প্রেমনদীর_মাঝি #পর্ব_৭ #মুসফিরাত_জান্নাত

0
470

#প্রেমনদীর_মাঝি
#পর্ব_৭
#মুসফিরাত_জান্নাত

মাঝে মাঝে অকারণেই ভয় পাওয়া মানব জাতির বিশেষ গুন।এই অকারণ ভয় বিপদ বৃদ্ধি করে।যে দুর্ঘটনা ঘটার কোনো সম্ভাবনাই ছিলো না, দেখা যায় তাই ঘটে অকারণ ভয়ের জন্য।ভয় থেকে সতর্ক হতে যেয়ে আমরা বিপদ বাড়িয়ে ফেলি।এই যেমন মাঝ রাতে হুট করে কোনো শব্দ শুনে ভয় পেয়ে সতর্ক হতে গেলে দেখা যায়, অজানা আশঙ্কায় শরীর কাঁপে, মাথায় দ্রুত র’ক্ত প্রবাহিত হয়।ফলস্বরুপ চোখের সামনে অকারণেই বিকৃত চিত্র ভেসে উঠে অ’শ’রীরি চিন্তা ঢুকে অতিরিক্ত ভয়ে আমরা অজ্ঞান হয়ে যাই।অথচ ওই সময় ভয় না পেয়ে ঠান্ডা মাথায় থেকে পরিস্থিতি সামলে নিলে দেখা যায়, যা নিয়ে ভয় পাচ্ছি তার কিছুই হয় নি।ওটা নিছক দুনিয়াবি কোনো কারবারে সৃষ্ট শব্দ ছিলো।তেমনই কোনো ঘটনায় অন্যের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিজে থেকে মিথ্যা বিবৃতি দিতে গেলে দেখা যায়, পুরো ঘটনার ব্যাপারে সে অজ্ঞাত ছিলো, অথচ আমরাই মিথ্যা বয়ান দিয়ে সত্যটা টেনে এনে বিপদে পড়ি।এই মুহূর্তে সেই ব্যাপারটা মাথায় এসে হুট করে যেনো সতর্ক করে দিলো আমাকে।নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ভয়ে মুখে ধুলো উড়ছে ওর।ওর এই চেহারার অভিব্যক্তিই সন্দিহান করলো নিভৃত ভাইকে।তিনি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন,

“এমন মুখ করে রেখেছিস কেনো?কোন আকাম করে বসছিস?”

ওনার প্রশ্ন ও অভিব্যতিতে বুঝলাম উনি আমাদের কথার কিছু শোনেননি।মাত্রই এসেছেন হয়তো।স্বস্তি পেলাম আমি।নিশি এটা বুঝলো কিনা জানি না।তবে ভয়ে কাঁপতে লাগলো সে।আমি ব্যপারটা সামাল দিতে বললাম,

“ভিনগ্রহের প্রানী দেখলে যে কেও মুখ অমন করবে।আপনি এখানে আসছেন কেনো?”

কথাটা ওনাকে ইঙ্গিত করে বললাম।উনি সরু চোখে তাকালেন আমার দিকে।

“কে ভিনগ্রহের প্রানী শুনি?”

“কে আবার আপনি!”

ওনার প্রশ্নে চটপট জবাব দিলাম আমি।আমার উত্তরে উনি রুষ্ট হলেন।রাগত স্বরে দুই কদম এগিয়ে এসে নিশিকে আড়চোখে পরোখ করে নিজে সামলে নিলেন।ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ উনি।বোন সামনে থাকায় হয়তো আমাকে কিছু বলতে ইতস্তত করছেন।কিছু সময় উশখুশ করে একদম নরম কণ্ঠে বললেন,

“তোমার সাথে জরুরি কথা আছে।ঘরে আসো।”

ওনার কণ্ঠের এমন পরিবর্তনে বেশ অবাক হলাম আমি।উনি এমন ভঙ্গিতে কথা বললেন যেন রাগ বলতে এই পৃথিবীতে কিছু আছে তা উনি জানেনই না।ওনার এমন ইনোসেন্ট ফেস দেখে আমি বুঝে গেলাম শান্ত প্রকমতি ঝড়ের আভাস। মনে মনে বললাম,

“বাহ পুষ্প, বাহ।এ কেমন জামাই জুটাইছিস কপালে?এ তো গিরগিটির চেয়েও দ্রুত রঙ বদল করে।ভুলেও এর ফাঁদে পা দিস না পুষ্প।তোকে ঘরে নিয়ে বেদম কেলাবে দেখিস।”

কিন্তু মুখে হাসি ঝুলিয়ে বললাম,

“ঘরে কেনো?এটা কি ঘর না?যা বলার এখানে বলুন।আপনার মুখ তো আর ওই ঘরে রেখে আসেননি।আর আমার কানও সঙ্গে এনেছি।সব স্পষ্ট শুনতে পাবো।”

আমার উত্তরে চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করলেন উনি।হয়তো আমার সাথে আর্গুমেন্টে জড়ানোর ইচ্ছা পোষন করলেন না।ওনাকে সুযোগ করে দিতেই যেনো নিশি বললো,

“ভাইয়া তোমরা কথা বলো।আমি গিয়ে দেখি রান্না হলো কিনা!”

কথাটা বলে ফট করে কেটে পড়লো সে।হয়তো ভাইয়ের সামনে থেকে পালানোর চেষ্টা করলো।সেদিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে রইলেন উনি।তারপর কিছু একটা ভেবে শান্ত কণ্ঠে বললেন,

“আজ তো তোমার এডমিশন কোচিং এ ভর্তি হওয়ার কথা।তোমার ইচ্ছা কি বলো?আই মিন কোন সেক্টরে ভর্তির জন্য কোচিং করতে চাও?মেডিকেল, প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় নাকি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য?”

“আমার আবার কি ইচ্ছা?আপনি যা চয়েস করে দিবেন তাতেই ভর্তি হবো।”

কথাটা শান্ত প্রাণীর মতো মুখে বললেও মনে মনে বললাম,

“ভর্তি তো আপনাকে দেখানোর জন্য হচ্ছি।কিছু পড়বো নাকি যে সেক্টর নিয়ে মাথা ব্যাথা?আমার জন্য সাধারন বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং ও যা মেডিকেলও তাই আবার প্রকৌশলীও তাই।যাবো, আড্ডা দিবো, বাড়ি ফিরবো ব্যাস।”

“এটা আবার কেমন কথা?পড়বে তুমি।অবশ্যই তোমার ইচ্ছায় ভর্তি হবে।”

“আমি তো নিজ ইচ্ছায় ভর্তি হতে চাচ্ছি না।আপনি জোর করে ভর্তি করাচ্ছেন।এখন আমার মত কেনো?আমার মত চাইলে আমি এখনো ভর্তি হবো না।”

“আচ্ছা!”

কথাটা বলে উনি থামলেন।তারপর গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

“রেডি থেকে।ডিউঠি থেকে ফিরে তোমাকে ভর্তি করতে নিয়ে যাবো।”

কথাটা বলে বেরিয়ে গেলেন উনি।আর আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম।শুরুতে ওনার আচ্ছা বলা শুনে ভেবেছিলাম পড়াশোনার পাঠ চুকে গেলো বুঝি।আহ! কি শান্তি লাগছিলো মনে।কিন্তু নাহ!আমি তো ভুলে গিয়েছিলাম উনি ঘাড়ত্যারা পাবলিক।একবার যখন বলেছেন তখন ভর্তি করিয়েই ছাড়বেন।আচ্ছা এভাবেই কি জোর জবরদস্তি করে সারাজীবন পড়াবেন আমাকে?বিষম চিন্তার বিষয়।চিন্তা করতে করতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়লো আমার। নিশির খাটের উপর চিৎপটাং দিয়ে শুয়ে পড়লাম আমি।উনি চলে যাওয়ার একটু পর নিশি ঘরে প্রবেশ করলো।আমাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে ঠোঁট চেপে হেসে রসিকতা করে বললো,

“রোমাঞ্চের ডোজ কি বেশি পড়লো আপু?বিছানা থেকে উঠতেই পারছো না দেখছি।”

নিশির কথায় হারিয়ে ফেলা এনার্জি পুনরায় ফিরে পেলাম আমি।কিন্তু স্বাভাবিক কোনো এনার্জি নয়।এক অদৈব এনার্জি।যা ভুলভাল বকে ওকে অপ্রস্তুত করে দিতে উদ্যত করলো আমাকে।আমি ইনোসেন্ট মুখ করে বললাম,

“হ, আমি উঠে গেলে বিছানার চাদর ধুয়ে দিস।”

কথাটা শুনে চরম অপ্রস্তত হলো নিশি।আমাকে লজ্জা দিতে এসে যে এমন পরিস্থিতে পড়বে বোঝে নি ও।চোখ বড় করে তাকিয়ে রইলো সে।ওর অভিব্যক্তি দেখে হাসি পেলো আমার।তড়িৎ পাশ ফিরে শুয়ে মুখ চেপে হাসতে লাগলাম আমি।নিশি অসহায় মুখোভঙ্গি করে বললো,

“সিরিয়াসলি!”

এবার চট করে উঠে পড়লাম আমি।ঘর ত্যাগ করার আগে বললাম,

“তোর যদি মনে হয় ঘরের দরজা খোলা রেখে দিন দুপুরে রোমাঞ্চ সম্ভব, তাহলে সিরিয়াসলি ধুয়ে দিস।”

এটা বলে বেরিয়ে এলাম আমি।নিশির অভিব্যক্তি আর দেখা হয়নি আমার।বেচারা কি আদৌ বুঝেছে আমি রসিকতা করেছি।নাকি সত্যি সত্যি চাদর ধুবে কে জানে!
_____
দিনপঞ্জিকায় বাঁধাধরা নিয়মের সুচনা অংশটুকু লিখিত হলো আজ।হ্যাঁ আজকে বিকেলেই এডমিশন কোচিং এ ভর্তি হলাম আমি।আমার সাথে উনি এসেছেন। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটের জন্য নির্ধারিত সকালের ব্যাচে ভর্তি করা হলো আমাকে।ভর্তির সকল কার্যক্রম শেষে এক গাদা বই নিয়ে এখন ফিরতি পথ ধরেছি।আমি আগে আগে মন ভার করে হেঁটে চলেছি আর উনি আমার পেছন পেছন আসছেন।কিছুদূর এগিয়ে এসে রিকশা ডাকলেন উনি।রিকশায় চড়ে গোমড়া মুখে পথ ঘাট দেখতে লাগলাম।বগুড়াতে ঢাকার মতো প্রচুর জ্যাম পড়ে না।তাই পথ ঘাট বেশিরভাগ সময় চলন্তই থাকে।আমিও আমার আগে আগে ছুটে চলা গাড়িগুলো গোনার চেষ্টায় মত্ত হলাম।ছোট বেলায় এমন অনেক করেছি।শহুরে জীবনের একঘেয়ে একাকীত্ব কাটাতে মানুষ এমন কতো উদ্ভট কাণ্ডই না করে!

কিছুটা পথ যাওয়ার পর মনে হলে নিভৃত ভাইয়ের একদম কাছাকাছি বসা আমি।এরকম খাটাস একটা মানুষ যে আমার জীবনের রস বের করে এত এত বই কিনেছে, ওসব আমাকে দিয়ে গিলাবে বলে, এমন মানুষের সান্নিধ্যে আমি মোটেও বসে থাকবো না।তাই একটু দূরত্ব বজায় রেখে বসার চেষ্টা করলাম।কিন্তু রিকশায় তা সম্ভব হবে না।তবুও যথাসম্ভব সড়ে বসলাম।আমার এমন আচরণ দেখে মুখ খুললেন উনি।

“রিকশার বডি চাপা।এরচেয়ে বেশি দূরে বসতে চাইলে তোমার বডিও চ্যাপ্টা হয়ে যাবে।”

উনি যে আমাকে এক্সিডেন্টের হু’মকি দিলেন তা স্পষ্ট বুঝলাম আমি।নিচের পিচ ঢালা রাস্তায় পড়লে যে হাড়গোড় ভাঙ’বে তা বোধগম্য হতেই ভয় গি’লে খে’লো আমায়।কিন্তু বাহিরে তা প্রকাশ করলাম না।একটুও হেলদোল দেখা গেলো না আমার মাঝে।আমি চোখ মুখে কাঠিন্যতা ফুটিয়ে বসে রইলাম।আমার এমন ভঙ্গিমা দেখে তপ্ত শ্বাস ছাড়লেন উনি।তারপর কন্ঠ কিছুটা নামিয়ে বললেন,

“জোর করে পড়াশোনা করাচ্ছি বলে রাগ করেছো?”

এবারও নিরব রইলাম আমি।জানেই যখন রেগে আছি তখন জিজ্ঞেস করার কি আছে?নিজেই জোর করে ব্যাথা দিবে, আবার নিজেই জিজ্ঞেস করবে ব্যাথা পেয়েছো?যত্তসব আজাইরা পাবলিক।ওনার প্রথম প্রশ্নে আজাইরা বলে বকা দিলেও পরের কথাগুলো শুনে আর এমন ভাবে স্থির থাকতে পারলাম না।ঠিক ওই প্রশ্নের পরই উনি ধাতস্থ কণ্ঠে বললেন,

“দেখো পুষ্প, আমাদের দুনিয়ার জীবন একটাই।এই জীবনটাকে পাড়ি দিতে হবে বলেই পাড়ি না দিয়ে, উপভোগ করে দেখা উচিত।তুমি হয়তো ভাবছো তুমি তো উপভোগ করতেই চেয়েছিলে।আমি জোর করে পড়া চাপিয়ে তোমার উপভোগ্য জীবন নষ্ট করলাম।কিন্তু ইউ নো হোয়াট,সবকিছু উপভোগের জন্য একটা ভিত তৈরি করতে হয়?ধরো আমরা যে খাবার উপভোগ করি,তার জন্য তো সেটা আগে প্রিপেয়ার করতে হয় নাকি?আবার আমরা যেই বিল্ডিং এ আরামে আয়েশে থাকছি, তা কি এমনি এমনি পারছি?এখানে থাকার জন্যও কিন্তু আমাদের আগে ওই বিল্ডিং তৈরি করতে হয়েছে।এর জন্য টাকা পয়সা শ্রম এসব দিতে হয়েছে।তারপরই না এতো সুখের বাসস্থান হয়েছে।তেমনি জীবনেরও একটা ভিত আছে।জীবন উপভোগের সেই ভিত হলো শিক্ষা।তুমি এখন পড়াশোনার পিছনে যত শ্রম দিবে, তোমার জ্ঞানের পরিধি যত বাড়বে, তুমি তোমার ভবিষ্যৎকে ততই উপভোগ করতে পারবে।তাই তোমার এখন পড়াশোনা জরুরি।এছাড়া সব জীবনই তো উপভোগ্য।শিক্ষাজীবনে এই উপভোগ্য সময়ের পরিমাণটা আরও বেশি।পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই শিক্ষা জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য আফসোস করে।শিক্ষা জীবনের প্রতিটা বেঞ্চ ও যে কতোটা উপভোগ্য তা মানুষ এই জীবন পাড়ি দিয়ে বোঝে।তুমিও এক সময় বুঝবে।কিন্তু আমি চাই না তখন তুমি নিরুপায় হয়ে শুধু আফসোস করো।আমি চাই তুমি এই জীবন পাড়ি দিয়ে তারপর সপই জীবনে ফিরতে চাও।যেনো ফিরতে না পারলেও এক জীবনে এটা এনজয় করতে পারো, সব এক্সপেরিয়েন্স করতে পারো। জীবনের প্রতি মোড়ে সব রঙ বয়ে চলতে না পারলেও বিভিন্ন মোড়ের বাঁকে সব রঙের সাক্ষাৎ পাও।বর্তমানে তুমি মনের খেয়ালে বাস করছো।মন বলছে পড়তে ভালো লাগে না,তাই তুমি পড়ছো না।তেমনি কারো মনে হতে পারে বাড়ি করা অনেক ঝামেলা, অত ঝামেলা ভালো লাগে না।সে যদি বাড়ি না বানিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে,আকাশকে ছাদ ও জমিনকে বিছানা পেতে চলে।সেটাও শুরুতে খারাপ লাগবে না।প্রথম প্রথম খাঁ খাঁ রোদ্দুর, ঝুম বৃষ্টি সব উপভোগ্য লাগবে।কিন্তু একটা সময় আসবে যখন সেও বুঝবে এই রোদ, এই বৃষ্টি দুই এক সময় উপভোগ্য হলেও সবসময় হয় না।মানুষ বুঝে যায় টানা বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর বাধে,টানা রোদে পুড়লে শরীরও পুড়ে যায়।তখন তার এসব থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়।নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেও কিন্তু অনেক সময় একঘেয়ে বৃষ্টিতে মানুষ হাঁপিয়ে ওঠে।তেমনি বর্তমানে শিক্ষাবিহীন সময় কিছু দিন উপভোগ করলেও একসময় তুমি বুঝবে শিক্ষা ছাড়া জীবন চলে না।এ যুগে তো আরও না।..”

ওনার কথাগুলো এক ধ্যানে শুনে যাচ্ছিলাম আমি।কেনো যেনো এই কথাগুলো খুব প্রভাব ফেললো আমার উপর।মনের চাপা রাগ যেনো ক্ষনেই গায়েব হতে লাগলো।তার পরিবর্তে একটা অন্যরকম ইচ্ছা উজ্জীবিত হতে লাগলো।এক সময় যেই পড়াশোনা অসহ্য লাগতো, এখন সেই পড়াই আমাকে তার কাছে টানতে লাগলো।সত্যি আমার একটা ভিত দরকার।শিক্ষাজীবনের অভিজ্ঞতা দরকার।এই যে আমার প্রিয় বান্ধবী রুপা ও বুশরা, ওদেরও তো শিক্ষা জীবনে প্রবেশ না করলে পেতাম না।সত্যি সব সেক্টরে উপভোগ্যতা মিশে থাকে।নিজের মনোভাবের পরিবর্তনে কিঞ্চিৎ হাসলাম আমি।আবার ওনার দিকে তাকিয়ে অবাকও হলাম।সে শুধু নিশ্চুপ রোবট নয়, ক্ষেত্র বিশেষে কথার ঝুড়ি মেলে মানুষের মন পরিবর্তন করার ম্যাজিশিয়ানও।এই যেমন আমার উপর ম্যাজিকটা দেখালেন এখন।সফলও হলেন তিনি।আমি মত পাল্টালাম।এখন থেকে পড়বো আমি।কিন্তু তবুও নিজের কথার খেই ধরে বললাম,

“তো কি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মানুষ শিক্ষা অর্জন করে না?কেনো এই এডমিশনের প্যারা?”

আমার প্রশ্নে ভ্রু কুঁচকে তাকালেন উনি।ধাতস্থ কণ্ঠে বললেন,

“হ্যাঁ পড়ে।তুমিও কোথাও চান্স না পেলে জাতীয়তে পড়বে।কিন্তু একটা ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়ার চেষ্টা না চালিয়ে জাতীয়ই বা প্রথম চয়েস কেনো হবে?একজন মানুষ কি অট্টালিকার অপশন ছেড়ে কুঁড়ে ঘর বেছে নেয়?”

ওনার প্রশ্নে ডানে বামে মাথা নাড়লাম আমি।উনি স্মিত হাসলেন এবার।শাণিত কণ্ঠে বললেন,

“পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারলে পড়াশোনার ভালো পরিবেশ পাবে।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে জীবনটা বেশি উপভোগ করতে পারবে।আর আমি চাই তুমি এটা উপভোগ করে দেখাও।”

ওনার কথাগুলো মুগ্ধ হয়ে শুনলাম আমি।সাথে অবাকও হলাম।এক ভিন্ন রুপে আজ দেখলাম ওনাকে।সবসময় চুপ থাকা মানুষগুলো এতো কথাও বলতে জানে!

চলবে
[তোমরা অনেক পসা।চাইলেই কমেন্ট করতে পারো কিন্তু করো না।হুট করে আবেগের বশে কি বলছি তাতে রাজী হয়ে গেছো।এমনে প্রতিদিন কমেন্ট করে খুশি করলেও তো পারো।আমি এখন কথা রাখলাম।তাই এখানেও সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে খুশি করে দাও।ভালোবাসা। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here