#প্রমত্ত_হৃদয়❤️,২৪
#লেখনীতে:সারা মেহেক
ঘুমন্ত ভেনিস শহর ঠিক পুরোপুরি ঘুমন্ত নয়। ‘নিস্তব্ধ পুরী’ বলে পরিচিত গ্যাং’স্টারদের বিশেষ সাক্ষাৎকারের স্থান এখনও জাগ্রত। যেনো সেখানে এখনও রজনীর ছোঁয়া লাগেনি৷ বাড়েনি রজনীর খানিক গভীরতাও।
ভেনিস শহরকে গোড়া হতে নিয়ন্ত্রণকরণকারী মিস্টার ডেভিড দলবল নিয়ে নিজেদের পরিচিত আড্ডামহলে বসে আছেন। তার সামনে বসে আছে রাগীব। মুখোমুখি দু গ্যাং’স্টার নিশ্চুপ বসে আছে। মিস্টার ডেভিডের কাটা ঠোঁটের কোনায় স্থান পেয়েছে আতিথেয়তাপূর্ণ হাসি। রাগীবের সাথে দ্বিতীয়বারের সাক্ষাৎকারে তিনি ভীষণ খুশি হয়েছেন৷ খুশি হয়েছে স্বয়ং রাগীবও। মুখোমুখি দু সোফার মধ্যখানে কাচের তৈরী গোল টেবিল হতে দুটো ড্রিংকসের গ্লাস তুলে নিলো দুজনে। মিস্টার ডেভিড ড্রিংকসে এক চুমুক দিয়ে ভদ্রতাসূচক হাসি দিয়ে বললেন,
” দ্বিতীয়বার তোমার সাথে দেখা করে খুব ভালো লাগলো মিস্টার রাগীব শাহরিয়ার।”
রাগীব মৃদু হেসে বললো,
” তোমার সাথেও দেখা করে খুব ভালো লাগলো মিস্টার ডেভিড। আই গেস, আমি জানি তুমি আমাকে কেনো ডেকেছো। ”
রাগীবের শেষোক্ত কথাটি শুনে মিস্টার ডেভিড সশব্দে হেসে উঠলেন। কাটাছেঁড়াপূর্ণ মুখশ্রীতে সে হাসি ভয়ানক দেখালো। এ হাসি দেখে সাধারণ মানুষও নিশ্চিত হবে, উনিই ভেনিসের বিখ্যাত গ্যাং’স্টার মিস্টার ডেভিড লুসেন্ট। যার ভয়ে সবসময় তটস্থ থাকে এখানকার স্থানীয় পুলিশ সদস্যগণও। যার নাম ভেনিসের ছিঁচকে চোরগুলোর মুখে মুখেও প্রচলিত।
মিস্টার ডেভিস ড্রিংকসের গ্লাসসহ সম্মুখের দিকে এগিয়ে এলেন। গ্লাসটি টেবিলের উপর রেখে পরনের কোটটি খানিক ঠিকঠাক করে বললো,
” দেখো, রাগীব। তুমি যেমন সিসিলি শহরকে নিয়ন্ত্রণ করো তেমনি আমিও ভেনিস শহরকে নিয়ন্ত্রণ করি। সে হিসেবে এ শহরের সব শান্তি রক্ষার দায়িত্ব আমার। রাইট?”
রাগীব গ্লাসে আরেকটি চুমুক দিয়ে বললো,
” রাইট মিস্টার ডেভিড।”
” সেহেতু আমার শহরে এসে তুমি যে এই খানিক সময়ের বি’শৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে সেটা নিশ্চয়ই আমার ভালো লাগার কথা নয়?”
রাগীব মুখ ফিরিয়ে মৃদু হাসলো। বললো,
” তোমার যে এটা ভালো লাগেনি তা জানি মিস্টার ডেভিড। তবে আমার কাজ শেষ হলেই আমি চলে যাবো এখান থেকে। ”
” কি কাজ? কি উদ্দেশ্যে এসেছো তুমি?”
” ড্রা’গ স্মা’গ’লার মিস্টার আফসার সাহেবের সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানা আছে তোমার? ”
” হ্যাঁ জানা আছে। ”
” উনার সাথেই কিছু পার্সোনাল ডিল করা বাকি আছে আমার। এদিকে কাজ শেষ হলেই আমি সিসিলিতে ব্যাক করবো। আই হোপ, আমার প্রাইভেসিকে সম্মান দিয়ে এই পার্সোনাল ডিলের বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করবে না আমায়। ”
মিস্টার ডেভিড রাগীবের ডিলের সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছিলো। কিন্তু রাগীবের শেষোক্ত কথায় দমে গেলেন তিনি। কিয়ৎক্ষণ বিনা বাক্যে রাগীবের পানে চেয়ে রইলেন তিনি। অতঃপর টেবিলে থাকা বোতল হতে রাগীবের গ্লাসে একটু ড্রিংক ঢেলে দিলেন তিনি। নিজের গ্লাসেও ড্রিংক ঢেলে রাগীবের সাথে চিয়ার্স করে সে ড্রিংকস করলেন।
.
শেষ রাতে চুপিসারে বাড়ি ফিরলো রাগীব৷ বাড়ির তিন সদস্য তখন ঘুমে বিভোর। নিজেদের রুমে পা টিপে টিপে প্রবেশ করলো রাগীব। নিঃশব্দে পরনের পোশাক বদলে সাবিহার পাশে এসে শুয়ে পড়লো সে। সাবিহার কোমড়ে আলতো হাত রাখতেই তন্দ্রাগত কণ্ঠে সাবিহা জিজ্ঞেস করে বসলো,
” কোথায় গিয়েছিলে তুমি?”
সাবিহার এহেন প্রশ্নে হকচকালো রাগীব। নিঃশব্দে শুকনো একটা ঢোক গিলে তৎক্ষণাৎ বললো,
” গেস্ট হাউজে গিয়েছিলাম একটু কাজে। তুমি টের পেলে কখন?”
সাবিহা জবাব দিলো না। পুনরায় ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো সে। হাফ ছেড়ে বাঁচলো রাগীব। স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলে সেও ঘুমিয়ে পড়লো।
.
আফসার সাহেব ও সামাদ সকাল এগারোটার দিকে ভেনিস ফিরেছেন। এয়ারপোর্ট হতে সোজা বাড়িতে চলে এলেন তারা। তাদের এ অকস্মাৎ আগমনে সাবিহা ও সাবিত ভীষণ খুশি হলো। কিন্তু সালমা বেগমের স্বস্তি, শান্তি সব জানালা দিয়ে পালালো। যে বিষাক্ত সত্যের কথা কিছুটা ভুলে তিনি চিন্তাহীন সময় কাটাতে চেয়েছিলেন তা যেনো আফসার সাহেব ইচ্ছাপূর্বক হতে দিলেন না। বিঘ্ন ঘটালেন সালমা বেগমের জীবনে।
আফসার সাহেব রুমে প্রবেশ করতেই সালমা বেগম তাকে সম্পূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করে রুম হতে বেরিয়ে গেলেন। সালমা বেগমের হেন উপেক্ষাপূর্ণ আচরণে খানিক অবাক হলেন আফসার সাহেব। তবে রোজকার ন্যায় সালমা বেগমের আচার-আচরণ, মনাবস্থা অগ্রাহ্য করলেন তিনি। পরনের পোশাক বদলিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলেন তিনি।
ওয়াশরুম হতে বেরুতেই সাবিহা ও সাবিত আফসার সাহেবের সাথে দেখা করতে এলেন। তিনি সাবিহা ও সাবিতের সাথে স্বাভাবিক হয়ে কথা বললেন। সাবিহার সাথে এমন বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করলেন যেনো কিছুদিন পূর্বে রাগীবের সাথে বিয়ের ব্যাপারে কোনো ঝামেলাই হয়নি। বাবার এ আচরণে যারপরনাই খুশি হলো সাবিহা। মন হতে সকল প্রকার বোঝা নেমে গেলো তার। সে ধরেই নিলো, তার বাবা রাগীব ও তার বিয়ের বিষয়টি মেনে নিয়েছে। যদিও এ নিয়ে সে আগ বাড়িয়ে কথা বললো না।
.
দেখতে দেখতে চলে এলো সেই কাঙ্ক্ষিত রাত। যে রাতের জন্য গত দুদিন যাবত নানা প্রকার জল্পনাকল্পনা সাজিয়েছে রাগীব। কারণ এ রাতেই সে আফসার সাহেব সম্পর্কে সাবিহাকে ছোট্ট একটি ইঙ্গিত দিতে চলেছে। সে জানে, এতে সাবিহা কিছুটা হলেও ভেঙে পড়বে তবে সে যে সাবিহাকে সামলে নিতে পারবে এতে শতভাগ নিশ্চিত সে।
বার্থডে পার্টি উপলক্ষে মেরুন রঙের সাধারণ একটি গাউন পরেছে সাবিহা। মাথার চুলগুলো এলোমেলোভাবে খোপা করা। কানে অতি সাধারণ এক জোড়া দুল আর মুখে সাধারণ সাজ। এই সাধারণ সাজেই অসাধারণ দেখাচ্ছে সাবিহাকে। রাগীবের যেনো নজরই হটছে না তার স্নিগ্ধময়ীর এ অসাধারণ ও অপরূপ রূপ হতে। সে অপলক চেয়ে আছে সাবিহার পানে। তার এ চাহনি দেখে লজ্জায় মাটিতে মিশে যাওয়ার জোগাড় হয়ে এলো সাবিহার। সে ড্রেসিং টেবিলের চেয়ার ছেড়ে উঠে রাগীবের সম্মুখে দাঁড়ালো। লজ্জায় রাগীবের দু চোখ নিজ হাতে বন্ধ করে লাজুক হাসি দিয়ে বললো,
” অতিরিক্ত নজর দিয়ে ফেলেছো আমাকে। এবার একটু চোখ দুটো বন্ধ থাক। রিল্যাক্স করুক তোমার চোখ দুটো। ”
রাগীব মুচকি হেসে চোখের উপর হতে সাবিহার হাতজোড়া সরিয়ে দিলো। অতঃপর সাবিহার হাতজোড়া নিয়ে সাবিহার কোমড়ের পিছনে ধরে লঘু কণ্ঠে বললো,
” তোমাকে যতোই দেখি ততোই কন্ট্রোললেস হয়ে পড়ি আমি। এখন তো মন চাচ্ছে তোমাকে একটা বাক্সে বন্দী করে রাখতে যেনো আমার এ স্নিগ্ধময়ীর এ রূপ কেউ না দেখে। ”
লজ্জায় সাবিহার ফর্সা গাল রক্তিমাভাব ধারণ করলো। রাগীবের চোখে চোখে রেখে লাজুক হাসি দিয়ে বললো,
” এমনটা আপনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য মিস্টার রাগীব শাহরিয়ার। আপনি কি জানেন আজ আপনাকে এই কালো সুটবুটে দেখে কত মেয়ে ঘায়েল হবে?”
রাগীব ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো। সাবিহার হাত ধরে নিজের কাছে টেনে এনে বললো,
” যে মেয়েটার ঘায়েল হওয়ার কথা সে কি ঘায়েল হয়েছে?”
” যদি বলি না?”
” তাহলে তাকে ঘায়েল করার জন্য অন্য পথ অবলম্বন করতে হবে। ”
” কি পথ?”
সাবিহার প্রশ্নের জবাব দিলো না রাগীব। উপরন্তু সাবিহার মুখের দিকে ধীর গতিতে এগিয়ে গেলো সে। তার এ অগ্রসর ক্রিয়ায় সাবিহার বুঝতে বাকি রইলো না রাগীব কি করতে চাইছে। এ বুঝা মাত্র সে তৎক্ষনাৎ রাগীবের হাত হতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে কয়েক কদম পিছিয়ে এলো। বললো,
” মিস্টার রাগীব শাহরিয়ার, একটু লিমিটের মধ্যে থাকতে শিখো। ”
রাগীব বাঁকা হেসে সাবিহার দিকে খানিক এগিয়ে গিয়ে বললো,
” ওয়াইফের সাথে কিসের লিমিট হুম?”
” ইশ, আমরা এখন পার্টিতে যাবো। এসব ঢং বাদ দিয়ে চলো। দেরি হয়ে যাচ্ছে। ”
এই বলে সে রাগীবের সম্মুখে দাঁড়িয়ে পড়লো। অতঃপর রাগীবের পরনের টাই পূর্বের তুলনায় একটু টাইট করে দিলো সে। অতঃপর দুজনে পার্টির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো।
.
বিশাল হলরুমের ন্যায় বাংলোতে বার্থডে পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। সাবিহার যে ফ্রেন্ডের বার্থডে পার্টি সে ফ্রেন্ড ধনী ঘরের একজন। সে হিসেবে সামান্য এক বার্থডে পার্টির আয়োজনও বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে করা হয়েছে। কেক কাটা শেষে সকলে নিজেদের মতো পার্টি উপভোগ করছে।
সাবিহা ও সোফিয়া একত্রে অরেঞ্জ জুস পান করছিলো। হঠাৎ জর্জ সোফিয়াকে ডাকায় সোফিয়া চলে যায়। একা পড়ে যায় সাবিহা। এদিকে রাগীব সাবিহাকে জরুরি একটি কলের কথা বলে পার্টির সোরগোলপূর্ণ পরিবেশ হতে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ফোনে এন্ড্রুর সাথে জরুরি কথায় ব্যস্ত সে। কিন্তু শত ব্যস্ততার মাঝেও তার দৃষ্টিজোড়া সাবিহাতে নিবদ্ধ।
এদিকে সাবিহাকে একা পেয়ে পৈশাচিক এক হাসি দিলো এঞ্জো। পার্টির শুরু হতেই সাবিহাকে রাগীবের সাথে দেখে ভেতরে ভেতরে জ্বলছিলো সে। অপেক্ষা ছিলো শুধু সাবিহাকে একা পাওয়ার। এরই সুযোগে নিজের কার্য হাসিলের জন্য ওঁৎ পেতে থাকা এঞ্জো এগিয়ে গেলো সাবিহার দিকে। এঞ্জোকে এগিয়ে আসতে দেখে দৃষ্টি কঠোর করো সাবিহা। সতর্ক হলো রাগীব। সে তৎক্ষনাৎ এন্ড্রুর কল কেটে দিলো। এগিয়ে গেলো সাবিহা ও এঞ্জোর দিকে। ততক্ষণে এঞ্জো সাবিহার বাহুতে হাত ঘষে বললো,
” আজকে পুরোই আগুন লাগছে তোমাকে সাবিহা। আমি কিন্তু কন্ট্রোললেস হয়ে পড়ছি। ”
এঞ্জোর এ বা’জে কথার ধরণে সাবিহা প্রচণ্ড ক্রোধিত হলো। এক ঝটকায় এঞ্জোর হাত সরিয়ে দিতেই এঞ্জো পুনরায় তার বাহুতে হাত দিতে চায়। কিন্তু এ পর্যায়ে অকস্মাৎ সে স্থানে রাগীবের আগমন ঘটলো। সে বিনা বাক্যে খট করে এঞ্জোর হাত চেপে ধরলো। স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ জোরে এঞ্জোর হাতে চাপ দিয়ে স্মিতহাস্যে হিনহিনে স্বরে বললো,
” মিস্টার এঞ্জো, তুমি হয়তো তোমার লিমিট ভুলে যাচ্ছো। সাবিহার গায়ে এ ব্যাড টাচের ফলাফল কিন্তু মোটেও ভালো হবে না মিস্টার এঞ্জো। ”
এই বলে সে এঞ্জোর হাত ছেড়ে দিলো। এতোক্ষণ ব্যাথায় জর্জরিত হাতটা রাগীবের হাত হতে ছাড়িয়ে নেওয়ার তীব্র চেষ্টা চালাচ্ছিলো এঞ্জো। কিন্তু রাগীবের দৃঢ় মুঠো বন্ধনে সে কিছুতেই নিজের হাত ছাড়াতে পারলো না। অবশেষে রাগীব তার হাত ছাড়তেই সে সেই স্থান দ্রুত ত্যাগ করলো।
এঞ্জো চলে যেতেই সাবিহা অসহায় দৃষ্টিতে রাগীবের পানে চাইলো। তার এ দৃষ্টিতে রাগীব তার মনের কথা যেনো চট করে পড়ে ফেললো। তাকে আশ্বস্ত করে বললো,
” ডোন্ট ওয়ারি সাবিহা। এরপর থেকে এঞ্জো তোমার ধারের কাছেও ঘেঁষবে না। ”
রাগীবের এ দু লাইনের আশ্বস্তমূলক বাক্যে সাবিহা স্বস্তির হাসি হাসলো। পরিপূর্ণ চাহনিতে কিয়ৎক্ষণ রাগীবের পানে চেয়ে রইলো সে। হঠাৎ অদূর হতে হট্টগোলের শব্দে চমকে উঠলো সাবিহা। ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে ফিরতেই দেখলো একটি লোককে কয়েকজন মিলে ধরে আছে। আর তাদের চারপাশে ছোটখাটো একটি ভীড় জমায়েত হয়েছে। এই হট্টগোলের কেন্দ্রবিন্দু যে লোকটি সে আর কেউ নয় বরং সার্জো। আর তাকে মিছে মিছে মা’রার অভিনয় করা গার্ডের পোশাকে সজ্জিত থাকা লোকগুলো রাগীবের কতিপয় সাহচর্য।
সাবিহা দূর হতে দেখলো একজন সার্জোর মুখে দু চারটা ঘু’ষি মেরে চলছে। এ হট্টগোলপূর্ণ পরিবেশ দেখে সাবিহা দ্রুত এগিয়ে গেলো। তার পিছু পিছু এগিয়ে গেলো রাগীবও। সাবিহার পিছন হতে রাগীব সেই লোকগুলোকে চোখের ইশারায় কিছু একটা বললো। অতঃপর রাগীবের ইশারায় সাবিহা নিকটে আসতেই লোকগুলো সার্জোকে আরো কয়েকটি ঘু’ষি মেরে বললো,
” বার্থডে পার্টিতে ড্রা’গ সাপ্লাই করতে এসেছিস কেনো?”
সার্জো কোনো জবাব দিলো না৷ রাগীবের অর্পিত কাজ অনুসারে এ মুহূর্তে সে নিশ্চুপ রইলো। এদিকে লোকগুলোর মুখে ড্রা’গ শব্দটি শুনতেই চমকে উঠলো সাবিহা। সে বিস্মিত কণ্ঠে বললো,
” ড্রা’গ! পার্টিতে ড্রা’গ সাপ্লাই করতে এসেছে লোকটি!”
রাগীবের সাহচর্যের মধ্যে একজন বললো,
” হ্যাঁ ম্যাম। লোকটা কয়েকজনকে ড্রা’গ সাপ্লাই করছিলো। ”
এই বলে সে সার্জোর গালে আরেকটি ঘু’ষি মে’রে বললো,
” তুই নিজে থেকে এসেছিস না কি তোকে কেউ পাঠিয়েছে এখানে? ”
সার্জো এ পর্যায়ে জবাব দিলো,
” একজন পাঠিয়েছে আমাকে। ”
” কে পাঠিয়েছে? নাম বল তার। নিশ্চয়ই সে তোদের লিডার? ”
সার্জো ভান করে প্রথমবারে জবাব দিলো না। রাগীবের সাহচর্য আরেকবার সার্জোর গালে ঘু’ষি মা’রলো। এদিকে রাগীব সাবিহার পিছন হতে নীরব দর্শকের ন্যায় নিজেরই সাজানো নাটক দেখতে লাগলো। নাটকের যতোই অগ্রগতি হচ্ছে ততোই সে যেনো অধৈর্য্য হয়ে পড়ছে। এক পর্যায়ে তার এ অধৈর্য্যপূর্ণ সময়ের সমাপ্তি ঘটালো সার্জো। একটি ঘু’ষি খাওয়ার পর সার্জো মুখ খুললো। বললো,
” আমাকে ড্রা’গ স্মা’গ’লার মিস্টার আফসার সাহেব পাঠিয়েছে। উনিই আমাদের লিডার। ”
সার্জোর মুখে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নিজের বাবার নাম শুনে থমকে গেলো সাবিহা। কয়েক কদম পিছিয়ে এলো সে। নিজের কানকে যেনো বিশ্বাস করাতে পারলো না এটি।
#চলবে