প্রিয়জন❤Part-47-48
Writer-Moon Hossain
মোম- উনি ল্যাপটপে কাজ করছেন চুপচাপ।
একবারও আমার দিকে তাকাচ্ছেন না।
রুমে এসে সেই যে চুপচাপ সোফায় বসে বসে কাজ করছেন একটা কথাও বলছেন না।
আমি ভয়ে ভয়ে কোন কথা বললাম না। কিন্তু উনার সামনে দিয়ে একাবর যাচ্ছি বেলকুনিতে, একবার যাচ্ছি ওয়াশরুমে, একবার সোফায় উনার পাশে বসছি, আরেকবার বেডের মাঝখানে শুয়ে আবার উঠে বসছি।
.
আমি বোঝার চেষ্টা করছি উনি ঠিক কি ভাবছেন।
আসলাম শেখের মতো মেরে তক্তা বানানোর কথা ভাবছেন নাতো? সর্বনাশ।
আমি উনার গা ঘেঁষে একটু পাশে গিয়ে বসলাম।
না উনি একবারও তাকালেন না। তারপর কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে কিছু ক্ষণ উনার সামনে দিয়ে গেলাম। তবুও কিছু বললেন না।
আমি আবার উনার পাশে এসে বসে বসে উনাকে দেখা শুরু করলাম।
এবার অনেক বাড়াবাড়ি শুরু হয়ে গেলো তাই কিছুটা রেগে উনার কাছ থেকে সরে যেতেই উনি এক ঝটকায় আমাকে উনার কোলে বসিয়ে নিলেন।
আমি চোখ বন্ধ করে আছি।
ঝড় আসার আগে সবকিছু স্তব্ধ হয়ে যায় একবার। তারপর শুরু হয় ঝড়। ঠিক এখন উনি যেটা করছেন।
উনি বলল- আচ্ছা সবাই আমার বউয়ের পেছনে পড়ে থাকে কেন?
-আপনার বউ বলে কথা!
-মজা করছো?
-আপনার সাথে? সেই সাহস আছে আমার?
উনি আমার কপালে কপাল ঠেকিয়ে বললেন – আমার কোন কিছুতে ভয় নেই বাট তোমার জন্য ভয় করে। আমার মনে হয় তুমি আমার থেকে দূরে চলে যাবে।
আমি উনার গালে হাত দিয়ে বললাম- কখনো না। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখুন প্লিজ।
দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমাদের কোন রকম বিপদ হবে না। প্লিজ ভরসা রাখুন।
আমি সব সময় আপনার সাথে থাকবো। কবুল বলে আপনার জীবনে এসেছি, আপনার সাথে সংসার সাজিয়েছি তাই লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে মৃত্যু পর আপনার জীবন আর সংসার থেকে বের হবো।
উনি আমার মুখে আঙুল দিয়ে বললেন – হুশশ, এসব কথা বলো না। তুমি একশত বছর বেঁচে থাকবে। আমিন।
-আপনিও আমার সাথে কথা দিন একশত বছর বেঁচে থাকবেন? আমি আপনাকে ছাড়া বেঁচে থাকতে চাইনা।
উনি আমার মাথায় টোকা দিয়ে হাসলেন।
-তুমি একটা পাগলী!
আমি হাসতে পারলাম না তার আগেই উনি আমার মুখ বন্ধ করে দিলেন।
.
.
রাতে রুমে বসেই খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। আমাকে কিছু করতে হয়নি। উনিই আমাকে খাইয়ে দিলেন।
আমিও উনাকে খাইয়ে দিলাম। উনি খাবারের সাথে আমার আঙুল গুলোও এক প্রকার খেয়ে ফেলতে শুরু করেছিলেন।
আমি উনার আঙুলে ইচ্ছে করে কামর বসালাম। উনি বলল-উফ, আমাকে কখনো চুমু দাওনা, আদর করোনা, কিন্তু কামর দাও, রোমান্সের সময় দাও খামছি।
এগুলো কি হ্যাঁ??
আমি উনার গলা চেপে ধরে বললাম – আপনার গলা চেপে ধরাটাও এড করুন।
– হ্যাঁ এটা মনে ছিল না।
তবে…
-তবে কি?.
উনি আমার কানে কানে ফিসফিস করে বলল- যত খুশি আমাকে কামড় দাও, খামছি দাও, গলা চেপে ধরো, বাট মনে রাখবে এগুলোর থেকে কোটি কোটি গুন আদর সোহাগ যত্ন পাবে আমার থেকে। বলে উনি আমার নাকে নাক ঘষলেন।
.
.
আগুন – আমার প্রিয়তমা নাকি কখনো রাতের বেলা ঘুরতে যায়নি, কখনো ছাদে গিয়ে চাঁদ দেখেনি, কখনো বৃষ্টিতে ভিজেনি।
ওর এই সব অপূর্ণ না দেখা দৃশ্য গুলো আমিই দেখাব।
তাই আজ ওকে নিয়ে রাতের শহর দেখার জন্য বের হলাম। ওকে রাতের আকাশের চাঁদ দেখালাম। রাতের সমুদ্র দেখালাম। রাতের শহরটাও দেখালাম। মহানবী(সাঃ) বিবি আয়েশা (রাঃ) কে নিয়ে প্রায় রাতে ঘুরে বেড়াতেন। খুব সুন্দর সময় কাটাতেন। স্ত্রী তার পরিবার ছেড়ে ভরসা নিয়ে স্বামীর কাছে এসেছেন তাই স্ত্রীর সকল প্রকার দায়িত্ব স্বামীকেই নিতে হবে। তার হাসি, তার খুশি, তার ভালোলাগা, পছন্দ অপছন্দ সবকিছুর খেয়াল স্বামিকেই রাখতে হবে।
আমি ওর হাসিমাখা মুখটার জন্য সবকিছু করতে রাজী। রাতে বের হয়ে বিশাল শহর আর সমুদ্র সহ আকাশের চাঁদ কে দেখে ও খুব আনন্দ পেলো। আমাকে বার বার খুশিতে জরিয়ে ধরছিল।
কক্সবাজারে রাতে বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট উৎসব হয়। ওকে নিয়ে উৎসব গুলোর সাইড দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। আমাদের মতো বিভিন্ন কাঁপলরাও এসেছে এখানে। সবাই কত মজা করছে। শাড়ি পড়ে সবাই ঘুরছে। আমি আমার প্রিয়তমার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও সবার থেকে আলাদা।
রাতের বেলাও বোরখা পড়ে থাকে সে বাহিরে বের হলে।
ওর হাত ধরে বললাম – আচ্ছা তোমার গরমে কষ্ট লাগেনা?
ও হেসে বলল- কিছু বছর পর্দা করে গরম সহ্য যদি না করতে পারি তবে জাহান্নামের কোটি কোটি গুন গরম সহ্য করব কিভাবে?
আমি আর কিছু বললাম না। কারণ কথায় ওর সাথে পেরে উঠব না।
ওর প্রতি কথায় হাদিস থাকে।
সব সময় আল্লাহর বানী ওর মুখে লেগে থাকে।
.
.
কেউ ওর সাথে কথা বলতে এলেই ও আল্লাহর বানী না হয় কোন হাদিস শুনিয়ে দেয়।
এই তো একটু আগেই ও দুজন বৃদ্ধ মহিলা কে সালাম দিলো।
মহিলা গুলো ওকে পেয়ে বাকিদের মতো মোহিত হয়ে গেলো। অমনি মোম জুড়ে দিলো হাদিস।
মোম বলল-রাসুল [সা.] বলেছেন, তিন শ্রেণীর মানুষের উপর জান্নাত হারাম অর্থাৎ এই তিন শ্রেণীর মানুষ কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
প্রথম শ্রেণী হলো- যারা কোনো প্রকার নেশাদারদ্রব্য পান বা গ্রহণ করে।
দ্বিতীয় শ্রেণী হলো- যে বা যারা পিতা-মাতারঅবাধ্য, এই শ্রেণীভূক্ত মানুষরাও জান্নাতে যাবে না।
তৃতীয় শ্রেণী হলো-দাইউস। ঐ দাইউস ব্যক্তি যে তার পরিবারে পর্দা প্রথা চালু রাখেনি। পরিবারের সদ্যসের মাঝে বেপর্দা ছিলো, বেহায়াপনা ছিলো কিন্তু সে বাধা প্রদান করেনি। পরিবারের কর্তা হিসেবে বেপর্দা-বেহায়াপনা বন্ধ না করার জন্য এই শাস্তি পাবে সে।
[মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯]
তাই আমাদের উচিৎ এই কাজ গুলো থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর পথে আসা।
সবাই মোমের কথা শুনে বলল তারা আল্লাহর পথে আসবে এবং নামাজ পড়বে, পর্দার ভেতর থাকবে।
.
.
রাতে ঘোরাঘুরি করে রুমে এসে দুজনে শাওয়ার নিলাম। ওর শাওয়ার ভীতি এখনো আছে। আমি অবশ্য শাওয়ার ছাড়া গোসল করতে পারিনা।
ওকে শালওয়ারের নিচে জরিয়ে ধরে আমিও ওর সাথে দাঁড়ালম।
ও ঝাপটে ধরে ছিল আমাকে।
ওর মনে হচ্ছিল এখুনি শাওয়ার থেকে পানির জায়গায় ব্লাড ঝরবে।
.
.
আজকাল ওর শরীর ভালো না। আগের থেকে খুব দূর্বল লাগছে ওকে।
আমি ওকে বুকে নিয়ে বললাম – আজ কি বেশি দূর্বল লাগছে?
ও আমার উপর সমস্ত গা এলিয়ে দিয়ে বলল- আজ ভালো লাগছে।
আমি ঠোঁটে স্পর্শ করে বললাম – আমাদের কখন যে বেবি হবে আল্লাহ জানে।
কখন ওরা আমাদের মাঝখানে ঘুমুবে আর আমরা দুজন দুপাশে থেকে ওদের সামলাবো।
মোম লজ্জা পেয়ে তার স্বভাব মতো আমার বুকে মুখ লুকালো।
আমি আবারও বললাম- এই জীবনে বাবা ডাক কখন শুনবো হে আল্লাহ? হে আল্লাহ আমার বউকে একটু বুঝ দান করো।
মোম তখন আমার কানে কানে বলল- আমাকেই সামলাতে পাচ্ছেন না আর বেবিকে কি করে সামলাতে পারবেন তো?
– কি বললে?
ও চোখ বন্ধ করে ফেললো।
.
.
সকালে দুজন নামাজ পড়ে নিলাম। রেস্টুরেন্ট গিয়ে নাশতা করছি।
ও কিছু খেতে পাচ্ছে না। ওর নাকি বমিবমি লাগছে।
মাথা ঘুরছে।
আমি ওর গায়ে হাত দিয়ে চ্যাক করলাম। গায়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা।
ও বলল আমাকে খেয়ে নিতে।
আমি ওকে ছাড়া কখনো খাইনি। ও না খেয়ে থাকবে আর আমি খাব সেটা হতেই পারেনা।
তখন ও বলল- চলুন তবে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য রোজা রাখি।
এতে আল্লাহ খুশিই হবে। আমি খেতে পাচ্ছিনা আর আপনি আমার জন্য ইচ্ছে করে খাচ্ছেন না।
এর থেকে রোজা রাখা বেটার।
আমি ওর মাথায় টোকা দিয়ে বললাম – পাগলী বউ আমার!
.
.
ওকে জোর করে খাইয়ে দিচ্ছি তখন দেখি কালকের মহিলা এদিকেই আসছে।
আমাকে সম্পূর্ণ আগ্রহ করে ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকলো।
ও আমার তাকিয়ে আছে।
আমি ওকে ইশারা করলাম।
মহিলা হঠাৎ আমাকে বলল- এই মেয়েটা কে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। তাই ছেলের বউ বানাতে চাই। আপনি বিয়ের সমন্ধটা পাকাপাকি করুন দেখি।
আমার হাত থেকে গ্লাসের টুকরো পড়ে গেলো।
মহিলার কথা শুনে হেচকি এসে গেলো।
বলে কি আমার বউয়ের বিয়ে আর আমাকেই নিজের বউয়ের বিয়ে পাকাপাকি করতে বলছে। ভাবা যায়! আশ্চর্য!
.
.
আমি মহিলার দিকে তাকিয়ে বললাম – আপনি জানেন আমি কে ওর?
– জানি তো।
আপনি ওর বড় ভাই।
-ভাই?
-মহিলার কথা শুনে আমি হতভম্ব।
মোম আমার দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভয় পেলো মনে হয়।
আমি মহিলার কথা শুনে সোফায় গা এলিয়ে দিলাম। আমার মাথা ঘুরছে। আমি পড়ে গেলাম।
মহিলার ছেলেটা দৌড়ে এসে আগুন কে ধরে বলল- ভাই সাহেব আপনি ঠিক আছেন?
আগুন বলল- আপনি কে?
– আপনার বোনের যার সাথে বিয়ের কথা চলছে আমি সে।
মোম আগুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে – কি হলো আপনার?
আপনি ঠিক আছেন?
লোকটা মোম কে বলল – একটু পানি দিন আপনার ভাইকে।
মোমের কিছু খেয়াল নেই এই মুহূর্তে আগুন কে ছাড়া।
মোম পানি এনে দিতেই লোকটা পানির জগটা স্পর্শ করে মোমের দিকে তাকিয়ে থাকলো।
মোম আর লোকটা দু’জনেই জগ ধরে আছে।
আগুন মিটমিট করে দেখল – ছেলেটা মজনুর দৃষ্টিতে মোমের দিকে তাকিয়ে আছে।
আগুন – এখনই যদি না থামায় তাহলে ছোট খাট এযুগের লায়লি মজনু প্রেম কাহিনি হয়ে যেতে পারে।
আগুন হঠাৎ উঠে দাড়ালো।
মোম আগুনকে জরিয়ে ধরলো।
আশেপাশে সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
মহিলা আর তার ছেলেকে উদ্দেশ্য করে আগুন বলল- ও হচ্ছে আমার ধর্মীয় স্ত্রী। কবুল বলে ওকে বিয়ে করেছি। বহু কষ্টে, সাধনা করে ওকে হাসিল করেছি। আপনাদের কোথাও ভুল হয়েছে। আপনারা অন্য কাউকে দেখুন। ও আমার প্রিয়তমা!
আগুন মোমের হাত শক্ত করে ধরলো আর মোমও ওর হাত শক্ত করে ধরলো।
মহিলাটা হঠাৎ হাউমাউ করে একটা চিৎকার দিলো।
-না না এটা হতে পারেনা। আমি ওকে পছন্দ করেছি।
ছেলেটা তার মা কে শান্তনা দিয়ে মোমের চোখের দিকে তাকালো। মোম আগুনের কাঁধে মাথা রাখলো। ছেলেটা আগুনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।
সবার সামনে দিয়ে মহিলা কে কিছু শান্তনা দিয়ে আগুন মোমের হাত ধরে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে এলো।
বের হবার সময় অনেকেই বলছিল ওরা বেষ্ট স্বামী স্ত্রী। খুব মিষ্টি জুটি এবং দুজনকে মানিয়েছে।
.
.
সারাদিন আগুন মোম কে নিয়ে রুমে ঘুমিয়ে রইলো।
মোমের শরীর আসলেই বেশ খারাপ। আগুন লেডি ডক্টরের কাছে সকালে মোম কে নিয়ে যাবে বলে ঠিক করেছে।
মোম ডক্টরের কাছে যেতে চায়না বলে জেদ ধরেছে।
আগুন মোম কে দুপুরে রুমেই খাবার অর্ডার করে মোম কে জোর করে খাইয়ে দিয়েছে।
মাথায় তেল মেখে দিয়েছে যত্ন নিয়ে। খুব সুন্দর করে মাথার চুল চিরুনিও করেছে আগুন।
মোম আগুনের বুকে শুয়ে আছে নিশ্চিন্তে।
আগুন নরম স্বরে মোমের কানে ফিসফিস করে কিছু কথা বলছে। মোমের সেগুলো শুনে লজ্জার সাথে অনেকটা ভালোও লাগছে।
মোম কিছু বলছেনা শুধু হাসছে।
রাতে মোম একটু ঠিক হলে আগুন মোম কে বাহিরে নিয়ে গেলো ফ্রেশ হাওয়ায়।
ফ্রেশ হাওয়া পেলে মোমের ভালো লাগবে। নতুন ওয়েদারের সাথে হয়ত মোম মানিয়ে নিতে পাচ্ছেনা।
কক্সবাজারের শপিংমল গুলোতে প্রচুর ভিড় আর খুব সুন্দর সুন্দর জিনিসপত্র।
মোম বাসার সবার জন্য খুব সুন্দর সুন্দর জিনিসপত্র কিনলো এমনকি বাড়ির কাজের লোক, ড্রাইভার, দারোয়ান, মালি সবার জন্য।
আগুন মোম কে একটা বিশাল শাড়ির শোরুমে নিয়ে গেলো। সেখানকার সব শাড়ি গুলোর মাঝে আগুন তার প্রিয়তমা কে দেখতে পেলো।
আগুন প্রায় ১০০ টা শাড়ি মোমের জন্য সিলেক্ট করে প্যাকিং করার অর্ডার দিলো।
মোম হঠাৎ শান্ত গলায় বলল- আমাদের ডলার আছে বলে আপনি আপনার বউকে এতো গুলো শাড়ি কিনে দিচ্ছেন অথচ জান্নাতে সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সাহাবীরা এক কাপড়েই জীবন পার করেছেন –
জান্নাতে সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সাহাবী হযরত তালহা(রাঃ) ও তার স্ত্রীর কাহিনী শুনলে আপনিও কাদঁবেন !!
:
হযরত তালহা রাঃ প্রতিদিন নবীজির পেছনে ফজরের নামাজ পড়েন ।কিন্তু নামাজে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে তিনি মসজিদে না বসে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যান ।এভাবে কয়েকদিন চলার পর অন্যান্য সাহাবিরা এটা নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন যে, প্রতিদিন সালাম ফিরিয়েই তালহা চলে যান।অথচ নবীজি সাঃ ফজরের পর সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত মসজিদে বসে বয়ান করেন ।অন্যান্য সব সাহাবিরা ও রাসূলের কাছে বসে থাকেন ।এক পর্যায়ে এই কথা নবীজির কানে পৌছালো।নবীজি সাহাবিদের বললেন,আগামীকাল ফজরের নামাজ শেষে তালহা যেন আমার সাথে দেখা করে ।পরের দিন নামাজে আসলে তালহাকে একথা জানিয়ে দেয়া হল ।ফজরের নামাজ শেষ।তালহা বসে আছেন নবীজির সাথে দেখা করার জন্য ।এক পর্যায়ে নবীজি তালহাকে ডাকলেন ।নবীজি অতি মোলায়েম কন্ঠে তালহাকে বললেন, তালহা!আমি কি তোমাকে কোন কষ্ট দিয়েছি?আমি কি তোমার কোন হক নষ্ট করেছি?একথা শুনে তালহা কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সাঃ আমার জীবন আপনার জন্য উত্সর্গ হোক ।আপনি আমার কোন হক নষ্ট করেননি ।নবীজি সাঃ বললেন, তাহলে তালহা!তুমি প্রতিদিন নামাজ শেষে আমার কাছে না বসে চলে যাও কেন?তালহা কেঁদে কেঁদে বললেন, রাসূল সাঃ আমার এবং আমার স্ত্রীর সতর ডাকার জন্য একটি মাত্র জামা আছে ।সেটা পড়ে যখন আমি নামাজ পড়ি আমার স্ত্রী তখন উলঙ্গ থাকেন ।স্ত্রী যখন নামাজ পড়ে তখন আমি উলঙ্গ থাকি ।এক্ষেত্রে ফজরের নামাজ এর সময় একটু অসুবিধা হয়ে যায় ইয়া রাসূল সাঃ ।
ফজরের নামাজেআসার সময় আমি আমার স্ত্রীকে একটা গুহায় রেখে আসি ।এমতাবস্থায় আমি যদি নামাজ শেষে এখানে বসে থাকি তাহলে তো আমার স্ত্রীর নামাজ কাযা হয়ে যাবে ইয়া আল্লাহর রাসূল ।এজন্য আমি নামাজ শেষে দৌড়ে চলে যাই ।তালহার কথা শুনে আল্লাহররাসূল দরদর করে কেঁদে ফেললেন।নবীজির দাড়ি বেয়ে বেয়ে চোখের পানি পড়তেছে ।সাথে সাথে নবীজি তালহাকে জানিয়ে দিলেন, তালহারে! নিশ্চয়ই তুমি জান্নাতে যাবে । আল্লাহু আকবর ।
(মুসনাদে আহমদ)
একবার চিন্তা করুন, আমাদের তো কাপড়ের অভাব নেই, এর পরেও নামাজের প্রতি কোনো টান চেষ্টা নেই ।
হে আল্লাহ আপনি, আমাদের সকলকে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন ।আমিন
.
.
আগুন অনুতপ্ত হয়ে বলল- সরি প্রিয়তমা। ভুলেই গিয়েছিলাম। আমাদের নবী রাসূলগন এবং সাহাবীগণরা কত কষ্টই না করেছে আর আমরা কত সুখে আছি, আনন্দে আছি।
আগুন মাত্র তিনটা শাড়ি মোম কে কিনে দিলো।
শোরুমের স্টাফ গুলো মোমের কথা শুনে কেঁদে দিলো।
.
.
সকালে মোমের চ্যাকআপ করানো হয়েছে। সব কাজ স্পেশালি লেডি ডক্টর নার্স দিয়ে করানো হয়েছে।
মোম কফি বানিয়ে আগুনের হাতে দিলো। আগুন ল্যাপটপে কাজ করছিল।
আগুন মোমের গালে হাত দিয়ে বলল- ঠিক আছো প্রিয়তমা? শরীর কেমন?
মোম মিষ্টি হেসে বলল- ঠিক আছি। আপনি পাশে থাকলে সব ভালো লাগে।
আগুন মোমের গালে চুমু দিয়ে বলল – তোমার ভালো লাগা, ভালো থাকা হলো আমার বেঁচে থাকার কারণ মনে রাখবে।
.
.
আগুন রিপোর্ট নিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলো।
মোম একসপ্তাহ ধরে প্রেগন্যান্ট। ডক্টর যখন বলল – মিঃ আগুন আপনি বাবা হতে যাচ্ছেন আর আপনার মিসেস মা হতে চলেছেন, এটা শুনে আগুনের চোখে পানি চলে এসেছিল।
আজ পৃথিবীর সবচেয়ে খুশি সে। তার প্রিয়তমা মা হতে চলেছে আর সে বাবা।
আগুন হোটেলে আসার সময় পুরো রাস্তায় চোখের পানি ফেলে বাবা হওয়ার আনন্দ ভাগ করেছে।
মোম কে সে যখন বলবে মোম তো খুশিতে জ্ঞান হারাবে।
আগুন রুমে ঢুকে দেখল মোম শুয়ে আছে।
আগুন চুপচাপ জুতো খুলে রুম লক করে সোজা কম্বলের নিচে ঢুকে গেলো। ধীরে ধীরে সে মোম কে খুব কাছে টেনে নিলো। আজ মোম কে অন্য রকম লাগছে। কেমন একটা মা মা ভাব চলে এসেছে মোমের চেহেরায়।
আগুন মোমের পেটে হাত বুলিয়ে দিতে থাকলো আর মোমের কপালে চুমু দিয়ে মোমের গলায় নাক ঘষতে লাগলো …..
.
.
চলবে………..
#48
#প্রিয়জন❤
Writer-Moon Hossain
Part-48
মোমের ঘুম ভাঙতেই সে আগুনকে দেখতে পেলো।
আগুনের চোখ থেকে পানি পড়ছে।
মোম আগুনের চোখের পানি ঠোঁট দিয়ে মুছে দিলো।দুই হাত দিয়ে গলা জরিয়ে আগুনের দিকে তাকিয়ে রইল।
-কি হয়েছে? চোখের পানি কেন ফেলছেন?
আপনি স্ট্রং তাই আপনাকে কাঁদলে মানায় না। লোকে দেখলে কি বলবে?
আগুন মোমের গলায় মুখ গুজে কিছু ক্ষণ নাক ঘষে তারপর বলল- আজ আমার বড় আনন্দের দিন প্রিয়তমা।
-কিসের আনন্দ?
আগুন কোন কথা না বলে মোমের নভিতে নাক ঘষে বলল- আমাদের ভালোবাসা সার্থক হয়েছে। আমাদের ঘর আলো করে ছোট মেহমান আসবে। যার অত্যাচারে আমরা ভালোবাসা খুঁজে পাব।
মোম কাঁপা গলায় বলল- মানে?
-আমাদের সন্তান এই পৃথিবীতে আসতে চলেছে প্রিয়তমাা।
মোম কয়ক মুহূর্ত কোন কথা বলতে পারলো না।
তার নিজের কানে বিশ্বাস হচ্ছেনা।
আগুন মোমের নাভীর উপরে যেখানে হাত রেখেছে সেখানে মোমও হাত রাখলো।
তারপর খুশিতে দুজনেই দুজনকে জরিয়ে ধর কাঁদতে লাগল।
আগুনের খুশি দেখে কে।
সে মোম কে কোলে নিয়ে বেলকুনিতে দাড়িয়ে সূর্য ডোবা দেখছে।
যার আলো কিছুটা ওদের উপর পড়েছে। আগুন মোমের কপালে চুমু দিয়ে বলল- তুমি আমার জীবনে এসে অনেক খুশি দিয়েছো। এতো সুখ কেন জীবনে?
মোম বলল- আপনি আল্লাহর পথে এসেছেন বলেই সুখের অনুভব করছেন।
আগুন মোমের নাক টেনে বলল – চলো দুজন মিলে শোকরানার নামাজ পড়ি।
এতো খুশির নিউজে শোকর আদায় না করলেই নয় প্রিয়তমা।
মোম মাথা নাড়ালো।
.
.
দুপুর থেকেই একের পর এক কল আসছে। আগুন আরুকে ফোন করে সবকিছু জানিয়ে দিয়েছে। আরু এই নিউজটাকে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে।
লাউড স্পীকার দেওয়া আগুনের ফোনে।
প্রথমে আগুনের মা – মা মোম তুমি এখুনি চলে এসো আজকের প্লেনেই। তোমার খেয়াল রাখার জন্য ওখানে কেউ তো নেই। যেই ছেলের দুই ঘন্টা লাগে গোসল করতে সেই ছেলে সন্তান সম্ভবা বউয়ের কি খেয়াল রাখবে?
মোম আগুনের দিকে তাকালো আগুন কোমরে হাত দিয় বলল- মা দিজ ইজ নট ফেয়ার। আমি আমার বউ আর বেবির কেয়ার করতে জানি।
হঠাৎ আগুনের বাবা বলল- বাবা আগুন ঘটনা সত্যি?
-ইয়েস বাবা। ১০০% সত্যি।
-আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা ।
-বাবা বিশ্বাস করো প্লিজজ। এই বিশ্বাসে কোন ভেজাল নেই। একদম খাঁটি বাবা হতে চলেছি।
আরু তেড়ে এসে ফোনে বলল- দাদাভাই, দাদাভাই এই কাজ কিভাবে করলে?
আগুন বলল- ওয়াট ননসেন্স। কিভাবে করেছি মানে।
-দাদাভাই তোমার মন মানসিকতা দিন দিন অন্য লেভেলের হয়ে যাচ্ছে। তোমার মাথায় এসব চলে ছিঃ ছিঃ। বাবা হতে চলেছো আর এখনো এসব যায়নি?
কি শেখাবে আমাদের বংশের প্রদীপ কে?
বাবা নামের কলঙ্ক তুমি!
– এই তুই চুপ করবি?
ময়মনসিংহ এসে তোর ব্যবস্থা করছি।
-আরে রাখ তোমার ব্যবস্থা।
দয়া করে মুখ বন্ধ করো। ভাবীর সাথে জরুরি কথা বলার আছে। ভাবী দয়া করে ময়মনসিংহে চলে এসো প্লিজ? আমরা সবাই তোমার আর আমাদের বাড়ির নতুন সদস্যের খেয়াল রাখার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
মোম বলল- আচ্ছা আসছি। তোমরা টেনশন করো না।
উনি আমার পাশে আছেন।
-সেটাই তো টেনশন।
আগুন বলল- কি বললি?
-যা শুনলে।
.
আগুনের বাবা মা সবাই আগুন কে বলল মোমের ডাবল কেয়ার করতে। ঠিক মতো যেন বেশি বেশি খাওয়ায় মোম কে। দরকার পড়লে আগুনের খাবারও যেন মোম কে খাওয়ানো হয়।
আগুন বলল- তাহলে আমি খাব কি?
আরু বলল- বেবি কি তোমার পেটে?
– না, তোর ভাবীর পেটে।
-তাহলে এখন কার বেশি খাওয়া দরকার?
– তোর ভাবীর।
– তাহলে এতো কথা কেন বলছো? বাবা হবে তাই বেবির জন্য সামান্য না খেয়ে থাকতে পারবেনা?
– পারব। কিন্তু একেবারে না খেয়ে কিভাবে থাকব?
– মাত্র নয় মাসের ব্যাপার। মাত্র নয় মাস না খেয় থাকলে কেউ কি মারা যায়? আশ্চর্য!
.
.
-আচ্ছা আমি না খেয়ে কেন থাকব? রেস্টুরেন্ট থেকে না হয় অল্প খেয়ে নেব।
-না হবে না কারণ তুমি খোকন বাবুকে খোঁটা দিতে পারবেনা।
-খোকন বাবু কে?
– তোমার সন্তান।
-তার নাম কখন খোকন বাবু হলো?
– আরে দাদাভাই এটা বেবিদের প্রাথমিক নাম।
-প্রাথমিক নামটা পাল্টে দেওয়া যায়না?
-যায়,যেমন, বল্টু, পল্টু, ছল্টু, নান্টু, চিন্টু, ছিন্টু!
আগুন ঢোক গিলে বলল – না না খোকন বাবু বেটার।
-আরে দাদাভাই মাঝখানে কথা বলার স্বভাব তোমার গেলো না।
-আই এম সরি।
-আচ্ছা শোন, তুমি খোকন বাবুকে খোঁটা দিয়ে বলতে পারবে – আমি তোকে নয় মাস না খেয়ে নিজের খাবার তোকে খেতে দিয়েছি এই দিন দেখার জন্য?
-কোনদিন দেখার জন্য?
-আরে খোকন বাবু যেদিন তোমার অনুমতি ছাড়া ঘন্ডা ঘন্টা প্রেম করবে সেদিন।
-সে প্রেম করবে কেন?
-আরে বাবা মানুষ মাত্রই প্রেম। আশ্চর্য!
-ওআচ্ছা। তোর কথায় কিন্তু লজিক আছে।
– আছে না লজিক?
-হুু
মোম মুচকি হাসছে আগুনের টেনশন মাখা মুখ দেখে।
আগুন চিন্তিত হয়ে বলল – আচ্ছা প্রিয়তমা আমার তো টাকা আছে।
আমি যদি আমার খাবার তোমাকে খাইয়ে দিয়ে লুকিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়ে নিই তাহলে কিছু হবে?
মোম মাথা নাড়ালো।
– আচ্ছা আমি লুকিয়ে খেলে কি তুমি খোকন বাবুকে বলে দেবে?
-না বলবো না।
– প্লিজ বলো না। বললে খোকন বাবুর বাবা সম্পর্কে ভুল ধারণা জন্ম নেবে। হয়ত রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারে। তারপর শত্রু পক্ষের হাতে পড়ে বাংলার ডন হয়ে যেতে পারে।
মোম আগুনের গালে চুমু দিয়ে বলল- আপনি এতো বোকা কেন? বাবা হতে যাওয়ার খুশিতে আপনার মাথার স্ক্রু ডিলে হয়ে গিয়েছে?
.
.
আগুন মোম কে কোলে নিয়ে বলল- আসলেই আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।
তোমার আর খোকন বাবুর জন্য।
-কোলে নিয়েছেন কেন?
-শুনলে না সবাই মিলে আমাকে হুমকি দিলো তোমাদের কেয়ার করতে।
-তো কোলে নিয়ে কি কেয়ার করবেন?
আগুন মোমের নাকে নাক ঘষে বলল- খোকন বাবুকে আদর করব।
-খোকন বাবুকে আদর করবেন নাকি তার মাকে আদরক করার মতলব করছেন?
আগুন মোমকে নিয়ে সোজা কম্বলের ভেতর ঢুকে গেলো।
আগুন মোমের কানে ফিসফিস করে বলল – দু’জনকেই।
.
.
মোমের বাবা, মা, ভাইয়া, ভাবী, দাদি, আরব সবাই ফোন করেছে।
সবাই শোকরানার নামাজ পড়েছে খুশিতে।
.
.
আগুন দুই প্লেট ভাত নিয়ে মোম কে খাওয়াতে বসেছে।
– আর না প্লিজ।
-আরেকটু।
-আর পারব না। পেট ফেটে যাবে।
-আরে কি বলো মাত্র দুই প্লেট খেলে আরও তিন প্লেট আছে।
মোমের চোখ কপালে উঠে পড়ল। মোম ঢোক গিলে আগুনের দিকে তাকালো।
আগুন হেসে বলল- তোমাকে কে বাঁচাবে সুন্দরী।
.
.
আগুন মোম কে একেবারেই হাটতে দেয়না। যেখানে যাবে কোলে নেবে।
এই দুই দিনে মোম আর আগুন একবারও বাহিরে যায়নি।
মোমের রাতে ঘুম না এলে আগুনও ঘুমায়না।
সে বলে – আমি ঘুমিয়ে পড়লে তুমি কথা লাগাবে খোকন বাবুর কাছে ।
-কি লাগাবো?
-কথা। বলবে, খোকন বাবু দেখ তোমার বাবার কার্য কলাপ। আমাদের আগে ঘুমিয়ে পড়েছে।
মোমের ঘুম ভেঙে যাওয়াতে আগুনকে সে দেখে মিটিমিটি হাসা শুরু করে।
কি ছেলেমানুষী তার স্বামী।
লন্ডন থেকে পি এইচ ডি করা ছেলে এমন হয় কিভাবে। তার উপর যে ছেলে কয়েকটা বিজনেস পরিচালনা করে। সে হলো মূল এমডি।
আগুনকে মোম মনে মনে বলল- আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মোম ঘুম থেকে উঠে আগুন কে পেলো না। মোম বিছানাতে উঠে বসতেই অনেক গুলো গোলাপের পাপড়ি তার উপর ঝরে পড়লো।
আগুন মোমের ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল- শুভ সকাল প্রিয়তমা! আগুন মোমের হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ ফুল দিয়ে বলল – পৃথিবীর কোন সৌন্দর্য মানুষের সৌন্দর্যের কাছে কিছুই না।
মোম গোলাপ খুব পছন্দ করে। গোলাপের সুভাস নিয়ে মোম আগুনের দিকে তাকিয়ে আফসোস করলো কারণ আগুনের পছন্দ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফুল রেফল্যাসিয়া। যেটা পাওয়া খুব দূর্ভেদ্য!
.
.
বিকেলে আগুন ঘুমুচ্ছিল তখন মোম ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে গেলো।
মোম টাইলসে পা পিছলে পড়ে যাওয়াতে একটা চিৎকার দিলো।
আগুনের ঘুম ভাঙলো চিৎকারে। আগুন দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে দেখে মোম নিচে পড়ে আছে।
মোম পেটে প্রচন্ড ব্যাথা পেলো। মোমের পেটে ভীষণ যন্ত্রণা শুরু হয়েছে…
আগুনের চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছে।
আগুন ঠিক করবে ভেবে পেলো না।
আগুন মোম কে বেডে শুইয়ে গরম তেল যোগার করে পেটে মালিশ করতে লাগল।
আগুন প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছে।
আগুন বলল- প্রিয়তমা খুব ব্যাথা করছে?
মোম মাথা নাড়ালো।
-সব ঠিক হয়ে যাবে। আল্লাহর উপর ভরসা রাখ।
মোমের চিৎকারে আগুন বলল- যদি উপায় থাকতো তাহলে তোমার জায়গায় আমার পেটে বেবি গুলো রেখে দিতাম। তোমার এতো কষ্ট সহ্য করতে হতো না।
আগুন মোমের পেটে হাত বুলিয়ে বলল -এখুনি তোমার ব্যথা কমে যাবে প্রিয়তমা!
.
১//শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করলে যা করবে ও বলবে
আপনার দেহের যে স্থানে আপনি ব্যথা অনুভব করছেন, সেখানে আপনার হাত রেখে তিনবার বলুন,
بِسْمِ اللَّهِ
আল্লাহর নামে।
বিসমিল্লাহ
আর সাতবার বলুন,
أَعُوذُ بِاللَّهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
এই যে ব্যথা আমি অনুভব করছি এবং যার আমি আশঙ্কা করছি, তা থেকে আমি আল্লাহ্র এবং তাঁর কুদরতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
আ‘ঊযু বিল্লা-হি ওয়া ক্বুদরাতিহী মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহা-যিরু
মুসলিম ৪/১৭২৮, নং ২২০২।
আগুন মোম কে দিয়ে এগুলো বলিয়ে নিলো।
-প্রিয়তমা চোখ খুলে তাকাও। দেখ সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
আগুন লেডি ডক্টর কে অনেক ক্ষণ আগেই ফোন করেছে।
এদিকে মোম সেন্সলেস হয়ে যাচ্ছে।
আগুন একের পর এক দোয়া পড়ে যাচ্ছে আর কাঁদছে।
.
.
চলবে…..