প্রিয়_অভিমান পার্ট : ২৩,২৪

0
1371

#প্রিয়_অভিমান
পার্ট : ২৩,২৪
লেখা : নিশাত সিদ্দিকা
পার্ট : ২৩

একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছি নিলয়ের মুখোমুখি,জায়গাটা অনেক নির্জন,লোকজন ও তেমনটা নেই, ও আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যেটা মোটেও স্বস্তি দিচ্ছে না আমাকে ,ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ও আমাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে এলে কেন,কিছুই বুঝতে পারলাম না,হয়তো এটা ওর পছন্দের জায়গা,
আমি অপ্রস্তুত ভাবে চারিপাশে তাকাচ্ছি ভীষন আনইজি লাগছে,
উনার সাথে ও তো কতবার বাইরে ঘুরতে এসেছি কখনও এতো অস্বস্তি লাগে নি,
নাহ এভাবে আর বসে থাকা যায় না আমি ওর দিকে তাকিয়ে জোর করে একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলাম,
-এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন কিছু বলবি ?
তখনই ও ঘোর লাগা কন্ঠে বলে উঠলো,
-শাড়ীতে তোকে দারুন লাগে ,সব কিছুতেই তোকে হেব্বি সুন্দর লাগে বাট শাড়ী মারাত্মক লাগে ,ভীষন এট্রাকটিভ তাকালেই কেমন নেশা লেগে যায় উফ!!বলেই ও চোঁখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নিল,
ওর কথা বলার ধরন দেখে আমি অবাক হলাম,ও এভাবে কথা বলছে কেন,অনেক দিন থেকে আমি ওকে চিনি কোনো দিন আমার সাথে এভাবে কথা বলেনি,
ওর রিকোয়েস্টেই শাড়ী পরে বের হতে বাধ্য হয়েছি,
যখন রেডি হতে যাচ্ছিলাম তখন ও গিয়ে আমার পথ আগলে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করে ,
-প্লিজ সুহা শাড়ী পরিস ,আমি জানি তুই বাইরে বের হলে শাড়ী পরিস না ব্রোয়ের নিষেধ আছে কিন্তু ও তো জানতে পারবে না তার আগেই আমরা চলে আসবো ,
ওর কথা শুনে আমি সাফ মানা করে দিলাম শাড়ী পরতে পরবো না কিন্তু তখন ও ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল শুরু করলো,
ও বলতে লাগল,
-ফ্রেন্ডের এই সামন্য রিকোয়েস্ট টুকু রাখতে পারবি না ,এত দিনের বন্ধুত্ব তোর সাথে কখনও কিছুর জন্য রিকোয়েস্ট করেছি,
ঠিক আছে তুই যদি না পরিস তাহলে তো আমার কিছু করার নেই আমি তো আর তোর উপর জোর করতে পারবো না সেই অধিকার তো আমার নেই বলেই মন খারাপ করে আমার সামন থেকে চলে গেল,
ওর কথা শুনে আর ওকে এভাবে দেখে আমার ভীষন খারাপ লাগল তাই শেষে শাড়ী পরেই বের হলাম ওর সাথে।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল করেছি ,ওর করা প্রশংসা শুনে মোটেও ভালো লাগলো না আমার,বরং আমার অস্বস্তি আরো বেড়ে গেল,
আমি বিব্রত ভাবে বলে উঠলাম,
-এসব কি ধরনের কথা নিলয়,তুই এভাবে কথা বলছিস কেন আমার সাথে,
আমার কথা শুনে নিলয় বিশ্রী ভাবে একটা হাসি দিয়ে বলে উঠল,
-আরে ইয়ার প্রশংসাই তো করছি খুশি হস নি ,
-আমার এখানে একদম ভালো লাগছে না আমি এক্ষুনি বাসায় যেতে চাই ,তোর বাসায় যেতে ইচ্ছা না হলে তুই বসে থাক,
আমার কথা শুনে নিলয় সাথে সাথে টেবিলের উপরে থাকা আমার দুহাত চেপে ধরল,
ওর এমন কান্ডে আমি হতবাক হয়ে গেলাম,বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে
হাত ছাড়তে চাইলাম কিন্তু ও আরো চেপে ধরে ধরে বলে উঠল,
-তোর সাথে আমার কথা আছে,আমার কথা না শুনে তুই কোথাও যেতে পারবি না,অনেক আগেই কথা গুলো বলা উচিত ছিল ,আমার ভুলের জন্য আজ আমাকে এই দিন দেখতে হচ্ছে,আমি আর পারছি না এসব কিছু মেনে নিতে,
আমি ওর দিকে ব্রু কুচকে তাকিয়ে বলে উঠলাম ,- কি কথা বল!!ওয়েট ওয়ান সেকেন্ড আগে আমার হাতটা তো ছাড়,এভাবে হাত ধরে রয়েছিস কেন??
সাথে সাথে ও আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলে উঠল,
-আই লাভ ইউ সুহা।আমি তোকে সেই কলেজ লাইফ থেকে ভালবাসি,
ওর বলা কথাটা শুনে আমি কয়েক সেকেন্ড স্তব্দ হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বসে রইলাম,কয়েক মুহূর্ত শব্দহীন ভাবে কাটলো ,
তারপর এক ঝটকায় ওর হাত থেকে আমার হাত সরিয়ে নিয়ে অবাক গলায় বলে উঠলাম,
-হোওয়াট!!!!এসব কি আবেল তাবোল কথা বলছিস তুই নিলয়,আমার চোঁখ ভরা প্রশ্ন আর কৌতুহল,
-আমি যা বলছি সব সত্যি এগুলো আবোল তাবোল কথা নয় সুহা ,তোকে যে দিন আমি প্রথম দেখেছিলাম সেই প্রথম দেখায় আমি তোকে ভালবেসে ফেলি,যাকে বলে লাভ এট ফার্স্ট সাইট ,এক মুহূর্তের জন্য তোকে মন থেকে সরাতে পারছিলাম না ,তারপর তোকে ফলো করা শুরু করি তোর সম্পর্কে খুঁজ খবর নিতে থাকি,তোর কোনো বয় ফ্রেন্ড আছে কিনা সেই সব,কিন্তু তোর সম্পর্কে সবার কাছ থেকে যা শুনলাম তাতে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম,জানলাম তোকে কলেজের অনেক ছেলে প্রপোজ করেছে আর তুই নাকি সবাইকেই রিজেক্ট করে দিয়েছিস এবং সেই সাথে যারা যারা প্রপোজ করেছিল সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিস,জীবনের প্রথম কাউকে ভালবাসলাম আর থাকে কিনা এভাবেই হারিয়ে ফেলবো,এটা আমি কিছুতেই মানতে পারলাম না তাই ভালবাসাটা মনে চাপা দিয়ে তোর বন্ধু হতে উঠে পরে লেগে গেলাম বন্ধু হলে এট লিস্ট তোর পাশে থাকতে পারবো এই আশায় ,এবং অনেক চেষ্টার পর আমি সফল হলাম অবশেষে তুই আমাকে বন্ধু হিসেবে মেনে নিলি
আমি অবাক হয়ে নির্বাক স্রোতার মতো নিলয়ে কথা গুলো শুনতে লাগলাম,
ও থেমে আবার বলতে শুরু করলো,
-তুই কখনও প্রেম করবি না প্রেম ভালবাসা থেকে তুই অনেক দূরে তাই তোকে হারানোর ভয় ও রইলো না তাই ভাবলাম বিদেশ থেকে লেখা পড়া শেষ করে দেশে ফিরে তোর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো এরজন্য আমার দুই বন্ধুকে তোর উপর খেয়াল রাখার দায়িত্ব দিয়ে আমি ইংল্যান্ড চলে যাই,কিন্তু যখন
নিলয়ের বলা কথার মাঝে আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠলাম,
-এসব কি বলছিস তুই নিলয়,আমি কখনও তোকে বন্ধু ছাড়া এর বেশি কিছু ভাবি নি,তোর জন্য আমার মনে অন্য কোনো ফিলিংস কখনই ছিল না ,আমি এটা ও ভেবেছি তুই ও শুধু আমাকে একজন ভাল বন্ধুই ভাবিস,কিন্তু এত বছর পর তুই এসব কি বলছিস,
-আমি সত্যি বলছি সুহা তোকে আমি কখনই বন্ধু ভাবিনি তোর জন্য আমার মনে অন্য ফিলিংস ছিল এবং সেটা প্রথম দিন থেকে,
-কিন্তু আমি তো এটাই বুঝতে পারছি না এসব কথা তুই এখন কেন বলছিস আমাকে ,
-আমি জানি তুই বিবাহিত কিন্তু এই বিয়ের কোনো মূল্য তো তোর কাছে নেই আমি সব জানি সুহা ওই কাব্য তোকে জোর করে বিয়ে করছে,এই বিয়েতে তোর কোনো মত ছিল না,
আমি ওর কথা শুনে আরো একবার অবাক হলাম ,আমি চোঁখ মুখ শক্ত করে বলে উঠলাম,
-কে বলছে তোকে এই বিয়ের কোনো মূল্য নেই আমার কাছে,আর আমার বিয়ের কথা তুই জানলি কি করে,
-সেদিন তোর মায়ের সাথে বলা সব কথা আমি শুনেছি,তুই কাব্যকে ভালবাসিস না ও তোকে এই বিয়েটা করতে বাধ্য করেছে ,আমি জানতাম তুই কখনও কাব্যের মতো বদ রাগী বদ মেজাজি যার হাজারো মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল থাকে কখনই ভালবাসতে পারিস না ,ওর মতো একজনের সাথে তুই কখনই সুখে হবি না ,প্লিজ সুহা তুই আমার সাথে চল।
আমি ওর কথা শুনে বিস্ময় নিয়ে বলে উঠলাম ,
-মানে,কি বলতে চাইছিস তুই,
-মানে খুব সহজ সুহা,কাব্য কখনই তোকে ভালো রাখতে পারবে না,যে তোর সব স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে তোকে নিজের মত চালাতে চায় ,একটু ভুল করলে যে তোকে কঠিন কঠিন শাস্তি দেয়,তার সাথে তুই কিভাবে থাকবি,ও তোকে ভালবাসে না ও শুধু নিজের জেদের বসে তোকে বিয়ে করেছে ,নিজের জেদ ফুফিয়ে গেলে ও তোকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিবে,ও এরকমই ও কাউকে ভালবাসতেই জানে না শুধু অধিকার ফলাতে জানে ,ও অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করছ,ওর ওই সুন্দর চেহারার আড়ালে এক পৈচাশিক শয়তান লুকিয়ে আছে ,আমি আমার ভালবাসকে কখনই এভাবে অন্য কারো হাতের পুতুল হয়ে তাকতে দিব না,আমি তোকে আমার জীবনের থেকেও বেশী ভালবাসি সুহা,আমি তোকে কাব্যের থেকে অনেক অনেক বেশি ভালো রাখবো,তুই ওকে ছেড়ে আমার সাথে চল আমি তোকে ওর থেকে অনেক দূরে নিয়ে চলে যাবো,ও কখনই আমাদের খুঁজে পাবেনা,আমি তোকে বিয়ে করতে চাই সুহা,কাব্যের সাথে আমি তোকে আর মেনে নিতে পারছিনা,প্লিজ তুই আমাকে ফিরিয়ে দিস না,
নিলয়ে কথা শুনে আমি আশ্চার্য্য হয়ে গেলাম এসব কি পাগলের প্রলাব বকছে ও ,
উনার সম্পর্কে বাজে কথা বলায় আর আমাকে এরকম একটা কুপ্রস্তাব দেওয়ায় আমার ভীষন রাগ হলো আমার সামনে বসে আমার স্বামীকে আজে বাজে কথা বলছে,ওর সাহস কি করে হয় এসব বলার ,আমি রাগে অন্ধ হয়ে বলে উঠলাম,
-তুই ভাবলি কি করে এরকম একটা প্রস্তাবে আমি রাজি হবো,আমি তোর মতো এত নিচু মন মানসিকতার নই,কে বলেছে তোকে এ বিয়ের কোনো মূল্য আমার কাছে নেই আমার জীবনের সব থেকে বড় আর গুরুত্বপূর্ন সত্যি হচ্ছে আমার বিয়ে ,এটির মূল্য আমার কাছে অন্য যে কিছুর থেকে বেশী,তোর একটুও লজ্জা করছে না নিজের ভাইয়ের সম্পর্কে এত বাজে কথা বলতে,আমি তো শুধু তোর বন্ধু না তোর বড় ভাইয়ের স্ত্রী ,নিজের ভাইয়ের স্ত্রীকে এ কথা বলতে তোর বিবেকে বাঁধলো না,ছি: নিলয় !
আর উনার কথা কি বললি জেদের বসে আমাকে বিয়ে করেছেন ,আমি ও প্রথমে সেটাই ভেবেছিলাম,কিন্তু উনার সাথে থেকে আমি বুঝতে পেরেছি উনি জেদের বসে নয় ভালবাসার বসে আমাকে বিয়ে করেছে,
আর উনি আমার সাথে যাই করেন না কেন সব কিছুই উনার এই ভালবাসার বহিপ্রকাশ ,আর কি বললি উনার জেদ শেষ হয়ে গেলে আমাকে ছেড়ে দিবেন আরে আমার জন্য আমি বললে উনি দুনিয়া ছেড়ে দিতে পারেন কিন্তু আমাকে কখনই ছাড়বেন না ,
উনার যতই রাগ তাকোক না কেন উনি কিন্তু তোর মতো নিচু মানসিকতার নয় ,উনি রাগী হন বা বদ মেজেজী যাই হোন কেন আমার শুধু উনাকেই চাই,উনার সম্পর্কে আর কখন বাজে কথা বললে তোকে আমি ছেড়ে দিবো না
আমি ভুলে যাবো তুই আমার বন্ধু,আর ফারদার আমাকে এ ধরনের কু প্রস্তাব দিলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না বলেই সুহা নিলয়ে আর একটা কথা বলার ও সুযোগ না দিয়ে রেগেমেগে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে রিক্সায় উঠে পরলো বাসার উদ্দেশ্যে রাগে ওর সমস্ত শরীর কাঁপছে,
অন্যদিকে সুহা বেরিয়ে যাওয়ার পরেই নিলয় আয়েশি ভঙ্গিতে চেয়ারে বসে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠল,
-আমার কথা না মেনে অনেক বড় ভুল করলি সুহা,তোকে তো আমি নিজের করেই ছাড়বো!!
.
সুহা বাসায় এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলো কাব্য বাসায় আসার আগেই ও চলে এসেছে ,কাব্য যদি জানতে পারে তাহলে কি অঘটনটাই না ঘটবে ,ও বারবার নিষেধ করেছে নিলয়ের সাথে কথা না বলতে,সুহা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নিল আর কখনও কাব্যের কথার অবাধ্য হবে না,ও শূন্য মস্তিস্ক নিয়ে নিজের রুমের দিকে হাঁটা দিল ওর মাথা এখন ও ভন ভন করছে নিলয়ের বলা কথাগুলো ভেবে ,মানুষের চিন্তা ভাবনা এত নোংরা হতে পারে কি ভাবে সেটাই ভেবে পাচ্ছেনা ও,সেদিনের কাব্যের বলা কথা গুলো মনে পরছে বার বার ,ও
ঠিকিই বলেছিল,নিলয় ওকে বন্ধু ভাবে না বাজে নজরে ওকে দেখে ,এ কথা ভেবেও ওর আফসোস হলো শুধু শুধু ওর জন্য কাব্যের সাথে সেদিন জগড়া করল,
রুমের দরজা খুলে অবাক হয়ে গেল ও সমস্ত রুম ঘুটঘুটে অন্ধকার ও হাতড়ে হাতড়ে লাইট অন করল,
লাইট অন করেই ও সোফার দিকে তাকিয়ে আতংকে উঠলো ,গম্ভীর মুখ নিয়ে মাথা নিচু করে সোফায় কাব্য বসে রয়েছে,
ওকে দেখেই সুহার মন আর্তনাদ করে বলে উঠল,
‘হায় আল্লাহ আজ কি শুধু বাজে কিছুই ঘটবে আমার সাথে,উনি কখন বাসায় এলেন এখন উনাকে কি বলবো নিলয়ের কথা সব কি উনাকে বলে দিবো,
নিজের মনে ও ভেবেই চলছে ভয়ে ওর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে ,হঠাৎ কাব্যের কথায় ওর ধ্যান ভাংলো,
ভয়ানক গম্ভীর কন্ঠে কাব্য বলে উঠলো,
-চলে এলে যে ,রেস্টুরেন্টে বসে হাতে হাত ধরে করা প্রেম আলাপ এতো তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল!!!(চলবে)

#প্রিয়_অভিমান

পার্ট :২৪

লেখা : নিশাত সিদ্দিকা

কাব্যের এই মাএ বলা কথাটা শুনে সুহার অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো,
নিলয় ওর হাত ধরছে সেটা কাব্য জানলো কি করে ,
ও ধুক ধুক করা বুক নিয়ে কেঁপে বলে উঠলো,
-কি কি বলছো এই সব আমি তো শুধু ঘুরতে ,
সুহাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে কাব্য দাঁড়িয়ে গিয়ে সুহার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে বলে উঠল,
-কি ভেবেছিলে তুমি যা ইচ্ছা তাই করবে আর আমি কিচ্ছু জানতে পারবো না ,তোমাকে তো নিষেধ করেছিলাম শাড়ী পরে বাইরে বের না হতে ,শাড়ী পরে কেন বেরিয়েছো??আমার কথা অমান্য করার সাহস তুমি পেলে কোথায়,আর নিলয়ে সাথে কেন বাইরে গেলে তাও আমাকে না জানিয়ে, ঘরে বসে গল্প করে কি গল্প জমেছ না ,সেজন্যই কি বাইরে যাওয়া,কি ভেবেছিল আমি কিছু জানতে পারবো না,
সুহা কিছু না বলে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে চোঁখ দুটি জলে টলমল করছে ,হঠাৎ করে কাব্যের এমন অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্নের সম্মুখে পরে ও দিশেহারা হয়ে গেল,কি থেকে কি বলবে সব গুলিয়ে গেল,
ওকে এমন নিশ্চুপ হয়ে থাকতে দেখে কাব্য চিৎকার করে বলে উঠলো,
-কি হলো উওর দিচ্ছো না কেন ??স্পিক আউট ডেম ইট এন্ড আন্সার মি ??
ওর তিব্র চিৎকার ঘরময় বোমার মতো ফেটে পরলো,
সুহা চিৎকার শুনে ভয়ে কেঁপে উঠল, ও চোঁখ বন্ধ করে নিজের মাঝে সাহস যোগানোর চেষ্টা করলো ,মনে মনে
ঠিক করলো কাব্যকে ওর সব সত্যি জানতেই হবে ,
তারপর কাব্যের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
-তুমি আমাকে ভুল বুঝছো,
-ও ভুল বুঝছি তা বলতো কোনটা ভুল বুঝছি আমি ,তোমার শাড়ী পরে বাইরে যাওয়া নাকি আমাকে না জানিয়ে নিলয়ের সাথে বাইরে যাওয়া না রেস্টুরেন্টে হাতে হাত ধরে বসে গল্প করা কোনটা ভুল এক্সচুয়ালি কোনটা আমি মিথ্যে বা ভুল বলছি একটু বলবে প্লিজ,
কাব্যের এমন কড়া প্রশ্নে সুহা আমার থতমত খেয়ে গিয়ে বলে উঠল,
-আসলে সত্যিটা হচ্ছে ,বলেই কাব্যের দিকে তাকিয়ে থেমে গেল,
-আসলে সত্যিটা কি বলো সত্যিটাই তো আমি জানতে চাইছি বলেই ও সুহার দিকে এক পা এক পা করে এগুতে লাগল,
কাব্যের এমন গিয়ে আসা দেখে সুহা ভয় পেয়ে বড় একটা ঢুক গিলে পিছনে পিছাতে লাগল ,ওর মুখ দিয়ে আর কোন কথায় বের হলো না শুধু চোঁখের দৃষ্টিতে ছিল অস্বাভাবিক ভয়,
কাব্য ক্রমাগত ওর দিকে এগিয়ে আসতে লাগল আর ও পিছাতে পিছাতে হঠাৎ দেয়ালের সাথে গিয়ে পিঠ ঠেকলো,সেই সাথে কাব্য ওর একদম কাছে চলে আসলো,ও ওর এতো কাছে এসে দাঁড়াল যে সুহা কাব্যের বুকের ধুকপুকানি শব্দ স্পস্ট শুনতে পাচ্ছিল ,সুহা সাথে সাথে চোঁখ বন্ধ করে চোঁখ মুখ খিচকে দাঁড়িয়ে রইল ,ওর হার্টবিট ছুটছে অস্বাভাবিক গতিতে ,
কাব্য এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে ওর মুখের কাছে মুখ নিয়ে স্লো ভয়েজে বলতে লাগল ,-কি হলো বলছো না কেন সত্যিটা কি বলো ,আমি সত্যিটা শুনতে চাই ,
সুহা কিছু না বলে ওভাবেই দাঁড়িয়ে রইল ওর মনে হচ্ছে ও আর এ পৃথিবীতে নেই অন্য কোনো জগতে চলে গেছে কেমন একটা ঘোর লেগে গেল সমস্ত শরীর মন জোরে ,
সুহাকে এভাবে দেখে কাব্যের ভীষন হাসি পেল ও কোনো মতে হাসি চাপা দিয়ে সুহার কাছে থেকে সরে গিয়ে বলে উঠল,
-আমার জন্য নিলয়ের সাথে ভয়ংকর রনো মূর্তি হয়ে জগড়া করে এলে আর এখন আমার সামনে এসে ভেজা বেড়াল হয়ে গেলে ,
কাব্যের কথা শুনে সুহার সম্মতি ফিরে ও ছট করে চোঁখ খুলে বিস্ময় ওর দিকে তাকিয়ে রইল,দু চোঁখের দৃষ্টিতে হাজারো প্রশ্ন খেলা করছে ,
সুহার এভাবে তাকানো দেখে কাব্য একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
-আমাকে খারাপ বলায় নিলয়ে ইচ্ছে মতো জেরে দিয়ে আসলে ,আর আমার সামনে সাহস করে সব সত্যিটা বলতে পারছো না ,কেন সুহা আমাকে কেন তুমি এতো ভয় পাও ,রেস্টুরেন্টে যখন তুমি আমার হয়ে নিলয়ে সাথে জগড়া করছিলে তখন তোমার চোঁখে মুখে আমার জন্য শুধু শ্রদ্ধা আর ভালবাসা ছিল,এটাই আমি চেয়েছি আর সারা জীবন এটাই দেখতে চাই ,আমাকে নিয়ে তোমার মনে কোনো ভয় বা আতংক আমি দেখতে চাই না সুহা।
সুহা তখন ও বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে কাব্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সমস্ত কিছু ওর মাথার উপর দিয়ে যেতে লাগল কিছুই বুঝতে পারছে না ওর মাথায় শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগল,কাব্য কি করে এসব কিছু জানতে পারলো,
কাব্য সুহার চোঁখে চোঁখ রেখে আবার বলতে লাগল,
-জানো সুহা তুমি আমাকে ভালবেসে ফেলেছো সেটা জানতে পেরে আমার এতো আনন্দ হচ্ছি মনে হচ্ছিল পৃথিবীতে আমার থেকে সুখী মানুষ আর কেউ নেই ,
সেই খুশি যখন ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরছিলাম এক্সিডেন্ট হতে হতে বেঁচে গেছি,যখন একটা ট্রাক আমার গাড়ীর সামনে চলে এসেছিল আর আমি গাড়ী কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না ভেবেছিলাম আজই বোধহয় আমার শেষ দিন ,চোঁখের সামনে তোমার চেহারাটা ভেসে উঠলো আজই জানতে পারলাম তোমার ভালবাসার কথা আর আজই কিনা পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে আমার নিয়তি কি তবে এভাবে লেখা হয়েছে ,কথা বলতে বলতে ওর চোঁখ দিয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পরলো,
কাব্যের এক্সিডেন্টের কথা শুনে সুহার বুকের ভেতরটা মুচর দিয়ে উঠলো,ওর ও চোঁখ দিয়ে অজোর ধারায় জল ঝরছে কিন্তু সেদিকে ওর কোনো খেয়াল নেই ,ও শুধু মন্ত্রমুগ্ধের মতো কাব্যের বলা কথা গুলো শুনতে লাগল ,
কাব্য হাতের উল্টো পিট দিয়ে তার চোঁখের জলটা মুছে একটা হাসি দিয়ে আবার বলতে লাগলো,
-কিন্তু চোঁখের সামনে নিজের মৃত্যু দেখে আমার একটুও ভয় বা আফসোস হলো না,শুধু মনে হলো মনে গেলেও আর কোনো দু:খ নেই কারন আমি আমার ভালবাসাকে জয় করতে পেরেছি,আমি জানতে পেরে গেছি আমার ভালবাসা বিফলে যায়নি ,আমি পেরেছি তোমার মনে নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে ,আমি হাসি মুখে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু আল্লাহ তালার অশেষ মেহেরবানীতে ট্রাকটা আমার গাড়ীর সাইড দিয়ে চলে যায়,
কাব্যের কথাটা শেষ হওয়া মাএ সুহা দৌড়ে গিয়ে জাপটে ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে উঠলো,
-খুব না হাসি মুখে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলে ,এতোই সোজা না কি আমাকে ছেড়ে যাওয়া ,স্বার্থ পরের মতো কথা বলছো তুমি না থাকলে আমার কি হতো আমি কি নিয়ে বাঁচতাম এই বোকা ভীতু মেয়েটাকে কে ভালবাসা,যত্ন আর মিষ্টি মিষ্টি শাসন দিয়ে আগলে রাখতো,জানি না কখন কিভাবে তোমাকে এতোটা ভালবেসে ফেললাম ,তোমাকে ছাড়া এখন আমি আমার লাইফের একটা মুহূর্তও ভাবতে পারিনা,ভালবাসি তোমাকে খুব খুব ভালবাসি,
তোমার মুখে এক্সিডেন্টের কথা শুনে আমার নি:শ্বাস আটকে আসছিল,তুমি কত সহজে বলে ফেললে মরে গেলে কোনো দু:খ নেই ,তোমার একবার ও আমার কথা মনে হলো না তোমাকে ছাড়া তোমার সুহা রানীর কি হবে বলেই ও কাব্যের বুক থেকে মাথা তুলে ওর বুকে কিল ঘুষি মারতে মারতে বলতে লাগল,
-তুমি খুব বাজে খুব পচা খুব খারাপ স্বার্থ পরের মতো আমাকে একা ফেলে চলে যাওয়ার প্ল্যান করছিলে,
সুহার এমন ছেলে মানুষি কান্ড দেখে কাব্য হেসে বলতে লাগল ,
-আরে আরে করছো কি থামো !!তখন তো মরিনি কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে সত্যি মরে যাবো ,বলেই সুহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওকে শান্ত করতে লাগল ,-আমি তো খারাপই তাই তো এতো ভালো আর লক্ষী একটা বৌ পেয়েছি,
সুহা এক নাগারে কেঁদেই চলছে,
কাব্য সুহাকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগল,
-এতো কাঁদছো কেন ??কান্না থামাও আমি তো তোমার সাথেই রয়েছি,আমি তোমাকে ছেড়ে এতো সহজে কোথাও যাচ্ছি না সুহারানী,আমি না থাকলে তোমার ভুলগুলোর জন্য কঠিন কঠিন শাস্তি কে দিবে তোমাকে,শাড়ী পরে যে বাইরে গিয়েছিল তার শাস্তি তো বাকি রয়েছে,
কাব্যের কথা শুনে সুহা বাস্তবে ফিরলো ও এতোক্ষন একটা ঘোরের মাঝেছিল ও নিজেকে ওর বুক থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চোঁখের পানি মুছে কপাল কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,
-শাস্তি টাস্তি পরে হবে আগে এটা বলো নিলয়ের সাথে আমার বলা কথা গুলো তুমি কোথা থেকে শুনলে ,
সুহার কথা শুনে কাব্য মৃদু হেসে ওকে হাত গ
দিয়ে ইশারা করে রুমের কোনার দিকে দেখিয়ে বলল,
-এই যে এটার মাধ্যমে,
-এটা কি?
-সিসি ক্যামেরা,তুমি যখন রুমের মধ্যে রেডি হচ্ছিলে তখন আমি অফিসে বসে দেখছিলাম তুমি কোথাও যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছো আর সেটা শাড়ী পরে ,আমার ভীষন রাগ হলো একে তো আমাকে জানাও নি তার উপর শাড়ী পরে যাচ্ছো ,আমি রেগে অফিস থেকে বাসায় চলে আসছিলাম কিন্তু বাসার কাছে এসে দেখি তুমি নিলয়ে সাথে গাড়ী করে কোথা ও যাচ্ছো তাই আমি বাসায় না গিয়ে তোমাদের ফলো করা শুরু করি,
-ওয়েট ওয়েট এক সেকেন্ড আমাদের রুমের মধ্যে সিসি ক্যামেরা কবে থেকে আসলো,এটা কি আগেই ছিল??
-না আগে ছিল না আমি অফিস জয়িন করার পরের দিন লাগিয়েছি,তোমাকে মা দেখে আমি অফিসে থাকতে পারছিলাম না ,তাই তোমাকে একান্তে দেখার জন্য লাগিয়েছিলাম,
-তারপর
-তারপর আর কি ও তোমাকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এ গেল আমি ও গেলাম পিছু পিছু ,সেখানে ও তোমাকে নিয়ে একটা কেবিনে ঢুকলো আর আমি গেলাম রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কেবিনে সিসি ক্যামেরা আছে কিনা উনি বলেন আছে আমি তোমাদের কেবিনের কি হচ্ছে দেখতে চাইলাম কিন্তু উনি সাফ মানা করে দিলেন তারপর উনাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে উনাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে উনার রুমে বসে তোমাদের সব কথা শুনতে লাগলাম ,ও যখন তোমার হাত ধরেছিল আর তোমাকে ওর সাথে পালিয়ে যেতে বলেছিল বিশ্বাস করো আমার এত মাথা গরম হয়েছিল ওকে তখনই খুন করে ফেলতাম কিন্তু তোমার বলা কথাগুলো শুনে আমার সমস্ত রাগ চলে গেল,তোমাকে বের হতে দেখে তোমার আগেই আমি সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম,
কাব্যের কথা শুনে সুহা চোঁখ গুল গুল করে তাকিয়ে বিস্ময় নিয়ে বলে উঠল,
-ওহ মাই গড তোমার এতো বুদ্ধি!!
-হু বুদ্ধিই তো তোমার গর্ব হওয়া উচিত তোমার হাজব্যান্ডের বুদ্ধি নিয়ে সুহারানী,
বাট এখন নিচে চলো একটা কাজ এখনও বাকি আছে
-কি কাজ??
-নিচে চলো দেখতেই পারবে,
বলেই কাব্য সুহাকে নিয়ে নিচে চলে এলো ,নিচে আসতেই দেখলো নিলয় শিস বাজিয়ে সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকছে ,ওকে দেখে কাব্য সুহাকে চোঁখ দিয়ে এখানেই দাড়িয়ে তাকার ইশারা করে নিলয়ের দিকে এগিয়ে গেল,
কাব্যের এমন রুপ দেখে সুহা ভয় পেয়ে গেল আজ যে নিলয়ের রক্ষা নেই সেটা ও মনে মনে আন্দাজ করে নিল,
কাব্য গিয়ে নিলয়ের সামনে দাঁড়ালো ,ওকে সামনে দেখে নিলয় থমকে দাঁড়ালো সাথে সাথে কাব্য ওর শার্টের কলার ধরে টেনে নিয়ে এসে নাক বরাবর এক ঘুষি মারলো ,ঘুষি খেয়ে নিলয় ছিটকে গিয়ে ফ্লোরে পরলো,হঠাৎ এমন হওয়ায় ও হতবাক হয়ে কাব্যের দিকে তাকিয়ে রইলো,
কাব্যের মা আর ভাবি দৌড়ে ওর কাছে এলো এবং ওর মা বলতে লাগলেন,-কি হয়েছে কাব্য ওকে এভাবে মারছিস কেন??
কাব্য রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে উঠল,-তুমি জানো না মা ও কি করেছে ,এই শাস্তিটা ওর প্রাপ ওকে এটা পেতেই হবে,বলেই আবার নিলয়ে কাছে গিয়ে ওকে টেনে তুলে কষে এক তাপ্পড় মেরে বলে উঠল ,
-অনেক দিন ধরে তোর এসব সহ্য করছি আর নয়,
তাপ্পড় খেয়ে নিলয় গালে হাত দিয়ে কি না জানার ভান করে বলে উঠল,
-ব্রো কি হয়েছে তুমি আমাকে মারছো কেন??আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,
নিলয়ে এমন বেচারা ভাব দেখে কাব্যের রাগ আরো বেড়ে গেল ও ওকে এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করলো আর বলতে লাগল,
-কিছুই বুঝতে পারছিস না তাই না ,ওয়েট আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি তোর এত বড় স্পর্ধা হলো কি করে যে তুই আমার নামে বাজে কথা বলে আমার স্ত্রী কে তোর সাথে পালিয়ে যাওয়ার প্রপোজাল দিস,ওর হাত ধরার সাহস হলো কি করে তো,
কাব্যের কথা শুনে ওর মা আর ভাবি বিস্ময় নিয়ে একবার সুহার দিকে তাকিয়ে আবার কাব্যের দিকে তাকালো ,
কাব্য ইচ্ছে মতো ওকে মারছে আর কথা বলছে ,ওর কাছে মার খেয়ে নিলয় ও পাল্টা আঘাত করতে চাইলো কিন্তু ওর সাথে পেরে উঠলো না,
কাব্য মারতে মারতে বলতে লাগলো,
-আমি মেয়েদের জীবন নষ্ট করেছি তাই না তাহলে তুই কি করেছি ,আমি তো শুধু ওদের সাথে রিলেশন করেছি কখনও ঘনিষ্ট হইনি কারো সাথে কিন্তু তুই কি করেছি একের পর এক মেয়ের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করে ছেড়ে দিয়েছিস ,তুই কি ভেবেছিস আমি কিছু জানি না তুই বিদেশ থেকে করছিস না করছিস,আরে আমি তো সুহাকে দেখার আগে ওকে ভালবাসার আগে মেয়েদের সাথে টাইম পাস করেছি কিন্তু যবে থেকে ওকে ভালবেসেছি ভুলেও কোনো মেয়ের দিকে অন্য নজরে তাকাই নি ,শুধু ওকেই ভালবেসেছি,কিন্তু তুই ওকে ভালবাসার পরও অন্য মেয়েদের সাথে রিলেশনে গিয়েছিস,কি ভেবেছিল বিদেশে ইচ্ছে মতো মজা মাস্তি করে এসে সুহার মতো পবিএ একটা মেয়েকে বিয়ে করে নিবি,,তুই নিজে ও জানিস না তুই এই কাব্য মেহরাবের কোথায় হাত দিয়েছিস,
মারতে মারতে ওকে রক্তাক্ত করে ফেললো তারপর নিলয় দু হাত জোর করে ওর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলো,
কাব্যের মাও এসে ওকে থামতে বললেন,কাব্য থেমে চোঁখ মুখ শক্ত করে বলে উঠলো ,-মা ওকে বলো এক্ষুনি এখান থেকে চলে যেতে আর কখন যেন ওকে আমার বাড়ীর আশাপাশে না দেখি ,যদি দেখি তাহলে সেদিনই হবে ওর শেষ দিন,
কাব্যের মা নিলয়ের কাছে গিয়ে রেগে বলে উঠলেন,
-তোকে নিজের ছেলের মতো ভালবাসতাম আর তুই কিনা এমন একটা কাজ করতে পারলি ,ছি!!নিলয় তোকে চিনতে আমার ভুল করেছিলাম,এক্ষুনি তুই এখান থেকে চলে যা,
উনার বলা কথা শুনে নিলয় হাত দিয়ে নিজের ঠোঁটের রক্ত মুছে সুহার দিকে একবার তাকিয়ে দ্রুত পায়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেল।
.
রাতে কাব্য আর সুহা বেলকুনিতে দাড়িয়ে আছে,চারিদিকে মৃদু মন্দ বাতাস বইছে,চাঁদের আলোয় চেয়ে গেছে চারিপাশ সেই সাথে দুজন মানুষ তাদের বুকে একে অপরের জন্য পবিএ ভালবাসা নিয়ে একে অপরকে জরিয়ে রয়েছে,সব মিলিয়ে পরিবেশটা হয়ে উঠেছে এক প্রেমময় স্বর্গপুরি, কাব্য পেছন দিক থেকে সুহাকে জরিয়ে ধরে ওর চুলে নাক ডুবিয়ে রয়েছে ,
সুহা বিরক্তি নিয়ে বার বার বলছে ,-আহ কি করছো ছাড়ো না,সুরসুরি লাগছে তো,
-সুহারানী তোমার চুলে এতো মিষ্টি ঘ্রান কেন বলতো
-ওটা আমার চুলের ঘ্রান না শ্যাম্পুর ঘ্রান
-আরে দূর শ্যাম্পুর ঘ্রান এতো মিষ্টি হয় নাকি এটা তোমার চুলে পরেছে তাই এমন মিষ্টি ঘ্রান ছাড়াচ্ছে বুঝলে সুহারানী ,
-হুম বুঝলাম এবার তো ছাড়ো
-না ছাড়বো না আগে বলো,
-কি বলবো ?
-কি ভাবে হলো আই মিন আমার প্রতি তোমার ভালো বাসাটা কিভাবে হলো,আর সেটা কখন থেকে হলো
-দূর বাবা জানি না হয়ে গেছে,
সুহার কথা শুনে কাব্য সুহাকে ছেড়ে পাজো কোলে তুলে নিয়ে বলে উঠল,
-হয়েই যখন গেছে সুহারানী,তাহলে আমাদের প্রিনসেস কে পৃথিবীতে আনার ব্যবস্তা করে ফেলি কি বলে,
ওর কথা শুনে লজ্জায় সুহার মুখ লাল হয়ে গেল ও লজ্জা পেয়ে ওর বুকে মুখ লুকালো।(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here