#প্রেমানন্দোল-৪,৫
#তাসনিম_তামান্না
৪
চারিদিকে আঁধার রুমের মধ্যে সোনালী রঙের আলোয় আলোকিত। সাদা রংয়ের মা’দ’ক’দ্র’ব্য সেবন করছে অন্য হাতে নি’কো’টি’নের ধোঁয়া। রুমটায় অদ্ভুত গন্ধে বুদবুদ করছে। একজন হ্যাঙ্গলা পাতলা হাসি হাসি মুখে এগিয়ে এসে প্রশ্ন করলো
” বস মা-ল গুলো কেমন? একের না? ”
আরো বার কয়েক শ্বাস নিয়ে ড্রা’গ’স গুলো শুষে নিয়ে। স্বচ্ছ ঘূর্ণিয় মান নেশায় আসক্ত হয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল ” হুম ”
” তাহলে কাল থেকে মা-ল গুলো সাপ্লাই করা শুরু করি? ”
” হু বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি গুলোতে বেশি করে ছড়িয়ে দিস আর হ্যাঁ ছন্দবেশে আগের বারের মতো যেনো ভুল না হয় ”
” ওকে বস। কিন্তু বস একটা খবর আছে ”
” কি? ”
” থানার ইসপেক্টর বদলি হয়ে গেছে নতুন একজন আসছে ”
” নাম কি? ”
” জাহিদ হোসেন ”
” ব্যাপারটা আমি দেখে নিচ্ছি তুই যা ”
” ওকে বস ”
ছেলেটা চলে গেলো। স্বচ্ছ আরো বার কয়েক শ্বাস টেনে নিলো। নেশাটা মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠেছে। চোখের সামনে ভেসে উঠলো একজন মেয়ে নৃত্য দৃশ্য খুব আনন্দের সহিত ছোট বাচ্চা গুলোকে শিখাচ্ছে।
~ মম চিত্রে নিতে নিততে ~
মাথায় বাঝতে লাগলো ঘোলাটে চোখে ফোন বের করে একটা নম্বরে ডায়ল করলো রিসিভ হতেই বলল ” মেয়ে রেডি কর ”
ওপাশ থেকে ” ওকে বস বলে রেখে দিলো ”
________________________________________
সকালে পিটপিট করে চোখ খুলতেই স্বাধীনকে দ্বিধার পাশে বেডে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় পেলো। দ্বিধা মাথা তুলতে গিয়ে আবিষ্কার করলো তার মাথা ব্যাথায় ভার হয়ে আছে ততক্ষণাৎ মনে পড়লো রাতে জ্বর এসেছিল। দ্বিধা তার শরীরটা বিছানা থেকে টেনেটুনে তুললো। মাথা ঘুরাচ্ছে। বিছানা থেকে উঠে স্বাধীনের দিকে ঝুঁকে বলল
“এই যে শুনছেন?”
স্বাধীনের ঘুম পাতলা হওয়ায় এক ডাকে চোখ ডলে সোজা হয়ে বসলো। উঠে বসতেই ঘাড়ের ব্যাথা টের পেলো ঘার মালিশ করতে করতে বলল
” কি ব্যাপার? উঠে দাড়িয়ে পড়ছেন যে? শরীর কেমন আপনার? ”
” আছে ভালো। আপনি এভাবে শুয়েছিলেন কেনো? এখন ঘাড় ব্যথা করছে না? ”
” তা তো একটু সমস্যা নাই সেরে যাবে ”
” চা খান, বাম দিয়ে মালিশ করলে ঠিক হয়ে যাবে ”
” হ্যাঁ আপনি কি খাবেন বলুন? কাল রাতে তো কিছু খেলেন না ”
দ্বিধা আমতা আমতা করে বলল ” রাতে জ্বরের ঘোরে আপনাকে খুব জ্বালিয়েছি না ”
স্বাধীন হাসলো। দ্বিধা এই প্রথম স্বাধীনকে হাসতে দেখলো হাসলে স্বাধীনের সামনের বাঁকা দাঁত দেখা যায় তখন স্বাধীন অন্য স্বাধীন হয়ে যায়। স্বাধীন দ্বিধাকে বারে বারে মুগ্ধ করছে। কখনো কথার প্রেক্ষাপটে কখনো বা কাজের মধ্যে দিয়ে। দ্বিধা বুঝতে পারছে বেশিদিন তার ভালোবাসা কাঙ্গাল মনটাকে আর বেঁধে রাখতে পারবে না শিকল ছিঁড়ে বাঁধন হারা হয়ে ভালোবাসায় ডুব দিবে।
” আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি আপনার জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করছি ”
” ক্ষুদা নাই। ব্যস্ত হবেন না ”
দ্বিধা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো সাদিয়া বেগম আর স্বাধীন কথা বলছে। পাশে খাবার রাখা।
” রিসিভশন নিয়ে কিছু ভেবেছিস? ”
” না আম্মু ভেবে তোমাকে বলবো ”
” কবে ভাববি আর কবে বলবি বলত। আত্মীয় স্বজনরা ফোন দিয়ে খোঁজ নিচ্ছে স্বাধীন বিয়ে করেছে শুনলাম কি ভাবে কি হলো? মেয়ে কেমন? এতো প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি ”
” ফোন ধরার দরকারটা কি বল তো ফোন ওফ করে রাখো ”
” দুম করে একটা কথা বলে দিলেই শেষ তোর কোনো দরকারী ফোন হলে ”
দ্বিধা এগিয়ে আসলো। সাদিয়া দ্বিধাকে দেখে এগিয়ে এসে দ্বিধার গলায় কপালে হাত দিয়ে বলল
” এখন ও তো গা গরম। বিকালে তো ঠিকই ছিলে কি হলো বলো তো? আচ্ছা খেয়ে না-ও কাল রাত থেকে কিছু খাও নি শুনলাম বমি করে দিয়েছ এখন এই টুকু খাবার খেয়ে নাও ”
সাদিয়া আর দ্বিধার কথার মাঝে স্বাধীন ফ্রেশ হতে চলে গেলো। সাদিয়ার কথা শুনে দ্বিধা অবাক হয়ে বলল ” বমি করেছিলাম? ”
” হ্যাঁ স্বাধীন তো বলল ”
দ্বিধা চুপ হয়ে গেলো। মনে মনে অসস্তিতে পড়ে গেলো। সাদিয়া বেগম তারা দিয়ে বলল
” খেয়ে নাও সব টুকু খাবে কিন্তু আমি যেন প্লেটে খাবার না দেখি আমি গেলাম মেলা কাজ পড়ে আছে ”
দ্বিধা বিছানায় বসে। প্লেট নিয়ে স্যান্ডুইউচে একটা বাইট দিলো খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না তবুও খেলো। খেতে খেতে মা বাবা ভাইয়ের কথা মনে পড়ল। কি করছে তারা? একটা বারও ফোন দিলো না? দ্বিধার আকাশ ছোঁয়া অভিমান হলো। খাবার রেখে বালিশের পাশ থেকে ফোন খুঁজে বের করলো পাওয়ার বাটনে চাপ দিলো কিন্তু ফোন অন হচ্ছে না দেখে নিজে ওপরেই রাগ হলো। দ্বিধা বিরবির করে বলল ” নিশ্চয়ই বাসা থেকে ফোন দিয়ে ছিলো খোঁজ না পেয়ে টেনশন করছে। আমি ও যে কি করি না আম্মু ঠিকি বলে আমি বড্ড উদাসীন কোনো কিছুতে খেয়াল থাকে না ”
স্বাধীন ফ্রেশ হয়ে এসে দ্বিধাকে ফোন হাতে হতাশ হয়ে বসে থাকতে দেখে বলল ” কি হয়েছে? বসে আছেন কেনো খেয়ে নিন ”
দ্বিধা ঠোঁট উল্টে বলল ” ফোনে চার্জ নাই ”
স্বাধীন দ্বিধার গোলাপি পাতলা ঠোঁট জোড়ায় চোখ গেলো। মনে অদ্ভুত চিন্তা আসলো। ততক্ষণাৎ মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে বলল
” হ্যাঁ কাল আপনার বাসা থেকে ফোন আসছিল আপনাকে না পেয়ে আমাকে ফোন দিয়েছিলো আমি বলছি আপনি ঘুমাচ্ছে অসুস্থতার কথা আর বলেনি অযথা টেনশন করতে তাই ”
” হুম এটা চার্জে দিন না ”
দ্বিধা ফোন হাতে নিলো হাতে হাত ছোঁয়া লাগলো শীতল ভেজা হাতের স্পর্শ পেয়ে দ্বিধার উষ্ণ হাত কেঁপে উঠল। স্বাধীন বুঝতে পেরে দ্বিধার দিকে তাকালো বলল
” খেয়ে নিন ”
দ্বিধা প্লেটটা হতে নিয়ে আবার খেতে লাগলো। ফোন চার্জে দিয়ে স্বাধীন তোয়ালে দিয়ে হাত মুখ মুছতে মুছতে বলল ” সুস্থ হলে কলেজে যাওয়ার শুরু করবেন আমি চাই না আমার জন্য আপনার পড়া শোনায় ক্ষতি হোক ”
দ্বিধার কলেজের কথা মনে পড়তেই খেয়াল হলো ” আজ কলেজে ফাংশন ফেন্ডরা মিলে কত প্লান করেছিলাম সবাই একই রকমের শাড়ি পড়বো। এতক্ষণে ওরাও হয়ত জেনে গেছে আমার বিয়ে হয়ে গেছে ”
দ্বিধার বড্ড মন খারাপ হলো।
★
মাইকে এনাউসমেন্টা করা হচ্ছে —
” চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের আর্নাস চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মৃধা। নৃত্য পরিবেশনের জন্য মঞ্চে আসার জন্য ডাকা হলো ”
মৃধা এস্ট্রেজে উঠে গানের তালে তালে নাচতে লাগলো।
~ পাগলা হওয়ায়র বাদল দিনে
পাগল আমার মন জেগে উঠে ~
নাচ শেষে মৃধা মেকাপরুমে গিয়ে শাড়ি খুলে থ্রি পিচ পড়ে নিলো। পিছনে পিছনে অন্য ফেন্ড গুলোও আসলো। হালিমা বলল
” শাড়ি খুললি কেনো? ”
” শাড়ি পড়ে থাকার মুড নাই। নাচের প্রোগ্রাম না থাকলে আজ আমি এমুখো হতাম না। কত বড় মিরজাফর বিয়ে করলো একটা বার জানালোও না আবার ফোন ওফ করে রাখছে ”
আঁখি বলল
” রাগ করছিস কেনো কিছু তো একটা হয়েছে যার জন্য এতো তারাতাড়ি বিয়ে হলো ”
” হুম কিন্তু কি সেটা খুঁজে বের করতে হবে ”
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রেমানন্দোল-৫
#তাসনিম_তামান্না
পরিবেশটা গুমোট। ইনস্পেক্টর জাহিদ কঠিন্য চোখে তাকিয়ে আছে। স্বচ্ছ পায়ের ওপর পা তুলে বাঁকা হেসে তাকিয়ে জাহিদের ফেস দেখে বলল
” ইনস্পেকটর লজ্জা পাচ্ছেন কেনো? আপনার যত এমাউন্ট লাগে বলুন তবুও এই ভালো মানুষি মুখটা দেখিয়ে পরে এমাউন্ট বাড়ানোর জন্য আবার হাতে পায়ে ধরবেন ”
” মিস্টার. স্বচ্ছ হাতের পাঁচটা আঙ্গুল যেমন সমান নয় ঠিক তেমনি সব পুলিশ ইনস্পেকটর এক নয় ঠিক তেমনি আমিও এক নয়। তাই আমাকে টাকার লোভ দেখিয়েও লাভ নাই।”
স্বচ্ছ নিকোটিন ধরিয়ে ঠোঁট দিয়ে ধোঁয়া ছাড়লো। জাহিদ শক্ত চোখে সবটা দেখলো কিছু বলল না। স্বচ্ছ হেসে বলল
” বাহ! নাইস এ জোকস। ওফ দ্যা ইয়ার আমি ও দেখবো এই সততা কত দিন থাকে।”
জাহিদ এবার চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বলল
” অবশ্যই। এন্ড থ্যাংকিউ আপনার সাথে পরিচয় হয়ে ভালোই লাগলো পাখি নিজেই এসে ধরা দিলো”
স্বচ্ছ ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে উঠে দাঁড়ালো। ডান হাতের দু’আঙ্গুল দিয়ে ভ্রুর কাছে চুলকিয়ে বলল
” ওয়েল গুড বাই ওয়াফিস্যার ”
” খুব শীগ্রই দেখা হচ্ছে ”
স্বচ্ছ বাইরে এসে রাগে গাড়িতে উঠে এস্টেয়ারিংয়ে ঘুষি মারলো।
” ড্যামিট! খোঁজ নিয়ে আসা উচিত ছিল। উফফ বারে বারে কেনো এতো ভুল হচ্ছে আমার। ”
স্প্রিডে গাড়ি চালাতে লাগলো। চলন্ত গাড়ি থেকে জ্বলন্তু নিকোটিন সুদূরে ছুঁড়ে মারলো।
পড়ন্ত বিকেল জুলাই মাসের মাঝামাঝি। আকাশে কখনো কালো মেঘে ছেয়ে গিয়ে ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি তো কখনো ঝলমলে সোনালী রোদ। পড়ন্তু বিকেলে আকাশ জুড়ে অপূর্ব সুন্দর মেঘের খেলা। খন্ড খন্ড মেঘগুলো এদিক সেদিন দৌড়-ছুটি খেলায় মেতে আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু দূরে গাড়ি ব্রেক কষলো এদিকটা ফাঁকা। মাঝে মাঝে কয়েকটা গাড়ি শো শো করে ছুটে চলছে তাদের গন্তব্যে দিকে। দূরে সুখ বিক্রেতারা রং বেরং এর বেলুন হাতে কোথায় যানি যাচ্ছে। সিটে হেলান দিয়ে আরাম করে বসলো গাড়ির কাচটা নিচে নামিয়ে দিয়ে ধূমপান করায় খয়েরি রঙের ঠোঁট জোড়ায় আবারও জলন্ত নিকোটিন জ্বালালো। কিছু তেই শান্তি পাচ্ছে না যেনো। স্বচ্ছ চোখ বন্ধ করে নিকোটিনের ধোঁয়া ছাড়ছিলো অশান্ত মনে তখনি খুকখুক করে কাশি দিয়ে সুরেলা কণ্ঠে ঝাঁজ নিয়ে বলে উঠলো
“অসহ্য লোকজন রাস্তায় মেয়ে দেখলেই স্মোকিং করে ধোঁয়া কাছে এসে ছাড়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিতে হবে তো ”
কথাগুলো মস্তিষ্কে যেতেই স্বচ্ছের চোখ আপনা-আপনি খুলে গেলো পাশ ফিরে কন্ঠে মালিকের দিকে চাইতেই দৃষ্টি স্থির হয়ে গেলো। মৃধা চোখ মুখ কুচকে আবারও ঝাঁজ মেশালো গলায় বলল
“আজকাল বখাটে গুলো গাড়িতে বসে টিজ করছে। যেনো সহজে পালিয়ে যেতে পারে মার খাওয়ার এতো ভয়? ”
বিথি মৃধার হাত টেনে বলল ” ছাড় না এসব চল। ঝামেলায় জড়িয়ে লাভ কি? ”
” এদেরকে ছেড়ে দিলে না মাথায় উঠে নাচবে। একটার পর একটা অন্যয় করে যাবে। এদের জন্য আজকাল মেয়েরা স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পারে না। এই বখাটে গাড়ি থেকে নামেন আজ আমার এক দিন কি আপনার যে কয় দিন লাগে ”
হালিমা, আঁখি, বিথির চোখ বড়বড় হয়ে গেলো। আজ সকাল থেকে মৃধার মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে। আবার এখন অপরিচিত বখাটে ছেলের সাথে ঝগড়া লাগালো ওরা ভয় পেয়ে গেলো ছেলেটা আবার না কোনো ক্ষতি করে দেয়। তরিঘরি করে আঁখি মৃধার মুখ চেপে ধরলো। হালিমা বলল ” ভাইয়া আপনাকে নামতে হবে না ছোট বোন ভেবে মাফ করে দিবেন প্লিজ ”
বিথি বলল ” হ্যাঁ আসলে ওর না মাথায় একটু সমস্যা আছে। তারপর আবার সকাল থেকে খেপে আছে প্লিজ কিছু মনে করবে না ”
কথাগুলো বলে আর দাড়ালো না কেউ মৃধাকে টানতে টানতে নিয়ে সিএনজিতে উঠালো। সিএনজিতে উঠে যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো। মৃধা রাগে তখনো ফোঁস ফোঁস করছে। গলায় তেজ নিয়ে বলল ” তোরা আমাকে নিয়ে আসলি কেনো? বখাটেকে দেখে নিতাম কত বড় সাহস ধোঁয়া মুখের কাছে ছাড়লো ”
” থাক বাদ দে না। ছেলেটার কাছে যদি ব-ন্দু-ক, ছু-রি টাইপ কিছু থাকতো আর রেগে গিয়ে যদি মে-রে দিতো বলা যায় না বাবাহ ”
” তো আমি কি ভয় পায় নাকি? ”
” না তুই কেন ভয় পাবি তুই তো পুলিশের বোন ”
মৃধা রেগে বলল
” সাট আপ ”
________________________________
দ্বিধা কান্নামিশ্রিত গলায় বলল
” আমি তোমাদের খুব মিস করছি ”
” আপি আমি তোকে মোটেও মিস করছি না এখন পুরো বাড়ি আমার রাজত্ব আর আমার রাজত্ব এখন কেউ আর দখল করতে আসে না আমার রাজ্যে এখন শান্তি বিরাজ করছে ”
দ্বিধার আরো কান্না পেয়ে গেলো কান্না মাখা গলায় আদুরে কন্ঠে অভিযোগ করে বলল
” আব্বু দেখো তোমার ছেলে ”
খাইরুল সাহেব ছেলেকে মিছিমিছি ধমক দিয়ে বলল
” দ্বন্দ্ব কি হচ্ছে টা কি? চুপচাপ বসে থাকো ”
আসমা বেগম বলে উঠলো
” দ্বিধা মা কাঁদিস না। এতোক্ষণ যে তোর ভাই এতো ভাষণ দিল না সে-ও না তোর রুমে বসে তোর ছবি ধরে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদছিলো ”
মায়ের কথা শুনে দ্বিধা না চাইতেও হেসে ফেললো। চোখের পানি মোছার বৃথা চেষ্টা করলো আবারও চোখ ভিজে পানি গড়িয়ে পড়লো বলল
” বেশ হয়েছে ”
আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর ফোন কেটে টি-টেবিলে ফোন রাখতে গিয়ে এতোক্ষণে খেয়াল হলো কেউ তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দ্বিধাও তাকিয়ে বলল
” কিছু বলবেন? ”
স্বাধীন টিস্যু এগিয়ে দিয়ে মিষ্টি হেসে বলল
” কাঁদলেও যে আপনাকে ভিষণ মিষ্টি লাগে এটা কি আপনি জানেন? ”
দ্বিধা ভিষণ অবাক হলো বলল ” মানে? ”
” দ্বিধা আপনি কখনোই কারোর সামনে কাঁদবেন না আমার হিংসে হবে ”
দ্বিধা শুকনো ঢোক গিললো। স্বাধীনের দৃষ্টি সহ্য হলো না চোখ সরিয়ে নিলো। স্বাধীন আবার নিজের মতো করে বলল
” কাদলে আপনার চোখ গুলো অল্পতে লাল হয়ে ফুলে যায়। আপনার চোখ দিয়ে যখন পানির ফোটা গুলো পড়ে আপনার গাল ছুঁয়ে মুখের দুপাশ সহ নাক লাল হয়ে যায় তখন আপনাকে খুব আদুরে লাগে। কাদলে আপনার পাতলা ঠোঁট জোড়া তির তির করে কাপে। তখন আমার অসভ্য হতে ইচ্ছে হয় ”
দ্বিধা জমে গেলো। হুট করে স্বাধীন এমন কিছু বলবে দ্বিধার কল্পনার বাহিরে ছিল। লজ্জায়, অসস্তিতে দ্বিধা আর ওখানে বসে থাকতে পারলো না দৌড়ে রুমের বাইরে সিড়ির কাছে এসে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। স্বাধীনের কথা গুলো ভাবতে ভাবতে দ্বিধা ব্লাস করতে লাগলো। গালের দু পাশ লাল নিয়ে নিচে চলে আসলো। সাদিয়া বেগম তখন পুরো মনোযোগ দিয়ে টিভি দেখছে দ্বিধার দিকে ওতোটাও খেয়াল করে নি করলে হয়ত কিছু একটা বুঝে যেতেন। কলিং বেল বেজে উঠলো সাদিয়া উঠতে নিলে দ্বিধা বলল ” আমি দেখছি আপনি বসুন ”
দরজা খুলতেই একটা সুন্দরী পরিপাটি মেয়েকে লাগেজ হাতে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো দ্বিধা। মেয়েটি দ্বিধাকে দেখে লাগেজ ফেলে একপ্রকার ছুটে এসে দ্বিধাকে জড়িয়ে ধরলো। দ্বিধা অবাক হলো। মনে মনে বলল ” কে এই মেয়ে? আমাকে কি চিনে সে? ”
” ওহ থ্যাংকিউ সো মার্চ ”
দ্বিধা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। কিছু বুঝে উঠতে পারলো না।
চলবে ইনশাআল্লাহ