প্রিয়জন❤Part-39

0
2402

প্রিয়জন❤Part-39
Writer-Moon Hossain

(#38 এর বাকি অংশ টুকু)
মোম হতভম্ব! যেখানে ওর জ্ঞান হারানোর কথা ওখানে আগুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আগুনের মুখে পানি ছিটের জায়গায় মোম তার চুল দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছে।
মোম – আমার মনে আছে উনি আমাকে বলেছিলেন, গভীর ঘুমে থাকলেও আমার চুলের সুভাসের ঝাপটায় ঘুম ভেঙে যাবে।
জ্ঞান হারিয়ে এখন উনি ঘুমুতে শুরু করেছেন তাও আবার নাক ঢেকে।
ঘুমিয়ে মুচকি হাসছেন। চোখের পাতা নড়ছে তার মানে উনি সপ্ন দেখছেন।
আমার উনার সপ্নের ভেতর যেতে ইচ্ছে করছে। উনার সপ্নে আমি আছি কিনা তা দেখতে মন চাচ্ছে।
এই জোছনার রাতে, চাঁদের আলোয় পুরো গোলাপের সজ্জিত কামরাটায় যেন নূরের আলোর ছটায় ঝলমলে করছে। আমার দুষ্টু স্বামীর ঘুমন্ত মুখ খানি এতো নীলাভ লাগছে কি বলব। উনার গালে একটা চুমু দিলাম খুব লজ্জা পেয়ে যদি চোখ মেলে দেয় এই ভয়ে। চোখ মেলে দিলে আমার আর রক্ষে নেই। উনি এই চুমু দেওয়ার প্রতিশোধ নিয়ে ছাড়বেন।
পাগল একটা!
উনার ঘুম ভেঙে গেলে নির্ঘাত বলবে – প্রিয়তমা তুমি এমন কিভাবে করতে পারলে? একটা ঘুমন্ত নিরীহ অসহায় অবলা ছেলের কাছ থেকে সুযোগ নিলে? আমার সম্মান নিয়ে এই ভাবে টানাটানি করতে পারলে? এখন আমি নিজের মুখ আয়নায় দেখব কিভাবে?
উনার কথা ভেবে খুব হাসি পাচ্ছে। দুষ্টু কোথাকার!
.
.
উনার ঘুম যেন না ভাঙে আজ রাতে। তাহলে আমাকে ঘুমুতে দেবেন না। বলবে সারা রাত তোমাকে আজ দেখব! খুব ভালো করে দেখব!
আজকের রাতটা ঘুমন্ত অবস্থায় কাটাব উনাকে নিয়ে। খুব ভালো লাগছে আজকের মূহুর্ত।
অবশেষে আমার ছেলেবেলার স্বামী কে আমার করে পেলাম। উনার লাল টুকটুকে বউ হলাম।
.
আমি উনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম আর উনাকে দেখলাম পা থেকে মাথা পর্যন্ত। ইশশ, কত সুন্দর আমার প্রিয়তম স্বামী। উনাকে দেখিইনি ভালো করে আজ পর্যন্ত।
কত আতংক নিয়ে উনার সাথে দেখা করতাম, উনার সাথে কথা বলতাম।
.
মোম অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আগুনের দিকে। এই সেই আগুন যে তার মোম কে এতো ভালোবাসে।
এদিকে আসলাম আজ ডেইজির পাল্লায় পড়ে ড্রিংক করছে।
ডেইজি আসলামের সাথে যোগাযোগ করে একটা ডিল করেছে।
মোমকে ডেইজি আসলামের হতে হেল্প করবে।
ডেইজি মনে মনে একটা কথায় বলছে – আগুন তুমি আমার সৌন্দর্য কে অপমান করেছিলে। আমাকে অবজ্ঞা করেছিলে। তুমি আমাকে ইগনোর করেছিলে। ইচ্ছে করলে আমাকে কাছে টেনে নিতে পারতে বাট তা করোনি। উল্টো আমাকে উপদেশ দিয়েছো যেন বোরখা পড়ি। মোম কে তুমি অনেক ভালোবাসও তাইনা।
ঠিক আছে আমিও দেখব মোম কে তুমি কিভাবে নিজের কাছে রাখতে পার।
.
আসলাম ড্রিংক খেতে চাচ্ছিল না।
ডেইজি বলল- আপনার বুকে ঐ আগুন যে কষ্ট দিয়েছে তা একমাত্র ভোলাতে পারবে এই ড্রিংক।
তাছাড়া আপনি এতো পূন্য করছেন। একটু ড্রিংক করলে আপনার আল্লাহ আপনাকে মাফ করে দেবেনা? আল্লাহ তো সবাই কে মাফ করে দেয়।
– কিন্তু মদ পান করা হারাম!
– আজ আপনার মোমের সাথে বাসর করছে আগুন।
মোম কে নিয়ে সে সুখের সাগরে ভাসছে। আর আপনি কিনা চোখের পানি ফেলবেন? আপনিই তো বলেছিলেন আল্লাহ সবাই কে মাফ করে দেয় তাহলে আপনাকেও মাফ করবে হারাম কাজ করলে।
আসলাম রেগে ঢক ঢক করে ড্রিংক খাচ্ছে।
ডেইজি খুব ক্ষুব্ধ হয়ে হাসছে।
এদিকে মোম আগুনের কাছ থেকে একটু উঠতেই আগুন একটানে মোমকে তার নিচে ফেলে দিলো।
মোম চোখ বন্ধ করে বলল- ছাড়ুন কি করছেন কি?
আগুন একটু হাই তুলে বলল- এখনো তোমাকে ধরলাম না তো ছাড়ব কিভাবে?
– আপনার ঘুম কখন ভাঙলো?
– তুমি তোমার চুলের সুভাস দেওয়ার পর ভাঙলো।
এখন আমি নিশ্চিন্তে জেগে আমার কাজ করতে পারব।
-কি কাজ?
আগুন হেসে মোমের গলায় মুখ গুঁজে বলল- বললে লজ্জা পাবে। তার থেকে দেখা বেটার মাই ডিয়ার প্রিয়তমা স্ত্রী!
.
.
চলবে…
#প্রিয়জন❤
Writer-Moon Hossain
Part-39
আগুন – প্রিয়তমা আমাকে একটা চিমটি দেবে?
মোম লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বলল – কেন?
– তুমি আমার বউ হয়ে আমার বেডে শুয়ে আছো আমার ঘরকে আলোকিত করে সেটা বিশ্বাস হচ্ছেনা।
-আমারও বিশ্বাস হচ্ছেনা না।
আমাকেও একটা চিমটি দিন।
আগুন হেসে বলল- প্রিয়তমা আমরা এই দিনটার জন্য কত অপেক্ষা করেছি। কত কষ্ট পেয়েছি।
– অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে আমাদের।
আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে ভরসা করেছিলাম। উনার ইবাদতে মশগুল ছিলাম তাইতো আমরা এক হতে পেরেছি।
আগুন মাথা নাড়ালো।
মোম দুই হাত দুই পাশে আগুন তার হাত দিয়ে মুষ্টি বদ্ধ করে রেখেছে।
মোম লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে। মাঝে মাঝে হালকা চোখ মেলে তাকাচ্ছে। যখনই আগুনের তৃষ্ণার চোখ দুটোর সাথে দেখা হয় তখনই আবার চোখ বন্ধ করে ফেলে মোম।
আগুন- আল্লাহ তায়ালা আমার মনের আশা পূরণ করেছে। আমার ছোট বেলার আদরের বউ অবশেষে আমার হয়েছে।
আমার জন্য বাসরে এসেছে আমার প্রিয়তমা নিজেকে সুসজ্জিত করে। সবুজ শাড়িতে ওকে খুব সুন্দর লাগছে। রুম অন্ধকার তবুও চাঁদের আলোয় সবকিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমার প্রিয়তমার সৌন্দর্য অন্ধকারকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। ওর সৌন্দর্য চাঁদের আলোর থেকে বেশি আলোকিত।
আমি ওর ঘারের তিলটা আজকেই দেখলাম। কখনো ওকে এতো কাছ থেকে এভাবে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ও নিজের স্বামীর জন্য ওর এতো সৌন্দর্য সবার থেকে লুকিয়ে রেখেছে ভাবতেই আমার চোখে পানি চলে এলো।
আমি ওর ঘারে একটা চুমু দিয়ে হালকা একটা কামড় দিলাম।
ও চোখ মেলে বলল- কি করছেন?
– তোমাকে চিমটির জায়গায় কামড় দিচ্ছি। এখন বিশ্বাস করেছো তো? তুমি আমার বাসরে আছো সেটা বিশ্বাস হয়েছে?
ও শ্লেষমাখা কন্ঠে বলল- হ্যাঁ।
আমার বুকের ভেতর একটা প্রতিধ্বনি বাজছে। চারদিকের কোন কিছু খেয়াল নেই। শুধু আল্লাহর সৃষ্টি এই রূপবতী মেয়েটি যেন আমাকে পাগল করে দিচ্ছে। একটা জিনিস বুঝতে পারলাম, শুধু গায়ের রং সাদা হলেই কেউ রূপবতী হয়না। রুপ হচ্ছে মেয়েদের মধ্যে থাকা উপরওয়ালা নূর, ইসলামের মাহাত্ম্য, মায়া, মমতা, স্নেহ, ভালোবাসা, এসব কিছু মেয়েদের মধ্যে থাকে বলেই তারাই রূপবতী। নারী বলতেই রুপবতী। আমাদের বিভিন্ন কবি সাহিত্যরা প্রকাশ করেছেন, ফুলের সাথে নারীদের তুলনা করেছেন। ফুল বলতেই সুন্দরের প্রতীক। প্রতিটা ফুলের নিজস্ব সৌন্দর্য থাকে। ঠিক তেমন প্রতিটা নারী হলো এক একটা ফুল। আর ফুলে কোন ভেদাভেদ নেই। তাই নারী বলতেই ফুলের মতো পবিত্র সৌন্দর্যের অধিকারী।
.
আমি মোমের খুব কাছে গেলাম। যেখান থেকে ওর নিশ্বাসের আওয়াজ শোনা যায়। ওর নিশ্বাস আর ওর হ্রদয়ের স্পন্দন শোনার চেষ্টা করলাম।
.
আমি ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে ওর গোলাপি আাভা ছড়ানো গালে একটু নাক ঘষলাম। লক্ষ্য করলাম লজ্জায় ওর গায়ে এক ধরনের গোলাপি আভা বের হচ্ছে। প্রতিটা মেয়ের লজ্জা পেলে এমন গোলাপি আভা দেখা যায় মনে হয়। ও কেঁপে কেঁপে উঠলো। ওর ঠোঁট জোড়া নড়ছে।
আমি ওর কানে ফিসফিস করো বললাম – আজ কিন্তু তোমাকে নিয়ে প্রেমের শহরে যাব। বাঁধা দিতে পারবে না।
দিলেও শুনব না। ও সংকুচিত হয়ে একপাশে মুখ ফিরিয়ে নিলো। আমি ওর মুখশ্রীতে অনেক গুলো চুমু দিয়ে ওর লাল ঠোঁট জোড়ায় ঠোঁটের ছোঁয়া দিলাম। মনে হচ্ছে আমি কোথায় হাড়িয়ে গিয়েছি। আমি ওর ঠোঁট জোড়া অনেক ক্ষণ পর ছেড়ে দিলাম কারণ ফিল করতে পাচ্ছিলাম সুখের সাথে ওর হালকা কষ্ট হচ্ছিল। মনে হলো ও হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
কিছু একটা বলবে বাট লজ্জায় কিছু বলতে পাচ্ছেনা মুখ ফোটে।
আমি ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে ওকে কোলে তুলে সোজা বেলকুনিতে নিয়ে গেলাম। ওকে কোলে তুলে নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটলাম।
ওকে বলেছিলাম আমি ওকে কোলে নিয়ে বাসরের অর্ধেকটা সময় কাঁটাব। ও বিশ্বাস করছিল না। আমাকে অন্যদের মতো ভাবছিল।
আমি ওর কানে কানে বললাম, এবার বিশ্বাস হয়েছে তো?
আমি তোমাকে কোলে নিয়ে হাঁটব এটা আমার একটা শখ ছিল।
মোম – উনি আজ আমাকে নতুন রুপ দেখালেন উনার। এতো ভালো কেন আপনি? আমাকে কোলে নিয়ে সেই কখন থেকে হাঁটছেন। একবার ওখানে যাচ্ছেন, একবার সেখানে যাচ্ছেন আর আমার কপালে চুমু একে দিচ্ছেন।
এতো শান্তি লাগছে যে কি বলব। সুখেই আমি মরে যাব আজ উনার বুকের মধ্যে।
উনার কষ্ট হচ্ছে কিনা জানিনা তবুও নামিয়ে দিতে বললাম। উনি বলল- লন্ডনে বিশেষ বক্সিংয়ের কম্পিটিশনে রানারআপ হয়েছিলাম প্রিয়তমা। তোমার মতো দশজনকে কোলে নিয়ে তিনদিন অনায়াসে থাকতে পারব।
তাছাড়া তোমার ওজন কম, মনে হচ্ছে এক ফালি সুখ আমার কোলে নিয়েছি। এবার বলো সুখ কখনো কেউ দূরে ঠেলে দেয়।
উনি আমাকে একেবারে বুকের সাথে আরও শক্ত করে জড়িয়ে বলল- তোমাকে আমার বুকের মধ্যে মিশিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে প্রিয়তমা।এখন বলো কি করা যায়!?
.
.
অনেকক্ষণ পর উনি আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিলেন।
উনি আমার খুব কাছে আসতেই আমি কাঁপতে শুরু করলাম। আমার বুক ছটফট শুরু করতে লাগলো। খুব ভয় করছে আর অসহায় লাগছে এই মূহুর্তে নিজের স্বামীর কাছে। আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি গলার স্বর নরম করে বললেন – ভয় লাগছে প্রিয়তমা?
আমাকে তুমি ভয় পাচ্ছো? তোমার আমাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি তোমার সিচুয়েশন বুঝতে পাচ্ছি।
ভয় পেলে বলো আমাকে?
আমি কোন কথা বলতে পারলাম না।
আগুন- আমি ফিল করতে পাচ্ছি ও ভয় পাচ্ছে। আমাকে ও যেন ভয় না পায় সেটা বলার পরে ওর ভয় কমেছে সেটা ওকে দেখলে বোঝা যায়।
আমি ওকে বললাম – তুমি আমাকে ভয় পাচ্ছো সেটা মুখ ফুটে বলতে হবেনা। জাস্ট একটা ইশারা করো।
ও চোখ মেলে হালকা তাকাতেই আবার চোখ বন্ধ করে ফেলল।
আমি হেসে ওর চুল টান দিয়ে বললাম – নিজের স্বামীকে ভয় পাও তুমি? তুমি না কত সাহসী? আমাকে একবার মুখ ফুটে বললেই পারতে?
আমি ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে বললাম – তোমাকে আমার করতে পেরেছি এটাই আমার সৌভাগ্য। তোমার কাছাকাছি সব সময় থাকতে পারলেই আমি সুখী। আর কিছু চাইনা আমার।
আমাকে ভয় পেয়োনা আর প্রিয়তমা? আমি তো তোমাকে বুঝতে পারি তাইনা প্রিয়তমা?
সারাজীবন তো পরেই আছে বাসরের জন্য!
মোম – উনার কথা শুনে আমি মুগ্ধ হলাম। উনি সত্যিই মানুষ? । হঠাৎ আমি উঠে বসলাম।
উনি আমার গালে হাত দিয়ে বললেন, কোন সমস্যা প্রিয়তমা?
আমি প্রচন্ড সুখে নিজের সমস্ত অস্তিত্ব আর শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। নিজেকে খুব দূর্বল আর হালকা মনে হচ্ছে। আমি উনার কোলে ঢলে পড়লাম। গায়ের সমস্ত ভর ছেড়ে দিলাম উনার উপর। উনি একটু চমকে বললো – তুমি ঠিক আছো? তোমাকে কেমন যেন লাগছে। আমি ডক্টর কে ফোন করছি।
আমি আমার দুই হাত উনার গলা জড়িয়ে ধরে মাথা নাড়ালাম। উনি আমাকে একবারও আমার হেল্প লেস নিয়ে কিছু বলেনি। আমাকে কোন বিষয়ে জোর করেনি।
উনি আমাকে অজস্র বার ভালোবাসি কথাটি বলেছেন। কিন্তু আমি কখনো বলিনি।
আজ মনে মনে বললাম – আমি তোমাকে ভালোবাসি! আমি তোমাকে ভালোবাসি! আমি তোমাকে ভালোবাসি! উনি বুঝতে পারছেন বা ফিল করতে পাচ্ছেন কিনা সেটা জানিনা। তবে মুখ ফুটে এই বাক্য বলার শক্তি বা সাহস কোনটাই নেই। তাই মনে মনে এখন অজস্র বার বলছি ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি। আমি মাতাল হয়ে গিয়েছি উনার প্রেমের সুখে। আমি নিজের মধ্যে নেই।
উনার চোখে তাকিয়ে উনাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি আমি প্রচন্ড সুখে বাকশক্তি আর মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছি।
উনি হঠাৎ আমাকে নিয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়লেন।
আমার গালে অজস্র চুমু দিয়ে উনার বুকের সাথে লেপ্টে জড়িয়ে ধরলেন আমাকে।
উনি বললেন – এখানে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়। আমি তোমার গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। আমি তোমাকে না বুঝতে পারলে আর কে বুঝবে? স্বামী হয়েছি বলেই কি স্ত্রীর উপর অধিকার খাটাব? তুমি তো হারিয়ে যাচ্ছো না? মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা একসাথেই থাকব। আমাদের প্রতিটা রাত, প্রতিটা দিন হবে সপ্নের বাসর । আমাকে ভয় পেয়ো না প্রিয়তমা।
উনার কথা শুনে আবারও মুগ্ধ হলাম। আমি উনার উপর উনার বুকে একেবারে
লেপ্টে শুয়ে আছি উনাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে। আর উনি উনার এক হাত দিয়ে আমার চুলে বিলি কাটছেন আর অন্য হাত দিয়ে আমার গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
আগুন ফিসফিস করে বলল- আমি জেগে থাকব কেননা মনে হচ্ছে ঘুম থেকে উঠলেই মনে হবে সপ্ন ভেঙে যাবে। তাই সারা রাত জেগে আমি তোমাকে দেখব প্রিয়তমা। তোমাকে দেখার বড় স্বাদ ছিল আমার।
মোম পরম সুখে ঘুমিয়ে পড়লো তার ভালোবাসার স্বামীর বুকে।
চাঁদের আলোর ছটায় এই অন্ধকার কামরায় এই দম্পতির ভালোবাসা আলোকিত হচ্ছে। দুজনের থেকে কেউ কারও কাছ থেকে আলাদা না হওয়ার শপথ নিয়ে ভালোবাসার।
. ভোরের আজান ভেসে আসছে। আগুনের ঘুম ভাঙেনি। মোমের ঘুম ভাঙতেই সে আগুনের বুকে নিজেকে আরও লেপ্টে দিলো। মনে মনে চোখ বন্ধ করে বলল- তোমাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি।
হঠাৎ উনি চোখ মেলে তাকালেন। ভয় পেয়ে পেয়ে গেলাম, উনি কি শুনে ফেলেছেন?
উনি বললেন – শুভ সকাল প্রিয়তমা?
আমি কিছু না বলে তাকিয়ে আছি। লজ্জায় আমার কেটে যাওয়ার মতো অবস্থা। এজন্য ছেড়ে যেতেও পাচ্ছিনা উনাকে। কারণ আমার লজ্জা আর লজ্জা নিবারণ উনার মধ্যেই ।
উনি আমার গালে চুমু দিয়ে বললেন – আজকের নতুন জীবন সংসার হোক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা দিয়ে। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখেছিলাম বলেই সব বাঁধা পেড়িয়ে তোমাকে পেলাম।
উনি বললেন-
আপনার বিয়ে হতে পারে পৃথিবীর নিকৃষ্ট ব্যাক্তিটির সাথে, যেমন আসিয়ার হয়েছিল ফির’আউনের সাথে- কিন্তু এর ফলে আল্লাহর প্রতি তার বিশ্বস্ততা কিংবা ভালবাসা কোনটাই কমেনি।

আপনার বিয়ে হতে পারে পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তিটির মধ্য থেকে কারো সাথে, যেমন হয়েছিল লুত (আঃ) কিংবা নূহ (আঃ) এর স্ত্রীদের – কিন্তু সেটা তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারেনি ।
আপনার কারো সাথে বিয়ে না ও হতে পারে, যেমন হয়েছিল মরিয়ম (আঃ) এর ক্ষেত্রে কিন্তু আল্লাহ্ রাব্বাল আলামীন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠা নারীদের মধ্যে তাঁকে শামিল করে সম্মানিত করেছেন

মনে রাখবেন আপনার ভালবাসা এবং বিশ্বাসের
অধিকার সর্বপ্রথম আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালার !
– সো প্রিয়তমা তুমি নিশ্চয়ই জানো এগুলো?
আমি মাথা নাড়ালাম।
-আমরা সবার আগে আমাদের রবের প্রতি বিশ্বাস রাখব তাহলেই শরীয়ত মোতাবেক সংসার জীবন শুরু করতে পারব। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সংসারে অঢেল সুখ স্থাপন করবে।

.
আগুন মোম কে হঠাৎ কোলে নিয়ে ওয়াশ রুমে নামিয়ে দিয়ে বলল- আমি নিচে যাচ্ছি। তুমি বরং গোসল করে নাও। আমি থাকলে লজ্জা পাবে সো আমি চলে যায়।নাকি থাকব প্রিয়তমা?
মোম আগুনকে একটা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলো।
এখনো কেউ ঘুম থেকে উঠেনি। তাই আগুন পাঞ্জাবি নিয়ে নিচের ওয়াশরুম থেকে গোসল করে নিলো।
মোম বের হয়ে দেখে আগুন জায়নামাজ নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
আগুন মোমকে জায়নামাজ দিয়ে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হলো।
মোম জায়নামাজে বসেই অপেক্ষা করছিল নামাজ পড়ে। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ মোম কে জরিয়ে ধরলো।
মোম বুঝতে পাচ্ছে কে ধরেছে।
আগুন জায়নামাজ ডেস্কে রেখে মোম কে কোলে নিয়ে বেলকুনিতে গেলো।
আসলাম আর ডেইজি গাড়ির ভেতর থেকে আগুনের বাড়ির সামনে তার রুমের বেলকুনির দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছিল। তারা দুজন পরিষ্কার দেখতে পেলো আগুন মোমকে কোলে নিয়ে বেলকুনিতে এসেছে। আসলামের হাতে ড্রিংকের বোতল ভেঙে রক্ত ঝরছে।
আগুন বলল- মনে হচ্ছে আমি সপ্ন দেখছি।
তুমি আমার পাশে এটা বিশ্বাস হচ্ছেনা! পৃথিবীর কোন শক্তি আমাদের আলাদা করতে পারবেনা কারণ আল্লাহ তায়ালা আমাদের সাথে আছে।
আগুন হঠাৎ মুচকি মুচকি হাসছে!
.
.
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here