#প্রেমানন্দোল-১৪,১৫
#তাসনিম_তামান্না
১৪
স্বচ্ছ দৌড়ে মৃধার পাশে গিয়ে মৃধার মাথা কোলে নিয়ে মুখে হালকা করে থাপ্পড় দিয়ে ডাকতে লাগলো
” মৃধা। মৃধা। শুনছেন? ”
মৃধা উঠলো না। স্বচ্ছ রেগে উঠে গিয়ে জিতুকে ঘু-ষি মা’রলো।
” এই তুই কাকে তুলে এনেছিস তুই জানিস? ”
জিতু ভয় পেয়ে তুতলিয়ে বলল
” সরি বস আপনি ৫০ টা মেয়ে আনতে বলেছেস আমি এনেছে কিন্তু আমি কি ভাবে জানবো এই মেয়ে কে? ”
” এই মেয়ে কাকে বলছিস তুই? ম্যাডাম বল ”
স্বচ্ছ রাগে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়লো। কি বলছে কি করছে কিছু খেয়াল নেই। জিতুও চমকে গেলো। স্বচ্ছ জিতুর কলোয়ার ছেড়ে দিলো। জিতু অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো
” ম্যাডাম কে বস? ”
স্বচ্ছ কিছু না ভেবেই বলে দিলো
” আমার বউ ”
কথাটা বলে স্বচ্ছ নিজেই চমকে গেলো। নিজের খেয়াল হলো কি বলল এটা। স্বচ্ছ গম্ভীর মুখে মৃধাকে কোলে করে গাড়িতে তার নিজস্ব বাসায় আনলো যেখানে স্বচ্ছ ছাড়া কেউ থাকে না। মৃধাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে মৃধার ক্লান্ত মুখের দিকে চেয়ে রইলো কিছুক্ষন অতঃপর উঠে গিয়ে মৃধার হাতে পায়ে ওয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিলো। তারপর নিজে ফ্রেশ হয়ে। মৃধার জন্য নিজের হাতে সুপ বানালো। মৃধার মুখে পানি ছিটালো। মৃধা পিটপিট করে চোখ খুলে স্বচ্ছকে দেখে তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো। চারিদিকে দেখলো অন্য অচেনা জায়গায় সে। মৃধা স্বচ্ছকে দেখে বেড থেকে নেমে দাঁড়িয়ে বলল
” একদম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না ”
স্বচ্ছ শান্ত কন্ঠে বলল
” রিলাক্স। ভালো করে দেখ আমি স্বচ্ছ ”
” আপনিও ওদের মতো খারাপ লোক তাই না? ”
” আমি ওদের মতো হলে তোমাকে আমি ওখানে ফেলে আসতাম এখানে আনতাম না ”
মৃধা কিছুটা শান্ত হয়ে বলল
” ঔ মেয়েগুলো কোথায়? ওরা ওদের বাসায় গিয়েছে ”
” হ্যাঁ তুমি টেনশন করো না খেয়ে নাও ”
” আমি বাসায় যাবো ”
” হ্যাঁ যেও খেয়ে সুস্থ হয়ে নাও তারপর যেনো আর এখন এমনিতেও অনেক রাত ”
মৃধা চমকে উঠলো চমকানো গলায় বলল
” এখন মানে? আম্মু, ভাইয়া, আপু নিশ্চয়ই অনেক টেনশন করছে। আপনার ফোনটা দিন আমি ভাইয়া ফোন দিয়ে বলছি আমাকে নিয়ে যেতে ”
স্বচ্ছ বিনাবাক্য নিজের ফোনটা মৃধার কাছে দিয়ে দিলো। মৃধা ফোন লাগালো বাসায় লাগালো। জাহিদ ফোন ধরতেই মৃধা হরবর করে বলতে লাগলো।
” ভাইয়া তুমি আমাকে নিয়ে যাও প্লিজ আমার খুব ভয় করছে ”
” তুই চিন্তা করিস না বোন আমি এখনি আসছি ”
কথা শেষ করে মৃধা স্বচ্ছের কাছে ফোনটা দিয়ে বলল
” আপনি ছাড়া কেউ বাসায় নাই? ”
” নাহ! ”
মৃধার ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। চুপচাপ বেডের এক কোণে ওড়ার কোনা শক্ত করে চেপে বসে রইলো। মনের মধ্যে উলটা পালটা চিন্তারা এসে হানা দিচ্ছে। স্বচ্ছ গম্ভীর কন্ঠে বলল
” ভয় পাচ্ছো কেনো? ”
মৃধা উত্তর দিলো না। কোণা চোখে স্বচ্ছকে দেখলো। স্বচ্ছ আবারও বলল
” এটা খেয়ে না-ও। অনেকক্ষন না খেয়ে আছো ”
” না ঠিক আছি ”
” খেয়ে নাও তারপর তোমার ভাইয়া আসলে যেও ”
” আমার খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না ”
স্বচ্ছ আর কিছু বলল না। মৃধার মাথায় প্রশ্ন পাখিরা উড়োউড়ি করছে। অনেকক্ষণ উশখুশ করার পর নিজের কৌতুহল দমাতে না পেরে মৃধা বলল
” একটা প্রশ্ন করতে পারি ”
স্বচ্ছ ফোনে কিছু একটা করছিল। ছোট করে উত্তর দিলো
” হুম ”
” আপনি কি পুলিশ বা সিআইডি টাইপ কিছু ”
স্বচ্ছ এবার চোখ ছোট ছোট করে বলল
” হঠাৎ এমন মনে হওয়ার কারণ? ”
” না মানে তাহলে ওখানে কিভাবে পৌঁছালেন? ”
স্বচ্ছ ঘাবড়ে গেলো এবার কি উত্তর দিবে? কিছু বলার আগে স্বচ্ছের ফোন বেজে উঠলো। স্বচ্ছ বলল
” তোমার ভাইয়া ফোন দিয়েছে ”
মৃধা ফোন কানে নিয়ে উঠে দাড়িয়ে বলল
” দাঁড়াও ভাইয়া আমি এখনি আসছি ”
ফোন কেটে মৃধা স্বচ্ছকে বলল
” আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনি না থাকলে হয়ত আমার মরা ছাড়া কোনো উপায় থাকত না ”
স্বচ্ছ মৃধার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে বলল
” হিশশ একদম মরার কথা বলবে না। তোমার সবসময় রক্ষা করার দায়িত্ব আমি নিলাম ”
মৃধা চমকালো। স্বচ্ছও অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। মৃধা বলল
” মানে? ”
” কিছু না। তোমার ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে ”
” হ্যাঁ যাচ্ছি আপনাকে আর কষ্ট করে আশা লাগবে না আমি যেতে পারবো ”
স্বচ্ছ কিছু বলল না। মৃধার সাথে গেলো। মৃধার নিষেধাজ্ঞা শুনলো না। নিচে এসে জাহিদ কে দেখে স্বচ্ছ অবাক হয়। মৃধা গিয়ে জাহিদকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে। জাহিদ ও স্বচ্ছকে দেখে অবাক হয়। জাহিদ মৃধার কান্না থামিয়ে বলল
” এই ছেলে তোর কোনো ক্ষতি করেছে বোন শুধু বল আমাকে ”
” না না ভাইয়া কি বলছ ওনি তো আমাকে আর-ও বাঁচিয়েছে না হলে আমি যে এখন কোথায় থাকতাম ”
জাহিদের ভ্রু কুঁচকে গেলো বলল ” তুই সত্যি বলছিস তো?”
” হ্যাঁ ভাইয়া ”
জাহিদ স্বচ্ছর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বলল
” থ্যাংকিউ মিস্টার স্বচ্ছ ”
মৃধা অবাক হয়ে বলল
” ভাইয়া তুমি ওনাকে চেনো? ”
” হুম। গাড়িতে উঠে বস ”
মৃধা কোনো কথা না বলে মাথা হেলিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। জাহিদ স্বচ্ছের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল
” জানি না আপনি কেনো আমার বোন কে বাঁচালেম। যদি আপনার কোনো অসত উদ্দেশ্য থেকে থাকে তাহলে নেক্সট বার আপনাকে আমি ছাড়বো না ”
স্বচ্ছ চমৎকার করে হাসলো। গাড়িতে বসা মৃধার দিকে তাকালো মৃধারও তাকিয়ে ছিলো। স্বচ্ছ তাকাতেই দুজনের চোখাচোখি হলো। মৃধা গাড়িতে বসে সে হাসি দেখলো।
গাড়িতে যেতে যেতে জাহিদ বলল
” শোন যাকে তাকে বিশ্বাস করবি না আর ঔ স্বচ্ছকে তো মোটে নয় ”
” কেনো ভাইয়া ওনি তো ভালো ”
” মানুষ যেটা দেখায় সেটা সে নয়। আড়ালে ভয়ংকর ছদ্দ বেশ থাকে ”
” ওনি কি করে ভাইয়া ”
” ওসব যেনে তোর কাজ নাই তোকে যেটা বলা হয়েছে সেটা করবি ”
মৃধা বাসায় এসে বাচ্চাদের মতো মায়ের কোলে গুটিশুটি মেরে আছে। যতই ও সাহস দেখাক না কেনো মনে মনে যে দূর্বল খুব দূর্বল এই দূর্বলতা কাউকে দেখাতে চাই না। মৃধার মা আহাজারি করতে লাগলো
” মেয়েটার ওপর একটার পর একটা দূঘটনা লেগেই আছে। সেদিন এক্সিডেন্ট করে বাসায় আসলো আবার আজ দেখ কি হয়ে গেলো। কার কু দৃষ্টি পড়লো আমাদের ওপর ”
” আহ মা কিসব আজেবাজে কথা বলে যাচ্ছো। যেটা ভাগ্যে লেখা আছে সেটাই হবে ”
” তুই যা-ই বলিস জাহিদ আমি মৃধাকে নিয়ে হুজুরের কাছে যাবো ”
জাহিদ বিরক্ত হয়ে বলল
” যা মন চাই করো। আমাকে এর মধ্যে টানবে না ”
মৃধার মন কান কোনোটায় এদিকে নেই। মৃধা তার ভাইয়ের কথার মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করছে। স্বচ্ছ মানবটাকে মৃধার সন্দেহ জনক লাগে। দ্বিধার বিয়ের রিসিভশনের দিন থেকেই।
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রেমানন্দোল-১৫
#তাসনিম_তামান্না
দ্বিধা নিজের বাড়ি থেকে শশুড় বাড়িতে এসেছে কয়দিন হলো মাত্র। কলেজে যাওয়া হয় নি আর। ফেন্ডদের কাছে ফোন দিয়েও তাদের খোঁজ নেওয়া সময় বা মেজাজ কাজ করছিল না। বাসা থেকে এসে মন খারাপ হচ্ছিল স্বাধীন বললেছে কয়েকদিন পর আবার নিয়ে যাবে তাতেও দ্বিধার মন খারাপ কমে নি। সন্ধ্যায় নিচে এসে দেখলো স্বপ্না সোফায় বসে মুচকি মুচকি হাসছে। দ্বিধা বোকা বোকা চোখে স্বপ্নার পাশে গিয়ে বসলেও স্বপ্না তখনো নিজের দুনিয়ার রং নিয়ে ব্যস্ত। দ্বিধা মুখ টিপে হেসে বলল
” কি হয়েছে স্বপ্না? এভাবে ব্লাস করছ কেনো? কারোর প্রেমে পড়লে না-কি? ”
স্বপ্না এতোটাই চমকালো যে সোফা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে ভয়ার্ত চোখে দ্বিধার দিকে তাকিয়ে রইলো দ্বিধা শব্দ করে হেসে লুটোপুটি খেতে লাগলো। স্বপ্না মুখটা স্বাভাবিক করার বৃথা চেষ্টা করে বলল
” কি বলো ভাবি এসব ”
” হুম হুম একটু একটু বুঝতে পারছি তা কাহিনী বলো শুনি কি ভাবে কি হলো ”
স্বপ্না লজ্জা পেলো আবার ভয়ও পেলো ভয়ার্ত কন্ঠে বলল
” আগে বললো ভাইয়া বা আম্মুকে কিছু বলবে না ”
দ্বিধা স্বপ্নাকে আশশ্বাস দিয়ে বলল
” চিন্তা করো না কাউকে কিছু বলবো না ”
স্বপ্না মনে জোর পেলো দ্বিধার গাল টিপে দিয়ে বলল
” এই তো আমার সুইট ভাবি ”
” আচ্ছা হয়েছে এবার বলো কাহিনী কি? ”
” কাহিনী তো প্রেম প্রেম। ”
” কিভাবে কি হলো? ছেলের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছ তো? ছেলে ভালো? ”
” হ্যাঁ। পুলিশ নতুন জয়েন্ট হয়েছে। কিন্তু একটায় সমস্যা ”
” মানে ও না আমার থেকে একটু বেশিই বড় ৯ বছরের ”
” মাত্র ৯ বড় মানা যায় প্রবলেম হয় না ”
” আমি না ওকে খুব ভালোবাসি যদি কেউ না মানে? ”
” তো কি হয়েছে মানাবা চেষ্টা চালিয়ে যাবা আর আমি তো আছিই। আর এতো কিছুর পরও যদি না মানে তাহলে পালিয়ে যাবা ছোট ছোট পুচকু আনলে মেনে নিবে ”
দুজনে উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো। ফোনের শব্দে হাসির ব্যাঘাট ঘটলো। দ্বিধা ফোন নিয়ে ওপরে চলে গেলো। মৃধা ফোন দিয়েছে।
” কেমন আছিস? ”
” আছি। তুই? ”
” আছি মানে কি মৃধা? আছি মানে আমি কি বুঝবো কোথায় আছিস? ”
” বাসায় আছি ”
মৃধার এমন খাপছাড়া কথা শুনে দ্বিধার ভ্রু কুঁচকে গেলো বলল
” কি হয়েছে তোর? কথার মাঝে কোনো ফিলিংস নাই তোর কেমন নির্জীব লাগতেছে। মন খারাপ? ”
” ওসব বাদ দে। আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দে সত্যি করে বলবি ”
” কি প্রশ্ন বল ”
” তোকে যে জোর করে রিলেশন করতে বাধ্য করছিল মানে তোদের বাসা যে দখলে নিয়ে চাইছিলো সেই লোকটার নাম স্বচ্ছ আর তোর দেবরের নাম ও স্বচ্ছ। দুইটা মানুষ কি এক? ”
দ্বিধা অবাক হয়ে বলল
” তুই হঠাৎ এসব… ”
দ্বিধাকে মাঝ পথে থামিয়ে মৃধা বলল
” আগে আমি যেটা জানতে চাইছি সেটার এন্সার দে তারপর আমি আস্তে আস্তে সবটা বলছি ”
দ্বিধা চুপ থেকে বলল
” হ্যাঁ ওটাই স্বচ্ছ ”
মৃধার নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা গেলো। খট করে ফোন কেটে দিলো। দ্বিধা ফ্যাল ফ্যাল করে ফোনে দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মৃধার ফোনে আবার ফোন লাগালো। মৃধা ফোন ধরতেই দ্বিধা বলল
” কি হয়েছে এভাবে ফোন কেটে দিলি কেনো? ”
মৃধা জোরে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো দ্বিধা সন্দিহান কন্ঠে বলল
” সত্যি করে বলত কি হয়েছে তোকে তো আমার সুবিধার লাগছে না। আর ওসব ই বা কেনো শুনছিস? কি হয়েছে? ”
মৃধা সেদিন কলেজ থেকে ফেরা থেকে একটার পর একটা এক্সিডেন্টে সব বললো দ্বিধাকে। দ্বিধা সব শুনে অবাকের শীর্ষে চলে গেছে।
” তুই ঠিক আছিস তো? তোর কিছু হয় নি তো? ঔ শয়তানটা তোর কোনো ক্ষতি করে নি তো? ”
” হাইপার হোস না আমি একদম ঠিক আছি। ওনি যে ভাবে আমার সাথে বিহেভিয়ার করে আমি ওনাকে যথেষ্ট ভালো মানুষ মনে করে ছিলাম আর স্বাধীন ভাইয়ার ভাই ভেবে আমি মনে করেছি ওনিও স্বাধীন ভাইয়ার মতোই ভালো। স্বচ্ছ এমন কেনো? ”
” স্বাধীন স্বচ্ছ সৎ ভাই। ”
” হোয়াট? ”
” হ্যাঁ আমিও জানতাম না স্বাধীনের আম্মু বলছে। স্বাধীনের বাবা ওনি স্বাধীনের আম্মুকে লুকিয়ে বিয়ে করেন আর তারই সন্তান স্বচ্ছ। স্বাধীনের কয়েক মাসের ছোট স্বচ্ছ। স্বচ্ছকে জন্ম দেওয়ার সময়ই স্বচ্ছের মা মা’রা যায় আর স্বাধীনের বাবা স্বচ্ছকে এবাড়িতে আনলেও ওনি স্বচ্ছ দেখতে পারতেন না। স্বচ্ছ বড় হয় কাজের লোকের কাছে যত বড় হতে থাকে একাকিত্বে খারাপ হয়ে গেছে শাসন করার কেউ নেই কি না। স্বাধীন বুঝতে শেখার পর থেকে বাবাকে এসব কারণে ঘৃণা করে স্বচ্ছে ভালো পথে আনার চেষ্টা করলেও স্বচ্ছ কখনো স্বাধীন কে পাত্তা দেয় নি উলটো ক্ষতি করে গেছে। আমাদের বিয়ে পর সংসারটাও ভাঙ্গার চেষ্টা করে উল্টো পাল্টা কথা বলছিল কিন্তু স্বাধীন আগে থেকে সবটা জানত ”
মৃধার চোখ দিয়ে পানি পড়লো। মানুষটার জন্য বড্ড মায়া হলো। ছোট থেকে কেউ ভালোবাসে নি কারোর ভালোবাসা পায় নি। মানুষ কষ্ট না পেলে খারাপ হয় না সাথে সঙ্গ দোষ তো আছেই। দ্বিধা মৃধার নাক টানার শব্দে বুঝলো মৃধা কাঁদছে। দ্বিধা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল
” একটা সত্যি কথা বলবি ”
” বল ”
” তুই কি স্বচ্ছকে ভালোবেসে ফেলেছিস? ”
মৃধা অবাক হয়ে কাঁদা বন্ধ হয়ে গেলো চমকানো গলায় বলল
“কি বলছিস এসব পাগল হয়ে গেছিস না কি? আমি কেনো ওনাকে ভালোবাসবো? ”
” ভালোই যখন বাসিস না তাহলে কাঁদছিস কেনো? ”
” কষ্ট হচ্ছে মায়া হচ্ছছিল ”
” আমার কথাগুলো ভেবে দেখিস। ”
” কোন কথা? ”
“ভালোলাগা বসন্ত বাতাসের মতো বয়ে আসে কখন কিভাবে হয়ে যায় বুঝতে পারবি না। মানছি স্বচ্ছ খারাপ কাজ করে ওর ও কিন্তু একটা ভালোবাসার মন আছে তুই চাইলেই স্বচ্ছকে ভালোবেসে স্বচ্ছের হৃদয়ের আঁধার ঘুচিয়ে আলো দেখাতে পারিস। ”
মৃধা চুপচাপ শুনলো প্রতিউত্তর করলো না। দ্বিধা থেমে আবার বলল
” আর তুই যে গুলো বললি স্বচ্ছ আমার জানা মতে স্বচ্ছ কখনো কারোর প্রতি এতো হেল্পফুল, কেয়ারিং নয় শুধু তোর প্রতি মানে ও তোকে ভালোবেসে ফেলেছে। না হলে ও তোকেই বা কেন ছেড়ে দিবে। আমার ওপরে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য হলেও তোকে আটকে রাখতে পারতো কিন্তু ও এটা করে নি ”
মৃধা কিছু বলল না দ্বিধা ফোন কেটে বিছানায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়ল। কিছু ভালো লাগছে না ওর। কি ঘটতে চলছে বা কি ঘটছে এসব বুঝতে বেগ পেতে হচ্ছে খুব। স্বাধীন বাসায় এসে দ্বিধাকে শুয়ে থাকতে দেখে মাথায় হাত দিয়ে দেখলো জ্বর এসেছে কি-না দ্বিধা তখনি চোখ খুললো।
” এভাবে সন্ধ্যা বেলা শুয়ে আছেন কেনো? শরীর খারাপ নাকি? ”
” না এমনি শুয়েছি। আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো? ”
” করুন ”
” আপনি আমাকে আপনি আপনি করেন কেনো? ”
” কেনো ভালো লাগে না? ”
” হুম না তেমন টা নয় তবে কেমন লাগে। নিজেকে অনেক বড় মনে হয় ”
স্বাধীন হেসে বলল
” আমি আপনাকে সম্মান করি। আর যে দিন থেকে আপনি আমাকে তুমি বলে ডাকবেন সে দিন থেকে আপনি চাইলে আমিও আপনাকে তুমি বলতে পারি ”
দ্বিধা লজ্জা পেলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ