#গল্পঃ প্রেমকাব্য,অন্তিম_পর্ব
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
দোলনের জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করে।হাতে,ঘাড়ে,গলায় অসংখ্য আঁচড়ের দাগ।ফিনাইল এর গন্ধটা সারা হসপিটালে ম ম করছে।শরীরটা নাড়াতেও কষ্ট হচ্ছে দোলনের।নিজের শরীরে আঁচড়ের দাগের দিকে তাকিয়ে ঢুকরে কেঁদে ওঠে দোলন।নিজেকে ওই নরপশু গুলো থেকে রক্ষা করতে পারলোনা।দোলনের কান্নার আওয়াজ কানে আসতেই তাহিম বাইরে থেকে হুড়মুড়িয়ে ভেতরে আসে।বিচলিত কন্ঠে বলে ওঠে,কি হয়েছে দোলন কাঁদছো কেন তুমি?
তাহিমের কন্ঠস্বর কর্নণগোচর হতেই দোলনের কান্নার মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে ওঠে।কান্নার কারনে শ্বাস টেনে নিতে পারছেনা।
তাহিম দোলনকে শান্ত করার জন্য ওর মাথায় হাত রেখে বলল,শান্ত হও দোলন আমি আছিতো।
ফোলা লাল চোখ দিয়ে তাহিমের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে দোলন।চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে তখন কোথায় ছিলেন?যখন আমার আপনাকে প্রয়োজন ছিলো।যখন মনে মনে হাজারবার আপনাকে ডেকেছিলাম।কিন্তু তাহিমকে এই প্রশ্নটা করা নিচকই বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।তাহিমতো আর জানতোনা আজ বিপদ এসে দোলনের চৌকাঠে হামলা করবে।
কিছু একটা মনে পড়তেই তাহিমের হাত নিজের মাথার উপর থেকে ছাড়িয়ে একটু দূরে হেলে যায়।তাহিম জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে দোলনের দিকে তাকাতেই দোলন অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
আমাকে ধরবেন না আমি এখন নোংরা হয়ে গেছি বলে ঠোঁট চেপে কেঁদে ওঠে।
তাহিম বিস্ময়ে কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে গেছে।পরক্ষণেই নিজের বিস্ময় কাটিয়ে দোলনকে জিজ্ঞেস করলো,নোংরা হয়ে গেছো মানে?কি বলছো তুমি তোমার মাথা ঠিক আছে?
দোলনের কান্নার মাত্রা যেন কিছুতেই কমছেনা।দেলোয়ার হোসেন আর নাজমা বেগম ডাক্তারের সাথে কথা বলে কেবিনের ভেতর প্রবেশ করেন।
দোলন হেঁচকি তুলে বলছে আমি আগের মতো স্বাভাবিক নেই।আমি এখন ধর্ষিতা আমার নামের পাশে ধর্ষিতা ট্যাগ লেগে গেছে।তাই আপনাকে বলছি আমাকে স্পর্শ করে নিজের হাত নোংরা করবেন না।দূরে থাকুন আমার থেকে।
আপনিতো আমাকে পছন্দ করেন না।শুধুমাত্র আপনার মায়ের কথায় আপনি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।এখন আর আমাকে বিয়ে করতে হবেনা।আমি অনেক আগেই ভেবে রেখেছি আপনাকে বলে দেবো নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে বিয়ে করতে হবেনা কিন্তু সেরকম সময় বা সুযোগ কোনোটাই পাইনি আমি।
স্টপ!চোয়াল শক্ত করে চেঁচিয়ে বলে ওঠে তাহিম।ওরা তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারেনি।তুমি আগে যেমন ছিলে এখন ও ঠিক তেমনই আছো।কে বলেছে তোমাকে এসব ফালতু কথা?
দোলন চেঁচিয়ে বলল,আমি ছোট বাচ্চা না।আমার সব কিছু বোঝার ক্ষমতা হয়েছে।একা একটা মেয়ের সাথে এতগুলো ছেলে কি করতে পারে সেই ধারনা আমার আছে।
তাহিম দেলোয়ার হোসেন আর নাজমা বেগমের দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বলল,তোমরা একটু বাইরে যাবে?
উনারা তাহিমের কথায় বাইরে চলে আসে।এখানে দোলনকে বুঝানোর মত তেমন কিছুই কারো জানা নেই।তাহিম যতটুকু বলেছে দেলোয়ার হোসেন আর নাজমা বেগম ঠিক ততটুকুই জানেন।
তাহিম উঠে গিয়ে দরজাটা ভিড়িয়ে দিলো।দোলন ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে তাহিমের কর্মকাণ্ড বুঝার চেষ্টা করছে।
তাহিম দোলনের পাশে বসে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,কি বলেছিলে তুমি?তোমার বুঝার ক্ষমতা আছে?সত্যিই যদি তোমার বুঝার ক্ষমতা থাকতো তাহলে তুমি এটাও বুঝতে পারতে যে তুমি এখনো আগের মতোই আছো।
কেনো আমাকে মিথ্যা সান্তনা দিচ্ছেন?আমি জানি আমার সাথে কি হয়েছিলো।
তাহিম লম্বা একটা শ্বাস ফেলে বলল,আচ্ছা বলো তোমার সাথে কি হয়েছিলো।
দোলনের ভেতরটা হুহু করে উঠলো।ওই ঘৃণ্য স্মৃতি মানসপটে ভেসে উঠতেই নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে।
তাহিম ধমক দিয়ে বলল,কি হয়েছে বলছো না কেন?
তাহিমের ধমকে দোলন কেঁপে উঠলো।কান্না সংবরনের চেষ্টা করে বলল,আমি প্রাইভেটে যাওয়ার সময় ছেলেগুলো রিকশার চারপাশে ঘিরে দাঁড়ায়।রিকশাওয়ালা মামাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আমাকে টেনে নিয়ে ওদের গাড়িতে তুলে।
আমি যখন চিৎকার করে নামতে চাইলাম তখন ওরা আমার সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করলো।আমার হাতে পায়ে আঁচড়ের দাগ বলতেই গলা ধরে আসে দোলনের।একজন আমার মুখে কিছু একটা স্প্রে করতেই আমার চোখ দুটো বুঝে আসে আর তারপর বলেই দোলন হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।
তাহিম একহাতে দোলনকে বুকের সাথে মিশিয়ে বলল,চুপ করো কিচ্ছু হয়নি তোমার।তুমি বাসা থেকে বের হওয়ার দশমিনিট পরেই আমি তোমাদের বাসার সামনে যাই।দারোয়ানের কাছ থেকে শুনলাম তুমি কলেজের জন্য রওনা দিয়ে ফেলেছো।তাই আমি বাইক নিয়ে তোমার অফিসের উদ্দেশ্য বেরিয়ে যাই।কিছুদূর যেতেই দেখলাম রিকশাওয়ালা মামা রাস্তায় পড়ে আছেন তুমি রিকশায় নেই।উনাকে ধরে উঠাতেই উনি তোমার কথা বললেন।আমাকে সব কিছু বলতেই আমার একবন্ধুকে কল করে বলে দিয়েছি এসে উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে।আর সময় ব্যয় না করে বাইক নিয়ে ছুটলাম।তোমাকে কোথায় খুঁজবো ভেবে দিশেহারা হয়ে গেছি।কিছুদূর গিয়ে দেখলাম একটা ভ্যান সোজা পথে না গিয়ে জঙ্গলের দিকে গাড়ি নিয়ে ঢুকছে যেদিকে মানুষের আনাগোনা নেই।হঠাৎ আমার মাথা খেলে গেলো এই গাড়িতে তুমি নেইতো?ওদের পিছু নিয়ে পুলিশকে খবর দিই।ওরা গাড়ি থামিয়ে একটা মেয়েকে ধরাধরি করে নামাচ্ছিলো।মেয়েটির মুখ দেখে আমার পিলে চমকে উঠে।
কারণ মেয়েটি তুমি ছিলে।
ছেলেগুলোর মধ্যে একজন খুব বিশ্রীভাবে হেসে বলল,মামা আজ চিল হবে চিল।সবাই মিলে আজ পাখিকে ছিঁড়ে খাবো।
অন্যজন বলল,পাখির দিকে আগে আমি নজর দিয়েছি তাই আমি আগে তারপর তোরা।সবাই সমস্বরে বলল,ভাগে পেলেই হলো।আরেকজন বলে উঠে তবে পাখির খুব তেজ বুদ্ধি করে ক্লোরোফর্ম না আনলে এতদূর পর্যন্ত নিয়ে আসা সম্ভব হতো না।
পেছন থেকে তাহিম দৌঁড়ে এসে ছেলেগুলোকে সরিয়ে দোলনের মাথাটা কোলের উপর টেনে নিতেই ছেলেগুলো ভড়কে গেলো।একজন তাহিমকে ঘুষি মেরে বলল,এই তুই কেরে?মুহূর্তেই এতক্ষণের দুশ্চিন্তা তিরতির করে ক্ষোভে পরিনত হলো তাহিমের।খুব সন্তর্পণে দোলনের মাথাটা কোল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি ছেলেগুলোকে মারতে লাগলো।ওরা ৫-৬ জন আর তাহিম একা।তাই ওদের সাথে পেরে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছে।পুলিশ তাহিমের ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে সেখানে উপস্থিত হয়।পুলিশের গাড়ির আওয়াজ শুনে সবাই পালাতে গেলেই পুলিশ সবাইকে ধরে ফেলে।তাহিমকে ধরতে গেলে সে বলে আমিই আপনাদের ইনফর্ম করেছি।পুলিশ ছেলেগুলো নিয়ে চলে যায় আর তাহিম দোলনকে নিয়ে হসপিটালের চলে আসে।নাজমা বেগম আর দেলোয়ার হোসেনকে খবর দিলে উনারাও হসপিটালে চলে আসেন।তানজু স্কুলে থাকায় সে কিছু জানতে পারেনি।
তাহিম লম্বা দুটো শ্বাস ফেলে বলল,এবার বুঝেছোতো তোমার সাথে খারাপ কিছু ঘটেনি।
দোলন এতক্ষণ মন দিয়ে তাহিমের কথাগুলো শুনছিলো।কান্নার মাত্রা কিছুটা কমে আসতেই বলল,তবুও আপনি কিভাবে শিওর হচ্ছেন আমার সাথে কিছু হয়নি।আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি”তাই বলছি আমাকে বিয়ে করে নিজের জীবনটা নষ্ট করবেন না।
তাহিম চোখ বন্ধ করে রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।চোখের পাতা খুলতেই দোলন ভয়ে আঁতকে উঠল।তাহিমের চোখ দুটো টকটকে লাল হয়ে আছে।হিংস্র বাঘের ন্যায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে দোলনের দিকে।
ভয় পেলে চলবেনা ভেবে দোলন বলল,আপনি অনেক ভালো মেয়ে ডিজার্ভ করে…
আর কিছু বলার আগেই দোলনের গালে সপাটে একটা চড় বসিয়ে দেয় তাহিম।
রাগে গর্জন করে বলছে,তুমি সোজা কথা বুঝার মতো মেয়ে না।বিয়ে আমি আজকেই করবো তাও তোমাকে।আর প্রমানের কথা বলছো না?ওয়েট তোমাকে আমি সব প্রমান দেখাবো বলেই দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।দোলন গালে হাত দিয়ে ঢুকরে কেঁদে ওঠে।
তাহিম ডাক্তারকে কিছু একটা বলতেই ডাক্তার এসে দোলনের একটা টেষ্ট করালেন।রিপোর্ট দিতে একটু সময় লাগবে বলে তাহিমকে জানালেন।
নাজমা বেগম আর দেলোয়ার হোসেন দোলনকে বুঝাচ্ছে তোর সাথে কিচ্ছু হয়নি।কিছু হওয়ার আগেই আল্লাহ তাহিমকে পাঠিয়েছে।কিন্তু দোলন বুঝতে চাইছেনা কেঁদেই যাচ্ছে।তাহিম ডাক্তারসহ কেবিনে প্রবেশ করে।ডাক্তার দোলনকে রিপোর্ট পড়ে শোনাতেই দোলনের বুকের উপর থেকে পাথর নেমে গেলো।রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ আছে দোলন এখনো ভার্জিন।ডাক্তার চলে যেতেই সবাই মিলে দোলনকে বললেন,দেখেছিসতো আমাদের কথা বিশ্বাস করলিনা এবার বিশ্বাস হলো?
দোলন তাহিমের দিকে তাকাতেই তাহিম মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেলোয়ার হোসেন আর নাজমা বেগমের উদ্দেশ্যে বলল,আমি আজকেই দোলনকে বিয়ে করতে চাই।তাহিমের কথায় সবাই চমকে তাকাতেই তাহিম বলল,আজ মানে আজ আমি আর কোনো কথা শুনতে চাইনা।দোলন অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর বাবা আর তাহিমের মায়ের দিকে।
দোলনকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।একটু আগেই কাজী ডেকে দোলন আর তাহিমের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হলো।তানজু স্কুল থেকে এসে ওর মায়ের কাছ থেকে সব জানতে পেরেছে।তাহিমের বড়বোন ও আজকে এসেছে ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে।দোলনকে একটা খয়েরী রঙের কাতান শাড়ি পড়িয়ে তাহিমের ঘরে বসিয়ে দিয়ে গেছে তানজু আর ওর বড়বোন তনুজা।দোলন তাহিমের জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে।তাহিম আসছে না দেখে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো।দোলন কখনো ভাবে নি এত তাড়াতাড়ি তাহিমের সাথে ওর জীবনটা বাঁধা পড়বে।মানুষ অনেক কিছুই ভাবতে পারেনা।যেমন আজকে সকালে যে দোলনের সাথে এতবড় বিপদ ঘটে যাবে সে আগ থেকে কোনো ধারনা করতে পারেনি।তাহিম অনেক রেগে আছে যেটা দোলনের কাছে স্পষ্ট।দোলনের মনে একটা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে উনি তো আমাকে ভালোবাসেন না তাহলে বিয়ে কেন করলেন?
তাহিম থানার ইন্সপেক্টরকে কিছু টাকা দিয়ে কারাগারে প্রবেশ করে।নিজ হাতে কিছুক্ষণ ছেলেগুলোকে পিটিয়ে নিজের মনের ঝাল মিটিয়ে বেরিয়ে আসে।আসার সময় ইন্সপেক্টরকে বলে আসে যতটাকা লাগে আমি দেবো কিন্তু এরা যাতে জামিন না পায়।
বাসায় এসে কাবার্ড থেকে জামাকাপড় নিয়ে তাহিম ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে নেয়।তোয়ালে দিয়ে চুলের পানি মুছে সেটি বারান্দায় মেলে দিতে এসে দেখলো দোলন গ্রিলে হাত দিয়ে অদূর আকাশে তাকিয়ে আছে।তোয়ালেটা মেলে দিয়ে হালকা কাশি দিতেই দোলন চমকে ওঠে পেছনে তাকায়।তাহিমকে দেখে মাথা নিচু করে বলল,সরি!
তাহিম ভ্রু কুচকে বললো কিসের সরি?দোলন মুখটাকে ছোট করে বলল,দেখুন আমার তখন মাথা ঠিক ছিলোনা।আমিই বা কিভাবে বুঝতাম আমার সাথে সত্যিই কিছু হয়েছিলো কিনা?আপনি আমার উপর রাগ করে থাকবেন না প্লিজ।
তাহিম হালকা ঠোঁট প্রসারিত করে বলল,আমি রেগে নেই তোমার উপর।
সত্যি!
তাহিম মাথা নেড়ে হ্যাঁ জানাতেই দোলন বলল,আচ্ছা একটা প্রশ্ন আপনি আমাকে কেন বিয়ে করেছেন?আপনিতো আমাকে ভালোবাসেন না।
তাহিম বাইরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বলল,আমি তোমাকে কখনো বলেছি আমি তোমাকে ভালোবাসিনা?
দোলন মাথা দুলিয়ে বলল কিন্তু আপনিতো বলেছেন আপনার মায়ের পছন্দ বলেই আমাকে বিয়ে করছেন।
তাহিম দোলনের দিকে ঘুরে বলল,আমাদের বিয়ের কথা বলার অনেক আগ থেকেই আমি তোমাকে ভালোবাসতাম কিন্তু আমি কখনো নিজের অনুভূতি গুলো প্রকাশ করিনি।
দোলন অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,আপনি আমাকে ভালোবাসেন সেটা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?সারাদিন আমাকে ধমকের উপরে রাখতেন সুন্দর করে কথা বলতেন না।
তাহিম মুচকি হেসে বলল,তুমি এমনিতেই বাঁদর ভালোবাসি বলে দিলে আরো বাঁদর হয়ে যেতে।আমার চারপাশে সারাদিন ঘুরঘুর করতে তখন আমার ও নিজেকে আটকাতে কষ্ট হয়ে যেতো।আমি চেয়েছিলাম তোমার পরীক্ষার পর বিয়ে করতে কিন্তু তোমার কারনে আজকেই বিয়েটা করে ফেললাম।
দোলন চোখ পাকিয়ে বলল,আমি বাঁদর?আপনার পাশে সারাদিন ঘুরঘুর করি?এই আপনার ভালোবাসা?আপনি আমাকে মিথ্যা বলছেন একটুও ভালোবাসেন না আমায়।তাহিম দোলনকে জড়িয়ে ধরে বলল,বাসিতো
আমি আমার দোলনচাপাকে অনেক ভালোবাসি।
দোলন মুখটাকে কাঁদো কাঁদো করে বলল,কিন্তু আমার ইচ্ছে ছিলো বিয়ের আগে আপনার সাথে জমিয়ে প্রেম করবো সেটা আর হলো না।
তাহিম দোলনের নাক টেনে দিয়ে বলল,সবাইতো বিয়ের আগে প্রেম করে আমাদের প্রেমকাব্যটা নাহয় বিয়ের পরেই শুরু হবে।
দোলনের দিকে তাকিয়ে তাহিম বলল,
তোমার আঁচলে শুয়ে একদিন স্বপ্ন দেখবো,
একদিন জোৎস্ন্যার মুখে নির্বিকার চুমু খেতাম।
তুমি রেশমি হাতে বুলাতে পরশ
রাত্রি নিশ্চুপ হেঁটে যেতো শরীর বেয়ে।
চোখের সমুদ্রে খুঁজতাম অলৌকিক মুক্তা,
বাতাসের সাদা ফুল চাদরের মতো
ঢেকে দিতো তোমাকে আমাকে একদিন
একদিন তুমিও স্বপ্ন দেখতে আমার মতো।
একদিন আমি সারারাত ঘুমোইনি বলে
আমরন অনিদ্রায় ভুগবে বলেছিলে তুমি
একদিন চোখে জল দেখে আতংকে
বলেছিলে,কান্নার সমুদ্র হয়ে যাবো।
একদিন তোমার সমস্ত বুকে আমার সাম্রাজ্য ছিলো
একদিন আমার সাম্রাজ্যের তুমিই অধিশ্বরী ছিলে।
––––রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ।
#সমাপ্ত।