প্রনয়ের_ছন্দ,পর্ব- ৬,৭

0
896

প্রনয়ের_ছন্দ,পর্ব- ৬,৭
আনজুম_তানিশা
পর্ব- ৬

০৮.

— আমি কী বেঁচে আছি?

আফিমের কথায় আফ্রাম নূর বিরক্ত হলো। নূর বিরক্তি নিয়ে বলল,

— নাহ আপনি আপাতত পরলোকগমন করেছেন। তবে এখন যদি আপনি চুপ থাকেন তাহলে আবার পরলোক থেকে ইহলোকে ফিরতে পারেন।

নূরের কথায় বেকুব বনে গেল আফিম। আর আফ্রাম হো হো করে হাসতে লাগল। আফ্রামের সাথে কিছুহ্মন পর আফিম নূর ও হাসতে লাগল। অনেকদিন পর প্রান খুলে সবাই হাসতে লাগল। হাসি থামিয়ে নুর বলল,

— তখন অঙ্গান হইসিলেন কেন?

আফিম আফ্রামের দিকে তাকিয়ে বলল,

— অনেকবছর পর ভাইয়ার চন্ঞল রূপ টা দেখলাম তাও আবার একটা মেয়ের সাথে। তাও এত চাপ নিতে পারি নি।

কথা শেষে আফিম ইনোসেন্ট ফেস বানালো। তা দেখে নূর মুচকি হাসল। আফিম আবার বলল,

— তা আপু হঠাৎ কী এমন হলো যে আমরা শান্ত ভাইটার পিছন দাওয়া করলে?

এই কথা শুনে নূর রক্তিম চোখে আফ্রামের দিকে চেয়ে শুরুর থেকে সব বলল ওর জীবনের সকল ঘটনা আর তারপর বলল,

— উনি আমার ছোট ভাইয়া কে বলেছে কয়েক বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে আর গত কয়েক দিন আগে আমার ৭ মাসের মিসক্যারেজ হয়েছে। ভাইয়ার মেয়ে কে দেখে আমি নাকি নিজের বাবুকে কল্পনা করেছি। তাই দূর থেকে বাবুকে দেখতে এসেছি। বুঝতে পারছেন কত বড় ধাপ্পাবাজ যে কী না আমার মতোন সিঙ্গেল অবিবাহিত মেয়েকে বিবাহিত মিসক্যারেজ ওয়ালা মহিলা বানাইয়া দিসে। একবার যদি ভাইয়ারা সব জানতে পারে তাহলে দুজনকে গরু জবাই করবে।

সব কথা শুনে আফিম বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে। আফ্রাম ফট করে বলে উঠল,

— তুমি চাইলে কিন্তু এখন বিয়ে করে বেবি বাম্প তৈরি করতে পারো।

বলে চোখ টিপ দিয়ে উঠল। আফ্রামের কথায় নূর বলল,

— অসভ্য লোক! ছোট ভাইয়ের সামনে কী সব বলে।

ওদের এমন ঝগরা দেখে দ্বিতীয় বারের মতোন ঙ্গান হারালো আফিম। তা দেখে নূর বলল,

— বেবি বাম্প আমার না আপনার ভাইয়ের হইসে। বারবার অঙ্গান হচ্ছে। তাড়াতাড়ি মিষ্টি খাওয়ান৷

নূরের কথা আফ্রামের চোখ মুখে খুশির ঝিলিক দিয়ে উঠল। আফ্রাম বলল,

— সত্যি সত্যি ও প্রেগনেন্ট। আমি তাহলে আম্মুকে ফোন করে বলি!

আফ্রামের বাকি কথা শেষ হওয়ার আগে নূর আফ্রামের মাথায় হকিস্টিক দিয়ে এক বাড়ি দিয়ে বলল,

— তোরে কোন বলদ ডাক্তার বানাইসে রে কবি? শালা ছেলেদের বেবি হয় তোরে কে কইসে। তুই এক হাবা তোর ভাই আরেক হাবা। একটা কথায় কথায় অঙ্গান হয় আরেকটা এলিয়েনের মতো কথা কয়। তোর আম্মুরে বল তার দুই ছেলে প্রেগনেন্ট!

কথা গুলো শেষ করে রাগে ফোস ফোস করতে লাগল নূর। আর আফ্রাম বেচারা মাইর খেয়ে এখন ভাইয়ের মুখে পানি মারতাসে।

???

পিট পিট করে চোখ খুলল আফিম। তারপর নিজের সামনে পানির বোতল হাতে আফ্রাম আর হকিস্টিক হাতে নূর কে দেখে ভয়ে ছিটিয়ে গেল। তা দেখে নূর বলল,

— আরেকবার যদি অঙ্গান হস তাহলে তোরে আর তোর ভাইরে উল্টা লটকাইয়া রাখমু এই রাস্তায়৷

আরো কিছু বলতে নিলে নূরের ফোন বেজে উঠল। নূর চোখ দিয়ে ওদের শাষিয়ে কল রিসিব করল। কিছুহ্মন কথা বলে নূর ওদের বলল,

— ভাইয়া ফোন করসে৷ যেতে হবে। বায়।

তারপর দ্রুত পায়ে একটা গাড়িতে উঠে চলে গেল নূর৷ আর নূরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে দুইভাই৷ আফিন গলা খাকরী দিয়ে বলল,

— এমন বম্বে মরিচ রে কেমনে সামলাস ভাই?

আফ্রাম হাসতে হাসতে বলল,

— তুই জানিস মেয়েটা আগে অনেক চন্ঞল ছিলো কিন্তু এখন হয়ত এতসব ঘটনার জন্য সব হারিয়ে ফেলসে। আমি এই প্রথম ওর চনঞল রূপ দেখলাম। ভাল্লাগলো আমার একটা মিথ্যের জন্য যে মেয়েটা অন্তত ওর ভাইদের সামনেতো গেছে। আর আজ হাসলো। জানি না কবে ওর পুরো পরিবারের সামনে নিজ পরিচয়ে যাবে।

আফ্রামের কথায় দীর্ঘশ্বাস ফেলল আফিম। তারপর হেসে বলল,

— এরে ভাবী হিসেবে কিন্তু বেশ মানাবে। তাড়াতাড়ি চাচ্চু বানিয়ে দে আমায় প্লিজ ব্রো!

আফিমের কথা চমকে গেল আফ্রাম। তারপর বলল,

— তবে রে…

তারপর আবার দৌড়াতে লাগল দুভাই। দৌড়াতে দৌড়াতে দুভাই আবার গাড়ির কাছে চলে আসল। তারপর কিছুহ্মন হেসে গাড়ি করে বাড়ি চলে গেল।

০৯.

নূর বাড়িতে আসতেই নূরের ভাবী বলল,

— কোথায় ছিলে এতহ্মন?তাও আবার একা একা?

— ভাবী আমি ছোট না। আর কিছু ফ্রেন্ড দের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।

— ওহ। যাও ফ্রেস হয়ে এসো । তোমার ভাই ও আসছে একসাথে লান্চ করবো সবাই।

— ওকে ভাবী।

তারপর নূর তার ভাবীকে হালকা জড়িয়ে ধরে নিজের রুমে চলে গেল।

চলবে….

#প্রনয়ের_ছন্দ
পর্ব- ৭
#আনজুম_তানিশা

১০.

বর্ষার শেষ সময়। হালকা রোদ, হালকা বৃষ্টি! কিছুটা কুয়াশা কুয়াশা ভাব! ব্যাপার টা দারুন! আর এই দারুন সময় টা কে উপভোগ করছে আফ্রাম নূর। বর্তমানে দুজন নিজেদের বাড়িতেই। কিন্তু একই সাথে বেলকনিতে চা হাতে দাড়িয়ে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করছে। ব্লুটুথ এর মাধ্যমে কথাও বলছে দুজন। তবে সেটা অতি সামান্য!

— নূর মন ভালো হয়েছে?

আফ্রামের কথায় নূরের টনক নড়ল। নূর প্রকৃতিতে চোখ রেখেই সম্মতি জানাল, যে তার মন ভালে হয়েছে। কাল নূরের জন্মদিন তাই নূর আপসেট। আফ্রাম গলা পরিষ্কার করে বলতে লাগল,

— নূর এইবার তোমার সামনে যাওয়া উচিৎ। অনেক প্রমানই আমরা পেয়েছি। লুকিয়ে এর চেয়ে বেশি পাওয়া সম্ভব নয়। এইবার সামনে থেকে লড়াই করতে হবে। তুমি আবার ফিরে যাও নিজের প্রানপ্রিয় কর্মস্থলে। একমাএ ঐ টাই তোমায় নিয়ে যাবে সত্যের কাছে।যেখান থেকে এই খেলা শুরু সেখানেই যেতে হবে।

আফ্রাম থামল। আবার বলতে লাগলল,

— তোমার ভাইদের নামের টাইটেল বদলেছে। আর সেটা পৈতৃক ভাবে। আড়াল থেকে সব জানা সম্ভব নয়। এবার মিডিয়ার সামনে ও যাও তুমি। প্রকাশ করো নিজেকে। আমি সবসময় তোমার পাশে আছি। তবে নিজের পরিচয় প্রকাশ করার পূর্বে নিজের থাকার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করো। তোমার এই ভাই ভাবী ও কিন্তু সুবিধার নয়।

নূর কিছু না বলে কল কেটে দিলো। নূর কাকে রেখে, কাকে বিশ্বাস করবে তা নিয়ে বিরাট দ্বিধায় আছে। যাদের বিশ্বাস করত তারাই ওকে ধোকা দেয়৷ নূর অনেক ভেবে বুঝতে পারল আফ্রাম ঠিক বলেছে। নূর যা করার আগামীকাল ই করবে। আগামী কাল ই সবাই কে চমকে দিবে। ঘুরিয়ে দিবে কারো দাবা চাল।

১১.

সুদীর্ঘ চিন্তিত রাত পার করল নূর৷ সময়ের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে ভারী হয়ে যাচ্ছে নিশ্বাস। এত বছর পর আবার ও ফিরবে নিজ নীড়ে। কাল রাতেই মিডিয়া সহ অফিসে ফোন করে বলা হয়েছে আজকের দিনের কথা। নূরের নার্ভাসের সাথে সাথে উওেজনাও কাজ করছে।

নূর গত চার বছর আগে একজন সিনিয়র গোয়ান্দা অফিসার ছিলো। ছুরি আর গুলি ছুড়তে উস্তাদ ছিলো নূর৷ আর এইটাই ছিলো নূরের এই চাকরীর পিছনের প্লাস পয়েন্ট। এর জন্য সরকার কর্তৃক পুরষ্কার ও পেয়েছিল৷

পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরীত সকালের পরিবেশ। রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়েছে আকাশের শুভ্র মেঘে। পাখিদের মতোন মানুষরা ও বেড়িয়ে পরেছে নিজ নীড় থেকে।

সকালের মিষ্টি রোদ গায়ে মাখিয়ে উঠে দাড়ালো নূর৷ ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হতে লাগল নূর। আফ্রামের সাথে দেখা করে তারপর বাংলাদেশ গোয়েন্দা অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হবে ওরা। আজ আফ্রাম ও যাবে নূরের সাথে।

ব্লাক কুর্তি আর জিন্স এর সাথে গলায় ওরনা পেচিয়ে নিলে নূর। সাথে মুখে কালো মাস্ক। কানে দুটো পাথরের রিং। হাতে কালো ঘড়ি। পায়ে কালো বোট সু। কাধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়ল লেকের উদ্দেশ্যে। যেখানে আফ্রাম নূরের দেখা হয়েছিল৷

???

সকালের সূর্য তার তাপ বাড়াতে শুরু করেছে। সেই সাথে পাল্লা দিচ্ছে ব্যস্ত জনগন ও। সময়ের সাথে পাল্লা দিচ্ছে সবাই। নূর আফ্রাম গাড়ি করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েছে। নূর বাহিরের দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছে। আফ্রাম বুঝতে পারছে নূরের অবস্থা। তাই নূরের হাত নিজের হাতের মুঠে ধরে বলল,

— তুমি নিজেকে দূর্বল ভেবো না কখনো। এই আমি সব সময় তোমার পাশে আছি।

নূর কিছু না বলে আফ্রামের কাধে মাথা রাখল। আজ একটু বেশিই দূর্বল লাগছে। এত বছর পরে সেই চিরচেনা জায়গা যাবে। পরিচিত মুখ গুলো দেখবে। নূর জানে আজ ওকে অনেক পরিহ্মা দেওয়া লাগবে। নিজেকে জীবিত প্রমান করার জন্য। অনেক বাজে বাজে প্রশ্নের সম্মুখীন ও হবে নূর। নূর নিজেকে সবকিছুর জন্য প্রস্তুত করেছে।

১১.

মিডিয়ার লোক সহ গোয়েন্দা অফিসের সবাই এবং পুলিশ সহ আরো অনেকে উপস্থিত গোয়েন্দা অফিসের সামনে। গতকাল রাতে নূর সবাই কে সত্য বললেও কেউ বিশ্বাস করেনি। পরে নিজের ছবি সহ সব পাঠিয়ে আজকের এই মিডিয়া মিটিং।সবাই অধির আগ্রহে আছে মৃত নূরের জীবিত ভার্সনকে দেখার জন্য। সবার অপেক্ষার অবসান ঘুটিয়ে নূরদের গাড়ি গোয়েন্দা অফিসে ডুকল। গাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসল নূর আফ্রাম। দুজনই মাস্ক পড়া। নূর আফ্রাম আস্তে আস্তে মাইকের সামনে গেল। মিডিয়ার৷ লোক সহ আরো অনেকে ক্যামেরা ধরে রেখেছে নূরদের দিকে। নূর নিজের মাস্ক খুলে ফেলল। নূরের চেহারা দেখে চমকে গেল সবাই। বছর চারেক পূর্বে এই মেয়েটিকে নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলেছিলো। কারন তার অকাল মৃত্যু । আর আজ বছর চারেক পর আবার ও তোলপাড় চলবে এই মেয়েটি জীবিত থাকা নিয়ে। হয়ত অনেকের সুখের জীবনে ধ্বস নামতে চলেছে।

মিডিয়ার অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয় নূর। কিন্তু আফ্রামের সাহায্যে সব কিছু খুব স্মুথ লী সামলিয়ে নিয়েছে নূর৷ শেষে আফ্রামকে নিয়ে ও প্রশ্ন উঠেছে। তখন আফ্রাম নিজেকে নূর কেসের প্রধান সাহ্মী হিসেবে পরিচয় দেয়।

অনেক বাধা বিপওী শেষে মিডিয়া, পুলিশ থেকে বের হলো নূর আফ্রাম। আগামীকাল আবার কোর্টে গিয়ে প্রুভ করতে হবে। নূর কেস টা আবার ও রিওপেন হয়েছে। তা দেখে অনেকের ই পায়ের নিচের জমি লড়তে শুরু করেছে। সারাদেশ আবারও তোলপাড় নূর কে নিয়ে। একজন সম্মানীয় সিনিয়র গোয়েন্দা অফিসার কে জীবিত থেকে মৃত বানিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এটা নিয়ে ছাএ আন্দোলন ও চলছে। ফেসবুক নেট দুনিয়ায় ভাইরাল নূর। মোট কথা আপাতত নূর কে নিয়ে সারাদেশ গরম।

টিভিতে নূরের নিউজ দেখে অবাক নূরের পরিবার। সাথে নূরের সেই ভাই ভাবী ও। নূর আর ফিরল না নিজের সেই ভাই ভাবীর কাছে। সারাদিন এত প্রশ্নের ধকলে এখন নতুন করে আর কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে চায় না নূর৷ তাই আপাতত আফ্রামের সাথপ তার বাড়িতে গেল। আফ্রামের পরিবার নূরের ব্যাপারে আগেই জানত।

১২.

নিস্তব্ধ রাতের নিরবতার মাঝে মাঝে এক দু বার রাতের অচেনা পাখিরা ডেকে ডেকে উঠছে।জানালার সাদা পর্দাকে স্বচ্ছ কাঁচের উপর মৃদু দুলিয়ে উঠে বাইরে থেকে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করছে হালকা হিমেল হাওয়া।শুধু কি বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করেছে!সাথে করে চাঁদের শুভ্র মায়াবী আলোকে টেনে এনে পরিবেশটাকে আরো মোহনীয় বানিয়ে রেখেছে। সারাদিনের ধকলে চোখে ঘুম আসলেও মনে কোনে এক ঝাক আশা, নতুন কিছু পাওয়ার স্বপ্ন । প্রতিশোধের আগুন চলছে নূরের মাঝে

পেরিয়ে গেল আরও একটি রাত৷ নূর আফ্রাম নাস্তা করে আবার ও বেড়িয়ে পড়ল কোর্টের উদ্দেশ্যে৷ সেখানে আজ নূরের বাবা-মা, সহ ভাইভাবীরা ও থাকবে। নূর আফ্রাম চুপ করে বসে আছে৷ কারো মাঝে কোনো কথা নেই।

গাড়ি থেকে নামতেই নূর দেখতে পেল একঝাক মিডিয়া, উৎসখ জনগন৷ বাঙালি হলো এমন এক জাতি, যেখানে কাজ নেই-চিনে না জানে না সেখানেই ভীড়৷ পুলিশ প্রটেক্ট এর মাধ্যমে মিডিয়ার ভীড় থেকে বেড়িয়ে দেখল নূরের পুরো পরিবার একএিত৷ কিন্তু কারো মুখে নূর কে দেখে হাসি না আনন্দের আভাস নেই বরং আছে ভয় আর বিরক্তি। নূর একটু মন খারাপ করল। তারপর হঠাৎ করে কেউ একজন নূরকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল৷ যার কারনে নূর দুয়েক কদম পিছিয়ে গিয়ে আফ্রামের বুকে ধাক্কা খেল।

নূরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল মিষ্টি। নূর মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরে বলল,

— এই পাগলী কাদছিস কেন? আমি ফিরে আশায় খুশি হস নি? চলে যাই আবার!

মিষ্টি নাক টেনে বলল,

— তুই খুব খারাপরে নূর। আমায় একবার জানাতে পারলি না এইসব। আমি কী তোর এতই পর। জানিস যেদিন তোর মৃত্যুর কথা শুনেছিলাম সেদিন কী অবস্থা হয়েছিল আমার। তোর লাশ অবধি তোর পরিবার দেয় নি। আমি অনেক করে চেয়েছিলাম। পা অবধি ধরেছিলাম। আমি তোকে আর কোথাও যেতে দিবো না। তুই আমি আবার ও আগের মতো থাকব। কাল খবরে তোকে দেখে আমি কী পরিমাণ খুশি হয়েছি বলতে পারবো না রে তোকে। আমায় ছেড়ে যাস না নূর।

নূর মিষ্টি কে শান্তনা দিয়ে চুপ করালো। হঠাৎ নূরের চোখ নিশানের দিকে পড়তেই দেখল, নিশান কেমন যেন মায়া ভরা দৃষ্টিতে চেয়ে আছে নূরের দিকে। নূর আর নিশান দু ভাই-বোন চেয়ে আছে একে অপরের দিকে। দুজনের চোখে একরাশ মায়া ভালোবাসা। হঠাৎ নিশানের চোখ থেকে পানি পড়তে লাগল। নিশান চুপ করে অন্য দিকে ঘুরে নিজের চোখের পামি আড়াল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। নূর ও নিজের চোখের কোনের পানি টা মুছে নিল।

আফ্রাম দূর থেকে সব খেয়াল করল। চুপচাপ আফ্রাম নূরের কাছে এসে নূরে শান্তনা দিতে লাগল।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here