প্রনয়ের_ছন্দ,পর্ব-৯,১০
আনজুম_তানিশা
পর্ব-৯
১৬.
” বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ***** কোম্পানির মালিক মি. আসরাফ খান গতকাল রাতে নিজেরই গোডাউনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনা স্থল তদন্ত করে জানা যায় ঐ গোডাউন টি থেকে চোরাকারবার করা হতো। ”
সব নিউজ চ্যানেলে একই নিউজ চলছে। ফোনে কথা বলছে আর টিভি র নিউজ দেখছেন রিপা বেগম। (নূরের মা) রিপা বেগম বার বার কাঁদতে লাগলেন৷ কারন মি. আসরাফ খান রিপা বেগমের বর্তমান স্বামী৷
আশেপাশে সবাই রিপা বেগম কে শান্তনা দিচ্ছেন৷ কিন্তু কিছুতেই কোনো কাজ হচ্ছে না। বাড়িতে প্রেস মিডিয়ার, পুলিশ এর লোক দিয়ে ভরপুর। ইতিমধ্যে রিপা বেগমের কাছে নিবিড়, নিশান, মনিকা, আলী হোসেন ও তার স্ত্রী সন্তান ও এসেছেন। সবাই খুব শান্তনা দিচ্ছেন রিপা বেগম কে। আবার কেউ কেউ সমালোচনা ও করছেন।
কিছুহ্মন পর….
এত এত সব কিছুর ভীড়ে এখন সবার চহ্মু চড়ক গাছ। কারন নূর আফ্রাম দুজন খুব সুন্দর ভাবে কাপল ম্যাচিং ড্রেস পড়ে সেজে এসেছে। নূরের ঠোটের কোনে সেই ভয়ংকর বাঁকা হাসি। আফ্রাম নূর খুব সুন্দর ভাবে রিপা বেগমের সামনে এসে তাচ্ছিল্যের স্বরে আফসোস করল। তারপর নূর আস্তে করে বলল,
— কাউন-ডাউন শুরু হয়েছে গেছে! কেয়ার-ফুল৷ কখন কার সময় হয়ে যায় কেউ বলতে পারবে না।
নূরের কথাটা নূরের পরিবারের সবাই শুনতে পেলো। আফ্রাম হাসল। সেই সাথে আরো একজন বাঁকা হাসি দিল৷ আর মনে মনে বলতে লাগল,
— হাহাহা এবার কীভাবে তোমরা পাড় পাও আমিও দেখবে৷ এতবছর অনেক পাপ করেছো এবার একটু শাস্তি পাও৷
নূরের কথা শুনে সবাই মনে মনে ভয় পেলেও উপরে উপরে ভয় ভাব কাটিয়ে রাখল। নূরের বাবা আলী হোসেন কড়া গলায় বললেন,
— এই মেয়ে তোমার কী লজ্জা নেই একটা মৃত বাড়িতে এভাবে সেজেগুজে আসছো আবার ব্লেইকমেইল ও করছো। ভয় নেই তোমার।
কথা গুলো বেশ জোড়ে বললেন আলী হোসেন। নূর কিছু কড়া কথা বলতে গিয়ে বলল না। কারন আলী হোসেনের কথা এসপির কান অবধি গেছে। তাই নূর নরম সুরে বলল,
— আমরা একটা দাওয়াতে গিয়েছিলাম। আর সেখান থেকেই এখানে আসছি। তাই৷ আমাদের কাপড় বদলানো হয় নি।
এসপির সামনে আর কোনো সিক্রিয়ট করলো না কেউ। নূর এক ধ্যানে হুরের দিকে চেয়ে আছে। হুর দেখতে অবিকল নিশান আর নূরের মতো৷ এইসব ই মিলাতে লাগল নূর৷ মনিকা নূরের কাছে এসে বলল,
— চিন্তা করো না আবার ও তোমার কোল জুড়ে ফুটফুটে একজন আসবে। নেও তোমার ভাতিজী কে কোলে নাও।
নূর খুশি মনে হূর কে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগল। তা দেখে নিশান বাদে বাকিরা রাগে ফুসতে লাগল। সবাই হ্মুব্দ মনিকার এহেন কাজে৷ নিশান এগিয়ে এসে আফ্রাম এর সাথে কথা বলতে লাগল। কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে আফ্রামের সম্পর্কে অনেক কিছুই শুনল নিশান। ।
১৭.
দীর্ঘ ১৭ ঘন্টা পর আসরাফ খানের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ তারপর সবাই মিলে জানাজা পরিয়ে কবর দিয়ে বাড়ি ফিরল। এর মাঝে নিবিড় জরুরি এক কাজে বেড়িয়ে গেছে। এরপর যে যার যার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হল। নিবিড় গাড়ি নিয়ে যাওয়ায় নিশান রা ক্যাব এ করে বাড়ি ফিরার সিদ্ধান্ত নিলো৷ তখন আফ্রাম নিশানকে নিজের গাড়িতে করে যাওয়ার আহ্বান করল। রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় নিশান ও উপায় না পেয়ে আফ্রামের আহ্বানে সাড়া দিলো।
গাড়িতে নূর মনিকা হূর পিছনে বসল। আর আফ্রাম নিশান সামনে বসল। পিনপিন নিরবতা চলছে সবার মাঝে। আফ্রাম মনিকা চেয়ে আছে নূর নিশানের কথার জন্য। কিন্তু নূর নিশান দুজনের এক জন ও কথা বলছে।
মনের মাঝে হাজারো প্রশ্ন হাজারো কথায় ভরপুর। কিন্তু কথা গুলো মুখ ফুটে বলতে পারছে না দুভাই-বোনের একজন ও না। নিশান নূর দুজনের ই চোখ ছলছল করছে। দাতে দাতে চেপে শক্ত হয়ে বসে আছে দুজন।
আফ্রাম ‘নিভৃত কুব্জ’ তে না গিয়ে একটা খোলা, নির্জন লেকের সামনে গাড়ি নিয়ে এলো। নিশান নূর নিজেদের ভাবনায় মও থাকায় ব্যাপার টা খেয়াল করেনি। মনিকা খেয়াল করে কিছু বলার পূর্বে আফ্রাম ইশারা আশ্বস্ত করেছে। তাই মনিকাও চুপ। গাড়ি থামায় নূর নিশানের টনক নড়ল। ততহ্মনে মনিকা আফ্রাম গাড়ি থেকে নেমে দাড়িয়ে রইল । ওরা কেউই জানে না ওদের পিছন পিছন আরও অনেকে ছুটে এসেছে৷
নূর নিশান গাড়ি থেকে নামল। আফ্রামের দিকে দুজনই প্রশ্ন ছুড়ল এখানে আনার কারন জানতে চেয়ে৷ আফ্রাম বলল,
— অনেক হয়েছে এই লুকোচুরি। নিশান ভাই নূর তোমরা দুজন কথা বলো নিজেদের সাথে। বাদ দাও এই অভিমান ইগোর লুকোচুরি খেলা।
মনিকা বলল,
— নিশান প্রথম থেকে আমি দেখেছি নূর আসার পর থেকে তুমি ওর দিকে মায়া ভরা দৃষ্টিতে চেয়ে ছিলে। কেঁদেছিলেও। নূর তোমার জন্য কী তা আমি জানি। নূরের সামনের সাথে মিলিয়ে নিজের মেয়ের নাম রেখেছো।
আফ্রাম আবার বলল,
— প্লিজ কথা বলো তোমরা। নিশান ভাই মেয়েটা গুমড়ে মরছে। আর কত কিছু ফেস করাবেন ওকে? সামান্য কয়েকহাত দুরুত্তে থেকেও কথা বলছেন না আপনারা। এত বছর পর বোন ফিরে আসায় জড়িয়েও ধরছেন না। কিসের এত সংকোচ। তাও নিজের বোনের জন্য?
হঠাৎ ই মনিকা একটা পিস্তল বের করে নূরের দিকে তাক করল। এহেন ঘটনায় চমকে গেল সবাই। মনিকা বলতে লাগল,
— এতবছর মিথ্যা মৃত হয়ে থাকলেও আজ ও সত্যি সত্যি মরবে। ওকে চাওয়ার কেউ নেই এই দুনিয়ায়৷ মরুক আজ ও। বেঁচে লাভ নেই। ও মরলে ওর নামের সম্পওি গুলোও আমরা পাবো।
কথা গুলো বলে ট্রিগার প্রেস করতে গেলেই দেখল নূর হাটু ভেঙে বসে পড়েছে সেই জায়গায়। নূর বলতে লাগল,
— ঠিকই বলেছো ভাবী আমায় চাওয়ার কেউ নেই এই পৃথিবীতে । সবাই শুধু স্বার্থের কথা ভাবে। আমার কথা ভাবে না। আমার ও ইচ্ছে করত মায়ের হাতে খেতে। আমার ও ইচ্ছে করবো ভাইদের সাথে ঘুরতে, মজা করতে। কিন্তু কিছুই পেলাম না। পেলাম না কারো সময়। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেযখন বাড়ি যাই তখন সবার বিচ্ছেদের কথা গুলো আমায় খুন করেছে। কোর্টে কেস উঠার পর আমায় কেউ একটু জিজ্ঞেস ও করলো না কেমন আছি। আগেও কেউ জিজ্ঞেস করে নি আর আজ ও করবেনা কেউ। সবাই ঘৃনা করে আমায়। সামান্য সম্পওির জন্য কেন আমায় এত অবহেলা করলো সবাই? আমায় বলতে খুশিমনে সব দিয়ে দিতাম। কিন্তু আমায় কেন খুন করতে চাইলে? কেন আমার সাথে এই ছলনা। কেন আমায় এত দূরে ঠেলে দিলে? আমি বাঁচতে চাই না। ভাবী শুট মি। মরতে চাই আমি মরতে চাই।
কথা গুলো বলে চিংকার করে কাঁদতে লাগল নূর। সবাই হতবম্ব। নূর কাঁদতে কাঁদতে নিজেকে আঘাত করতে লাগল। নূরে ওর শাড়ির পিন খুলে তা দিয়ে আঘাত করতে রইল। ঠিক তখনই গাছের আড়াল থেকে নিবিড় বেড়িয়ে আসল আর নিশান দৌড়ে নূরের কাছে গেলো।
চলবে….
সরি বলবো না। কারন আমি বলেছিলাম আমার পরিহ্মা চলচিলো। মাঝে প্রচুর ঝামেলায় ছিলাম। ইনশাআল্লাহ এখন থেকে নিয়মিত গল্প দিবো। অপেক্ষা করার জন্য সবাইকে শুকরিয়া!
নামাজ কায়েম করুন। আল্লাহ হাফেজ।
#প্রনয়ের_ছন্দ
পর্ব-১০
#আনজুম_তানিশা
[ গতকাল লিখেও গল্পটা হাতের চাপ লেখে ডিলিট হয়ে যায়। তাই এত দেরী। দুঃখীত]
১৮.
নিবিড় নিশান দৌড়ে নূরের কাছে গিয়ে নূরের হাত থেকে পিন ফেলে দিয়ে নূর কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। নিবিড় বলতে লাগল,
— বোনরে কেন এমন করছিস।
নিশান কাঁদতে কাঁদতে বলল,
— যেই তোকে বাঁচানোর জন্য এত কিছু করেছি সেই তুই আজ নিজেকে শেষ করতে চাচ্ছিস।
নিবিড় আবার বলল,
— তুই না ব্রেব গার্ল। তুই এভাবে হারতে পারিস না। তোকে লড়াই করতে হবে।
নূর হেচঁকী তুলে কাঁদতে লাগল। আর বলল,
— তোরা পাশে থাকলে আমি সব পারবো। প্লিজ অবহেলা করিস না আমায়। আর সহ্য করতে পারছি না আমি। মরে যাচ্ছি আমি।
নূর নিশান নিবিড় কাঁদছে তিন ভাই-বোন। ততক্ষণে সেখানে ফাহিম ও তার স্ত্রী ও উপস্থিত হয়েছে। সবার চোখ ছলছল করছে। নূর কাঁদতে কাঁদতে একসময় ভাইদের কোলেই ঠলে পড়ল।
আফ্রাম এগিয়ে এসে নূরকে চেক করে বলল,
— অতিরিক্ত কান্নার ফলে হয়ত।
কিছুহ্মন পর নূর ঙ্গান ফিরে নিজেকে দুই ভাইয়ের কোলে পেলো। যেমনটা ছোট বেলায় ছিলো৷ নূর উঠার পর আফ্রাম বলল,
— অনেক হয়েছে এবার শুরু থেকে শেষ সব বলো তোমরা। আমি জানি এখানে থাকা প্রত্যেকে সত্য লুকাচ্চো। সবটা ক্লিয়ার করো সবাই। নূর তুমিও।
থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। ততহ্মনে আফিম মিষ্টি ও সেখানে পৌঁছে গেছে। সবার নিরবতা ভেঙে নিশান বলতে লাগল,
— স্কুলের গন্ডি পার হওয়ার পর বাবা-মা আমায় খুলনায় পাঠায় বোর্ডিং এ। তারপর নিবিড় কে আর তারপর নূর কে। এভাবে স্কুলের গন্ডি পার হওয়ার পর পর ই আলাদা করে দেয় আমাদের তিন ভাই-বোনকে৷ ৩/৪ বছরের ব্যবধানে বিচ্ছেদ ঘটে আমাদের। নূর ঢাকায় চলে যায়, নিবিড় চট্টগ্রাম, আমি খুলনায়। এভাবেই দেশের ভিন্ন স্থানে একই খাঁচার পাখি আটকে ছিলো। এভাবেই পার করি অনেক গুলো বছর৷ বাবা-মা কখনো আমাদের এক হতে দিতেন না।কোনো না কোনো বাহানায় নূর এর থেকে আমাদের দূরে রাখতেন। নূরকে গ্রামে আসতে দিত না তেমন। সব কিচুর উর্ধ্বে গিয়ে আমরা নিজেদের সময় বের করে কুমিল্লায় দেখা করতাম। আমাদের শৈশব স্থানে নানুর বাড়ির পাশের পার্কে।
নিশান থামল। নিবিড় বলা শুরু করল,
— এরপর ভাইয়াকে হঠাৎ ভারতে পাঠিয়ে দেয় বাবা-মা। আর আমায় বিজন্যাস এর কোর্সে। নূর ঢাকায় নিজের মতো সেটেল। নূরের উপর তখন বাবা-মা র হুকুম চলতো না। কেন চলতো না আজও জানি না আমরা। বাবা-মা অনেকটা ভয় পেত নূর কে। বিভিন্ন কাজে আমরা দেখা করা ভুলে যাই। এরমধ্যে নূর গোয়েন্দা বিভাগে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কাজ নেয়। আমি ও নিজের একটা ব্যবসা ওপেন করি। হয়ে যাই বিজনেস ম্যান। ভাইয়া ভারত থেকে ইন্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নিয়ে নেয়। তো ৪ বছর আগে আমরা তিন ভাই-বোন দেখা করার জন্য আবার কুমিল্লায় একএিত হতে চাই। আমরা দু ভাই আসলেও বোন এক কেসের কাজে আসে নি। তখন আমাদের সাথে ফাহিম ভাই আর ভাবীর সাথে দেখা হয়। কথা বলতে বলতে আমরা পার্কে গহীনের জঙ্গলের অদূরে যাই।
নিশান নিবিড় থেমে গেল। দুজনই কাঁদছে। তাদের অবস্থা দেখে ফাহিম বলা শুরু করল,
— সেখানে ঘন ঝোপঝাড় এর আড়ালে রয়েছে দুটি সমাধি। আলী হোসেন মির্জা ও রিপা বেগম এর।
এই কথা টা শুনার পর মিষ্টি, নূর, আফ্রাম,আফিম চমকে উঠল৷ নূর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,
— বাবা-মা র জীবন্ত সমাধী??
ফাহিম বলল,
— না রে বোনু সেটা মৃত মানুষের সমাধি ছিলো। তোদের বাবা-মা র। বিষয়টা খতিয়ে দেখার জন্য আশেপাশের সবার থেকে জানতে পারি এটা আসলেই তোদের বাবা-মা র সমাধি। আর যারা এখন রিপা বেগম আর আলী হোসেন মির্জা তারা বহুরূপী। যেহেতু তোদের বাবা আর মা একমাএ সন্তান ছিলো তাই তোদের নানা-নানু, দাদা-দাদী মারা যাওয়ার পর সব টাই পাল্টে যায়৷ এলাকার একজন বুযুর্গ থেকে জানতে পারি কেউ একজন বিষ খায়িয়ে ওনাদের মেরে ফেলে। তারপর কেস টা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়৷
নিশান বলতে লাগল,
— তারপর আমরা বহুরূপী আলী হোসেন আর রিপা বেগমের কাছে যাই সবটা জানতে। কিন্তু এর মধ্যে পাল্টে যায় সব। আমরা বাড়ির কাছাকাছি আসতেই শুনতে পারি আমাদের নকল বাবা-মা তোর থেকে টিপ সই দিয়ে সম্পওি লিখে নিয়ে তোকে মেরে ফেলবে। তাও আজ রাতে। কথাটা শুনার পর আমরা সেখান থেকে পালিয়ে ঢাকা আসার আগেই ওনারা আমাদের দেখে ফেলে। পরে কিছু জিজ্ঞেস করতেই কোনোরকম ভাবে ফাহিম বলে দেয় ওর শালা এক্সিডেন্ট করেছে তারাতাড়ি ঢাকা ছুটতে হবে। আর আমরা ওকে এগিয়ে দিচ্ছি।
ফাহিম বলতে লাগল,
— সে যাএায় বেঁচে যাই আমরা। বাড়িতেই আটকে যায় নিবিড় নিশান। তারপর সময়মতো তোর লোকেশন ট্রেক করে তোর কাছে পৌছাতে গিয়ে দেখি তুই রক্তাক্ত। তোর দেখে সাইন নিতে যাবে ঠিক ঐ মুহূর্তে আফ্রাম সেখানে পৌছায়। তাই ওরা পালিয়ে যায়। তারপর আফ্রাম তোকে হসপিটালে নিয়ে যায় আর আমরা ঐ লোকদের খুজি। কিন্তু পাই না। পরে অনেক কষ্টে সিদ্ধান্ত নেই তোকে মৃত বানিয়ে হসপিটাল থেকে তোকে নিয়ে সিঙ্গাপুর পালিয়ে যাবো।
নিশান বলল,
— সবকিছু তেমনই হয়। বাড়িতে যাতে তোর লাশ না চায় তাই আমরা পুলিশ কে দিয়ে বলাই তোর ড্রাগ ডিলার ছিলি সাথে খুনি। এই কথা শুনার পর বাবা-মা তোর লাশ নিতে চায় নি। সে যাএায় আবার ও বেঁচে যাই। কিন্তু ৪ বছর পর দেশে ফিরে তুই সব কিছু পাল্টে দিলি। তোর মৃত্যুর পর তোর সকল সম্পওি কোর্টের অর্ডার মোতাবেক আমি আর নিবিড় পাই। আমাদের পরিচয় ও ফাঁস হয়। তখন সেই বহুরূপী দের আর কিছু করার ছিলো না। তারাও আলাদা হয়ে যায়। এরপর আমরা নিজেদের পদবী পাল্টে ঢাকায় সেটেল হই। তুই দেশে আসার পর রোজ লুকিয়ে তোকে দেখতাম আমরা। আমরা চাইতাম না তুই আমাদের কাছে ফিরে সবটা জানিস। কিন্তু আজ জানাতে হলো।
১৯.
নিস্তব্ধ রাতের নিরবতার মাঝে মাঝে এক দু বার রাতের অচেনা পাখিরা ডেকে ডেকে উঠছে।নিশাচর পাখিটার স্বর আবারও দূর থেকে ভেসে এলো।হাওয়ার শীতলতাও যেন ক্রমশ বাড়ছে।ধীরে ধীরে রাত গভীর হতে লাগলো আর তার সাথে সাথে স্পষ্ট হতে লাগলো মনের ভাষা।থমথম পরিবেশ চলছে সবার মাঝে। রাত তখন গভীর৷ কারো মুখে কথা নেই। চাঁদের আলোয় লেকের জল গুলো মুক্তার দানার মতো চিক চিক করছে। সেই সাথে সবার চোখে পানি গুলো।
নূরকে শান্তনা দেয়ার ভাষা কারো নেই। এতবছর যাদের বাবা-মা ভাবত তারাই এমন ধোকা দিয়েছে৷ খুন অবধি করতে চেয়েছে। এর চেয়ে কঠিক শাস্তি আর কী।
চলবে….