প্রেমবিভ্রাট ২৬ তানভীর তুহিন

0
487

প্রেমবিভ্রাট
২৬
তানভীর তুহিন

দীপ্তির আজ নিজের বাড়িতেই নিজেকে অপরাধীর মতো মনে হচ্ছে। সবাই মিলে ঘিরে ধরেছে দীপ্তিকে। সবার মুখে হরেক রকমের প্রশ্ন। কী হয়েছে? তুই এতো সকালে এ বাড়িতে কেনো? ও বাড়িতে কী ঝামেলা হয়েছে? তোর গলা ফুলেছে কেনো? তোর গালে আঙুলের দাগ কেনো? তুহিন তোকে মেরেছে? কেনো মেরেছে? তুহিন কী তোকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে? তা ও বাড়ির সবাই কী তুহিনের সঙ্গই দিয়েছে? আরো নানা প্রশ্ন শুনে শুনে চরম বিরক্তি ধরে গেছে দীপ্তির। প্রশ্নে প্রশ্নে ক্লান্ত সে। কাউকে কোনো উত্তর না দিয়ে দীপ্তি রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। কাকে উত্তর দেবে? কীসের উত্তর দেবে? কেনো উত্তর দেবে? যাকে উত্তর দিতে চেয়েছিলো সে তো সঠিক প্রশ্নটাই করেনি। সে শুধু মিথ্যে নোংরা অপবাদ চাপিয়ে দিয়েছে আমার চরিত্রে।
দরজাটা বন্ধ করে দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে ঘেষে মেঝেতে বসে পড়ে দীপ্তি। বুক ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে তার। মনে হচ্ছে বুকে কেউ মস্তবড় একটা পাহাড় এনে সেটে দিয়েছে। আর সেই পাহাড়ের ভাড়ে দম আটকে আসছে দীপ্তির! শ্বাস নেবার অধিকারটুকুও যেনো কেড়ে নিয়েছে সে অদৃশ্য নিষ্ঠুর পাহাড়। দীপ্তি দরজা বন্ধ করতেই বাড়ির সবাই ঝাপিয়ে পড়ে দীপ্তির রুমের দরজায়। একের পর এক কষাঘাত পড়তে থাকে দরজায়। দীপ্তি ভেজা চোখে ঢুলঢুল পায়ে দাঁড়িয়ে দরজা খুলে বলে, ” আমি দরজা লাগিয়ে মরে যাবো না। দয়া করে আমায় একটু একা থাকতে দাও। দয়া করো আমায়…. ” কথা শেষ করার আগেই কান্নায় ভেঙে পড়ে দীপ্তি।

বাড়ির সবচেয়ে প্রানবন্ত সদস্যটাকে এরকম বিদ্ধস্ত, করুন আর দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে দেখে সবার বুক কেঁপে ওঠে। এ কোন দীপ্তি? এ কী হাল হয়েছে দীপ্তির? দীপ্তির কথায় আকাশের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। নিজের বোনের এরকম করুন পরিস্থিতি সে আগে কখনও দেখেনি। আকাশ সবাইকে চলে যেতে বলে নিজে দীপ্তির রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর চট করে দীপ্তির হাতটা নিজের মাথার উপরে উঠিয়ে বলে, ” দেখ তুই সারাজীবন আমায় সব বলে এসেছিস। তোর এই কান্নার কারন না জেনে আমি থাকতে পারবো না রে। খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার কসম লাগে, প্লিজ সবটা খুলে বল আমায়। ”

দীপ্তি চিৎকারটা এবার দিয়েই ফেলে। আর সহ্য হচ্ছিলো না তার। বুকটা ছিড়ে ফেটে শেষ হয়ে যাচ্ছে একদম। দীপ্তি পাগলের মতো কান্না করছে। আকাশের বুকটা যেনো একদমই উধাও হয়ে গেছে শরীর থেকে। এ কোন দীপ্তিকে দেখছে সে? দীপ্তি এর আগে কখনও এভাবে কাদেনি। আজ কী এমন হলো যে দীপ্তির নিজের ওপর নিয়ন্ত্রনই নেই। আকাশ কাঁদতে কাঁদতে বলে, ” এই কাদছিস কেনো তুই? দেখ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে তোকে কাঁদতে দেখে। তুই আমায় বল না, তারপর নাহয় দুজনে একসাথে কাঁদবো। বল না কী হয়েছে? ” আকাশ কথাটা শেষ করতে পারে না। কান্নায় তার গলা আটকে আসে।
দীপ্তি আকাশের হাতটা নিজের মাথার উপরে রেখে ফুপিয়ে কেঁদে বলে, ” এই কথা কেউ জানে না এখনো। আমি শুধু তোকে বলছি কারন আমার খুব ভারী লাগছে। এই কষ্ট আর আমি নিতে পারছি না। তবে প্রমিস কর এই কারনের জন্য তুই তুহিনকে কিছু বলবি না। আর এই কথা কাউকে বলবিও না। ”

আকাশ সঙ্গে সঙ্গেই বলে, ” হ্যা প্রমিস। তুই বল। ”
দীপ্তি কিছু না লুকিয়ে, সবটা বলে দেয় আকাশকে। সবটা শোনার পর আকাশ কিছু বলে না। শুধু দীপ্তিকে জড়িয়ে ধরে দীপ্তির মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে, ” কিচ্ছু হবে না। সব ঠিক হয়ে যাবে। তুই শুধু ভেঙে পড়িস না। ”

দীপ্তি আকাশকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। যে কান্নার কোনো শেষ সীমানার হদিস নেই।

তুহিন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সোজা ফোন করেছে আশিককে। আশিক পেশায় একজন উকিল। তুহিন আশিক কে ফোন করে বলেছে সে যেনো তার বাসার নিচে দাঁড়ায় তুহিন তাকে তার বাড়ির সামনে থেকে গাড়িতে তুলে নেবে। খুবই জরুরী কথা আছে। আশিক আর তুহিন কলেজ লাইফ থেকে বন্ধু। আগে শুধু বন্ধুই ছিলো কিন্তু বার্সেলোনা থেকে দেশে ফেরার পর এই কয় মাসে বেশ ভালো বন্ধু হয়ে গেছে দুজনে। আশিক তার বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছে। তুহিন গাড়ি নিয়ে আশিকের সামনে যেতেই আশিক চটজলদি গাড়ির দরজা খুলে গাড়িতে উঠে পড়ে। আশিক গাড়িতে উঠে নিঃশ্বাস নেওয়া কিংবা ছাড়ার আগেই তুহিন বলে, ” আমার ডিভোর্স লাগবে এজ সুন এজ পসিবল। ”
আশিক অট্রহাসে। অট্রহেসে আশিক বলে, ” আরে দোস্তো। বিয়ে করার কয়েকটাদিন পরে এমন মনে হয়। আমার তো প্রত্যেকদিনই মনে হয় মিনাকে ডিভোর্স দিয়ে দেই আর মিনাও আমায় উঠতে-বসতে ডিভোর্স দিয়ে দেয়…! ” মীনা আশিকের স্ত্রী। মীনা আর আশিকের বৈবাহিক সম্পর্ক প্রায় তিন বছরের দেড় বছরের একটা মেয়েও আছে তাদের। আশিক খুব ঝানু প্রকৃতির উকিল। আইনের মারপ্যাঁচ একদম ঠোটস্থ তার। কোথায় কোন ধারা ঠুকতে হবে সে ব্যাপারে সে তার ওস্তাদেরও, ওস্তাদ। কিন্তু মানুষ হিসেবে খুবই সরল প্রকৃতির সে। মনে যা মুখেও তা।
তুহিন আশিককে আর কোনো কথা বলতে না দিয়ে স্টেয়ারিং এ হাতের বারি মেরে বলে, ” আমি তোর কাছে এই সকালবেলা মজা বা পিরিতি মারাতে আসিনি। আমার ডিভোর্স লাগবে দ্যাটস ইট। আর তুই ই তো বলছিলি আমি সেলিব্রেটি হয়ে গেছি আমার এখন নিজস্ব উকিল আর পার্সোনাল কন্সাল্টেন্ট রাখা প্রয়োজন। আমি তোকে এপোয়েন্ট করছি। তোর প্রথম এসাইন্মেন্ট হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার ডিভোর্স করানো। আর আবার বলছি আমার বউ, তোর বউয়ের মতো না। আর আমিও তুই না। আমি মজা করছি না। আ’ম ফাকিং ড্যাম সিরিয়াস। ”

তুহিনের কথার ধাচে আশিক বুঝে যায় তুহিন ঠিক কতটা সিরিয়াস। আশিক বেশ অবাকও হয় তুহিনের মুখে হঠাৎ ডিভোর্সের কথা শুনে। কিন্তু অবাক ভাবটা কাটিয়ে আশিক নিজের আচরনে পেশাদারিত্ব এনে গুরুগম্ভীর গলায় বলে, ” কী কারনে ডিভোর্স চাচ্ছিস তুই? ”
তুহিন খানিক চুপ করে যায়। তারপর শান্ত গলায় বলে, ” আমি তোকে প্রকৃত কারনটা বলতে পারবো না। কিন্তু আমার তাড়াতাড়ি ডিভোর্স লাগবে। ”

আশিক বিরক্তি নিয়ে বুঝিয়ে বলার ভঙ্গিতে বলে, ” আরে কোনো কারন ছাড়া আমি কী দেখিয়ে কোর্টে ডিভোর্সের আপিল করবো? ”
– ” শোন ডিভোর্সের জন্য যাতে কোনো হিয়ারিং পোহাতে না হয়। ফিল্মে দেখায় না ওই যে নোটিশ আকারে ডিভোর্স পেপার পাঠায় আর সই করে দিলেই ল্যাটা চুকে যায়। আমার ওই টাইপের ডিভোর্স লাগবে। ”
আশিক এবার একটু বেশিই বিরক্ত হয়ে যায়। মুখ দিয়ে ‘চ্যা’ মতো শব্দ করে বলে, ” উফ তা নাহয় হলো। কীন্তু কারন কী? কী কারনে ডিভোর্স চাচ্ছিস? ”
তুহিনের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। তুহিন আশিককে ধমকে বলে, ” কী বালের উকিল হয়েছিস? বললাম তো আমি তোকে আসল কারন বলতে পারবো না। কোর্টে ফেক কোনো রিজন দেখিয়ে আপিল করে দিবি ব্যাস শেষ। ”
– ” কী ফেক রিজন দেখাবো তুই ই বলে দে! নাহয় আমি কী দিতে কী দিয়ে দেবো তোর ফেইস লস হয়ে যাবে। পাব্লিকলি তোর ইম্প্রেশন খারাপ হয়ে যাবে। ”
তুহিন খানিক ক্ষেপে বলে, ” হোক আমার ইম্প্রেশন খারাপ আমার তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। যেকোনো রিজন দে আমি ফিজিক্যাল নীড মেটাতে অক্ষম, আমি আমার ওয়াইফের বেসিক নীড ফুলফিল করতে পারি না, আমার অন্য এফেয়ার আছে। এরকম যা খুশি তা দে। যেটা বেশি এফেক্টিভ হবে সেটাই দে। যতটাকা লাগে ঘুষ দে, তবুও আমার ডিভোর্স লাগবে। আমার ডিভোর্স করিয়ে দে। যত ঝলদি সম্ভব তত ঝলদি। ”

আশিক বুঝে যায় তুহিন গুরুতর ভাবেই ডিভোর্সের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। আশিক তুহিনকে আশ্বস্ত করে বলে, ” দেড়-দুই মাস সময় দে আমায়। ডিভোর্স পেয়ে যাবি। ”
তুহিন তীব্র বিরক্তি নিয়ে বলে, ” দুমাস কেনো লাগবে? তোর পুরো গুষ্টির একসাথে তালাক করাবি নাকি? ”
আশিক হাপানো ভঙ্গিতে শ্বাস উপরে টেনে বলে, ” উফ ভাই ফর্মালিটিস আছে। তবে তুই শিওর থাক দুই মাসের মধ্যে তুই ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবি। ”
– ” আচ্ছা। ডু ইট এজ ফাস্ট এজ ইউ ক্যান। ”

তুহিন আশিকের সাথে কথা বলে ক্লিনিকে ঢুকে যায়। তুহিন চেম্বারে ঢুকতেই দেখে পেশেন্টে চেয়ারে একজন সাংবাদিক আর একজন ক্যামেরাম্যান বসে আছে। তুহিন চেম্বারে ঢুকতেই তারা উঠে দাঁড়িয়ে তুহিনকে সালাম দেয়, ” আসসালামু আলাইকুম স্যার। ”
তুহিন সৌজন্য রক্ষার্থে সালাম গ্রহন করে সালামের জবাব দিয়ে জিজ্ঞেস করে, ” আপনারা এখানে? ”

ওপাশ থেকে সাংবাদিক মহাশয় অনুনয় কন্ঠে বলে, ” স্যার প্লিজ মানা করবেন না। পুরো এক সপ্তাহ হাতরে আপনাকে পেয়েছি। প্লিজ স্যার। ”

তুহিন সাংবাদিকের কথার কোনো দিক-কুল খুজে পায় না।

সাংবাদিক আবার বিনয়ী ভঙ্গিতে অনুরোধ করে বলে, ” স্যার প্লিজ! প্লিজ স্যার না করবেন না। ”

তুহিনের রাগ মাথায় উঠে যায়। ঝাড়ি মেরে বলে, ” আরে মিয়া কী প্লিজ প্লিজ করে যাচ্ছেন। ইনিয়েবিনিয়ে না বলে, বলুন না কী চান? ”

সঙ্গেই সঙ্গেই সাংবাদিক এক ঝিলিক হাসি দিয়ে বলে, ” স্যার একটা শর্ট ইন্টারভিউ। প্লিজ স্যার! ” কথাটা বলতে বলতেই রিপোর্টারটা এসে তুহিনের হাত ধরে ফেলে। তুহিন আর না করতে পারে না।

ক্যামেরাম্যান তুহিনের দিকে ক্যামেরা তাক করে আছে বন্দুকের মতো। সাংবাদিক প্রানবন্ত ভঙ্গিতে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলছে, ” আজ আমরা কথা বলবো বিখ্যাত হার্ট সার্জন তুহিন ইশতিয়াকের সাথে। যিনি কিছুদিন আগেই এশিয়ান মেডিকেল ফোরামে মোষ্ট কোয়ালিফাইড হার্ট সার্জনের খেতাব পেয়েছে। তো চলুন যেনে নেই তার মুখ থেকেই তার সম্পর্কে অজানা কিছু কথা। ”

সাংবাদিক মাইকটা তুহিনের মুখের সামনে ধরে বলে, ” তা স্যার কেমন আছেন আপনি? ”
তুহিনের একদমই ইন্টারভিউর মেজাজে নেই। তবুও কিছু করার নেই মানুষটা এভাবে অনুনয়-বিনয় করলো। তুহিন জোর করে খানিক অনিচ্ছার হাসি হেসে বলে, ” এইতো আল্লাহ রেখেছে আরকি। ”

সাংবাদিক প্রায় পাচ-সাতটা প্রশ্ন করার পর তুহিনকে জিজ্ঞেস করে, ” স্যার আপনি তো ম্যারেড। তা কেমন কাটছে আপনার ম্যারেড লাইফ? বিয়ে নিয়ে আপনার মতামত কী? প্রেম নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী? যদি দর্শকদের একটু বলতেন। ”

তুহিন সম্পুর্ন এড়িয়ে যেতে চায় প্রশ্নটি। তুহিন সাংবাদিককে নম্রভাবে বুঝিয়ে বলে, ” আমি আমার পার্সোনাল লাইফ ক্যামেরার সামনে আনতে চাচ্ছি না। একচুয়ালি আই নীড প্রাইভেসি। ”
রিপোর্টার দাত কেলিয়ে হেসে বলে, ” স্যার প্লিয না করবেন না। এখানে তো আপনার প্রাইভেসি ভঙ্গ হচ্ছে না। জাস্ট অডিয়েন্সদের উদ্দেশ্যে বলবেন যে আপনার ম্যারেড লাইফ কেমন কাটছে, বিয়ে নিয়ে আপনার মতামত কী,।প্রেম নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী, এসবই। প্লিজ স্যার না করবেন না। ”

তুহিন বেশ কয়েকবার না করে রিপোর্টারকে। রিপোর্টার কিছুতেই কথা শুনছে না। একসময় হাপিয়ে ওঠে তুহিন। তুহিনের ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে যায়। রিপোর্টারের ওপর ক্ষেপে গিয়ে তুহিন তীব্র রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ক্যামেরার সামনেই বলে, ” আরে কী তখন থেকে ছ্যাছড়ার মতো ফ্যাচফ্যাচ করে যাচ্ছেন। বলছি তো আমি শেয়ার করতে চাচ্ছি না তবুও আপনি ফোর্স করে যাচ্ছেন। আপনি জানতে চাচ্ছেন না, আমার ম্যারেড লাইফ কেমন যাচ্ছে? জাহান্নাম হয়ে গেছে আমার ম্যারেড লাইফ আমার কাছে। বিয়ে আমার কাছে একটা বোঝা, আর প্রেম আমার কাছে পাপ। এই তো একটু আগেই আমার বন্ধু আশিকের সাথে কথা বলে এলাম ডিভোর্সের ব্যাপারে। আমি আমার ওয়াইফকে ডিভোর্স দিচ্ছি। উত্তর পেয়ে গেছেন? শান্তি হয়েছে? এবার এই ক্যামেরা মাইক নিয়ে বের হন আমার চেম্বার থেকে। নাহয় এখানেই ক্যামেরা মাইক সহ এখানে পুতে রেখে দেবো আপনাকে। গেট লস্ট। ”

সাংবাদিক আর ক্যামেরাম্যান তুহিনের এই ক্ষিপ্ত আচরনে যমভয় পেয়ে যায়। তাড়াতাড়ি করে ব্যাগপত্র গুছিয়ে বেড়িয়ে যায় তুহিনের চেম্বার থেকে।

এই ঘটনার প্রায় দুই ঘন্টা পরে তুহিনের ফোনে আসাদ সাহেবের ফোন আসে। তুহিন ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ক্ষিপ্র কন্ঠে আসাদ সাহেব বলে, ” তুই কোথায়? এক্ষুনি বাড়িতে আয়। ”

তুহিনের মেজাজটা এখনও বিগড়ে আছে। খিটখিটে মেজাজটাকে নিয়ন্ত্রনে এনে তুহিন স্বাভাবিক গলায় বলে, ” আব্বু আমি ক্লিনিকে। রাতে বাড়ি ফিরবো। ”
– ” আই সেইড কাম হোম রাইট নাউ। রাইট নাউ মিন্স রাইট নাউ। ” বিকট চিৎকারে বাক্য জুড়ে কথাগুলো বলে আসাদ সাহেব।

তুহিনও মাঝারিভাবে চেঁচিয়ে দাতখিটে বলে, ” হয়েছে টা কী? ফোনে বলো না। ” তুহিনের রাগ যেনো আর বাধই মানতে চাইছে না। সারা শরীরে শুধু রাগ দৌড়াচ্ছে। তীব্র রাগ! প্রচন্ড রাগ!

আসাদ সাহেব হুংকার দিয়ে বলে, ” আমি তোকে বাড়ি আসতে বলছি। কথাটা যাতে আরেকবার রিপিট না করতে হয় জানোয়ারের… ” গালি দিতে গিয়েও থেমে যায় আসাদ সাহেব। তুহিন তার বাবার এই রাগের কারনই খুজে পায় না। রাগে শরীর জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে তার। তুহিন আর কথা না বাড়িয়ে ফোনটা কেটে দেয়। তারপর চেম্বারের টেবিলে জোরে একটা লাথি মেরে চিৎকার করে ওঠে। যাতে তার রাগটা একটু কমে। কিন্তু তুহিনের চেষ্টার ফল শূন্য হয়। রাগ আরো বেড়ে যায় তুহিনের। ক্লিনিক থেকে হন্তদন্ত হয়ে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যায় তুহিন।

চলবে!
#thetanvirtuhin

প্রিয় গল্পপ্রেমিরা যুক্ত হয়ে যান পরিবারে ►
” Tanvir’s Writings “

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here