প্রিয়জন❤Last_Part_50

1
7261

প্রিয়জন❤Last_Part_50
Writer-Moon Hossain

সকালের সোনালী রোদ মোমের মুখে পড়েছে। মোমের শরীর থেকে সোনালী আভা বের হচ্ছে।আগুন জানালার কাছে দাড়িয়ে মোম কে দেখছে। মোমকে দেখে মনে হচ্ছে কোন রাজকন্যা দীর্ঘদিন বন্দি হয়ে রয়েছে বিছানায়।
মোমকে বন্দি রাজকন্যা লাগছে। আগুন মোমের পাশে বসে কিছুক্ষণ মোমকে দেখল।
মোমকে আগুন ময়মনসিংহ মেডিক্যালে নিয়ে এসেছে।
মোমের মাঝে মাঝে সেন্স ছিলো আবার মাঝে মাঝে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। আগুন প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে মোম আর তার অনাগত সন্তানের জন্য।
মোমের সিরিয়াস অবস্থা ছিলো সেখানে ওদের বেবির বাঁচার সম্ভাবনা ছিলো না। মোম মেডিক্যালে থাকাকালীন থেকেই আগুন সব সময় আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থেকেছে। সব সময় মোমের পেটে হাত রেখে দোয়া ইউনুস পাঠ করেছে। যদি ইউনুস দোয়া পড়ে নবী মাছের পেট থেকে বের হতে পেড়েছে তবে আগুনের বিশ্বাস সেও এই ভয়ংকর বিপদ থেকে উদ্ধার পাবে। ইনশাআল্লাহ!!
প্রতিদিন মোম কে দেখতে আরমান সাহেব, আশরাফ, আয়েশা আর তার মা আসে।
আগুনের বাবা, মা, আরুও প্রায় প্রতিদিন দেখতে আসে মোম কে। সবাই মোম বলতে অজ্ঞান।
আগুন অপেক্ষা করছে কখন তার প্রিয়তমা আর অনাগত সন্তানসহ নিজের বাড়িতে ফিরতে পারবে। মোমের যখন জ্ঞান ফিরে তখন আগুনের সাথে তেমন কথা বলতে পারেনা। মোমের কথা বলতে ইচ্ছে করে খুব বাট গলা দিয়ে স্বর বের হয়না। মোমের সেন্স ফিরলেই আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকে জিজ্ঞেসা স্বরুপ। আগুন বুঝতে পারে মোমের জিজ্ঞেসা স্বরুপ দৃষ্টি কি বলছে। মাতৃত্ব হলো মেয়েদের প্রতিটি রক্তে রক্তে। আগুন তখন মোমের পেটে হাত রেখে একজন মাকে ভরসা দেয় তার সন্তান ঠিক আছে। আগুন মুচকি হেসে মোমকে আস্থা দেয় তার স্বামী আগুন তার কাছেই আছে।
.
.
মোম তখন চোখ বন্ধ করে নিশ্চিন্তে। মোম জানে তার স্বামী আগুন সব সময় তার পাশে থাকে। প্রিয়জন কাছে থাকলে তখন পৃথিবীর কোন কষ্ট কষ্ট মনে হয়না। সকল বিপদ থেকে উদ্ধার হওয়ার পথ বের হয়ে যায় প্রিয়জন পাশে থাকলে। প্রিয়জন হলো শক্তি, ভরসা, আস্থা, বিশ্বাস, স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসা।
আগুন মোমের পছন্দ মতো বিশাল লম্বা লম্বা দাড়ি রেখেছে। মোমের দাড়িওয়ালা লোক খুব পছন্দ। আগুন মোমের দুঃখে, কষ্টে নাওয়া খাওয়া, কাজকর্ম সব ভুলে মোমের ক্যাবিনে পড়ে থাকে একটা জায়নামাজ হাতে নিয়ে। মোমের একটু একটু সুস্থতার সম্ভাবনা হলেই আগুন নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানায়। প্রায় ৬ মাস হয়েছে মোম কে নিয়ে আগুন মেডিক্যালে আছে। কে জানতো সামান্য দূর্ঘটনা তাদের জীবনকে এমন আতংকগ্রস্থ আছন্ন করবে।সামান্য পড়ে যাওয়া এমন ভাবে ভোগাবে মোম কে সেটা মোম কল্পনাও করতে পারেনি।
বৃষ্টি হচ্ছে বাহিরে। আজ নানান জায়গায় বজ্রপাত হচ্ছে। ইলেক্ট্রিসিটি নেই। জেনেরেটরের দূর্বল আলো নিভু নিভু করছে। একসময় সেই আলোও চলে গেলো। কিছু রং বে রংয়ের মোমবাতি জ্বালিয়ে আগুন।
মাঝরাতে আগুনের চোখ লেগে এলো। আগুন মোমের পাশে চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়লো।
চেয়ারে বিশাল লম্বা দাড়িওয়ালা এক লোক বসে কচকচ করে আপেল খাচ্ছে।
মোমের কাছে লোকটাকে চেনা চেনা লাগছে।
হঠাৎ লোকটা হেসে বলল- প্রিয়তমা আজ ৬ মাস পর হঠাৎ প্রচন্ড ঘুম পেলো। ঘুমের মধ্যেই প্রচন্ড বেগে ক্ষিদে পেলো তাই তোমার আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপতি, বেদানা সব খেয়ে ফেলছি। জানিনা হঠাৎ এতো ক্ষিদে পেলো কিভাবে। তাই নির্লজ্জের মতো তোমার জন্য রাখা ফলসমূহ খাচ্ছি। লম্বা
দাঁড়ির কারণে আগুনকে চেনা যাচ্ছিলো না যদিও আগুনের আগে মোটামুটি দাঁড়ি ছিলো। মোম চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ হাসলো নিজের কান্ড দেখে।
নিজের স্বামীকে নিজেই চিনতে পারলোনা।
সবুজ পাঞ্জাবি আর দাঁড়িতে মোমের আলোয় কি সুন্দর লাগছে তার স্বামীকে। আগুনের মুখ থেকে আলাদা একটা নূর বের হচ্ছে এমন মনে হচ্ছে।
অসুস্থ গর্ভবতী স্ত্রী জ্ঞান ফিরেছে এদিকে খেয়াল নেই , কি সুন্দর আপন মনে ফল খেয়ে যাচ্ছেন আর মুচকি হাসছেন। দেখতেও ভালো লাগছে।
মোম অনেক দিন পর কথা বলল-আপনি এমন শুকিয়ে গেলেন কি করে?
আগুনের চোখ থেকে পানি পড়ে গেলো। কতদিন পর মোমের মিষ্টি কন্ঠ শুনতে পেলো আগুন।
আর কি চায়।
মোম শোয়া থেকে উঠে বসতে চাইলে আগুন সাহায্য করলো। আগুন মোমকে আপেল খেতে বলল – প্রিয়তমা এই নাও তোমার আপেল তুমি খাও।
মোম আপেল নিয়ে আগুনের মুখে দিলো। বেচারা না জানি কতদিন ঠিক মতো খায়নি।
আগুন মোমের কপালে অনেক গুলো চুমু দিলো।
মোম আগুনের গালে হাত রেখে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
এভাবে কতক্ষণ দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো তা ওরা কেউ জানেনা। মনে হচ্ছে হাজার বছর ধরে ওরা দুজন দুজনকে দেখেনি।
আগুন মোমকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো যেনো কোথাও হাড়িয়ে যাবে।
মোম আগুনের পেটে গুতো দিয়ে বলল- আপনার বেবি আর তার মায়ের ক্ষিদে লেগেছে।
আগুন চোখ মুছে বলল – জাস্ট কিছুক্ষণ সময় দাও। আমি এখনই খাবারের ব্যাবস্থা করছি। কি খাবে বলো?
-ঝাল ঝাল গোশত খেতে ইচ্ছে করছে একদম ভাপানো ধোঁয়া উঠা গরম ভাত দিয়ে।
-ব্যাস। আরকিছু?
-কচি শশা, কয়েক টুকরো টোমেটো।
-আরকিছু?
-আচার খেতে ইচ্ছে করছে।
-আচ্ছা এখুনি এরেন্জড করছি। একটা কথা বলতো?
মোম আগুনের পাঞ্জাবির কলার ঠিক করতে করতে বলল – একশটা বলুন?
– যারা প্রেগন্যান্ট হয় তারা টক আচার কেন খায়? প্রেগন্যান্ট হলে আচার খেতেই হবে কেনো?
মোম আগুনের গালে হাত রেখে বলল – আপনি কি কখনো প্রেগন্যান্ট হয়েছেন?
-কি বলো?
-কখনো হবেন?
– নো, নো। কি বলছো?
মোম আগুনের নাক টেনে বলল – কখনো প্রেগন্যান্ট হলে তবেই বুঝতে পারবেন মেয়েরা প্রেগন্যান্ট হলেই কেন আচার খেতেই হয়।
আগুন নিজের মাথা চুলকিয়ে বলে দূর কি যে বলো না?
আগুন নফল নামাজ পড়ে নিলো ক্যাবিনে। তারপর নিজেই বেরিয়ে পড়লো খাবার এরেন্জড করতে। এতেও সুখ আছে আগুনের। একটা নার্সকে মোমের কাছে রেখে আগুন এই ঝড়ে রেনকোট পড়ে হেঁটে রেস্টুরেন্টের দিকে যাচ্ছে। রাস্তা ঘাটে এখন গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না। চারদিকে প্রচুর পানি জমে আছে। কোনো রেস্টুরেন্ট এই ঝড়ের রাতে খোলা নেই। সব বন্ধ। আগুন পড়েছে মহাবিপদে।
আগুন অনেক ক্ষণ হাটাহাটি করলো কোথাও কোন রেস্টুরেন্ট খোলা পেলো না। রাস্তা ঘাটে কোন মানুষ নেই যে আগুন সাহায্য নেবে অথবা কাউকে ফোন দিয়ে কিছু একটা এরেন্জড করবে সেটাও করতে পাচ্ছেনা কারণ রাস্তাঘাট সব বন্ধ।
হঠাৎ আগুনকে একটা রেনকোট পড়া লোক পেছন থেকে ডেকে উঠলো।
আগুনকে লোকটা বলল- সামনে তার বাড়ি যদি কিছু হেল্প লাগে তাহলে সেটা করতে পারলে নিজেকে কৃতজ্ঞ মনে করবে।
আগুন কিছুক্ষণ ভেবে রাজি হলো মোমের কথা ভেবে।শুধু শুধু একজন সন্তান সম্ভবা মাকে অপেক্ষা করানোর মানে হয়না।
আসলামের বাড়িটা বিশাল এক প্রাসাদের মতো।
আসলাম নিজে সার্ভেন্টদের সাহায্য ছাড়াই মোমের জন্য রান্না করলো।
আগুন চুপচাপ হুট পটে ভরে নিলো খাবার।
আগুনকে আসলাম মেডিক্যাল পর্যন্ত বাইক দিয়ে এগিয়ে দিলো।
আগুন অনেকটা এগিয়ে আবার কি মনে করে যেনো ফিরে এসে আসলাম কে বলল- জাযাকাল্লাহ খাইরান!!
আসলাম বলল- আপনার স্ত্রী আর সন্তানের সুস্থতা কামনা করব সবসময়।
আগুন মোমকে নিয়ে সকালেই বাড়িতে এসেছে। আগুনের বাড়িতে এখন উৎসব চলছে। মানুষের উৎসব।বাড়িতে একের পর এক মেহমান আসছে আর আসছেই।
মোমকে সেই বিয়ের মতোই একটা জামদানী শাড়ি পড়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে সবার মধ্যে বসে থাকতে হয়।
মোম রাতে তাদের কামরাটা দেখছিলো। কতদিন পর সে দেখতে পেলো তার আর আগুনের সাজানো কামরাটা। _একদম আগের মতোই আছে ঠিক যেভাবে রেখে গিয়েছিলে তুমি।
আগুন পেছন থেকে মোম কে জরিয়ে ধরে চুলে মুখ গুজে বলল।
মোম চোখ বন্ধ করে আগুনের
প্রতিটি স্পর্শ অনুভব করছে।
প্রতিটি স্পর্শে কোটি কোটি ভালোলাগা লুকিয়ে আছে।
মোম বলল – আর আমার স্বামী সে কেমন আছে ?
-তোমার স্বামীকে যেরকম রেখেছিলে সে সেরকম আছে। চাইলে চ্যাক করে দেখতে পারো।
-না থাক।
-থাকবে কেন?
দেখো না?
– দেখার প্রয়োজন নেই।
-সেটা বললে হবে না।
নিজের জিনিস নিজে চ্যাক করে দেখবে না?
মোম দুই হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে বলল – কোন রকম দুষ্টুমি নয় প্লিজ।
-তা বললে তো হবেনা সুন্দরী। এবার তোমাকে কে বাঁচাবে সুন্দরী? এই ৬মাস অনেক কষ্ট দিয়েছো এবার সব শোধ তুলবো।
আগুন মোমকে কোলে তুলে নিয়ে মোমের গালে চুমু দিয়ে বলল – আমার বেবি আর বেবির মাকে আজ খুব আদর করবো। ৬মাসের আদর জমিয়ে রেখেছি।
মোম লজ্জা পেয়ে আগুনের বুকে মুখ লুকালো।
আগুন মোমকে নিয়ে অনেক ক্ষণ হাটাহাটি করে ঠাট্টা মশকরা করলো।আগুন একটা একটা কথা বলছে আর হাসছে । মোম শুধু আগুনের দিকে সমস্ত মনোযোগ দিলো। এতো সুন্দর সুন্দর কথা বলে তার স্বামী বিশ্বাস হচ্ছেনা।
মোম – পৃথিবীর সব মেয়েই উনার কাছে সুখী হবে খুব। উনার প্রতিটা কথা শুনতে ভালো লাগে। এতো সুন্দর করে কথা উনি বলেন কি করে আল্লাহ তায়ালা জানেন।
আগুন মোমকে অনেক্ষণ কোলে নিয়ে কামরায় এবং বেলকুনিতে ঘুরে বেড়ালো।
মোম আগুন বিছানায় শুয়ে দিয়ে ঠোঁটে হালকা চুমু দিলো।
মোম লজ্জায় লাল গোলাপি হয়ে গেলো তার স্বভাব মতো।
আগুন মোমের নাকে নাক ঘষে গলার স্বর নরম করে কিছু ভালোবাসার কথা বলল। মোমের কানে ফিসফিস করে আগুন কিছু রোমান্টিক কথা বলার চেষ্টা চালাচ্ছে।
চাঁদের আলো ওদের অন্ধকার কামরাটা আলোকিত করে তোলেছে।
আগুন – আমি সপ্ন দেখছি নাকি সত্যি সত্যি প্রিয়তমার সাথে সংসার করছি সেটা আজও বুঝে উঠতে পাচ্ছিনা। কিভাবে কি হলো কিছু বুঝতে পারলাম না। শশুর সাহেব হঠাৎ আমাকে মেনে নিলেন। উনার প্রাণের কন্যাকে আমার হাতে তুলে দিলেন। প্রিয়তমা আর আমি একসাথে আছি। একসাথে থাকছি, খাচ্ছি, ঘুমুচ্ছি, ঘুরছি, মজা করছি, আদর করছি, ভালোবাসছি । আমরা সংসার শুরু করেছি এটা সপ্ন সপ্ন লাগছে। ওর গর্ভে আমার সন্তান এটাও সপ্ন লাগছে। এতো সুখ কেনো আল্লাহর পথে চললে? সত্যি আল্লাহ তায়ালা পরম দয়ালু, উনার দয়ায় আমার জীবন সুখে সমৃদ্ধ হয়েছে।
প্রিয়তমা কে উনি আমার মনে এমন ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে আমি ওকে ছাড়া একটা চোখের পলকও ফেলতে পারিনা। মনের ভেতর ওর কারণে সুক্ষ্ম একটা সুখের ব্যথা অনুভব হয়।
.
.
আগুন মোমকে কোলে করে নিয়ে এসেছে সবার সাথে খাওয়ার জন্য।
দস্তরখানা বিছিয়ে বিশাল এক ভোজের আয়োজন হয়েছে আগুনদের বাড়িতে। মোমদের বাড়ির সবাই এসেছে। আরমান সাহেব মেয়েকে প্রাণ ভরে দেখছেন। উনার মতোই উনার মেয়েকে ভালোবাসার যত্নে রাখার জন্য একজন আছে, এটা ভেবে উনার চোখে পানি চলে এলো। আগুন মোমকে খাইয়ে দিচ্ছে।মোম দুষ্টুমি করে আঙুলে কামর দিচ্ছে আগুনের। দুজন মিলে সুখে আছে এটা আরমান সাহেবের চোখে ধরা পড়েছে।
মোম কে সবাই মিলে খাওয়াচ্ছে এক এক করে। আর মোম বিসমিল্লাহ বলে সবার হাতেই খাচ্ছে। আজকাল মোমের প্রচন্ড ক্ষুধা বেড়েছে। সব সময় একটার পর একটা কিছু খাওয়া চাই।

মোম – আমার সংসার আজ
পরিপূর্ণ। আমার পেটে হাত দিলেই আমাদের সন্তানের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি। আমাদের সাথে ও নিশ্চই ওর মতো করে মজা করছে। মনে হয় ও আমাদের সামনেই আছে। ও আমার কোল জুড়ে যেদিন আসবে সেদিন পৃথিবীর সমস্ত সুখ আমার সংসারে আসবে।
মোম একবার চোখ বুলালো। সবাই আছে তার পাশে। বিশেষ করে আগুন নামের এমন এক স্বামী যিনি মোমের অস্তিত্বে মিশে রয়েছে।
আগুন মোম কে খাওয়ানোর জন্য ব্যাস্ত আছে। আগুনের হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে মোমের চোখ থেকে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো। আগুন মোমের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল – পেইন পেইন লাগছে? এসময় এমন হয়। যদি সম্ভব হতো তোমার জায়গায় আমিই আমাদের খোকন বাবুকে পেটে গর্ত করে রেখে দিতাম।
মোম আগুনের নাক টেনে দিয়ে বলল – পাগল কোথাকার!
মোম প্রচুর খাওয়া দাওয়া করছে। মোম বলে সে আগে এতো খায়নি কখনো। এতো ক্ষিদেও লাগেনি।
আগুন মোমের পেটে হাত দিয়ে বলে -দেখতে হবেনা কার সন্তান! ওরা আমার সন্তান তাই তো এতো খাচ্ছে পেটের ভেতর।
মোম আর আগুন একসাথে খেতে বসলে মোম তার নিজের দুই প্লেট খালি করে আগুনের প্লেটও খেয়ে ফেলে। আর বলে ধার নিচ্ছে খাবার। পরে ফেরত দিয়ে দেবে আগুনকে। আগুনের কাছে এপর্যন্ত কত ধার হয়েছে তা মোমের মনে নেই।
আগুন অবশ্য ধার শোধ করার আশাও করেনা।
আগুন – বিকেলে অফিস থেকে ওর জন্য তাড়াতাড়ি এলাম। বাবা আমাকে কয়েকমাস ছুটি দিয়ে নিজে অফিসে যাচ্ছে। কিছু গন্ডগোল হয়েছিলো যার জন্য আমাকে যেতে হয়েছিলো। ক্লাইন্টের সাথে মিটিংয়ে সময় বার বার মন ছটফট করছিলো ওদের জন্য।
কখন ওদের কাছে আসব।
ও বিছানায় ঘুমুচ্ছে। কি যে
সুন্দরী লাগছিলো ওকে এভাবে দেখে। ওর আট মাস চলছে।ওর পেট এতোটা বড় হয়েছে যে মনে হচ্ছে ওখানে আমার মিনিমাম তিন চারটা খোকা-খুকি আছে। লোভ সামলাতে পারলাম না। ওর কাছে চলে গেলাম। আমি জুতো মুজো খুলে সোজা ওর সাথে কম্বলের ভেতর ঢুকে পড়ে ওকে আদর করতে লাগলাম। আমার ছোঁয়া পেয়ে ও কিশোরী মেয়েদের মতো নড়ে নড়ে উঠলো। আমি ওকে আরও কাছে টেনে নিলাম।
.
মাগরিবের আজান ভেসে হলো মিষ্টি সুরেলা ভাবে।
ওর পেটে অজস্র চুমু দিয়ে ওর কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে নামাজ পড়তে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ওকেও নামাজের জন্য ওয়াশরুম থেকে অজু করিয়ে জায়নামাজে বসিয়ে দিলাম।
.
আমি আর প্রিয়তমা দুজন মিলে যে কটি দোয়া প্রত্যহ পাঠ করে থাকি –
————
১। আয়াতুল কুরসী – প্রতি ফরজ নামাযের পরই একবার করে পড়বেন অবশ্যই অবশ্যই। আর রাতে ঘুমানোর আগে একবার।
.
২। সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়া – রাতে ঘুমানোর আগে ১ বার (বিঃ দ্রঃ অনেকে মুখস্ত করেন নি। দ্রুত করে নিবেন। লিখে দিচ্ছি, বাংলা উচ্চারণে। আরবী ফন্ট অনেকের কাজ করেনা।
.
“আ-মানার-রাসুলু বিমা- উনজিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি, লা নুফার-রিকু বাইনা আহা’দিম-মির রুসুলিহ। ওয়া ‘ক্বলু সামি’না, ওয়া আতা’ না, গুফরা নাকা, রব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।
লা~ ইউ কাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস-আ’হা। লাহা মা কাসাবাত ওয়া আ’লাইহা মাক তাসাবাত। রব্বানা লা~ তু আখিজনা- ইন্ নাসিনা- আও আখত্বা’না। রাব্বানা ওয়ালা তাহ’মিল আ’লাইনা ইসরান কামা হা’মালতাহু আ’লাল্লাজিনা মিন ক্ববলিনা। রব্বানা ওয়ালা তুহা’ম্মিল না মা-লা~ ত্ব কতালানা বিহ। ওয়া আ’ফু আ’ন্না, ওয়াগ ফিরলানা, ওয়ার হা’মনা। আনতা মাওলানা, ফানসুরনা আ’লাল ক্বওমিল কা-ফিরিন”
.
(এটার ফযিলত তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সমতুল্য!!! আর কি চাই বলুন! এত মর্যাদাপূর্ণ ইবাদাত, না করতে পারলেও করার সমান সওয়াব হয়ে যাবে এটা পড়লেই!! সুবহান আল্লাহ্। কতই না বরকতময় এই দুই আয়াত! )
.
৩। সুরা ইখলাস পাঠ করা – ১০ বার, না পারলে ৩ বার। ( প্রতি ৩ বার পড়লে একবার কুরআন খতমের সওয়াব হয় ইন শা আল্লাহ)
.
৪। দশবার দরুদ
শুধু “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” পড়লেও হয়ে যাবে। (একবার দরুদ পড়লে দশবার আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়, রাসূল স খুশি হন; বিচার দিবসে তাঁর শাফায়াত পাওয়া সহজ হবে ইন শা আল্লাহ)
__
সাথে রাসূল (স) এর ঘুমানোর দুয়া “আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া” পড়ে নেয়া। ডান কাধ হয়ে শোয়া।
________________
লেভেল ২ঃ
————-
৫। ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ, ৩৩ বার আলহা’মদুলিল্লাহ ,৩৪ বার আল্লাহু আকবার বলবেন।
.
লেভেলঃ ৩
————–
৬। ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
যে ব্যাক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী’ পড়বে।তার গোনাহ মাফ হইয়া যাইবে,যদিও তা সাগরের ফেনা থেকেও বেশী হয়’। (বুখারী ও মুসলিম)
.
৭।
প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুন (আশ্হাদু আন লা-~ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা~ শারীকা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহূ) ।
এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৩৪।
…………….
লেভেলঃ ৪
৮। ঘুমাচ্ছেন, ঘুম যখন ভেঙ্গে যাবে—- তখন এইটা পড়ে নিবেন–
« ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ، ﻭَﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ، ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻛﺒَﺮُ، ﻭَﻻَ ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻌَﻠِﻲِّ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ‏» ‏« ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔﺮْ ﻟِﻲ ».
লা~ ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর। সুবহা-নাল্লাহি, ওয়ালহামদুলিল্লাহি, ওয়া লা~ ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়ালা- কুওয়াতা ইল্লা-বিল্লা-হিল ‘আলিয়্যিল ‘আযীম, রাব্বিগফির লী
.
অর্থ- “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্র। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুউচ্চ সুমহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। হে রব্ব ! আমাকে ক্ষমা করুন”।
__
উবাদা ইবনু সামিত (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ ) বলেছে‘ন, “যদি কারো রাত্রে ঘুম ভেঙ্গে যায় অতঃপর সে উপরের যিকিরের বাক্যগুলো পাঠ করে এবং এরপর সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় অথবা কোনো প্রকার দু‘আ করে বা কিছু চায় তবে তার দু‘আ কবুল করা হবে। আর যদি সে এরপর উঠে ওযু করে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করে তাহলে তার সালাত কবুল করা হবে।”
(সহীহ বুখারী, ১/৩৮৭, নং ১১০৩)
.
৯। প্রত্যেক সকাল ও সন্ধ্যায় সাইয়িদুল ইস্তিগফার পড়া। ক্ষমার শ্রেষ্ঠ দুয়া।
~~~~~
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।
ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺭَﺑِّﻰْ ﻵ ﺇِﻟﻪَ ﺇﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺧَﻠَﻘْﺘَﻨِﻰْ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﻠﻰ ﻋَﻬْﺪِﻙَ ﻭَﻭَﻋْﺪِﻙَ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺖُ، ﺃَﻋُﻮْﺫُﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّﻣَﺎ ﺻَﻨَﻌْﺖُ، ﺃﺑُﻮْﺀُ ﻟَﻚَ ﺑِﻨِﻌْﻤَﺘِﻚَ ﻋَﻠَﻰَّ ﻭَﺃَﺑُﻮْﺀُ ﺑِﺬَﻧْﺒِﻰْ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْﻟِﻰْ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻻَﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬُّﻧُﻮْﺏَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ –
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি মা সানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বি যাম্বী ফাগফিরলী ফা ইন্নাহূ লা~ ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
.
১০। সূরা মুলক (কবরের আযাব থেকে রক্ষা করে)
.
১১। তাহাজ্জুদ (ফরজ সালাতের পর আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়, দুয়া কখনো লক্ষ্যভ্রস্ট হয়না)
________
প্র‌তি‌দিন অল্প কয়টা হলেও আমল করবেন। তাহলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে ইহকাল এবং পরকালের জন্য ফল পাবেন। ইনশাআল্লাহ!!
.
মোম যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন মোমের পেটে কান পেতে আগুন ওদের বেবির সাথে কথা বলে। মোমের সামনে নাকি কথা বলতে লজ্জা লাগে।
মোম বলে – কি এমন কথা বলেন আপনারা? আমাকে যেটা বলা যাবেনা?
আগুন মোমের পেটে হালকা তেল মালিশ করতে করতে বলে আছে আছে। দ্যাটস পার্সোনাল!
-ওআচ্ছা?
-ইয়েস এটা আমাদের বাবা সন্তানের গোপন কথা। সিক্রেট কথাবার্তা!
-নির্ঘাত আমার বিরুদ্ধে প্ল্যানিং করছে কিছু!
– অফকোর্স সে আর বলতে। ওদের সাথে প্ল্যান করবো নাতো কাদের সাথে করবো? ওরাই তো আমার প্রিয়জন।
-আর আমি বুঝি বাদ?
-আরে তুমি তো আমাদের শত্রু পক্ষ। তবে খুব সুইট কিউট শত্রু। শত্রু কিউট সুইট হলে তো কপাল বলতে পারো।
মোম আগুনের চুলে টান দিয়ে হাসালো এমন ছেলেমানুষী চিন্তা ভাবনা শুনে।
এর মাঝে আরুর বিয়ে হয়েছে একজন আলেমের কাছে।
ভদ্রলোকের মাঝারি বিজনেস। পরিবার খুব পর্দাশীল। ভদ্রলোকের মা রাস্তায় এক্সিডেন করেছিলো এবং আরু দেখতে পেয়ে ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানেই আরু কে দেখে ভদ্রলোক বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর আরু বেশ নাকের জল, চোখ জল এক করে ফেললো বাট বিয়ের দিন হাসতে হাসতে পাগল হওয়ার উপক্রম হলো। আগুন ভেবে পেলো না মেয়েরা এমন বিচিত্র কেনো?
আরুর স্বামী অল্প ভাষী। দশ কথা এক কথায় বলে অন্যদিকে আরু একশত কথা বলে এক কথায়। আগুন আরুর স্বামীকে দেখে ভাবে ভাগ্যিস মোম এমন বাঁচাল হয়নি। ভদ্রলোকের সহ্য আছে বলতে হবে। আরু তার স্বামী চোখে হারায়। সব সময় আরুর মন জয় করার চেষ্টা করে।
আসলাম সৌদি চলে এসেছে। সে কখনো বিয়ে করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভালোবাসা মনে হয় এমনিই হয়। আসলাম আগুনের আর মোমের কাছে মাফ চেয়ে নিয়েছে। সে তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরেছে।
পার্সেল হাতে একটা লোক এসেছে আগুনদের বাড়িতে।
একটা জোব্বা পড়া দাড়িওয়ালা লোক দাড়িয়ে আছে।
ফুটফুটে ছোট একটা ছেলে দরজা খুলে দিলো।
-আসসালামু আলাইকুম?
-ওয়ালাইকুম আসসালাম। -চাচাজান ভেতরে আসুন।
লোকটা কথা বলল না।
-দিন আপনার ব্যাগ দিন আমি নিচ্ছি।
তবুও লোকটা কিছু বলেনি।
ছেলেটা লোকটার জুতোর দিকে তাকিয়ে বলল – চাচাজান বুঝেছি আপনি জুতোর ফিতে খুলতে পারেন না। আমিও পারিনা আর বাবাও পারেনা। আম্মু সব সময় আমাদের ফিতে লাগিয়ে এবং খুলেও দেন।
দিন আমি খুলে দিই তারপর ভেতরে আসুন। ছেলেটা জুতোর ফিতে খুলতে লাগলো।

৬ বছেরের ছেলের মুখে এমন আদব কায়দা শুধু মাত্র মোমের ছেলেই শিখতে পারে।
আসলাম বলল – তোমার নাম?
– খোকন। ভালো নাম আজান।
আসলাম আজানের কপালে চুমু দিয়ে একটা পার্সেল ধরিয়ে দিলো হাতে। ছেলেটা অবিকল মোমের মতো দেখতে।
আসলাম আজানের কানে কানে বলল – তোমার মাকে কখনো কষ্ট দেবেনা। দেখেশুনে রাখবে। বড় ভালো মেয়ে তোমার মা।
-জি আমি মাকে খুব ভালোবাসি। খেয়াল রাখি, যত্ন করি। সব কথা শুনি। আমি মায়ের ভালো ছেলে।
আসলাম হুট করে হাটা শুরু করলো। আজান কিছু বুঝতে পারলো না। সে কয়েকবার চাচাজান বলে ডেকে উঠলো।
আগুন নিচে এসে বলল – খোকন বাবা তোমার হাতে এটা কি?
– আব্বু এটাতে মায়ের নাম লেখা। কারো জিনিস অনুমতি ছাড়া খুলতে নেই। তাই খুলিনি।
আগুন তার ছেলেকে কোলে নিয়ে মোমের কাছে কিচেনে গেলো। আগুন আর তার ছেলে আজানের প্রিয় পোলাও আর মাছ ভাজা করছে ডুবন্ত তেলে মোম।
– কি হয়েছে বাবা ছেলে নতুন কি কান্ড ঘটিয়েছেন? বাবা আর ছেলে দুজন ফটোকপি। আজান দেখতে মায়ের মতো বাট বাবার মতো আচার- আচরণ । আগুনের মতো মতো খুব দুষ্টু হয়েছে।
আগুন ছেলেকে বলল চোখ বন্ধ করতে। আজান ভাদ্য ছেলের মতো চোখ বন্ধ করলো। সে কখনো বড়দের মুখের উপর কথা বলেনা কারণ তার বাবা মা তাকে এই শিক্ষা দিয়েছেন। আগুন মোমের গালে চুমু দিয়ে বলল – বাবা আজান চোখ খোলো এবার।
আজান আর মোমের নামে বেশ কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি আসলাম উইল করেছে সেটার পেপার ছিলো পার্সেলে। মোম আর আগুন কিছুক্ষণ নিজের দিকে তাকিয়ে রইলো।
আগুন আজানকে কোলে নিয়ে মোমের পাশে দাড়ালো। মোম আগুনের কাঁধে মাথা রেখে বলল -আপনাদের দুজনকে খুব ভালোবাসি।
আগুন তার প্রিয়তমা আর কলিজার টুকরো ছেলেকে চুমু খেয়ে জরিয়ে ধরে বলল – আমিও তোমাদের ভালোবাসি। তোমরা আমার পৃথিবী প্রিয়তমা।
(সমাপ্ত)
[ আমি চেষ্টা করেছি ত্রুটি ছাড়া লিখতে। হাদিস সমূহ কোন ভুল করিনি, রেফারেন্স সহ লিখেছি। বানান ভুল হতে পারে সেজন্য মাফ চাচ্ছি। আমার আগের আইডি ডিজেবল হয়েছে ৪৬ পার্ট লিখে।সেজন্য দুঃখ লাগছে। সময় করে সকল লিংক দিয়ে দেব বর্তমান আইডিতে। আমি রোমান্টিক গল্প লিখি বাকিদের মতো তাই এই গল্পের প্রথম পার্ট দুটো একটু অন্যরকম হয়েছে। ইসলামিক ভাবে গল্প লেখার চেষ্টা করেছি বাট পুরোপুরি ইসলামিক করিনি। গল্পটা ইসলামিক ভাবে জীবন যাপনের অন্তর্ভুক্ত করেছি মাত্র সো ইসলামিক গ্রুপে গল্প দেবেন না কেউ। টক ঝাল মিষ্টি দিয়ে যেমন খাবারে বিচিত্র আসে তেমনই গল্পটা ইসলামিক, রোমান্টিক কমেডি করার চেষ্টা করেছি। গল্পের আগুনের চরিত্র কিছু দোষ করে থাকলে তাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। বাস্তব জীবনে আমরা অনেক ভুল করে থাকি যা গল্পে হালকা তুলে ধরা হয় সো এটা আমার ভুল না, ভুল হলো জীবন ব্যাবস্থার। তবুও ভুল ত্রুটি কিছু করে থাকলে মাফ করে দেবেন দয়া করে। #যাইহোক, প্রিয়জন হলো ভালোলাগার এবং ভালোবাসার মানুষ। যাদের জন্য জীবন এতো সুন্দর ] ❤❤

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here