে যাওয়ার পর সবাই মিলে তাকে ধরে ফ্লোরে নিয়ে আসে।এদিকে দরজা জানালা সবই বন্ধ,শুধু ওয়াশরুমের একটি সাদা লাইট জ্বলছিলো।
১৭ মিনিট পর রিয়াজের জ্ঞান ফিরে আসে।চোখ মেলেই দেখে চারদিক কেমন যেনো ঝাপসা ঝাপসা।ওর নীল নীল চোখ ২ টি অশ্রুজলে ভিজে চিক চিক করছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখে ওর চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে সেই ৮জন মেয়ে।
রিয়াজ লাফদিয়ে উঠতে গিয়েও ব্যর্থ হয়।ওর হাত-পা দড়ি দিয়ে বেধে রেখেছে। হাত পিছনে নিয়ে গিয়ে বাধার কারণে উঠতে পারছেনা, এদিকে পা বেধে রেখেছে একটি লোহার সাথে,যা দেওয়ালের সাথে লাগানো আছে। রিয়াজ শুয়া থেকে উঠে দাড়াবার কোনো পথই খোলা নেই।
ওর চিৎকারটাও দরজা অব্দি বিদ্যমান, এর বাহিরে যাবেনা।উপায় খুজে না পেয়ে রিয়াজ তাদের বলল)
– প্লিজ আমার এমন সর্বনাশ করবেন না প্লিজ।
শুনলোনা কেও রিয়াজের আকুতি মিনতি। সুমাইয়া এসে একটা একটা করে রিয়াজের শার্ট এর বোতাম খুলে ফেলে।প্রিয়া রিয়াজের বেল্ট খোলার পর প্যান্ট হাটু অব্দি নামিয়ে ফেলে।এরপর পিংকি রিয়াজের শটপ্যান্টের দিকে তাকায়।রিয়াজ কান্না করেই ফেলেছে এবার।চোখ ভিজে প্রায় নদীর পানির মতো হয়ে গেছে।মাথা ফাটা দিয়ে এখনো ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে রিয়াজের কপাল বেয়ে।ফর্সা কপালে রক্ত যেনো জবাফুলে পরিণত হয়েছে।রিয়াজের চিৎকার সহ্য করতে না পেরে প্রিয়া ওর ওড়নাটা রিয়াজের মুখে বেধে দেয়।এবার যেনো রিয়াজ আরো বেশি হারিয়ে ফেলে তার শক্তি। মায়া একটান দিয়ে রিয়াজের শর্টপ্যান্টাও খুলে ফেলে।রিয়াজ ফ্লোরে গড়াগড়ি খেতে লাগলো এবার।কিন্তু উল্টোপাশ হতে পারছেনা,কারণ ওর পা একটি লোহার সাথে বাধা।সবাই রিয়াজের লিঙ্গ এর দিকে তাকিয়ে আছে।
রিয়াজের চোখমুখ ফুলে সেই ফর্সা চেহারা লাল আকার ধারণ করেছে।
এরপর ধীরে ধীরে সবার আগে প্রিয়া ওর জামাকাপড় খুলে ফেলে।দেহে ব্রা আর পেন্টি রেখে রিয়াজের সামনে এদিক ওদিক করছে।এতে রিয়াজের অনিচ্ছাকৃত ভাবেই ওর লিঙ্গ উত্তেজিত হয়ে উঠে।রিয়াজ না চাইতেও তার দেহটাও যেনো তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে নড়ছে।রিয়াজের এমন অবস্তা দেখে বাকি সাতজন রিয়াজের শরীর ফ্লোরের সাথে ভালোভাবে চেপে ধরে। এবার রিয়াজ এদিক থেকে সেদিকের নড়াচড়াটাও বন্ধ হয়ে যায়।আর অবশিষ্ট থাকেনি কিছু।প্রিয়া ওর গায়ের বাকি জামাকাপড় ( ব্রা- পেন্টি) খুলে রিয়াজের লিঙ্গ এর উপরে উঠে বসে।এরপর হামলা চালায় সে
এভাবে প্রায় ২০ মিনিট রিয়াজের উপর হামলা চালায় প্রিয়া। প্রিয়ার পর এবার মায়া আসে।মায়ার জায়গায় প্রিয়া গিয়ে রিয়াজকে চেপে ধরে।মায়াও প্রিয়ার মতো করে রিয়াজকে একইভাবে হামলা চালাতে থাকে।
এভাবে বাকি ৬ জনও রিয়াজের উপর একইভাবে কাজ চালায়।রিয়াজ অস্থির হয়ে আর নড়াচড়াও করতে পারছেনা।এখন আর রিয়াজকে চেপে ধরতে হচ্ছেনা।ওরা একজনের পর একজন এসে রিয়াজের উপর হামলা চালাচ্ছে।রিয়াজের মুখ ফুলে প্রায় দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।তারা দেখেও না দেখার ভান করে তাদের চাহিদা মেটাচ্ছে।
রিয়াজের লিঙ্গ যখনি দূর্বল হয়ে পড়ে,তখনি আবার ওরা তাদের স্তন দেখিয়ে উত্তেজিত করে তুলে।
একসময় রিয়াজ ধড়পড় করতে শুরু করে।ওর এমন অবস্তা দেখে প্রিয়া মুখ খুলতে যাবে,তখনি পিংকি বলে উঠে)
— আরে দাড়া,আমি আর একবার করবো।এরপর ছেড়ে দিস এই সেক্সি বয়কে।
— তুই না? ঠিক আছে কর,
( পিংকি রিয়াজের উপর বসার ৫ মিনিট পর রিয়াজ হটাৎ নিস্তভ হয়ে যায়।পিংকি টের পেলো রিয়াজের লিঙ্গ ও নিথর হয়ে গেছে।পিংকি বুঝতে না পেরে রিয়াজের লিঙ্গ ধরেই চমকে যায়,একি!! লিঙ্গ এতো ঠান্ডা কেনো। পিংকির কথা শুনে সবাই দেখতে আসে। বাকি ৭ জন জামাকাপড় পড়তে যাচ্ছিলো।পিংকির হয়ে গেলেই ওরা চলে যেতো।কিন্তু পিংকির কথাটা শুনে সবাই অর্ধেক জামা পড়েই আবার দেখতে আসে।সত্যিই তো ঠান্ডা হয়ে গেছে খুব।পুরো বরফের মতো।
মায়া কিছুটা আচ করতে পেরেছে।এরপর রিয়াজের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।পুরো মুখ ফুলে লাল তো হয়েই আছে,তারউপর রক্ত আর ঘাম মিশ্রিত হয়ে মুখটা ফেঁকাসে হয়ে আছে।
জান্নাত রিয়াজের মুখ থেকে ওড়নাটা সরিয়ে গালে থাপ্পড় মারতে মারতে বলছে)
— এই শালা,উঠ.. তোর কাজ শেষ,
( কিন্তু রিয়াজের সাড়া শব্দ না পেয়ে তানিয়া গেলো এবার।তানিয়া সবার আগে রিয়াজের নাকে হাত দিয়ে দেখে নিশ্বাস বন্ধ। সাথে সাথে চমকে উঠে তানিয়া।পিছনে ভয়ের চোখে তাকাতেই সবাই কিছুটা আচ করেছে।এরপর সামিয়া তাড়াহুড়ো করে রিয়াজের হাতের রগ ধরে দেখে রক্ত চলাচল বন্ধ।)
— আরে! এতো মরে গেছে.. ??
( কথাটা শুনে পিংকি চমকে যায়।পিংকি এখনো রিয়াজের উপরেই বসে আছে।ভয়ে পিংকি হোচড় মোচড় খেয়ে নেমে পড়ে ফ্লোরে।এবার সবার মুখে ঘামে ভরে যায়।ওরা মেরেই ফেলেছে? এতোটাও করতে চায়নি ওরা।কিন্তু মারা যাবে সেটাও ভাবেনি।নিষ্পাপ চেহারাটা পড়ে আছে ফ্লোরে।এদিকে ওরা ৮ জন পড়েছে মহা বিপদে।উপায় না পেয়ে প্রিয়া বললো)
— এই শালা তো মরছেই,সাথে আমাদেরকেও আটকিয়ে গেছে।চল লাশটাকে কোথাও ফুতে ফেলি।
— কিন্তু বাহির করবি কিভাবে?
— দাড়া, আমি ব্যবস্তা করতেছি।
( প্রিয়া ক্লিনারকে কল করে বলল)
— শুনুন,একটা বড় ময়লার বস্তা এনে আমাকে ফোন দিন।বস্তাটা বাতরুমের দরজার সামনে রেখেই ফোন দিবেন।মনে থাকে যেনো।
( প্রিয়ার কথামত সানজিদা বেগম বস্তা এনে দরজার সামনে রাখে। এরপর তালা খোলে সানজিদা চলে যায়।প্রিয়া বস্তাটা ভিতরে নিয়ে গিয়ে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।বাকিরা রিয়াজের লাশ বস্তায় রেখে উপরে ময়লা দিয়ে ভরে দেয়। এরপর ক্লিনারকে বলে বস্তাটা গেইটের সামনে নিয়ে আসে সানজিদা বেগম।সবাই মিলে ধরাধরি করে বস্তাটা মায়ার গাড়িতে তুলে।মায়ার বাবার টাকাপয়সার অভাব নেই।আসা যাওয়া করার জন্য একটি প্রাইভেট কার কিনে দিয়েছিলো।শুধু মায়া না,প্রিয়ার বাবাও ধনী ব্যাক্তি।
যাইহোক, ওরা বস্তাটা গাড়িতে রেখে,গাড়ি চালু করে চলে যায় ঢাকা গাবতলী এলাকার শেষে।যেখানে ময়লা- আবর্জনা ফেলা হয় সেই খানে, এরপর তারা বস্তাটা সেখানে ফেলে দিয়ে আবার চলে আসে হোস্টেলে।
সামিয়া সানজিদা বেগমকে ১৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলে ” আজকে যা হয়েছে সব নিজের পেটে কবর দিয়ে রাখো।যদি ফাঁশ হয়, তবে আপনার মাথার সব কয়টা চুল কেটে নাড়া করে দিবো”
সামিয়ার ধমকে সানজিদা চুপ হয়ে যায়।এরপর টাকা গুলো হাতে নিয়ে সানজিদা বেগম বাসায় চলে যায়।
পরেরদন শুরু হয় এই নিয়ে ঝামেলা।রিয়াজের বাড়ির লোক কলেজে এসে খোজ নিতে থাকে রিয়াজের।কিন্তু কেও কিছু জানেনা বলে ওদের কোনো উত্তর মেলেনা।ওরা ৮ জনও সবার সামনে নেকামি করতে করতে বলে, ” আহারে,ছেলেটা খুবই সহজ সরল,কে যানে কোথায় গিয়ে পড়ে আছে। “”
কলেজের এসে কোনো খোজ পায়নি রিয়াজের পরিবার।পাবেই বা কি করে,ওর তো কোনো বন্ধুও ছিলোনা। অবশেষে তারা পুলিশের কাছে কমপ্লেইন্ট করে।পুলিশ তদন্ত চালাতে রিয়াজকে সব জায়গায় খোজে।কিন্তু মিলেনি রিয়াজের কোনো হুদিশ। কলেজে তোলপাড় হয়ে উঠে রিয়াজের ব্যাপারটা নিয়ে।না যানে ছেলেটা কোথায় পড়ে আছে।এদিকে প্রিয়া,মায়া সামিয়া, তানিয়া,পিংকি,রিয়া,জান্নাত,সুমাইয়া তারা সবাই চিন্তিতো।যদি কোনোভাবে ধরা খায় সেই ভয়ে।কিন্তু না,এর কোনো কিছুই হয়নি।পুলিশের কাছে ধরা খাওয়ার কোনো ইস্যু রাখেনি তারা।১ মাস এই নিয়ে হৈ চৈ করে সব আবার চুপ হয়ে যায়।কেও ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে চুপ হয়,কেও ফেবুতে শোকাহত জানায়া, কেও ওর পিক সবার মেসেঞ্জারে দিয়ে নিখোজের বিজ্ঞপ্তি করে, সোশ্যাল মিডিয়াতে কয়দিন ভাইরাল হয় এই রিয়াজ। তবে কয়দিন, অল্প কয়দিন বাদেই সব হয়ে যায় নিশ্চুপ,থাকেনা আর রিয়াজের অস্তিত্র,দেয়না কেও আর স্টাটাস,মুছে যায় রিয়াজের নাম।
ওর পরিবারের সদস্যরাই শুধু মনে রেখেছে রিয়াজকে।রাখবেনা বা কেনো, সহজ সরল একমাত্র ছেলে তাদের।এর আম্মু প্রতিদিন নামাজে দোয়া করে একটাই,তাদের ছেলে যেনো ফিরে আসে। কিন্তু এইটা যে বড়ই অসম্ভব। রিয়াজ তো পাড়ি দিয়েছে সে ঠিকানায়, যেখানে সবাই একেবারের জন্যই চলে যায়।
রিয়াজের মৃত্যুর ৬ মাস পর ওরা ৮ জনও ভূলে যায় রিয়াজকে। বিন্দাস লাইফ উপভোগ করে চলছে সবাই।
হটাৎ একদিন তানিয়ার বাসা থেকে ফোন আসে,ওর আম্মু নাকি খুবই অসুস্ত।খুব শীঘ্রই যেতে বলেছে। তানিয়া গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্থুত।বাকি ৭ জনকে বিদায় দিয়ে রওনা হয় বাড়ির উদ্দেশ্যে।
আজ ০৮/০৮/২০১৫ ,
কিছুদিন পর ঈদ।তাই তানিয়া একেবারে ঈদের ছুটিতেই বাড়ি চলে এসেছে।বাড়িতে আসতেই সবাই তানিয়াকে জড়িয়ে ধরে মাথায় চড়াচ্ছে।করবেই তো, মেয়ে ঢাকা কলেজের ছাত্রী।এলাকায় সবাই বলে জমিদার বাড়ির মেয়ে তানিয়া ঢাকার ছাত্রী, একটা নাম ডাক আছে তাদের।মেয়ে এতোদিন পর এসেছে,তো আদরের বন্যা তো বয়েই যাচ্ছে।
প্রত্যেক পরিবার তো তাদের সন্তানকেই ভালোবাসে,কারণ তাদের সম্পদ তো তাদেরই সন্তান।যেমন ছিলো রিয়াজ।
এদিকে তানিয়ার মা বলল,)
–অনেক জার্নি করে এসেছিস মা, এবার একটু ফ্রেস হয়ে খেতে আয়।রাত অনেক হয়েছে , আমরা তোর জন্যেই না খেয়ে আছি।
— ওকে মাই কিউট মম।আমি এই যাবো আর আসবো।
— ঠিক আছে
তানিয়া ওয়াশরুমে গিয়ে জামাকাপড় খুলে ফেলে।এরপর উপরে ঝরনা ছেড়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে গোসল করছে।এমন সময় তানিয়া অনুভব করলো ওর স্তনে কেও হাত দিয়ে ধরেছে।তানিয়া চমকে উঠেই চোখ মেলে ফেলে।কিন্তু চোখের সামনে কিছুই দেখতে পায়না সে।মনের ভূল ভেবে আবার গোসল করায় মন দেয়।এবার তাকে চমকে দিয়ে ইলেক্ট্রনিক চলে যায়।তানিয়া বিরক্ত হয়ে মনে মনে ভাবে, গ্রামের এই সমস্যা যে কখন ঠিক হবে”।
এরপর অন্ধকারেই সে গোসল করতে থাকে, এবার পুরো স্পস্ট খেয়াল করে ওর পিছন থেকে কেও তকে জড়িয়ে ধরে স্তনে হাত দিয়ে রেখেছে।তানিয়া ভয়ে চিৎকার দিতে যাবে,কিন্তু ওর মুখ থেকে কোনো শব্দ বের হচ্ছিলোনা……
চলবে
প্রতিশোধের_আত্মা
পর্ব_০২
মনের ভূল ভেবে আবার গোসল করায় মন দেয়।
এবার তাকে চমকে দিয়ে ইলেক্ট্রনিক চলে
যায়।তানিয়া বিরক্ত হয়ে মনে মনে ভাবে,
গ্রামের এই সমস্যা যে কখন ঠিক হবে”।
এরপর অন্ধকারেই সে গোসল করতে থাকে,
এবার পুরো স্পস্ট খেয়াল করে ওর পিছন
থেকে কেও তকে জড়িয়ে ধরে স্তনে হাত
দিয়ে রেখেছে।তানিয়া ভয়ে চিৎকার
দিতে যাবে,কিন্তু ওর মুখ থেকে কোনো
শব্দ বের হচ্ছিলোনা……
তানিয়া ওর সমস্ত শক্তি দিয়ে নিজেকে
ছাড়ানোর চেস্টা করেও পারছেনা ছুটতে।
তখনি তানিয়া বরাবরের মতো আবার অনুভব
করে,ওর পিছনদিক থেকে কেও এবার
পুরোপুরি ভাবেই জড়িয়ে ধরেছে।এবার
তানিয়া আর ছটফট করেনি।কারণ এই স্পর্শ
তাকে উত্তেজিত করে তুলছে।তানিয়াও
উত্তেজনায় নিজেকে হেলে দিচ্ছে সেই
অন্ধকারের ছায়ামূর্তির দিকে।কেনো সে
এমন করছে,কেনো এক অজানা আচেনা
স্পর্শটা তার কাছে খুবই ভালোর প্রভাব
ফেলছে,এর উত্তর তানিয়ার কাছে নেই। এমন
সময়েই তানিয়া বুঝতে পারে, ওর পিছনদিক
দিয়ে কোনো দন্ড জাতীয় কিছু প্রবেশ
করতে যাচ্ছে।কিন্তু তানিয়া এখোনো
উত্তেজনায় থরথর করে কাপছে।এ যেনো এক
সুখের সাগরে ভাসছে সে।
.
মুহূর্ত এর মধ্যেই তানিয়া এবার ফিরে আসে
বাস্তবে।একি! সে কি করতে যাচ্ছে।তাকে
কে জড়িয়ে ধরেছে।এবার তানিয়া পিছনে
তাকানোর আগেই, এর পিছনদিকে সেই
দণ্ডায়মান লিঙ্গ প্রবেশ করে।তানিয়া
চিৎকার দিতে চেয়েও চিৎকার করতে
পারছেনা।যন্ত্রনায় থরথর করছে সেই
ছায়ামূর্তির হাতের ভিতর। এদিকে
তানিয়াকে সে ছায়ামূর্তি পিছন থেকেই
ঠাপাতে থাকে। তানিয়ার নিশ্বাস যেনো
প্রতিটি ঠাপেই বন্ধ হয়ে আসছিলো।নাক-
মুখ দিয়ে ফেনা ছেড়ে দিয়েছে প্রায়।
দন্ডটা যেনো তার গলা অব্দি চলে আসছে
ধীরে ধীরে। তানিয়া কস্টে ধড়পড় করতে
করতে সজোরে এক চিৎকার দিয়ে বাথরুমের
ফ্লোরে পড়ে যায়।
তানিয়ার চিৎকারের শব্দে সবাই ছুটে
আসে ওর রুমে।বাথরুমের দরজা ভিতর
থেকেই লক করা। এদিকে তানিয়াও গোসল
করতে গেছে। দরজা ভাঙবে নাকি
ভাঙবেনা, সেটা নিয়েই সবাই চিন্তিত
হয়ে ওঠে।
তানিয়ার আব্বু মেয়ের চিৎকারের শব্দটা
সহ্য করতে না পেরে অবশেষে দরজায় লাথি
মেরে দরজা ভেঙে ফেলে। সবাই আতঙ্কিত
হয়ে যেই ভিতরে প্রবেশ করেছে,তখনি
তাদের চোখ যেনো কপালে উঠে যায়।
তানিয়া পুরো নগ্ন দেহ নিয়ে ফ্লোরে পড়ে
আছে।পুরো ফ্লোর রক্তে ভেসে গেছে।
রক্তের শ্রোত তানিয়ার পিছন থেকে
আসছে।ওর বাবা নিজের মেয়েকে এমন
অবস্তায় দেখে ততক্ষনাত সেখানেই জ্ঞ্যন
হারিয়ে ফেলে।
চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এই ব্যাপার।
তানিয়াকে কে যেনো বাথরুমে রেপ করে
পালিয়ে গেছে। লোকের মুখে মুখে এখন এই
কথার ছড়াছড়ি। এলাকার
ছেলেমেয়ে,তানিয়ার বন্ধু বান্ধবী সবাই
ফেবুতে তানিয়াকে নিয়ে ট্রল করা শুরু করে
দেয়। কেও শোকাহত জানায়,আবার কেও
তার বদনামী গায়।
খবরটা গিয়ে পোঁচায় প্রিয়া,মায়া,সাম
িয়া,রিয়া,সুমাইয়া, জান্নাত আর পিংকির
কাছে।
ওরা ব্যাপারটা নিয়ে ততো সিরিয়াস না।
ওদের মধ্যেই ওরা বলাবলি করেছে)
— মেয়েটি আমাদের ফ্রেন্ড ছিল,তবে ওর
ভিষন সেক্স ছিলো।হয়তো কোনো ছেলের
সাথে আকাম করতে গিয়ে এমন হয়েছে।আর
এদিকে ছেলেটিও হয়তো পালিয়ে গেছে।
( নিজের ফ্রেনদের বদনাম ওরা নিজেরাই
গেয়েছে।ওদের মধ্যে তখনি প্রিয়া বলে
উঠলো)
.
️#বিঃদ্র গল্প পড়ে কেউ কেটে পরবেন
না,আপনানাদের মতামত আমাকে উৎসাহ
দেয় পরবর্তী পর্ব দেওয়ার।আর সব সময় কিছু
গঠনমূলক কথা লিখে কমেন্ট করলে খুশি
লাগে।
.
— যাইহোক, আজকে তো কলেজ পুরো বন্ধ।
কয়দিন বাদেই কোরবানির ঈদ।তোরা
বাসায় যাবিনা? হোস্টেল তো বন্ধ করে
দিবে।
— হুম যাবো যাবো, কিন্তু তার আগে এইটা
বল,তুই কেন যাচ্ছিসনা।
— আরে আমার কথা ছাড়,তোরা যা,আমি এক
বান্ধুবীর বাসায় থাকবো।
– বাড়িতে ঈদ করবিনা?
— নাহ,ইন্টারেস্ট নেই।
— ঠিক আছে,তোর যেমন অভিরুচি। আমরা
আজ রাতেই রওনা হবো বাড়িতে।
— ঠিক আছে,সাবধানে যাস,
( প্রিয়াকে বিদায় দিয়ে মায়া, জান্নাত,
সুমাইয়া, তানিয়া, সামিয়া, পিংকি
হোস্টেল ত্যাগ করার জন্য জামাকাপড়
গুছানোর কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। জান্নাত
বাড়ি যাবার আগে শপিং করবে বলে
বাহির হয়ে পড়ে।এখনো হাতে অনেক সময়
আছে। এর মধ্যেই শপিং করে ফিরতে
পারবে। জান্নাত হোস্টেল থেকে বের হয়ে
শপিংমলে চলে যায়।এমন সময় ওর ফোনে
একটি অদ্ভুত নাম্বার থেকে ফোন আসে।
নাম্বারটি ছিলো 3063 এরকম।জান্নাত
ভাবলো হয়তো কোনো অফিসের নাম্বার
হবে।তাই ফোন কেটে দিয়ে আবার
জামাকাপড় দেখতে লাগলো।কিন্তু অদ্ভুত
ভাবে আবারও সেই একই নাম্বার থেকে
ফোন আসে জান্নাতের ফোনে।জান্নাত
এবার বেশ অবাক হয়ে যায়,সিম
কোম্পানিরা তো এতো জলদি আবার ফোন
দেয়না।এবার জান্নাত বিস্মিত হয়ে
ফোনটা রিসিভ করলো।
রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে এক ভয়ংকর কন্ঠ
ভেসে আসে)
— জীবনের শেষ মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত হয়ে
যা। আমি এসেছি ফিরে ভবে,যাবো নাকো
তোদের ছেড়ে , আমারি সাথে যেতে হবে।
( ব্যাস এইটুকু শুনার পর ফোনটা অদ্ভুতভাবে
কেটে যায়। জান্নাত আগা-মাথা কিছুই
বুঝতে পারেনা।বরং শুধু শুধু ভয় পেয়ে চলছে।
এ কোন শব্দ,এতো ভয়ংকর শব্দও হতে পারে?
জান্নাত নিমিষেই যেনো হারিয়ে যায় এক
অজানা কল্পনায়।তখন আবার তার ঘোর
ভেঙে ওর ফোনে আরেকটি ফোন আসে।
জান্নাত ফোনের রিংটোন শুনে ততক্ষনাৎ
কেপে উঠে। কিন্তু ফোনের স্কিনে
তাকিয়ে দেখে ওর সহপাঠী সামিয়া ফোন
করেছে। জান্নাতের বুকের ধুকধুকানি শব্দ
এখনো কমেনি। অস্থির মনে জান্নাত
ফোনটা রিসিভ করে।এরপর সামিয়া
ফোনের উপাশ থেকে বললো)
— কিরে,সেই কখন হোস্টেল থেকে বের
হয়েছিস,রুমে আসবিনা নাকি, কিছুক্ষন
পরতো বাস ছেড়ে দেওয়ার সময় হবে।
তাড়াতাড়ি আয়।
— প্রাইভেট এর কি হইছে।
— প্রাইভেটে করে যাবোনা ভাবছি।বাসে
করে ইনজয় করতে করতে যাবো।
— ঠিক আছে,তোদের যা মনে হয়।
— এই শুন? তোর গলার আওয়াজ এতো অস্থির
শুনাচ্ছে কেন? কিছু হয়েছে?
— না কি হবে ( ঠোট কেপে কেপে)
— এই সত্যি করে বলতো? কি হয়েছে?
— দোস্ত,একটা অদ্ভুত নাম্বার থেকে ফোন
এসেছে।৩০৬৩ এরকম নাম্বার।রিসিভ
করতেই উপাশ থেকে অদ্ভুত কিছু কথা
শুনিয়ে ফোন কেটে দিয়েছে।আমার খুব ভয়
করছে রে?
— ধ্যাত!! হতে পারে কেও মজা করেছে, তা
কি বলেছিলো?
— বলল আমার নাকি শেষ মুহূর্ত চলে এসেছে।
আমাদের নাকি তার সাথে যেতে হবে।
— হয়তো কলেজের কোন ছেলে মজা করেছে।
এতো ভাবার কি আছে।
— কলেজের কে কি বলবে আজব।সবাই তো
আমাদের এমনিতেই ভয় করে।এমন সাহস হবে
কি করে কারো?
— তাও ঠিক, আচ্ছা তুই ভাবিস না, রুমে আয়।
পরে দেখছি ব্যাপারটা।
( এই বলে সামিয়া ফোন কেটে দেয়।
জান্নাত শপিং করেই বের হয়ে পড়ে।একা
একা এসেছে,এখন একটি বাস ধরেই
হোস্টেলে যেতে হবে। বাসের জন্য
অপেক্ষা করছে রাস্তার পাশে জান্নাত।
এমন সময় এক ভিক্ষুক এসে জান্নাতের দিকে
হাত বাড়িয়ে বললো।)
— আপা,কয়ডা টাহা দিবেন? গত ৬ মাস
ধইরা কিচ্ছু খাইনাই।
( ভিক্ষুকের দিকে না তাকিয়ে জান্নাত
বাসের দিকে তাকিয়ে ছিলো। বাস কিছুটা
দূরেই আছে।জান্নাত ভিক্ষুকের কথা শুনেও
না শুনার ভ্যান করে দাঁড়িয়ে আছে।ভিক্ষুক
আবারো বললো)
— আপা,টাহা কি দিবেন?
( এবার জান্নাত বিরক্ত হয়ে যেই নিজের
ব্যাগে হাত দিতে যাবে,তখনি খেয়াল
করলো এই শব্দটা তার খুব চেনা।জান্নাত
চোখ নড়বড় করে যেই মাথা তুলে
তাকিয়েছে,দেখতে পেলো ওর সামনে কেও
নেই।জান্নাত এবার আরো বেশি আতঙ্কিত
হয়ে যায়।সে তো খেয়ালই করেনি,লোকটি ৬
মাস ধরেই না খেয়ে ছিলো বলেছে।এইটা
কিভাবে সম্ভব।জান্নাত যেনো এক
অবাস্তবতার মধ্যে বসবাস করছে, এসব কি
হচ্ছে ওর সাথে।
ভবতে ভাবতে সামনে বাস চলে আসে।
জান্নাত বাসে উঠেই সিটে হেলান দিয়ে
বসে পড়ে।ভাবতে থাকে এই অজানা রহস্য
নিয়ে।তার সাথে এসব ঘটে যাওয়ার কারণ
সে ব্যাখ্যা করতে পারেনা।ভাবার মধ্যেই
জান্নাত চোখ ২ টি আলতো ভাবে বুলিয়ে
নেয়। তখন জান্নাত স্পষ্ট বুঝতে পারছে ওর
কোমরে কারো হাতের স্পর্শ লাগছে।
জান্নাত এই ছোঁয়ায় বিরক্ত না,বরং
শান্তি অনুভব করতে থাকে। কেনো সে এই
স্পর্শকে চাইছে,সেটা তার নিজেরি
অজানা। এবার হাতটি জান্নাতের কোমর
থেকে ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে
লাগলো।জান্নাত এবার একটু অস্বস্তিবোধ
করে।হটাৎ ওর ঘোর ভেঙে যায়।সিট থেকে
এক ঝাকুনি দিয়ে উঠেই জান্নাত চারপাশ
দেখতে থাকে। একি,ওর পাশের সিটে কেও
নেই।তাহলে ওর কোমরে এতক্ষন হাত
দিয়েছিলো কে?
জান্নাত ব্যাপারটা আর মেনে নিতে
পারছেনা।অস্বাভাবিক ঘটনা একটার পর
একটা কেন ঘটে যাচ্ছে।
জান্নাত এসবের ভিতরে কল্পনা করতে
করতে তার হোস্টেলের সামনে চলে আসে।
এরপর তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে সোজা
রুমে চলে আসে।এসেই সামিয়াকে বললো)
— দোস্ত,আমার সাথে কিছু হতে যাচ্ছে।
প্লিজ আমাকে রক্ষা কর।
— কেন আবার কি হলো?
( এরপর জান্নাত সামিয়াকে বাসের সব
ঘটনা খুলে বলে।সামিয়া জান্নাতের
কথাশুনে সিরিয়াস না,বরং উচ্চস্বরে
হাসতে লাগলো। আর এসব মন গড়নো কথা না
বলতে নিষেধ করে।জান্নাত বিরক্ত হয়ে
সামিয়াকে বললো)
— তুই হাসছিস আজব? সত্যিই আমি অনুভব
করেছি,এইযে এখানে হাত দিছে….. আরে
একি…? এইজে দেখ দেখ, হাতের চাপ এখনো
আমার কোমরে আছে।লাল হয়ে গেছে সব।
— সত্যিই তো? তোর কোমরে তো সত্যিই
কারো হাতের চাপ আছে।
— এবার বিশ্বাস করেছিস তো? আমি
বলেছিলাম না?
— ঠিক আছে শুন,আমি ব্যাপারটা দেখছি।
আমাদের বাড়ির পাশে এক হুজুর আছে।উনার
সাথে কথা বলে দেখবো।আর সেই অদ্ভুত
নাম্বারটা দে তো?
– এই নে. ৩০৬৩ এইটা
( সামিয়া নাম্বারটা নিয়ে ওর এক
ফ্রেন্ডকে কল দিয়ে বললো,এইটা কেমন
নাম্বার জানানোর জন্য। সামিয়ার ফ্রেন্ড
সিম কোম্পানিতে চাকরি করে।তাই ওরা
আশাবাদী যে নাম্বারটার কোনো হুদিশ
তারা পাবেই। কিন্তু সামিয়ার ফ্রেন্ড
জানালো যে এমন কোনো নাম্বার নেই।
এবং কি কোনো অফিস বা হ্যাকারদেরও
না।সোজা কথা এই নাম্বারের কোনো
অস্থিত্বই নেই।এমন নিউজ শুনে ওরা ২
জনেই অবাক হয়ে যায়।এইটা কেমন নাম্বার
তাহলে,যার কোনো অস্তিত্বই নেই?
সামিয়া জান্নাতকে বললো)
— আচ্ছা শুন,এই ব্যাপারে কাওকে কিছু
বলিসনা,নয়তো সবাই পাগল ভাববে
আমাদের।গ্রামে গিয়ে হুজুরের সাথে
আলাপ করে নি,তারপর দেখি হুজুর কি বলে।
— ঠিক আছে
( ওরা নিজেদের ভিতরেই ব্যাপারটা
লুকিয়ে রেখেছে। যদিও কাওকে বললেও
কেও বিশ্বাস করবেনা। এদিকে প্রায় রাত
ঘনিয়ে এসেছে।রাত ১২ টায় হোস্টেল বন্ধ
হয়ে যাবে। ৮ টা বাজে সবাই বাসের
উদ্দেশ্য বের হবে।হাতে মাত্র আর ৪ ঘন্টা
বাকি। মায়া, জান্নাত, সুমাইয়া, তানিয়া,
সামিয়া, পিংকি ব্যাগ গুছিয়ে রেডি হতে
প্রস্তুত।জান্নাত মনে মনে খুব ভয় পেয়ে
আছে। ব্যাগ গুছাচ্ছে হাত দিয়ে,কিন্তু ওর
হাত যেনে কাজে সায় দিচ্ছেনা।বার বার
কেপে উঠছে।জান্নাত না পারছে কাওকে
কিছু বলতে,আর না পারছে কিছু করতে।
সামিয়ার উপরেই একমাত্র ভরসা তার।
ব্যাগ গুছানোর মাঝপথে ফের জান্নাতের
ফোনের রিংটোন বেজে উঠে।ফোনের টোন
শুনেই জান্নাত বেশ ভয় পেয়ে ফুঁপিয়ে উঠে।
এই রিংটোনটাই যেনো ওর ভয়ের আরেকটি
কারণ। জান্নাতে ফোনের স্কিনে তাকিয়ে
দেখলো ওর মা ফোন দিয়েছে। তখনি
জান্মাত সবার উদ্দেশ্য করে বললো)
— তোরা ব্যাগ গোছা,আমি একটু আম্মুর
সাথে কথা বলে আসি।
— ঠিক আছে যা।
( জান্নাত সাইডে এসে ফোন রিসিভ করে)
— হ্যালো আম্মি! কেমন আছো?
— জ্বী মা,আমি ভালো,তুই রওনা হয়েছিস?
— এইতো,সবেমাত্র ব্যাগ গুছাচ্ছি।কিছুক্
ষনের মধ্যেই বাসে উঠবো।
— হুম সাবধানে আসিস। এবারের ঈদে অনেক
বড় গরু কিনেছি।এসে দেখিস
( হিন্দু জাতিদের বলছি,অনেক হিন্দু ভাই/
বোন হয়তো আমার গল্প পড়তেছেন।আমি
একজন মুসলিম, দেখতেই পাচ্ছেন সেই
হিসেবেই গল্প লিখছি।এতে কেও মন
খারাপ কইরেননা অনুরোধ রইলো)
— ঠিক আছে,দোয়া কইরো আম্মি।
— আল্লাহ ভরসা।
( জান্নাত ফোনটা কেটে মাথা তুলতেই
দেখে কথা বলতে বলতে কখন যেনো
হোস্টেলের ৩য় তলা থেকে ৫ম তলায় চলে
এসেছে।বুঝতেই পারেনি কখন সে এখানে
এসেছে।
জান্নাত হতভম্ব হয়ে আবার ৫ম তলা থেকে
সিড়ি বেয়ে নিছে চলে আসার জন্য প্রস্থুত
হয়।এমন সময় আবার জান্নাতের ফোনের
রিং বেজে উঠে। এবার ফোনের রিংটোন
এর শব্দে তেমন না চমকালেও,নাম্বারের
দিকে তাকিয়ে বেশি চমকে যায় জান্নাত।
এইটা সেই নাম্বার,যে নাম্বারটা মাত্র ৩০
সেকেন্ডে তার জীবন বদলে
দিয়েছিলো,সেই ৩০৬৩ নাম্বারটা।
জান্নাত এবার ফোন ধরবেনা ভেবে পুরো
প্রস্থুত হয়ে নেয়। উল্টো কলটা কেটে দিয়ে
জান্নাত ফোনটা হাতের মুঠোয় রেখে
কচলাতে থাকে।এরপর তাড়াহুড়া করে
নিছের দিকে নামতে যাবে,তখনি ওর
ফোনের ভিতর থেকে সেই ভয়ংকর কন্ঠ
ভেসে আসে।জান্নাত অবাক চোখে ফোনের
দিকে তাকিয়ে থাকে। ফোন রিসিভ না
করেও কিভাবে ফোন রিসিভ হলো এইটাই
ভাবছে সে। আবার সে ভয়ংকর কন্ঠটা বলতে
লাগলো।)
— কোথায় যাবি তুই, এই জায়গা ছেড়ে,
যে জায়গায় তোরা নিয়েছিলি এক,
নিষ্পাপ জীবন কেড়ে।
( এই কথাটা বলার পর আবার অটোমেটিক
ফোন কেটে যায়। জান্নাত এবার আরো
বেশি হতভম্ব হয়ে পড়ে। তারা এখানে কার
প্রান নিয়েছিলো , সেই সহজ সরল ছেলে
রিয়াজ নাতো….?
জান্নাত প্রচুর ভয় পেয়ে ফোনের মধ্যে
সামিয়াকে মেসেজ করে বলে দিয়েছে সে
ভয়ংকর কন্ঠের কথাটা।কারণ ওর মনে
হচ্ছিলো এই ৫ম তলা থেকে সে নিছে
নামতে পারবেনা। জান্নাত এবার হুশ
হারিয়ে নিছে ছুটতে যাবে,তখনি দেখতে
পায় একটি ছোট্ট মেয়ে ৪র্থ তলার মাঝ
সিড়িতে দাঁড়িয়ে আছে। জান্নাত বুঝতে
পারছেনা এই ছোট মেয়েটি কে আবার।
হোস্টেল বন্ধ হয়ে যাবে,সবাই যার যার
গ্রামের বাড়ি চলে যায়,তাহলে এই
মেয়েটি আসলো কোথা থেকে।
জান্নাত ধীরে ধীরে সে মেয়েটির সামনে
গিয়ে দাঁড়ায়, মেয়েটির মুখের উপর ওর
চুলগুলো এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে।
জান্নাত মেয়েটিকে কিছু জিজ্ঞেসা
করার জন্য মুখ খোলবে,তার আগেই সে
মেয়েটি এক হিংস্র চেহারা ধারন করে
জান্নাতের উপর ঝাপিয়ে পড়ে,জান্নাত
ভয়ে চিৎকার করতে থাকে। এই মেয়েটি শুধু
শুধু কেনো ওর উপর ঝাপিয়ে পড়লো।
জান্নাত কিছু বুঝার আগেই ওর শরীর থেকে
সমস্ত জামাকাপড় আচড়ে ছিড়ে খুলে
ফেলে।
জান্নাতের চিৎকার যেনো ওর মুখ অব্দিই
সিমাবদ্ধ হয়ে আছে। অন্য কেও শুনতেই
পারছেনা। কিছু সময় পর মেয়েটি হটাৎ করে
জান্নাতের উপর থেকে সরে কোথায় যেনো
পালিয়ে যায়। জান্নাতের এবারের চিৎকার
সবার কান অব্দি যায়। ছেলে হোস্টেল
থেকেও প্রায় ৪০-৫০ জন ছেলে, মেয়ে
হোস্টেলের দিকে এগিয়ে আসে। মেয়ে
হোস্টেলেরও ২০-২৫ জন মেয়ে চতুর্থ তলায়
ছুটে আসছে। জান্নাত ফ্লোর থেকে উঠে
ছুটে যায় নিছের দিকে।এতক্ষনে সকল ছেলে
মেয়ে হোস্টেলে এসে হাজির হয়।
জান্নাতের নগ্ন দেহ( গায়ে একটি সুতোও
নেই) সবার চোখের সামনে দৌড়ে
যাচ্ছে,শরীরের প্রতিটি স্তানে
ক্ষতবিক্ষত নখের আচড়।জান্নাত সেই নগ্ন
দেহ নিয়ে কাদতে কাদতে নিজের রুমের
দিকে ছুটে যাচ্ছে। সব ছেলে মেয়ে
জান্নাতের শরীরের দিকে তাকিয়ে আছে।
সবার মাঝখান দিয়েই জান্নাত ছুটে চলছে।
আর মনে মনে একটাই ভাবনা আঘাত করছে
তাকে, কে তাকে এভবে এট্যাক করলো,
[ রহস্যভেদ করে জানতে পারবে কি সবাই,
কে ছিলো জান্নাতের সে হামলাকারী?
রিয়াজের আত্মা সে টা?
এই “সে” টা কে, জানতে হলে আপনার
মতামত কমেন্ট বক্সে জনাবেন।। গল্পটি
কেমন লাগছে। সমালোচনা করুন গল্পের
ব্যাপারে]
.
.
চলবে