প্রিয়জন❤Part-31

0
2187

প্রিয়জন❤Part-31
Writer-Moon Hossain

[কালকের একটা দূর্ঘটনার জন্য মন এতো খারাপ কি বলব। আগে এই পার্ট লিখেছিলাম তাই পোস্ট দিলাম ]
ওকে আমার আর ডেইজির মধ্যে হওয়া ঘটনা বলতে চেয়েও বললাম না। আমি জানি ও কিছু বলবে না, রাগ করবেনা, অভিমান করবে না, কথা বলা অফ করবে না, অবিশ্বাস করবে না। বা ডেইজিকে নিয় আমাকে সন্দেহ করবে না।
কিন্তু মনে মনে ঠিক কষ্ট পাবে। লুকিয়ে লুকিয়ে চোখের পানি ফেলবে। কোন মেয়েই তার প্রিয়জনের সাথে অন্য মেয়েকে সহ্য করতে পারেনা তার উপর ওর বয়স কম। ও কিছু বলবে না কিন্তু ঠিক কষ্ট পাবে আর লুকিয়ে কাঁদবে।
ওকে কষ্ট দিতে চাইনা তাই কথা ঘুরিয়ে বললাম- কথাটা শুনে রাগ করবে।
ও বলল- বলুন তবুও?
-শিউর?
-শিউর?
আমি ওর কানে কানে ফিসফিস করে বললাম- আমার রাতে একা থাকতে আর ইচ্ছে করেনা। খুব কষ্টে আছি বউ ছাড়া। কোলবালিশ নিয়ে ঘুমাতে আর ভালো লাগে না। কোথাও শুতেও ভালো লাগেনা আমার বউয়ের কোল থাকতে।
ও মাথা নিচু করে আছে।
আমি বললাম -মাথানিচু করে থাকলে লাভ হবে না।
এখন বলো এই অধৈর্য কষ্টে থাকা স্বামীর কি হবে??
হঠাৎ ও আমার পেটে গুতো দিয়ে বলল- আরও এক যুগ অপেক্ষা করতে হবে আপনাকে! চলবে?
আমি আকাশের দিকে তাকি বললাম – আমার সংসার দূরে থাক কখনো বাবা হতেও পারবনা।
.
ওর সাথে এখন তেমন দেখা করতে পারিনা।
ঐ আসসালাম প্রতিদিনই আসে মোমের সাথে। আমি থাকতে কেন একটা লোক আমার বউকে ভার্সিটি নিয়ে আসবে আবার নিয়েও যাবে। মগের মুল্লুক।
ঐ দিন আমি এক ঘন্টা আগে গিয়ে দেখি লোকটা মোমের ক্লাসরুমের সামনে বসে আছে।
ভেবেছিলাম ক্লাসে গিয়ে মোমের নূরানী মুখ খানি দেখে সুরেলা কন্ঠ শোনা যাবে। ইচ্ছে করছিল লোকটাকে ঐ ছিনতাইকারীর মতো ধোলাই দিই।
সামনে একটা ইট দেখতে পেলাম। আমি সোজা ইট হাতে নিয়ে লোকটার কাছে গেলাম। অমনি জানালা দিয়ে মোম ইশারা শুরু করলো। আমার আর মোমের মাঝে আমি একটা অনু পরমাণুকেও সহ্য করতে পারিনা। এমনকি আমার বাবা মা বোনের সামনেই ওর হাত ধরে টানাটানি করি, ওকে জড়িয়ে ধরি। আর এই লোক কে যার জন্য ওর সামনে পর্যন্ত যেতে পাচ্ছিনা। দেখতে পাচ্ছিনা, কথাও শুনতে পাচ্ছিনা। আমার বিয়ে করা বউ!!
আমি মোমকে দেখিয়ে ইট সোজা আমার কপালে আঘাত করলাম। না কপাল ফাটেনি। আমি আরেকবার ট্রাই করলাম তখনই মোম হাত জোর করে আমাকে ইশারা করলো।
আমি কি আর করবো! এমন পর্দা করা নিষ্পাপ মেয়ের কথা ভেবে নিজেকে কন্ট্রোল করলাম।
ক্লাস শেষে মোম আসছে দেখে আমি এক পলকে তাকিয়ে রইলাম। লোকটা কার কাছে যেন ফোন করছে।
অমনি লোকটা বলল -আসসালামু আলাইকুম!
-ওয়ালাইকুম আসসালাম!
-ভাই সাহেব এভাবে মেয়েদের দিকে তাকাতে নেই। আশা করি দৃষ্টি সংযত করে রেখে নিজেকে গুনাহ থেকে দূরে রাখবেন।
আমি কি করবো ভেবে পেলাম না।
আমার বউ আমি দেখব নাতো কে দেখে দেখবে।
আমি বললাম -আপনি তাহলে কি করছেন এখানে? ধরে নেব আপনিও মেয়েদের দিকে তাকানোর জন্য বসে আছে এখানে। কারণ আপনার জায়গা থেকে সামনের পুরো ক্লাসটা দেখা যায় সেই সাথে মেয়েদেরকেও।
লোকটা হেসে বলল- আমার হবু বউকে দেখাশোনা করছি। একটা ইবলিশ নাকি আমার বউয়ের পেছনে লেগেছে।
লোকটা আমাকে চেনে না নিশ্চয়ই। শশুর সাহেব নিশ্চয়ই আমার কথা বলেছে উনাকে সব।
আমি বললাম- আমি আমার বিয়ে করা বউয়ের দেখাশোনা করতে এসেছি। বিবাহিতা জেনেও অনেকে বিবাহিতা মেয়েদের পেছনে ঘুরতে ভালো লাগে।
লোকটা একটা ঢোক গিলেছে মেবি।
লোকটা বলল- কোথায় আপনার বউ? ততক্ষণে মোম আমাদের সামনে এসে পড়েছে।
মোম ইশারা করছে দুই হাত দিয়ে। আমাকে ভয় পাচ্ছে সে। আমাকে নিয়ে টেনশন লাগছে ওর যদি আমি কিছু বলি বা করি।
আমি কোন মতে নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম – আমার বউয়ের সাথে আমি কাউকে পরিচিত করিনা।
আরু আসাতে আমি আরুকে নিয়ে সোজা ভার্সিটির বাহিরে আসলাম।
এসে দেখি গাড়িতে ডেইজি বসে আছে।
আমার এমন রাগ উঠলো কি বলব!
মোম- কি থেকে কি হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না।
বাবা হঠাৎ একদিন আমাকে ডেকে বলল -রেডি হয়ে নাও আমরা একটা জায়গায় যাব।
আমি রেডি হয়ে বাবা আর ভাইয়ার সাথে কাছে একটা কফি শপে গেলাম।
হঠাৎ দুটো লোক হাজির হলো।
বাবা এরপর যা বলল তাতে আমার মন ভেঙে গুড়ো গুড়ো হয়ে গেলো।
দুটো লোকের মাঝে লম্বা দাড়িওয়ালা লোকটা নাকি আসলাম শেখ।
লোকটা আমাকে সালাম দিলো। আমি সালামের উওর দিয়ে বেলকুনিতে গিয়ে একটু নেকাব খুললাম। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। উনি জানতে পারলে দুঃখ পাবেন। উনার যা রাগ তাতে কেয়ামত ঘটিয়ে ফেলবেন।
হঠাৎ লোকটা এসে বলল- যেখানে সেখানে নেকাব খুলতে নেই।
আমি তাড়াতাড়ি নেকাব লাগালাম।
লোকটা বলল- তোমার অধিকার আছে পছন্দ মতো স্বামী নির্বাচন করা।
আমি মোটামুটি তোমার বাবার পছন্দ সই পাত্র। তুমি আমার অনেক ছোট তাই তুমি করে বললাম।
শোন, তোমার আমার সাথে ঘুরতে গিয়ে চেনাজানা হতে হবে না। তুমি যখন ভার্সিটি, লাইব্রেরি যাবে তখন আমি তোমার গাড়ির করেই তোমার সাথে যাব।
তুমি আমাকে মোটামুটি বিয়ের আগ পর্যন্ত আমার সম্পর্কে একটু জানলে।
বিয়ে ঠিক হওয়ার পর কিন্তু পাত্র পাত্রির দেখাশোনা করা কিন্তু জায়েয।
.
.
লোকটা যখন উনার সাথে কথা বলছিল তখন আমার ভয় করছিল। উনি যদি কিছু করে বসেন রাগের মাথায়।
যখন উনি নিজের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করতে যাচ্ছিল তখন আমার প্রাণ বের হয়ে যাচ্ছিল।
পথে ডেইজি আগুনের কাছে মাফ চাইলো।
আগুন বলল- মাফ চাইলে আল্লাহর কাছে চাও। ফিউচারে এমন কাজ থেকে দূরে থাকবে। ডেইজি মাথা নাড়ালো বাট মনে মনে চিন্তা করলো আগুনকে ইমপ্রেস এভাবে করা যাবেনা। সময় বুঝে করতে হবে। আগুনকে আমার চাই এন্ড চাই।
এদিকে আসসলাম ভাবছে আজ অনেক দিন যাবৎ সে মোমের সাথে যাওয়া আসা করছে। কিন্তু একদিন মোম নিজ থেকে একটা কথাও বলেনা। কিছু জিজ্ঞেস করলে শুধু মাথা নাড়ায়।
মোমকে আসলামের খুব পছন্দ হয়েছিল। একবার দেশে এসে সে মোমদের বাড়িতে এসেছিল তখনই মোম কে বেলকুনিতে দেখতে পায় সে। এর আগে মোমের খুব প্রশংসা আর বর্ণনা শুনেছে তার বাড়ির লোকেদের কাছ থেকে।
মোমের বর্ণনা শুনে আসলামের মনে মোম নামটা আটকে আছে।
.
.
আগুন আর মোম যে যার মতো বাড়ি চলে এলো।
আগুন মোমকে ফোন করে বলল- আমাকে তোমরা মেরে ফেলতে চাও তাইতো?
মোম বলল- আপনার আগে আমিই মরে যাব।
আগুন বলল-খবরদার এমন কথা বলবে না।
-তাহলে আপনিও এমন কথা বলনেন না।
-প্রিয়তমা আর কতদিন অপেক্ষা করবো?
-বাবার সামনে পুরোপুরি ভাবে আপনাকে একজন মুমিন ব্যাক্তি হিসেবে দাড় করাতে চাই।
আশা করি আপনি আমার ইচ্ছে পূরণ করবেন?
বাবা যেন তখন বলে আপনি আমার জন্য সেরা! বাবা যেন আপনার উপর গর্ববোধ করে।
আপনাকে জামাতা হিসেবে মেনে নেয়।
আগুন বলল- I love you প্রিয়তমা।
মোম লজ্জা মাখা কন্ঠে বলল- আর কিছু দিন ওয়েট করুন প্লিজ। নিজেকে পরিপূর্ণ করতে সময় নিন।
-বাট কোলবালিশ নিয়ে ঘুমাতে ভালো লাগছেনা আর।
.
.
আসলাম আজ মোমের সাথে আসেনি।
আগুন মোমকে নিয়ে ভার্সিটি থেকে বের হয়েছে আজ।
আগুন মোমকে তাদের বাড়ির সামনে ড্রপ করে মোমের হাত ধরে একটা চুমু খেল কপালে।
হঠাৎই মোমের বাবা আরমান সাহেব এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব।
আগুন আর মোম দুজেই আরমান সাহেব কে দেখতে পেলো।
আগুন শক্ত করে মোমের হাত ধরলো। মোম মাথা নিচু করে আছে। অজানা আতংকে মোমের বুক কেঁপে উঠলো।
এই মূহুর্তে মোম তার বাবার সামনে দাড়িয়ে আছে।
আরমান সাহেব বলল- আমার শিক্ষার এই দাম দিলে মা? তোমাকে যোগ্য ছেলের হাতে তোলে দেওয়া হলো তোমার পিতা হিসেবে আমার ধর্ম।
আমার উপর তোমার দায়িত্ব আছে। তোমাকে সঠিক শিক্ষা দিয়ে বড় করে কোন মুমিনের হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত পিতা হিসেবে আমার দায়িত্ব শেষ হবে না।
মহানবী (সাঃ) বিয়ে নিয়ে কি বলেছেন তা নিশ্চয়ই জানো,, পিতামাতার সম্মতি ছাড়া বিয়ে করলে বা বিয়ের সম্পর্ক স্থাপন করলে তা বাতিল, বাতিল, বাতিল।
মোম এবার মুখ খুলে বলল- কিন্তু বাবা তুমি তো তোমার সম্মতিতে এই বিয়ে দিয়েছিলে। এখন আমার উপর সবচেয়ে বেশি হোক হলো উনার।
তুমি আমাকে সঠিক শিক্ষা দিয়েছো বলেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
হতে পারে উনি ধর্মে জ্ঞানে খুব একটা দীক্ষিত নন কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি অসাধারণ।
উনি আগের থেকে পাল্টে গিয়েছেন অনেকটা। আমি ভেবেছিলাম উনাকে সম্পূর্ণ ভাবে মুমিন বানিয়ে তোমার সামনে হাজির হবো। কিন্তু আমার দূর্ভাগ্য তুমি তার আগেই….
মোমের মা আর ভাবি দাড়িয়ে মোমের কথা গুলো শুনছে। তারা কিছু বলছে না

মেয়ের কথা শুনে আরমান সাহেব চেয়ারে বসে পড়লো। আশরাফ মোম কে বলল রুমে যেতে।
মোমের ফোনটা তার বাবার রুমে আছে। যখন বাবার সাথে কথা বলছিল তখন ফোনটা টেবিলের উপর রেখেছিল মোম।
মোম না খেয়ে শুয়ে আছে। চোখের কোণে পানি চিকচিক করছে। আগুনের কথা খুব মনে পড়ছে। না জানি কি করছে তিনি।
মোম ভয় পাচ্ছে আগুন আবার কিছু করে না বসে।
এদিকে আগুন ইজি চেয়ারে বসে আছে রুম অন্ধকার করে।
মোমকে দেখতে ইচ্ছে করছে। না জানি মোমকে কি কি ফেস করতে হচ্ছে বাড়িতে।
মোমের পাশে থাকতে ইচ্ছে করছে। ওকে সাহস দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে আগুনের, আমি তোমার পাশে আছি।
এই পর্যন্ত একশত কল দেওয়া হয়েছে তবুও মোম ফোন ধরছে না।
আগুনের টেনশন হচ্ছে।
আগুন না খেয়েই মোমদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলো।
মোমের বেলকুনির সামনে দাড়িয়ে আছে আগুন।
মোমের সাথে কথা বলতে পারলে মন কিছুটা শান্ত হবে।
মোম কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে অনেক আগেই।
আগুন সারা রাত মোমের বেলকুনির সামনে দাড়িয়ে ছিল আর ফোন করছিল।
হঠাৎ ফোনটা মোমের বাবা রিসিভ করে।
আগুন চটপট করে বলল- প্রিয়তমা কোন প্রবলেম হয়েছে? তুমি ঠিক আছো? শশুর সাহেব তোমাকে কিছু করেনি তো?
আরমান সাহেব ঠান্ডা গলায় বলল- আসসালু আলাইকুম!
আগুন বুঝতে পারলো কে কথা বলছে – ওয়ালাইকুম আসসালাম!
আরমান সাহেব বলল- মোম তার নিজের বাড়িতে আছে। এখানে ওর আপনজন থাকে। ওর শত্রু থাকে যে ও ঠিক থাকবে না। এখানে মোমের বাবা থাকে কারও শশুর সাহেব থাকেনা। মোম এখন ঘুমুচ্ছে।
.
.
লাইন কেটে গেলো।
আগুন হাফ ছেড়ে বাচঁলো। যাইহোক, মোম ঘুমচ্ছে। জেগে থাকলে কান্না করবে। অযথা চোখের পানি ফেলবে।
আগুন তার গাড়িতে বসেই ঘুমিয়ে পড়লো।
ফজরের আজান দেওয়ার পর আগুনের ঘুম ভাঙলো। আগুন বেলকনিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মসজিদের উদ্দেশ্য গাড়ি স্টার্ট করলো।
মোমের হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো। সে এক দৌড়ে গেল বেলকুনিতে।
আগুন ততক্ষণে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ফেলেছে।
মোম আগুনের চলে যাওয়া দেখতে পেলো।
খুব জোরে চিৎকার করলে হয়ত আগুন তার ডাক শুনতে পাবে। হয়ত পাবেনা।
মোমের খুব অসহায় লাগছে।
.
.
আসলাম মোমকে ভার্সিটিতে নিয়ে এসেছে।
আগুন দুই দিন ধরে কিছুই খায়নি। এদিকে মোমও কিছু খায়নি। আরমান সাহেব মোমের ফোন নিজের কাছে রোখেছে।
.
.
আগুন সকাল থেকেই ভার্সিটির কাছে দাড়িয়ে ছিল।
মোমের সাথে একবার কথা বলা জরুরি।
মোম কে দেখে আগুন মোমের কাছে আসতেই আসলাম মাঝখানে দাঁড়ালো।
-আসসালামু আলাইকুম আগুন সাহেব।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম। সামনে থেকে সরে দাড়ান।
-আপনি এক পা আর এগুবেন না। এই পর্যন্ত আপনার সিমা।
-আমি আমার ওয়াইফের কাছে যাচ্ছি মাঝখানে আপনি কথা বলার কে?
সরে দাড়ান নয়ত ভালো হবে না।
মোম ভয়ে আটখানা হয়ে আছে। আগুনের মাথা গরম হলে আসলামের কি হবে তাতে সে ভালো করে জানে।
আসলাম বলল- কিসের ওয়াইফ? ছেলেখেলা বিয়ে কোন বিয়ে না। কাউকে চাপে ফেলে বিয়ে করলে সেটা জায়েজ হয়না। আপনারা যেভাবে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধন কে নিয়ে ছেলেখেলা করে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাচ্ছেন তাতে একজন মুসলিম হিসেবে আমার উচিৎ এটা আটকানো। জোর করে বা মিথ্যার উপর ভর করে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যায়না। সামান্য ধর্মীয় জ্ঞান টুকুও নেই আপনাদের মাঝে থাকলে বিয়প নামক পবিত্র বন্ধ নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা করতে পারতেন না।
আমি একজন অসহায় বাবাকে কথা দিয়েছি তার মেয়ের পাশে থাকব।
তার মেয়ের জীবনসঙ্গী হব। আপনাদের বিয়ে কোনো বিয়ের পর্যায়ে পড়েনা। তাছাড়া আপনি যে সোসাইটিতে বাস করেন সেখানে সবার আগে রেজিস্ট্রি করতে হয়। আছে আপনার কাছে আপনার বিয়ের রেজিস্ট্রি?
আগুনের মাথা গরম হয়ে আছে। অন্য একটা লোক বলে কিনা তাদের বিয়ে বিয়েই না।
মোম খুব ভয় পাচ্ছে কারণ আসলাম খুব সুন্দর ভাবে ইসলামিক ভাবে কথার প্যাঁচে আগুনকে আটকে ফেলেছে।
আগুন তো আসলামের মতো হাদিসের আলোকে দীক্ষিত নয় তাহলে কিভাবে সে আসলামের সাথে পেড়ে উঠবে।
আগুন শুধু বলল- ভালোবাসার বন্ধনে আমরা আবদ্ধ হয়েছি। ভালোবাসা হলো পবিত্র বন্ধন।
আগুন আসলামকে উপেক্ষা করে মোমের কাছে যেতেই আসলাম আগুনের হাত ধরে বাধা দিলো।
আগুন তৎক্ষনাৎ আসলামকে থাপ্পড় দিলো কয়েকটা। আসলাম দূরে ছিটকে পড়ে গেলো৷ মানুষ জড়ো হয়ে গেলো। সবাই আগুনকে ধরে রেখেছে তবুও আগুনকে ধরে রাখতে পাচ্ছেনা কেউ। মোম সোজা গাড়িতে উঠে পড়লো কারণ সে থাকলে আরও বড় কোন সমস্যা হতে পারে।
আরু এসে আগুনকে নিয়ে গেলো।
আজ একমাস ধরে আগুন মোমের দেখা পাচ্ছেনা।
আগুন মোমদের বাড়ির সামনে দাড়িয়ে থাকে।
আরমান সাহেব, আশরাফ, আসলাম শত চেষ্টা করেও আগুনকে সরাতে পারলো না।
আগুন কে তার বাবা জোর করে বাড়িতে নিয়ে গেলো। আগুনের বাবা বলল- খেয়ে দেয়ে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হবে নইলে বউকে এতো গুলো মানুষের সাথে ফাইট করে উদ্ধার করতে পারবে না।
আগুন খাবার মুখে দিয়ে ভাবলো তার প্রিয়তমা নিশ্চয়ই খায়নি।
আগুন আবার মোমদের বাড়ি গেলো। তৎক্ষণে লেট হয়ে গিয়েছে কারণ দারোয়ান বলল মোমকে নিয়ে পুরো পরিবার গ্রামে চলে গিয়েছে।
আগুন গাড়ি নিয়ে এদিক ওদিক ছিটে বেড়ালো। কোথাও মোমদের দেখতে পেলো না। আগুন তার মা কে ফোন করে বলল- সে পুরো শহড় খুঁজে বেড়াবে মোম কে। মোমের বাবা মোমকে নিয়ে তার কাছ থেকে বহু দূরে চলে যাচ্ছে। আগুনের মাথা কাজ করছে না। মোম কে ছাড়া বেচে থাকার কোন অর্থ নেই তার। আগুনের গাড়ি হঠাৎ একটা ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়ে উল্টে গেলো। আজ তার বড় বিপদ। আগুনের এসবে লক্ষ্য নেই তার ঠোঁটে শুধু মোমের নাম। আগুন বুঝতে পাচ্ছে আজ তার বড় বিপদ। কি বিপদ সেদিকে খেয়াল নেই তার।
আগুন মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলো। মোম তাকে বলেছিল –
দোয়া ইউনুস হলো –
______________________________

উত্তরঃ-তিমি মাছের পেটে থাকা অবস্থায় ইউনুস (আঃ) এই দোয়া পড়েছিলেন এবং কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছিলেন।
ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﺇِﻧِّﻲ ﻛُﻨْﺖُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻈّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ
উচ্চারণঃ লা ইলা-হা ইল্লা-আনতা, সুবহা ’-নাকা ইন্নি কুনতু মিনায-যোয়ালিমিন।
অর্থঃ (হে আল্লাহ) তুমি ছাড়া আর কোনো মা’বুদ নাই, তুমি পবিত্র ও মহান! নিশ্চয় আমি জালেমদের অন্তর্ভুক্ত।
কুরানুল কারীমে এই দুয়া বর্ণিত হয়েছে সুরা আল-আম্বিয়া: আয়াত নাম্বার ৮৭ তে।
এই দুয়ার উপকারীতাঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “কোনো মুসলিম যদি এই দুয়া পড়ে, তার দুয়া কবুল করা হবে। অন্য হাদীস অনুযায়ী, এই দুয়া পড়লে আল্লাহ তার দুঃশ্চিন্তা দূর করে দিবেন। ” সুনানে আত-তিরমিযী।
দুয়া কিভাবে পড়তে হবেঃ
বিপদ আপদ বা দুঃশ্চিন্তার সময় এই দুয়া বেশি বেশি করে পড়তে হয়। যতবার ইচ্ছা ও যতবার সম্ভব হয় ততবার পড়বেন।
(এক লক্ষ পঁচিশ হাজার পড়ে যে “খতম ইউনুস ” পড়ানো হয় হুজুর বা মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে, বা দুয়া কেনাবেচা করা হয় – এইগুলো বেদাত – এই রকম খতম করানোর কোনো দলীল নেই শরীয়তে) ।
আপনার যতবার সম্ভব হয় ততবার পড়বেন – এত এত বার পড়তে হবে, এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আপনি নিজের জন্য নিজে দুয়া করবেন – আল্লাহর কাছে সেটাই বেশি পছন্দনীয়। সর্বোত্তম হচ্ছে – ফরয/নফল/সুন্নত যেকোনো নামাযের সিজদাতে এই দুয়া পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। এক্ষেত্রে সিজদার তাসবিহ পড়ার পর ইচ্ছা মত সহিহ হাদিস দিয়ে প্রমানিত দুয়া সমুহ পড়তে পারবেন।

আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর অতুলনীয় রহমতের ছায়ার মধ্যে আশ্রয় দিক – আমীন। মোম অনেক দিন আগে দোয়াটা বর্ণনা করেছিল।
আগুন – যদি দোয়া ইউনুস পড়ে তিমি মাছের পেট থেকে বের হওয়ার মতো বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায় তাহলে তার জীবনের বিপদ আর দুঃশ্চিতা থেকে অবশ্যই বের হওয়া যাবে।
আগুনের মনে হচ্ছিল মোম কে সে চিরতরে হাড়িয়ে ফেললো বুঝি!!!!!
.
.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here