প্রিয়জন❤Part-45
Writer-Moon Hossain
আগুন ঠিক কি ফিল করছে সেটা সবার ধারণার বাহিরে।
সে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে গাড়ি ছাড়া পুরো রাস্তা মোম কে খুজঁতে খুঁজতে হেঁটে হেঁটে এলো। বাসায় আসা মাত্রই সবাই আগুনের দিকে জিজ্ঞেসা স্বরুপ তাকিয়ে রইল। আগুনের চোখের ভাষা সবার জানা। আগুন শাওয়ারে খালি গায়ে দাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে মোমের কথা ভাবতে লাগল।
মোম কে কিছুতেই শাওয়ারের নিচে দাঁড় করানো যেত না। আগুন একদিন কোলে করে মোম শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে শাওয়ার অন করলো
শাওয়ার অন করতেই মোমের সে কি চিৎকার আগুন কে জরিয়ে ধরে। মোমের ধারণা শাওয়ার থেকে পানির জায়গায় রক্ত ঝরবে।
আগুন এই যে বলল- প্রিয়তমা তাকাও প্লিজ। তাকিয়ে দেখ পানি পড়ছে তোমার গায়ে।
মোম চিৎকার করে তখন বলতো, আমি তাকালেই দেখবেন পানি না রক্ত ঝরতে শুরু করবে।
আগুনকে এমন ভাবে মোম জরিয়ে ধরে আছে যে আগুনেররও মনে হতে লাগল শাওয়ার থেকে সত্যি রক্ত ঝরবে।
আগুন তখন বলতো – প্রিয়তমা যদি নিজ থেকে আমাকে একটা কিস করো তাহলে দেখবে আর শাওয়ার থেকে রক্ত ঝরছে না।
মোম তখন জোরে কামর দিয়ে বলতো – এবার হয়েছে?
.
.
আগুন নিজের মনে হেঁসে দিলো।
আগুনের বাবা বলল সে জান দিয়ে হলেও তার বৌমা কে নিয়ে আসবে সুস্থ ভাবে।
তিনি প্রায় সব রকম চেষ্টা করে যাচ্ছেন মোম কে খোঁজার৷ শহরের সব গুন্ডাপান্ডাও লাগানো হয়েছে। আগুন আছরের নামাজ পড়ে মোনাজাতে আল্লাহ কে ডাকলো। মোম কে সুস্থ ভাবে এক নজর দেখার জন্য আগুনের মন ছটফট করছে।
এদিকে মোমের বাবা মা ভাই সবাই চিন্তিত হয়ে পড়লো মোমের জন্য।
মোমের কি হয়েছে না জানা পর্যন্ত কারও চোখে ঘুম নেই।
আগুন নিজেই মোমকে খুঁজতে বের হলো। সে বুঝতে পেরেছে কেউ শত্রুতা করে এটা করেছে। ব্যাবসায়ীক অনেক ক্ষেত্রে আগুনের শত্রু আছে। আগুন সবার কাছেই যোগাযোগ করেও কোন ফল পেলো না। তখনই একটা ফোন পেলো ডেইজির। তখন প্রায় মাঝরাত।
.
.
মোম বসে আছে একটা রুমে। রুমটা খুব বড়। রুমে একটা বেড, আলমারি, ছোট ফ্রীজ সব আছে। ফ্রীজে ড্রিংক, ফলমূল সব রাখা। রুমের ভেতর একপাশে সোফা আছে, সোফাতে কম্বল রাখা আছে। ইচ্ছে করলে বসেও থাকা যায় আবার শুয়েও থাকা যায়।
মোম সোফায় বসে আছে। তার খুব পেট ব্যথা করছে। সারাদিন জোর করেও কেউ তাকে কিছু খাওয়াতে পারেনি।
মোম যখন গাড়ি থেকে নেমে ক্লাসের দিকে যাচ্ছিল তখনই ডেইজি এসে সামনে দাড়ালো।
মোম ডেইজি কে দেখে সালাম দিয়ে চলে যেতে লাগল।
ডেইজি বলল- মোম দাড়াও।
মোম বলল- জি বলুন?
-তোমাকে কিছু বলার আছে। আশা করি আমাকে চেন আমি কে?
– জি আপনি উনার বন্ধু।
আপনাদের কথা উনি আমাকে বলেছে।
আপনাকে উনি বন্ধু ভাবলেও আপনি উনাকে পছন্দ করতেন।
ডেইজি তার সামনের চুল ঘুরিয়ে বলল- তাহলে সবকিছু জানো দেখছি।
– আপনি উনার দিকে আর কখনো তাকাবেন না। উনার সাথে কোন রকম যোগাযোগ করবেন না। কারণ উনি আমার স্বামী। উনার নিজের স্ত্রী আছে।
আপনি নতুন করে জীবন শুরু করুন।
আপনি আল্লাহর পথে আসুন। তওবা করুন দয়া করে ।
ডেইজি চশমা খুলে বলল- আমি অনেক ভেবেছি। ডিসিশন নিয়েছি তুমি আর আগুন ঠিক বলেছো।
তাই আমি তোমার কাছ থেকে নিয়ম কানুন শিখতে এসেছি। আশা করি তুমি আমাকে সাহায্য করবে?
মোম হেসে বলল- কেন নয়। মুসলিম হিসেবে তার কর্তব্য অন্যদের আল্লাহর পথে আসার জন্য সাহায্য করা।
ডেইজি মোমের হাত ধরে বলল- তাহলে চলো আমার বাড়ি চলো। ওখানে আমাকে শিখিয়ে দেবে।
– কিন্তু এখন তো ক্লাস আছে।
-আহা! ক্লাস আগে নাকি আল্লাহ পথ আগে?
-কিন্তু উনাকে না বলে আমি যেতে পারবনা। আমি শুধু ক্লাসে আসার অনুমতি নিয়েছি উনার কাছ থেকে।
দাড়ান উনাকে একটা ফোন করে নিই।
ডেইজি তখন মাথা ঘুরে পড়ে যেতে লাগল। আগুন কে আর ফোন করা হলো না।
মোম ডেইজির সাথে তার গাড়িতে তার বাড়ি গেলো।
ডেইজির বাড়িতে আসার পর ডেইজি মোম কে নিয়ে একটা রুমে এলো।
রুমে আসার আগেই কায়দা করে মোমের ফোন নিয়ে নিলো ডেইজি।
মোম রুমে আসলাম কে দেখতে পেলো।
মোম ডেইজির দিকে তাকিয়ে আছে জিজ্ঞেসা দৃষ্টিতে।
ডেইজি বলল- সরি বেবি সরি। তোমাকে আমার জন্য না মিঃ আসলাম শেখের জন্য নিয়ে এসেছি।
আসলাম – মোম আমি ডিভোর্স পেপার রেডি করেছি। তুমি সাইন করলেই হবে তার পর মুখে তালাক নলে দিলেই হবে।
মোম সোজা ডেইজির গালে থাপ্পড় মেরে বসলো।
ডেইজি আর আসলাম হতভম্ব!!
.
.
মোম কারও পায়ের আওয়াজ পেলো।
মোম সোফাতে ঘুমিয়ে পড়েছিল। রুমে বসেই সে নামাজ পড়ে এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করলো।
মোম শুধু মনে মনে ভাবছে কখন সে তার স্বামীর কাছে ফিরে যাবে।
মোমের বিশ্বাস আছে তার আগুন তাকে খুঁজে বের করে তার কাছে নিয়ে যাবে।
.
.
মোম চোখ খুলে ডেইজি কে দেখতে পেলো।
ডেইজি বলল- আগুন তোমাকে নিতে আসবে না। এখানে আসলে সে জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পারবে না সো চুপচাপ সাইন করে আসলাম শেখ কে বিয়ে করে নাও। আসলাম শেখ তোমাকে ভালোবাসে মোম।
মোম কোন কথা বলল না দেখে ডেইজি অপমান বোধ করলো।
– এই আমি তোমার সাথে কথা বলছি। নিজেকে বিশ্ব সুন্দরী মনে করো?
মোম এবার মুখ খুলে বলল- মোটেও না। আমি অতি নগন্য।
-তাহলে কথা বলছো না কেন?
-আপনার সাথে কোন কথা নেই আমার। আপনার সাথে আর জনাব আসলামের সামনে কথা বলবেন আমার স্বামী।
-তোমার খুব বিশ্বাস আগুনের উপর তাইনা?
তোমাদের এই বিশ্বাস ভেঙে গুড়ো হয়ে যাবে।
এখন দয়া করে কিছু খেয়ে আমাকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দাও। তোমার প্রেমিক আসলাম আমাকে পাঠিয়েছে তোমাকে খাওয়ানোর জন্য।
বেচারা না খেয়ে আছে।
মোম ডেইজির দিকে তাকিয়ে দুই হাত দিয়ে নিজের কান চেপে ধরলো।
– কি ব্যপার এমন করছো কেন?
-দয়া করে চুপ করুন।আপনার মুখের ভাষা ঠিক করুন। কথায় লাগাম দিন। আল্লাহ তায়ালা মানুষের মুখের কথার বিচার করবে।
আমি একজন বিবাহিতা নারী। অন্য কারো সাথে আমর নাম নেবেন না।
এগুলো পাপ!
আমি কিছু খাব না। একা থাকতে দিন আমাকে।
একজন বিবাহিতা নারী কে স্বামী থাকতে অন্য বেগানা পুরুষের হাতে জোর করে তুলে দিচ্ছেন, এটা যে জঘন্য পাপ তা আপনার ধারণার বাহিরে।
ডেইজি কিছু ক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল- এসব আমি জানিনা। তবে তুমি জানতে চাচ্ছো না কেন আমি এমন করছি?
– কেন?
-তাহলে শোন, আমি সেই লন্ডন থাকা কালীন আগুন কে নিজের মন দিয়ে ফেলেছিলাম। ওর এটিটিউট আমাকে ম্যাড বানিয়েছে। ওর স্টাইলের দেওয়ানী হয়েছি। আমি ওকে আমার করে পেতে চেয়েছিলাম। আর ও আমাকে ফেলে নিজেকে তোমার মধ্যে অনেক আগেই ডুবিয়ে ফেলেছে।
আমি ওর জন্য কতটা আঘাত পেয়েছি তা আমি জানি।
তাই তোমাকে আসলামের কাছে তুলে দিচ্ছি। যেন আগুন বুঝতে পারে পছন্দের মানুষ অন্যের হলে কেমন আঘাত লাগে।
আমি যেমন জ্বলছি তেমন আগুনও জ্বলবে তোমার জন্য।
তোমাকে দিয়ে সাইন করিয়ে একমিনিটও লাগবেনা আসলামের সামনে বিয়ে দিতে। সবকিছু রেডি আছে। আসলাম তোমাকে নিয়ে সোজা সৌদি যাবে। আগুন তোমাকে খুঁজেও পাবেনা।
.
.
খুব ভালোবাসে আগুন তোমাকে তাইনা? তোমার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত তাইনা? আমাকে বলে কিনা ঐ চোখে দেখেইনি কোনদিন। আমি কত ভাবে লন্ডনে থাকা কালীণ ওর কাছে নিজেকে প্রেজেন্ট করেছি বাট কখনো তাকিয়েও দেখিনি। তখন তো জানতাম না সে তার বালিকা বধূর কথা ভাবছে। বলে কিনা হুজুর টাইপ লোকের সাথে আমাকে বিয়ে দেবে।
.
মোম সোজা ডেইজির গালে আরেকটা থাপ্পড় দিলো।
– আপনার ভালোবাসা ছিল লালশার ভালোবাসা। যেটা কোন ভালোবাসা নয়। আপনি মোহে পড়েছিলেন। এখন মোহ কেটেছে তাই উনাকে কষ্ট দিতে চাচ্ছেন। আপনার ভালোবাসা যদি সত্যি থাকতো তাহলে কখনো উনার ক্ষতি করতে চাইতেন না।
.
মোম জোরে বলল – একা থাকতে দিন। চলে যান এখুনি। ভাববেন না পালানোর চেষ্টা করব।আমার স্বামী আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাবে।
.
আগুন ডেইজিদের বাড়িতে গিয়ে সব জায়গায় মোম কে খুঁজতে লাগল কিন্তু মোম বা ডেইজি কাউকে পেলো না।
আগুন ডেইজিদের বাংলো বাড়ির কথা জানেনা।
আগুন প্রায় পাগলের মতো হয়ে গেলো।
মোমকে রাতের মধ্যে খুঁজে না পেলে মোমের সম্মান হানী হতে পারে। এটা আগুন বেচে থাকতে কখনো হতে দেবে না।
মোম কে আজ রাতেই হোক প্রাণ দিয়ে হলেও ফিরিয়ে আনবে।
.
.
আগুন মোম কে চারদিকে খুজতে লাগল। আগুনের বাবা, মোমের বাবা, আশরাফ সবাই মিলে মোম কে খুঁজে পাচ্ছেনা।
সবাই বুঝেছে এরা আসলামের কাজ।
.
.
আসলাম মোমের সাথে দেখা করার জন্য যেতেই মোম সোফ থেকে দাড়িয়ে পড়ল।
– খবরদার রুমে ঢুকবেন না। বেগানা লোক হয়ে একজন বিবাহিতা নারীকে এভাবে রুমে আটকে রাখতে একটুও লজ্জা করে না?
আপনি ইসলামিক ভাবে দীক্ষিত একজন লোক হয়ে এমন কাজ কিভাবে করছেন? আপনি জেনে শুনেই প্রথম থেকেই আমার পেছনে লেগে আছেন। আপনি আমার সম্পর্কে আমার আগে থেকেই সবকিছু জানতেন তবুও বিয়ের প্রস্তাব কেন দিলেন?
দয়া করে আমাকে যেতে দিন। উনাকে ফোন করে আসতে বুলুন। আমাকে আমার স্বামীর কাছে যেতে দিন। উনি আমার জন্য খুব কষ্টে আছেন। না জানি কি করছেন। খেয়েছে কিনা কে জানে।
আসলাম চুপ করে আছে বলে মোম বলল – তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসুন। আল্লাহ পরম দয়ালু। আপনাকে মাফ করে দেবে।
অনেকই জানতে চেয়েছিলেন #ইস্তেগফার কী এবং কখন করব?
.
#উত্তরঃ অনেক সমস্যার সমাধান #ইস্তেগফার. এটি আপনি সবসময় করতে পারবেন।
.
তাওবা ইস্তেগফার করার জন্য কি কি দুয়া করতে পারেন?
হাদিসে বর্ণিত তাওবার দোয়া সমূহ:
=========================
দোয়া-১:
======
মূল আরবীঃ أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হ।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
প্রতি ওয়াক্তের ফরয সালাতে সালাম ফিরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়া ৩ বার পড়তেন। [মিশকাত-৯৬১]
দোয়া-২:
======
মূল আরবীঃ أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হা ওয়া আতূবু ইলাইহি।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর দিকে ফিরে আসছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবা ও ইসতিগফার করতেন। [বুখারী-৬৩০৭]
দোয়া-৩:
======
মূল আরবীঃ رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ (الغَفُوْرُ)
উচ্চারণঃ রাব্বিগ্ ফিরলী, ওয়া তুব ‘আলাইয়্যা, ইন্নাকা আনতাত তাওয়া-বুর রাহীম। দ্বিতীয় বর্ণনয় “রাহীম”-এর বদলে: ‘গাফূর’।
অনুবাদঃ হে আমার প্রভু, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়। দ্বিতীয় বর্ণনায়: তাওবা কবুলকারী ও ক্ষমাকারী।
দোয়া-৪:
======
মূল আরবীঃ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম ওয়া আতূবু ইলায়হি।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছে তাওবাহ্ করি।
এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন-যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র হতে পলায়নকারী হয়। [আবু দাউদ-১৫১৭, তিরমিযী-৩৫৭৭, মিশকাত-২৩৫৩]
দোয়া-৫:
======
মূল আরবীঃ اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্ফির্লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা
অনুবাদঃ হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।
এই দোয়া সকালে পড়ে রাতের আগে মারা গেলে অথবা রাতে পড়ে সকালের আগে মারা গেলে সে জান্নাতে যাবে। [বুখারী-৬৩০৬]
পবিত্র কোরআনুল কারীমে তাওবা করার ব্যপারে তাগিদঃ
=========================================
• যে কেউ দুষ্কর্ম করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে পরে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পাবে। [সূরা নিসা ৪/১১০]
• নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবে না। কিন্তু যারা তওবা করে ও সংশোধন হয় তারা ব্যতীত। [সূরা নিসা ৪/১৪৫-১৪৬]
• যারা ঈমানদান নর-নারীর উপর যুলুম-নির্যাতন করেছে এবং পরে তওবা করেনি, তাদের জন্যে জাহান্নামের আযাব ও দহন যন্ত্রণা রয়েছে’ (সূরা বুরূজ ৮৫/১০)। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, وَتُوْبُوْا إِلَى اللهِ جَمِيْعاً أَيُّهَا الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার। [সূরা নূর ২৪/৩১]
.
[NB : অযু ছাড়া যেকোন সময় পড়তে পারবেন, যে কোন একটা ইস্তেগফার পড়লে হবে আবার চাইলে সব পড়তে পারবেন, এটি যত খুশি পড়তে পারবেন এটির সীমাবদ্ধতা নেই]
.
.
মোম কাঁদছে আগুনের জন্য। আসলাম বলল -আমি এসব জানিনা। আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের আগুনে পোড়ালে পোড়াবে। মোম আমি এমন ছিলাম না। কিন্তু তোমাকে আমি ভালোবাসি তাই এমন করছি। জানি এসব পাপ তবুও আমার মন মানেনা। তোমার জন্য আমারও কষ্ট হচ্ছে।
তুমি না খেলে আমিও যে খেতে পারিনা।
.
.
আগুন ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা রোডে এসে পড়েছে। আরমান সাহেবের গাড়ি দেখা যাচ্ছে। আগুন গাড়ি থামিয়ে আরমান সাহেবের কাছে গেলো। আরমান সাহেব আগুন কে দেখে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
আগুন বলল – প্লিজ কাঁদবেন না। মোম যদি জানে আপনি চোখের পানি ফেলেছেন তখন ও আপনার উপর অভিমান করবে।
আরমান সাহেব বলল- বাবা আগুন তুমিও চোখের পানি ফেলো না। তোমার চোখ দেখা বোঝা যাচ্ছে লুকিয়ে কেঁদেছো।
আগুন বলল- আমি পাতাল থেকে হলেও আপনার মেয়েকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দেব।
আরমান সাহেব বলল – মনে আছে তোমাদের বিয়ের কিছুদিন পর মোম হারিয়ে গিয়েছিল। কেউ ওকে খুঁজে পাচ্ছিল না। বিকেলে ফুটবল খেলে তুমি যখন বাড়ি ফিরে জানলে মোম কে পাওয়া যাচ্ছেনা তখনই তুমি মোম কে খোঁজার জন্য বেরিয়ে গেলে।
রাত ৮টার সময় মোম তুমি নিয়ে তবেই বাড়ি ফিরে এসেছিলে। মোমের সাথে তোমাকেও খোঁজতে হয়েছিল। আমরা তোমাকে বলেছিলাম তুমি কেন খুজঁতে গিয়েছিলে ওকে? তুমি মোম নিয়ে এসে বলেছিলে – বউ হারিয়ে গেলে বর তাকে খুঁজে আনবে নাতো কে আনবে? আমার বন্ধু কলিম?
আগুন হেসে দিলো আগের কথা মনে করে।
আগুন ড্রাইভ করছে আর মনে মনে বলছে – কোথায় তুমি প্রিয়তমা? আল্লাহ ওকে ফিরে দাও?
ও একা নিশ্চয়ই ভয়ে আছে। ও যেন সুস্থ থাকে।
হঠাৎ টুং করে একটা ম্যাসেজিংয়ের আওয়াজ হলো আগুনের ফোনে।
“তুমি যেখানে আছো সেখানে আমার লোক আছে। তোমাকে আমার লোকেরা একটা ডিভোর্স পেপার দেবে, তুমি সজ্ঞানে তোমার প্রিয়তমা কে ডিভোর্স দেবে পেপারে সাইন করে নতুবা তোমার প্রিয়তমাকে চিরতরে হারাবে। মোমের কি সিচুয়েশন করব তা তোমার ধারণার বাহিরে।
এদিকে ডেইজি মোম কে একটা পেপার দিয়ে বলল দেখতে। মোম পেপার দেখে অবাক হয়ে গেলো কারণ আগুন ডিভোর্স পেপারে সাইন দিয়ে পাঠিয়েছে।
চলবে……