প্রবর্তন
পার্ট_03
#মিমুনী
.
ইহসান: আরে নিনিতা তুমি! বাহ এই ভং দরলা কবে। বিয়ে কি করো নাই?নাকি বিয়ে না করেই অন্য কাউকে জুটাইলা। তা তোমার মতো বোকা মেয়ে এতো জলদি কেমনে কোন আবুলকে পটাইলা। বাসায় কিছু বলে না । মনে হয় বাড়িতে ঠাই হয় নাই বলেই এমন ভাউতা ভাজি দিয়া বার হও নাকি। বলেই হাসতে লাগলো।
নিজের কাছেই নিজেকে অনেক ছোট লাগছে। কেমন মাইন্ডের ছেলের সাথে আমি রিলেশন এ ছিলাম। ছিহ। ছিহ আজ আমাকে কত ছোট করছে। ইচ্ছে করছে মাটির সাথে মিশে যাই?
ইহসান আবার বলতে লাগলো…..
তা একটা কথা ছিলো বিয়ে করছো তো ঐ হাবলা টাকে। সাথে কাকে নিয়া আসছো দেখতে পালাম না তো।
আমি চুপ করে আল্লাহকে ডাকছিলাম। আল্লাহ এই আপদটাকে একটু দূর করো। আমি এর কথা নিতে পারছি না। অমানুষ জানোয়ার একটা।
চোখ জোড়া আমার পানিতে ভরপুর। মাথা নিচু করে ছিলাম…..এমন সময় কারো কথায় মাথাটা উচু করে তাকালাম।
কারো সম্পর্কে না জেনে. না বুঝে কথা বলা ঠিক না(ফারহান)
ইহসান: আপনি কে…(বাহ দেখতে তো জোস)এই ভুতনি মার্কা বোকার জন্য এতো মায়া। তা নিনিতা এটা কি নিউ নাকি। কেমনে….জো……….
আর কিছু বলার আগেই ফারহান ওর মুখের উপর একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলো…..
কলার দরে বল্লো তুই নিজে নিচ বলে কি সবাই তোর মতো নাকি। তোর মতো ছেলেকে ভালোবেসে এই মেয়েটা না যা ভুল করেছে তার থেকে বড় ভুল করেছে তোর বাবা মা।
তারা যদি জানতে পারে এতো কষ্ট করে তারা একটা মানুষের মতো দেখতে জানোয়ার তৈরি করেছে তাহলে কি হবে একবার ভাবিছিস তো।
তুই ওকে কি যেনো বলছিলি ও ভুতনি কালো তাই নাহ। তা যখন দেখলি ও দেখতে খারাপ তাহলে প্রেম কেন করছোস। বাপ মায়ের একমাত্র মেয়ে তাই। নাকি এর সাথে খারাপ কিছু করে ছেড়ে দিতি কোনটা। বলেই মুখে আরো কয়েকটা ঘুসি মারলো। ইহসান এর মুখ থেকে অনেক রক্ত বের হচ্ছিলো তাও ওকে ছাড়ছে নাহ । একটা টেবিলের উপর ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো ইহসানকে।
আমাকে সামনে এনে বললো…..
কি যেন বলছিলি আমি আবুল নাকি শোন আমি যদি বোকাও হই তাও তোর মতো খারাপ চরিত্রের নাহ।
আর এই মেয়েটা যেমনই হোক আমার বউ হয় সে। আর আমি হলাম ফারহান শেখ। চিনিস তো ফারহান শেখকে। তোর বাবা যেখানে রোজ সাধারন ম্যানেজার হিসেবে যায়। সেই অফিসের বস আমি। কখনো নিজের টাকার বড়াই করি নি । কিন্তু আজ করলাম চোখের সামনে নিজের বউকে কেউ ছোট করবে আর আমি কাপুরুষ নই যে সহ্য করবো।
আর শুন আগে নিজের যোগ্যতা বিচার করিস । তার পর অন্যের।
ঐ বোকা মেয়েটা আমার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী। আমার হুরে মদিনাহ। আমার জান্নাত এর সাথী।
তোর সাথে একটা হারাম সম্পর্কে ছিলো ও। আর আমি হলাম হালাল। তোর সাথে সম্পর্ক ছিলো এখন নেই। তুই ওর জন্য আগেও যেমন পরপুরুষ ছিলি এখনো তাই।
আর ওকে নিয়ে কিছু বলার অধিকারও তোর নেই। মনে থাকে যেন।
ফারহান এর কথা গুলো আমার কলিজায় লাগছিলো। সত্যিই তো কত ভুল ছিলাম আমি। আর আমার এই দিনের জন্য আমিই দায়ী। আমি স্বাধীন চলতে চেয়েছি। ভালো মন্দ কি জানতে চাইনি। আম্মু কিছু বললে কতো কথা বলতাম। অবাধ্য ছিলাম।
সত্যিই আমি খারাপ অনেক খারাপ ।
ফারহান আমার হাত থেকে নিকাবটা নিয়ে বললো। এমন তো নয় তুমি বোবা। কেউ কিছু বললে তার জবাব দিতে তো পারো। অন্যায় ভাবে তোমাকে নিজে তোমার স্বামী এমনকি তোমার চরিত্র নিয়ে কথা তোলে তাকে ছেড়ে দাও কি করে।
আমি মাথা নিচু করে সব শুনলাম। ফারহান কে বললাম মুখটা মুছে দেন না আমার। ফারহান তাই করলো। বললাম নিকাবটা পরিয়ে দিন। এখানে অনেকে আমাকে দেখে নিচ্ছে তো।
ফারহান: হুম।
তারপর আমি ধীর পায়ে ইহসান এর সামনে দিয়ে দাড়ালাম।
ওর মুখে রক্ত আর ঘামে একাকার। অনেক রাগ লাগলো ওকে দেখে পাশ থেকে একটা কেচাপ এর বোতল হাতে নিয়ে দিলাম মাথায় একটা বাড়ি। আরেকটা দিতে গেলেই ফারহান না করে আমায়।
তবুও সামনে গিয়ে বললাম শয়তান মুখ কাটা হনুমান। তোর থেকে আমার স্বামী হাজার হাজার গুন ভালো। কুত্তা ছেলে সামনে আসবি না ভুলেও। যদি কোন দিন আমার সামনে আসিস তো তোর মাথা তো একটু ফাটালাম তখন পুরোটাই ফাটিয়ে তোকে মাটিতে পুতেঁ রাখমু। বদমাইস।
ছেচড়া। আল্লাহ বাচাইছে আমাকে……..
বলেই ফারহান কে বললাম চলেন আমি আর ফুচকার ফ ও খামু না। ফারহান মুচকি হেসে দিলো। রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার আমাদের বললেন যে কিছু খেয়ে যেতে আমি রাজি হলাম নাহ। ফারহান রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার এর হাতে কিছু টাকা দিয়ে বললো সে আসলে দুঃখিত এমন কাজের জন্য । তার পর আমরা আমার বাবার বাড়িতে চলে যাই।
বাড়ি গিয়ে বাবা আর মাকে সব বলে দেই। মা তো পুরোই শক। বাবা ও একই অবস্থা। ফারহান ঐ শয়তানটাকে মারার কারনে হাতে একটু ব্যাথা পায় আমি রুমে নিয়ে গিয়ে তাকে ব্যান্ডেজ করতে থাকি। এমন সময় ফারহান বললো……
ফারহান- তুমি এতো পাজিঁ আগে জানতাম না তো । এমন কি আঙ্কেলও কখনো বলে নি আমাকে।
আমি- সব কিছু বাবা আপনাকে বলতো।
ফারহান- হুম সব। তাইতো প্রেম এ বেশি করে পরছিলাম। আর প্রেম তো হারাম যার কারনে সোজা বিয়ে করে নিলাম। কাজটা ভালো করছি না বলো।
আমি- হুম অনেক ভালো করছেনন। বলে মায়ের কাছে চলে যাই।
রাতে একসাথে বসে চা খাচ্ছিলাম এমন সময় ইশার আজান হলো নামাজ পরা শেষ হতেই ফারহান বললো
ফারহান- নিনিতা তুমি বলতে পারো কি ইশা আর ফজর নামাজ পরা উওম কেনো?
আমি- নাতো? কিন্তু একবার শুনছিলাম মনে নাই….আপনি বলেন।
ফারহান: ইশা আর ফজর নামাজ হচ্ছে একে অপরের যোগ সূত্র। খেয়াল করো তুমি ফজর পরলা তাহলে সারা দিনের বাকী 3ওয়াক্ত মিস দিতে মন চাইবে নাহ। আর এক্ষেত্রে তোমার 4ওয়াক্ত নামাজই পরিপূর্ন হয়ে যায়। আর যেহেতু আমাদের সবাইকে 5ওয়াক্ত নামাজ পরার কথা বলা হয়েছে সেক্ষেত্রে তো ইশাও পরা বাধ্যতামূলক। আর আমরা অনেকেই দিনির শেষে ইশার নামাজ পরতে আলসেমি করি। এটা ঠিক নাহ ইশার নামাজ পরিপূর্ন করলে নামাজের যে সিরিয়াল তা পালন করা হয়।
ইশা আদায় করলে তোমার ফজর মিস দিতে মন চাইবে নাহ (এটা তালিমে শুনছিলাম….. অতটা মনে নাই ভুল হলে ইনবক্স বা কমেন্ট বক্স এ বলবেন…কারন ভুল সংশোধন করা ভালো। ভুল ধারনা নয়)
আমি- আচ্ছা বুঝলাম ।
ফারহান আপনি কুরআন পাঠ করতে পারেন
ফারহান – এটাতো সবাই পারে। কেন তুমি পারো নাহ।
আমি- না আসলে ইচ্ছে ছিলো স্বামীর কাছে শিখবো(মন খারাপ হয়ে গেলো। সত্যিই কি করলাম জীবনে)
ফারহান: আমি তো তোমার স্বামী । আমি যদি শিক্ষাই শিখবা তুমি। আমি কিন্তু দাখিল পাশ করেই কলেজে পরেছি। চাইলে পরতে পারো।
আমি এক দৌড়ে কাবার্ড থেকে আমার কুরআনটা নিয়ে বসে পরলাম।
এর পর ফারহান প্রায় প্রতিদিন কুরআন পরায় এমনি করে 3মাসের মধ্যে আমার কুরআন শিখা হয়ে যায়। পর্দা সম্পর্কে তো কোনো ধারনাই ছিলো নাহ। শাশুড়ি মা আর বাড়ির কিছু বড়দের মাধ্যমে পর্দা সম্পর্কে যানতে পারলাম।
নিজেকে এখন পরিপূর্ন মনে হয়।
এই 3-4মাসে ফারহান আমাকে ছুয়েঁও দেখে নি। আমি এখন রিয়ালাইজ করতে পারি আমি তার সাথে অন্যায় করছি। তাই আজকে সিন্ধান্ত নিয়েই নিলাম ও বাড়ি ফিরলে ওকে ওর অধিকার দিবো। আমি এখন আমার স্বামীকেই ভালোবাসি । পাপ তো অনেক করেছি এবার না হয় আল্লাহর পথে একটু যাই।
দোয়া করবেন আমার জন্য☺
সমাপ্তি।
#স্টোরিটা_আন্নি(আমার এক আপির)
এফবিতেই পরিচয় তার সাথে তিনি মেবি এখন প্রেগন্যান্ট 7মাস রানিং আমার সাথে লাস্ট কথা হয় 4মাস আগে। আইডি টাও অফ করা। নয়তো তাকে ম্যানশন করতাম।
পুরোটা সত্যিই নয় 45% তার থেকে আর 55% নিজে থেকে লিখলাম।
আর একটা কথা কিছু আপি আমার লেখেটা কপি করছেন বাট নামটাও তাদের নামে রাখছেন ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য । কাজটা কি ঠির করছেন। আপনার বিবেকের কাছে প্রশ্ন রইলো।
আমাকে সাপোর্ট করার জন্য সবাইকে এতো ভালোবাসা ।
আর এক্সাম বিধায় দেরি হলো সরি
ভালো থাকবেন সবাই। জাযাকাল্লাহ☺☺