#প্রিয়কাহন❤️,পর্ব:২৪-পরিশিষ্ট পাতা
#লেখিকা ‘কায়ানাত আফরিন’
বধূবেশে বসে আছে প্রিয়তা। তাও খুবই সাধারণ সাজে। একটু আগে প্রিয়তার মা এসে আলমারি থেকে একজোড়া সোনার বালা প্রিয়তার হাতে পড়িয়ে দিলো। বালাজোড়া প্রিয়তার মরহুম দাদাজান প্রিয়তার হাতে বিয়ের দিন পড়িয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠাতে বলেছিলো। আজ হয়তো সেই কাঙ্ক্ষিত দিন। প্রিয়তা দেখলো তার মাকে, চোখে তার চিকচিক করছে পানি। তিনি বললেন,
‘ খুব সুন্দর লাগছে তোকে। কারও যেন নজর না পড়ে আমার চাঁদ মেয়েটার ওপর।’
তুশি রুশি খাটের কোণে চকলেট খাচ্ছে আরামসে। একটু পর পর বারান্দায় দৌড়ে দেখছে বরপক্ষের লোকজন আসছে কিনা। নিচে গিজগিজ করছে মানুষ। বিয়ে ঘটা করে হচ্ছে না। তবে দুদিনের মধ্যেই সব আত্মীয়স্বজন কে দাওয়াত দিয়ে এনেছে এখানে। তাই আয়োজন নেহাৎ ছোটো নয়। প্রিয়তা বললো,
‘ মা এই দুদিনে তোমরা এত সব করলে আর আমায় জানানোর প্রয়োজন বোধ করলে না।’
‘ চেয়েছিলাম জানাতে। অভী তোকে বলতে দেয়নি। সেদিন রাতে হুট করে ওর বাবা ফোন করলো। বললো, অভী নাকি তোকে বিয়ে করে যাবে ইউএসএ। আর এ মাসেই তোকে ওর সাথে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে। যদি না পারে, তবে পরে নিয়ে যাবে। কিন্তু তোকে বিয়ে না করে যাবে না। তোর বাবা-বড় আব্বু দুজনকেই একটু অবাক দেখেছিলাম অভীর এমন কথায়। তারা জিজ্ঞেস করেছিলো এমন হলোটা কি যে অভী এমন কথা বললো। পরে অবশ্য তারা কি বললো কে জানে। তোর বাবাও রাজি হয়ে গেলো এমন কথায়। তারপর তো দেখলিই কি হুলস্থুল অবস্থা।’
প্রিয়তা চুপচাপ শুনে গেলো মায়ের কথা। মায়ের ছোটো মন অভীর এ আচরণ ধরতে না পারলেও প্রিয়তা ঠিকই স্পষ্ট বুঝতে পারলো অভীর এমন করার কারন। আরও একবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেদিন শেষ বিকেলে অভীর নিবিড় মুখ। শান্ত অথচ অস্থিরতায় রাঙানো সেই চোখের মায়াবী খেলা। হৈ হুল্লোড় পড়লো নিচে। আগমন হলো কাঙ্ক্ষিত লোকবর্গের। প্রিয়তার ডাক পড়বে কিছুক্ষণ পর। ভাবতেই মন ক্রমশ চঞ্চল হয়ে পড়লো। আচ্ছা প্রিয়তাকে এই বেশে দেখে অভীর প্রতিক্রিয়া মোহনীয় হবে তো? হয়তো হবে, অভীর কথা ভাবতেই প্রিয়তার মুখে ফুটলো আনন্দের হাসি।
____________________
আকাশ এখন নিকষ আঁধার৷ আবহাওয়ায় কেমন যেন গুমোট ভাব। প্রিয়তা এখন বসে আছে অভীর সাজানো রুমে। ফুল দিয়ে সুন্দর করে পরিপাটি করা৷ কিছুক্ষণ আগেই অভীর মা এখানে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছে ওকে।
বিয়ে পড়ানোর পুরো সময়টাই প্রিয়তার কেটে গিয়েছিলো ঘোরে। যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না পার্থিব কোনোকিছু। কবুল বলার সময় গলায় স্বর কোমল হয়ে এসেছিলো। তবে সে পেরেছিলো। পরিশেষে তাকিয়েছিলো অভীর দিকে। সে নিতান্তই চুপচাপ।পান্জাবী পাগড়ি পড়া বরবেশে তাকে যেন লাগছে অতুলনীয়। মুখে প্রশান্তির ছটাক। বিয়ের পর্ব সারার পর মিষ্টি মুখ করা হলো সবার। বিদায় নিয়ে আসার সময় চোখে জমলো পানি। ব্যাপারটা এতটা তৎক্ষনাৎ না ঘটলেও পারতো। কিন্তু এতে যে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হতো অভীর জন্য! তাই সে হু হু করে কাঁদল না। অভী দাঁড়ালো প্রিয়তার বাবার সামনে। বললো,
‘ আসি আঙ্কেল!’
‘ আঙ্কেল না,,বাবা বলে ডাকবে!’
অভী হাসলো আলতো। প্রিয়তার বাবা মেয়েকে এলপলক দেখে বলেছিলেন,
‘ আমার মেয়েটা কেমন তা তো জানোই। একটু অগোছালো, তবে আগলে রাখতে জানলে খুব সুন্দর করে গড়ে তুলবে তোমাদের সংসার। ওকে সামলে রাখতে পারবে তো?’
অভী প্রিয়তার মুখের দিকে তাকালো। গায়ে ভারী শাড়ি জড়ানো হলেও তৎক্ষনাৎ প্রস্তুতির জন্য মুখে ভারি সাজ নেই। এতেই নিরুপমা লাগছে তাকে। অভী আশ্বস্ত করলো প্রিয়তার বাবাকে। শক্ত করে প্রিয়তার রাঙা হাত আঁকড়ে ধরলো। বললো,
‘ আপনার অগোছালো মেয়েকে সামলে রাখার দায়িত্ব আমার বাবা৷ সে এখানে যেভাবে রাজকন্যার মতো থেকেছে, আমার কাছে রাণীর মতো থাকবে। আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না।’
অন্যরকম টান ছিলো অভীর কথায়। প্রিয়তার তা ভালোলাগলো। বাবার মুখে প্রশান্তির হাসি। তুশি রুশি কেঁদেছিলো খুব। অদ্রি রুদ্রের চোখমুখও কেমন যেন লাল। হাজার হোক- ওদের সাথেই তো প্রিয়তার বেড়ে ওঠা। প্রিয়তা জড়িয়ে ধরেছিলো দুজনকে। বলেছিলো,
‘ খবরদার উল্টাপাল্টা কাজ করবি না, দু’জনেই দুজনের খেয়াল রাখবি। হয়তো আগের মতো তোদরে সাথে সেই মুহূর্তগুলো পাবো না- কিন্তু তোদের সাথে সেই সময়গুলো কখনোই ভুলবো না রে!’
রুদ্র নিজেকে সামলে নিলেও কেঁদে দিলো অদ্রি। নাক টেনে বললো,
‘ তোকেও আমরা ভালোবাসি প্রিয়ু, শুন অভী ভাইয়া রাগারাগি করলে আমায় বলবি, দুলাভাই তো কি হয়েছে! শালার টেংরি ছুটিয়ে ফেলবো যদি আমার জানুর সাথে কিছু করে। ভার্জিনিয়া গিয়ে তাকে মা’র্ডা’র করে তোকে দ্বিতীয় বিয়ে করাবো। ‘
এর মধ্যেই হেসে ফেলেছিলো সে। হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে ধ্যান কাটলো প্রিয়তার। অভী এসে পড়েছে। মুখে শান্ত স্নিগ্ধ ভাব। প্রিয়তা জড়োসড়ো হলো। দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো বিছানাতে। অভী হেসে দিলো এমন কাজে। এগিয়ে এলো সে। দুরত্ব ঘুচালো। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো,
‘ এখনও ভয় পাও আমায়?’
কথা বলার সময় অভীর ঠোঁট ছুঁয়ে যাচ্ছিলো প্রিয়তার কানের লতি। প্রিয়তা কেঁপে উঠলো। মাথা নাড়িয়ে বললো, ‘না!’ অভী তা দেখে পুনরুপি বললো,
‘ এবার খুশি না আমায় কাছে পেয়ে? কত কিছুই তো বলছিলে সেদিন, এখন পার্মানেন্টলি আমি তোমার। এত খুশি সামলে রাখতে পারবে তো?’
প্রিয়তা হাসফাঁস করছিলো লজ্জায়। প্রেমিক অভী যখন বর হয়ে এভাবে আবেশি গলায় কথা বলছে তখন একটু হলেও টনক নড়ছিলো। অভী উঠলো। হাত ধরে প্রিয়তাকে নিয়ে গেলো বারান্দায়। রাত নেমেছে। লেন এখন নীরব। আর অভীদের বাসার সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো বাড়ির সামনের চিকন গলিটি। পথের ধারে গাছগুলোতেও ফুল ফুটলে যখন বারান্দা দিয়ে যদি হাতছানি দেওয়া যায় তাহলে হৃদয় হয়ে উঠে চঞ্চল, জেগে উঠে তা কাছে পাওয়ার তৃষ্ণা। অভী ভাবলো এইতো আর কিছুদিন, তারপর এই সুন্দর নগরী ছেড়ে তাদের হয়তো চলে যেতে হবে বহুদূরে, গড়ে তুলবে নতুন সংসার। প্রিয়তা হয়তো একটু টালমাতাল হবে, হিমশিম খাবে ভার্জিনিয়ার নতুন পরিবেশে – তবে ঠিকই তাকে গুছিয়ে নিবে অভী। সে বললো,
‘ প্রিয়তা! ‘
‘ হুম?’
‘ আমরা এখান থেকে চলে গেলে তোমার এখানকার কথা মনে পড়বে না?’
‘ হুম পড়বে। তাই বলে অতীতকে আঁকড়ে রাখা যায়? সেগুলো সবই স্মৃতি। এইযে দেখুন, আপনাকে বিয়ে করবো না বলে কত কি কান্ডই না বাধিয়েছিলাম। আর আজ আমি নিজে সজ্ঞানে আপনাকে মেনে নিয়েছি। ‘
শেষ কথাটা বলে প্রিয়তা থমকালো। তাকালো অভীর দিকে। ছেলেটার চোখে দুষ্টু চাউনি৷ খেলা করছে অন্যকিছু্। কাছে টানলো সে। বললো,
‘ আমি কিন্তু দেখতে চাই কতটা মেনে নিয়েছো!’
প্রিয়তার মুখ হয়ে উঠলো লাল। গাছে থেকে ফুলের ঘ্রাণ আসছে। সাধারণ, অথচ মাতাল করা সেই ঘ্রাণ। হাওয়ার তালে সাড়া দেওয়া প্রিয়তার শাড়ির আচল যখন উড়ে চললো অভী একটু হলেও দুর্বল হলো। সে নিজের ঠোঁট নামিয়ে এনে মিশালো সেই তপ্ত ঠোঁটে আচমকা। প্রিয়তা প্রথম দফা থমকে থাকলেও পরে আকঁড়ে ধরলো অভীর চুল। হঠাৎ সরে গেলো। অভীর ঠোঁটে আরও একদফা হাসি এলো প্রিয়তার এমন লালমিশ্রিত মুখের অকৃত্রিম অবয়ব দেখে। হাত বাড়িয়ে বললো,
‘ বুকে আসো প্লিজ! আজ রাতটা তোমায় বুকে জড়িয়েই কাটাবো প্রিয়তা!’
________________
গতকালের ঝড়ো হাওয়ার পর সকালে উঠেছে রোদ। বৃষ্টি না হওয়ার কারনে পুরো পথেই শুকনো পাতার বাহার। আজ শেষ সকাল চট্টগ্রাম । ফ্লাইট আগামীকাল ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। তাই আজই গাড়ি নিয়ে ঢাকায় রওনা হতে হবে। প্রিয়তা ঘুম থেকে উঠলো। মুখ হয়ে আছে তৈলাক্ত। অগোছালো চুলগুলো খোপা বাঁধলো। অভীর জন্য রাতে ভালোমতো খোঁপাও করতে পারে না সে। পাশ ফিরলো প্রিয়তা। অভীকে দেখে হাসলো। সে ঘুমুচ্ছে। চোখ দুটো বন্ধ। গতকাল বন্ধুদের সাথে শহর চষে বেড়িয়ে এসেছে রাত তিনটা নাগাদ। সেই যে কি বকা নুরুল সাহেব। বলে বউ রেখে এখনই রাত দুপুরে ঘুরে বেড়ায়, পররাষ্ট্রে গিয়ে পাখনা গজাবে না তার নিশ্চয়তা কি। অভীর মা পরন্ত সামলিয়েছিলেন তার স্বামীকে।
অভী ক্লান্ত ছিলো। বিছানায় ধপাস করে শুয়ে আহ্লাদী কন্ঠে বলেছিলো,
‘ ঘুম আসছে না প্রিয়তা!’
প্রিয়তা না হেসে পারেনি। এই ছেলে আসলেই রষকষহীন। প্রিয়তার কথাই ঠিক। অন্যকেউ হলে সরাসরি মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে বলতো। আর বিগত একমাসে অভী কোনো কিছুই প্রিয়তার কাছ সরাসরি চায়নি, বরং সংকোচ করেছে। এখনও এমন। অভীর ঘুমন্ত মুখ দেখে প্রিয়তার এগিয়ে গেলো এখন ভাবনা ছেড়ে। তপ্ত নরম কন্ঠে বললো,
‘ এইযে উঠুন। আজ না চলে যাবো? কাজ আছে তো?”
অভী নড়েচড়ে উঠলো৷ বললো,
‘ ঘুম আসছে মা, ঘুমাতে দাও।’
প্রিয়তা ভ্রু কুঁচকালো। এই লোকের আসলেই কোনো ঠিক নেই। ধাক্কা দিয়ে বললো,
‘ উঠবেন নাকি সত্যি সত্যি আপনার মাকে ডেকে এনে ধমক খেয়ে উঠবেন?’
অভী উঠলো। ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললো,
‘ আমার মা তোমার মতো চিটচিটে না যে আজও তার ছেলেকে ধমক দিবে।’
প্রিয়তা রেগে গেলো তৎক্ষনাৎ। উঠে চলে যেতে নিলে তার হাত টেনে তাকে বিছানায় চেপে ধরলো অভী৷ বললো,
‘ রাগ টাগ করে লাভ নেই। আমি কিন্তু রাগ ভাঙাবো না বিয়ের আগের মতো৷ এখন আমি গোসল করতে গেলাম – তুমি জলদি আমার পাসপোর্ট আর বাকি সব গুছিয়ে নাও।’
.
প্রিয়তার বাবা বাড়ির লোকজন এসেছে আজ। দাদী আচার পাঠিয়েছে। ভালো করে তা মুড়িয়ে দিচ্ছে অদ্রি যাতে তেল না পড়ে যায়৷ প্রিয়তার শ্বাশুড়ি আর প্রিয়তা মিলে বাকি সবকিছু গুছগাছ করছে। তিনি এবার বললেন,
‘ শুনো মা, নতুন পরিবেশ – একটু সমস্যা হতে পারে৷ ওগুলো মানিয়ে নিও কেমন? আমি যতটুকু পারি এখান থেকে তো সব গুছগাছ করেই দিয়েছি তবুও তোমরা দুজন সবেমাত্র বিয়ে করলে, সব সামলাতে পারবে কি না কে জানে। কোনো সমস্যা হলে আমায় জানাবে কেমন?’
‘ আচ্ছা ঠিকাছে।’
ঘনিয়ে এলো প্রহর। গাড়ি দিয়ে এয়ারপোর্টে দিয়ে আসবে অন্তু ভাইয়া। সে সিটি বাজাচ্ছে আর বলছে,
‘ কিরে অভী আসবি না? দেরি হয়ে যাবে কিন্তু৷ ‘
প্রিয়তা গাড়িতে ওঠার আগে দেখে নিলো গোটা পরিবারকে। কান্না আসছে ভীষণ৷ মাকে জড়িয়ে থাকলো সে। সেই সাথে চাচী আর ফুপিকেও। প্রিয়তার বাবা আরও কিছু পরামর্শ দিলেন অভীকে। তারপর অভী বললো,
‘ প্রিয়তা চলো।’
গাড়িতে উঠলো তারা। ধীরে ধীরে তারা পেছনে মিলিয়ে গেলো। রোদ ক্রমশ নরম হয়ে এসেছে। পাখির কুচকাওয়াজে মুখরিত পরিবেশ। জানান দিচ্ছে সময়টা ওদের অন্তিম সময় চট্টগ্রামের। সেই যে ভার্সিটিতে কাটানো মুহূর্ত, নবীনবরণ, মোড়ের ফুচকা, কাটা পাহাড়ের পথ, মেজবানি মাংস, বলাকা লেক, গুড়ের চা সবই স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করবে। অভী হঠাৎ বললো,
‘ গাড়ি থামা অন্তু।’
সে থামালো। অভী বললো,
‘ আমি আর প্রিয়তা নামছি একটু। তুই এখানে থাক।’
অভী তারপর প্রিয়তাকে নিয়ে সেই শিউলিগাছটির সামনে দাঁড়ালো। বললো,
‘ মনে আছে?’
‘ হুম?’ প্রিয়তার মৃদু প্রতিউত্তর।
অন্তু তাদের দৃষ্টিসীমা থেকে তখন বাইরে। রোদ গাছের ফাঁকফোকর দিয়ে প্রিয়তার গায়ে যখন পড়ছিলো অপার্থিব লাগছিলো তাকে। অভী হঠাৎ কোনো কিছু না ভেবে প্রিয়তার পায়ের কাছে বসে একজোড়া পায়েল পড়িয়ে দিলো। তপ্ত কন্ঠে বললো,
‘ ভেবেছিলাম ভার্জিনিয়ার মাটিতে পা দিয়েই তোমায় পড়াবো। তবে পারলাম না। এখনই পড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে হলো৷ ‘
অভীর ঠোঁটের হাসি প্রাণবন্ত। এই ছেলেটাকে ভীষণ ভালোবাসে প্রিয়তা। অভী প্রিয়তার দিকে নিষ্পলক চেয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। অতঃপর কাছে টেনে নিলো। মধ্যকার দূরত্ব সরালো। কোমড় বলিষ্ঠ হাতের স্পর্শে কেপে উঠলো প্রিয়তা। দ্বিধা নিয়ে আশপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই। না থাকাটা স্বাভাবিক এখন। তবুও প্রিয়তা নতজানু হলো। শুকিয়ে চৌচির হলো গলা। অভী কাছে টানলেই বুক দুরুদুরু করে। তাই কোনো কথার সুযোগ না দিয়েই আঁকড়ে ধরলো অভীকে। তাল সামলাতে বেগ পেতে হলো অভীর। হাসিটা আরও প্রশস্ত হলো এমন কাজে। রোদ দুর্বল হচ্ছে ক্রমশ। জানান দিচ্ছে দিনের ইতির। হয়তো শীঘ্রই ভার্জিনিয়ার উপত্যাকায় নতুনভাবে জীবন শুরু করবে দুজনে। গড়ে তুলবে টোনাটুনির সংসার৷ প্রিয়তা জড়ানো কন্ঠে বললো,
‘ ছাড়বেন না এবার?’
‘ না।’
‘ কেউ দেখে ফেললে?’
‘ দেখুক। সবাই জেনে নিক আমার বুকে বদ্ধ প্রিয়তাটা কেবলমাত্র আমার!’
.
.
.
.
.
.
_____________সমাপ্ত______________