প্রেমপিপাসা❤
পর্ব -১৩,১৪
writer_শিফা_আফরিন_মিম
পর্ব -১৩
?
রেহানের বাবাও মেয়ের মুখটা দেখে অনেক খুশিই হয়। কারন মেয়ে দেখতে সত্যিই খুব মিষ্টি।
রেহানের বাবা – মনে হয় খুব কেঁদেছে মামুনি টা।
রেহান অবাক হয়ে যায়। দেখতে আসলে কোনো মেয়ে কাঁদে নাকি? অবশ্য যদি বয়ফ্রেন্ড থাকে তাহলে তো কাঁদবেই। যেমনটা আমার অনুভব হচ্ছে। আমি যেমন আমার কুহুর জন্য কষ্ট পাচ্ছি এই মেয়েটাও বোধহয় তার বয়ফ্রেন্ড এর জন্যই কেঁদেছে। (মনে মনে)
না চাইতেও রেহান মেয়েটার দিকে তাকায়।
সাথে সাথেই রেহান দাড়িয়ে যায়….
রেহান – কুহুওওও……..! (খানিকটা চিৎকার করে)
রেহানের মুখে নিজের নামটা শুনতে পেয়ে কুহুও চমকে যায়। সামনে তাকিয়ে রেহান কে দেখতে পেয়ে সেও স্তব্ধ হয়ে যায়।
দু’জন দু’জনার দিকে তাকিয়ে আছে। সবার হাসির শব্দে তাদের ধ্যান ভাঙ্গে।
রেহানের বাবা – কী রেহান? কেমন দিলাম সারপ্রাইজ টা? বলেছিলাম না মেয়ে দেখতে অনেক সুন্দর! তোমার পছন্দ হয়েছে তো?
রেহান একবার তার মায়ের মুখের দিকে তাকায় আরেকবার তার বাবার দিকে। দু’জনের মুখেই হাসি। রেহানের কাকা আর কাকিমাও হাসছে। তার মানে সবাই প্লান করে?
কিন্তু ওরা জানলো কিভাবে কুহুর কথা!
রেহানের মা – আরে এবার তো বসবি নাকি দাড়িয়েই থাকবি।
রেহান তারাতারি করে বসে যায়। কুহুর দিকে তাকাতেই দেখে মেয়েটার চোখমুখ ফুলে গেছে। মনে হয় অনেক কেঁদেছে।
কুহুর মা – দেখেন আপা আপনাদের কথায় আমিও আমার মেয়েটাকে কিছুই জানাই নি। মেয়েটা আমার কতোই না কষ্ট পেয়েছে। (হেসে)
রেহানের মা – হ্যা। তা তো দেখতেই পারছি৷ আর উনি (রেহানকে উদ্দেশ্য করে) সারা রাত বোধহয় ঘুমাতে পারেনি।
রেহানের বাবা – আচ্ছা এবার তো আসল কথায় আসতে পারি।
কুহুর বাবা – হুম নিশ্চয়। ওদের সারপ্রাইজ দেয়া শেষ এবার আমাদের কাজ টা করে ফেলি।
রেহানের বাবা – আমি চাই সামনের সপ্তাহেই বিয়েটা হোক যদি আপনাদের কোনো অসুবিধা না থাকে তো।
কুহুর বাবা – না না আমাদের কোনো সমস্যাই নেই।
হটাৎ রেহান বলে উঠে….
রেহান – আপনারা যদি বলেন তো আমি কি কুহুর সাথে একটু কথা বলতে পারি?
কুহুর মা – শুনো ছেলের কথা আজ বাদে কাল যাকে বউ বানাবে তার সাথে কথা বলতে পারমিশন চাইছে!
কুহুর মার কথায় সবাই হেসে দেয়। রেহান কিছুটা লজ্জা পায়।
কুহুর মা – কুহু রেহান কে নিয়ে যা।
কুহু রেহান কে নিয়ে নিজের রুমে যায়।
রুমে আসতেই রেহান ধুম করে দরজা টা লাগিয়ে দেয়।
রেহান – কান্না করছিলা কেনো? (রেগে)
কুহু অবাক হয়ে রেহানের দিকে তাকায়…
রেহান – কি হলো কথা বলছো না যে?
কুহু – আপনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন এর মধ্যে মা বাবা কাল রাতে আমার রুমে এসে বলছে কাল বাড়িতে মেহমান আসবে। আমি যেনো রেডি হয়ে থাকি। আমি বুঝতে পারছিলাম কি হতে চলেছে। আপনাকে হাজার বার ফোন করেও পাইনি। অনেক ভয় পেয়ে গেছিলাম আমি।
রেহান – ( আমার অবস্থাই দেখি… মনে মনে।)
রেহান কে চুপ থাকতে দেখে কুহু বলে উঠে….
বিয়ে করবেন বলে কাল থেকে ফোন বন্ধ রেখেছেন তাইনা। আজ যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ হতো তাহলে তো ঠিকই রাজি হয়ে যেতেন।
রেহান – আমি ইচ্ছে করে ফোন বন্ধ রাখি নি কুহু। কাল বাবা মা বিয়ের কথা বলায় রেগে ফোন আছাড় দিতেই ভেঙে যায়। আর তোমার সাথে কথা বলতে পারিনি। আর তুমি কি হ্যা? তুমিও তো অচেনা ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছো।
কুহু – আমি কি করবো? বাবাকে অনেক ভয় পাই তাই। (অসহায় ভাবে) আচ্ছা আপনি তো আমাদের বাসা চিনেন তাহলে? আপনি কি বুঝতে পারেন নি মেয়েটা আমিই?
রেহান – আরে বাপ… এটাই তো আমার ভুল আমি তো নববধূর মতো মাথা নিচু করে আনমনা হয়ে হেটেই চলেছি। একবারও চোখ তুলে তাকিয়ে দেখিনি। যদি দেখতাম তাহলে তো খুশিতে নেচে উঠতাম।
কুহু হেসে দেয়।
রেহান – আচ্ছা তোমার ঐ ভিলেন বোন টা কোথায়?
কুহু – জেরিন?
রেহান – ও ছাড়া আর কে ভিলেন হতে পারে বলো?
কুহু – আরেহহ ও তো ফুপা ফুপির সাথে মার্কেটে গেছে। চলেও আসছে বোধহয়।
রেহান – এই জন্যই তো দেখতে পারছি না। যাই বলো এবার আমি নিশ্চিত হলাম। এমনিই তোমার বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলেছিলো না জানি কোন দিন আবার কাউকে জামাই বানিয়ে ফেলে! তাই আর কোনো রিস্ক নিবো না।
কুহু হেসে দেয়। অনেক্ষন কথা বলার পর কুহুর দরজায় কেউ নক করে। কুহু গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে জেরিন।
জেরিন – আপিইইই আমার দুলাভাই এর বাসার লোক এসে গেছে! এই তুমি রাজি তো?
কুহু – হুম। ঘরে আয়। তোর দুলাভাই কে দেখবি না?
জেরিন এর ভেতর তো লাড্ডু ফুটছে। যাক আপি রাজি হয়ে গেছে এখন আমার আর রেহানের মাঝে কেউ নেই। ভাবতে ভাবতে জেরিন রুমে আসে। এসেই ১০০০ বোল্ডের শক খায়। আচমকা জেরিনের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে…
রেহানননন…!
জেরিন হা হয়ে আছে। রেহান মুচকি হেসে জবাব দেয়।
রেহান – ইয়েস শালিকা আমি! কেনো অন্য কাউকে আশা করছিলেন বুঝি?
জেরিন থ মেরে যায়।
জেরিন – আপি আমি কি ভাইয়ার সাথে কথা বলতে পারি?
কুহু – হ্যা বল। — বলেই রুম থেকে চলে যায়।
কুহু চলে যেতেই জেরিন বলে উঠে…
জেরিন – রেহান আপনি কি পাগল হয়ে গেলেন? আপনি তো জানেন আপির বফ আছে। তিশান ভাইয়ার সাথে আপির অনেক ডিপ রিলেশন। আপনি সব জেনে শুনে এমন ভুল টা করছেন কি……
বাকিটা বলার আগেই রেহান অনেক জোরে জেরিনের গালে থাপ্পড় মারে।
রেহান – চুপ বেয়াদব মেয়ে! তোর ভাগ্য ভালো তুই মেয়ে। যদি ছেলে হতি তোর শরীরের কোনো হাড় ঠিক থাকতো না সবকটি ভেঙে দিতাম বুঝেছিস? তোর সাহস কম না আমার কুহুর সম্পর্কে এতো খারাপ কথা বলছিস। তুই কি মনে করেছিলি আমি কিছুই জানতে পারবো না তাই না?
জেরিন গালে হাত দিতে ছলছল ছোখে রেহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
জেরিন – আপনি তো নিজেই তিশান ভাইয়ার সাথে….
রেহান – চুপপপ। তিশান না তোর সাজানো তিশান! বুঝে গেছি আমি।
রেহানের কথা শুনে জেরিন ভয়ে চুপসে যায়। রেহান তার মানে সব কিছু জেনে গেলো!
রেহান – চলো আমার সাথে — বলেই জেরিনের হাত টা ধরে টেনে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। কুহু ওদের দেখে ভয় পেয়ে যায়। রেহান এতো টা রেগে আছে দেখে কুহুরও ভয় করছে। কুহু ভয়ে ভয়ে ওদের কাছে যেতেই রেহান হাতে ইশারা করে কুহুকে থামতে বলে। কুহু থেমে যায়।
রেহান আবার জেরিনকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
জেরিনের বাবা, মা কুহুর বাবা মা আর রেহানের পরিবারের সবাই বসে কথা বলছে। রেহান জেরিনের হাত টা ছেড়ে দেয়।
রেহানের বাবা – রেহান চলো আমরা এবার বাসায় যাই।
রেহান – বাবা তোমরা যাও। আমার উনাদের সাথে কিছু কথা আছে।
চলবে……..
#প্রেমপিপাসা❤
#পর্ব – ১৪
#writer_শিফা_আফরিন_মিম
.
.
?
রেহানের পরিবারের সবাই চলে যায়। রেহান এখনো অনেকটা রেগে আছে। কুহুর বাবা মা কিছুই বুঝতে পারছে না হটাৎ রেহানের কী হলো?
কুহুর বাবা – কিছু কি হয়েছে বাবা?
রেহান – না আংকেল।
জেরিনের মা – জেরিন কী হয়েছে?
রেহান – সেটাই বলতে চাই আমি সবাইকে।
জেরিনের বাবা মাও বেশ অবাক হয়ে যায় রেহানের কথা শুনে।
জেরিনের মা – মানে?
রেহান – আপনি নিশ্চয় জেরিনের মা।
জেরিনের মা – হ্যা।
রেহান – আপনার মেয়ে এতোটাই ভালো যে ও আমার আর কুহুর মাঝখানে ঝামেলা বাড়াতে চায়। ইভেন আজকেও ও কুহুর নামে অনেক মিথ্যে বলতে চাইছিলো।
জেরিনের বাবা – তুমি কী সব বলছো? কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
তারপর রেহান জেরিনের সব কুকর্ম ওর বাবা মাকে বলে। কুহুর বাবা মাও সব শুনে অবাক হয়ে যায়।
জেরিনের মা জেরিনের কাছে এসে খুব জোরে ওর গালে থাপ্পড় মারে…
জেরিনের মা – তোকে আমরা এই শিক্ষা দিয়েছিলাম? কুহু তোকে নিজের বোন মনে করতো। কতোটা ভালোবাসতো আর তুই মেয়েটার পিছন এই ভাবে লেগেছিস?
জেরিন কিছু বলছে না চুপ করে চোখের পানি ফেলছে।
জেরিনের বাবা – আমি চাইনা তোর জন্য মেয়েটার নতুন জীবনের উপর কোনো রকম অশুভ ছায়া আসুক। কালই আমরা চলে যাবো তোকে সাথে নিয়ে।
কুহু – ফুপা এইসব কি বলছো? ও ছোট একটা ভুল না হয় করে ফেলেছে তাই বলে চলে যেতে হবে?
জেরিনের বাবা – না মা তুই জানিস না ও কতোটা হিংস্র। ও ছোট থেকেই যা চেয়েছে তাই দিতে হয়েছে৷ আমি জানি ও এখানে থাকলে তোর অনেক খতি করে দিবে। ওকে আর রেখে যেতে পারবো না।
কুহু অনেক বুঝিয়েও জেরিনের বাবা মাকে রাজি করাতে পারেনি।
জেরিন ও নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
রেহান – আমি তাহলে আসি। আর আপনারা আমায় ক্ষমা করে দিবেন প্লিজ। আমার মনে হলো এই বিষয় টা জানানো উচিত তাই…
জেরিনের বাবা – তুমি একদম ঠিক করেছো। না হলে ওর এতো বড় অন্যায় টাকে প্রশ্রয় দেয়া হতো।
আর হ্যা… কুহুকে ভুল বুঝো না মেয়েটা সত্যি ভালো। ও কারো খারাপ চায়নি কোনো দিন।
রেহান কুহুর দিকে হাসিমুখে এক পলক তাকিয়ে চলে যায়।
পরের দিন…
সকালে উঠে সবাই ব্রেকফাস্ট করে নেয়। জেরিনকেও কুহু জোর করে নিয়ে আসে।
জেরিনের বাবা – জেরিন সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছো তো?
জেরিন – হ্যা বাবা।
কুহুর বাবা – কিন্তু এখন তোমরা যাবে কিভাবে?
জেরিনের বাবা – যাবো না। এখন জেরিনের দাদুর বাড়িতে থাকবো। ফ্লাইটের টিকিট পেয়ে পরে চলে যাবো।
কুহুর মা – আমাদের বাড়ি থাকলে কি এমন হতো?
জেরিনের বাবা – না। কুহুর আর কোনো ক্ষতি হোক আমি চাইনা।
কিছুক্ষন পরই জেরিনের বাবা মা আর জেরিন চলে যায়।
কুহুর অনেক খারাপ লাগছে তার জন্যই আজ জেরিন এতো কথা শুনলো। নিজের উপরই অনেক রাগ হচ্ছে কুহুর।
২ দিন কেটে যায়। কুহু ভার্সিটিতে আসে না। রেহান অবশ্য নতুন ফোন ম্যানেজ করে কুহুকে অনেকবার কল করে। ফোনেই কথা হয় দু’জনের। পরের দিন কুহু ভার্সিটিতে যায়।
সানিয়া আর রিহাকে দেখে ওর মনটাও অনেক ভালো হয়ে যায়।
সানিয়া – ট্রিট কবে দিবি?
কুহু – কিসের ট্রিট?
সানিয়া – ও মা তোর বিয়ের!
কুহু – আগে তো বিয়েটা হোক।
রিহা – সে তো হবেই। দেখেছিস কি কাহিনী যাকে কিনা সহ্যই করতে পারতি না এখন তার সাথেই বিয়ে!
ছুটির পর কুহু সানিয়া আর একসাথে আসছিলো হটাৎ একটা ছেলে কুহুর সামনে এসে দাড়ায়।
ছেলেটা – হাই…
কুহু – কিছু বলবেন?
ছেলেটা – না তেমন কিছুই না। আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো আরকি।
কুহু – বলুন
ছেলেটা – আসলে উনাদের সামনে…..
সানিয়া – আচ্ছা আমরা সামনে যাই তোরা কথা বল।
সানিয়া আর রিহা চলে গেলে ছেলেটা বলে…
— আপনার ঐ ফ্রেন্ড এর নামটা জানতে পারি?
কুহু – কোন ফ্রেন্ড? (ভ্রু কুঁচকে)
ছেলেটা – ঐ যে আপনার সাথে যে ছিলো পিংক কালার ড্রেস।
কুহু – রিহা?
ছেলেটা – মেবি। ও কি রিলেশন করে?
কুহু – কেনো? আপনা…..
বাকিটা বলার আগেই কুহুর মুখ বন্ধ হয়ে যায়। কারন সামনে তাকিয়ে দেখে রেহান ৫০০ডিগ্রি রেগে আছে।
কুহু আর কথা না বলে এক দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসে। আর ছেলেটা ডাকতেই থাকে…
কুহু রেহানের কাছে এসে বলে…
কুহু – আসলে ও রিহার বিষয়ে….
রেহান – জাস্ট সাট আপ.. (চেচিয়ে)
কুহু রেহানের ধমক শুনে চুপ করে যায়।
রেহান – তোমার কাছ থেকে আমি কিছু জানতে চেয়েছি?
যা দেখার তা তো আমি নিজেই দেখতে পেয়েছি।
কুহু – আ..আমি ব বাড়ি যাবো।
রেহান – তো যাও না। আটকে রাখলো কে?
কুহু – আমি একা যাবো?
রেহান – তোমার জন্য কি উড়োজাহাজ নিয়ে আসবো?
কুহু মাথা নাড়িয়ে না করে।
রেহান – যাও।
কুহু রেহানের কথা শুনে ভয়ে ভয়ে একাই চলে আসতে থাকে।
রেহান কুহুর পিছন থেকে ডাক দেয়…
রেহান – কুহু….দাঁড়াও।
কুহু দাড়িয়ে যায়।
রেহান কুহুর কাছে এসে কুহুর গলা থেকে উড়না টা নিয়ে নেয়। কুহু এবার বেশ ভয় পেয়ে যায়।
রেহান অচমকা উড়না টা কুহুর গলায় প্যাচ দিয়ে ধরে…
রেহান – উড়না ঠিক করে রাখতে না পারলে গলায় প্যাচিয়ে মরে যেও। স্টুপিড!
কুহু মাথা নিচু করে উড়না টা ভালো করে পড়ে নেয়।
রেহান – চলো…
কুহু মুচকি হেসে রেহানের দিকে তাকায়।
তারপর রেহান কুহুকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে নিজের বাড়ি চলে আসে।
৪ দিন পর….
রেহান আর কুহুর আজ গায়ে হলুদ। দুই পরিবারের ইচ্ছায় ওদের একি বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হচ্ছে।
রেহান স্টেজে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত! এদিকে মহারানীর আসার নাম গন্ধ ও নেই। তাকে দেখার জন্য যে বেচারা পাগল হয়ে আছে।
পার্লারে গেলে কি মেয়েদের আসতে মন চায় না নাকি!
রেহানের এমন অবস্থায় ওর বন্ধুরাও জ্বালিয়ে মারছে।
প্রণয় – কিরে দোস্ত এতো বার গেইটের দিক তাকিয়ে কি দেখছিস?
রেহান – কই কিছুনা তো.
প্রণয় – বুঝিরে বুঝি। বার বার তাকিয়ে লাভ নেই রে ভাই মাইয়া মানুষ সাজতে সাজতেই দিন পার করে দেয়। তার উপর যদি নিজের গায়ে হলুদ হয় তাহলে তো কথায় নেই।
রেহান – সেটাই তো! এতো সাজার কি আছে শুনি ও তো এমনি তেই সুন্দরী!
রাকিব – আহারে বেচারা!
অনেকক্ষণ পর রেহান হটাৎ গেইটের দিক তাকাতেই চোখ আটকে যায়। হা হয়ে দেখছে সে!
হলুদ জামদানি শাড়ি সাথে মেচিং করে ফুলের জুয়েলারি!
এতো কোনো হলুদ পরি মনে হচ্ছে!
রেহান একদৃষ্টিতে কুহুর দিকে তাকিয়ে আছে!
কুহু ধীরে ধীরে রেহানের কাছে আসতেই মুচকি হাসে রেহান।
কুহু ও অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে। রেহান কেও কোনো রাজপুত্রর থেকে কম দেখাচ্ছে না তার উপর আবার সেই ক্রাশ খাওয়ার মতো হাসি!
রেহান আর কুহুর একসাথে অনেক ছবি তুলে।
ওদের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে যায়।
কুহু বেচারি এতো সাজগোজ নিয়ে বেশ ক্লান্ত।
রুমে এসেই ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ে।
রেহান ও শুয়ে পড়ে। কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই। সে তার হলুদ পরি কে নিয়ে ভাবতেই ব্যাস্ত!
পরের দিন সকালে…
কুহুর দু’চোখে এখনো ঘুম। এতো রাতে ঘুমিয়েও সকাল সকাল উঠতে হয়েছে।
কুহুর মা – কুহু….
কুহু – হ্যা মা..
কুহুর মা – জেরিন আর তোর ফুপি ফুপা আসছে।
কুহু – সত্যি! (এক লাফে উঠে বসে)
কুহুর মা – হ্যা। আসতে চাইছিলো না। কতো বুঝিয়ে রাজি করেছি আল্লাহ!
কুহু – অনেক ভালো করেছো মা। জেরিন কে ছাড়া আমারও খারাপ লাগতো!
কুহুর মা – হ্যা জানি তো! এই জন্যই তো বললাম। আচ্ছা তুই ফ্রেশ হয়ে নে। কিছুক্ষণ পরই পার্লারের মেয়েরা চলে আসবে।
কুহু – মা আজও!!
কুহুর মা – শুনো মেয়ের কথা! বিয়েতে সাজবি না?
কুহু – আমার তো অসহ্য লাগে এতো সাজ!
কুহুর মা – একদিন কিছু হবে না। তুই ফ্রেশ হয়ে নে আমি গেলাম আমার কাজ আছে অনেক।
কুহুর মা চলে যায় কুহু উঠে ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে ফোনটা হাতে নেয়।
ফোনে রেহানের ম্যাসেজ এসেছে দেখে ম্যাসেজ টা ওপেন করে…
” গুড মর্নিং বউ ”
ম্যাসেজ টা দেখেই কুহুর মুখে হাসি ফুটে উঠে।
চলবে……